#প্রেম_আমার♥
#পার্ট-০৩♥
#Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥
.
🍂
.
– Excuse me! Who is “সাদা বিলাই?”
.
পেছন থেকে কারো গলা শুনতে পেয়ে বুকটা ধক করে উঠলো! যাহহ আজকে আমি শেষ! পুরাপুরি শেষ!
কোনোরকমে নিজেকে সামলিয়ে ৩২ পাটি দাঁত বের করে কাঁপাকাঁপা গলায় বলে উঠলাম,
.
– আ….আ….আসলে আসার সময় এ..একটা সাদা বিড়াল দেখতে পেয়েছিলাম। খুব পাজি একটা বিড়াল ছি..ছিল। কি যে দুষ্টু কি বলবো খালি আমাকে আঁচড়ে দিতে আসছিলো ওটারই কথা বলছিলাম আরকি হেহে! (জোড়পূর্বক হাসির চেষ্টা করে)
.
– তা সাদা বিড়ালের সাথে কাজের কি সম্পর্ক? এখনো তো কিছুই করতে পারলেন না। দেখো মেয়ে, কাজ শেষ না হওয়া অবদি তুমি বাসায় যেতে পারবে না। গট ইট?
আরে এই যে মিস রাত্রি! কান খুনে শুনে রাখুন আপনি ওকে বিন্দুমাত্র হেল্প করবেন না।
.
– কিন্তু ভাইয়া ও একা এসব পরিষ্কার করতে পারবে না তো!
.
– সেটা টোটালি ওর ওপর, যত টাইম নিবে নেক। আমি কাজ বুঝে পেলেই ছেড়ে দেবো ওকে! ইজ ইট ক্লিয়ার?
.
– জ্বি…জ্বি ভাইয়া!
.
– আর এইযে মিস অনন্যা, এখানে জাস্ট ঝাড়ু ছিল। সো আমি পানি আর কাপড়ের ব্যবস্থা করতে গেছিলাম। এই যে নাও। ঘর ঝাড়ু দেওয়া হলে মুছা স্টার্ট করবা।
.
আরে কি ভেবেছেনটাকি? আমাকে কি তার আয়া মনে হচ্ছে? আজব! সহ্য হচ্ছে না আমার। আম্মু কখনোও আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করায় নেয় নি। সামান্য নিজের বেডটা পর্যন্ত গুছাইনাই আমি। এভাবে হঠাৎ কি কিছু পারা যায় নাকি? কিন্তু এখন রাগ দেখায় বললে আরোও কাজ দিয়ে দেবে তাই ঠান্ডা, নরম গলায় বলে উঠালাম,
.
– কি..কিন্তু আমি তো এসব কিছুই পারিনা! (মুখ কালো করে)
.
– সেটা কি আমার দায়িত্ব তোমাকে শিখিয়ে দেবার? ইউ ফুল! ফাটাফাট কাজে লেগে পড়ো। কুইক! (চেঁচিয়ে)
.
বলেই সাদা বিলাই চলে গেলন আমাকে আর রাত্রিকে রেখে।
এবার মনে হচ্ছে আমি যেকোনো টাইম কান্না করে ফেলবো। কাঁদতে কাঁদতে পুকুর বানায় ফেলবো, আর সেই পুকুরে এই সাদা বিলাইকে চুবাবো। উঠাবো আর চুবাবো। চুবাবো আর উঠাবো! তাহলে হয়তো একটু হলেও শান্তি পাবো।
ধ্যাত! এখন এসব আজগুবি চিন্তা করেও জাস্ট টাইম লস। বাসায় যেতে হবে আমাকে। ভাইয়ার সাথে বোঝা পড়া আছে। বোনকে ফেলে কোথায় থাকে শয়তানটা!
.
চুপচাপ ঝাড়ুটা হাতে নিয়ে বিসমিল্লাহ বললাম! আল্লাহর ওয়াস্তে জীবনেও হাতে ঝাড়ু নিয়েছিলাম কি না আমার মনে নাই। হয়তো ছোট বেলায় খেলতে খেলতে ধরেছিলাম। আবছা আবছা মনে পড়ে!
আজ প্রথম বার ঝাড়ু দিতে হচ্ছে আমাকে। তাও সবই ঠিক আছে কিন্তু বিপত্তি ঘটছে এখানে। আমি কোথায় থেকে ঝাড়ু দেওয়া শুরু করবো সেটাই তো বুঝতে পারছিনা। হেয় সামবদি খিল মি! 😣
.
