অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক পর্ব :- ০৮

0
777

গল্প :- অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক
পর্ব :- ০৮
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
:- তখন আলিশা একটা বেয়ারা কে ডেকে নিয়ে আমার দিকে একটা ড্রিংকসের গ্লাস এগিয়ে দিলো।
আমি সাথে সাথে না করে দিলাম। বলালম যে,,

–না থাক, আমি আসলে এসব খাইনা।
#ধন্যবাদ।

—আরে চিন্তা করবেন না। এগুলো ঐসব কিছু না। এগুলো শুধু সাধারন জুস। খেয়ে দেখুন।(আলিশা)

এরপর জুসটা খেতে খেতে আলিশার সাথে বেশ ভালোই একটা আড্ডা জমে গেলো।
আলিশা আমার সাথে অনেকক্ষণ হেসে হেসেই কথা বলছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই সে চুপ মেরে গেলো। তখন আমি বললাম।

–কি হলো? হঠাৎ করেই চুপ হয়ে গেলে কেন?

—আমাদের দিকে আপনার বউ তাকিয়ে আছে।(আলিশা)

–তো কি হয়েছে?

—না মানে..
মিরাকে দেখে মনে হচ্ছে সে রেগে আছে। ও হয়তো আমাদের কথা বলাটা ভালো চোঁখে দেখছে না।(আলিশা)

তখন আমি আলিশাকে বললাম।

–কি সব বলছো তুৃমি আলিশা,। মিরা এরকম করবে কেন?

—বিশ্বাস না হলে পিছনে একটু তাকিয়ে দেখুন মিঃ নীলয়।(আলিশা)

আমি সাথে সাথেই পিছন ফিরে দেখি মিরা দাঁড়িয়ে আছে আমাদের থেকে ঠিক একটু দুরেই। আর ওর চোখে-মুখে রাগ স্পষ্ট। আশ্চর্য মিরার এখানে এইভাবে রাগ করার মানে কি..? আমি ভাবতে ভাবতে মিরা ততক্ষনে আমাদের সামনে চলে এলো। আর এসেই রেগে গিয়ে চড়া কন্ঠে বললো।

—নীলয় তুমি এখানে এই কোণায় এই মেয়েটার সাথে কি করছো?। আমি তোমাকে সেই কখন থেকে খুঁজতেছি। ঐদিকে ডলির বিয়েটা শুরু হতে যাচ্ছে আর তুমি এখানে বসে আছো। ওঠো বলছি…! (মিরা)

এই বলে এক হেচকা টানে আমাকে চেয়ার থেকে দাঁড় করিয়ে দিলো। তারপর অগ্নি চোখে আলিশার দিকে তাকিয়ে বললো।

—এই তুমি এখানে কি করছিলে হুম? তোমাকে খালামনি সে কখন থেকে খুঁজতেছে। যাও বলছি।

এদিকে আমি তো মিরার ব্যবহারে পুরাই টাস্কি?।
আর ঐদিকে আলিশা মিরার মুখ থেকে এমন কথা শুনে ওখানে আর এক মুহুর্তও দাঁড়ায়নি। আলিশা যাওয়ার পর মিরা আমার হাতটা ধরে বললো।

—চলো।

মিরা আমার হাত ধরে আমাকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমি শুধুই স্তব্ধ হয়ে মিরার দিখে চেয়ে আছি, আমি ওকে বাঁধাও দিতে পারছি না। কারন আমি মিরার এমন ব্যবহারের সাথে কখনো পরিচিত নই।

যাই হোক মিরা আমাকে ওখান থেকে বিয়ের আশরে নিয়ে যাবার পর। একেবারে আমার ধার ঘেঁষে দাঁড়ালো। আর মুখে একটা হাসি নিয়ে বর-কনের দিকে নজর দিলো। মিরা আমার এতোটা ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিলো যে, আমার রীতিমতো অসস্থি হচ্ছে।
আমি কিছু বলতেও পারছি না। কারণ পাশেই খালামনি দাঁড়িয়ে আছে। তারপর আমি মিরা থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেই মিরা হাতটা চেপে ধরলো। কেমনডা লাগে…?
আর কি বাদ্য ছেলের মত দাঁড়িয়ে আছি মিরার পাশে।

