পর্ব ৭+৮
#আমার_আসক্তি_যে_তুমি
#Part_7
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
?
.
মি. খারুসকে এসাইনমেন্টটা দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। বেশ রাত হয়ে গেছে। তাই গাড়ি পাওয়াটাও বেশ কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে আমার জন্য। রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে শুরু করি। ঠিক তখনই পিছন থেকে কেউ বলে উঠে।
।
— ” মিস রিয়ানা ”
।
আমি পিছে ঘুরে দেখি আবির নামের সেই ছেলেটি। সে গাড়ির পিছন সিটে বসে আমায় ডাকটা দিয়েছেম। আমি তার দিকে কিছুটা ভ্রু কুচকিয়ে তাকিয়ে বলি।
–” আপনি এখনো এইখানে!! যান নি?”
।
–” আপনার দেওয়া ঔষধ গুলা কিনতে এই সূর্য কিছু ঘরবড় করে ফেলেছিল। তাই ওইটা ঠিক করতেই টাইম লেগে যায়। ” স্মিত হেসে।
।
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই সে বলে উঠে।
।
আবিরঃ বাসায় যাচ্ছেন বুঝি!!
।
আমি মাথা হেলিয়ে “হ্যাঁ” সূচক উত্তর দেই। সে স্মিত হেসে বলে।
।
আবিরঃ লিফট দিতে পারি কি?
।
রিয়ানাঃ নো থেংক্স। আমি যেতে পারবো।
।
আবিরঃ দেখুন আমার উদ্দেশ্য খারাপ না। আপনি আমার হেল্প করেছেন তাই আমিও আপনার হেল্প করতে চাচ্ছি। টাকা তহ নেন নি তহ লিফট এই নেন। প্লিজ না করবেন না।
।
আমি আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। রাস্তা ঘাট বেশ ফাঁকাই তার উপর শরীরটা আজ বেশ ক্লান্ত। হাঁটতেও ইচ্ছা করছে না। কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। একা এক পথে অচেনা এক মানুষকে বিশ্বাস করতেও মন সাই দিচ্ছে না। যখন আমি এইসব সাত পাঁচ ভাবছি তখনই আবির বলে উঠে।
।
আবিরঃ দেখুন আমি শুধু আমার ঋণ শোধ করতে চাচ্ছি। আমার মোটেও ঋনী হয়ে থাকতে ভালো লাগে না। তাই আপনাকে লিফট দিয়ে নিজের ঋণ শোধ করছি। আর এমনেও এই এলাকাতে এত রাতে গাড়ি পাওয়া মুশকিল তাই এত না ভেবে উঠে বসুন।
।
কথাটা আমার কাছে একবারে মন্দ লাগে নি। এখন গাড়ি না পেলে অবস্থা যে খারাপ হবে আমার তাই আমি রাজী হয়ে গেলাম। পিছনের সিটে চড়ে বসলাম। পাশের আবির আর সামনে তার পিএ সূর্য।
আমি উঠার পর গাড়িটা চলতে শুরু করে। গাড়ির মধ্যে এক পিনপিন নিরবতা। আজ অতিরিক্ত ক্লান্তির জন্য আমার মাথাটাও কেমন যেন ভনভন করেই চলেছে। পুরো রাস্তা আমি আর সে চুপই ছিলাম। আমি ক্লাতিতে চুপ ছিলাম আর সে হয়তো কথার ভান্ডার খুঁজে না পেয়ে। এক সময় মনের মধ্যে এক ইচ্ছা জাগে। জানতে ইচ্ছে করে এই অপরিচিত ব্যক্তির সম্পর্কে কিন্তু ক্লান্তির জন্য তা জিজ্ঞাস করতেই আলসেমি লাগছিল। তখন তহ শুধু নামটাই জানা হয়েছিল। নামটা কিছুটা চিনাচিনা লাগলেও আর চিনা হতে উঠে নি। আমিও আর আগ বাড়িয়ে চিনতে যাই নি।
আমি তাকে কিছু পেইনকিলার লিখে দিয়ে বেড়িয়ে এসেছিলাম। ভাবি নি আবার দেখা হবে সে যাই হোক থাক না কিছু মানুষ অপরিচিত। সব কিছু জানা থাকলে অজানা শব্দটাই হয়তো হারিয়ে যাবে।
আমাদের এলাকা আসতেই আমি তাকে গাড়িটা থামাতে বলি আর নেমে পড়ি। তাকে থেংকি ইউ জানিয়ে চলে আসি। সেও মুচকি হেসে চলে যায়।
।
??
