#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১১
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সরি আদ্রিতা কথাটি মনে মনে বলে।সাজ্জাদ আদ্রিতার মাথায় পিস্তল দিয়ে জোরে করে একটি আঘাত করলো।
হঠাৎ মাথায় কিছুর আঘাত পেয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। আর কিছু মনে নেই সব অন্ধকার হয়ে আসছে।
দূর থেকে একজন সাজ্জাদের দিকে বন্দুক দিয়ে স্যুট করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। বন্ধুকের গুলি চালাবে ঠিক এমন সময় পিছন থেকে স্বাধীন এসে স্যুট করলো ঔই লোকটির হাতে।
একটি মহিলা পুলিশ এসে আদ্রিতাকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। অন্যদিকে স্বাধীন আগে থেকেই সামিরাকে স্প্রের মাধ্যমে অজ্ঞান করে দিয়েছে।
সাজ্জাদ আগেই দেখতে পেরেছিলো S.R লোকদের এইজন্যই তখন আদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরেছিলো। যদি আদ্রিতার উপর গুলি করে তা থেকে ওকে বাঁচাতে। আদ্রিতা অনেক বার ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু ততবারই সাজ্জাদ আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। রাস্তার মধ্যে দেখে আদ্রিতা কোনোরকম শব্দ করে নি। আর এখন S.R এর বিষয় গুলো আদ্রিতা বা সামিরা দেখতে না পারে এ জন্য দু’জন কেই অজ্ঞান করে দিয়েছে।
দোস্ত আমার মনে হচ্ছে S.R দেশে ফিরে আসছে না হলে ওর লোকদের এতো সাহস হতো না আমরা এইখানে থাকতে হালমা করার চেষ্টা করতো না ( স্বাধীন)
হ্যাঁ, আমার ও মনে হচ্ছে না হলে কোন সাহসে ওরা আমাদের সামনে এসেছে। পার্কের চারদিকে S.R দের লোক আছে। যদি ও স্বাধীন আগে থেকে পুলিশেদের জানিয়ে রেখেছিলো তাই কারোর ক্ষতি হয় নি। কিন্তু সাজ্জাদ বা স্বাধীন কেউ চাচ্ছিল না যেনো আদ্রিতা বা সামিরা ঘটনা গুলো জানে। কারন এই কথা গুলো এখন জানলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সাজ্জাদ আর স্বাধীন এ দিক সামলে নিলো বাকি পুলিশরা ও আছে। S.R দের সব লোকদের ধরতে তারা সক্ষম হয় নি। কিন্তু কয়েকজন কে ধরতে পেরেছে। তাদের পুলিশরা থানায় নিয়ে গেছে। সাজ্জাদের একটি চিন্তা যেভাবেই হোক না কেনো S.R তথ্য বের করতে হবে না হলে অনেক ক্ষতি হতে পারে।
সাজ্জাদ আর স্বাধীন গাড়িতে এসে বসলো। সামিরা বা আদ্রিতা কারোরই জ্ঞান নেই। সাজ্জাদ গাড়ি চালানো শুরু করলো। সাজ্জাদের পাশে আদ্রিতা আর স্বাধীনের পাশে সামিরা।
সামিরা আস্তে আস্তে চোখ খুললে, স্বাধীন বলে উঠে মিস সামিরা আপনি ঠিক আছেন।
হ্যাঁ, ঠিক আছি কিন্তু হঠাৎ কি হয়েছিলো?(সামিরা)
আমার মনে হচ্ছে পার্কের খাবারে কোনো ভেজাল ছিলো। হঠাৎ আপনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। আবার আদ্রিতার ও একই অবস্থা। (স্বাধীন)
কি আদুরি? আদুরি ঠিক আছে ত?(সামিরা)
হ্যাঁ, ঠিক আছে কিন্তু খাবারে কোনো সমস্যা হওয়ার জন্য মনে হয় সমস্যা হয়েছে আপনাদের।(স্বাধীন)
সামিরা ও স্বাধীনের কথা বিশ্বাস করে নিলো।
মাথাটা ব্যথা করছে চোখ খুলে দেখলাম সাজ্জাদ পাশে গাড়ি চালাচ্ছে। আর দি স্বাধীন কথা বলছে। সাজ্জাদকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছিলো তখন হঠাৎ মনে হলো কেউ যেনো মাথায় কিছু দিয়ে আঘাত করেছিলো।
সামিরা বলে উঠলো, আদুরি পার্কের খাবারে কোনো সমস্যা হয়েছিলো। তোর মতো হঠাৎ আমার ও জ্ঞান হারিয়ে গিয়েছিলো। আর সাজ্জাদ ও স্বাধীন যেহেতু কিছু খায় নি তাই ওদের সমস্যা হয়নি।
দির কথাটা কোনো জানি বিশ্বাস হচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে কোনো একটি ভেজাল হয়েছিলো।
স্বাধীন ও বলে উঠলো, হ্যাঁ সামিরা ঠিক বলছে।
তারপর সাজ্জাদ আর স্বাধীন আমাদের বাড়ির সামনে নামিয়ে তারা চলে গেলো।
দি আমার মনে হচ্ছে কোনো একটা ভেজাল আছে। কিছু ত একটা আছে যা আমাদের আড়ালে হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা জানি না।(আদ্রিতা)
আমার মনে হয় না কোনো ঝামেলা আছে। আদুরি তুই একটু বেশি চিন্তা করিছ।(সামিরা)
