#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৪
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আদ্রিতা আর আলো কলেজের গেইটের সামনে নামলো। আদ্রিতা কলেজের সামনে যাদের দেখলো তাদের দেখে ভয়ে আলোন হাত খামছে ধরলো।
কি হলো? (আলো)
আদ্রিতা সামনের ছেলেদের ইশারায় দেখিয়ে বললো,
ওদের কালকে ওদেখেছিলাম বাসের সামনে। ওদের নজর ঠিক লাগছে না। (আদ্রিতা)
এরকম ছেলেরা রাস্তায় থাকে। ওদের দেখে ভয় পেলে ও বুঝতে দেওয়া যাবে না যে ভয় পেয়েছিছ। তাহলে ওরা আর ও বিরক্ত করবে। সব সময় সাহসের সাথে চলতে হবে। (আলো)
হয়েছে হয়েছে আর ভাষণ দিতে হবে না। এমনি অনেক স্টুডেন্ট এসে পড়েছে। ভিতরে চল। (আদ্রিতা)
তারপর তারা কলেজের ভেতর ডুকে গেলো। কালকে বাসের সামনে যেই ছেলেগুলোকে দেখেছিলো তাদের কলেজের সামনে দেখে আদ্রিতা কিছুটা চমকে উঠেছিলো।
আরিয়ান কাজ করছে এমন সময় দেখতে পেলো, আদ্রিতা আর আলো কথা বলতে বলতে ভিতরে আসছে। আরিয়ান তার প্রিয়তমাকে দেখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। এতো সুন্দর লাগছে তার প্রিয়তমাকে যা বলার বাইরে। অবশ্য ভালোবাসার মানুষটির সব কিছুই সুন্দর। আরিয়ান আনমনে বলে উঠলো, ডুবেছি আমি তোমার চোখের অনন্ত মায়ায়। আরিয়ানের ইচ্ছে হচ্ছে পারলে এখনি তার প্রিয়তমাকে জড়িয়ে ধরতে। আদ্রিতার কথায় আরিয়ানের ধ্যান ভাঙলো,
স্যার আসসালামু আলাইকুম (আদ্রিতা)
আরিয়ান সালামের জবাব দিলো। তোমরা ঠিক সময় এসেছো। একটু পরেই অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হবে। আর প্রধান অতিথির আসার সময় ও হয়ে যাচ্ছে। প্রধান অতিথি যখন কলেজের ভিতর আসবে তখন তাদের উপর ফুল ছিটানো শুরু করবে। তারপর তাদের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে তাদের বসতে বলবে। আর হাল্কা কিছু নাস্তা দিবে। যত্নের যেনো কিনো এুটি না থাকে।এর সাথে আমাদের কলেজের সম্মান জড়িত রয়েছে। আশা করি সব বুঝতে পেরেছো। (আরিয়ান)
জ্বি স্যার। (আলো)
ওকে এখন যেয়ে দেখো ডেকোরেশন সব ঠিক আছে কি না। (আরিয়ান)
ওকে স্যার আমরা যাচ্ছি। (আদ্রিতা)
তোমাদের সাথে তানহা আর আবির কই? (আরিয়ান)
স্যার ওরা আসতেছে। (আলো)
ওকে (আরিয়ান)
আলো আর আদ্রিতা সেখান থেকে চলে আসলো।
প্রিয়তমা তোমাকে একবার জড়িয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে করছে। দেখো আমাদের পছন্দতে ও অনেক মিল। মুচকি হাসলো আরিয়ান।
*******
শাড়ি পড়তে পারিছ না আবার পড়িস কেনো? (আবির)
আরে দাড়া না একটু আস্তে যা আমার দ্রুত হাঁটতে পারছি না। (তানহা)
না করেছিলাম শাড়ি পড়তে। শুনলি না আমার কথা আর এখন তোর জন্য আমার দেড়ি হচ্ছে। (আবির)
এতো দেড়ি হলে দাঁড়াতে হবে না চলে যা। (তানহা)
আরে ম্যাডাম রাগ করেছে নাকি এই বলে আবির তানহার গাল টিপে দিলো।
এই কি করছিছ ছাড় আমার মেকআপ নষ্ট হয়ে গেলো।(তানহা)
আবির হেসে উঠলো। একটু তাড়াতাড়ি কর। দেড়ি হয়ে যাচ্ছে। (আবির)
একটি রিক্সা নে (তানহা)
কতোক্ষণ রিকশার জন্য দাঁড়ালাম কোনো রিকশা নেই। (আবির)
তাহলে আর কি এখন আমার জন্য আস্তে আস্তে হাঁটতে থাক। (তানহা)
আলো আর আদ্রিতা মনে হয এতোক্ষণে পৌঁছে গেছে।(আবির)
হুম মনে হয়। (তানহা)
আবির কালো শার্ট পড়েছে আর তানহা বেগুনি কালার শাড়ি। চুল গুলো খোলা অনেক অসাধারণ লাগছে তানহাকে। আর আবিরের পাশে একটু বেশি মানিয়েছে।