।
বাসায় এসে কোনমতে ফ্রেশ না খেয়ে শুয়ে পরি। ক্লান্তির জন্য আজ চোখ দুটোতে সকল রাজ্যের ঘুম এক সাথে ভর করেছে তাই বেশ কিছুক্ষণের মধ্যেই পারি দেই ঘুমের রাজ্যে।
তাই তহ আজ উপলব্ধি করতে পারি নি যে কেউ তার গভীর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সেই ব্যক্তি ধীর পায়ে আমার কাছে এগিয়ে আসে আর আমার পাশে বসে। আমার মাথায় ছোট এক ভালবাসার স্পর্শ একে পরম যত্নে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।
আমি ঘুমের ঘোরেই সেই চিরচেনা ঘ্রাণটি পাচ্ছি। কিন্তু তাও আমার প্রতিক্রিয়া নেই কেন জানি না আজ এই ঘ্রাণটি আমার ভালোই লাগছে। মনে হচ্ছে কেউ আমায় আগলে রাখতেই এসেছে৷ ঘুমের ঘোরেই আমি তার হাতটি জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়ি।
সে প্রথমে একটু হকচকিয়ে উঠলেও যখন বুঝতে পারি আমি ঘুমে এমন করেছি সে হেসে উঠে। সে সেভাবেই বসে থাকে আর আমায় এই আবছা অন্ধকারেই দেখতে থাকে। হয়তো সূর্যের প্রথম কিরনের সাথে রাত্রির অন্ধাকারের মত সেও অদৃশ্য হয়ে যাবে। আর সেই সাথে আমিও হয়তো তার উপস্থিটা উপলব্ধিও করতে পারবো না।
।
।
??
।
সকালের আড়মোড় ভেঙ্গে উঠে পড়ি। কেন জানি মনে হচ্ছে আজ অনেক দিন পড়ে এমন শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছি। কেউ যেন ছিল আমায় কাল আগলে রাখার জন্য কিন্তু অতঃপর মনে পড়ে আমি অনাথ। আমাকে যে আগলে রাখার কেউ নেই। মাথায় বাবা-মার ছায়া না থাকলে বুঝা যায় জীবনটা কতটা নিষ্ঠুর, কতটা বিষোময়। এক মুঠো ভাতের জন্য লড়াই করতে হয় আমাদের। কিছু আশা করাই যে আমাদের জন্য বেকার। কথায় আছে অনাথদের ইচ্ছে বা আশা থাকতে নেই। কেন না তাদের সেই ইচ্ছা বা আশা পূরণ করার জন্য যে কেউ নেই।
এইসব ভেবেই এক দীর্ঘ শ্বাস বেড়িতে আসে ভিতর থেকে।
ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা বানিয়ে খেয়ে নেই তারপর বেড়িয়ে পড়ি মেডিক্যালের উদ্দেশ্যে। কিন্তু যাওয়ার আগে একবার চারদিক চেক করে নেই। যদি ফুল পেরকের ফুলের দর্শন হয়। কিন্তু না, কিছুই ছিল না?। হাইরে আমার ফুটা আশা।
।
।
???
।
” তেরে ইস্ক নে কিয়া মুঝে ঘায়েল?