– এই অনন্যা এখন কি করবি ভাবলি কিছু? আমি হেল্প করলেও কিন্তু এই কাজ আজকের মধ্যে শেষ হবে না।
.
– তা এখন আমি কি করবো? আমি কোনোরকমে ঝাড়ুটা দেই তুই পারলে একটু ঝুলগুলো ঝাড়। আর সাবধানে ওই খাম্বার বাচ্চা সাদা বিলাইটা আবার যেন দেখে না ফেলে!
.
– আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে!
.
.
আমি ঝাড়ু দিচ্ছি ঠিকই কিন্তু ধুলোগুলো একত্র হবার বদলে পুরো ঘরটাই আরোও ধুলোয় ধুলোময় হয়ে যাচ্ছে। হায় ফাটা কপাল আমার! রাত্রি আর আমি কাশতে কাশতে যক্ষা রোগী হয়ে যাবো বোধহয়।
.
– এই অনন্যা কি করছিস টাকি? তুই কি ঝাড়ু দিচ্ছিস নাকি ঝাড়ু নিয়ে ধুলোর সাথে ড্যান্স করতেছিস? (কাশতে কাশতে রাত্রি বলে উঠলো)
.
তখনই দরজার দিক থেকে কারো হাসির শব্দ ভেসে উঠলো। আমি আর রাত্রি সেই শব্দ শুনে চোখ বড়বড় করে দরজার দিকে তাকালাম।
দেখি নীবিড় ভাইয়া হুহা করে হাসতেছে। শুধু হাসতেছে বললে ভুল হবে। হাসতে হাসতে একপ্রকার গড়াগড়ি খাওয়া শুরু করে দিয়েছেন। এই বদমেজাজি মানুষটা আবার হাসতেও জানে! ইশশ! কি সুন্দর সেই হাসি। লম্বা লম্বা দাঁতগুলো ঝকমক করছে। শুধু তাই না উনার যে হাসলে বাম গালে টোল পড়ে তাতে উনার হাসির সৌন্দর্য আরোও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পর মুহুর্তে মনে পড়লো আরে উনার জন্যই তো আজকে আমার এই হাল। আর আমি উনার দিকে মুগ্ধ নয়নে চেয়ে আছি? কুছ তো সারাম কার আনানয়্যা!😑উনি দেখতে যেমন উনার আচরণ তার পুরাই উলটা! সো চিপ! ব্যাটা ধলা ইন্দুর! সাদা বিলাই!
.
নীবিড় ভাইয়া হাসি থামিয়ে আমার নিচ থেকে ওপরে চোখ বুলিয়ে আবার হাসতে শুরু করলেন! আমি বুঝতে পারছিনা এতো হাসির কি হলো? রাত্রি আর আমি একবার দুজন দুজনের দিকে তাকাচ্ছি আর একবার নীবিড় ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছিনা! হঠাৎ কি মনে করে নিজের দিকে তাকালাম! ইশশশ আমার পায়জামা ধুলোই লুটুপুটু খেয়ে যাচ্ছিলো তাই হাটুর একটু নিচে পর্যন্ত পায়জামাটা জড়ায় রাখছিলাম। ওড়নাটা কোমড়ে বেঁধে রেখেছিলাম ওটাও ওভাবেই আছে। খোলা চুলগুলো খোঁপা করে রেখেছি যাতে ঝাড়ু দিতে গিয়ে বারবার বিরক্ত না করে। এইবার বুঝতে পারছি আমাকে দেখে হাসছিলেন কেন উনি। নিজেকে দেখে আমার নিজের কাছেই ফকিন্নি লাগছে আর তো উনার কাছে কিই বা লাগবে! হায় হায়!
.
তাড়াতাড়ি করে কোমড়ে গুজা ওড়নাটা খুলে ঠিক করে পায়জামাটা ছাড়িয়ে নিলাম। তাও উনার হাসি থামছেই না। এবার রাগ উঠছে আমার, ভীষণ রাগ। মনে হচ্ছে এই ব্যাটার চুলগুকো সব ব্লেড দিয়ে কেটে ন্যাড়া করে দেই। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে উঠলাম,
.
– এই যে মি. নীবিড় এভাবে হাসছেন কেন হ্যা? আপনার পানিশমেন্টের জন্যই তো আমার এই হাল। আর আপনিই এখন মজা নিচ্ছেন?
.
উনি আমার কোনো কথার তোয়াক্কা না করে হাসি থামিয়ে হঠাৎ করে আবার আগের স্টাইলে এসে বলে উঠলেন,
– যাও আজকে তোমাকে ছেড়ে দিলাম। নেক্সট টাইম কিন্তু ছাড়বো না কাজ আদায় করেই নেবো। সো বি কেয়ারফুল! (গম্ভীর গলায়)
.
