সি আই ডি অফিসারের ভালোবাসা পর্ব-2

0
1610

গল্প: সি আই ডি অফিসারের ভালোবাসা
পর্ব-2
#Raihan
.

.
.
_ঐ কিসের আসি রে?
এখানে দাড়া আর বিশবার কান ধরে ওঠ বস কর।…
_excusme madam!
ভদ্রতা বজায় রাখুন।
আর আমি আপনার জুনিয়র কেউ না যে আমার উপর আপনি হুকুম চালাবেন।
আর language ঠিক করে কথা বলুন।
মনে রাখবেন একাধারে তিনবারের উপর বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করবো না।
আশা করি কথাটা মনে রাখবেন।
কথাটি বলে পেছনে ঘুরতেই হঠাৎ মেয়েটা আমার শার্টের কলার ধরে ফেলে।
_ঐ কি বললি তোই?
আমাকে তর সাথে ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বলতে হবে?….
তোই তো আমাকে চিনিস না।
আমি ইচ্ছে করলে তকে পাচ মিনিটের মধ্যে জেলে পুড়ে দিতে পারি।
_আরে রাখেন আপনার লেকচার।
বেশি বাড়াবাড়ি করলে ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
কথাটা মনে থাকে যেন।
বাই।।।
কথাটা বলে আমি আবার পেছন দিকে ঘুরতেই মেয়েটি আবার আমার শার্টের কলার ধরে ফেলে।
_ঐঐ তোই কে রে যে আমাকে তর কথা মনে রাখতে হবে…?
_এখনও বলছি কানধরে বিশবার উঠবস কর।
নইলে তর কপালে খুব খারাপি আছে।
_আপনি তো দেখছি আচ্ছা একটা ঘারতেড়া মেয়ে।
ঐ আপনি নিজেকে কি ভাবেন হুম?
এই কলেজের প্রন্সিপাল
নাকি এই থানার ওসি?
যত্তসব আবাল মার্কা মেয়ে লোক।
_কিহ! দাড়া দেখাচ্ছি
এই কথা বলে মেয়েটি যেইমাত্র আমার গালে চড় দিতে যাবে ঠিক তখনি ওর হাতটা ধরে ফেললাম।
_এই মেয়ে কি ভাবিস নিজেকে?
নিজেকে খুব দেমাগি ভাবিস তাই না?
তুই আমাকে চর দিতে লইছিলি?
তর ভাগ্য ভালো যে তুই মেয়ে মানুষ।
নইলে এতক্ষণ তর ঠিকানা থাকতো জেলখানা।
অতিরিক্ত রাগের মাথায় জেলখানার কথাটা বলে নিজের জিহ্বায় কামড় দেয় শাকিল।
_মা মা মানেননে……
কি কি বলিস ততুই?
খানিকটা তুতলিয়ে কথাটি বললো চাদনী।
হঠাৎ করে শাকিলের মুখে জেলখানার কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় চাদনী।

_না ইয়ে মানে আমি আপনাকে পুলিশে দিতাম হুম।।।(আমি)
কথাটা কাটানোর জন্য মিথ্যা বললাম।
কারণ যদি কেউ জানতে পারে আমরা আইনের লোক
তাহলে সব ভেস্তে যাবে।
আমি আর কিছু না বলে মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে আসলাম।
_কি রে মামো দূর থেকে তদের ড্রামা দেখলাম।
খুব ভালোই লাগছিলো…..?
_দূর আর হাসিস না।
শালার মেয়েটা সবসময় আমার সাথে কেমন যেন বিহেভ করে….?
_আরে বিহেভ করে তো কি হয়েছে?
প্রথমে তো দেখলাম মেয়েটার কথার ভালোই জবাব দিতেছিলি।
পরে চুরের মত মাথা নিচু করে চলে আইলি কেন…?
_দেখ কাটা গায়ে আর নুনের ছিড়া দিবি না বলে দিলাম।
শালার মেয়েটাকে মনে চাইতাছে রিভেলবারটা দিয়ে ডাইরেক্ট আকাশে পাঠিয়ে দেই।
এ কথাটা বলে হঠাৎ বেল্টের কাছে হাতটা পড়তেই দেখি রিভেলবার নেই।
_আরে আমার রিভেলবার কোথায়…?(আমি)
_কি রিভেলবার নেই….?(রেজা)
_না তো।
কিন্তু এখানেই তো ছিলো।
_মনের ভূলে আবার ক্লাসরুমে কোথাও ফেলে আসিস নি তো?(রেজা)
_হুম হতে পারে।
চল যাই গিয়ে দেখি।(আমি)
_না মামো তুমিই যাও।
মেয়েটাকে দেখলাম রাগে ক্ষেপে ঐদিকেই গেছে।
পরে আবার তর রাগ আমার উপরেও খাটাতে পারে।….?
_আরে কিছুই হবে না।
তর সাথে আমি আছি না…..?
_ইহহ নিজেকে খুব সাহসী ভাবতাছছ তাই না?
আরে তুই আমার সাথে আছিস দেখেই তো বিপদ…..?
_ওকে যা তকে যেতে হবে না আমি একাই যাচ্ছি।
_আমি এখানে দাড়ালাম।
তাড়াতাড়ি আসিস কিন্তু।(রেজা)
_আচ্ছা।
আমি আস্তে আস্তে ক্লাস রুমের দিকে এগোচ্ছি আর মনে মনে আল্লাহকে ডাকছি।
_হে আল্লাহ কোনো ক্রমে যেন মেয়েটার সাথে দেখা না হয়।
এখন দেখা হলে আর উপায়ও নেই।
কিন্তু কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয়,সেখানেই সন্ধে হয়!
আমার বেলায় ঠিক সেটাই হলো।