আমি আর কিছু বললাম না। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে রাতে আগে আগে শুয়ে পড়লাম আমরা। কিন্তু একটি দিক কোনোভাবেই বুঝতে পারছি না। সেই দু’বছর আগের ঘটনা, সেদিন রাতে বাসায় হামলা, আজকে পার্কে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা। সব কিছুর মধ্যেই সাজ্জাদ ছিলো। এমন কোনো ব্যাপার হচ্ছে না ত যা আমাদের ঘিরে কিন্তু আমরা জানি না? কথা গুলো চিন্তা করতে করতে মাথা ব্যথা হয়ে আসছে। ঘুমিয়ে পড়লাম।
সাজ্জাদ তুই কি পাগল হয়ে গেছিছ? আমার পক্ষে এ কাজ সম্ভব নয়। ( স্বাধীন)
একটু বোঝার চেষ্টা কর এ কাজের মাধ্যমে আমরা সবাই ভালো থাকতে পারবো। (সাজ্জাদ)
প্রথমে স্বাধীন সাজ্জাদের কথায় রাজি না হলে ও পরে সব দিক বিবেচনা করে রাজি হয়ে যায়।
****কিছুদিন পর *****
সময় আপন গতিতে ছুটে চলেছে। সেদিনের পর সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার কোনো রকম যোগাযোগ হয় নি।
কলেজে বসে আছি। আমি, আলো, তানহা আর আবির। এক সপ্তাহ পর কলেজে অনুষ্ঠান। তা নিয়েই আমাদের কথা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের সব কাজের দায়িত্ব আরিয়ান স্যার আমাদের দিয়েছেন।
তোরা কেনো পারফরম্যান্স করবি না? (আবির)
হ্যাঁ, আমি আর আদ্রিতা এক সাথে গান দিবো ভাবতেছি তোরা কি করবি?(আলো)
আমরা কিছু করবো না আমরা অনুষ্ঠানের বাকি দিক গুলো সামলে নিবো। ( তানহা)
ওকে। তাহলে সব কাজ গুলো ঠিক মতো ভাগ করে নেই।যেহেতু প্রধান অতিথি হিসেবে দেশের সেরা ব্যবসায়ীরা থাকবে তাহলে আমাদের বেস্ট একটি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের কলেজের সুনামের ও একটি ব্যাপার আছে। ( আবির)
আবিরের কথায় সবাই সম্মতি প্রকাশ করলো। কিরে আদ্রিতা কিছু বলতেছিছ না যে?(তানহা)
আরে না এমনি। তোরা বল আমি শুনছি। (আদ্রিতা)
আদ্রিতা আমার সাথে একটু মার্কেট যেতে পারবি আমার ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছে।(আলো)
ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছে মানে? অনুষ্ঠানের সব দায়িত্ব আমাদের উপর। এখন যে তোর ফোন নষ্ট হয়ে গেলো আমরা সবাই তোর সাথে যোগাযোগ করবো কিভাবে? আমাদের যোগাযোগ থাকা এখন জুরুরি। ( আবির)
আরে চিন্তা করিছ না, আমার আর আলোর বাসা ত পাশাপাশি আলোকে কোনো দরকার হলে আমাকে কল দিলেই হবে। আর আলো তোর কাছে কেউ তোর নাম্বার চাইলে আমার নাম্বার দিয়ে দিস তোর হয়ে আমি অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব কথা বলে নিবো। ( আদ্রিতা)
ওকে আমি তোর নাম্বার দিয়ে দিবো।(আলো)
অনুষ্ঠানের জন্য এমনি আমার মার্কেট যেতে হবে। আমরা প্রোগ্রামের আগের দিন যাবো একসাথে ঠিক আছে? তখনই তোর ফোন কিনে নেবো? আর তোরা ও যাবি? (আদ্রিতা)
আবির আর তানহা বললো, হ্যাঁ আমরা ও যাবো।
তখন আরিয়ান আসলো বললো, সব দায়িত্ব তোমাদের উপর। কলেজের সুনাম জড়িত থাকবে। তাই আশা করি তোমরা ভালো ভাবে কাজ করবে।
আমরা সবাই বললাম, জ্বি স্যার।
আরিয়ান স্যার বললো তোমাদের মধ্যে যেকোনো দু’জন এসো আমার সাথে। বাকি কাজ গুলো দেখিয়ে দেয় কথাটি বলে আরিয়ান স্যার চলে গেলেন। আমি আলো আর তানহাকে বললাম স্যারের সাথে যেতে ওরা গেলো স্যারের সাথে। আমি আর আবির কথা বলতে বলতে কলেজের বাইরে এসে দাঁড়ালাম আলো আর তানহার জন্য।
এদিকে ~
সাজ্জাদ গাড়ি নিয়ে আদ্রিতার কলেজের একটু দুরে দাঁড়িয়ে ছিলো। এতোদিন ও আদ্রিতার সাথে দেখা করার জন্য এসেছিলো। কিন্তু দেখা হয় নি। আর আজকে আদ্রিতাকে অন্য ছেলের সাথে দেখে। সাজ্জাদের মাথা গরম হয়ে গেলো। রেগে চলে গেলো সেখান থেকে। কিছুক্ষণ পর আলো আর তানহা আসলো।
*******
অফিসে একটি ছেলে বসে আছে, হাতে একটি মেয়ের ছবি। ছেলেটি ভাবতেছে তুমি এখনো আমার কাছে অপরিচিত। মেনে নেবে ত আমাকে তোমার হাসবেন্ড হিসেবে? আমি ও জানি যেইভাবে প্লেন করেছি সেভাবে বিয়ে করা ঠিক নই।কিন্তু বিশ্বাস করো তোমাকে আমি অনেক ভালো রাখবো। তুমি আমার কাছে অসময়ী বৃষ্টির মতো। তুমি আমার অসময়ী বৃষ্টি। কথাগুলো ভেবে ছেলেটা আনমনে হেসে উঠলো।
*******
কলেজ ছুটির পর বাসায় চলে আসলাম। অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে ফোনে তানহার সাথে কথা বলছিলাম এমন সময় ফোনে একটি মেসেজ আসলো। মেসেজ এ লিখা ছিলো, ভালোবাসি তোমাকে! অবাক হয়ে গেলাম আমাকে এই মেসেজটি কে দিবে?