********
আর একটু পরই আমার ক্রাশ এসে যাবে। নিশ্চয়ই আমাকে দেখে ফিদা হয়ে যাবে। (নওশিন)
হযেছে খবর শুনেছিছ? (রাইসা)
কিসের খবর? (নওশিন)
সাজ্জাদের জন্য নাকি আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। (রাইসা)
বাহ তাহলে ত ভালোই হয়েছে। সেখানে গিয়ে আলাদা ভাবে একটু কথা বলার সুযোগ পাবো। (নওশিন)
হ্যাঁ কিন্তু দেখ তোর আগে আদ্রিতা যেনো না পৌঁছে যায় সেখানে। (রাইসা)
ওই আদ্রিতার খেলা ও আজকেই শেষ হবে। (নওশিন)
কিন্তু আমার ভয় করছে যদি আমরা ফেঁসে যাই। তখন কি হবে? (রাইসা)
না চিন্তা করিছ না আমাদের কিছুই হবে না। যা হবে আদ্রিতার হবে। (নওশিন)
হুম আমাদের কিছু না হলেই বাঁচি। (রাইসা)
তারপর ওরা একসাথে হেঁসে উঠলো।
*******
সামিরা রেডি হয়েছে নীল শাড়ি পড়েছে। চুলগুলো খোলা। বেশি মেকআপ করে নি। হালকা সাজের মধ্যে অনেক ভালো লাগছে সামিরাকে। সামিরার মনে অনেক ধরনের চিন্তা ভাবনা কাজ করছে। সব কিছু বাদ দিয়ে সামিরা কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লো।
*******
ওইতো তানহা আর আবির চলে এসেছে। (আদ্রিতা)
তোরা এতো দেরি করলি কেন?(আলো)
আরে ওকে বলেছিলাম শাড়ি না পড়তে একে ত সামলাতে পারে না আবার পড়েছে। ৫ মিনিটের রাস্তা ৩০ মিনিট লেগেছে ওর জন্য। (আবির)
একটু দেরি হয়েছে আর কথা শুনাচ্ছে। (তানহা)
হয়েছে হয়েছে আর ঝগড়া করতে হবে না। (আদ্রিতা)
দোস্ত তোকে এই শাড়ি অনেক মানিয়েছে কবে কিনলি? (তানহা আদ্রিতার উদ্দেশ্য কথাটি বললো)
কালকে। (আদ্রিতা)
আলো মুচকি হাসলো। কিছু বললো না।
অনেক সুন্দর হয়েছে। (তানহা)
তোরা থাক আমি ওদিক থেকে একটু ঘুরে আসছি। একথা বলে আবির চলে গেলো।
বাকিরা ওদের গল্পের ফুলঝুরি শুরু করে দিলো।
*******
সাজ্জাদের গাড়ি এসে থেমেছে কলেজের সামনে। সাজ্জাদ আর স্বাধীন নামলো গাড়ি থেকে। দু’জনকে ফরমাল ড্রেসে খুব অসাধারণ লাগছে। কলেজের প্রিন্সিপাল এসে তাদের এগিয়ে নিলেন। সাজ্জাদ আর স্বাধীন ভেতরে ডুকছেন। পিছনে তাদের গার্ডরাও আছেন। সব স্টুডেন্টরা দাতের উপর ফুল ছিটিয়ে কলেজে প্রবেশের শুভেচ্ছা দিচ্ছে। আদ্রিতা এগিয়ে আসলো। পিছনে আবির। আদ্রিতাকে দেখে সাজ্জাদ চমকে উঠলো। দুধে-আলতা গায়ে কালো শাড়িটি যা মানিয়েছে বলার বাইরে। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। গোল্ডেন হিজাব পড়া। সাজ্জাদ আদ্রিতার থেকে চোখ ফেরাতেই পারছে না। সাজ্জাদ ও আদ্রিতার সাথে মিলিয়ে কালো ব্লেজার পড়েছে। তার উপর গোল্ডেন কাজ সেখানে লেখা AS। সাজ্জাদকে দেখে অনেক মেয়ে ফিদা হয়ে গেছে। তবু ও সাজ্জাদ কারোর দিকে একবার ফিরে ও তাকাচ্ছে না।
আদ্রিতার হাতের ফুলের তোড়াটি আদ্রিতা সাজ্জাদের হাতে দিলো। আবির ফুলের তোড়াটি স্বাধীনকে দিলো। অন্যদিকে সাজ্জাদকে দেখে নওশিন আরেক দফা ক্রাশ খেলো।
আরিয়ান এগিয়ে এসে আদ্রিতাকে বললো, উনাদের জন্য যেই রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে নিয়ে যাও।
ওকে স্যার (আদ্রিতা)
আপনারা আমার সাথে আসুন। (আদ্রিতা সাজ্জাদ আর স্বাধীনের উদ্দেশ্য বললো)
স্বাধীনও সাজ্জাদ আদ্রিতার পিছন পিছন গেলো। সাথে আবির ও আছে। আর সাজ্জাদ এবং স্বাধীনের গার্ড।
এর মধ্যে সাজ্জাদ স্বাধীনকে একটি মেসেজ দিলো। স্বাধীন তা দেখে মুখ টিপে হাসলো।
আপনারা রুমে বসুন। একটু রেস্ট নিন। একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হবে। (আদ্রিতা)
আমি ফ্রেশ হবো ওয়াশরুম কোথায়? (স্বাধীন)