বিয়েটা শেষ হবার পর সবাই খাওয়া-দাওয়া শুরু করে। খাওয়া দাওয়া শেষ হতেই খালামনি ও আলিশা বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু মিরা আর আমি এখানেই রয়ে গেলাম।

তারপর সন্ধ্যার দিকে ডলিকে বিদায় দেওয়া হলো। এরপর আমরাও বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। খালামনি বাড়িতে পৌছেই আমাদের জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলো। আমরা গাড়িতে উঠে বসলাম। সেই আগের নিয়মেই মানা হলো মিরা পেছনে আর আমি ড্রাইভারের সাথে বসলাম।
এবার হয়তো মিরা রেগে গেছে একটু, তাইতো হঠাৎ নাক মুখ লাল করে গাড়ি থেকে নেমে গেলো। তখন সাথে সাথে আমিও নেমে গিয়ে বললাম।

–কি হলো? গাড়ি থেকে নেমে পড়লে কেন?

মিরা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে জাবাব দিলো।

—এমনি?।

–এমনি মানে…!!!
দেখো মিরা এখানে দাঁড়িয়ে থেকে শুধু শুধু সময় নষ্ট করো না। এমনিতে অনেক রাত হয়ে গেছে। আর আমার অনেক ঘুমও পাচ্ছে, ঘুমাবো আমি!

তখন মিরা আমার দিকে তাকিয়ে বললো। (একটু নেকা সুরে)

—আমি পিছনে একা একা বসে যেতে পারবো না।

–আচ্ছা এই ব্যাপার!
এই জন্য তুমি গাড়ি থেকে নেমে গেছো..?
আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি তাহলে সামনেই বসো। আমি পিছনে গিয়ে বসছি।

তখন মিরা আরো রেগে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো।

—নীলয় তুমি কি কিছুই বুঝোনা!?

–আরে এখানে বুঝা না বুঝার কি আছে।?

তখন মিরা আবারো কিছু বলতে যাবে। তখনি আমার ফোনটা বেজে উঠলো। আমি তখন মিরাকে একটু থামতে বলে ফেনটা রিসিভ করলাম।

আর ফোনের ওপার থেকে আলিশা বললো বাড়িতে কি একটা প্রবলেম হয়েছে। তাই নাকি আমাকে জলদি বাড়িতে ফিরতে হবে। আর কিছুই বললো না। কারন ফেনটা কেটে যায়। আমি টেনশনে পড়ে গেলাম।
এই এতো রাতে আবার কি সমস্যা হতে পারে। এসব কিছু না ভেবে জলদি বাড়িতে যেতে হবে। আমি ড্রাইভারকে বিদায় করে নিজেই গাড়ি চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আর মিরা আমার পাশেই বসে আছে। মিরা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।

—কি হয়েছে?

–জানিনা।
তবে বাড়িতে কিছু একটা হয়েছে, সেটা বাড়িতে গেলেই জানতে পারবো।

তারপর কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা বাড়িতে পৌছে গেলাম। আর তড়িঘড়ি করে বাড়িতে ঢুকলাম। ডুকেই আমরা দুজনেই অবাক। কারণ পুরে বাড়ি ঘুটঘুটে অন্ধকার।

–খালামনির কিছু হয়নি তো। মিরা কথাটা বলে ভয়ে আমার ডান হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেছে।

আমি খালামনি বলে ডাক দিলাম। কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই। এবার আমারও ভয় লাগতে শুরু করলো। তাই আরেকটু এগিয়ে গেলাম বাতিটা জ্বালানের জন্য।আর সেই মুহূর্তেই…………………

পুরো বাড়িটা আলোকিত হয়ে উঠলো।
আর সাথে সাথে বেজে উঠলো কয়েকজনের মিলিতো কন্ঠে মিরার বার্থডে গান…………

—হ্যাপিবার্থডে টু ইউ..…
হ্যাপিবার্থডে টু ইউ ডিয়ার মিরা…………
হ্যাপিবার্থডে টু ইউ……………

আর তারপর একটা কড় তালি। মিরা চোখ বড় বড় করে সবার দিকে তাকাচ্ছে। আমিও কম অবাক হয়নি। তারপর মিরা সবাইকে বললো।

—তোমরা কি করে জানলে যে আজকে আমার জন্মদিন!?

