সাইকো বস পর্ব-০৪

0
2066

#সাইকো বস
#নাহিদা ইসলাম
পর্ব ৪

হঠাৎ করে ই সামনে শুভ্রকে দেখতে পেলাম, আমার দিকে এমন লুক দিয়ে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে এখন ই খেয়ে ফেলবে। আজকে আমি শেষ, আল্লাহ তুমি বাচাও এই বলে দিলাম এক দৌড়ে আম্মু কাছে, কিন্তু তাও রক্ষে নেই আজকে।

আম্মুকে খুজে পাইতেছি না এতো মানুষের ভিরে কোথায় যে গেলো, এইদিকে ভয়ে আমার প্রান পাখি ওরে যাওয়া অবস্থা।
পিছনে তাকিয়ে দেখি ইভান। ইভান হচ্ছে একটু আগে যার কথার উওর আমি হেঁসে হেঁসে দিচ্ছিলাম।

—-এই যে মিস কী খুজতেছেন, এভাবে। আমাকে বলেন আমি ও একটু খুজি।

—- আপনার মাথার খুলি মনে মনে বললাম। কিছু না

এই বলে চলে যেতে লাগলাম, এই খাটাশ ছেলেটা আবার সামনে এসে দাড়ালো,

—- কোথায় যাচ্ছেন, আমাকে ও নিয়ে যান।

— এই আমি বাথরুমে গেলো কী আপনার কাছে বলে যেতে হবে। উগান্ডা যাচ্ছি যাবেন আমার সাথে।

—- আপনি চাইলে আমি আপনার সাথে জাহান্নামে ও যেতে রাজি। এমন একটা সুন্দরী পাশে থাকলে পুরো পৃথিবী টা ই সুন্দর লাগে।

—- এই হইছে আপনার টুরু দেখানো। এখন যাই আমি

এটা বলে চলে আসলাম কে বলবে আমাকে এই ছেলের সাথে কথা বলতাম এখন মজা বুঝতেছি। এটা ভাবতে ভাবতে হাটতেছি কে জেনো আমার হাত ধরে টান দিয়ে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে গেলো, রুমে নিয়ে ই আমর ঠোঁট দুটো দখল করে নিলো। এতো শক্ত করে ধরে রেখেছে, আমি হাত পা ছুটাছুটি করে ও বিন্দু পরিমান আমার কাছ থেকে নাড়াতে পারিনি। না পেরে কান্না করে দিলাম। জানি কাজটা শুভ্রর। আমাকে কান্না করতে দেখে শুভ্র ছেরে দিলো।

তোকে আমি ঐদিন কী বলছিলাম বল, সাজতে মানা করি নাই। আজকে আবার সাজলি কেন। তোর রুপ অনেক বেশি হইছে, যে মানুষ কে দেখিয়ে বেড়াছ। আর ইভান কে জানিস তুই। আমার চাচাতো ভাই। ইভান কে আমি মারতে পারবো না। যা করার তো ই করবো। আজকে যদি কান্না না করতি দেখতে পেতি শুভ্র কী জিনিস। ছেড়ে দিলাম আজকে কিন্তু মনে রাখবি আমার কথার অবাধ্য হলে বিনা বিয়েতে ই বাসর করবো। মাইন্ড ইট মাই লাভ।
এই কথাগুলো বলে লাইট অন করে একটা চেয়ারে বসে।

—-এতো ভাবার কিছু নেই, এই যে পানি এনে রেখেছি সব সজগুজ ধুয়ে ফেল নয়তো এমন অবস্থা করবো বাসয় যেতে পারবি না।

—সব সময় আপনি আমার সাথে এমন করেন কেনো, আমি চাইনা আপনার মুখ দেখতে। আপনার কথা আমার শুনতে হবে কেনো।

এটা বলার সাথে সাথে মুখে সিগারেট টা দিয়ে আমার কাছে আসতে আসতে বললো,

শুভ রহমানের বউ তুই, তাই তোকে সব কথা শুনতে হবে। আর সারাক্ষণ দেখতে ও হবে তুই না চাইলে ও।

কী আর করবো কান্না করতে করতে সব সাজ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললাম। উনি রুম থেকে চলে গেলো।

রুম থেকে বের হয়ে রিমি আপুকে যে রুমে রাখা হইছে। ঐ রুমে গেলাম।

— কী রে মা এতোক্ষণ কোথায় ছিলি। তোকে কখন থেকে খুজছি। আর তোর এই অবস্থা কেন, এতো সাজলি এগুলো কোথায়।

—- একটু আগে তুৃমি কোথায় ছিলে মা। আমি তোমাকে খুজেছিলাম অনেক। তুমি থাকলে কী আমার সাথে এই অঘটন টা ঘটতো।

— কী হইছে মা তোর কিছু হয়নি তো।

— আরে মা না। কিছু হয়নি।

হঠাৎ রিমি আপু বলে উঠলো

—-তুই আমার সাথে আজকে যাবি আমার শ্বশুর বাড়িতে।

— না আপু আমি যাবো না। আমার অফিস আছে।

— কোথাও তো যাস না, যা রিমির সাথে, রিমির ও ভালো লাগবে তোর ও ভালো লাগবে। আমি শুভ্র বাবা কে
বলে ছুটি নিয়ে নিবো।

