প্রেমের সম্মোহন পর্ব-০২ | বাংলা রোমান্টিক গল্প

0
4679

#প্রেমের_সম্মোহন💞
#পর্ব_২
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

আবির অনুর খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছে এতোটাই কাছে যে আবিরের নিঃশ্বাস অনুর চোখে মুখে আছড়ে পরছে৷ অনু নিবুনিবু চোখে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে আর আবির অনুর দিকে৷
.
পিছন থেকে কেউ ধাক্কা দিতেই অনু ঠাসস করে আবিরকে নিয়ে পড়ে গেলো৷
.
“”ধপাসসসস

অনু চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দেখে সে খাট থেকে পড়ে গেছে

“একি আবির কোথায়?৷ আবির!! আবির কোথায় আপনি?

খিলখিল করে হাঁসির শব্দ শুনে পাশে তাকালো অনু৷ আরুহি পেটে হাত দিয়ে হাসছে৷
.
এইভাবে ছাগলের মতো হাসার কী আছে৷ ৷
.
যা করেছি তাতে না হেসে পারা যায়৷ কী ঘুম থেকে উঠে আবির আবির করছিস৷ আবিরকে নিয়ে কল্পনা করতে করতে এখন আবির তোর স্বপ্নে এসেও দেখা দেয় নাকি৷
.
কী জানি৷ তুই আমাকে ছাদ থেকে নিয়ে আসার পর বালিশে মাথা রাখতেই ঘুমিয়ে পরি আর স্বপ্নে দেখলাম আবির আমার খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছে এতটাই কাছে যে ওর নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমার মুখে পরছিলো তারপরই কোন শাঁকচুন্নি যেনো আমাকে ধাক্কা দেয় আর আমি আবিরকে নিয়ে পড়ে যাই৷ ওমা উঠে দেখি সত্যি সত্যি খাটের পাশে পড়ে আছি৷
.
ওই শাঁকচুন্নিটা আমিই ছিলাম আমিই তোকে ধাক্কা দিয়েছি৷ তুই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এমন ভাবে মুচকি মুচকি হাসছিলি দেখেই আমি বুঝতে পারলাম তুই স্বপ্ন দেখছিলিস তাই ধাক্কা দিয়েছিলাম যাতে তোর ঘুম ভাঙে কিন্তু ওমা তুই এক ধাক্কাই নিচে পড়ে গেলি৷
.
“তবে রে৷
অনু আরুহির দিকে তেড়ে আসতে গিয়েও থেমে গেলো৷ কালকের কথা মনে হতেই চোখে আবারো পানি এসে ভর করলো৷ আরুহিও অনুর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে৷ অনু সব কথা ওর সাথে শেয়ার করতো তাই আরুহি জানে অনু কতোটা আকাশকে ভালোবাসে৷ আরুহির চোখ দিয়েও পানি পড়ছে৷

অনু আরুহির দিকে তাকিয়ে দেখলো সে কাঁদছে৷

“একি রুহি তুই কাঁদছিস কেনো?
.
আরুহি কিছু না বলে অনুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো৷
.
“এতো ভালো কেনো রে তুই হে৷ নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে বোনের হাতে তুলে দিতে একটু হাত কাপলোনা তোর৷ চাইলেই কিন্তু এদের আলাদা করতে পারতিস কিন্তু করিসনি৷ কারন তোর বোনের মুখে হাসি দেখতে চাস৷ হে হাসি দেখতে চাস ভালো কথা তাই বলে সত্যিটাকে গোপন করে৷ আকাশের পর্দা ফাঁস করার খুব দরকার ছিলো রে অনু৷
.
আপু যখন জানতে পারবে তখন নাহয় পর্দা ফাঁস করা যাবে৷ এখন যখন জানেনা তখন জানানোর দরকার নেই৷ বাবা মা দেশের বাইরে যাওয়ার পর আপুই আমার দেখবাল করেছে৷ কোনদিন আমাকে কষ্ট দেয়নি৷ তারমনেও আমি কষ্ট দিতে পারবোনা৷
.
আরুহি অনুকে ছেড়ে দিয়ে ওর ফোন বেড় করলো৷