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১২
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আমাকে এই মেসেজটি কে দিবে? রিপ্লাই দিবো নাকি না বুঝতেছি না। মনে হয় কেউ মজা করেছে তাই আর কোনো রিপ্লাই দিলাম না। তানহার সাথে কথা শেষ করে পড়া গুলো কমপ্লিট করে নিলাম। রাতের খাবার খেয়ে রুমে এসে দেখলাম আবার ওই নাম্বার থেকে মেসেজ এইবার বলেছে, তোমাকে একবার দেখার জন্য কতোবার তোমার সামনে আসি তুমি কি দেখো না আমায়?
অবাক হয়ে গেলাম এই মেসেজ গুলো কে করছে? সাজ্জাদ নয় ত? ব্লক করে দিবো নাকি বুঝতে পারছি না। কিন্তু ব্লক করলাম না কে মেসেজ দিচ্ছে তা আমাকে জানতেই হবে। কথা গুলো ভেবে একটু দির রুমে গেলাম কতক্ষণ গল্প করে আবার রুমে ফিরে আসলাম।
আদ্রিতা চলে যাওয়ার পর সামিরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। ভাবছে কি হতে চলেছে ৩টি জীবনের আদোও কি তারা সুখি হতে পারবে সবাই?নাকি সবার জীবন এলোমেলো হয়ে যাবে?
এদিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটি ছেলে সামিরাকে দেখছে। সে হয়তো বুঝতে পারছে সামিরা কি বিষয় নিয়ে চিন্তিত। ছেলেটি মনে মনে বলে উঠলো, অসময়ী বৃষ্টি চিন্তা করো না আর কিছুদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
সামিরা আর ও কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রুমে চলে গেলো। সামিরা বড্ড চাপা স্বভাবের কোনো কিছু নিয়ে অনেক কষ্ট পেলে ও কখনো বলবে না কাউকে। সে চাইলেই বিয়ে ভেঙে দিতে পারছে না। সামিরা জানতো না সাজ্জাদের সাথে তার বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। তার বাবা যখন সামিরাকে জিজ্ঞেস করেছিলো সামিরার বিয়েতে মত আছে কি না? তখন সামিরা বলেছিলো যেহেতু বাবার পছন্দ তাই তার মত আছে। বাবার পছন্দ খারাপ হবে না সেজন্য আগে থেকে ছেলেকে দেখার প্রয়োজন মনে করি নি। অন্যদিকে মেয়ের মত আছে দেখে আত্মীয় স্বজনদের জানানো হয় বিয়ের ব্যাপারে। এখন কথা বার্তা অনেক এগিয়ে গিয়েছে বিয়ের তারিখ পর্যন্ত ঠিক করা কিভাবে বিয়ে ভেঙে দেওয়া যাবে কিছুই বুঝতে পারছে না সামিরা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘুমিয়ে পড়লো।
*********
সাজ্জাদ মাএ তার সব কাজ শেষ করলো। আজকে আদ্রিতার সাথে অন্য একটি ছেলেকে দেখে তার মোটেও ভালো লাগে নি। কিন্তু আদ্রিতাকে সরাসরি কিছু বলার অধিকার নেই তার। চারটি জীবন একে অন্যের সাথে জড়িয়ে আছে। এর মধ্যে ২টি জীবন যদি একএে হয় যায় তাহলে একজনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
*******
স্বাধীন নিজে ও চিন্তিত সে বুঝতে পারছে না সাজ্জাদের সিদ্ধান্ত কি সঠিক কি না? আর সাজ্জাদ যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে কি সবার ভালো হবে নাকি খারাপ তাও বুঝতে পারছে না।
*******
আকে রাতে ৪০ টি মেয়ে প্রাচার করতে হবে।
কিন্তু বস পুলিশদের নজর আছে সব জায়গায়।
যেভাবেই হোক মেয়েদের প্রাচার করতে হবে আজকে। আর আদ্রিতা নামের মেয়েটিকে তুলে আন। পারলে ওর সাথে অন্য মেয়েরা থাকলে তাদের ও তুলে আন।
ওকে বস।
সকালে ~
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লাম। আজকে আলো আসবে না আমার একাই যেতে হবে। রাস্তায় রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় আরিয়ান স্যার আসলো। বললো কি ব্যাপার একা দাঁড়িয়ে যে?
স্যার আজকে কলেজে আলো আসবে না তাই রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। ( আদ্রিতা)
ও আচ্ছা, (আরিয়ান)
স্যার আমার সাথে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কথা বলছে।
সাজ্জাদ ঠিক করেছিলো আজকে আদ্রিতাকে কলেঝে পৌঁছে দিবে। কারন সাজ্জাদ শতভাগ নিশ্চিত S.R এর লোক আদ্রিতার আশে পাশে আছে। কিন্তু রাস্তায় আরিয়ানের সাথে দেখে সাজ্জাদের রাগ বেড়ে গেলো। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ রেখে আদ্রিতাকে বললো গাড়িতে উঠো। আরিয়ান বললো কিরে তুই কি প্রায়ই ওকে কলেজে দেয়ে আসিস?
হ্যাঁ, কলেজের সামনে দিয়েই অফিস যায়। বাচ্চা মেয়ে বলা ত যায় না রাস্তায় কখন কার নজরে পড়ে তাই আমি দিয়ে আসি ওকে।
কথাটি কেনো জানি আরিয়ানের ভালো লাগলো না। আচ্ছা আদ্রিতা তুমি যাও কথাটি বলে আরিয়ান চলে গেলো।
কিসের বাচ্চা মেয়ে? আমি ইন্টার ১ম বর্ষের স্টুডেন্ট। আর আমি যাবো না আপনার সাথে। (আদ্রিতা)
রাস্তায় কোনো রকম ঝামেলা করো না। চুপচাপ গাড়িতে বসো। (সাজ্জাদ)
না যাবো না। ( আদ্রিতা)
চুপচাপ যাবে নাকি তুলে নিয়ে যাবো? সাজ্জাদ একটি হাসি দিয়ে বললো আমার কোলে উঠার শখ হয়েছে নাকি? তাহলে আসো তোমাকে গাড়িতে নিয়ে যায়। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের কথা শুনে লজ্জায় যেনো সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। মানুষটার মুখে কি কোনো কথা আটকায় না নাকি? এমনি আমাদের কথা রাস্তায় অনেক লোক শুনছে। তাই আর কথা না বাড়িয়ে সাজ্জাদের সাথে গাড়িতে উঠে পড়লাম। পিছনে বসতে নিলাম সাজ্জাদ বললো সামনে বসো। কথা বাড়ালাম না বসে পড়লাম। গাড়ি চলছে আপন গতিতে। গাড়িতে একটি গান বাজছে…
কোন রুপকথার দেশে
আমি থাকছি মিলেমিশে
কেন বইছে হাওয়া দখিন দিকে খুব
সে কি দেখতে পেয়েও পায়না
নাকি দেখতে আমায় চায়না
তবু সুযোগ রা দেয় তারই ঘরে ডুব
বোঝেনা সে বোঝেনা……..
.
তার চোখে যেন দেখলাম
আজ দিনটা বড় মেঘলা
বুঝি বৃষ্টি নামবে বলল সে আমায়..!
কেন মেঘ সরেনা রত্তি
কেন গল্প হয়না সত্যি
আমি মরতে তারই তৈরি দোটানায়..দোটানায়
বোঝেনা সে বোঝেনা
.
যদি একটি বারও পারতো
সব চিন্তা ভুলে আসতে
আমি সব হারাতাম তাকে পেতে হায়..!
কবে পায়ের শেকল খুলবে
আর প্রেমের ফার্দা উড়বে
আমি চেয়ে থাকি সেই দিনের সীমানায়
বোঝেনা সে বোঝেনা
এতোক্ষণ গাড়িতে বসে গান শুনছিলাম। হঠাৎ মনে পড়লো সেদিন সন্ধ্যার কথা সাজ্জাদকে জিজ্ঞেস করতে হবে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম সেদিন পার্কে কি হয়েছিলো আপনি আমাকে আঘাত করেছিলেন কেনো? আমি জানি সেদিন খাবারে কেনো ভেজাল ছিলো না। কি হয়েছিলো সেদিন? সাজ্জাদ আমার কথার জবাব দিচ্ছে না এক মনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। রেগে দিয়ে তার হাত ধরে টান দিলাম গাড়ি এলোমেলো ভাবে চলা শুরু করলো। সাজ্জাদ তাড়াতাড়ি আদ্রিতাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি ঠিকভাবে চালানো শুরু করলো। গাড়িটি একটি সাইডে রেখে বললো,
পাগল হয়ে গোছো তুমি? দেখছো গাড়ি চালাচ্ছি। তবুও কেনো এরকম করলে? আর একটু দেরি হলে বড় একটি এক্সিডেন্টে হয়ে যেতে পারতো।
আদ্রিতা নিজে ও বুঝতে পারে নি এরকম কিছু হবে। হঠাৎ গাড়ি এলোমেলো ভাবে চলাই সে নিজেও ভয় পেয়ে গেছে।
সরি আমি বুঝতে পারি নি এরকম কিছু হবে। কিন্তু আপনি আমার কথার জবাব দেন কি হয়েছিলো সেদিন? আপনি আমার মাথায় আঘাত করেছিলেন কোনো? আর আপনি সেদিন রাতে যখন বাসায় হামলা হলো তখন ও কি ভাবে আসলেন? সব বিপদের সময় আপনি যুক্ত থাকেন কিভাবে? জবাব দিন আমাকে।
আদ্রিতা, আমার মনে হয় দেশে S.R ফিরে এসেছে। আর তার নজর আমাদের উপর আছে।
সাজ্জাদের একথা শুনে আমার আগের সব কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে। এজন্যই সাজ্জাদ আদ্রিতাকে জানাতে চাই নি ব্যাপারটি।
আদ্রিতার শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে সাজ্জাদ দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিতাকে নামালো গাড়ি থেকে কিন্তু গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে কিছু লোক ঘিরে দাড়ালো সাজ্জাদ আর আদ্রিতাকে…….
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৩
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আদ্রিতার শারিরীক অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে সাজ্জাদ দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিতাকে নামালো। কিন্তু গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে কিছু লোক ঘিরে দাঁড়ালো সাজ্জাদ আর আদ্রিতাকে।
হঠাৎ S.R দের লোকদের দেখে সাজ্জাদ নিজে ও একটু অবাক হলো।
আদ্রিতা তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো। ( সাজ্জাদ)
কিন্তু আপনি? ( আদ্রিতা)
আদ্রিতা তাড়াতাড়ি গাড়িতে যাও।(সাজ্জাদ)
আদ্রিতা গাড়িতে যাওয়ার আগেই একটি লোক সাজ্জাদের উপর হামলা করতে নিলে সাজ্জাদ তার লুকিয়ে রাখা পিস্তলটি বের করে ওই লোকের হাত গুলিয়ে চালিয়ে দেয়।
সাজ্জাদের কাছে বন্দুক দেখে কি বলবো মুখের ভাষা যেনো হারিয়ে ফেলছি। হঠাৎ স্বাধীন ভাইয়া কিছু পুলিশ নিয়ে আসলো। পুলিশ আর স্বাধীন ভাইয়াকে দেখে বাকি লোকগুলো পালিয়ে গেলো।
দোস্ত ঠিক আছিছ?(স্বাধীন)
হ্যাঁ, ঠিক আছি। S.R দের লোক যেভাবেই হোক না কেনো আদ্রিতাকে তাদের কাছে চাচ্ছে। একটা কাজ কর কিছু যায়গায় খবর দিয়ে দে সামিরার সাথে আমার বিয়ে তাহলে এখন আদ্রিতার উপর বিপদ কিছুটা কমে যাবে। ( সাজ্জাদ)
কিছুই বুঝতে পারছি না সাজ্জাদের কাছে বন্দুক কিভাবে সে ত বিজনেসম্যান তার মানে কি সাজ্জাদ খারাপ কোনো কাজের সাথে জড়িত? আর ভাবতে পারছি না কিছু।
সাজ্জাদ পিছনে ফিরে দেখলো, আদ্রিতা তখন গাড়িতে উঠে নি।
Shit! আদ্রিতা তাহলে এতোক্ষণ সব কিছু খেয়াল করেছে। সাজ্জাদের চিন্তা যেনো এখন আরো বেড়ে গেলো এখন যদি আদ্রিতা তার বাসায় বলে দেই সাজ্জাদের কাছে বন্দুক আছে তাহলে এখন অনেক কথা উঠবে আর সাজ্জাদ চাচ্ছে না এখন বিষয়গুলো জানাজানি হোক স্বাধীন আদ্রিতা আমার হাতে বন্দুক দেখে ফেলেছে কি করতে পারি এখন? (সাজ্জাদ)
আরে ওকে একটু বুঝিয়ে বল যে ব্যবসার কারনে তোর কাছে বন্দুক আছে। আর এইটাও ওকে বল যেনো এই ব্যাপারে কাউকে কিছু না বলে।(স্বাধীন)
না অনেক জেদি ও বাসায় গেলে ঠিকই বলে দিবে। সাজ্জাদ বন্দুকের দিকে তাকিয়ে বললো ওকে একটু অন্য ভাবে বোঝাতে হবে। ( সাজ্জাদ)
আমি কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না এমনি বন্দুক সহ্য করতে পারি না তার উপর আবার সাজ্জাদের কাছে মাথা ঘুরতেছে।
আদ্রিতা কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার সামনে আসতে নিলে আদ্রিতা সাজ্জাদকে দেখে ভয়ে দৌড় দিতে চাইলে ও সাজ্জাদ আগেই আদ্রিতার হাত ধরে ফেলে। স্বাধীন ও ছিলো সেখানে কিন্তু জানে এখন সাজ্জাদকে কিছু বলে ও লাভ নেই। তাই আর কিছু বললো না চুপ থাকলো।
হাত ছাড়ুন আমার হাত ছাড়ুন কোন সাহসে আমার হাত ধরেছেন? আর আপনি নিশ্চয়ই খারাপ কোনো কাজের সাথে জড়িত এ জন্যই আপনার হাতে বন্দুক আছে। (আদ্রিতা)
আদ্রিতা শান্ত হও। দেখো তুমি আগে আমার পুরো কথা শুনো। ( সাজ্জাদ)
হাত ছাড়ুন আমার না হলে আমি এখন চিল্লানো শুরু করবো। ( আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আর রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। আদ্রিতার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বললো। হ্যাঁ আমি খারাপ কাজের সাথে জড়িত আর কিছু বলবো? যদি এই কথা তুমি তোমার বাসায় বলেছে তোমার বাসার সবাই কে শেষ করে দিবো। ( সাজ্জাদ)
কি করছিছ সাজ্জাদ ছাড় ওকে। (স্বাধীন)
তুই কোনো কথা বলিস না আমাকে বলতে দে। এই মেয়ে বুঝেছো বাসায় কাউকে আজকের ব্যাপারে কিছু বলবে না তাহলে তোমার আর তোমার পরিবারের শেষ দিন হবে। (সাজ্জাদ)
আর কিছু শুনতে পারছি না ভয়ে চোখ দিয়ে যেমন পানি পড়ছে আবার কোনো শব্দ ও বের হচ্ছে না মুখ থেকে। সারা শরীর যেন বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
সাজ্জাদ আর কিছু বলার আগেই আদ্রিতা নিচে পড়ে যেতে নিলে সাজ্জাদ টান দিয়ে সাজ্জাদের সাথে মিশিয়ে নিলো।
জ্ঞান হারিয়েছে। (সাজ্জাদ)
তুই ওকে যেভাবে ভয় দেখিয়েছিছ জ্ঞান হারানোটা স্বাভাবিক। (স্বাধীন)
আদ্রিতাকে এইভাবে না বললে ও আজকে বাসায় এইসব ঘটনার ব্যাপারে বলে দিতো। এখন যেহেতু পরিবারের ব্যাপারে হুমকি দিয়েছি তাই ও কিছু বলবে না। কিন্তু আমাকে কতোটা ভয় পাচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। ( সাজ্জাদ)
ও কি কলেজে যাওয়ার জন্য বের হযেছিলো? এমনি ও কলেজের সময় প্রায় শেষ ওকে বাসায় দিয়ে আসি চল তারপর আমাদের একটু অফিসে যেতে হবে।(স্বাধীন)
ওকে তুই গাড়িতে গিয়ে উঠ আমি নিয়ে আসছি ওকে।
স্বাধীন গাড়িতে গিয়ে উঠলো।
সাজ্জাদ হাত দিয়ে একবার আদ্রিতার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে ওকে কোলে তুলে নিলো। আদ্রিতাকে গাড়ির পিছনের সিটে বসিয়ে দিলো সাজ্জাদ ও পিছনে বসলো। স্বাধীন গাড়ি চালাচ্ছে। আদ্রিতার এমনি জ্ঞান নেই তারপর গাড়ি চালানোর জন্য বার বার জানালার সাথে বাড়ি খাচ্ছে। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
এটা দেখে স্বাধীন হেসে বললো, এতো যে ভালোবাসিস প্রকাশ করে দিলেই ত পারিছ।
আর কিছুদিন তারপর সারাজীবনের জন্য নিজের করে নিবো। (সাজ্জাদ)
কথাটি বলে দুই বন্ধু হেসে উঠলো। আদ্রিতার বাসার একটু আগেই গাড়ি থামিয়ে দিলো।
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ওর মুখে পানি ছিটানো শুরু করলো।
চোখ খুলে নিজের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করে বুঝতে পারলাম। আমি সাজ্জাদের বাহুতে আবদ্ধ। দ্রুত দূরে সরে গেলাম।
যা বলেছিলাম মনে থাকে যেনো। আজকের ঘটনাটি যেনো কেউ না জানে ( সাজ্জাদ)
আমি আচ্ছা বলে দ্রুত চলে আসলাম। সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। বুঝতে পারছে আদ্রিতা হয় তাকে অনেক ঘৃণা করছে অথবা তাকে অনেক ভয় পাচ্ছে।
সাজ্জাদ আর স্বাধীন চলে গেলো।
********
নওশিনের গ্রুপ কলেজে বসে আছে।
দোস্ত আর মাএ কয়েকদিন তারপর সাজ্জাদকে দেখতে পারবো। (নওশিন)
কিন্তু ওই আদ্রিতা সবসময় সাজ্জাদের কাছে ঘেঁষে থাকে। (রাইসা)
চিন্তা করিস না দরকার হলে অনুষ্ঠানের দিন আদ্রিতাকেই সরিয়ে দিবো। ( নওশিন)
কথাটি বলে নওশিনের গ্রুপের সবাই হেসে উঠলো।
******
আরিয়ান চিন্তা করছে, আদ্রিতাকে সকালে রাস্তায় দেখলো আবার সাজ্জাদ বললো ওকে কলেজে দিয়ে আসবে। তারপর আসলো না কেনো? সাজ্জাদের সাথে কোথায় গেলো?
******
আজকের ঘটনাটি কোনো ভাবেই ভুলতে পারছি না। সাজ্জাদ কি আসলেই খারাপ কোনো কাজের সাথে জড়িত? ফ্রেশ হযে কথাগুলো চিন্তা করছিলাম। ভাবলাম ফোনটা একটু চেক করি। ফোন চেক করে দেখলাম ২ টি মসেজ একটি কালকের নাম্বার থেকে
সেখানে বলা আছে, তোমাকে একদিন না দেখলে মনে হয় যেনো কতো বছর ধরে তোমাকে দেখি না। কলেজে আসো নি কেনো তুমি? তোমাকে না দেখলে আমার দিন ভালো যায় না।
মেসেজটি দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমাকে এই ধরনের মেসেজ কে দিবে? আর কলেজে যায় নি এইটা সে কিভাবে জানলো।
২য় মেসেজটি চেক করে আরো অবাক হয়ে গেলাম সেখানে লেখা আছে,
মায়াপরী ভয়ার্ত চেহারায় তোমাকে অসাধারণ লাগে। ইচ্ছে করে টুপ করে খেয়ে ফেলি।
ইচ্ছে করছে ফোনটা ভেঙে দিতে কিন্তু কি করবো এ ফোন ভেঙে দিলে আমাকে ও ঘর থেকে বের করে দিবে। বল্ক ও করতে চাচ্ছি না। কে মেসেজ দিচ্ছে এইটা জানতে হবে।
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৪
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
কি বললি সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বড় বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে?(S.R)
হ্যাঁ, বস আমি শুনে নিজেই অবাক এতোদিন ত মনে করেছিলাম সাজ্জাদ হয়তো আদ্রিতাকে ভালোবাসে তাই হয়তো ওকে রক্ষা করে। এখন বুঝলাম এমনি মানবিকতার জন্য আদ্রিতাকে সাহায্য করেছে আর কিছু না।
তাহলে ভালোই হলো আদ্রিতার বোনকে বিয়ে করে নিক পরে আমি আদ্রিতাকে দেখে নিবো। শুন তুই সব সময় ওদের উপর নজর রাখ। (S.R)
ওকে বস।
তারপর S.R ফোনটি কেটে দিলো। সামিরার সাথে সাজ্জাদের বিয়ের কথা শুনে কিছুটা নিশ্চিন্ত হলো এখন।
******
১০ বছরের একটি মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে বসে আছে সাজ্জাদ। তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি তাই না? বিশ্বাস করো আমার হাত পা বাঁধা। উপায় নেই আর। সেদিন সন্ধ্যায় যদি তুমি না আসতে তাহলে আজকে এতো সমস্যার সৃষ্টি হতো না। S.R এর নজর তোমার উপর পড়তো না। তোমার থেকে এতো দূরে সরে যেতে হতো না আমার। চিন্তা করো না একটু কষ্ট করো আর কিছু দিন পর তোমাকে আমার নিজের করে নিবো। কিন্তু তুমি ত আমাকে খারাপ মনে করো? ভয় পাও অনেক।
কথা গুলো বলে সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
এমন সময় রুসে স্বাধীন প্রবেশ করলো,
দোস্ত তোদের বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে। কালকে আদ্রিতাদের বাসায় পাঠিয়ে দিবো সকালে। যেভাবে বলেছিলি সেভাবেই কাজ হচ্ছে। আঙ্কেল আর আদ্রিতার বাবা সব কিছু জানে ত?(স্বাধীন)
হ্যাঁ আমার সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু মা আর আন্টিকে বলি নি কিছু। (সাজ্জাদ)
পরে ঝামেলা হলে? (স্বাধীন)
হবে না সব কিছু ঠিকঠাক হবে। আমার মনে হয় না আমার আর সামিরার বিয়েতে S.R এর লোক আসবে। যদি আদ্রিতার সাথে বিয়ে হতো তাহলে নিশ্চয়ই আসতো। ( সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, আচ্ছা সেদিনের ঘটনার সাক্ষী একমাত্র আদ্রিতা। ওর মুখ থেকে একবার সব কথা বের করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। ( স্বাধীন)
আমি অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম বার বার আদ্রিতার আগের কথা মনে পড়লে সমস্যা হয়েছে। এজন্য ওকে বেশি চাপ দিচ্ছি না। আর S.R এখন কোথায় আছে তা যদি জানতে পারি তারপর আদ্রিতাকে জোর করে হলে ও সব কথা বলাতে হবে। সেদিন আদ্রিতা নিজ অজান্তেই অনেক বড় প্রমাণ নিয়ে নিয়েছিলো। সেদিন যখন ওদের বাসায় দাওয়াত ছিলো আমি দেখেছিলাম সোফার রুমে আদ্রিতার সেই ক্যামেরাটি রাখা আছে। আদ্রিতা অনেক যত্নশীল। আমার মনে হয় না আদ্রিতা আগের কোনো ছবি বা ভিডিও ডিলিট করেছে। এখন শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা। (সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, দেখি কি হয়। চারটি জীবন কোনদিকে যাচ্ছে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমি ওদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছি। সব কিছু ভালোই। ( স্বাধীন)
কার ব্যাপারে তোর অসময়ী বৃষ্টির ব্যাপারে?(সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, দোস্ত ওই আর কি মা বাবাকে বলেছি তারা রাজি আছে। প্রথমে একটু আপওি করেছিলো পরে রাজি হযে গিয়েছে। ( স্বাধীন)
যাক ভালোই হয়েছে একদিকে চিন্তা মুক্ত। আদ্রিতার সাথে সেদিন যেই ছেলেটাকে দেখলাম তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলি? ( সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, আদ্রিতা আলো তানহা আবির ওরা চারজন খুব ভালো ফ্রেন্ড। আর সেদিন তুই আবিরের সাথে আদ্রিতাকে দেখেছিলি। ( স্বাধীন)
ও আচ্ছা। ( সাজ্জাদ)
********
রাতের খাবার খেয়ে দির রুমে গেলাম।
কিরে এতো রাতে কিছু বলবি? ( সামিরা,)
দি আমার কেনো জানি ভয় লাগছে আজকে তোর সাথে ঘুমাবো। ( আদ্রিতা)
হ্যাঁ ঘুমা তোকে একটি প্রশ্ন করি? (সামিরা)
বল। (আদ্রিতা)
সাজ্জাদকে এখনো ভালোবাসিস? আমার সাথে বিয়ে হলে মেনে নিতে পারবি ত?
দি ঘুমা ভালো লাগছে না। কথাটি বলো শুয়ে পড়লাম।আজকে সাজ্জাদের যেই রূপ দেখেছি আমার শুধু তাকে ভয় লাগছে। সে কি আসলেই আমাকে তখন স্যুট করে দিতো?
আদ্রিতা কিছু বলছে না দেখে সামিরা আর কিছু বললো না।ঘুমিয়ে পড়লো।
*******
অসময়ী বৃষ্টির দেখা পাওয়ার জন্য স্বাধীন আবার রাতে এসেছিলো কিন্তু দেখা পায় নি। এক আকাশ পরিমাণ আফসোস নিয়ে ফিরে গেলো।
******
মায়াপরীর চিন্তায় একজনের মন টিকছে না। ইচ্ছে করছে এখনই গিয়ে মায়াপরীকে তার কাছে নিয়ে আসতে। কিন্তু এখন অধিকার নেই তার। সে মায়াপরীকে হালাল ভাবে তার কাছে টেনে নিতে চায়।
*******
নওশিনের হাতে সাজ্জাদের একটি ছবি। সাজ্জাদকে দেখার জন্য যেনো পাগল হয়ে যাচ্ছে। আবার অন্য দিকে আদ্রিতার প্রতি নওশিনের রাগ বেড়ে যাচ্ছে।
ক্লাসে সর্বোচ্চ নাম্বার যেমন তুই ছিনিয়ে নিস তেমন ভাবে সাজ্জাদকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবি না তুই আদ্রিতা। কথাটি বলে আদ্রিতার একটি ছবি নিয়ে তা দুভাগ করে ফেলল।
সকালে ~
আদুরিরিরিরি (সামিরা)
দি আস্তে কি হয়েছে ঘুমাতে দে। অনেক ঘুম পাচ্ছে। (আদ্রিতা)
না ঘুম থেকে উঠ কলেজে যা তোর না কলেজে কিসের অনুষ্ঠান আছে? দায়িত্ব তোদের গ্রুপের আর তোরা কলেজে না গিয়ে বাসায় বসে থাকিস। যা কলেজে। (সামিরা)
উঠছি দি,( আদ্রিতা)
সামিরা আদ্রিতাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে চলে গেলো রুম থেকে।
আমি আবার ফোনে একটু বেশি আসক্ত। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম। ২য় নাম্বার থেকে আবার মেসেজ এসেছে,
মায়াপরী তোমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখার ইচ্ছেটা তীব্র হচ্ছে। খুব ভালোবাসি তোমাকে আমার পিচ্চি মায়াপরী।
মায়াপরী নামটা সুন্দর। কিন্তু আমাকে এই মেসেজটি কে দিতে পারে। একথা ভাবছিলাম। তখন ১ম নাম্বার থেকে আবার মেসেজ আসলো সেখানে লেখা,
আশা করি প্রিয় আজকে তুমি কলেজে আসবে।
কি একটা অবস্থা একজন আমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে চাচ্ছে আর একজন কলেজে দেখতে চাচ্ছে। যাই হোক ফোন রেখে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার জন্য বসলাম।
শুনলাম কয়েকদিন পর তোদের কলেজে নাকি কিসের অনুষ্ঠানে আছে সেখানে নাকি সাজ্জাদ আর স্বাধীন ও আসবে? ( আদ্রিতার বাবা)
হ্যাঁ বাবা। ( আদ্রিতা)
অনুষ্ঠানে ওদের কাছাকাছি থাকবি। তাদের যেকোনো দরকার হলে সহযোগিতা করবি। (আদ্রিতার বাবা)
ঠিক আছে বাবা। (আদ্রিতা)
আদ্রিতার মা শুনছো, সামিরার বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে। (আদ্রিতার বাবা)
কই দেখি ত কার্ড কেমন হযেছে।( আদ্রিতার মা)
স্বাধীনের কাছে আছে পরে আমাদের পাঠিয়ে দিবে বলেছে। ( আদ্রিতার বাবা)
ঠিক আছে। (আদ্রিতার মা)
মা আমি কলেজে গেলাম। কথাটি বলে বেরিয়ে পড়লাম।
****কলেজে****
কলেজে আমি আর আলো প্রবেশের সময় রাইসা আর নওশিন আসলো। আমি ওদের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে নওশিন বলে উঠলো, খুব ত বড়লোকদের হাতে রাস্তায় খাচ্ছিছ ওদের জড়িয়ে ধরে রাখিছ লজ্জা করে না?
আমি কাকে জড়িয়ে ধরবো, কার হাতে খাবো এগুলো আমার ইচ্ছে। তোর এতো গায়ে লাগছে কেনো?
সমস্যা কি তোর। (আদ্রিতা)
সাজ্জাদকে ভালোবাসি আমি নেক্সট টাইম যদি সাজ্জাদের আশে পাশে তোকে দেখি তাহরে একদম শেষ করে দিবো তোকে কথাটি বলে নওশিন চলে গেলো। আমি আর আলো অবাক হয়ে গেলাম। সত্যি কি নওশিন ভালোবাসে সাজ্জাদকে নাকি আমার সাথে প্রতিযোগিতা? কিন্তু সাজ্জাদ ত আমাকে ভালোবাসে না।
*****ক্লাস রুমে****
ক্লাসে আমি আলো তানহা আবির বসে আছি।বাকি স্টুডেন্ট রাও আছে এমন সময় আরিয়ান স্যার আসলেন।
তোমাদের অনুষ্ঠানের আর মাএ ৩ দিন বাকি আছে। এবারের প্রধান অতিথিদের জন্য আমরা গিফটের ব্যবস্থা করেছি সে জন্য আমার সাথে তোমাদের গিফট কিনতে যেতে হবে। আদ্রিতা তোমরা ৪ জন কলেজ ছুটির পরে আমার সাথে আসবে। আর এখন আদ্রিতা একটু আমার রুমে আসো। (আরিয়ান)
কিরে দোস্ত তোকে আবার আলাদা রুমে ডাকলো কেনো? কিছু চলছে নাকি তোদের মাঝে? ( আবির)
হুম আমার ও মনে হচ্ছে কিছু এটা চলছে। ( তানহা)
পাগল হয়ে গেছিছ নাকি তোরা। হয়তো কোনো কাজে ডেকেছে। তোরা বস আমি দেখে আসছি। আলো চল। তারপর আলোকে নিয়ে স্যারের রুমে গেলাম।
স্যার আসবো? (আদ্রিতা)
হ্যাঁ এসো। ( আরিয়ান)
আমি আর আলো রুমে আসলাম।
তোমাকে একা আসতে বলেছিলাম আলোকে নিয়ে না।
ওকে বাইরে যেতে বলো। (আরিয়ান স্যার)
ওকে স্যার (আদ্রিতা)
আলো বাইরে চলে আসলো।
*****
সাজ্জাদ আদ্রিতার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। দেখলো একসাথে আলো আর আদ্রিতা আরিয়ানের রুমে ঢুকছে। তাই সাজ্জাদ একটু দুরে দাঁড়িয়েই ওদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু যখন দেখলো আলো রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে আর আদ্রিতা রুমে একা সাজ্জাদের রাগ আর ও বেড়ে গেলো।
#চলবে