উনি আমাদের যাইতে বলতে দেরী হলেও আমার ছুটে বেড়িয়ে যেতে দেরি হয়নি। এক দৌড়ে মাঠে এসে হাঁপাতে লাগলাম আমি। ওদিকে আমি ছুটে চলে আসায় রাত্রিকেও রেখে এসেছি।
এতোক্ষণে রাত্রি নিশ্চয় আমাকে হাজারটা গালি দিতে দিতে আমার পুরো গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে আসছে। দেক যতো খুশি দেক। আজকে ওর গালিগুলো মোটেও আমার গায়ে লাগবে না। ওখান থেকে যে বেড়োতে পেরেছি এই অনেক। উফফফ! শান্তি!
.
চলবে………………..❤
#প্রেম_আমার♥
#পার্ট-০৪♥
#Ayanaa_Jahan_(Nusraat)♥
.
ভাইইইয়া…….! এই ভাইয়া…. কোথায় তুই? বেড়িয়ে আয়!
.
আমার চিল্লানিতে বাড়ি সুদ্ধ সবাই হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে এলো। আম্মুর কোমড়ে শাড়ির আঁচল গুজুনো আর হাতে খুন্তি। বুঝতেই পারছি কিচেনে রান্না করছিলো। আব্বুর হাতে নিউজ পেপার। নিশ্চয় নিউজ পড়ছিলেন। আর ভাইয়া? ভাইয়া তো খালি গায়ে, শুধু হাফপ্যান্টের ফিতা বাঁধতে বাঁধতে ড্রয়িংরুমে আসছে। এমনি সময় হলে আমি ভাইয়াকে মুখ ভেঙিয়ে হাসিতে ফেটে পড়তাম। কিন্তু এখন হাসা ইজ নট এলাউড। কারণ আমি রেগে আছি। ভীষণ রেগে আছি।
তাই কোমড়ে হাত দিয়ে ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে আম্মুকে বলে উঠলাম,
.
– আম্মি তোমার গুনোধর ছেলেকে বলো তার যে একটা বোন আছে সে কি ভুলে গিয়েছে?
.
আম্মু হয়তো আমার এরকম বিহেভের কারণ বুঝতে পারেনি তাই পাল্টা আমাকে প্রশ্ন করে উঠলো,
.
– কি হয়েছে রে অনু? এরকম করে কথা বলছিস কেন? আর আজ এতো দেরি করেই বা এলি কেন?
.
এখন তো আর এটা বলা যাবে না যে আমি আয়ার কাজ করে ভার্সিটি থেকে ফিরছি তাই দেরি হয়েছে। আমার মান সম্মান সব ধুলোয় মিশে যাবে। তাই প্রসঙ্গটা একপ্রকার এড়িয়েই বলে উঠলাম,
.
– আম্মু তোমার ছেলে কি জানে না আমি এখানে নতুন? তোমারা তো ভাইয়ার জন্য আমাকে খালামুনির কাছে রেখে রাজশাহীতে চলে এলে। কিন্তু এখন যখন আমিও এখানে চান্স পেলাম তো তোমাদের আমার প্রতি কোনো কেয়ারই নেই? মানলাম গতকাল ভাইয়ার কাজ ছিল তাই আমার সাথে দেখা করতে আসতে পারে নি। কিন্তু আজকে কি ছিল যে একবার আসতেও পারে নি আমার কাছে?
.
আম্মু আব্বু প্রতি উত্তরে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ভাইয়া ওদের থামিয়ে দিয়ে বলে উঠলো,
.
– এই বান্দরনি! তোকে কে বলেছে আমি যাইনি তোকে খুঁজতে? পুরো ক্যাম্পাস ইভেন তোর ক্লাসে পর্যন্ত গেছিলাম। কিন্তু তুই হাওয়া। কেউ বলতেও পারছিলো না তুই কোথায়। আর তোর ঐ ফ্রেন্ডটারো কোনো হদিশ নেই। শেষে তোকে না পেয়েই ক্লান্ত হয়ে চলে আসলাম। আর কি বললি আম্মু আব্বু তোকে আন্টির কাছে রেখে আসছে? দিবো এক থাপ্পড় নিজেই তো আসতে চাস নি। রেজিসট্রেশন তো এখানেও ট্রান্সফার নিয়ে করা যাইতো। তুইই তো তোর প্রাণপ্রিয় বান্ধুপী ছেড়ে আসতে চাস নি। আবার আমাদের দোষ দিচ্ছিস?