আব তেরে বিন একভি পাল লাগতাহে মুঝে সো সাল❤”
।
— ” এই প্রথম তুমি আমায় নিজ থেকে স্পর্শ করেছ রিয়ুপাখি৷ হোক না তা ঘুমের ঘোরে। তোমার এই স্পর্শে মনের মধ্যে এক অস্থিরতা ছড়িয়ে দিয়েছে। ভেবেছিলাম তোমায় আরেকটু সময় দিব কিন্তু কালকের পর যে তা আমার জন্য দায় হয়ে উঠেছে। তাই আমি ঠিক করেছি তোমায় খুব জলদি নিজের কাছে নিয়ে আসবো। খুব জলদি মাই লাভ। তখন তুমিও সকলকে বলতে পারবে তোমার ইচ্ছা,আশা,আবদার পূরনের জন্য কেউ আছে। আছে তোমায় আগলে রাখার জন্য। ❤” এই বলে রিয়ানার ছবিতে এক কিস করে।
।
।
??
।
হসপিটালের ভিতরে তারাহুড়া করে ঢুকতে গিয়ে কাউরো সাথে ধারাম করে বারি খাই। আমি তাল না সামলাতে পেরে পড়ে যেতে নেই ভয়ে চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে নেই। ঠিক তখনি কেউ আমার কোমড় জরিয়ে ধরে টান দেয় আমায়। আমি গিয়ে তার বুকের উপর পড়ি। ঘটনাটা খুব দ্রুত হওয়ার আমি কিছু বুঝে উঠতে পারি নি। যখন বুঝতে পারি তখন সাথে সাথে স্বরে আসি। মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি মি. খারুস থুরি ড. রিয়ান।
তাকে দেখার সাথে সাথে কেন জানি রাগ উঠে যায়। হয়তো কালকের সেই গাধীর মত খাটনি করার জন্য। আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই সে বেসুরা কাকের মত খেক খেক করে বলে উঠে।
।
–” Are you blind?? দেখে চলা ফেরা করতে পারো না।”
।
— ” এই একই কথা তহ আপনার উপরও লাঘু হয়। আর আপনি আমায় তুমি বলছেন কোন সাহসে?”
।
–” নিজের স্টুডেন্টকে কি এখন আমি আপনি বলে সম্বোধন করব নাকি?? ভুলে যেও আ’ম ইউর সিনিয়র এন্ড এলসো ইউর টিচার। সো আই হ্যভ দ্যা রাইট। আর হ্যাঁ আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলবে। এই রকম থার্ড ক্লাস বিহেভিয়ার আমি সহ্য করবো না।”
।
–” কঁচু “?
।
— ” কি বললে??” চোখ গরম করে।
।
তা দেখে আমি কিছুটা চুপসে যাই। মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই গিলে খাবে। আমি আমতা আমতা করে বলি।
।
— ” কঁচু খাইসেন!! কঁচু!! খুব টেস্ট। ?”
#Part_8
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
.
?
হলরুমে বসে এসাইনমেন্ট করছি আর মি খারুসের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছি। শয়তান বেটা আমারে আজকেও কত কঠিন একটা এসাইনমেন্ট দিসে।? জীবনটারে বদনা বানাইয়া দিলো। তখন একবারেই কি বাই বলসিলাম যে আমার সাথে এমন করলো। শুধু একটু কঁচু তহ বলসিলাম সাথে ওইটা রিভিউ দিসিলাম। তার জন্য এত চেঁতার কি ছিল। চেঁতছিল ভালো কথা কিন্তু ” Cardiac Computed Tomography ” নামক এত কঠিন একটা চাপ্টার আমায় গলায় ঝুলিয়ে দেওয়ার কি দরকার ছিল? হ্যাঁ জিজ্ঞেস করি কি দরকার ছিল?? সে কি বুঝে না আমার মত বাচ্চা মানুষের জন্য এইটা আস্ত একটা পেরা।
মনটা চায় এক গ্লান করলার রসে বিষ মিলে তাকে খায়িয়ে দেই।? বেটা সত্যি মি খারুস।
.
