পূর্ণতা নাকি শূন্যতা ২ পর্ব-১০

0
297

#পূর্ণতা_নাকি_শূন্যতা
#সিজন_২
#রেজওয়ানা_রমা
#পর্ব_১০ (বিয়ে)

গায়ে হলুদের জন্য বাড়িতে যখন তোলপাড় শুরু হয়ে যায় তখন ঈশার মন ছেয়ে থাকে চিন্তার কালো ছায়া। একদিকে নিজের পরিবার ভালোবাসা আর অন্য দিকে অচেনা কেউ। কে সে? যে এই বিয়েতে বাধা সৃষ্টি করছে। বিয়েটা সম্পন্ন হওয়ার কারনে যদি পরিবারে ক্ষতি হয় তাহলে কি হবে তা ভাবতেই ঈশার শরীর শিহরিত হয়ে উঠে। দোতলা থেকে যখন সবার ব্যস্ততা পর্যবেক্ষণ করছিল ঈশা তখনই পিছন থেকে কারো বাহুর ধাক্কায় পিছনে ঘুরে তাকায়।

– কিরে কি ভাবিস?
– না কিছু না।
– মন খারাপ?
– না রে এমনি দেখছি
– কিছু একটা তো ভাবছিস
– হুম ভাবছি তো। আমি তো সংসারজীবন শুরু করতে যাচ্ছি তুই কবে কি করবি?
– হুমম মনের মতো তো কাউ কে পাচ্ছি না সোনা।
– বিয়ে বাড়িতেই কাউ কে খুজে নাও না
– খুজছি কিন্তু সকাল থেকে তাকে পাচ্ছি না
– ওহহো। তা কে সে?
– উমম। বলবো?
– আরে বল বল
– ওই যে তোর জামাই এর একটা ফ্রেন্ড আছে না অর্থ

অর্থ নাম টা শুনতেই ঈশার বুক কেপে উঠে। ভ্রু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে,

– অর্থ?
– হুম। বেশ হ্যান্ডসাম
– নোভা..
– প্লিজ জ্ঞান দিস না। পারলে লাইন করিয়ে দে
– কিন্তু তুই জানিস না অর্থ..
– কি গার্লফ্রেন্ড আছে?
– না। বাট…
– তাহলে কোনো প্রবলেম নেই

এরই মধ্যে নোভার ডাক পড়ে হলুদের আয়োজন করতে। নোভা আর এক মূহুর্তেও না দাঁড়িয়ে চলে যায়।
আর ঈশা উদাসীন হয়ে চিন্তায় মগ্ন। অর্থ তো তাকে পছন্দ করে তাহলে নোভা কে কখনও মেনে নেবে না। নোভা যে স্বপ্ন বুনছে তা কি ভেঙে যাবে।

_________________

– মামা এখন কি হবে ও বাড়িতে তো আমি ঢুকতেই পারবো না
– তুমি এমন একটা কাজ করবে আমি কখনও ভাবি নি। তুমি আমার সব প্লান ভেস্তে দিলে। কেন কেন কেন? কেন করলে তুমি এটা?
– ঈশা কে দেখে মাথা নষ্ট হয়ে যায়। যা কখনও কোনো মেয়ে কে দেখে হয় নি। আমি কি করবো?
– তাই বলে এখনই? একটু ধৈর্য্য ধরতে পারলে না? এখন কি করে ঈশা কে নিয়ে আসবে? কি করে ঈশা কে শেষ করবে?
– খবরদার! ঈশা কে মারার চেষ্টাও করো না। তাহলে আমি তোমাকে মেরে পুতে ফেলবো
– অর্থ!
– গলা নামিয়ে কথা বলো। আমারই বাড়ি তে থাকবে আমারই টাকায় ফূর্তি করবে আবার আমারই সাথে গলা উচু করে কথা বলবে?
– আমি তোমার মামা। কি ভাবে কথা বলছো?
– হ্যাঁ মামা। সৎ মামা। তোমার বোন কিন্তু আমার আপন কেউ নয়। কিন্তু ঈশা আমার আপন। খবরদার ঈশার ক্ষতি করার চেষ্টাও করো না।