আমার সাথে আসুন আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। (আবির)
ওকে (স্বাধীন)
আবির আর স্বাধীন রুম থেকে চলে গেলো।
রুমে শুধু সাজ্জাদ আর আদ্রিতা রয়েছে গার্ডরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। এই রুমটি একটু কিনারে। তাই এখানে সাধারণত কেউ আসে না।
আপনি বসুন আমি আসছি। (আদ্রিতা)
আমি কি তোমাকে যেতে বলেছি? (সাজ্জাদ)
আমি এখানে কি করবো? (আদ্রিতা)
বলছি কি করবে। কথাটি বলে সাজ্জাদ রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো।
********
স্বাধীন আর আবির হেঁটে যাচ্ছে। এর মধ্যে সামিরাকে দেখে স্বাধীন থমকে দাঁড়ালো।
******
কি হলো দরজা বন্ধ করলেন কেনো?(আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আর কিছু না বলে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরলো।
কি করছেন ছাড়ুননন এইটা কলেজ। (আদ্রিতা)
এতো সুন্দর করে সেজেছো কেনো? ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। (সাজ্জাদ)
ছাড়ুননন কেউ এসে পড়বে।(আদ্রিতা)
কেউ আসবে না বাইরে আমার গার্ড আছে।
সাজ্জাদ একটি টেবিলে বসে টান দিয়ে আদ্রিতাকে সাজ্জাদের কোলে বসিয়ে নিলো।
ছাড়ুনননন (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরলো। আদ্রিতার কথা না শুনে বরং আদ্রিতার ঠোঁট নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৫
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আদ্রিতার বিধ্বস্ত দেহটি নিচে পরে আছে। হাতে কাঁচের চুরি গুলো ভেঙে হাত থেকে রক্ত পড়ছে। শাড়ি কিছুটা এলোমেলো। কিন্তু শাড়ির উপরে শরীরের কোনো অংশ বোঝা যাচ্ছে না। হিজাবটি খুলে গিয়েছে। লিপস্টিক এলোমেলো।
কয়েকঘন্টা আগে ~
একটু পরেই সাজ্জাদ আদ্রিতার ঠোঁট জোড়া মুক্ত করে দিলো। আদ্রিতা লজ্জায় কুঁকড়ে উঠলো।
ছাড়ুননন কি করছেন। (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। সারাদিন ত দৌড়াদৌড়ি করতে থাকো। একটু আমার কাছে থাকলে কি হয়? (সাজ্জাদ)
জানি না। কিন্তু এখন কাজ আছে ছাড়ুনন আমাকে
আর কেউ এসে পড়লে অনেক খারাপ ভাববে। ছেড়ে দিন। (আদ্রিতা)
বাইরে বডিগার্ড আছে। আর স্বাধীন ও এখন আসবে না তাই তুমি নিশ্চিন্তে বসে থাকতো পারো। (সাজ্জাদ)
উফফফ ছাড়ুন আলো নিশ্চয়ই আমাকে খুঁজে চলেছে। আপনার সাথে যদি আমাকে দেখে তাহলে ওকে কি জবাব দিবো? (আদ্রিতা)
বলো দিও নিজের হাসবেন্ডের কেলো বসে থাকা দোষের না। (সাজ্জাদ)
উফ অ*সভ্য লোক একটা যখনই সুযোগ পাচ্ছে আমাকে কাছে টেনে নিচ্ছে। (মনে মনে)
ছেড়ে দিন (আদ্রিতা)
আরে এতোবার বলছো ছেড়ে দিতে যেনো মনে হচ্ছে অন্য কেউ তোমার শরীরে ধরেছে। এ শরীরে শুধুই আমার অধিকার। (সাজ্জাদ)
কথাটি বলে সাজ্জাদ আরেক বার আদ্রিতার ঠোঁট স্পর্শ করতে নিলে। আদ্রিতা মুখে হাত দিয়ে ফেলে। সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো।
আচ্ছা নামো। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা যেনো এই কথার অপেক্ষাই করছিলো। দ্রুত নেমে নিজেকে একটু ঠিক করে নিলো।
হঠাৎ পে*টের উপর কারোর হাতের ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে আদ্রিতা বরফের ন্যায় শক্ত হয়ে গেলো। সাজ্জাদ পিছন থেকে আদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরেছে। সেই সাথে শাড়ির আঁচলের নিচ দিয়ে উন্মুক্ত পে*টে হাত দিয়েছে। সাজ্জাদের স্পর্শে আদ্রিতার বরফের ন্যায় হয়ে গেছে। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে একটু উঁচু করে আবার ঠোঁট ঠোঁট মিশিয়ে দিলো। কতক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে বললো,
