প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো পর্ব-০৩

0
11320

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৩
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

মিষ্টি বানিয়ে টেবিলে এনে রাখলাম।
বাবার জন্য সত্যি মন খারাপ করছে আমার।
হটাৎ ফুপি এসে পেছন থেকে ডাক দিলেন,
–পৃথুলা।
–জি।
–ভাইজানের এই অবস্থা বলিস নি কেন?
আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
তখনি প্রেয়ন ভাই এসে আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললেন,
–মা ওকে নিয়ে কি কিছু দিন ও বাড়িতে আমি থাকতে পারি৷
–অবশ্যই থাকবি কিন্তু ভাইজানের এই অবস্থায় তোরা এভাবে বিয়ে করে নিলি কি করে পৃথুলা?
আমার মুখে এবার ও কোন উত্তর নেই এবারো মাথাটা নিচু করেই দাঁড়িয়ে রইলাম৷
তখনি ফুপা এলেন,
–যা হবার হইছে তনু তুমি ওদের যেতে দেও ভাইজানের কাছে।
ফুপা, ফুপি সত্যি অনেক ভালো ছেলে এমন একটা কাজ করেছে তাদের মধ্যে কোন খারাপ আচরণ ই দেখলাম না।
সবার মতে আমি আর প্রেয়ন ভাই গেলাম আমাদের বাসায় ।
আমি বাসায় পৌছাতে রাইমাকে ডাক দিলাম৷
কিন্তু কোথাও দেখলাম না৷
ভেতরে গিয়ে দেখি রাইমা আটা ডাল চাল এক করে নিছে।
–রাইমা৷
–আপু।
–কি করছিস এগুলা।
–বাবাইকে খেতে দিতে হবে। কি খেতে দিবো বল তুই তো আমাকে কখনো রান্না করতে দিস নি আমি পারছি না।
রাইমার কথায় চোখ দুটো ভিজে এলো৷
আমার পিচ্চি বোনটা কতোটা কষ্ট করছে,
–তুই যা আমি করছি৷
–তুই ছিলি কই আপু।
–আমার কাছে। (প্রেয়ন)
–প্রেয়ন ভাই তুমি?
–হ্যাঁ রে তোর বোনকে বিয়ে করেছি
–আপু!
–হ্যাঁ উনি সত্যি বলছেন
–আপু কি বলছিস৷
–রাইমা ভাইয়া কে আমার ঘরে নিয়ে যা তুই বাবার ঘরে বস আমি আসছি খাবার নিয়ে।
–কিন্তু আপু
–রাইমা (একটু রেগে)
–আচ্ছা।
রাইমা প্রেয়ন ভাইকে নিয়ে চলে গেলো।
আমি সব গুছিয়ে রান্না সেরে ফেল্লাম।
অনেক কাজ করলাম গরম লাগছে।
আমি খাবার নিয়ে বাবার রুমে গেলাম।
–ম্যাম খাবার টা আমাদের দিন (নার্স)
–আপনি এখানে আছেন দেখতে পেয়েছেন আমার বোন রান্না পারে না তবুও ওকে কেন পাঠালেন?
–ম্যাম আমাদের কাজ পেসেন্ট কে দেখা তার খাবার তৈরি করাও আমাদের কাজ কিন্তু আপনার বাবকে রেখে এক মিনিট ও নড়া সম্ভব না ক্ষমা করবেন।
–ঠিক আছে,
আমি বাবার কাছে এগিয়ে গেলাম।
চোখ বন্ধ এখনো বাবার কিছু সময় থাকার পর,
–ম্যাম পেসেন্ট এর কাছে আর থাকা যাবে না।
–হুম৷
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বেরিয়ে এলাম।
নিজের রুমে এসে দেখি,
প্রেয়ন ভাই পায়ে পা তুলে বসে আছে।
আমি কিছু না বলেই বাথরুমের দিকে অগ্রসর হতে আমার হাত ধরে টান দিলেন,
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম,
–গিন্নি এতো সময় লাগে রান্না করতে।
–একটু তো লাগে আমাকে ছাড়ুন আমি ঘেমে গেছি গোসল করবো।
–হু করবে তো একটা কথা বলো তো।
–এসে বলি আমার কষ্ট লাগছে।
–আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি কাপড় নিয়ে গোসল করে বের হলাম।
আমি বেরিয়ে আসতে প্রেয়ন ভাইয়া আমাকে ধরে তার সাথে মিশিয়ে নিলেন,
–তুই দুরে দুরে থাকিস কেন?
–১মাসের স্ত্রী আপনার বেশি কাছে গেলে সমস্যা মায়া পরে যেতে পারে।
আমার কথা শুনে আমার গালে তার হাত রাখলেন।
–আমার শ্বশুর বাবা যে ফ্লাটের পেছনে টাকা ইনভেস্ট করেছিলো তার ডকুমেন্ট দিতে পারবে?
–হুম আছে পারবো কিন্তু আপনি এগুলা দিয়ে কি করবেন?
আমার প্রশ্ন শুনে উনি আমার ঘাড়ে থুঁতনি ঠেকালেন,
–সমস্যা কি তোর এতে প্রশ্ন কেন করিস৷
তোর চুলের গন্ধ টা অসাধারণ পৃথু।
ওনার কথা এবার আমাকে সির সির করতে লাগলো।
প্রতিটি কথা কেমন নেশা যুক্ত।
–পৃথু৷
–হু৷
–গিন্নি তুই।
–হু৷
–কিন্তু এগুলা শুধু ১ মাসের জন্য
হটাৎ আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে কথাটা বললেন।
পরে গিয়ে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে।
–কি ভাবছিস গিন্নি তোকে কাছে টনার অধিকার ও আমার দুরে ঠেলার অধিকার ও আমার বুঝলি।
আমি মাথা নিচু করে উঠে আসলাম।
আর কিছু বললাম না ওনাকে।
সত্যি একটা মানুষ এমন কি করে হয়।
সব সময় কষ্ট দেয় আমাকে।
ভালো কিছু আসা করা যায় না৷
চলবে,