#ভালোবাসি
#পর্বঃ১০
#Tanisha Sultana (Writer)
অফিসে বসে আছে সায়ান। কোনোকিছুই ভালো লাগছে না। সকাল থেকে কিছু খাইও নি। তখন মায়া আসে
“সায়ান আই এম সো হ্যাপি
মায়া সায়ানকে জড়িয়ে ধরে
” মায়া এটা অফিস। আর কথায় কথায় এতো ঢলাঢলি করার কি আছে। দুর থেকে কথা বলতে পারো না
মায়া সরে গিয়ে বলে
“সরি খুশিতে ধরে ফেলছি
” খুশির কারণ
“তুলি চলে গেছে। আর আমার বাবাও রাজি হয়ে গেছে। এবার একটা ভালো দিন দেখে আমরা বিয়ে করে নেবো
” আমি তো কখনো তোমাকে বলি নি আমি তোমাকে বিয়ে করবো
“কিহহ। তুমি না বললে তুলির সাথে তোমার ঠিক যায় না। তুলি বাচ্চা মেয়ে। ওকে ওর মতো কারো সাথে বিয়ে দেবে
” আমি এসব ভেবেছিলাম কিন্তু এখন বুঝতে পারছি আমি ভুল করেছি
“মানে
” তুমি বুঝবে না
“বুঝিয়ে বললেই বুঝবো
” আমি বিবাহিত। একটা মেয়ের স্বামী। তো আমার মনে হয় তুমি অন্য কাউকে খুঁজে নাও
“তোমার বউ তো পিচ্চি। ওর সাথে তোমার মেচিং হয় না। তাছাড়া তুলিও তোমাকে পছন্দ করে না
” ও আমাকে পছন্দ করলো কি করলো না এতে আমার একদমই মাথা ব্যাথা নেই
“সায়ান তুমি আমাকে কি করে রিজেক্ট করতে পারো
” তুমি আমায় রিজেক্ট করছে আমি না।
“আমি তো সরি বলছি
” সরি দিয়ে তো সব ঠিক হবে না
“কি করবো আমি
” আমার থেকে দুরে থাকো। আসছি আমি
সায়ান অফিস থেকে বেরিয়ে যায়।
বাসায় এসে নিজের প্রয়োজনীয় সব কিছু গুছিয়ে বেরিয়ে পরে।
তুলি ওর মায়ের সাথে মামা বাড়ি যাচ্ছে। কয়েকদিন থাকবে সেখানে। সায়ানের বাবা ওদের নিয়ে যাচ্ছে।
সায়ান বাড়ি এসে কলিং বেল বাজায়। কিছুখন পরে দাদু এসে দরজা খুলে দেয়
“তুমি এখন এখানে?
” কেনো আমি কি আসতে পারি না
“কেনো পারবে না। এটা তোমার বাড়ি তুমি যখন খুশি তখন আসতে পারো৷ আমাদেরই তোমার পারমিশন নেওয়া উচিৎ
” দাদু এভাবে বলছো কেনো
“তো কিভাবে বলবো?
” তুলি
“একদম তুলির নামটা মুখে আনবে না। যাও তোমার প্রেমিকার কাছে
” দাদু ভুল বুঝবো
“কোনটা ভুল কোনটা ঠিক তুমি আমাকে শেখাতে এসো না।
দাদু চলে যায়। সায়ান তুলির রুমে যায় তুলি নেই। পুরো বাড়ি খোঁজে কোথাও তুলিকে না পেয়ে মায়ের রুমে যায়
“মা
সায়ানের মা ঘর গোছাচ্ছে
” বল
“তুলি কোথায়?
” কেনো?
“না মানে তুলিকে দেখছি না
“তুলিকে না দেখলেও হবে।
” মা এভাবে বলছো কেনো?
“আমি কাজ করছি
সায়ান জানে মাকে জোর করে লাভ হবে না। মা বলবে না। তাই রুহির রুমে চলে
“রুহি
” বল
“তুলি কোথায়?
” রিকের সাথে চলে গেছে
“মজা করিস না বল প্লিজ
” তুলিকে মিছ করছিস
“বলবি কি না
” মামা বাড়ি গেছে।
সায়ান নিজের রুমে চলে আসে। খুব রাগ হচ্ছে সায়ানের। কার ওপর রাগ হচ্ছে সায়ান বুঝতে পারছে না তুলির ওপর না কি নিজের ওপর।
তুলির ফোনে ফোন দেয় সায়ান। ফোন বন্ধ
“এই মেয়েটা এতো স্টুপিট কেনো? মন হচ্ছে চাপকে গাল লাল করে দেই
তুলির নানুবাড়িতে নানা নানু মামা মামি আর মামাতো একটা ভাই এই কয়জন।
তুলি ওর মামির কাছ থেকে পিঠা নানানো শিখছে। তেলে ভাজা পিঠা। পিঠা তেলের মধ্যে দিতেই অনেক টা তেল তুলির হাতে ওপর পরে। তুলি তো চিৎকার করে কান্না করছে। সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে তুলিকে নিয়ে। তুলি মামা আর নানার সাথে ডাক্তারের কাছে যায়। তুলি যাওয়ার পরেই সায়ান আসে।
তুলির মা মামি আর নানু বসে ছিলে তখন সায়ান ঢোকে
” কাকিমা তুলি কই
সবাই সায়ানকে দেখে অবাক
“সায়ান তুই?
