অত্যাচারী বউ পর্বঃ ১

0
1847

অত্যাচারী বউ
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ ১

বাসর ঘরে ঢোকা মাএই বউ এর হাতে ঠাস করে একটা থাপ্পড় খেলাম( সাঈদ)

আপনার সাহস তো কম না আমার অনুমতি না নিয়ে আমার রুমে আসার সাহস হয় কী করে. ??( মায়া)

সাঈদঃ না মানে ইয়ে মানে আমি জানতাম না আসলে…

মায়াঃ জানতাম না মানে কী হ্যা আর এখনো বিয়ের কাপড় গুলো পড়ে আছেন… লজ্জা করে না কাপড় গুলো এভাবে পড়ে থেকে নোংরা করতে জীবনে কখনো এত দামী কাপড় পড়ছেন…

সাঈদঃ ঠিক সে মুহূর্তে আমার মনে ভিতর দিয়ে কত বড় একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছিলো সেটা বলতে পারবো না…

আপনারা হয়তো ভাবছেন মেয়েটা আমার বউ হয়ে আমাকে এই কথা গুলা বলার সাহস পাইলো কোথায় তাহলে শুনুন…

আমার জন্মের পর পরে মা যায় তার পর বাবা আরেকটা বিয়ে করেন..

কিন্তু বাবা যাকে বিয়ে করে এনেছিলেন তিনি আমাকে একটুও ভালোবাসতেন না সব সময় মার ধর করতো আস্তে আস্তে যখন বড় হয়ে গেলাম তখন তো মারতে পারতো নানান খারাপ ভাষায় গালি দিতো আমি সব চুপচাপ সহ্য করে নিতাম একমাত্র বাবার দিকে চেয়ে কারণ তিনি আমাকে খুব ভালোবাসতেন লুকিয়ে আমার জন্য খাবার নিয়ে আসতেন কিন্তু হঠাৎ দু দিন আগে বাবার ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়াই ডাক্তার বলেন ১০ লাখ টাকা লাগবে অপারেশন এর জন্য কিন্তু আমাদের কাছে টাকা ছিলো না ঠিক তখনি আমার সৎ মা বললো ওনার খালাতো বোনের মেয়েকে বিয়ে করলে ১৫ লাখ টাকা দিবেন কিন্তু সত্য একটাই ঘর জামাই থাকা লাগবে…

শুধু মাএ বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে রাজি হয়ে গেছিলাম আর আজ বিয়েটা হয়ে গেলো বাকি টুকু দেখুন..



মায়াঃ এই যে আপনি কখনো ভাববেন না আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছি আমার বয়ফ্রেন্ড আছে আর হ্যা কখনো যদি ভুলেও আমায় টার্চ করেছেন তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না…

সাঈদঃ আচ্ছা ?

মায়াঃ আপনার এই ঘরে জায়গায় শুধু এই ঘরের মেঝেতে বিছানায় না…

সাঈদঃ আচ্ছা তার পর কাপড় গুলো চেনজ করে মেঝেতে শুয়ে পড়লাম…

মায়াঃ বাবা আর ছেলে পেলানো এমন একটা আনস্মার্ট ছেলের সঙ্গে এক ঘরে থাকা যায়,…..


তার পরের দিন…
খুব সকাল বেলা উঠে বাবাকে দেখতে গেলাম….

বাবাঃ আমাক মাফ করে দিস আমার জন্যই তোকে….

সাঈদঃ না বাবা এসব তুমি কী বলছো আমি তোমার জন্য সব কিছুই করতে পারি…

বাবাঃ তোর মা ঠিকি বলেছিলো আমার ছেলেটা আমার চেয়ে তোমাকেই বেশি ভালোবাসবে আজ তার প্রমান টাও পেয়ে গেলাম……

সাঈদঃ বাবা এখন আসি অনেক বেলা হয়ে গেছে।

বাবাঃ আর একটু বসে থাক না আমার পাশে…


আর ওদিক


মায়াঃ বাবা ছোট লোকের বাচ্চাটা কোথায় গেছে হ্যা…

মায়ার বাবাঃ মায়া,চুপ কর ও তোর স্বামী আর তুই তাকেই এভাবে বলছিস..

মায়ার মাঃ মায়া তো ঠিকি বলেছে ১৫ লাখ এমনি দিচ্ছি ও আমাদের জামাই না চাকর এ ঘরের…..

সাঈদঃ বাসায় ডুকা মাএই…

মায়াঃ ঠাস করে দুই গালে দুইটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম ছোটে লোকের বাচ্চা আমাকে না বলে কোথায় গেছিলিস….

সাঈদঃ মাথা নিচু করে একটু বাবাকে দেখতে গেছিলাম…

মায়াঃ ডং না গেলে কী মরে যেতো যত সব আপনি জানেন না আমার খিদে সহ্য হয় না যান গিয়ে আমার জন্য নাস্তা বানিয়ে নিয়ে আসেন পাচ মিনিটের মধ্যে যদি আমার খাবার রুমে না পৌছায় তাহলে আজ মেরেই ফেলবো আপনাক?


সাঈদঃ মাথা নিচু করে রান্না ঘরে চলে গেলাম মনের ভিতরের একটা বিশাল বড় ঝড় বয়ে যাচ্ছে অন্য দিকে চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে….

খাবার গুলো রুমে নিয়ে যেতেই….