আমি যখন তার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছি তখন আমার গুনোধর দুই শাকচুন্নি ফ্রেন্ড এসে হাজির। এসেই দুইজনে আমার দিকে তাকিয়ে এক কেবলা মার্কা হাসি দেয়। যা দেখে গাঁ জ্বলে উঠে।
.
রিয়ানাঃ কি চাই?? আমার সামনে এমন অফু ভাই টাইপ ভেটকি স্মাইল দেস কে??
.
আরিশাঃ আব কই?
.
রিংকিঃ এই আমার স্মাইল মোটেও ভেটকি টাইপ না। আমার স্মাইল তহ একদম মিষ্টি টাইপ। যে দেখে সেই ফিদা হয়ে যায়। ভাব নিয়ে।
.
আরিশাঃ কারেকশন প্লিজ। ওইটা ফিদা না ফিট হবে। তোর স্মাইল দেখে কেউ ফিদা হয় না বরং ফিট হয়ে যায়। যে শাকচুন্নি টাইপ তোর হাসি।বলে হাসি তে মেতে উঠে।
সাথে আমিও হেসে দিলাম আর আরু এর সাথে তাল মিলিয়ে বললাম।
.
রিয়ানাঃ ঠিকই। সেইদিন রাস্তার এক বিলাইকেও দেখলাম ওর হাসি দেখে ফিট রাস্তায় পড়ে আছে।
.
এই বলে হাসতে থাকি। রিংকি তহ রাগে ফুসতে থাকে। তারপর দুম করে দুই কিল পিঠে বসিয়ে বলে।
.
রিংকিঃ জিন্দেগিতে আমার তারিফ করেছিস যে আর করবি। হুহ।
.
আরিশাঃ তাও ঠিক?। সে যাই হোক রিয়ানু তোর খবর বল। স্যার তোকে কিছু বলেছিল।
.
রিয়ানাঃ মুখে কিছু না বললেও প্রতিশোধ ঠিকই নিসে।
.
রিংকিঃ কেমনে?
.
পরে দুইজনকে বলি আমার দুঃখের কষ্টদায়ক কাহিনী ?। দুইজন আমার কাহিনি শুনে কাঁদবে না হাসবে বুঝে উঠতে পারছে না। শেষে না পেরে হেসে দেয়। যা দেখে আমি গাল ফুলিয়ে বসে থাকি।
.
আরিশাঃ তুই যে কান্ড ঘটাইসোস সেই অনুযাই তোকে অল্পতেই ছেড়ে দিসে। তা না হলে,তার জায়গায় অন্য কেউ হলে তোরে কামলার মত খাটাইতো।
.
রিংকিঃ স্যার কত দয়ালু দেখ। আমার তহ এখনই তার জন্য প্রেম প্রেম ফিলিংস জাগতাসে।?
.
আমি তহ এইসব শুনে তেলে বেগুনে পুরে আগুন। দিলাম দুইটা কিল দুইজন পিঠে। তারপর বলি।
.
রিয়ানাঃ তোরা বন্ধু নামে কলঙ্ক। কই না আমার কষ্টে কষ্টিত হবি তা না এরা ওই খবিশের সাপোর্ট গাইছে। আরেকজনের তহ আবার প্রেম প্রেমও পাচ্ছে। বাহ!! যাহ দূর হো আমার নজরের সামনে থেকে৷ নাইলে ঠাটিয়ে দিব দুই চড়। যা এইখান থেকে।
.
আরিশাঃ তুই জীবনেও শুধরাবি না। আচ্ছা থাক তুই আমরা গেলাম। এমনেও আমাদের এসাইনমেন্ট বাকি আছে।
.
এই বলে ওরা আর চলে যায়। আমার কেন জানি কাঁন্না পেতে থাকে। ঠিক তখনই মাথায় একটা গান নাচতে নাচতে এসে পড়লো ।
.
” Dost dost na raha,
pyaar pyaar naa raha
Zindagi hamein tera,
aitbaar na raha,
aitbaar na raha ??”
.
