সাইকো বস পর্ব-০১

0
2908

#সাইকো বস
#নাহিদা ইসলাম
পর্ব-০১

আমি কিছু না বুঝে উঠার আগে ই থাপ্পড় টা আমার গালে এসে পড়ে।
—–তোকে নিষেধ করা সর্তে ও কেনো তুই জিহাদ এর সাথে কথা বললি

—আমার উপর কেনো এতো অধিকার দেখান, কে আপনি হে,,আমি আপনার কী হই।

—-বেশি উড়ার চেষ্টা করো না, ডানা ভেঙ্গে দিবো, কয়েকটা দিন যাক বুঝতে পারবা, আমি কে।

এই বলে চলে গেলো।

আমি অহনা। অনার্স ২য় বর্ষের ছাএী। বাবা নেই। মাকে নিয়ে ই আমার জীবন। আমার আর কোনো ভাই বোন ও নেই।

আর এই যে বজ্জাতের হাড্ডি একটু আগে আমার উপর অধিকার খাটালো। উনি হচ্ছে শুভ্র রহমান। হামজা রহমানের একমাএ রাগি বজ্জাত ছেলে। দেখতে অনেক সুন্দর যেকোনো মেয়ে ই দেখলে ক্রাশ খাবে। কিন্তু আমার জীবনটা অন্য রকম তাই এগুলো ভালো লাগে না।

এই শুভ্র জন্য আমি কিছু ই করতে পরি না ওনার সিকিউরিটিরা সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখে।

জিহাদ আমাকে পছন্দ করে, আমি পাত্তা দেই না কিন্তু যখন ই শুভ্রকে দেখি। তখন ই শুভ্র কে দেখিয়ে দেখিয়ে কথা বলি যাতে উনি আমাকে খারাপ ভেবে আমার পিছু ছেড়ে দেয়।

কিন্তু কাজ হয় না উল্টো আমার এই রকম থাপ্পড় খেতে হয়। আর জিহাদ এর কী অবস্থা হবে আল্লাহ ই জানে। আমার এতো কিছু চিন্তা করে লাভ নেই, বাসা চলে যাই।

—-কী রে কাজ হইছি।

—-জ্বী বস। গোডাউনে। আমরা ই মেরে ফেলে দেই বস আপনার আসতে হবে না। কত বড় সাহস ভাবির সাথে কথা বলতে যায়।

—– নাহ্। তোদের কিছু করতে হবে না আমি আসছি। হালকা কিছু চড় থাপ্পড় দে।

গোডাউনে যাওয়ার পর,

শুভ্র বলতে শুরু করলো,

—– কী রে জীবনের মায়া ভুলে গেলি নাকি।

—– না ভাই আর হবে না। আমার ভুল হয়ে গেছে। মাফ করে দেন ভাই।

—— এই বারের মতো মাফ করে দিলাম লাস্ট ওয়ার্নিং আর কখনো অহনার আশে পাশে ও যানো না দেখি।

——জ্বি , ভাইয়া। মাফ করে দেন আর কখনো আসবো না অহনার পাশে

এই থাম অহনা কী ভাবি বল।

—জ্বি ভাই ভাবি আর কখনো আসবো না ভাবির আশে পাশে।

এই রাসেল চোখ বেঁধে নিয়ে বাড়িতে দিয়ে আস ওরে।

—-জ্বি বস।

মা এই মা, মা কই তুমি।

—-কীরে, মা মা করে বাড়ি মাথায় তুলতেছিস কেনো।

—–মা তোমার মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো, কী হয়েছে আমাকে বলো।

—-কিছু হয়নিরে মা আয় খেতে আয়।

—আগে বলো কী হয়েছে। তারপর খাবো, না হয় খাবো না।

—-মারে এই ভাবে আর সংসার কতো দিন চলবে, টাকা পয়সা ও শেষ হয়ে আসছে। তোর বাবা ব্যাংকে জমা টাকা দিয়ে তো এতো দিন চললাম। এখন তো সব শেষ, দেখনা তুই যদি একটা চাকুরী ব্যবস্থা করতে পারছ কিনা।

—-মা আমার লেখা পড়া তো এখনো শেষ হয়নি কে দিবে আমাকে চাকুরী।

—-যে টুকু ই করেছিস, দেখনা কোনো ব্যবস্থা হয় নাকি।

—- আচ্ছা মা দেখবো। তোমার মেয়ে সব পারবে। এখন আমাকে খেতে দাও আর একটু হাসো।

মাকে তো বলে দিলাম কিন্তু আমি এখন জব পাবো কোথায়। যে করে ই হক একটা ব্যবস্থা তো করতে ই হবে। আচ্ছা দেখি রিনিকে একটা কল করে রিনির অফিসে কোনো ব্যবস্থা করতে পারে কী না।

রিনিকে কল দেওয়ার পর,

——হ্যালো রিনি। কেমন আছিস।

— এই তো ভালো, তুই কেমন আছিস।

—আছিরে কোনো রকম, আচ্ছা তোর অফিসে কী কোনো পোস্ট খালি আছে কী আমার কাজ এর খুব প্রয়োজন।

