#তোর_উঠানে_বিকাল_ছায়া🥀
২১তম খন্ড
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
–এই ছায়া তুই ওখানে কি করিস একা একা কেন বের হলি।
–আরে সমস্যা নাই আমি পারবো।
ছায়া সিঁড়ির পাশে ধরে ধিরে ধিরে নামতে চেষ্টা করছে।
যদিও তার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তাও ছায়া একটু হাঁটতে চাইছে।
অনেক দিন হাঁটা হচ্ছে না।
সারা দিন রাত বসে থাকে মেয়েটা বিছনায়।
আর ভালো লাগছে না ঘরের মধ্যে।
ছায়া হেঁটে কষ্ট করে নেমে আসে রুহি ছায়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার আগে হটাৎ ছায়া সিলিপ করতে যায়।
পেছন দিকে পরতে রুহি চিৎকার দিয়ে ওঠে,
–ছায়া………… (চিৎকার করে)
রুহির চিৎকার শুনে নয়লা বোগম ঘর থেকে বের হলেন।
রুহি আসতে আসতে ছায়াকে অন্য এক জোড়া হাত ধরে বসে।
ছায়া চোখ বন্ধ করে ছিল।
যখন ফিল করে সে সুরক্ষিত তখন চোখ খুলতে ছায়ার মনে হচ্ছে ছায়া জেগে স্বপ্ন দেখছে।
নির্ঝর তাকে দু হাত দিয়ে ধরে রেখেছে শক্ত করে।
ছায়া তার হাতটা উঠিয়ে নির্ঝর এর মুখে রাখে।
ছায়া ফিল হচ্ছে নির্ঝর কে।
ছায়া দেখছে নির্ঝর কে।
নির্ঝর ছায়ার সামনে তা বিশ্বাস হচ্ছে না ছায়ার।
ছায়ার চোখে পানি।
–তুমি এসেছো (কাঁদো সুরে)
–হ্যাঁ আর যাবো না কখনো কোথাও যাবো না।
ছায়া নির্ঝর কে জড়িয়ে ধরে।
আর কান্না করতে থাকে।
নয়লা বেগম এর পা থমকে গেছে নিচে আসার শক্তি টুকু পা হারিয়েছে।
কখনো ভাবতে পারে নি ছেলেকে আবার এভাবে ফিরে পাবে।
রুহির চোখে পানি।
এভাবে আবার নির্ঝর কে দেখতে পাবে তা রুহিরও কল্পনায় ছিল না৷
তাহলে রুহি যে নিজেদের আশে পাশে কারোর অস্তিত্ব টের পেত তা ভুল নয়।
ওটা নির্ঝর ই ছিল।।
–আর কতো কাঁদবে পাগলি এবার ত থামো।
ছায়ার থামার কোন নামই নাই। ছায়া নির্ঝর কে জড়িয়ে শুধু কাঁদছে যেন কতো বছর নির্ঝর এর থেকে দুরে থেকে আজ সামনে পেয়েছে।
–কেন হারিয়ে গেছিলেন বলেন কেন আমার যে কি কষ্ট হচ্ছিল নির্ঝর।
জানেন আপনি।
–আর যবো না ছায়া৷।
সত্যি বলছি আর যাবো না।
মা ওকে বোঝাও
উপরে নয়লা বেগম দাঁড়িয়ে ছেলের মুখে আবার মা ডাক শুনে নিচে এলেন।
–আবার মা বল তোর মুখে মা ডাক শুনার জন্য আমি অস্থির হয়ে ছিলাম।
–আজ থেকে শুনবে রোজ শুনবে।
তুমিও কেঁদো না এক তোমার বউ কে সামলাতে পারছি না।
আরেক তুমি।
নির্ঝর খুবই সাধারণ আচরণ করছে।
কারন সে জনে এখন ছায়ার শরীরের অবস্থা কি।
নির্ঝর ছায়াকে বসিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে।
হাজার হোক জন্ম না দিলেও সে মা।
ছেলেকে এতো কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পরেছে।
নির্ঝর পরিস্থিতি সামাল দিতে বলে,
–রুহি তুমিও কাঁদো বোন এরা ত কম হয়ে গেলো।
–কি যে বলেন ভাইয়া আপনি কি ভাবে সাভাবিক আছেন আমার ত অপনাকে দেখে স্বপ্ন মনে হচ্ছে।
মনে হচ্ছে এতো সুন্দর স্বপ্ন টা বুঝি চোখ খুললে চলে যাবে।
নির্ঝর একটা হাসি দিয়ে মাকে বসালো।
ছায়া আর নয়লা বোগমর এর হাঁটুর কাছে বসে।
তাদের দুজন এর দুটো হাত নিয়ে চুমু দিলো।
–কি হয়েছে কি না হয়েছে সব জানতে পারবে শুধু একটা জিনিস মনে রাখো আমাদের শুখের দিন শুরু।
দুঃখের দিন শেষ আজ থেকে শুধু হাসবে।
আর কান্না নয়।
রুহি আবির কে কল করে বাসায় আসতে বলো।
–জি ভাইয়া৷
ছায়ার জন্য খাবার রান্না করেছি ওকে খাইয়ে দিন।
ও কিছুই খেতে চায় না৷
–হ্যাঁ আজ থেকে সব খাবে।
কিছুই বাদ থাকবে না।
ছায়া চোখ মুছিয়ে দেয়।
