ভুলে যেতে ভালোবাসিনি
পর্ব-০৮
রোকসানা আক্তার
সবার ব্রেকফাস্ট শেষ হয়।নিহান সাদা শার্ট, কালো কোট,কালো টাই পড়ে অফিসে যাওয়ার প্রস্তুত নিচ্ছে।শিরিন শাহ ফাহাদকে স্কুলের জন্যে রেডি করছে।কোহিনুর বেগম রহিমা খাতুনের সাথে রান্নাবান্নার তদারকি করছে।নীর অফিসে যেতে রুমে কাগজপত্র গুলো ঘাটাঘাটি করছে।
আর নাতাশা ছাদে দাড়িয়ে অবাক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আজ আকাশটা মেঘ মলীন।বেলা অনেক,কিন্তু কড়া সূর্যের আলো আবৃত।সূর্যের আলো খানিক সময় এসে উঁকি মেরে আলো ছড়ায়,আবার আকাশের কালো মেঘের আড়ালে পালিয়ে যায়।আকাশের অবস্থা বলছে আজ বৃষ্টি হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।
গাড়ির হর্ণ আওয়াজে নাতাশা নিচে তাকায়।নীর অফিসের দিকে রওনা করেছে।নাতাশা থমথমে মুখে তাকিয়ে খানিক টুকু নিঃশ্বাস ছাড়ে।তার কিছুক্ষণ পর নিহান ও বের হন ফাহাদকে নিয়ে।নিহান অফিস যাওয়ার পথেই ফাহাদের স্কুল পড়ে।তাই প্রতিদিন নিহানই ফাহাদকে স্কুলে ছেড়ে দেয়,আবার দুপুরে বাসায় লাঞ্চম করতে আসার সময় ফাহাদকে নিয়ে আসে।এ নিয়ে শিরিন শাহের সামান্য কার্পণ্যতা বোধ হয়।তিনি চাচ্ছেন ফাহাদকে তিনিই স্কুলে নিয়ে যাবেন এবং নিজেই স্কুল থেকে নিয়ে আসবেন।বাসায় থাকলে সামান্য টুকিটাকি কাজে হাত দেওয়া লাগে।কোহিনুর বেগম এই তরকারিতে পানি দেওয়ার জন্যে ডাকেন,সামান্য লবণ দেওয়ার জন্যে ডাকেন,দুধটা উৎরে পড়লো কি না তা দেখার জন্যে ডাকেন ইত্যাদি।শিরিন শাহের এসব কাজের ক্ষীপ্রতা সহ্য হয়না।তাই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে নিহানকে বুলিয়ে-বালিয়ে বুঝাতে থাকে সে-ই নাহয় ফাহাদকে স্কুলে ছেড়ে দিবে।এতে ফাহাদ হালকা বোধ করবে।ক্লাসে কোনো সমস্যা হলে দৌড়ে গিয়ে ছেলের তালাস করতে পারবে হ্যানত্যান।নিহান তা মানতে রাজি নয়।নিহানের কথা ফাহাদের স্কুল যেহেতু তার অফিসের পথেই,তাহলে খামোখা উটকো ঝামেলায় কেন জড়াবে।
তাছাড়া বাসায় থেকে কোহিনুর বেগমকে কাজে সামান্য সাহায্য করবে এটাই।
নাতাশা হাতের ফোনটি মুখের সামনে ধরে রিয়ার নাম্বার তোলে।রিয়ার নাম্বারটি নাতাশার মুখস্ত।রিয়া নাতাশার ক্লাসমেট।সামনের মাসের শেষে তাদের অনার্স ফাইনাল ইয়ার পরিক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা।তাই ফর্ম-ফিলাপ ডেটটি জানতে রিয়াকে কল করা।
রিয়া কল করার পর রিসিভ হয়।
–হ্যালো,আসসালামু -আলাইকুম,কে?
–হ্যালো রিয়া আমি নাতাশা!
–কি! নাতাশা!?
–হু।এটা কার নাম্বার রে?