মায়াঃ ছিঃ কী বিচ্ছরি গন্ধ দিলাম তার মুখের উপর ফেলে…

সাঈদঃ প্লেট টা এসে কপালে খুব জোরে লাগতেই অনেকটা কেটে গেলো সেখান থেকে ঝর্ণার মতো রক্ত পড়তেই আছে..

বন্ধ হওয়ার নাম এ নিচ্ছি না…

তখনি মায়ার বাবা…

মায়ার বাবাঃ মায়া তুই কী করলি এটা এখনি জামাইকে. নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যা…

মায়াঃ পারবো না তোমার কষ্ট হচ্ছে তুমি নিয়ে যাও….

মায়ার বাবাঃ ছিঃ তোকে আমার মেয়ে বলতে লাজ্জা লাগে আমার সঙ্গে আসো…

সাঈদঃ থাক না বাবা এটাতো তো সামন্য একটা আঘাত কিছু খন পর নিজে থেকে ঠিক হয়ে যাবে…

তার পর নানান অজুহাত দেখিয়ে আর গেলাম এ না…

সারাটা দিন ভালোই যাচ্ছিলো যখন রাতে ঘুমতে গেলাম তখন ঘুম আসছে না প্রচন্ড ব্যথা করছে…..

রাত ঠিক ১ টা মেঝে থেকে উঠে বেল কনিতে গিয়ে খোলা আকাশে ঝলমলে চাদটাকে দেখতে লাগলাম ছোট বেলায় যখন মন খারাপ থাকতো তখন এভাবেই ছাদে এসে চাদটাকে মনের কষ্ট খুলে বলতাম…


মায়াঃ মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো কেনো যানি না বার বার একটাই কথা মনে হচ্ছে সকাল বেলা একটু বেশিই বড়াবাড়ি করে ফেলেছি দেখি তো কী করছে ছেলেটা…

নিচে তাকাতেই এমা এত রাতে কই গেলো তখনি নজরটা পড়লো জানালার পাশে…

মায়াঃ এত রাতে বেল কনিতে দাড়িয়ে কী করছে হ্যা নিচে নেমে…

সাঈদঃ চাদটার সাথে কষ্টের কথা শেয়ার করতে যাবো ঠিক তখনি…

মায়াঃ এত রাতে এখানে দাড়িয়ে আছেন কেনো…

সাঈদঃ না মানে এমনি মাথা নিচু করে..

মায়াঃ তখনি নজরটা পড়লো ছেলেটার কপালের দিকে কেটে যাওয়া জায়গা থেকে টপ টপ করে রক্ত পড়ছে…

সাঈদঃ পাশ কাটিয়ে এসে আবার শুয়ে পড়লাম কাটা জায়গাটা চেপে ধরে…

মায়াঃ ধুর আমি এসব কী ভাবছি শুধু শুধু এসব ভেবে আমার লাভ টা কী….


সাঈদঃ পরের দিন সকাল বেলা উঠে নাস্তা বানিয়ে রুমে নিয়ে আসলাম….

মায়াঃ আজ ঘুম থেকে উঠেই খাবার দেখতে পেয়ে তেমন রাগ হলো না…

সাঈদঃ একটা কথা বলবো…

মায়াঃ বলেন…

সাঈদঃ একটু বাবাকে দেখতে যাবো ১ ঘন্টার মধ্যে চলে আসবো…

মায়াঃ বাবাকে দেখতে যাওয়ার কথা বলে অন্য কোথাও যায় বুঝি আমাকে আজ হাতে নাতে ধরতে হবে তাই যেতে বললাম তার পর আমিও পিছু যেতে লাগলাম যাই ভাবছিলাম তাই হচ্ছে ছেলেটা হাসপাতালে না গিয়ে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তানিশার বাড়ির দিকে যাচ্ছে তার মানে তানিশার সঙ্গে ওর না আজ আমাকে জানতেই হবে কেনো সকাল সকাল বেড় হয়…


সাঈদঃ মাথার কাটা জায়গাটা খুব ব্যথা করছে তাই আমার বাবার মামাতো ভাই এর বাসায় যাচ্ছি ওনি ছোট মতো ডাক্তার তাই ওনার বাসায় গিয়ে ড্রেসিং করে নিলাম ঠিক তখনি….

আঙ্কেল এর মেয়ে তানিশা…

তানিশাঃ ছেলেটাকে দেখে আমার প্রথম নজরে ভালোবেসে ফেলেছিলাম….

ঠিক তখনি.

মায়াঃ আমি যাই ভাবছিলাম তাই বাবাকে দেখতে যাওয়ার নাম করে এসব হচ্ছে এখানে এসে…

তানিশাঃ এস হচ্ছে মানে তুই কী মিন করছিস মায়া

মায়াঃ সেটা বিস্তারিত বলতে হবে নাকি আবার…

তানিশাঃ মায়া তুই যা ভাবছিস তা না ছেলেটা বাবার কাছে আসছিলো মাথার কেটে যাওয়ার জায়গাটা ড্রেসিং করতে,..

মায়াঃ লক্ষ্য করে দেখলাম ঠিক এ তাই কিছু বললাম না…

তানিশাঃ আচ্ছা মায়া ছেলেটা কে…

মায়াঃ কে আর হবে আমাদের বাসার নতুন চাকর…


চলবে