তখন সবাই আমার দিকে আঙ্গুল তাক করলো। তখন মিরাও আমার দিকে তাকিয়ে বললো।

—নীলয় তুমি!
তোমার আমার বার্থডে মনে আছে!
#ধন্যবাদ।?

–হুমম। আমি কখন……………

খালামনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললো।

—কি হলো মিরা আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে।
এবার কেকটা কাট।

তারপর মিরা কেকটা কেটে হাসি মুখে একটা টুকরা আমার দিকে এগিয়ে দেয়। আর আমিও খেয়ে নিলাম আর মিরাকেও একটু খাইয়ে দিলাম। এখানে কিছু বলতে গেলে খালমনির কথা শুনতে হবে। এজন্য আমি একদম চুপ..

তারপর মিরা অন্যদেরও কেক খাইয়ে দিলো। আর সবাই মিলে মিরার বার্থডে Celebrate.. করে সবাই খুশি মনে যার যার ঘরে চলে গেলো। তারপর আমরাও রুমে চলে এলাম। এসে মিরা ওয়াসরুমে চলে যায়। আর আমি কাপড় চেঞ্জ করে সোজা গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ি।

(ওহ্ আপনাদের জানিয়ে দেওয়া ভালো যে সোফাটা আমাদের সুবিধার কথা ভেবেই খালামনি গতকাল আনিয়াছে। কি জন্য ওটা খালামণি জানে না)

কিছুক্ষন পর মিরা বেরিয়ে এলো। আমাকে সোফায় শুতে দেখে বললো।

—নীলয় তুমি ওখানে কেন শুয়ে আছো?

–আসলে মিরা আজকে তোমার সাথে ঝগড়াঝাটি করে তোমাকে কষ্ট দিতে চাচ্ছি না। যেহেতু আজকে তোমার জন্মদিন তাই ছার দিলাম।

কাথাটা বলেই ঘোরে চোখ বন্ধ করলাম আমি। তখন মিরা আমার কছে এসে বললো।

—উঠো নীলয়।
তোমাকে আর কষ্ট করে সোফাতে ঘুমাতে হবে না। তুমি বিছানাতেই ঘুমাবে।

–নাহ্। দরকার নেই।
আমি এখানেই ঠিক আছি। পরে তুমি কি বলবে…
থাক আমি এখানেই ঘুমাই। তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো।

—নীলয় আমি বলছি তো বিছানায় শুতে।

–আমিও তো বলছি দরকার নেই। আমি এখানেই ঠিক আছি।

এবার মিরা রেগেই বললো।

—তুমি বিছানাতে আসবে কিনা বলো। দেখো আমার কোনো প্রবলেম হবে না। এই বলে আমর হাত ধরে টানতে লাগলো।

তাই আর সুয়ে থাকা গেলো না। আমি উঠে বললাম।

–আচ্ছা তোমার হয়েছেটা কি বলবে?
যদি এখন আমি তোমার সাথে বিছানাতে ঘুমাই। আর রাতে যদি কিছু হয়ে যায়। তখন তো সব দোষ আমার উপরে দেবে।

—রাতে যে তেমন কিছুই হবে না সেটা আমি ভালো করেই জানি। তেমার উপর আমার পুরো বিশ্বাস আছে যে তুমি আমার অনুমতি ছাড়া আমার সাথে তেমন কিছু করবে না। আর আমি সেজন্যই বলছি বিছানাতে ঘুমাও।

–তুমি আমাকে আবার কবে থেকে বিশ্বাস করতে লাগলে?

—দেখো নীলয় এতো কিছু বলতে পারবো না। তুমি যাও গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ো।

–পারবো না। সমস্যা আছে?

—এখনে আবার কি সমস্যা।

–দেখো মিরা আজ বাদে কাল তুমি চলে যাবে আমার জীবন থেকে। এমনটাই তো কথা হয়েছিলা আমাদের।
আর তাই আমি চাইনা তোমার আমার সম্পর্কটা আরো জটিল হয়ে যাক। সেজন্যই আমি তোমার সাথে একই বিছানায় থাকতে পারবো না।

তখন হঠাৎ মিরা একেবারে আমার খুব কাছে এসে বলতে লাগলো…….