অর্থের এমন আচরণে রীতিমতো ভড়কে যায় অর্থের সৎ মামা। কোনো উপায় না পেয়ে অর্থের কথায় সমর্থন জানায় তিনি। অতঃপর বলেন,

– তাহলে এখন কি করবে?
– এখন তোমার ছেলেই সব করবে। যখন সিদ্ধাত ঈশা কে ভুল বুঝবে তখন তোমার ছেলেই ওকে এবাড়িতে আনবে আর সেদিনই ঈশা আমার হবে হাহাহাহা
– কিন্তু ভাগ্নে সেটা কি করে?
– দেখতে থাকো কি কি হয় চৌধুরী বাড়িতে
বলেই অট্টহাসিতে মেতে উঠে অর্থ।

সন্ধ্যায় গায়ে হলুদের অপরুপ সাজে যখন সজ্জিত ঈশা তখন দুচোখে হাজারো স্বপ্ন লুকোচুরি খেলছে। নতুন জীবনের পা রাখতে আর মাত্র কয়েক মূহুর্ত বাকি। সব কিছু যেন স্বপ্নের মত কাটছে। সিদ্ধাতের এতো ভালোবাসা, এতো যত্ন, যা শুধুমাত্র কল্পনা ছিল বাস্তবায়ন হবে তা ভাবনার বাইরে ছিল ঈশার। কিন্তু সব জল্পনা কল্পনা শেষ হয়ে প্রতিটা স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। পরনে হলুদ লেহেঙ্গা, মাথায় দোপাট্টা, ম্যাচিং জুয়েলারি, মুখে মেকআপের আবরন। ধীর পায়ে যখন ঈশা নিচে আসছে তখন তার সামনে হলুদের সাজে এসে দাঁড়ায় সিদ্ধাত, পরনে হলুদ পাঞ্জাবী। হঠাৎই সিদ্ধাত সামনে আসায় দাঁড়িয়ে যায় ঈশা। ঈশা কিছু বলার আগেই সিদ্ধাত বলে,
– পরী হেটে যায় না।
নোভা: তাহলে কি উঠে যাবে?
সিদ্ধাত: হুম যেতেই পারে।

কথাটা বলেই ঈশা কে কোলে তুলে নেয় সিদ্ধাত। সঙ্গে সঙ্গে সবাই চেচিয়ে উঠে। ঈশা কে নিয়ে নিচে চলে যায় সিদ্ধাত। স্টেজে বসিয়ে দিয়েই অয়ন বলে,
– আরে আমার ভাবী কে তো দারুণ লাগছে।

নোভা: ভাবি? তোর ভাবি হয় কিভাবে?

নোভার কথায় অয়ন থমমত খেয়ে উত্তর দেয়,

– আরে ভার্সিটির সিনিয়র ভাইয়ের বউ তো ভাবিই হবে নাকি

অয়নের কথায় সবাই হেসে দেয়। ঈশার পাশে সিদ্ধাত। এক এক করে সবাই তাদেরকে হলুদ ছুইয়ে দেয়। অনেক আনন্দ আর খুশির সাথে হলুদ সন্ধ্যার অনুষ্ঠান শেষ করে। আগামীকাল বিয়ে। ঈশার চোখে ঘুম নেই। বিয়ের পরই সিদ্ধাতের সাথে চলে যেতে হবে এই ভেবে একটু মন খারাপ। বেলকানিতে বসে বসে আকাশের চাঁদ দেখছে আর আগামী দিনের স্বপ্ন বুনছে।

____________

– তুই রেডি তো?
– হ্যাঁ ভাইয়া আমি একদম রেডি
– কাল বিয়ের আসরেই যেন ঈশা বাধ্য হয় বাড়ি ছাড়তে
– তুমি নিশ্চিত থাকো ভাইয়া। ঈশা নিজেই আসবে তোমার কাছে হাহা
– হাহাহাহা।

টুট টুট টুট
ফোন কেটে যায়। অর্থ সারারাত ঈশা কে কল্পনা করে কাটিয়ে দেয়। আর এদিকে কেউ একজন বিয়ে ভাঙার পরিকল্পনা করছে।