যাও মুক্ত করে দিলাম কিছুক্ষণের জন্য। কিন্তু কিছুদিন পর আবার আমার খাঁচায় বন্দি করে নিবো। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো।
*******
স্বাধীন সামিরাকে দেখে থমকে গেলো।
আবির তুমি চলে যাও আমি যেতে পারবো। তোমার নিশ্চয়ই কাজ আছে। (স্বাধীন)
জ্বি ভাইয়া (আবির)
ওকে তাহলে যাও তুমি (স্বাধীন)
আবির চলে গেলো। আবির যাওয়ার পর স্বাধীন সামিরার কাছে আসলো,
আরে মিস সামিরা আপনি এইখানে? (স্বাধীন)
হঠাৎ স্বাধীনের কথা শুনে সামিরা একটু চমকে উঠেছিলো। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বললো,
জ্বি, ওই আদুরির কলেজের অনুষ্ঠানের জন্য এসেছি। কিন্তু আপনি এইখানে? (সামিরা)
(সামিরা জানে স্বাধীন কেনো এইখানে এসেছে তবুও জিজ্ঞেস করলো)
আমি আমন্ত্রিত। (স্বাধীন)
ও আচ্ছা। (সামিরা)
জ্বি। তারপর বলেন কি খবর? কেমন আছেন?(স্বাধীন)
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি? ( সামিরা)
জ্বি আমি ও ভালো আছি। (স্বাধীন)
সামিরা আর কি বলবে খুঁজে পাচ্ছে না এর আগেই স্বাধীন বলে উঠলো, আপনার বিয়ের তারিখ ত এগিয়ে এসেছে। কথাটি সামিরার মোটেও পছন্দ হয় নি। তাও বললো, জ্বি
আমার বিয়ের তারিখ ও এগিয়ে এসেছে। (স্বাধীন)
সামিরা হাসলো।
দাওয়াত দিবেন না বুঝি? ( সামিরা)
হুম অবশ্যই দাওয়াত দিবো। সাজ্জাদ নিজে আপনাদের নিয়ে আসবে। ( স্বাধীন)
হুম। (সামিরা)
আচ্ছা একটু আগেই এসেছি ত ক্লান্ত লাগছে আমি রুমে যাচ্ছি কথাটি বলে স্বাধীন চলে গেলো। স্বাধীন হঠাৎ সামিরার সামনে নার্ভাস ফিল করছিলো তাই একটি অজুহাত দিয়ে চলে আসলো।
সামিরা একা দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিতার কাছে যাবে এমন সময় ইরা কল করেছে [ সামিরার বেস্ট ফ্রেন্ড ] ইউনিভার্সিটিতে নাকি আর্জেন্ট যেতে হবে। সামিরা আদ্রিতাকে মেসেজে জানিয়ে দিয়েছে একটি দরকারি কাজের জন্য সামিরা চলে যাচ্ছে। সামিরা কলেজ থেকে ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্য চলে যায়।
*******
স্বাধীন রুমের সামনে এসে দেখলো আদ্রিতা দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেছে।
যাক বাবা এর আবার কি হলো?🤷(স্বাধীন)
স্বাধীন রুমে ঢুকে দেখলো সাজ্জাদ মুচকি হাসছে।
কিরে তুই আদ্রিতার সাথে কি করেছিছ? মাএ দেখলাম দৌড়ে রুম থেকে বের হলো। (স্বাধীন)
কিছু করি নি। বাচ্চা ত তাই সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। (সাজ্জাদ)
স্বাধীন আর কিছু বললো না। তারা তাদের কাজের ব্যাপারে কথা শুরু করে দিলো।
*****
কিরে তুই এতোক্ষণ কোথায় ছিলি? আর প্রধান অতিথিদের যে নাস্তা দিতে বলেছিলো দিয়েছিলি নাকি ভুলে গেছিছ? (আলো)
দূর ভুলে গেছিলাম। আমি স্টেজের দিকে যাচ্ছি তুই একটু উনাদের নাস্তা দিয়ে আয়। (আদ্রিতা)
আমার কাজ আছে আমি পারবো না তানহাকে বল দিয়ে আসতে। (আলো)
কথাটি বলে আলো চলে গেলো। আদ্রিতা তানহাকে বললো নাস্তা দিয়ে আসতে। তানহা নাস্তা দিয়ে আসলো।
কিছুক্ষণ পর ~
অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। তানহা আর আবির গিয়ে সাজ্জাদ আর স্বাধীনকে স্টেজের সামনে নিয়ে আসলো। তখন রুম থেকে বের হওয়ার পর আদ্রিতা আর সাজ্জাদের সামনে আসে নি। সাজ্জাদ আর স্বাধীন
তাদের সিটে বসলো। প্রধান শিক্ষক তার বক্তৃতা পেশ করলো । অতঃপর প্রধান অতিথিরা তাদের বক্তৃতা পেশ করেন । এখন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পালা।
এখন আমাদের মধ্যে একটি গান পেশ করবে একাদশ শ্রেণির আদ্রিতা। ( উপস্থাপক)
নার্ভাস ফিল করিছ না। যা নিজের বেস্ট দিয়ে একটি গান পেশ কর। (আলো)
ভয় করছে আমি স্টেজে উঠার পর তুই স্টেজের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকিস। (আদ্রিতা)
আচ্ছা ঠিকআছে আমি থাকবো। (আলো)
আদ্রিতা দেড়ি করছো কেনো স্টেজে যাও। (আরিয়ান)
জ্বি স্যার যাচ্ছি। (আদ্রিতা)
আদ্রিতা স্টেজে উঠলো। সাজ্জাদ আর স্বাধীন সামনের সিটেই বসা। আদ্রিতা একনজর সাজ্জাদের দিকে তাকিয়ে কিছু কথা পেশ করলো। অতঃপর নিজের গানটি শুরু করলো ~
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
গায়কঃ অনুপম রায়
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
আমি নিজেকে নিজের মত গুছিয়ে নিয়েছি ।।
যেটা ছিলনা ছিলনা সেটা না পাওয়ায় থাক
সব পেলে নষ্ট জীবন।
তোমার ঐ দুনিয়ার ঝাপসা আলোয়
কিছু সন্ধ্যের গুড়ো হাওয়া কাঁচের মত
যদি উড়ে যেতে চাও তবে গা ভাসিয়ে দাও
দুরবিন চোখ রাখবো না.. না না না না না
এই জাহাজ মাস্তুল ছারখার,
তবু গল্প লিখছি বাঁচ বার।
আমি রাখতে চাই না আর তার,
কোন রাত–দুপুরের আবদার।
তাই চেষ্টা করছি বার বার সাঁতরে পাড় খোঁজার
কখনো আকাশ বেয়ে চুপ করে
যদি নেমে আসে ভালবাসা খুব ভোরে
ঘুম ভাঙ্গা চোখে তুমি খুঁজো না আমায়
আসে পাশে আমি আর নেই।
আমার জন্য আলো জ্বেলো নাকো কেউ
আমি মানুষের সমুদ্রে গুনেছি ঢেউ
এই স্টেশন চত্ত্বরে হারিয়ে গিয়েছি
শেষ ট্রেনে ঘরে ফিরবো না – না না না না
এই জাহাজ মাস্তুল ছারখার,
তবু গল্প লিখছি বাঁচ বার।
আমি রাখতে চাই না আর তার,
কোন রাত–দুপুরের আবদার।
তাই চেষ্টা করছি বার বার সাঁতরে পাড় খোঁজার
না – না না না না
তোমার রক্তে আছে স্বপ্ন যত,
তারা ছুটছে রাত্রি–দিন নিজের মত,
কখনও সময় পেলে একটু ভেবো–
আঙ্গুলের ফাঁকে আমি কই?
হিসাবের ভিড়ে আমি চাই না ছুঁতে
যত শুকনো পেঁয়াজকলি ফ্রিজের শীতে,
আমি ওবেলার ডাল–ভাতে ফুরিয়ে গেছি
গেলাসের জলে ভাসবোনা – না না না না
এই জাহাজ মাস্তুল ছারখার,
তবু গল্প লিখছি বাঁচ বার।
আমি রাখতে চাই না আর তার,
কোন রাত–দুপুরের আবদার।
তাই চেষ্টা করছি বার বার সাঁতরে পাড় খোঁজার
না – না না না না
আদ্রিতা চোখ খুললো চারদিকে হাততালির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আলো স্টেজের পাশেই দাঁড়ানো। সাজ্জাদ সম্পূর্ণ গানটি অনুভব করেছে। সাজ্জাদ আশে পাশে একটু তাকিয়ে দেখলো আরিয়ান এক দৃষ্টিতে স্টেজের দিকে তাকিয়ে আছে। বিষয়টি সাজ্জাদের ভালো লাগছে না।
চারদিকে আদ্রিতার প্রশংসা শুনে নওশিন আর ও রেগে উঠলো । নওশিন রিজভীকে দেখে বললো কাজ শুরু করে দে। রিজভী নওশিন ওদের ফ্রেন্ড। আর নওশিনের কাজের সাথে জড়িত আছে।
আদ্রিতা স্টেজ থেকে নিচে নেমে আসলো। আলো তানহা আবির সবাই আদ্রিতার প্রশংসা করছে। প্রধান শিক্ষক ও খুশি হয়েছেন।
সাজ্জাদের চোখজোড়া আদ্রিতাকে দেখে যাচ্ছে। সাজ্জাদ আনমনে বলে উঠলো,
মানুষ কন্ঠের ও প্রেমে পড়ে! ❤️
[ একটু বেশি রোমান্টিক করে ফেলেছি মনে হয় 🫣
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৬
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ আনমনে বলে উঠলো,
মানুষ কন্ঠের ও প্রেমে পড়ে!