–এটা আমার নতুন সিমের নাম্বার।
–নতুন সিম!কিরে ব্যাপার কি! বিয়ে হওয়ার পরতো সব পাল্টে ফেলবি।তারসাথে মন আবার পাল্টে ফেললি নাতো?
–দূর কি যে বলিস।আমার মন ঠিক আগের মতোই আছি।বরঞ্চ আগের মতো হাসি হাসি মুড নেই!
–য়ু হু অনেকে তো বলে বান্ধুবীদের ভালো জায়গায় বিয়ে হলে অতীত ভুলে যায় সে কারণে আর কি।আর তোর হাসি হাসি মুড নেই মানে?ভাইয়ার সাথে ঝগড়া টগড়া কিছু হয়েছে নাকি?
নাতাশা ক্ষীণ একটা ঢোক গিলে।আর স্বাভাবিকভাবে বলে,
–এই যে তোদের থেকে অনেক দূর চলে এসছি। নতুন বাড়ি, নতুন মানুষ,নতুন সব তাই আর কি মনটা একটু খারাপ।
–আচ্ছা আচ্ছা বুঝছি।এরকম প্রথম প্রথম অনুভব হবেই পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
–আচ্ছা ফর্ম-ফিলাপ ডেট কবে রিয়া?
–পরিক্ষা দিবি তুই?
–হু।
–বিয়ে-টিয়ে হয়ে গেছে আবার কিসের স্টাডি?
–বিয়ে হলে কি মানুষ স্টাডি করতে পারে না?আর বিয়ের পর স্টাডি করা কি আইনগত অপরাধ?
–য়ু হু তা বলছি না।বোকা ফান করছি জাস্ট। আচ্ছা শোন, গত সপ্তাহ থেকে ফর্ম-ফিলাপ শুরু হবে এই মাসের শেষ অব্দি থাকবে। পরিক্ষাও প্রায়ই কাছাকাছি সময় একদম নেই।পড়াশুনা শুরু করে দে।আর আমি তোকে কিছু সাজেশন দিব ওগুলো অনুযায়ী পড়িস।
–কিন্তু রিয়া আমার সব বইতো বাড়িতে।
–তাহলে তোর শাশুড়ী /হাসবেন্ড কে বলে বাড়িতে ক’দিন বেড়াতে আস। একেবারে ফর্মফিলাপটা শেষ করে আবার ঢাকা চলে যাস।
–হু মন্দ বলিস নি।আমি কথা বলে দেখি।
–ওকে।
–আর আমার এই নাম্বারটা সেইভ করে রাখিস।
–ওকে দোস্ত।
–আচ্ছা ভালো থাক। পরে কথা হবে।
–বায়য়
নাতাশা রিয়ার সাথে কথা শেষ দিয়ে কিচেনে আসে।নাতাশাকে কোথা থেকে আসতে দেখে শিরিন শাহের চোখ ঝলে উঠে।মুখের ভাঁজ গোল করে এনে বলে,
–একজন দাসীর মতো রেঁধে রাখবে,অন্যজন এসে মহারানীর মতো গিলবে!যে মানুষটা সারাদিন কিচেনে থেকে কাজ করে তার কথাতো ভাবতে হবে!
কোহিনুর বেগম শিরিন শাহের দিকে হকচকিয়ে তাকান।ভ্রু কুঁচকে বলেন,
–এখানে কাজ করার লোকের কি অভাব পড়ছে যে এসব কথা বলছো!কথাবার্তা একটু হিসেবনিকেশ করে বলবে!কে কাজ করে না করে তা আমিই স্বচোখে দেখি।আরেকজনকে উস্কানিমূলক কথা জন্যে এখানে কাউকে পয়সা দিয়ে রাখিনি।
শিরিন শাহ কোহিনুর বেগমের কথায় রেগে যায়।মনে মনে ঝাল ঝেড়ে বলে,
–কিরে বাবা! যারজন্যে চুরী করলাম সেই কয় চোর!দু’দিনকার বৈরাগীর জন্যে এত্ত আদর –বাব্বাহ।।আর আমি সাত সাতটা বছর এ সংসারে আমার জন্যেতো এর আধপোয়া টাকও আদর হয়নি।
দাতগুলোকে কটমট শব্দ তুলতে থাকে শিরিন শাহ।কোহিনুর বেগমের তা পরখে আসতে কড়ায় গলায় বলেন,
–কিচেনে থাকতে না ইচ্ছে হলে চলে যেতে পারো কেউ বাঁধা দেয়নি।
শিরিন শাহ আর একমুহূর্ত না দাড়িয়ে থেকে মুখে ফোলাভাব এনে কিচেন থেকে চলে যায়।
কোহিনুর বেগম সেদিকে কোনোরকম ভ্রুক্ষেপ না করে নিজমগ্নে মাংসে মশলা মেশাচ্ছেন।নাতাশা মাথার ঘোমটা আরেকটু সামনে টেনে দিয়ে ভেতরে ঢোকে।মুখে স্মিতভাব এনে বলে,
–মা বলুন?আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
–কিছু না নাতাশা।যখন সাহায্যের দরকার পড়বে তখন তোমায় ডাক দিব।
–মা আমি পানিটা চুলা থেকে নামিয়ে নিই?