— ” বাই দ্যা রাস্তা আমার পেয়ার কেডা?? ধুর কিসব যে ভাবি না। পেয়ার তহ আমার লাইফে আসেই নাই।
বাট তাও আমি আজ সেন্টি আমার বান্ধুপিরা আমায় ধোঁকা দিসে?”
.
মনের মধ্যে এক বস্তা দুঃখ প্রকাশ করে আমার এসাইনমেন্ট শেষ করতে লেগে পড়ি।
.
.
??
.
.
অবশেষে এসাইনমেন্ট শেষ করে মনের মধ্যে এক বস্তা খুশি নিয়ে ছুটলাম মি খারুসের কেবিনের দিকে। তার কেবিনের সামনে এসে নক না করে ধুকে পড়লাম। ঢুকে যা দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মি খারুস তার পড়নের শার্ট খুলতাসে। আমি তা দেখা সাথে সাথে এক চাপা চিল্লান দিয়ে দুই হাত দিয়ে চোখ ঢেকে ফেলি।
পিছনে কোন কিছুর আওয়াজ শুনে পিছে ঘুরেই দেখতে পায় রিয়ানা নিজের দুইহাত দিয়ে নিজের চোখ ঢেকে আছে। রিয়ানাকে এইসব নিজের কেবিনে দেখে রিয়ান কিছুটা হকচকিয়ে যায়। আধ খোলা শার্টটা তারাতাড়ি আবার কোন মতে নিজের গায়ে জরিয়ে নেয়। তারপর কিছুটা কর্কশ গলায় চেঁচিয়ে বলে।
।
— হোয়াট দ্যা হেল আর ইউ ডুয়িং হিয়ার??
.
— ডুয়িং মুয়িং পড়ে কইরেন আগে বলে জামা পড়সেন নি?? আমি চোখ খুলবো। হাত ব্যথা করতাসে আমার।
.
— ইউ আর জাস্ট ইম্পসিবল। হাত নামাও।
.
আমি হাত একটু সরিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি সব ঠিক আছে কিনা। না সব ঠিক আছে। আমি হাত নামিয়ে নেই। তার পর বলি।
.
— আপনার মধ্যে মেনারস নাই?? রুম লক করে চেঞ্জ করতে হয় জানেন না??
.
— নক না করে রুমে আসা বুঝি অনেক ভালো মেনার্স?? আর আমি আমার কেবিনে কি করবো না করবো দ্যাট ইজ নান অফ বিজন্যাস। পরেরবার আমার কেবিনে আশার আগে নক করে আসবে। ইউ গেট ইট!!
.
— হুহ!! নিজের দোষ কইরা এখন আমার উপর দোষ চাপায়!! ভালোই। আজ আপনার স্টুডেন্ট বলে কিছু বললাম না ?।
.
— ??। কি জন্য এসেছিলে??
.
— অহহ মনে পড়েছে। মেরা এসাইনমেন্ট শেষ। এই নেন ধরেন। আর আমাকে উদ্ধার করেন।
.
— হুহ! এই বলে হাত থেকে এসাইনমেন্ট নিয়ে নেয় আর চেক করতে থাকে।
.
— স্যার একটা প্রশ্ন ছিল! করবো?
.
— করো। এসাইনমেন্ট দেখতে।
.
— স্যার আপনি চেঞ্জ কেন করতাসিলেন?? গরম বেশি লাগছিল বুঝি??আপনার কি গরম বেশি? হায় গারমি?
.
কথাটা শুনার সাথে সাথে সে বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকায়। তার এই চাহনিতে আমি কিছু নড়ে চড়ে দাড়াই। তিনি হয়তো কখনো এইরকম টাইমের বাকওয়াস আর লজ্জাজনক প্রশ্নের সম্মুখীন হয় নি। সে নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে গম্ভীর গলার বলায়।
.
— এত বাকওয়াস প্রশ্ন আসে কিভাবে তোমার মাথায়?? ?
.
— হুহ। বলেন না?
.