.
ভাইয়ার কথা শুনে আমি চুপসে গেলাম। আসলেই তো আমি তো স্টোররুমে ছিলাম তাই ভাইয়ের আমাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিলো না। কিন্তু এখন বলবো টা কি? তাই মুখ কালো করে বলে উঠলাম,
.
– আমি বই নিতে লাইব্ররীতে গেয়েছিলাম। আর তুই তাড়াতাড়ি আসলেও তো পারতি। হুহ!
.
– আমার আর তোর ক্লাসের টাইম তো এক না তাইনা? তুই কখন আমাকে দর্শন দেওয়ার জন্য বসে থাকবি তা তো আর আমি জানবো না তাইনা? যত্তসব। যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়!
.
– হুহ! যাবো না কি করবি তুই? হনুমান কথাকার!
– এই টিকটিকি যা বলতেছি!
– চুপ থাক তুই শিম্পাঞ্জী!
.
এরকম হাজারটা গালি দিতে আছি আমি ভাইয়াকে আর ভাইয়া আমাকে! আম্মু আর আব্বু হাসবে না কাঁদবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা।
.
– দেখেছো ছেলে মেয়ে দুটো এখনোও বাচ্চাই রয়ে গেল। অগ্নিটাকেও বলি হারি এতো বড় হয়েও বাচ্চামো গেল না। (আম্মু)
.
– তা যা বলেছো। আপাতত ওদের থামাও রুবি! খিদে পেয়েছে খুব। (আব্বু)
.
– এই অগ্নি, অনন্যা থামবি তোরা! যা নিজেদের ঘরে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। নাহলে আজকে আর খেতে হবে না তোদের!
.
খাওয়ার কথা শুনেই আমরা থেমে গেলাম। সকালে এমনিতেই খেয়ে যাওয়া হয়নি। পেটে ইতিমধ্যে ইঁদুর সহ বেড়ালোও দৌড়ানো শুরু করে দিয়েছে।
ভাইয়া আর আমি দুজন দুজনের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে একসাথে ছুট লাগালাম উদ্দেশ্য কে আগে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে পারে। কিন্তু ওইযে ভাই আমার দৌড় খেলায় প্রতিবার ফার্স্ট হয়। আর আমি লাস্ট রানার আপ হয়ে কি আর তার সাথে পারি? ধাক্কাধাক্কি করে উঠে ভাইয়া আমাকে ভেংচি কেটে ফুরুত করে ঘরে ঢুকে গেল। আর আমি গালি দিতে দিতে নিজের ঘরে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। ওদিকে আম্মু আব্বু হাসতে হাসতে কুপোকাত হয়ে গেছে।😂
.
🍁
.
আজকে ভাইয়া আমি আর রাত্রি একসাথে ভার্সিটি যাচ্ছি। ভাইয়ার ক্লাস এখন না। আরো দেড় ঘন্টা পর ভাইয়া আসতে পারতো বাট আমার কালকের চিল্লাচিল্লির জন্য একপ্রকার বাধ্য হয়েই আসছে ভাইয়া।ভারর্সিটির গেট দিয়ে ঢুকার পরই ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলাম,
.
– ভাইয়া তোর ডিউটি শেষ। তুই এখন যাইতে পারিস।
.
– ওয়াট? মানেটা কি? তুই না কাল চেচিয়ে পুরো বাড়ি মাথায় তুললি যে আমি তোকে কিছু চিনায় দেই নাই। সেই জন্যেই তো হাতে সময় নিয়ে বের হলাম। তোর ক্লাস শুরু হওয়ার আরোও ৪০ মিনিট বাকি আছে। তাহলে?
.
– আরে ব্রো রিলাক্স। আমারা বড় হয়ে গেছি। একা একা ঠিক সব চিনে নিবো। তোকে চাপ নিতে হবে না। কি রাত্রি কি বলিস?
.
– সে ঠিক আছে বাট ভাইয়া থাকুক আমাদের সাথে। প্রবলেম কি?
.
– এই রাত্রি তুই আমার বন্ধু না শত্রু হ্যা? আরে বুঝিস না কেন? আমরা দুইটা মেয়ে মানুষ ভাইয়া বোর ফিল করবে তো।
.
– অনু তুই এবার আমার মার খাবি। বাসায় যেয়ে আম্মুকে যদি না বলেছি। ফাজিল মেয়ে শুধু শুধু আমার পুরো একটা ঘন্টার ঘুম মাটি করলি তুই।
.