–বাবা ওকে উপরে নিয়ে যা।
অসুস্থ এভাবে বসে থাকলে আরও সমস্যা।
নির্ঝর ছায়াকে পাজকোলে উপরে নিয়ে যায়।
রুহি খাবার নিয়ে আসে।
ছায়াকে খাবার দিয়ে গিয়ে আবির কে কল করে,
–কেন এমন করেছো।
নিজের শরীরের অবস্থা দেখেছো।
এমন কাঠ হয়ে গেছো।
খাওয়া দাওয়া কেন ছেড়ে দিয়েছো।
–আপনি ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না।
–আমি জানি কিন্তু তাই বলে এমন করবা।
আমাদের সন্তানের কথাটা এক বার ভাববে না।
–আমার কষ্ট হয় খেতে।
খুব খারাপ লাগে।
–আর লাগবে না এখন আমি চলে এসেছি।
তোমার কাছে।
আর কষ্ট পেতে দিবো না।
–ছিলেন কই এতো দিন।
–সে সব কথা এখন নয় পরে।
নির্ঝর ছায়াকে খাইয়ে দেয়।
ছায়া বাধ্য মেয়েড মতো খেয়ে নেয়।
কষ্ট হলেও জোর করে খেয়ে নেয়।
নির্ঝর এর জন্য।
খাইয়ে দিয়ে ছায়ার কপালে চুমু দিয়ে শুইয়ে দেয়।
ছায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে নির্ঝর ।
প্রান পাখি ফেরত পেয়ে আজ ছায়াও ঘুমাচ্ছে।
খুব গভীর ঘুম।
ছায়াকে ঘুমিয়ে দিয়ে নির্ঝর উঠে এলো।
আবিরের সাথে দেখা করলো।
কিছু সময় কথা বলে নির্ঝর নিজের রুমে চলে এলো।
বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।
নির্ঝর এর বেঁচে থাকা টা।
ছায়াকে ফিরে পাওয়াটা সব কিছুই আল্লাহ তায়লার দান।
নির্ঝর শুকরিয়া আদায় করে।
বারান্দা থেকে দেখা যাচ্ছে ছায়াকে।
মাত্র কিছু দিনে মেয়েটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
গলার হাড় গুলো জেগে গেছে।
দুটো হাত নির্ঝর এর এক মুঠোতে চলে আসবে এমন মনে হচ্ছে।
চোখের নিচে বাদামী বর্ণ ধারন করেছে খুবই রোগাটে হয়ে গেছে।
পেটটা হালকা উচু হয়েছে।
মায়াবতীর বাবু হবে ওদের সন্তান পৃথিবীতে আসবে কথাটা ভেবে নির্ঝর এর বেশি ভালো লাগছে।
সত্যি আজ সব সুন্দর স্বপনের মতো।
আলোকিত হয়ে আছে।
নির্ঝর চোখ বন্ধ করে ছায়ার কষ্ট ফিল করছে।
সত্যি একটা মানুষ অন্য একটা মানুষ কে কতোটা ভালোবাসলে এতোটা কষ্ট পাওয়া যায়।
,
,
,
–আআআআআআ
সব ভেঙে ফেলবো আমি সব ভেঙে ফেলবো।
তমা নিজের রুমের সব তচনচ করে দিচ্ছে।
বিকট চিৎকার দিয়ে উঠছে বারে বার।
সব কিছু ভেঙে ফেলছে তমা৷
–কেন নির্ঝর কেন কেন আমার হতে পারলে না তুমি।
আমি কি করে তোমায় আমার বানাবো।
সব পদ্ধতি অবলম্বন করে ও সেই তুমি ওই ছায়ার হয়ে গেলে।
দরজার কাছে এসে দাঁড়ালেন তমার বাবা।
মেয়েকে এমন পাগলের মতো করতে দেখে রুমে আসলেন,
–কি করছো এগুলা মামনি।
–সব করলাম বাবা কিছুতেই ওই ছায়াকে পথ থেকে সরাতে পারলাম না।
না নির্ঝর কে আমার করতে পারলাম।
–তুমি চিন্তা করো না মামনী আমি আছি ত।
–না বাবা আমার সব কিছু ভেঙে গুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে।
–মা তুমি চিন্তা করো না সত্যি বলছি সব ধরনের সাহায্য করবো।
আমার কাছে একটা বুদ্ধি আছে।
–কি বুদ্ধি।
–তুমি চিল হও আমি বলছি।
–বলো বাবা।
–আগে খেয়ে নেও আমি এগুলা পরিষ্কার করছি।
তমার বাবা মেয়ের রুম পরিষ্কার করিয়ে মেয়েকে খাইয়ে দেয়।
–শুন তবে,।
………….
।।।।।।।
।।।।।।।
।।।।।।।।
।।।।।।।।
।।।।।।।।
–বাবা তাহলে ত দারুন হয়৷
–হ্যাঁ দারুন ত হবেই কার বাবা বুদ্ধি দিয়েছে তা ত দেখতে হবে।
–হ্যাঁ বাবা সত্যি দারুন হবে।
–হুম তাহলে তুমি এবার শান্ত হও।
–হ্যাঁ বাবা এবার শান্ত থেকেই সব করতে হবে।
কোন জোরজুলুম নয়।
–হবে হবে সব হবে।
শুধু শান্ত মতে প্লান অনুযায়ী চলতে হবে।
–হ্যাঁ বাবা প্লান অনুযায়ী চলতে হবে।
চলব,