কি কিছু বললি তুই? ( স্বাধীন)
আরে না কিছু বলি নি। (সাজ্জাদ)
ও আদ্রিতার গানটি কিন্তু অনেক সুন্দর হয়েছে। তুই কি বলিস কেমন হয়েছে? ( স্বাধীন)
হুম ভালোই। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদ চিন্তা করছে আরিয়ান কেনো শুধু স্টেজের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তার মানে কি সাজ্জাদের ধারণা সঠিক। আরিয়ান ও কি আদ্রিতাকে পছন্দ করে? সাজ্জাদ এসব ভাবনায় ডুবে আছে।
******
আলো তুই প্রোগ্রামে অংশ নে (আদ্রিতা)
না আমি কোনোকিছুতে অংশগ্রহণ করবো না (আলো)
আমি করবো ভাবতেছি (তানহা)
তোর গান শুনলে সবাই পালাবে। (আবির)
উফফ সবসময় এতো ডিস্টার্ব করিছ কেন? এই আলো আর আদ্রিতা বল না আমি কি অংশ গ্রহণ করবো নাকি করবো না? ( তানহা)
আরে হ্যাঁ অংশেগ্রহণ কর। ( আদ্রিতা)
আচ্ছা ঠিকাছে আমি যখন স্টেজে উঠবো তোরা কিন্তু স্টেজের পাশে দাঁড়িয়ে থাকবি। (তানহা)
ওরা দাঁড়িয়ে থাকুক আমি পারবো না এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে পা ব্যথা হয়ে গেছে। (আদ্রিতা)
আমি ও পারবো না দাঁড়াতে তোর এই বক বক শোনার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। ( আবির)
তানহা আবিরের হাতে একটি ঘুসি দিয়ে বললো আর কেউ না দাঁড়ালে ও তোর দাঁড়াতে হবে আর না দাঁড়লে দেখিস কিভাবে তোকে মারি (তানহা)
তুই মেয়ে নাকি গুন্ডারে? (আবির)
আমি দুইটাই। ( তানহা)
সবাই হেঁসে উঠলো।
আচ্ছা আদ্রিতা তুই যেয়ে বস। আমি আর আবির থাকবো স্টেজের পাশে থাকবো ( আলো)
আচ্ছা ঠিক আছে (আদ্রিতা)
*******
সময় এসে পড়েছে। (নওশিন)
আমার ভয় করছে। যদি ধরা খেয়ে যায়।( রিজভী)
আদ্রিতা বেঁচে ফিরবে নাকি সেটা আগে দেখ (নওশিন)
এতো রিস্ক নিয়ে কি ঠিক করেছিছ? (রাইসা)
আমি বুঝেই এটি করেছি। এতো চিন্তা করতে হবে না। একবার ওকে শেষ করে দিতে পারলেও বাঁচি। আর বাবা শুনেছি বাবার নেক্সট ডিল সাজ্জাদের সাথে। তাহলে সাজ্জাদের নাম্বার পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে আমার জন্য। ( নওশিন)
হুম ঠিক বলেছিছ। (রাইসা)
তুই যা তোর কাজটি করে আয় (নওশিন রিজভীর উদ্দেশ্য বললো)
ওকে (রিজভী)
******
আদ্রিতা গিয়ে একটি চেয়ারে বসে পড়লো । আলো আবির স্টেজের দিকে কারন এখন তানহা গান পেশ করবে। সাজ্জাদ আর স্বাধীন আদ্রিতার সামনের সিটে। আদ্রিতা কিছুটা পিছনে বসা। হঠাৎ রিজভী এলো,
আদ্রিতা একটু শুনো (রিজভী)
হুম বলো (আদ্রিতা)
যেই রুমে প্রধান অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো সেখানে একটি গিফট বক্স ছিলো তাদের দেওয়ার জন্য তুমি একটু নিয়ে আসো আরিয়ান স্যার চাচ্ছে। আমি এইদিকে যারা যারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে তাদের লিস্টটা একটু চেক করছি তাই তোমাকে বলছি একটু যেয়ে গিফটটা নিয়ে আসো।(রিজভী)
আচ্ছা আমি যাচ্ছি। (আদ্রিতা)
[ রিজভী হাসলো গিফট ঠিকিই রাখা আছে আরিয়ান স্যার চেয়েছে এইটা ও সত্যি। কিন্তু সেই রুমে না অন্য রুমে রাখা হয়েছে। ]
আদ্রিতা রুমে গিয়ে গিফটটি খুঁজছে। হঠাৎ রুমে কারোর শব্দ পেয়ে পিছনে তাকালো দেখলো কেউ একজন একটি গ্যাসের মতো রুমে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। আদ্রিতা দ্রুত গেয়ে দেখে দরজা বন্ধ। এর মধ্যে গ্যাসের জন্য শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। কোনোমতে দরজা ধাক্কালো তাও কেউ এসে খুলছে না। আদ্রতার শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। ইতোমধ্যে এই অবস্থায় শ্বাস কষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছে। আদ্রিতার শরীর খারাপ হয়ে আসছে দাঁড়ানোর শক্তি পাচ্ছে না। আদ্রিতা দরজা ধাক্কাচ্ছে তাও কেউ খুলছে না। এদিকে ঠিকমতো শ্বাস ও নিতে পারছে না। একসময় আর দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে বসে পড়লো।