–রহিমা খাতুন আছেন।
নাতাশা চোখ থমকে কোহিনুর বেগমের দিকে তাকায়।উনার মুখের চাহনিতে কেমন যেন ফোলা ভাব রয়ে গেছে।শিরিন শাহের উপর রাগটা এখনো কমেনি বোধহয়।নাতাশা দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে কোহিনুর বেগমের মধ্যে এমন ভাব দেখে।কোহিনুর বেগম আবার তার উপর রাগ করলো কি না নাতাশা তা ভেবে হম্বিতম্বি করতে থাকে।গলার হাঁক ছেড়ে বলে,
–ইয়ে মানে মা আপনি কি আমার উপর রাগ?
নাতাশার কথাশুনে কোহিনুর বেগম নাতাশার মুখখানে একদৃষ্টিতে তাকায়।ঠোঁটের কিণারায় একটা মুঁচকি হাসি টানেন।তা দেখে নাতাশার সারা শরীর শিরশির করে উঠে।অনেকটা হালকা বোধ হয়।উৎফুল্ল মনে হা হয়ে তাকিয়ে থাকে কোহিনুর বেগমের মুখের দিকে।
কোহিনুর বেগম বলেন,
–দূর পাগলী আমি তোমার প্রতি কেন রাগ হবো!আর তুমি কিচেনে কার অনুমতি নিয়ে এসছো,হু?আগুনের কাছে আসলে জ্বর আরো বাড়বে।।
–কিন্তু মা এখনতো আমার জ্বর নেই।
–জ্বরের কথা বলা যায় না।গত পৌষমাসে আমার ১০৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস জ্বর হয়েছিল, আমার ছেলেপুলের সে-কি যত্ন!তাদের যত্নের খাতিরে জ্বর ৯০%ডিগ্রী তাপামাএার নিচে কমে গেছে।ভাবলাম আমি সুস্থ্য হয়েছি।তাই সে আনন্দে বাসার সব কাজকর্ম করা শুরু করে দিই।পরিবারের সবাইও আশ্বস্ত বোধ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে আমার সুস্থ্যতা দেখে।পরে কি হয়েছে জানো?
–কি হয়েছে?
–সন্ধের পর আবার কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ি।সারা শরীরে থরথর কাঁপুনি বেড়ে যায়।শরীরের তাপমাত্রা বাড়তেই থাকে আমার ছেলেরা তা দেখে ভয় পেয়ে যায়।পরে ডাক্তার আনায়।ডাক্তার বলেন, আমার টাইফয়েড হয়েছে এইকারণে জ্বর একবার ডুব মারে আবার ভাসে।তাই তোমাকে বলছি–আল্লাহ না করুক তেমন যেন না হয়।স্বাভাবিক মাএার জ্বর শরীরে বাসা বাঁধছে তাতেই ব্যস।এখন এই তাপমাএাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করো।আগুনের ধারকাছেও ঘেষা লাগবে না।আর যদি কাজ করতে ইচ্ছে হয় তাহলে সোফার উপর গিয়ে এল.ই.ডি অন করে আরামসে মুভি দেখ!
নাতাশা তার শাশুড়ীর এমন কথাশুনে আকস্মিক! সে এই মানুষটিকে যত দেখে ততই লোলুপতা হয়!নিজেও জানে না এই মানুষটির প্রতি তার কেন এত ভক্তি!
পরক্ষণে নাতাশা মুঁচকি হেসে মাথা নাড়ে।।সে সোফার কাছে এসে রিমোট খুঁজে টিভি ছেড়ে দেয়। সামনে থাকা ফুলদানি এবং বালিশ সাজাতে থাকে।গেস্ট,ডাইনিং দুটোর দিকেই নজর রাখে নাতাশা।এখনো অগোছালো সব পড়ে আছে,গোছানো হয়নি কিছুই।এই বাড়ির আরেকটা কাজের মহিলা মিশিতা।তার গোছগাছের কাজ।সে আসেনি আজ।কাল থেকেই নাকি তার শরীরটা ভালো ঠেকছে না,হয়তো বাড়ি কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে আছে।
নাতাশা তড়িঘড়ি ঘর গোছাতে থাকে।কোহিনুর বেগম নাতাশার কাজ করতে দেখে খানিক ইতস্ততা বোধ করেন।ধীরপায়ে হেঁটে নাতাশার কাছে আসেন।
–মিশিতা এখনো আসেনি?
–নাহ মা।কাল তো বললো শরীরটা খারাপ,বোধহয় জ্বর চেপে বসেছে।
–হু।হয়তো..তাছাড়া কোনো কারণ ছাড়া মেয়েটা কাজে দেরী করেনা।আচ্ছা তোমার গোছাতে হবে না মা আমি রহিমাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
–মা সে কি!এখানেও বাঁধা!আর গোছগাছে কোনো সমস্যা হবে না মা।দয়া করে আপনি টেনশন নিবেন না।
কোহিনুর বেগম নাতাশর মুখের দিকে তাকিয়ে হার মেনে নেন।দৃঢ় একটা নিঃশ্বাস ফেলেন।তারপর সম্মতি দিয়ে কিচেনে আবার চলে যান।
তারপর বাসার সবকাজ দুপুর নাগাদ শেষ হয়।নিহান ফাহাদকে নিয়ে বাসায় ফিরেন। নাতাশা সোফার উপর বসে টিভি দেখতেছে।ফাহাদ নাতাশাকে দেখামাএই নাতাশার কোল ঘেষে বসে বলে,
–কাকিমা কাকিমা জানো?আজ আমার বন্ধু আতিপের সাথে ঝগড়া করেছি।ও আমায় আজ চিমটি কেটেছিল।এই দেখ ভীষণ ব্যথা পেয়েছি…!
ফাহাদের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের দিকে ফকফক চোখে তাকায় নাতাশা।জায়গাটা খুব লাল হয়ে গেছে।চিমটিটা বোধহয় খুব জোরেই পড়েছিল।নাতাশা ফাহাদকে বুকে চেপে বলে,
–তোমাকে-না ফাহাদ একবার বললাম ক্লাসে গেলে তেমন দুষ্টমি করতে না
–কাকিমা আমি দুষ্টমি করিনি।আতিপ খামোখা আমায় চিমটি দিয়েছে।
–ওকে হয়েছে বাবু।বুঝেছি।দুষ্ট পোলাপানদের এড়িয়ে চলবে,ঠিক আছে?
–হু কাকিমা।
দুপুরে ঘুম দিয়ে বিকালবেলা নাতাশা কোহিনুর বেগমের রুমের সামনে আসে।কোহিনুর বেগম বিছানায় বসে বসে তসবি গুনছেন। নাতাশা চাপা গলায় বলে,
–মা?
–ভেতরে আসবে নাতাশা?
নাতাশা মাথা নাড়ে।
–আচ্ছা আসো।
নাতাশা রুমে ঢুকে বিছানার উপর বসে।ক্ষীণ গলায় বলে,
–মা আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।
কোহিনুর বেগম খাটের চৌকাঠের উপর তসবিটা রাখে।ঠিকঠাক স্বাভাবিক হয়ে বসে।নাতাশার দিকে তাকিয়ে বলে,
–কি বলবে বলো?