—-আচ্ছা তুই কালকে আয় আমি দেখি কী করা যায়।

—- আচ্ছা। তাহলে রাখি।

আল্লাহ তুমি কালকে আমার একটা জব এর ব্যবস্থা করে দিও।

হঠাৎ ফোনে একটা মেসেজ আসলো। মেসেজটা সিন করে দেখি শুভ্রর।
মেসেজে লিখা ছিলো,

জানেমান বারান্দায় এসো না হয় বাসায় চলে আসবো।

এই হনুমান টা তো বারান্দায় না দেখতে পেলে ঠিক ই চলে আসবে কী করি এখন। সহ্য হয় না এই শুভ্রটা আমার তা ও এটা সামনে এসে পড়ে সব সময়। কী আর করবো বাদ্য হয়ে গেলাম, বারান্দায়। না হয় বাসায় চলে আসবে। বাসায় চলে আসলে আম্মু আমাকে মেরে ফেলবে।

—-জানেমান আই লাভ ইউ।

রাগে আমার এই হনুমান টাকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে। এতো জোরে বলতেছে আশেপাশের মানুষ শুনতেছে।

—-কী রে অহনা এখানে কী করিস। রুমে যা।

—- না মা কিছু না। এমনি হাওয়া খেতে এসেছি।

এই বলে চলে আসলাম।

পরের দিন সকালে

ফোন অফ করে রাখছিলাম। কারন হনুমান টা মেসেজ দিয়ে জ্বালিয়ে মারছিল। মেসেজের রিপ্লাই না করলে বার বার এখই কথা বাসায় চলে আসবে।

উঠে দেখি ১০০+ মেসেজ হয়ে আছে। আজকে আমাকে শেষ করে ফেলবে। মেসেজ সিন না করে রেডি হয়ে রিনির দেওয়া ঠিকানায় যাই। ঘুম থেকে উঠতে লেইট হয়ে গেছে।

অফিসে যাওয়ার পর,

জবটা আপনাকে দিতে পারি, কিন্তু কয়েকটা শর্ত সাপেক্ষে।

আপনাকে আমাদের স্যার এর ছেলের পি.এ হতে হবে।

আপনার লেখা পড়া ও শেষ হয়নি, তাই এই কাজ টা চাইলে আপনি করতে পারে।

আমার জন্য কাজটা দরকার, তাই সব শর্ত মেনে আমি কাজটা নিতে চাই।

আচ্ছা তাহলে এই পেপারে সাইন করুন আগামী তিন বছরের জন্য আপনি চুক্তি বদ্ধ থাকবে আমাদের অফিসের সাথে।

অহনা সাইন করে দিলো।

—- ধন্যবাদ কালকে থেকে আপনি কাজে জয়েন করবেন।আজকে আসতে পারে।

অহনা খুশি হয়ে বাড়ি চলে গেলো।

রাস্তা দেখা হলো বজ্জাত, হনুমান মার্কা শুভ্রর সাথে এই ছেলে তো একটা পাগল এখন আমাকে ও পাগল বানিয়ে ছাড়বে।

—- কালকে রাতে কোথায় ছিলে। মেসের রিপ্লাই দেও নাই কেনো।

—–এই এই আপনি কে হে, আপনার মেসেজ এর উওর দেওয়ার সময় আমার নাই। আমি হচ্ছি অহনা চৌধুরী। সম্মান দিয়ে কথা বলেন।চোখো কালো সানগ্লাস টা দিয়ে বললাম।

আমার এমন ব্যবহারে শুভ্র সেই পরিমানের শকট। বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি এই সুযোগে চলে আসছি।

— বাসায় এসে মাকে সুখবর টা দিলাম।

— যাক এতো দিনে তাহলে আল্লাহ আমাদের কষ্ট টা বুঝলো।

পরের দিন সকালে অফিসে,

একজন এসে আমাকে সব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে গেলো, উনি এখন আমাকে নিয়ে স্যার এর ছেলে মানে আমার বস এর কেবিনে নিয়ে গেলো।

পিছন ঘুরে দাড়িয়ে আছে। লম্বা একটা খাম্বা মনে হচ্ছে। উনি ঈশারায় ঐ স্টাফ টাকে যেতে বললেন।

এএএএএএ আল্লাহ আমি এটা কাকে দেখছি শুভ্র।
এখন তো আমার কান্না করে মরে যেতে ইচ্ছে করছে। এই হনুমান টা আমার বস। ওহ্ আল্লাহ আমাকে নিয়ে যাও।

—–কী হলো মিস অহনা, কী ভাবছেন। আমি আপান বস দেখে সম্মান করেন সানগ্লাস টা পড়ে।

এই রে আমার কথা আমাকে ই ফিরে দিচ্ছে। আল্লাহ ই জানে আমার কপালে কী আছে।

চলবে,

[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ]