#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৯
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
একটু পরেই সাজ্জাদ আদ্রিতার থেকে দূরে সরে গেলো। সে চাইলে ও নিজেকে আদ্রিতার থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারছে না। সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বয়সের পার্থক্য দশ বছরের মতো হবে। তাই সাজ্জাদের কাছে আদ্রিতা নিতান্তই একটি বাচ্চা। যদি ও আদ্রিতা কলেজে পড়ে। কিন্তু সাজ্জাদের মনে হয় আদ্রিতা অনেক ছোট সব কিছুতে ভুল করবে। তাই সব সময় আগলে রাখার চেষ্টা করে। গাড়ির সিট থেকে আদ্রিতাকে উঠেয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো একবার। আদ্রিতার ঠোঁটে হাত দিয়ে স্পর্শ করলো। আদ্রিতা হিজাব পড়া খোলা চুলে থাকলে হয়তো সাজ্জাদ চুলের গন্ধ শুঁকে নিতো।আদ্রিতার ঠোঁটের দিকে আার মুখ বাড়িয়ে ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো আদ্রিতাকে আবার সিটে বসিয়ে দিলো। সাজ্জাদ ঘন ঘন শ্বাস নিলো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো। আদ্রিতার দিকে তাকালো হাত দিয়ে আদ্রিতার ঠোঁট স্পর্শ করলো। ঠোঁটটা মুছে দিলো। আনমনে বলে উঠলো আর কিছু দিন পর তোমার উপর সম্পূর্ণ অধিকার আমার থাকবে। তুমি শুধু আমার। আর কারোর নও। সাজ্জাদ খেয়াল করলো আদ্রিতার চোখ পিটপিট করছে হয়তো এখনি তাকাবে সাজ্জাদ দ্রুত আদ্রিতা থেকে দূরত্ব বজায় করে নিলো।
চোখ খুলে গাড়িতে নিজের অবস্থান দেখে বুঝতে পারলাম এটি সাজ্জাদের গাড়ি।
এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন? আলো, তানহা আর আবির কোথায়? (আদ্রিতা)
সকালে খাও নি কেনো? (সাজ্জাদ)
আবির খাবার এনেছিলো তার জন্যই পানি আনতে রুমে যাচ্ছিলাম এর আগে পরে গেলাম।(আদ্রিতা)
আবির আদ্রিতার জন্য খাবার এনেছে কথাটা কেনো জানি সাজ্জাদের পছন্দ হলো না। শান্ত গলায় বললো আবিরের আনা খাবার খাওয়া লাগবে না। আমি খাবার এনেছি খেয়ে নেও।
সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতা চিন্তা করছে সাজ্জাদ কি আদ্রিতাকে নিয়ে জেলাস?
আদ্রিতা মুখ ফোসকে বলে দিলো, বাই এনি চান্স আপনি কি জেলাস ফিল করছেন? (আদ্রিতা)
একজন মানুষ হিসেবে শুধু অপর একটি মানুষকে সাহায্য করছি আর কিছু না। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতার মনে অভিমান তৈরি হলো।
গাড়ির দরজা খুলুন আমি বাইরে যাবো। ওদের সাথে অনেক কাজ বাকি আছে আমার। (আদ্রিতা)
খেয়ে নেও (সাজ্জাদ)
আমি খাবো না আপনার খাবার কথাটি বলে আদ্রিতা নিজেই দরজা খোলার চেষ্টা করতে লাগলো।
সাজ্জাদের রাগ বাড়তে থাকলো আদ্রিতার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো শক্ত করে এক হাত দিয়ে আদ্রিতার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।
কি করছের ছাড়ুনননননন । ভুলে যাবেন না আপনার সাথে দির বিয়ে ( আদ্রিতা)
হুশশশ আদ্রিতার ঠোঁটে সাজ্জাদের আঙুল রেখে সাজ্জাদ বলল কার সাথে কে ভাগ্যে আছে এইটা আল্লাহ ভালো জানেন। এখন আমি সামিরার ব্যাপারে কোনো কথা চাই না। এই সময়টা শুধুই তোমার আর আমার।
আদ্রিতা নামার জন্য জিদ করতে নিলে সাজ্জাদ বলে উঠলো বন্দুকের কথা ভুলে গেছো বুঝি?
আদ্রিতা কথাটি শুনে একদম শান্ত হয়ে গেলো।
সাজ্জাদ মৃদু হাসলো সে জানে আদ্রিতার দুর্বলতা। সাজ্জাদ শক্ত করে একবার জড়িয়ে ধরলো আদ্রিতাকে।
এখন লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে নেও (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদ আদ্রিতার সামনে খাবারটি রাখলো। গরম গরম লুচি আর আলুর দম।
বন্দুকের কথাটি শুনে আদ্রিতা আবার ভয় পাচ্ছে মনে হচ্ছে এখনই সাজ্জাদ আবার ওর মাথায় বন্দুক ঠেকাবে। কাঁপা কাঁপা হাতে আদ্রিতা লুচির দিকে হাত বাড়াচ্ছে।
সাজ্জাদ বুঝতে পারলো ভয় পাচ্ছে।
আমি খাইয়ে দিচ্ছি। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
সাজ্জাদ এক হাত দিযে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরে রেখেছে অন্য হাত দিয়ে আদ্রিতাকে যত্ন সহকারে খাইয়ে দিলো। মাঝে মধ্যে লুচির অর্ধেকটা আদ্রিতাকে খাইয়ে বাকিটা নিজে খেয়ে নিলো।
ম্যাডামের কি আমার কোলে বসে থাকতে অনেক ভালো লাগে নাকি? কথাটি বলে সাজ্জাদ আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আদ্রিতাকে।
ইস একে ত নিজে আমাকে নিজের কাছে বসাবে এখন আবার নিজেই লজ্জা দিচ্ছে, অ*সভ্য লোক একটা।
আদ্রিতা মিনমিনিয়ে বললো ছাড়ুন না
যদি না ছাড়ি? ( সাজ্জাদ)
ছাড়ুন ( আদ্রিতা)
বাসায় কি জানে কয়টায় বাড়ি ফিরবে? (সাজ্জাদ)
সন্ধ্যায়। (আদ্রিতা)
ঠিক আছে চলো আজকে তোমাকে নিয়ে ঘুরবো সারাদিন। (সাজ্জাদ)
কিন্তু? আমি ওদের সাথে যাবো। (আদ্রিতা)
সব কাজ ওরা সামলে নেবে তুমি আমার সাথে চলো। (সাজ্জাদ)
এমনি ও আজকে ক্লাস করতে আসে নি তারা শুধুমাএ অনুষ্ঠানের বিষয়ে কথা বলতে এসেছে। তাই আদ্রিতা থ্রি-পিস পড়া।
এখন ছাড়ুন আমাকে (আদ্রিতা)
ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। আর ও কাছে যেতে ইচ্ছে করছে। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। সাজ্জাদ মুচকি হাসলো। তারপর আদ্রিতা সিটে বসিয়ে দিলো।
গাড়ি আপন গতিতে চলছে আদ্রিতার মনে তোলপাড় বয়ে যাচ্ছে। এই মানুষটার রহস্য সে বুঝতে পারছে না।
গাড়ি এসে একটি লেকের পাড়ে থামলো।
নামো (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা নেমে গেলো। অনেকদির ধরেই কোনো লেকের পাড়ে যেতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু এইভাবে যে ইচ্ছে পূরণ হবে তা ভাবতে পারে নি।
চলো হাঁটি (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা নিশ্চুপ সাজ্জাদের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটা শুরু করলো। কারোর মুখে কোনো কথা নেই।
ভালোবাসো আমায়? (সাজ্জাদ)
আদ্রিতার মুখে কথা নেয়।
সামিরার ব্যাপার নিয়ে ভেবো না। যা হচ্ছে সেভাবে চলতে দেও। দিন শেষে তুমি যা চাও তা ঠিকই পাবে। কথাগুলো একটু গভীরে চিন্তা করে দেখো। আশা করি বুঝতে পারবে। (সাজ্জাদ)
মানুষটা রহস্যময়। তাকে বোঝার ক্ষমতা আমার নেই।
হঠাৎ একটি ছোট মেয়ে আসলো সাজ্জাদকে বললো,
ভাইয়া গাজরা নিবেন? আপনার বউ এর হাতে পড়িয়ে দেন।
লজ্জায় মুখ লাল হয়ে উঠলো। আদ্রিতা কিছু বলতে নিবে তার আগে সাজ্জাদ বললো,
হ্যাঁ দেও কথাটি বলে সাজ্জাদ একটি গাজরা কিনে নিলো।
কেনো কিনলেন? (আদ্রিতা)
কেনো শুনো নি? মেয়েটি বললো আমার বউকে কিনে দিতে তাই। (সাজ্জাদ)
আমি কি আপনার আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
আমি কি একবার ও বলেছি যে আমি তোমার জন্য কিনেছি? (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
*******
সামিরা তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে কল দিয়ে সব কথা খুলে বললো। সামিরার বেস্ট ফ্রেন্ড বললো তুই পাগল হয়ে গেছিছ?, তোর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আর এখন কিভাবে সম্ভব?
সামিরা বললো, জানিনা এই #অজানা_অনুভূতির মানে আমি খুঁজে পাচ্ছি না।
*******
স্বাধীন ঢাকার বাইরে আছে কিন্তু তার মনটা পরে আছে অসময়ী বৃষ্টির জন্য। সাজ্জাদ নিজে ত নিজের বউের সাথে সময় কাটানোর জন্য আমাকে একা ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে দিলো আর আমি ও চলে আসলাম। আমার অসময়ী বৃষ্টি কেমন আছে? স্বাধীনের কাজে মন টিকছে না।
******
দুপুর হয়েছে সামনে রেস্টুরেন্ট আছে চলো লান্স করে নেই। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতা কি বলবে বুঝতে পারছে না। কারন আদ্রিতার কাছে পর্যাপ্ত পরিমানে টাকা নেই।
আমি বাসায় গিযে লান্স করে নিবো। (আদ্রিতা)
সন্ধ্যা পর্যন্ত কি না খেয়ে থাকবে নাকি? চুপচাপ খেতে চলো।
আদ্রিতা শান্ত গলায় বললো,আমার কাছে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মতো টাকা নেই।
আমার কাছে কি তোমার টাকার হিসেব দিতে হবে? আমি জানতে চেয়েছি নাকি টাকার কথা? যেতে বলেছি চলো। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা সাজ্জাদের কথা অনুযায়ী সাজ্জাদের সাথে গেলো।
সাজ্জাদ আর আদ্রিতা রেস্টুরেন্টে বসে আছে। হঠাৎ একটি মেয়ে এসে সাজ্জাদকে জড়িয়ে ধরলো। সাজ্জাদ বলে উঠলো মিম।
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২০
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ বলে উঠলো মিম তুই এখানে?
ইয়েস ব্রো কালকেই দেশে ফিরলাম।কেমন আছিছ? (মিম)
আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুই? (সাজ্জাদ)
আলহামদুলিল্লাহ ভালো ত হঠাৎ দুপুরে রেস্টুরেন্টে কার সাথে এসেছিছ? (মিম)
এতোক্ষণ মিম আদ্রিতাকে খেয়াল করে নি।
ওইযে ওর সাথে এসেছি সাজ্জাদ আদ্রিতাকে দেখিয়ে কথাটি বললো।
এই পিচ্চি কে? (মিম)
সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো। মেজাজটা আর খারাপ হয়ে গেলো আমার একে ত আমার সামনে এইভাবে সাজ্জাদকে জড়িয়ে ধরেছে এখন আবার আমাকে পিচ্চি বলছে।
আপু আমি পিচ্চি না আর কিছুদিন পর ১৮ বছর হয়ে যাবে। (আদ্রিতা)
কথাটি শুনে মিম আপু আর সাজ্জাদ দু’জনই হেসে উঠলো।
কিসে পড়ো তুমি? (মিম)
ইন্টার ১ম বর্ষ (আদ্রিতা)
তুমি সাজ্জাদের ওই বোনটা না? (মিম)
কি বলবো এখন আমি সাজ্জাদের কি হয় আমি নিজে ও জানি না। আমি কিছু বলার আগে সাজ্জাদ বলে উঠলো,
আমার ফ্রেন্ডের ছোট বোন। (সাজ্জাদ)
ও হাই আমি মিম সাজ্জাদের বেস্ট ফ্রেন্ড।
[ সাজ্জাদ, স্বাধীন, মিম, সাকিব এরা ৪ জন বেস্ট ফ্রেন্ড। ছোটবেলা থেকেই তারা একসাথে বড় হয়েছে। অনার্স কমপ্লিট করার পর মিম আর সাকিব দু’জন কানাডা চলে যায়। সেখানেই নিজেদের জীবন গুছিয়ে নেয়। কালকেই দেশে ফিরেছে আর আজকে ওদের সাথে দেখা হয়ে গেলো। ]
আমরা একসাথেই পড়াশোনা করেছি। (সাজ্জাদ)
পড়াশোনা করছেন না কি করছেন এইটাই ত বুঝতে পারছি না (আদ্রিতা মনে মনে কথা গুলো বলছে)
হ্যাঁ, সাজ্জাদ ঠিক বলেছে আমরা ছোট থেকেই ফ্রেন্ড। কিন্তু আমি এখন কানাডাতে আছি আর বাংলাদেশে কালকেই দেশে ফিরলাম।
আদ্রিতা উৎসাহ নিয়ে বললো আপু কানাডা থাকেন?
হ্যাঁ, কেনো তোমার কানাডা যাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি? (মিম)
হ্যাঁ আপু ইচ্ছে আছে। (আদ্রিতা)
কখনো যদি ইচ্ছে পূরণ হয় আমার বাসায় এসো। (মিম)
আদ্রিতা মুচকি হেঁসে বললো আচ্ছা আপু।
আচ্ছা তোরা এনজয় কর আমি গেলাম। (মিম)
চল গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি। (সাজ্জাদ)
কথাটি বলে সাজ্জাদ আর মিম আপু হাঁটা শুরু করলো। মেজাজ আর ও খারাপ হয়ে গেলো মানে গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়ার কি আছে একা ও যেতে পারবে বিরক্তিকর।
সত্যি করে বল আসলেই কি ফ্রেন্ডের ছোট বোন নাকি অন্য কিছু? (মিম)
ও আদ্রিতা (সাজ্জাদ)
কি? কি বললি তুই? আদ্রিতা? আগে বলবি না তাহলে ওর সাথে বসে কতক্ষণ আড্ডা দিয়ে আসতাম। (মিম)
চুপ থাক এমনি তোর জন্য আদ্রিতা এখন হয়তো রেগে আছে। (সাজ্জাদ)
আরে আমি আবার কি করলাম? (মিম)
এইযে হুট করে এসে জড়িয়ে ধরলি। (সাজ্জাদ)
কানাডাতে এইগুলো নরমাল। (মিম)
কিন্তু এইটা বাংলাদেশ। (সাজ্জাদ)
যাই হোক ওর রাগ ভাঙিয়ে নিস। এখন বল তোদের বিয়ে কবে? (মিম)
শুনিছ নি কি বললো? ১৮ বছর এখন ও হয় নি 🥲 সামনের মাসে ১৮ তে পা দিবে তখনই নিজের করে নিবো। (সাজ্জাদ)
হায়রে পিচ্চির প্রেমে পড়েছিছ। (মিম)
সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো। যাই মহারাণীর রাগ ভাঙিয়ে আসি। (সাজ্জাদ)
হুম যা আমি ও গেলাম কথাটি বলে মিম চলে গেলো।
সাজ্জাদ এসে দেখলো আদ্রিতা চুপচাপ বসে আছে মুখে বিরক্তর ছাপ।
সরি একটু লেট হয়ে গেলো। (সাজ্জাদ)
আপনার মেয়ে ফ্রেন্ড ও আছে? (আদ্রিতা)
কেনো থাকতে পারে না? তোমার ও ছেলে ফ্রেন্ড আছে। আবিরের কথা ভুলে গেছো নাকি? (সাজ্জাদ)
ভুলবো কেনো? কিন্তু সবার সামনে হুট করে এসে জড়িয়ে ধরে না। (আদ্রিতা)
কানাডায় এগুলো নরমাল। (সাজ্জাদ)
ভালো চলে যান কানাডা যাকে ইচ্ছে তাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকেন। (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ উঠে এসে আদ্রিতার পাশে বসলো।
আমার জায়গায় কোনো এসেছেন দূরে যান(আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে কাছে এনে এক হাত দিয়ে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরলো।
ছাড়ুননননন (আদ্রিতা)
তুমি ত বললে যাকে ইচ্ছে তাকে জড়িয়ে ধরতে তাই তোমাকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছে ছিলো তাই চলে আসলাম তোমার কাছে। (সাজ্জাদ)
স্যার আপনাদের খাবার। ( ওয়েটার)
রেখে দিন। (সাজ্জাদ)
খাবার খেযে নিন আর আমাকে ছাড়ুননন (আদ্রিতা)
হুঁশশশ, আজকে আমি তোমাকে খাইয়ে দিবো।
আদ্রিতা আর কিছু বললো না সাজ্জাদ আদ্রিতাকে খাইয়ে দিলো সাথে নিজে ও খেয়ে নিলো।
খাওয়া শেষে আদ্রিতা আর সাজ্জাদ বের হলো।
*********
আদ্রিতা একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছে আর সাজ্জাদ কিভাবে আদ্রিতার এতো কাছে গেলো কথাটি বলে নওশিন গাছে একটি লাথি দিলো
শান্ত হ (রাইসা)
কালকের অনুষ্ঠানেই আদ্রতার শেষ দিন হবে। (নওশিন)
কি করবি তুই? (রাইসা)
দেখ না যা করবো তারপর আর সাজ্জাদ কখনো আদ্রিতার দিকে ঘুরে ও তাকাবে না। (নওশিন)
কি করবি আমাকে বল (রাইসা)
কালকে দেখে নিস। কালকের পর থেকে সাজ্জাদ শুধু আদ্রিতাকে ঘৃণা করবে।
*******
আরিয়ান কলেজে আছে এখনো একটি বিষয় কিছুতেই মেলাতে পারছে না। কিন্তু আরিয়ান যা ভাবছে তা যদি সঠিক হয় তাহলে আরিয়ানেরই লাভ।
******
বাসায় চলুন আমি সন্ধ্যায় বের হবো (আদ্রিতা)
কোথায় যাবে?
কলেজে অনুষ্ঠান কালকের জন্য কিছু জিনিস কিনতে হবে। ( আদ্রিতা)
কেনো তোমার কি কোনো ড্রেস নেই? (সাজ্জাদ)
আছে তুব ও কিনবো (আদ্রিতা)
সাজ্জাদের মনে মনে রাগ হচ্ছে। কারন সেদিন লাল লেহেঙ্গা, হিজাব আর বিভিন্ন জিনিস সাজ্জাদ পাঠিয়েছিলো সাজ্জাদ চেযেছিলো আদ্রিতা যেনো কলেজের প্রোগ্রামে সেই ড্রেস গুলো পড়ে। হঠাৎ আদ্রিতা বলে উঠলো,
আপনি আমাকে মেসেজ দেন তাই না? (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ চমকে উঠলো নিজেকে শান্ত রেখে বললো, না
মিথ্যে বলবেন না আপনি ত মেসেজ দিয়েছিলেন এই কথা বলে আদ্রিতা ১ম নাম্বার থেকে আসা মেসেজগুলো সাজ্জাদকে দেখালো। কারন আদ্রিতার মনে হয়েছে যেহেতু লেহেঙ্গার প্যাকেটটি আরিয়ান স্যারের হাতে দেখেছিলো তাহলে নিশ্চয়ই ২য় নাম্বারটি থেকে আরিয়ান স্যার মেসেজ দিয়েছে। আর ১ম নাম্বার থেকে সাজ্জাদ।
সাজ্জাদ মেসেজ গুলো দেখে চমকে উঠলো কারন এই মেসেজ গুলো সাজ্জাদ করে নি।
আদ্রিতা আমি এই মেসেজ গুলো দেই নি। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদ কে দেখে মনে হচ্ছে না সে মিথ্যে কথা বলছে।
সাজ্জাদ বুঝতে পারলো আদ্রিতা কেনো এই লেহেঙ্গা পড়বে না কারন আদ্রিতার মনে হচ্ছে এই মেসেজ যে দিয়েছে সে এই লেহেঙ্গা পাঠিয়েছে।
কি হলো চলুন। (আদ্রিতা)
আমি ও যাবো তোমার সাথে মার্কেটে। (সাজ্জাদ)
আগে আমার বাসায় যেতে হবে টাকা নিয়ে তারপর বের হবো। (আদ্রিতা)
আমার সাথে থাকলে কি তোমার টাকার চিন্তা করতে হবে? (সাজ্জাদ)
অবশ্যই আমি আপনার টাকা দিয়ে শপিং কেনো করবো? আচ্ছা আপনি থাকুন আমি আবিরকে বলছি আমার নাম্বারে বিকাশ করে দিতে।
কথাটি শুনে সাজ্জাদের মাথা গরম হয়ে গেলো সাজ্জাদ চাই না সাজ্জাদ থাকতে আদ্রিতার কোনো কষ্ট হোক। আর আদ্রিতা সাজ্জাদের সামনে অন্য ছেলের থেকে সাহায্য নিবে। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আদ্রিতার সামনে এসে এক হাত দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে আদ্রিতার মাথায বন্দুক ঠেকালো
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২২
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে বাসে উঠে গেলো। আদ্রিতা স্বস্তির শ্বাস ফেললো। যতক্ষণ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলো ততক্ষণে ওই ছেলেরাও সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো আদ্রিতার বিষয়টি ভালো লাগছিলো না। যদি ও সাজ্জাদ ছিলো বলে এতো ভয় লাগে নি।
খারাপ লাগছে নাকি তোমার?(সাজ্জাদ)
না ক্লান্ত লাগছে। (আদ্রিতা)
হুম। সারাদিন অনেক ঘুরাঘুরি করেছো তাই। (সাজ্জাদ)
আপনি ত আমাকে নিয়ে ঘুরলেন। আমি নিজে থেকে বলেছিলাম নাকি ঘুরতে। (আদ্রিতা)
হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না। (সাজ্জাদ)
আচ্ছা আপনার কাছে বন্দুক থাকে কেনো বললেন না কেনো? (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আর কিছু বললো না। আদ্রিতা বুঝতে পারে জিজ্ঞেস করে ও লাভ নেই উওর পাবে না। তাই আদ্রিতাও আর কিছু জিজ্ঞেস করে নি। কতক্ষণ পর আদ্রিতা জানালায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো। সাজ্জাদ এটি লক্ষ্য করে আদ্রিতার মাথা নিজের কাঁধে রেখে দিলো।
********
বস কয়েকদিন গ্রামে গিয়েছিলাম আদ্রিতা কোথায় আছে এখন বলতে পারছি না। (S.R এর লোক)
তোকে বলেছিলাম ওর সব খবর আমাকে দিতে আর তুই এতোদিন ধরে ওর খবর আমাকে দেস নি। ও কার সাথে ঘুরছে কি করছে আমার সব ডিটেইলস চাই। কবে পাবো সব খবর? (S.R)
বস আপনি টেনশন নিবেন না। এমনি ও সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই টেনশন করতে হবে না সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতা থাকবে না। আর বস একটি খবর পেয়েছি কালকে আদ্রিতা কলেজে অনুষ্ঠান আছে সেখানে নাকি সাজ্জাদ প্রধান অতিথি ( S.R এর লোক)
কি সাজ্জাদ আসবে? তাহলে তুই একটি কাজ কর তুই ও কালকে কলেজে যা। কলেজে কি কি হয় তার সব ডিটেইলস আমার চাই।কোনো খবর যেনো মিস না হয়। নাহলে কিন্তু তোর অবস্থা খারাপ হযে যাবে। ( S.R)
ওকে বস (S.R এর লোক)
তারপর S.R ফোনটি কেটে দিলো।
******
আদ্রিতা উঠো এসে পড়েছি আমরা। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতার তখন ও ঘুম ঘুম চোখ কোনোভাবে একটু তাকিয়ে বললো কই এসেছে?
সাজ্জাদ বুঝলো যা বলছে ঘুমের মধ্যে। সাজ্জাদের মাথায় একটু দুষ্ট বুদ্ধি কাজ করলো সে একজনের থেকে পানি নিয়ে আদ্রিতার মুখের উপর পানি মারলো।
আদ্রিতার ঘুম ভেঙে গেলো এই ঠান্ডার মধ্যে পানি মেরেছে দেখে রেগে বললো, এই কে কোন সাহসে আমাকে পানি মারলো? (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ হেসে উঠলো। আদ্রিতার বুঝতে বাকি নেই এ কাজ কে করেছে। সাজ্জাদ আর আদ্রিতা নেমে গেলো। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে গেলো।
****আদ্রিতার বাসায় *****
এতো লেইট কেনো হয়েছে? (আদ্রিতার মা)
মা একটু মার্কেটে গিয়েছিলাম এই জন্য।(আদ্রিতা)
আচ্ছা রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। (আদ্রিতার মা)
আচ্ছা (আদ্রিতা)
আদ্রিতা রুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে নিলো। রাতে ডিনার সেরে সামিরার রুমে আসলো।
দি (আদ্রিতা)
হ্যাঁ বল (সামিরা)
কালকে আমার সাথে কলেজে যাবি? (আদ্রিতা)
না আমার ইউনিভার্সিটি যেতে হবে। ( সামিরা)
ও জানো কালকে প্রধান অতিথি হিসেবে সাজ্জাদ ও আসবে। (আদ্রিতা)
হ্যাঁ শুনেছি। (সামিরা)
ভালোই হবে ভাইয়া থাকলে মজা হয় অনেক।(আদ্রিতা)
তুই আবার সাজ্জাদকে কবে থেকে ভাইয়া বলে ডাকিছ? (সামিরা)
আরে সাজ্জাদকে না স্বাধীন ভাইয়া ও আসবে। আর স্বাধীন ভাইয়া অনেক হাসিখুশি মানুষ। তাই বললাম ভাইয়া থাকলে মজা হয় অনেক। (আদ্রিতা)
স্বাধীন ও আসবে? (সামিরা)
হ্যাঁ সাজ্জাদ আর স্বাধীন ভাইয়া দু’জনি প্রধান অতিথি। দু’জন একসাথেই আসবে। (আদ্রিতা)
সামিরা আর কিছু বললো না কিছু একটা ভাবছে।
এই দি কিছু বল (আদ্রিতা)
তুই কি একা যাবি? (সামিরা)
না আলো আসতে পারে ঠিক নেই। কেনো? (আদ্রিতা)
আমি ও যাবো তোর সাথে (সামিরা)
তুই না একটু আগে বললি তোর ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস আছে। (আদ্রিতা)
হ্যাঁ ত কি হয়েছে তখন বলেছি যাবো না এখন বলছি যাবো। কেনো তোর কোনো সমস্যা? (সাসিরা)
আরে আমার সমস্যা কেনো হবে আমি নিজেই ত তোকে বললাম যেতে। (আদ্রিতা)
তাহলে আর কি আমি ও যাবো। (সামিরা)
কোন ড্রেস পড়বি? (আদ্রিতা)
সামিরা কিছুক্ষণ ভেবে বললো নীল শাড়ি আর তুই কি পড়বি? (সামিরা)
কালো শাড়ি পড়বো আজকেই কিনেছি। (আদ্রিতা)
ও আচ্ছা। (সামিরা)
হ্যাঁ দেখবি শাড়িটা?(আদ্রিতা)
না কালকেই দেখে নিবো। এখন রুম থেকে যা আমি পড়তে বসবো। (সামিরা)
ওকে দি (আদ্রিতা)
কথাটি বলে আদ্রিতা রুম থেকে বের হয়ে গেলো। সামিরার অস্থির লাগছে নিজে ও বুঝতে পারছে না কি চাচ্ছে সামিরা।
********
মিম দেশে ফিরেছে। (সাজ্জাদ)
হুম শুনলাম। (স্বাধীন)
ও সব খবর এনেছে? (সাজ্জাদ)
না সব খবর পায় নি। শুনেছি কিছুদিন আগে মেয়ে প্রাচার করার কথা ছিলো। আর সামনের মাসে S.R দেশে আসবে। (স্বাধীন)
মিমকে বল আমার বিয়ে পর্যন্ত থেকে যেতে। (সাজ্জাদ)
হুম থাকবে সেদিন পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। (স্বাধীন)
কেনো S.R দেশে কবে আসবে? (সাজ্জাদ)
ডিসেম্বরের ৬ তারিখ। (স্বাধীন)
আর ৭ তারিখ বিয়ে। সমস্যা হবে না সব দিক চিন্তা করেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কালকে সামিরার সাথে কথা ভলতে হবে। (সাজ্জাদ)
কি বলবি? (স্বাধীন)
যা ঘটতে চলেছে সেই ব্যাপারে একটু ধারণা দিয়ে দিবো। (সাজ্জাদ)
কালকে আদ্রিতার কলেজে যেতে হবে। (স্বাধীন)
হ্যাঁ জানি। (সাজ্জাদ)
যাই হোক আজকে সারাদিন কোথায় ছিলি?(স্বাধীন)
কোথায় আবার অফিসে। (সাজ্জাদ)
একদম মিথ্যে বলবি না অফিসে তুই ছিলি না। আমি অফিসে এসে দেখেছি তুই ছিলি না খোঁজ নিযে জানতে পারলাম আমি বের হওয়ার একটু পরই নাকি তুই বের হয়ে গিয়েছিলি। কোথায় ছিলি? (স্বাধীন)
আদ্রিতার সাথে ছিলাম। (সাজ্জাদ)
কি সারাদিন তুই কি আদ্রিতার সাথে ছিলি নাকি?(স্বাধীন)
হুম। (সাজ্জাদ)
বাহ আমাকে ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে নিজে ত ভালোই ঘুরলি। (স্বাধীন)
বিয়ের পর বউ নিয়ে ঘুরিছ।(সাজ্জাদ)
হুম একবার বিয়েটা করে নেই তারপর দেখবি তোর থেকে বেশি ঘুরবো। কিন্তু তুই ত বিয়ে না করেই ঘুরতেছছ।(স্বাধীন)
সাজ্জাদ কিছু বললো না শুধু হাসলো।
******
তুই কিছু ঠিক করেছিছ কালকে কি করবি?( রাইসা)
অবশ্যই কালকেই দেখবি আদ্রিতার শেষ দিন।এমন কাজ করবো সাজ্জাদ ঘৃণা ছাড়া কখনো আর আদ্রিতার দিকে তাকাবে না। (নওশিন)
বেশি খারাপ কিছু করিছ না পরে আমাদের দোষ আসলে কলেজে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। যা করবি ভেবে চিন্তে করিছ। (রাইসা)
ওকে কথাটি বলে নওশিন ফোন কেটে দিলো।
******
আদ্রিতা রুমে এসে সাজ্জাদের দেওয়া শাড়িটি খুললো। মুচকি হাসলো সাজ্জাদের চয়েস আছে বলতে হবে। কালোর উপর গোল্ডেন কাজ অনেক ভালো লাগছে আদ্রিতার কাছে। আদ্রিতা শাড়িটা একবার জড়িয়ে ধরলো অনেক শান্তি লাগছে আদ্রিতার কাছে। আদ্রিতা সব কিছু গুছিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ~
আদ্রিতা ঘুমাচ্ছে তখন আদ্রিতার রুমে কেউ প্রবেশ করলো এমন ভাবে আসলো যেনো আদ্রিতার ঘুম না ভেঙে যায়।
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৩
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আদ্রিতা ঘুমাচ্ছে তখন আদ্রিতার রুমে কেউ প্রবেশ করলো এমন ভাবে আসলো যেনে আদ্রিতার ঘুম না ভেঙে যায়। আদ্রিতার রুমে চুপি চুপি আলো প্রবেশ করেছে। হাতে বেলুন আছে। আদ্রিতার সামনে গিয়ে বেলুন ফাটিয়ে দিলো।
বোম ও আল্লাহ বাসায় কে জানে বোম মেরেছে।(আদ্রিতা)
আলো উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। আদ্রিতা বুঝতে পারলো আসলে কি হয়েছিলো এখানে।
এই তুই আমার রুমে কি করিছ? আর আমার ঘুম নষ্ট করলি কেন? (আদ্রিতা)
কলেজে ৭টায় যাওয়ার কথা এখন ৬.১৫ বাজে আর তুই এখনো ঘুমাচ্ছিলি। (আলো)
হায় আল্লাহ এতো দেরি হয়ে গেছে আগে ডাকবি না?আগে আসলি ন্ কেনো? (আদ্রিতা)
বাহ মাএই বলছিলি কেনো তোর রুমে আসলাম আর এখন বলে চলেছিছ আগে কেনো আসলাম না।(আলো)
হয়েছে চুপ থাক তুই বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। এই বলে আদ্রিতা রুম থেকে চলে গেলো। আলো রুমে বসে বসে ফোন ব্যবহার শুরু করে দিলো।
*********
আরিয়ান আরো আগেই কলেজে পৌঁছে গেছে অপেক্ষা করছে তার ভালোবাসার মানুষটির জন্য। যেহেতু আজকে অনুষ্ঠান সবাই একটু পরিপাটি ভাবে আসবে। আরিয়ান নিজে ও সাদা সার্ট পড়েছে। ফরমাল ড্রেসে অসাধারণ লাগছে তাকে। অনেক স্টুডেন্টই যেনো তার উপর ক্রাশ খেয়েছে এমন অবস্থা। শুধু সে যাকে পছন্দ করে তার মনে আরিয়ানের প্রতি কোনো অনুভূতি দেখলো না আরিয়ান। আসলেই কি অনুভূতি নেই। নাকি আরিয়ানের ভালোবাসার মানুষটি নিজে ও জানে না যে আরিয়ানের প্রতি তার এক #অজানা_অনুভূতি রয়েছে।
*****আদ্রিতার বাসায়****
আদ্রিতা চুল মুছতে মুছতে রুমে আসলো। মাএ গোসল করেছে।
কিরে তুই এখনো রেডি হোস নি কেনো? (আদ্রিতা)
আদ্রিতার কথা শুনে আলো আবার ও হেঁসে উঠলো। ঘড়িতে একবার সময় ত দেখ। (আলো)
আদ্রিতা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো মাএ ৫.৩০ বাজে। তখন আলো সময় বলেছিলো আর আদ্রিতাও বিশ্বাস করে নিয়েছিলো। আদ্রিতার হাতের কাপড়টি আলোর দিকে ছুঁড়ে মারলো।
আমার ঘুম নষ্ট করলি কেন তুই? (আদ্রিতা)
যা করার করেছি চল রেডি হয় এমনি ও রেডি হতে সময় লাগবে। (আলো)
আলো আলোর সব জিনিসপত্র ব্যাগে নিয়ে এসেছে। এখান থেকে রেডি হয়ে একসাথে বের হবে।
আলো আর আদ্রিতা দু’জনই শাড়ি পরে নিলো। আলো সাদার উপর গোলাপি কাজ করা এমন শাড়ি পড়েছে।
আর আদ্রিতা সাজ্জাদের দেওয়া শাড়িটি পড়েছে। আদ্রিতার ফর্সা গায়ে কালো শাড়িটি অনেক মানিয়েছে। তার উপর গোল্ডেন কাজ করা। অনেক ভালো লাগছে আদ্রিতাকে।
দোস্ত তোকে দেখলে ত আজ যে কেউ ক্রাশ খাবে। (আলো)
হয়েছে আর বাজে বকতে হবে না। (আদ্রিতা)
না সত্যি বলছি। হিজাব পড়বি নাসি চুল খোলা রাখবি?(আলো)
না হিজাব পড়বো।(আদ্রিতা)
আচ্ছা তাহলে আমি ও হিজাব পড়বো। (আলো)
আচ্ছা এই শাড়িটি ত আগে দেখলাম না। তুই এই শাড়ি কবে কিনলি? (আলো)
কালকে। (আদ্রিতা)
ও কালকে ত তোকে সাজ্জাদ ভাইয়া নিয়ে গেলো। হাইইই কি রোমান্টিক মোমেন্ট ছিলো। (আলো)
দূর কি যে বলিছ ( আদ্রিতা)
ও আচ্ছা লজ্জা পাওয়া হচ্ছে নাকি কথাটি বলে আলো হেসে উঠলো। আচ্ছা আগে এটা বল শাড়িটা কে কিনে দিয়েছে? ( আলো)
যে কালকে নিয়ে গিয়েছিলো সেই কিনে দিয়েছে। কথাটি বলে আদ্রিতা মুচকি হাসলো।
কিকিকিকি তার মানে সাজ্জাদ ভাইয়া তোকে শাড়ি কিনে দিয়েছে? (আলো)
হুম। (আদ্রিতা)
বাহ ভালোই ত প্রেম করে যাচ্ছিছ। (আলো)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
আমাকে যে কবে কেউ ভালোবাসবে আর আমাকে ও সাথে নিয়ে ঘুরাঘুরি করবে। (আলো)
দেখ এমন ও হতে পারে কেউ তোকে ডুবে ডুবে ভালোবাসে। (আদ্রিতা)
আলো হেসে উঠলো না রে আমার ভাগ্য এতো ভালো না আজ পর্যন্ত একটি প্রপোজ ও পেলাম না। (আলো)
হয়তো সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব পাবি। (আদ্রিতা)
হুম বিয়ের পর প্রেম করবো (আলো)
পছন্দ আছে নাকি কাউকে? (আদ্রিতা)
না পছন্দ নেই। (আলো)
আচ্ছা বাদ দে রেডি হয়ে নে তাড়াতাড়ি। (আদ্রিতা)
আদ্রিতা আর আলো রেডি হওয়া শুরু করলো।
********
কালকে সারাদিন আদ্রিতার সাথে ঘুরার ফলে দিনে কোনো কাজ করতে পারে নি সাজ্জাদ। সারা রাত কাজ করে এখন ঘুমাচ্ছে। সাজ্জাদ যেনো ভুলেই গিয়েছিলো আজ আদ্রিতার কলেজে যেতে হবে। সাজ্জাদের বাসায় স্বাধীন আসলো দু’জন একসাথেই কলেজে যাবে।
তুই এখনো ঘুমে? ঘুম থেকে উঠ (স্বাধীন)
সাজ্জাদ ঘুমঘুম চোখে বললো, কালকে রাতে সব কাজ করেছি চেক করে দেখ। (সাজ্জাদ)
আরে কাজের জন্য ডাকছি না। কলেজের অনুষ্ঠানে যেতে হবে তাই ডাকছি। (স্বাধীন)
সাজ্জাদ বসে পড়লো সে ভুলেই গিয়েছিলো কলেজে যাওয়ার কথা।
ভুলো গেছিলি অনুষ্ঠানের কথা? (স্বাধীন)
হুম (সাজ্জাদ)
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে আমি কিন্তু রেডি। (স্বাধীন)
স্বাধীন নীল কালারের ব্লেজার পড়েছে। স্বাধীনকে ও যেনো এক কথায় অসাধারণ লাগছে।
সাজ্জাদ উঠে রেডি হতে চলে গেলো।
********
আলো আর আদ্রিতা রেডি হয়ে গেছে।
এই দাঁড়া দি ও যাবে আমাদের সাথে। (আদ্রিতা)
যা আপুকে ডেকে আন। (আলো)
ওকে (আদ্রিতা)
আদ্রিতা সামিরাকে ডাকতে চলে গেলো। আদ্রিতা সামিরার রুমে যাচ্ছে এমন সময় ওর ফোনে মেসেজ আসলো সেখানে লেখা,
প্রিয়তমা সেই সকাল থেকে তোমাকে দেখার জন্য ছটফট করছি। কখন আসবে তুমি? তুমি কি বোঝতে পারো না আমার শুধু তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে। কখন আসবে তুমি?
আদ্রিতা বুঝতে পারছে না সে কলেজে অনুষ্ঠানে যাবে এইটা এই মেসেজ দেওয়া ব্যক্তিটি কিভাবে জানতে পারলো। আদ্রিতা মেসেজটি দেখে কিছু বললো না। আদ্রিতার জানতে হবে কে এই মেসেজ গুলো দিচ্ছে।
দি তুই এখনো রেডি হস নি? (আদ্রিতা)
না মানে এখনো ত রেডি হয় নি আমি। (সামিরা)
আমাদের ত প্রধান অতিথি আসার আগে কলেজে উপস্থিত থাকতে হবে। তোর রেডি হতে ত অনেক সময় লাগবে আমরা কি বেরিয়ে যাবো? তুই পরে আসতে পারবি? ( আদ্রিতা)
হ্যাঁ, তোরা চলে যা আমি পরে আসবো। (সামিরা)
আচ্ছা দি আমরা তাহলে বের হয়ে গেলাম। (আদ্রিতা)
আচ্ছা সাবধানে যা। (সামিরা)
আদ্রিতা আর আলো বাসা থেকে বের হয়ে গেছে।
সামিরার অস্থির লাগছে। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। যাওয়া ঠিক হবে কি না বুঝতে পারছে না। কিন্তু এই অবাধ্য মনটা বার বার যেতে চাচ্ছে। সিদ্ধান্ত নিলো যাবে কলেজে। সামিরা নিজে ও জানে না এই #অজানা_অনুভূতি মানে কি?
*********
বস আদ্রিতা বেরিয়ে গেছে সাথে একটি মেয়ে ও আছে।মেয়ের নাম আলো আদ্রিতার বেস্টফ্রেন্ড (S.R এর লোক)
এই তোকে না কতোবার বলেছি আদ্রিতা ডাকবি না মেডাম বলে ডাকবি। (S.R)
সরি বস ভুল হয়ে গেছে। মেডাম বের হয়ে গেছে বাসা থেকে। (S.R এর লোক)
যেহেতু সাজ্জাদ ও কলেজে আসবে তাই তুই ও কলেজে যা। দেখ কি হয় কলেজে (S.R)
ওকে বস। (S.R এর লোক)
S.R ফোনটি কেটে দিলো। ওই লোকটি আদ্রিতা আর আলোর পিছু নিলো।
*********
সাজ্জাদ ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নিলো।
কি ভাবছিছ এতো? (সাজ্জাদ)
অসময়ী বৃষ্টির কথা। (স্বাধীন)
আজকে আসতে ও পারে। (সাজ্জাদ)
মনে হয় না আসবে। (স্বাধীন)
আমার মহারাণী ত আসবেই। (সাজ্জাদ)
বাহ মহারাণী হয়ে গেছে? (স্বাধীন)
সাজ্জাদ হাসলো।একবার বিয়েটা হতে দে বিয়ের পর মহারাণী করেই রাখবো। (সাজ্জাদ)
এখন দেখি ও ছাড়া কারোর কথাই ভাবতে পারিছ না। (স্বাধীন)
আগে ও ভাবতে পারতাম না। মুধু পরিস্থিতির শিকার। পিচ্চি মেয়েটি অজান্তেই নিজের জায়গা আমার মনে করে দিয়েছে। ( সাজ্জাদ)
স্বাধীন হাসলো, সে চিনে তার বন্ধুকে মেয়েটির জন্য নিজের প্রাণ দিতে ও দ্বিধাবোধ করবে না।
******
আদ্রিতা আর আলো কলেজের গেইটের সামনে নামলো। আদ্রিতা কলেজের সামনে যাদের দেখলো তাদের দেখে ভয়ে আলোর হাত খামছে ধরলো।
#চলবে