— না মা আমি যাবো না। জোর করো না।

হঠাৎ মামা এসে বললো , তুই আর রিধি যাবি রিমির সাথে এটা ই শেষ। রিমি কান্না করতেছে তোরা যাবি।

আমি আর মামার উপরে কথা বললাম না। মা আমার ব্যাগ
গুছিয়ে দিলো।

রিমি আপুর শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার পর,

এমা এটা কার বাড়ি এই বজ্জাত হনুমান শুভ্র টা এখানে কেনো আর এই ইভান টা ও তো আছে।

—এই রিধি এইগুকো কে রে চিনিস তুই।

—হে ইভান হচ্ছে রিমি আপুর দেবর আর ঐ ভাইয়াটা দেখছো না উনার নাম শুভ্র এটা ও রিমি আপুর দেবর কিন্তু আপন না। চাচাতো।

এই খাইছে রে জীবনটা তো তেজপাত বানিয়ে দিবে। শুভ্র এখনে।

— এই আপু তুমি এমন ভয় পাচ্ছো কেনো।

—ধিরি শোন তোকে যে বজ্জাত হনুমান টার কথা বলছিলাম না এটা সেই শুভ্র রে। আয় আমরা চলে যাই এখান থেকে নয়তো কপালে দুঃখ আছে।

— কী বলো এখন এখান থেকে চলে গেলে, সবাই কী বলবে। আর আব্বু জানতে পারলে বাসায় জায়গা দিবে না।

হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বললো চলো তোমাদের রুম দেখিয়ে দেই ভাবি।

আমার চোখ বের হয়ে যাওয়ার অবস্থা, ভাবি কে।

— কেনো তুমি অহনা না আমাদের ভাবি তোমার কথা ভাইয়ের মুখে শোনতে শোনতে দিন যায় রাত হয়। চলো তো।

— তার মানে এটা শুভ্র বোন আমাকে নিয়ে টানতে টানতে উপরে গেলো।

উপরে একটা রুমে নিয়ে গেলো আমাকে আর নিধি কে। রুমে নিয়ে দরজা অফ করে দিলো। একটু পর সাউন্ড বক্স বাজা শুরু করলো রানু মন্ডল আর মাহফুজ রহমানের গান।

হঠাৎ ফোনে মেসেজ আসলো, শুভ্র নম্বর থেকে কেমন লাগে এখন আমাকে যে টাইমে শোনাইছিলা, প্রতিশোধ নেওয়ার এর থেকে ভালো সুযোগ আর পাবো না।

আমি রাগে শেষ। ওয়েট করো বাবু এই অহনা ও কম না তোমাকে কী যে করি দেখবা।

—এই নিধি এই আ আ বন্ধ কর।

আমি কীভাবে বন্ধ করবো সাউন্ড বক্স তো উপরে রাখা যেনো আমরা ছুতে না পারি। এই তোর জন্য এমন হলো আজকে।

অনেক ক্ষন পর,

বসে বসে গান শুনি কী আর বলবো, হঠাৎ একটা মহিলা শুভ্র কান ধরে নিয়ে আসলো রুমে।

— বন্ধ কর পাজি ছেলে, আমার বউমার সাথে এমন করতেছিস আগে জানলে তোর হাত ভেঙ্গে দিলতাম।

রিমোট দিয়ে সাউন্ড বক্স বন্ধ করলো।

—আরে মা লাগছে আমার ছাড়ো।তোমার বউ মা কে কল দিছি পরে ও তো আমার সাথে এমন করছে। ছাড় আমাকে আমি যাই তোমরা
কথা বলো।

তার মানে মহিলাটা শুভ্র মা।উনি আমার দিকে এসে বললো,

— তুমি তো দেখতে ভারি মিষ্টি, আমার ছেলের পছন্দ আছে বলতে হবে।আমার ছেলেটা তোমাকে বড্ড ভালোবাসে।

এটা বলে ওনার হাত থেকে খুলে আমাকে চুড়ি পড়িয়ে দিলো।

— তোমাকে দেখে আমি এটা দিলাম, তুমি এটা রেখে দিও আমি আসি এখন। ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।

আমি হাবলার মতো দাড়ি থাকলাম কী হলো এটা। কিছু ই বুঝতে পারলাম না। সারা বাড়ির মানুষ কী আমাকে চিনে নাকি।

পরের দিন সকালে,

শুভ্র রুম টা খুজে বের করলাম

শুভ্রর রুমে গেলাম, শুভর কে সাজবো আমি, কালকে উনি আমাকে সাজ নিয়ে অনেক কিছু বলছে,

যেই না আমি গেলাম উনার বেডের কাছে আমার হাত ধরে টান দিয়ে উনার উপরে ফেলে দিলো, নিধি তো ভয়ে দিলো দৌড় এখন আমার কী হবে।

চলবে