—এই মিস্টার নীলয় তুমিকি বুঝতে পারো না!
এখন আমিও যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
আর আমি আমার অতীতের সব কিছু ভুলে গেছি বিশ্বাস করো তুমি। এখন আমি বাকি জীবনটা শুধুই তোমার সাথেই কাটাতে চাই। (Understand)

কথাগুলো বলেই মিরা আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আর কান্না করতে করতে বললো।

—নীলয় জানি আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি। অনেক খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছিলাম তোমার সাথে। কিন্তু তুমি কি এর জন্য আমাকে ক্ষমা করবে না। আমি যে তোমাকে খুব ভালোবাসে ফেলেছি।

তখন আমারও মিরাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে।
কিন্তুু কোথাও যেন একটা বাধা পাচ্ছি। সেটা কি অভিমান নাকি রাগ থেকে বুঝতে পারছি না। তখন হঠাৎ ই আমি মিরাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
মিরা অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তারপর বললো

—কি হলো!?নীলয় তুমি এমন করছো কেন?

আমি তখন নিচু গলায় বললাম।

–জানিনা…!

তারপর গিয়ে সটান হয়ে সোফাতে শুয়ে পড়লাম। আর কঠিন কন্ঠে বললাম।

–যাও গিয়ে তুমিও শুয়ে পড়ো।

মিরা তখনো ঐখানেই দাঁড়িয়ে আছে। আমি আর ঐদিকে নজর না দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম আর আসলো কৈ….!
মিরা ফুপিয়ে ফুপিয়ে নেকা কান্না জুড়ে দিছে। কিন্তু আমি ভ্রুক্ষেপ করলাম না। খুব ক্লান্ত লাগছে। তাই ডিস্টার্ব লেস হয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই আমার চোখ গেলো মিরার দিকে। খাটের এক কোণায় কম্বল জড়িয়ে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। একেবারে ছোট বাচ্চাদের মতো। ওর মুখটা খুবই ফ্যাকাশে লাগছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে রাতে প্রচুর কান্না করেছে। আর মিরার এ মুখটা এতোটাই মায়বী লাগছে যে তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছে করে সারাজীবন কেমন জানি একটা ঘুরের ভেতর চলে যাই।

অহ্ সীট….!!
হঠাৎ করেই যেন মিরার ঘুম ভেঙে গেলো। মিরা চোখ খুলতেই আমার সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো।
তারপর মিরা ঘুমঘুম চোখে মাথাটা ঝাকিয়ে একটা ইশারা করলো। যার মানে

—এই যে কি হয়েছে? আবার মুখে মুচকি হাসিও!

আমি কিরকম একটা বেকায়দায় পড়ে গেলাম?। এখন আমি কি বলি। তাই কোনো রাস্তা না পেয়ে উঠে সোজা ওয়াসরুমে চলে গেলাম। আর পরিস্থিতিটা কোনো মতে কাটিয়ে বেরিয়ে এলাম আরকি।

সে যাই হোক ফ্রেস+রেডি হয়ে বের হতেই মিরার সামনে গিয়ে পড়লাম। আমি মিরার দিকে না তাকিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম। আর মিরা ওয়াসরুমে ডুকলো। তখনি কেও একজন রুমে চা দিয়ে গেলো।
চা’টা নিয়ে সোফায় আরাম করে বসে কানে ইয়ারফোন গুজে গান ছেড়ে দিলাম। আর কেন্ডিক্রাস খেলতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর গানের সাথে আরেকটা আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু ঠিক বুজতে পারছি না।তাই ইয়ারফোনটা কান থেকে খুলতেই ব্যাপারটা বুজলাম।

আশ্চর্য! মিরা আবার ওয়াসরুমের ভেতরে থেকে আমাকে ডাকছে কেনো??
দূর মিরার ডাকাডাকি আর সহ্য করতে না পেরে। ওয়াসরুমের দরজার কাছ গিয়ে বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

–কি হলো??

তখন মিরা ভেতর থেকে বললো।

—নীলয় আমি আসলে টাওয়েলটা আনতে ভুলে গেছি।

–হুম তো আমি কি করবো?