সকালে হতেই বিয়ের ধুম পড়ে যায় বাড়িতে। লাল বেনারসি, লাল দোপাট্টা, কপালে লাল টিপ, মুখের মেকআপের প্রলেপ, ভারী গহনায় নববধূর সাজে সজ্জিত ঈশা। অপর দিকে শেরওয়ানির, মাথায় টোপর পরে বরের সাজে সিদ্ধাত ঈশার অপেক্ষার করছে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে যখন ঈশা কে নিয়ে নিচে আসে তখন সিদ্ধাতের চোখ যেন সরছে না।
ঈশা কনে সেজে সিদ্ধান্তের পাশে বসে আছে। কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর আগ মূহুর্তেই একটা মেসেজ আর কিছু ছবি আসে সিদ্ধাতের কাছে। যা দেখা মাত্রই সিদ্ধাতের মাথায় রক্ত চড়ে বসে। চক্ষুজোড়া রক্ত বর্ণ ধারন করে। সে চাইছে বিয়েওটা এক্ষুনি ভেঙে দিয়ে চলে যেতে। কিন্তু একদিকে ভালোবাসা আর অন্য দিকে বাড়ির সম্মানের কথা ভেবে দাতে দাত চেপে বিয়ে সম্পন্ন করে।
সন্ধ্যায় ঈশা আর সিদ্ধাতকে নিয়ে হইচই পড়ে যায় পুরো বাড়িতে। ঈশা সিদ্ধাতের পাশে বসে থাকা স্বত্ত্বেও ঈশার সাথে কথা বলছে না। এমন কি ঈশার দিকে তাকাচ্ছে না পযর্ন্ত। চোখে মুখে গম্ভীরতার ছাপ। যা ঈশার চোখ এড়িয়ে যায় না। ঈশা উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন করে,

– তোমার কি হয়েছে সিদ্ধাত ভাইয়া?

সিদ্ধাত ঈশার কথায় কর্ণপাত করে না। ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঈশা আবারও জিজ্ঞাসা করে,

– তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? সেই কখন থেকে দেখছি কেমন যেন চুপচাপ আছো।
– সব কিছুর কৈফিয়ত কি তোকে দিতে হবে?
– আমি কৈফিয়ত চাইছি? আমি তো জিজ্ঞাসা করছি।

সিদ্ধাত আর কোনো কথা বলে না। ঈশারও মন টা খারাপ হয়ে যায়।

এদিকে,
– সিদ্ধাত তো বিয়ে করে নিলো ভাইয়া। এই ছবি গুলো তো কাজেই দিলো না
– ড্যাম ইট। ঈশা অন্য কারো হতে পারে না। ঈশা শুধু আমার, শুধু আমার। শেষ করে দে সিদ্ধাত কে। সিদ্ধাত মরে গেলে ঈশা আমার হবে শুধু আমার
– ভাইয়া তুমি শান্ত হও। কাল সিদ্ধাতের শেষ দিন হবে। আর ঈশা তোমার হবে।

ফোন কেটে দিতেই অর্থ ফোনটা এক আছাড়ে ভেঙে ফেলে। রুমের সব জিনিস ভাঙচুর করছে। নিজের রাগ সামলাতে পারছে না। সিদ্ধাত কিভাবে বিয়ে করে। এমন ছবি দেখার পরেও কি করে ঈশাকে বিয়ে করে কি করে।

____________

বাসর ঘরে ঈশা দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে সিদ্ধাতের অপেক্ষা করছে। মুখে লজ্জার ছাপ, আর মনে ভালোবাসা। তার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সিদ্ধাত প্রবেশ করে। সিদ্ধাত কে দেখা মাত্র ঈশা বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায়। সিদ্ধাত তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। কিন্তু সিদ্ধাতের এই রাগের কারণ ঈশার অজানা। ঈশা যখনই সিদ্ধাতের পায়ে হাত রেখে সালাম করতে যায় সিদ্ধাত দু পা পিছিয়ে যায়। ঈশা অবাক হয়ে মাথা তুলতেই সিদ্ধাত বলে,