সায়ান মাাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তুলির নানু সায়ানের কাছে এসে বসতে বলে। সায়ান নানুর পাশে বসে
” তুলি ডাক্তারের কাছে গেছে
“কেনো? কি হয়েছে ওর
” হাত পুরে গেছে
“কিহহ কতোটা পুরেছে? কিভাবে পুরলো? কখন আসবে
সায়ানের এসব পাগলামি দেখে সবাই মিটিমিটি হাসছে।
” কি হলো বলো
“তুই রুমে গিয়ে রেস্ট নে। তুলি আসলে জেনে নিস (তুলির মা)
সায়ান রুমে চলে যায়
ডাক্তার তুলির হাত ব্যান্ডেস করে দেয়। তুলি হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। তুলির নানা গেছে ঔষুধ কিনতে আর মামা একজন পরিচিত মানুষের সাথে কথা বলছে। তুলি একা দাঁড়িয়ে আছে
” তুলি
তুলি পেছন ঘুরে দেখে মায়া
“আপু তুমি এখানে
” এসেছিলাম দরকারে। তোমার সাথে দেখা হয়ে ভালোই হলো। কিছু কথা বলতে চায়
“বলো
” তুলি তুমি অনেক ছোট। দেখতে খুব মিষ্টি। তোমার লাইফে অনেক ভালো কেউ আসবে। তুমি প্লিজ সায়ানকে ছেড়ে দাও
“আপু তুমি হয়ত জানো না আমি অলরেডি চলে এসেছি। এবার তোমার সায়ানকো বইলো ডিভোর্স পেপারটা পাঠিয়ে দিতে আমি সাইন করে দেবো। আসি
মায়া কিছু বলতে চায় তুলি না শুনেই চলে আসে।
বাড়ি ফিরে তুলি কারো সাথে কথা না বলে রুমে চলে আসে। দরজা বন্ধ করে কেঁদে ফেলে
” তুই কাঁদছিস কেনো?
হঠাৎ সায়ানের গলা শুনে তুলি চারপাশে তাকায়। সায়ান খাটে শুয়ে ছিলো
“আপনি
” তো কি রিক ভেবেছিলি না কি
“কেনো এসেছেন এখানে। এখুনি বেরিয়ে যান
সায়ান তুলিকে ভালো করে দেখে বলে
” তুই আবার ওড়না ছাড়া ড্রেস পরেছিস
“তো। তো আপনার কি? একদম অধিকার দেখাতে আসবেন না। ভাই ভাইয়ের মতো থাকবেন। তাছাড়া আপনার মায়া তো হাটু পর্যন্ত ড্রেস পরে তাকে তো কখনো বলেন না। আমার বেলায় সব কিছু
” মায়াকে তো ওই রকম ড্রেসে দেখতে খুব ভালো লাগে
“তো দেখুন না না করছে কে
” কোথাও পোরা পোরা গন্ধ পাচ্ছি
“আপনার মাথা পুরছে তার গন্ধ পাচ্ছেন
“তুলি রাগলে তো তোকে পুরাই টমেটো টমেটো লাগে। ইচ্ছে করি খেয়ে ফেলি
” ধুর। বের হন আমার রুম থেকে
তুলি সায়ানের হাত ধরে টান দেয়। সায়ানকে এক চুলও নরাতে পারে না উল্টে সায়ানের ওপর তুলি পরে। সায়ান দু’হাতে তুলিকে জড়িয়ে নেয়
“আমাকে না বলে কেনো চলে এলি
” বেশ করেছি। আপনাকে বলবো কেন? কে আপনি
“আমি কে বোঝাবো
” ছাড়ুর আমাকে
“ছাড়বো না
” হাতে ব্যাথা পাচ্ছি
সায়ান ছেড়ে দেয়। তুলি উঠে দাঁড়ায়।
“আমি ছোট কিছু বুঝি না তাই বড়দের মধ্যে থেকে চলে এসেছি।
” এতো পাকনামি কেনো করিস তুই
“আসছেন কেনো? দেখুন আমি রিককে বিয়ে করবো না।
” কেনো করবি না
“সেটা আপনাকে বলবো না
” তুলি সায়ানকে নিয়ে খেতে আয়
তুলির মামি ডাক দেয়।
তুলি যেতে নেয়
“ভালো করে শুনিস নি কি বললো। বলেছে আমাকে নিয়ে যেতে
” আমি কি আপনাকে কোলে করে নিয়ে যাবো না কি
“চাইলে নিতে পারিস
” হাতির মতো শরীর দেখছেন আপনার
“আমাকে হাতি বললি
” শুধু হাতি না গোমরা মুখো হাতি
সায়ানকে ভেংচি কেটে চলে যায় তুলি। তুলিকে তুলির মা খাইয়ে দিচ্ছে। সায়ান তুলির পাশে বসে খাচ্ছে।
চলবে