ক্লাসরুমে ঢুকতেই দেখি মেয়েটা একটা ল্যাপটব বের করে কার সাথে যেন ভিডিও কলে কথা বলছে।
সাথে ওর বান্ধবী সবগুলো বসে আছে।
হঠাৎ আমাকে দেখার সাথে সাথেই ল্যাপটবটা অফ করে দেয়।
_ইউ স্টোপিড!
তোই আবার এখানে কেন?
দেখছিস না এখন একটা ছেলেও ক্লাসরূমে নেই।
সব মেয়েরা এখানে বসে আছে।
আর তোই কি না এখানে?…?
_না ইয়ে মানে একটু দরকার ছিলো তো তাই আসছি।
_অজুহাত দেও তাই না?
এই চাদনীকে?
হাহাহা দাড়া এখনি তর অজুহাত বের করছি।
কথাটা বলেই মেয়েটি থানায় ফোন করে।

আর আমিও আর কিছু না বলে বেন্ঞ্চের নিচে থেকে রিভেলবারটা নিয়ে চলে আসি।
যাক বাবাহ এরা রিভেলবারটা দেখতে পাই নি।
দেখতে পাইলে উপায়ও ছিলো না।
আর এদিকে আমি ভাবছি
মেয়েটা যেহেতু থানায় ফোন করেছে
সুতরাং এখানে যেহেতু কেউ আমাদেরকে চেনে না
তাই পুলিশ আমাদেরকে অবশ্যয় ধরে নিয়ে যাবে।
আর তাই আমি মাসূদ,সবুজকে ফোন করে বলে দিলাম
পাশাপাশি রেজা আমার সাথে থাকায় ওকেও বুঝিয়ে দিলাম
কিভাবে কি করতে হবে।
মোটকথা আমাদের পরিচয়টা যেন কেউ না জানতে পারে।
ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে আমি আর রেজা ক্যাম্পাসের বট গাছটার নিচে বসে আছি।