– তোর মত মেয়ের স্পর্শ আমার কাছে বিষের মত লাগে

সিদ্ধাতের এমন কথার অর্থ বুঝতে পারে না ঈশা। উঠে দাঁড়িয়ে বলে,

– কি বলছো? আমি বুঝতে পারছি না
– কেন বিয়ে করলি?
– মানে?
– অয়ন কে কেন ঠকিয়েছিস?
– আমি অয়ন কে কিভাবে ঠকিয়েছি?
– হ্যাঁ হ্যাঁ তুই। তুই অস্বীকার করিস অয়নকে তুই ভালোবাসিস না? তুই অস্বীকার করিস কাল তুই অয়নের সাথে মিট করতে যাস নি? তুই অস্বীকার করিস কাল তুই অয়ন কে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলিস নি? তুই অস্বীকার করিস অয়ন কে এই বিয়েতে আনার মূল উদ্দেশ্য ছিল অয়নের সাথে পালিয়ে যাওয়া?
– সিদ্ধাত ভাইয়া
– ওই মুখে আমার নাম উচ্চারণ করবি না। এই গুলো কি?

বলেই কি ফোনের সেই ছবি গুলো ঈশার সামনে ধরে। ঈশা ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে কাল অয়নের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল সেই ছবি। কিন্তু এগুলো এভাবে কেন কেউ উপস্থাপন করছে। ওরা তো অন্য বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিল।

– সিদ্ধাত ভাইয়া আমরা তো…
– কি? কেন গিয়েছিলি
– আমি কোনো খারাপ উদ্দেশ্য যাই নি।
– কতটা ভালো উদ্দেশ্যে গিয়েছিলি? কেন গিয়েছিলি?
– সেটা আমি তোমাকে বলতে পারবো না
– বলার মতো মুখ থাকলে না বলবি
– তুমি যে অভিযোগ করছো তা ভুল।
– কাল সকলে যেন তোর মুখ আমাকে দেখতে না হয়
– সিদ্ধাত ভাইয়া!

সিদ্ধাত দ্রুত পায়ে হেটে বেলকানিতে চলে যায়। ঈশাকে তার অসহ্য লাগছে। যাকে এতো ভালোবাসে সে অন্য কারো সাথে ছিহঃ। ভালোবাসে বিধায় গায়ে হাত তুলতে পারছে না। আবার ঈশাকে সহ্য করতেও পারছে না। বেলকানিতে বসে সিগারেট ধরিয়ে নেয়। আর ঈশার দুচোখ বয়ে পানি পড়ছে। সিদ্ধাত এভাবে তাকে ভুল বুঝবে কখনও ভাবে নি ঈশা। যে রাতে সিদ্ধাতের ভালোবাসা পাওয়ার কথা ছিল সেই রাতে অবহেলা আর বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আদেশ ঈশাকে অসহায় করে দেয়। ফ্লোরে বসে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে যায় সে।

সকালে সিদ্ধাত রুমে আসতেই দেখে ঈশা ফ্লোরে গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। ঈশা কে এভাবে দেখে সিদ্ধাতের বুকে চিনচিন ব্যাথা অনুভব হয়। দ্রুত ঈশার দিকে এগিয়ে যায়। কোলে তুলে নিতে যাবে তখনই গত রাতের সব চোখের সামনে ভেসে উঠে। আর নিজেকে সরিয়ে নেয় ঈশার কাছে থেকে। রুম থেকে বেরিয়ে নিচে চলে যায় সিদ্ধাত। আর যাওয়ার সময় রুমের দরজা ঠাস করে লাগিয়ে দেয়। আর আওয়াজে ঈশার ঘুম ভেঙে যায়। ফ্লোর থেকে ঝটপট উঠে পড়ে। ফ্রেস হয়ে একটা গোলাপি কালারের ভারী শাড়ি পরে। মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরছে। অয়নের সাথে ছবি কে তুলল? কে এই ছবি গুলো পাঠিয়েছে? অয়ন কি এগুলো জানে? অয়নের সাথে কথা বলার জন্য বের হলে বাড়িতে কোথাও অয়নকে পায় না। রুমে এসে ফোন করলে অয়নের ফোন বন্ধ পায়। নিজেকে কিভাবে নির্দোষ প্রমান করবে? কিভাবে সত্যি টা সিদ্ধাতকে বিশ্বাস করাবে। এরই মধ্যে রুমে প্রবেশ করে মমতা আর মায়া বেগম। ঈশার কাছে গিয়ে মমতা বেগম বলেন,