– হেহে সরি ভাইয়া তোরই তো বোন আমি। বুঝিস না কেন? আর তাছাড়া এতো ঘুম ভালো না বুঝলি? এতো সুন্দর ফিগারটা নষ্ট হলে পরে আর তোর দিকে কোনো মেয়ে তাকাবে না।
.
বলেই এক দৌড় দিয়েই পগাড়পাড়! আমাকে আর কে পায়? পেছন থেকে ভাইয়ার রেগুলার গালি ভেসে আসতেছে কানে আর রাত্রি আমাকে ডাকতে ডাকতে ছুটছে আমার পেছনে।
.
অগ্নি একা কি করবে তাই ফোনটা বের করে কাকে যেন ফোন করলো,
– হ্যা দোস্ত আমি ভার্সিটিতে আসছি। জলদি আয়!
.
– কিহ? তুই সালা এতোদিন আমি তাড়াতাড়ি যেয়ে তোকে ঘুতাইতাম জলদি আসার জন্য আর তোর ঘুমই ভাঙতো না। ব্যাটা, সূর্য আজ কোনদিকে উঠছে বলতো?
.
– তোর মাথার ওপর শালা! আয় বলতেছি একটা বান্দরও আসে নাই এখনোও!
.
– কে বলছে তুই তো গেছিস। আই মিন একটা বান্দর তো গেছে। আচ্ছা দাড়া। আসতেছি ৫ মিনিট ওয়েট কর আমি ৬ মিনিটে আসতেছি!
– 😂
.
🍂
.
রাত্রি আর আমি হাটতে হাটতে ভার্সিটির অপর পাশে চলে আসলাম।
.
– এই রাত্রি এই দিকটা এতো ফাঁকা কেন?
– এদিকটায় আছেটা কি যে ভীর থাকবে? অবশ্য ওই যে সামনে দেখ একটা গেট আছে। এটা দিয়েও অনেকে ঢুকে।
.
রাত্রি আমাকে গেটটা আঙুল দিয়ে দেখায় দিচ্ছে আর এই ফাঁকে আমি পাশের গাছটার থেকে পাতা ছিঁড়ে হাতের মুঠোয় ধরে নিলাম। উদ্দেশ্য রাত্রির সুন্দর চুলকে আরোও সুন্দর করে পাতায় পাতারণ্য করে তুলা। 😁
.
– ওহ আচ্ছা! এই রাত্রি ওইদিকটায় গেছিলি কি? ( হাতের ইশারায়)
.
রাত্রি আমার কথা শুনে উল্টো দিকে ঘুরতেই পাতার কুচি গুলো ওর এলোমেলো চুলে ছেড়ে দিলাম। দেখতে পুরাই জঙ্গলি লাগছে ওকে যদিও ও সেটা দেখতে পারছেনা।
.
– না যাইনি। (আমার দিকে ফিরে)
– এই রাত্রি তোর চুলে এগুলো কি?
.
রাত্রি নিজের মাথায় হাত দিয়ে আন্দাজ করে কিছু আছে। হাতের মুঠোয় ধরে সামনে এনে দেখে গাছের পাতা! এও বুঝতে পারে যে এটা আমার কাজ ছাড়া আর কারো কাজ হতেই পারেনা।
রাত্রি ভ্রু কুঁচকে, মুখ লাল,নীল,বেগুনি করে আমার দিকে তাকিয়ে দিলো এক চিল্লানি,
.
– অনন্যা…….! 😠
.
আমাকে আর পায় কে! সোজা দৌড় লাগালাম ওকে রেখে। কিন্তু ওইযে কপাল। কিছুদূর যেতেই কারো বাইকের সাথে ঠাস করে ধাক্কা খেয়ে ধপাস করে পরে গেলাম। আমি পরে যেতেই রাত্রির সে কি হাসি! একটাই কথা বলে চলেছে সে,
.
– ঠিক হয়েছে বেশ হয়েছে! উচিৎ শিক্ষা হয়েছে। 😂
.
আর এদিকে আমার হাটু ছিলে গেছে! ইশশ! পা ও মচকে গেছে।
নিচ থেকে চোখ তুলে ওপরে তাকাতেই আমার কলিজা শুকায় কাঠ হয়ে গেল। আমার সামনে আর কেউ না। আমার যম আই মিন সাদা বিলাই থুক্কু আই মিন নীবিড় ভাইয়া বিরক্তিমাখা মুখ করে আমার দিকে চেয়ে আছেন। যেন ভার্সিটিতে ঢুকেই আমার মুখটা দেখবার একটুও আশা করেন নি তিনি। বিন্দু মাত্রও না।
.
.
.
চলবে………………..❤