— ইউ আর জাস্ট ইম্পসিবল। ওটি থেকে এসেছি। অস্বস্তি লাগছিল তাই চেঞ্জ করতে চাচ্ছিলাম। পেয়েছ জবাব?? নাও গো ফোরম হিয়ার।
.
আমি আর কিছু না বলে মাথা দুলিয়ে বেড়িয়ে এসে পড়লাম।
.
.
??
.
” আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে?”
.
মনের সুখে গান গাইছি আর হাটছি। আহা কি যে খুশি লাগিতাসে!! কি মজা আমি মি খারুসকে লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলসি। তখন ইচ্ছা করেই এমন একটা বিব্রতকর প্রশ্ন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যাতে তিনি লজ্জায় পড়ে।? ইশ মি খারুসের চেহেরা দেখার মত ছিল। তার ওই চেহারা দেখিয়া আমার পরানটা জুরাইয়া গেল। ?
এইসব ভাবছি ঠিক তখনই সামনে কেউ একজন আমার নাম ধরে ডেকে উঠে। আমি সামনে তাকিয়ে দেখি একজন মাস্ক আর কেপ পড়া লোক দাড়িয়ে আছে। চোখে কালো চশমা। আমি ভ্রু কুচকিয়ে তার দিকে তাকাই। আর চিনার চেষ্টা করি যে এই ব্যক্তিটি কে?? আমি আদো তাকে চিনি? আমি যখন এইসব সাত পাঁচ ভাবছি তখন সে ব্যক্তিটি আমার সামনে এসে বলে।
.
— ” কেমন আছেন মিস রিয়ানা?”
.
আমি হেবলার মত তাকিয়ে আছি। কিছুই বলছি না। তা দেখে সে বলে।
.
— ” কি চিনতে পারছেন না বুঝি?”
.
আমি মাথা দুলিয়ে “না” বোধক জাবাব দেই। সে তার মাস্কাটা হাল্কা সরিয়ে বলে।
.
— ” আমি আবির। যাকে আপনি কালকে ট্রিটমেন্ট করেছিলেন সেই আমি।” এই বলে মুচকি হেসে আবার মাস্ক ঠিক করে পড়ে নেয়।
.
–” অহহ আচ্ছা আপনি!! তা এখন কেমন আছেন? ঔষধ গুলা খেয়েছিলেন? বেন্ডেজ গুলা চেঞ্জ করেছিলেন??”
.
–” আরেহ বাবা আস্তে আস্তে!! আমি এক সাথে একবারে এতটি প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিব?? আমি তহ আর টকিং রোবট না।”
.
— ” ??”
.
— ” তা প্রথমত আমি ঠিক আছি। দ্বিতীয়ত্ব আমি ঔষধ গুলো খেয়েছি আর সর্বশেষে আমি বেন্ডেজ পাল্টাইনি। এইখানে সেটা পাল্টানোর জন্যই এসেছি আর আপনি কালকে সে পরিক্ষা গুলো একবার করে দেখতে বলেছিলেন সেগুলাই করতে এসেছি।” ছোট একটা হাসি দিয়ে।
.
— ” অহহ আচ্ছা। তাহলে যত দ্রুত সম্ভব করিয়ে নেন। সিরিয়াস কোন ইঞ্জুরি হলে ধরা পরে যাবে নে।”
.
–” তা তহ ঠিক আছে কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারছি না ৫০৩ নম্বর রুমটা কোন দিকে। আগে বেন্ডেজ চেঞ্জ করা প্রয়োজন। আপনি কি বলতে পারেন রুমটা কোন দিকে?”
.
–” অবশ্যই। আমার সাথে চলুন আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।”.
এই বলে সামনের দিকে হাঁটা ধরি। সামনে কিছুদূর যেতেই কেউ আমায় ডেকে উঠে। আমি পিছে ফিরে তাকিয়ে মি খারুস। আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই আবির বলে উঠে।
.
–” রিয়ান!!”
।
।
#চলবে