#পরিণীতা
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১১
২২.
পর্দা ভেদ করে কিছুটা রোদের আলো চোখে পড়তে ই ঘুম ভেঙ্গে গেলো পরীর। রাতের কথা মনে পড়তে ই সোফায় তাকায় অর্ণব এর ঘুমন্ত মুখটা দেখতে পায়। সত্যি ই কী সব প্রশ্নের উত্তর হয় না। অর্ণবকে কালকে জিজ্ঞেস করছিলাম আমার অতীত জেনে ও আমাকে ভালোবাসবে কিনা উওর দিয়েছিলো সব প্রশ্নের উওর হয় না।।।
যা ই হক আমি খুব ভালো ই জানি আমার অতীত যখন অর্ণব জানবে একমুহূর্তের জন্য ও এ বাসায় রাখবে না।।।।
আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা রেডি করার জন্য গেলাম।
–আপামনি ঘুম ভাঙ্গছে আপনার।
টেবিলে খাবার সাজাতে সাজাতে বিমলা কথাটা বললো আমাকে।
–নাস্তা রেডি করে ফেলেছো দেখছি।
–হে আপামনি, আপনে শুধু খাইতে বসেন।
অর্ণবকে ডেকো, কথাটা বলে ই উপরে তাকাতে দেখলাম শার্ট এর হাতা ফোল্ট করতে করতে নিচে নামতেছে।
–অনেকটা লেইট হয়ে গেছে টিয়াপাখি, আমাকে ডাকোনি কেনো।
মুখে একটা ব্রেড পুরে দিয়ে আমাকে এ কথা বললো,
–এসব কী ধরনের কথা।
–ওহ্ বুঝেছি বিমলার সামনে বলছি বলে লজ্জা পাচ্ছো।
আমি বিমলার মুখের দিকে তাকাতে ই দেখলাম লজ্জা মাখা মুখ হাসতেছে। আমি তাকাতে ই কিচেনের দিকে চলে গেছে।
–টিয়াপাখি রাগলে তো তোমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে।
রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে এতো কিছু হয়ে গেলো তারপর ও এই মানুষটার কোনো চিন্তা নেই।
–এই টিয়াপাখি খাবারটা শেষ করে রাগ দেখিয়ো আমার উপর।
এবার পরী রাগ দেখিয়ে চলে ই গেলো রুমে। অর্ণব খাওয়া শেষ করে রুমে যায়। পরীকে পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
–টিয়াপাখি রাগ করো কেনো। আমার একটা মাত্র বউ তাকে আদর করে ডাকবো না তো কাকে আদর করে ডাকবো বলো।
পরী হাত ছাড়িয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বলে
–এই ভালোবাসাটুকু কতোদিন থাকবে জানতে পারি কী।
–যতদিন আমার দেহে প্রাণ আছে ঠিক ততদিন।
–কয়েকদিন পর এই কথাটা মিথ্যে প্রামন হবে। এই পরী বলে দিলো।
–তুমি আমাকে ভালোবাসো পরী।
–না। আর কখনো ভালোবাসবো ও না। সময় হলে ঠিক আপনাকে মুক্ত করে দিয়ে চলে যাবো।
–কয়েকদিন পর এ কথাটা ও মিথ্যা প্রমান হবে এই অর্ণব বলে দিলো।
–ইম্পসিবল মিস্টার অর্ণব চৌধুরী।
–চেষ্টা করলে সব কিছু পসিবল মিসেস পরিণীতা চৌধুরী।
কপলে একটা চুমু দিয়ে বেরিয়ে পড়লো অর্ণব। পরী অর্ণব এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
২৩.
প্রায় তিনটে বাজে। পড়নে প্লাজু আর একটা টি-শার্ট। বসে বসে ফোনে গেমস খেলছি।
–অমা আপামনি আপনার চুল দেখি অনেক জরজেট।
–হোয়াট।চুল জরজেট মানে কী বিমলা।
–এই যে দেখেন আপনের চুলগুলো কত্তো সুন্দর। এক্কেরে সোজা। একটা লগে আরেকটা লাইগা নাই।
–এটাকে জরজেট বলে।তোমার হাতে এটা কীসের বাক্স।
–অর্ণব দাদা ভাই পাঠাইছে আপামনি আপনার লাইগা। আর বলছে।
আরে এভাবে হাসতেছো কেনো কী বলেছে।
–আর বলছে…
–আচ্ছা বাক্সটা সোফার উপর রেখে যাও আর কী বলসে হাসি থামলে আমাকে এসে বলো কেমন।
–আর বলছে। আপনি যদি শাড়িটা না পড়েন তাহলে অর্ণব দাদাভাই এইসা শাড়ি পাড়াইবো।
এটা বলে ই এক দৌড় দিয়ে রুম থেকে চলে গেলো।
আমি বসা থেকে উঠে গিয়ে বাক্সটা হাতে নিলাম। অানবাক্স করতে দেখলাম শাড়ী সাথো জুয়েলারি আর একটা সুন্দর ডিজাইন করা কার্ড রাখা।
কার্ডটা খুলতে ই প্রথমে চোখে পড়লো বড় করে লিখা।
–টিয়াপাখি উপরে চোখ তুলে।
উপরে তাকাতে ই দেখলাম। শাড়টা পড়ো আর সুন্দর করে সাজো। আর বাকি কথাগুলো আমি ফোনে মেসেজ করে বলছি। যদি না করো তাহলে আমি রাতে মজাটা বুঝাবো।
এমন ভাবে কথাটা বললো ভয় পেয়ে আমি শাড়ি পরতে শুরু করলাম। কিন্তু আগা মাথা কিছু ই পাড়ি না।
ইউটিউব দেখে দেখে ট্রাই করলাম কিন্তু একা পাড়তেছি না। তাই বিমলাকে ডাকলাম।
ফোন হাতে নিতে ই দেখলাম অর্ণব এর মেসেজ।
“” কী গো টিয়াপাখি খুব কষ্ট হচ্ছে শাড়ি পড়তে, কষ্ট করে পড়ে নেও। মানুষ তার স্বামীর জন্য কতো কিছু করে তুমি না হয় শাড়ী ই পড়বা। আধঘন্টার ভিতর রেডি হয়ে নিচে নেমে এসো। গাড়ি দাড়িয়ে আছে।””
রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে উনি একটু পর পর আমাকে এটা ওটা আদেশ করতেছে।
রেড আর গোল্ডেন কালারের কম্বিনেশন এ একটা শাড়ি। শাড়িটা খুব সুন্দর দেখতে। অর্ণব এর পছন্দ আছে বলতে হবে।
–হ আপা মনি না হয় কী আর আপনেরে পছন্দ করে।
বিমলার এমন কথা শুনে হেসে দিলাম। হাসলে কাজ হবে না ঠিক টাইমে রেডি হয়ে নিচে যেতে হবে। আমি না চাওয়া শর্তে ও কাজগুলো আমার করতে হবে।
রেডি হয়ে নিচে গেলাম যেতে ই দেখি গেইটের সামনে গাড়ি দাঁড়ানো। গাড়ি পাশে যেতে ই একটা ছেলে সালাম দিয়ে গাড়িতে বসতে বললো।
ধুর আমার মনে যে কী ঘুরে বড্ড ভয় হচ্ছে কোথায় নিয়ে যাবে অর্ণব প্রায় রাত হয়ে গেছে। আর এভাবে সাজতে বললো বা কেনো। এই কেনো কেনো উওর পাবো অর্ণব সামনে আসলে ই।
চলবে