–ইয়ে মানে মা..!
কোহিনুর বেগম বুঝতে পারে নাতাশা কিছু একটা বলতে গিয়েও হোঁচট খাচ্ছে।মুখ খুলে বলতে পারছে না দ্বিধাদ্বন্দে আছে।কোহিনুর বেগম স্মিত হেসে বলেন,
–আচ্ছা দ্বিধাবোধ না করে মাকে খুলে বলো কি বলতে চাও।মাকে যদি না বুঝিয়ে বলো তাহলে মা বুঝবো কিভাবে?
নাতাশা এবার হালকা বোধ করে।
–মা আমি বাড়িতে চাচ্ছি!আসলে আমার ফাইনাল পরিক্ষাতো।তাই এই মাসের শেষেই ফর্মফিলাপের লাস্ট ডেট।
–ওহ আচ্ছা বাড়িতে যাবে?এটা বলতে এত আনইজি!পাগলী মেয়ে একটা!তুমি না বললেও আমি তোমাকে এবং নীরকে তোমাদের বাড়ি পাঠাতাম।
নাতাশার চোখদুটো ঝলমল হয়ে ওঠে।তবে নীর বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে খানিকটা বিচলিত হয় নাতাশা।কোহিনুর বেগমকে তা বুঝতে দেয়নি।নাতাশা মুঁচকি হেসে বলে,
–আচ্ছা মা।
–নীর রাত আসুক আমি নীরের সাথে কথা বলবো।ঠিক আছে?
–আচ্ছা মা।
তারপর নাতাশা নিজ রুমে চলে আসে।আর আসরের নামাজে দাড়ায়।
সন্ধা হয়।নীর অফিসে বসে ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলছে।এরফাঁকে ডলির একশো ফোনকল।নীর ঠোঁটের কিণারায় বিরক্তি চেপে উনাদের সাথে হাসিসম্মেত কথা শেষ করে।ক্লাইন্ট সবার বিদেয় হলে ডলির আবার ফোনকল বাজে।নীর চোখেমুখে রাগ নিয়ে কলটা রিসিভ করেই বলে,
–তোর সমস্যা কি বলতো আমাকে?এইযে এত এত বার কল দিছিস আমি রিসিভ করিনি, বুঝা দরকার ছিল আমি বিজি আছি।তাছাড়া এ সময় আমি অফিসে থাকি তাতো তুই জানো!
–স্যরি নীর।আসলে তোরজন্যে একটা সারপ্রাইজ আছে তাই সারপ্রাইজের টাল না সামলাতে পেরে কল দিয়েছি।
–রাখ প্যাঁচাল!এবার বল কেন কল করেছিস?
–আজ সকালে তোকে কি বললাম মনে আছে?
–দেখা করতাম।
–হু!তো কখন আসবি?
–একটু পর অফিস থেকে বের হয়ে তোকে কল দিব।
–তুই সত্যিই আসবি?
–হু।।।
–ওকে,তাহলে আমি রেস্টুরেন্টে যাচ্ছি।তুই ভোকাল চাইনিজ রেস্টুরেন্টে চলে আসিস।ওকে?
–ওকে!!
নীর অফিস থেকে আটটায় বের হয়।গাড়ি সাইডে পার্ক করে ভোকাল চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সামনে নামে।
ডলিকে কল দেয়।ডলি কল রিসিভ করেনি।তিন-চারবার কল বাজার পর পেছন থেকে কেউ নীরকে জড়িয়ে ধরে।নীর পেছনে তাকাতেই নীরের চোখজোড়ার উপর হাত রাখে।নীর বুঝতে পারে এটা ডলি।
–ডলি প্লিজজ মেজাজটা এমনিতেই খারাপ ছাড়।
–য়ু হু!
–উফস ছাড়।কেন ডাকছিস কারণ বল!
ডলি চোখ থেকে হাত সরিয়ে নীরের সামনে এসে দাড়ায়।মুঁচকি হেসে বলে,
–ভেতরে চল।তারপর সবটা বলছি,ওকে?
–চল।
চলবে…