হঠাৎ মেয়েটি পুলিশ নিয়ে এসে হাজির।
_এখানে শাকিল কে?(এস.আই)
_জি আমি শাকিল।
কেন কি হয়েছে….?
_ আমাদের সাথে থানায় চলেন(এস.আই)
_আমার অপরাধ?(আমি)
_আপনি চাদনী মেডামকে বিরক্ত করেন।
এমন কি তাকে কিডনাপ করারও হুমকি দিয়েছেন!
হঠাৎ এস.আই এর মুখ থেকে কথাটা শুনে আমার যেন গাছের নিচে বসে দুই মিনিট কাদতে ইচ্ছে করতাছে।
না থাক কাদলে আবার লোকে খারাপ ভাববে
তাই আর কাদলাম না।
হায় রে মেয়েটা বলে কি?
আমি নাকি ওকে কিডনাপ করতে চেয়েছি।
আসলে মেয়েরা বলতেও পারে মাইরি।
এমনভাবে মিথ্যা কথা বলে যেন পেয়াজ,আর কাচা মরিচ দিয়ে পানতা ভাত খাচ্ছে।
_ওকে মিস চাদনী আপনী এখন আসেন{এস.আই}
_হুম চল(চাদনী)
এই কথা বলে চাদনী ওর সকল বান্ধবীদের নিয়ে চলে গেলো।
আর এদিকে আমি আর রেজা হা করে তাকিয়ে ওদের চলে যাওয়া দেখছি।…?
_মিঃশাকিল চলেন।(এস.আই)
_হুম চলেন।{আমি}
_যাও মামো! বিদায়।
একটু পরে তোমাকে ছাড়াইতে আসতাছি…?
_আরে হালা রাখ তর আসা-আসি।
কখনো আমার মত কখনো এমন প্যাচে পড়লে পরে বুঝবি….?
_রেজার উপর রাগ দেখিয়ে ভার্সিটির গেইটটা পার হতেই
_কি মামো ছাগলের চার নাম্বার বাচ্চার মত লাফায়া লাফায়া কনে যাইতাছ…??{মাসুদ)
পেছনে তাকিয়ে দেখি মাসুদ আর সবুজ দাড়িয়ে আছে।
আর আমাকে পুলিশদের সাথে দেখে হাসছে।
_শ্বশূর বাড়ি যাই!
যাবা আমার সাথে?…?(আমি)
রাগে মনডা চাইতাছে শালাদেরকে রিভেলবারটা দিয়ে শুট করে দেই।
হঠাৎ করে মনে হয়ে গেল রিভেলবারটার কথা।
এখন নাকি আবার এটার জন্য প্যাচে পড়ি কে জানে।
যদি পুলিশে এটা দেখার পর প্রশ্ন করে তাহলে কি জবাব দেব?
আর যদি পরিচয়টা দিয়ে দেই তাহলেও তো আবার আরেক বিপদ।
এদিকে বিপদে আমার মাথা নষ্ট আর ঐদিকে হারামিরা আমার তামাশা দেখে হাসছে।
_কি রে শালা যা শ্বশুর বাড়ি।
আমরা একটু পরে আইতাছি…?{সবুজ}
_মন খারাপ করিস না ভাই।
যদি থাকে নসিবে
তাহলে আপনা আপনি বিপদ আসিবে…?{মাসুদ}
ঐ তরা আমার বন্ধু নাকি শত্রু!
কোথায় আমি বিপদে পড়ছি সেটা থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করবি।
আর তা না করে উল্টা আমার সাথে ফাইজলামি শুরু করছছ…?{আমি}
এখন আমার পুলিশদের উপরেও রাগ ওঠতেছে।
এরা আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য না তাড়া দিয়ে উল্টা মজা নিতেছে।
_কি এস.আই সাহেব!
আমাকে থানায় নিয়ে যাবেন নাকি এখানে দাড়িয়ে মজা দেখবেন…?(আমি)
আমার কথাই মনে হয় এস.আই অন্যসবার সামনে খানিকটা লজ্জা পেল।
আর তাই তিনি আমাকে সহ অন্যসব পুলিশদের গাড়িতে ওঠার জন্য বললেন।
আমি গাড়িতে ওঠে ওদের দিকে তাকিয়ে দেখি শালারা দু জনে হাসতে হাসতে মনে হয় গড়াগড়ি খাচ্ছে।
গাড়িতে ওঠার সাথে সাথেই গাড়ি ছেড়ে দেয়
আর সোজা থানার সামনে এসে গাড়ি থেমে যায়।
থানার ভিতরে যেতেই___
_এক মিনিট অফিসার আপনার ফোনে শীঘ্রই একটি ফোন আসছে
সেটা রিসিভ করুন।
আমার কথাটা শুনে এস.আই পকেট থেকে ফোনটা হাতে নিতেই তার ফোনে একটা কল আসে।
আর এস.আই নাম্বারটা দেখেই ঢুক গিলতে থাকে।
কারণ ফোনটা ছিলো কমিশনারের ফোন।
এস.আই ফোনটা রিসীভ করতেই
এস.আই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে আর জি স্যার জি স্যার বলে বলে ফোনে জবাব দিচ্ছে।
এভাবে প্রায় দুই মিনিট কথা বলার পর
_কি অফিসার অবাক হচ্ছেন?
আরে অবাক হওয়ার মত কিছু নেই।
আচ্ছা আসি তাহলে। বাই….
এস.আই কে বাই বলে যেই মাত্র রুম থেকে বের হবো ঠিক তখনি খেলাম এক ধাক্কা।
ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথেই কে যেন এসে একেবারে আমার উপরে পড়ে যায়।
হঠাৎ তার মুখের দিকে তাকাতেই আমার যেন আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ে।
হায় রে বিপদ!
আরে এ টা তো দেখছি………
to be continue