*****
তানহা গান শেষ করে নেমেছে স্টেজ থেকে।
কিরে কেমন দিলাম? (তানহা)
হ্যাঁ ভালো হয়েছে। (আলো)
দুর কিসের ভালো হয়েছে। মনে হয়েছে কোনো হাঁস স্টেজে উঠে প্যাক প্যাক করেছে। (আবির)
কথাটি শুনে আলো ও মুখ টিপে হাঁসলো। তানহার গান আসলে ও সুন্দর হয়েছে কিন্তু আবির সবসময় ওর পিছনে বেজে থাকে।
আদ্রিতা কোথায়? ওর কেমন লাগলো আমার গান?(তানহা)
আদ্রিতা ত সবার সাথে বসে ছিলো এখন ত দেখতে পারছি না। (আবির)
কিন্তু এখন ত আদ্রিতাকে দেখতে পারছি না? (আলো)
কি জানে মনে হয় একা একা ঘুরছে। (আবির)
হ্যাঁ তাই হবে। (আলো)
**** কিছুক্ষণ পর *****
অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে কিন্তু এখনো তারা আদ্রিতাকে খুঁজে পাচ্ছে না।
অনেক্ক্ষণ হয়ে গেলো তাও আদ্রিতা আসতেছে না আমার অনেক ভয় করছে ( তানহা)
হুম অনেকক্ষণ হয়েছে ওর কোনো খোঁজ নেই। (আবির)
দাঁড়া আমি দেখছি। আলো এই কথা বলে সাজ্জাদের দিকে আগাতে লাগলো।
অনুষ্ঠান প্রায় শেষ সাজ্জাদ আর স্বাধীন চলে যাবে এখন প্রিন্সিপাল স্যার সাজ্জাদের সাথে কথা বলছে এমন সময় সেখানে আলো আসলো,
ভাইয়া আপনি কি আদ্রিতাকে দেখেছেন? (আলো)
না। কেনো কি হয়েছে? (সাজ্জাদ)
ভাইয়া অনেকক্ষণ হয়েছে কিন্তু আদ্রিতাকে পাওয়া যাচ্ছে না।(আলো)
কথাটি শুনে সাজ্জাদের মনে একটি ভয় ঢুকে গেলো।
এখন এই কথা বলছো ফাস্ট ওকে খুঁজতে শুরু করো।
(সাজ্জাদ)
সাজ্জাদ চোখে মুখে ভয় দেখে প্রিন্সিপাল স্যার ও বললেন, হ্যাঁ কলেজের সব জায়গায় দেখো ও কোথায় আছে।
********
হঠাৎ কেউ দরজা খুললো আদ্রিতার মনে কিছুটা আশা দেখা দিলো। কিন্তু দরজা খোলার পর যাদের দেখলো তাদের দেখার জন্য আদ্রিতা মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। কালকে বাস স্ট্যান্ডের সামনে দেখা ছেলেগুলো। চোখে মুখে ভয়ংকর হাসি। বোঝায় যাচ্ছে উদ্দেশ্য খারাপ। আদ্রিতা দেখে ভয়ে জমে গেলো। এমনি এতোক্ষণ ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল আবার এখন ওদের দেখে আর ও অবস্থা খারাপ। রুমে ৩ জন ছেলে প্রবেশ করেছে। ৩টি ছেলের মধ্যে একটি ছেলে বাইরে গিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলো। যেনো কেউ সন্দেহ না করতে পারে। ২টি ছেলে আদ্রিতার দিকে এগোচ্ছে। মুখে ভয়ংকর হাসি আদ্রিতার সাথে খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে তা আদ্রিতা বুঝতে পারছে। আদ্রিতার কথা বলতে ও কষ্ট হচ্ছে তাও কোনোমতে বলে উঠলো,
কারা আপনারা দরজা বন্ধ করছেন কেনো? বের হন রুম থেকে। (আদ্রিতা)
ছেলেগুলো হেসে উঠলো। একজন এসে হাঁটু গেড়ে আদ্রিতার সামনে বসলো। আদ্রিতার ঠোঁটে হাত দিয়ে লিপস্টিক নষ্ট করে দিলো।
১ম ছেলেটি ২য় ছেলেটিকে বলে উঠলো, আরে এ মেয়ে দেখি সেই একটি মা*ল অনেক মজা হবে। কথাটি বলে বিশ্রী হাসি দিয়ে উঠে।
আদ্রিতা মনে প্রাণে চাচ্ছে কেউ আসুক সাহায্য করার জন্য। ঠিকমতো কথা বলার অবস্থা ও এখন আদ্রিতার নেই।
২য় ছেলেটি বলে উঠলো হ্যাঁ আজকে ভালোই উপভাগ করা যাবে। মেয়েটির শরীর দেখ মনে হয় তুলার মতো নরম।
১ম ছেলেটি বললো তাইলে আর দেড়ি করবো কেনো? চল উপভোগ করি একে।
আদ্রিতা ভয়ে কুঁকড়ে উঠলো।
২য় ছেলেটি আদ্রিতার হাত শক্ত করে ধরলো আদ্রিতার হাতের কাঁচের চুরি গুলো ভেঙে গেলো। হাত থেকে রক্ত পড়ছে।
১ম ছেলেটি আদ্রিতার হিজাবটি টান দিয়ে খুলে ফেললো। চুল গুলো খুলে ফেললো।
২য় ছেলেটি আদ্রিতার শাড়ির আঁচলে হাত দিতে নিলো আর ঠিক তখনই……..