আমার প্রশ্ন শুনে মিরা এবার রেগে বললো।

—কি করবে মানে? জলদি করে টাওয়েলটা দিয়ে যাও।

কি আর করা, আলমারি থেকে টায়েলটা আনলাম আর বললাম জ্বী ম্যাম নিন। আর মিরা দরজাটা একটু ফাক করে হাত বাড়িয়ে টাওয়েলটা নিয়ে গেলো। তারপর আমি ফিরে এসে ফোনটা নিয়ে যেই বিছানায় গা’টা লাগিয়েছি। তখনি মিরা আবারো ডাকাডাকি শুরু করে দিছে। মেজাজটা এখন খুব গরম হয়ে গেলো?।
এজন্য আমি ওয়াসরুমের দরজার কাছে গিয়ে বেশ উঁচু গলায় বললাম।

–এই যে হ্যালো What Happened?
কি হইছে..?
আবার কি..?

তখন মিরা ভেতর থেকে মিনমিন করে একটু আদুরী কন্ঠে বললো।

—না মানে…..
ননীলয় আসলে আমি কাপড়গুলো আনতেও ভুলে গেছি। একটু দিয়ে যাবে প্লিজ.? বিছানার উপরই আছে।

এখন কেমনডা লাগে আপনারাই বলেন….! তখন আমি সাথে সাথেই বলে দিলাম পারবো না”! আর তখনি পেছন থেকে কে যেন বলে উঠলো।

—কি পারবি নারে।

আমি পিছনে ফিরেই দেখি খালমনি..!! কি টাইমিং মাইরি। তখন কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম।

–কিক.. কিছু না। তুমি এখানে? কিছু বলবে খালামণি??

—আমি তো তোদের নাস্তার জন্য ডাকতে এসেছি। জলদি আয়, আমাকে আবার বেরুতে হবে। (খালামণি)

–হুম আচ্ছা….

এরপর খালমনি চলে যায়। আমিও মিরার কাপড় তার হাতে ধরিয়ে ঘর থেকে বের হতেই ফোনটা বেজে উঠলো। আর দেখলাম বাবার ফোন। তারপর রিছিব করে সালাম দিলাম এবং আব্বুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বললাম। কথা বলার পর নিচে গিয়ে খাবার টেবিলে বসে পড়ি। ততক্ষণে অবশ্য মিরাও চলে এলো।
খাবার খাওয়ার মাঝে আমি খালাকে উদ্দেশ্য করে বললাম।

–খালমণি…..
একটু আগে বাবা ফোন করেছিলো। আমাদের আজকের সন্ধ্যার ফ্লাইটেই ফিরে যেতে বললো।

—হঠাৎ করে! কেন কিছু হয়েছে নাকি? (খালামনি)

–নাহ্! তেমন কিছু তো বললো না।

—তো তোরা আরো কয়েকদিন থাকলে ভালো হতো না। আমি এখানে একা একা থাকি জানিসই তো। তোরা আসায় আমার বাড়িটাতে একটু আনন্দ এসেছিলো।
আচ্ছা ঠিক আছে! আমি আলিশাকে বলে সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

—খালমনি আপনিও আমাদের সাথে চলুন না।?
(মাঝখান থেকে মিরা বলে উঠলো)

—আমার কি আর সেই সু্যোগ আছে? হুমম। তবে যাবো যখন তোদের ছোট্ট একটা বাবু আসবে তখন।

খালামনির কথাটা শুনেই আমার গলায় খবার আটকে কাশি শুরু হয়ে গেলো। আমি কোনো মতে পানি খেয়ে নিজেকে সামাল দিলাম। কিন্তু একি মিরাকে দেখলাম লজ্জাবতী’র মতো মাথা নিচু করে বসে আছে♥

—কিরে তোর কি হলো! ঠিক আছস তুই।(খালামনি)

–হুম। ঠিক আছি খালামনি..!(আমি)

এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে খালামনি তার কাজে বের হয়ে গেলো। আর আমিও মিরাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। তারপর রাসেলদের সাথে দেখা করলাম। এবং ডলির শ্বশুর বাড়ি গিয়ে ওখানেই লাঞ্চ সেরে আবার ফিরে এলাম।

এখন আমরা…………………
.
.
চলবে……………………♥♥♥♥
.
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টতে দেখার অনুরোধ রইলো)