– আজকে তো বউভাত। একটু পরের পার্লরের মেয়ে গুলো আসবে। এই যে এটা পরিস
ঈশা: ঠিক আছে

ঈশার কথায় মায়া বেগম কিছু একটা সন্দেহ করেন। তাই জিজ্ঞাসা করেন,
– তোমার কি মন খারাপ?
-কই না তো
– ওহ। আচ্ছা

মায়া আর মমতা বেগম বেরিয়ে যায়। আর ঈশা বউভাতের লেহেঙ্গা টা বার বার দেখছে। আজ কি তার বউভাত হবে? নাকি সত্যি সত্যি বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে। সিদ্ধাত কি তাকে বিশ্বাস করবে?
একটু পরে পার্লারের লোক চলে আসে। ঈশা রেডি হচ্ছে সিদ্ধাতের রুমে। হঠাৎই সিদ্ধাত রুমে প্রবেশ করতেই দেখে ঈশা বউভাতের জন্য সাজছে। সিদ্ধাত সবাই কে উদ্দেশ্য করে বলে,

– ঈশার সাথে কথা আছে। আপনারা একটু বাইরে যান।

সিদ্ধাতের কথায় ঈশার বুক কেপে উঠে। সিদ্ধাত কি বলবে? চোখে ভয়ের চিহ্ন ফুটে উঠে। বার বার ঢোক গিলতে থাকে। সিদ্ধাত রুমের দরজা লাগিয়ে ঈশার কাছে এসে গম্ভীর স্বরে বলে,

– বাড়ির কেউ যেন কিছু বুঝতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখবি।

ঈশা শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দেয়। সিদ্ধাত আবারও বলে,

– বাড়ির অনুষ্ঠান শেষ হলেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবি। আজকের দিন টা শুধু অ‍্যালাও করছি। তাই বলে এই নয় যে তোর সাথে সংসার করবো।
– সিদ্ধাত ভাইয়া আমি কিছু করি নি। তুমি বিশ্বাস করো।
– তাহলে কেন গিয়েছিলি? তোদের হাতের ছবি। তোদের এক সাথে দেখার করার ছবি। তুই ওকে প্রপোজ করছিলি সেটার ছবি। অয়ন তোর হাতে কিস করেছে সেটার ছবি এগুলো সব কি মিথ্যা ঈশা?
– হ্যাঁ সব মিথ্যা।
– এতো কিছু প্রমান দেখেও বলছিস মিথ্যা? ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম সব মিথ্যা। তাহলে এখন সত্যিটা তুই বল।
– না। আমি তোমাকে কিচ্ছু বলতে পারবো না এখন। কিন্তু আমি সবটা বলবো আমাকে একটু সময় দাও
– সময়? নো ঈশা। আর একবারও না। তুই আমার সামনে থেকে চলে যাবি এটাই আমার শেষ কথা

কথাটা শেষ করেই বেরিয়ে যায় সিদ্ধাত। আর ঈশা কষ্টে দুফোটা চোখের পানি ফেলে। পার্লারে লোক রুমে প্রবেশ করতেই ঈশা চোখের পানি মুছে স্বাভাবিক হয়।
কিছুক্ষন ঈশাকে নিয়ে নিচে নিয়ে যায়। ঈশার পাশের সিদ্ধাত বসা। কিন্তু সিদ্ধাত একটা বারের জন্য ঈশার দিকে তাকাচ্ছে না। সিদ্ধাতের এমন ব্যবহার ঈশাকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। প্রিয়জনের অবহেলা ভীষন যন্ত্রণাদায়ক। সবাই যখন বউভাতের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত তখন একজন সার্ভেন্ট আসে ঈশা আর সিদ্ধাতের কাছ জুস নিয়ে। ঈশাকে জুস নেওয়ার জন্য ইশারা করলে ঈশা না জানিয়ে দেয়। অতঃপর সে পকেট থেকে একটা রিভলবার বের করে ঈশার মাথা ধরে বলে,

– যে যেখানে আছো সে সেখানেই থাকবে নয়তো খুলি উড়িয়ে দেবো

#চলবে