“অনু এই দেখ আবির রায়হান চৌধুরী ফেসবুকে ফটো আপলোড দিয়েছে৷
অনু কথাটা শুনে তারাতাড়ি আরুহির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিলো৷

সাদা শার্ট ইন করা৷ বুকের কয়েকটা বুতাম খোলা যে কারনে তার সাদা বুক দেখা যাচ্ছে৷ চোখে কালো সানগ্লাস একটা কারে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷

অনুঃওয়াও কী কিউট এই আবির রায়হান চৌধুরী৷ তবে বেটায় বুক কেনো দেখায় আল্লাহ্ জানে৷
দাঁড়া কমেন্ট দেখি৷এসব সেলেব্রিটিদের কমেন্ট পড়তে খুব ভালো লাগে৷
.
একটা মেয়ে কমেন্ট করেছে,,,

“ওয়াও কী কিউট তুমি আবির তোমার গান আর অভিনয় খুব ভালো লাগে আমার৷

আরেকটায় কমেন্ট করেছে,,,,

“ওয়াও তোমার বুক দেখে তো আমি শেষ৷ কী সুন্দর যে লাগছে তোমাকে বলে বুঝানো সম্ভব নয়৷ আমার দেখা সব থেকে হ্যান্ডসাম আর ড্যাশিং বয় তুমি৷
.
ওয়াও আমার ক্রাশ বয়৷
.
ব্লা ব্লা,ব্লা৷
.
অনুঃদূর দূর এসব কী কোনদিন ছেলে দেখেনি নাকি৷ কী আজে বাজে কমেন্ট করে দেখ৷ আরে তোদের যদি ভালোই লাগে তবে ভিতরেই রাখনা ভালো লাগাটা৷ এভাবে প্রকাশ করে নিজেদের লুজার প্রমান করার কী দরকার৷
.
আরুহিঃবা্হ বাহ্৷ তা তুই আবির কে লাইক করিস নাকি লাভ৷
.
ভালোলাগা আর ভালোবাসা এক নয়৷ আবিরকে আমার ভালো লাগে নাথিং এল্স৷ তাছাড়াও আবির একজন সেলেব্রিটি মানুষ তাকে নিয়ে স্বপ্নও দেখতে নেই৷ আমাদের মতো সাধারন মানুষদের কাছে ওরা কোনদিন আসবেনা রুহি৷
.
হুম কথাটা সত্যি৷
.
তা তোর ক্রাশের কী খবর৷
.
আমার ক্রাশ,,,,,,

আদিল পুল থেকে উঠে আসছে তার গায়ে শুধু একটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট৷ উন্মুক্ত বুক আর পিঠ বেয়ে পানি পরছে৷ আদিল তার চুল গুলো ঝেড়ে ঝেড়ে আসছে৷ আরুহি সুইমিংপুলের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে টাওয়াল হাতে৷আদিল ওর কাছে যেতেই আরুহি মুচকি হেঁসে আদিলের শরীর মুছে দিতে শুরু করলো৷ আদিল আরুহির কোমড় চেপে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো৷
.
আউচচচচচচ
.
হাহাহাহা৷ কোথায় হারিয়ে গেলি৷
.
আব…কই কোথায় হারাবো৷ তোর এতো সাহস কেনো কোন সাহসে আমাার হাতে চিমটি কেটেছিস৷ কতো সুন্দর একটা স্বপন দেখেছিলাম জানিস৷
.
আরেহ বাহ রুহি৷ আমি তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখি তুই তো দেখছি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখিস৷ ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিস বুঝি হুম৷
.
জ্বী না৷
.
হুম৷তা কাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলি নিশ্চয় আদিল খাঁন কে নিয়ে৷
.
জানতিই যখন তাহলে চিমটি দিয়ে স্বপ্নটা কেনো ভেঙে দিলি৷
.
ওটাকে স্বপ্ন বলেনা কল্পনা বলে৷ আমাকে যে খাট থেকে ফেলে দিলে তার বেলায় কী৷ নিজের বেলা ষোলো আনা আমার বেলা চার আনা৷

#চলবে…..

[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন৷]