#চলবে
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৭
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
ছেলেটি আদ্রিতার শাড়ির আঁচলে হাত দিতে নিলো আর ঠিক তখনই কেউ দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো।
এই কে ভিতরে আসলি? একটি ছেলে বলে উঠলো।
আদ্রিতার মনে কিছুটা হলে ও আশার আলো দেখা দিলো।
হঠাৎ সেই আগন্তুক ছেলেটি রুমের ভিতরে থাকা ছেলেগুলোর উপর গুলি চালিয়ে দিলো। সাথে সাথে ওরা দু’জন মারা গেলো।
এমন ঘটনার জন্য আদ্রিতা মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। আকস্মিক এমন ঘটনায় আদ্রিতার মুখ থেকে কোনো শব্দ ও বের হলো না। আদ্রিতার দু’পাশে এখন দু’টি লা*শ। আদ্রিতা ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।
********
সাজ্জাদ আর বাকিরা বিভিন্ন রুমে আদ্রিতাকে খুঁজে চলেছিলো। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে সাজ্জাদের পা যেন বরফের ন্যায় জমে যায়। সাজ্জাদ নিজেই কতোবার বন্দুক ব্যবহার করেছে তার ঠিক নেই। কিন্তু এখন ভয় পাচ্ছে। একটি ভয় আদ্রিতাকে হারিয়ে ফেললো নাকি। আলো, তানহা আবির ওরা ও ভয় পেয়ে যায়। আরিয়ান স্যার ও শব্দটি শুনে। কলেজে এরকম শব্দের জন্য মোটেও কেউ প্রস্তুত ছিলো না। যেই রুম থেক৷ শব্দটি আসে সেই রুমের দিকে সবাই দ্রুত এগিয়ে যায়। সাজ্জাদ দ্রুত সেই রুমের দিকে যাওয়া শুরু করলো। কলেজের বাকিরা ও ভয় পেয়ে গেলো৷
********
সাজ্জাদ রুমে ঢুকে দেখতে পারে, আদ্রিতার বিধ্বস্ত দেহটি নিচে পড়ে আছে। হাত কাঁচের চুড়ি গুলো ভেঙে হাত থেকে রক্ত পড়ছে। লিপস্টিক লেপটে আছে। হিজাব খুলে গিয়েছে। শাড়িটা এলোমেলো। আর তার পাশেই দু*জন এর লা*শ পরে আছে। বাকিরা ও রুমের এ অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায়। সাজ্জাদ এমন অবস্থার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
সাজ্জাদ দ্রুত গিয়ে আদ্রিতাকে সেখান থেকে তুলে একটি বেঞ্জে শুইয়ে দেয়।
আলো, তানহা, আবির আর আরিয়ান স্যার রুমে ঢুকে স্তব্ধ হয়ে গেলো।
আলো আদ্রিতা এই কথাটি বলেই ওর মাথা ঘুরে উঠে। আদ্রিতার এই অবস্থা তারপর আবার দু’টি লা*শ। আলো হঠাৎ পড়ে যেতে নিলে আরিয়ান ধরে ফেলে। আরিয়ান নিজেই কলেজের মধ্যে এরকম ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। স্বাধীন যেয়ে ছেলেদের চেক করে সাজ্জাদের উদ্দেশ্য বললো,
মারা গিয়েছে। (স্বাধীন)
আদ্রিতার জ্ঞান না ফিরা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না কি হয়েছে রুমে। (সাজ্জাদ)
হুম। (স্বাধীন)
কিন্তু কেউ আদ্রিতার সাথে খুব খারাপ করার চেষ্টা করেছে। আমি ছাড়বো না কথনো ও ( সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের চোখে মুখে রাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যারা আদ্রিতার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে তাদের এখন সামনে পেলে খুন করতে ও দ্বিধা বোধ করবে না।
আরিয়ান আলোকে একটি চেয়ারে বসিয়ে দিলো। তানহার হাত পা ও যেনো শক্ত হয়ে আসছে। আবির তা বুঝতে পেরে ওকে ধরে ও একটি চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
ভাইয়া কলেজে খু*ন কে করবে? (আবির সাজ্জাদের উদ্দেশ্য বলে উঠলো)
এর জবাব আদ্রিতাই ভালোভাবে দিতে পারবে।(সাজ্জাদ)
কিন্তু আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলে কি ওকে এগুলো জিজ্ঞেস করা ঠিক হবে? (আবির)
জিজ্ঞেস ত অবশ্যই করতে হবে। কে এগুলো করেছে তা জানতে হবে। (সাজ্জাদ)
স্বাধীন তুই গাড়ি বের কর আদ্রিতাকে এখন বাসায় নিয়ে য়ায়। ওর রেস্টের প্রয়োজন আবার হাত থেকে ও রক্ত পড়ছে। আরিয়ান তুই পুলিশদের কল দে। এই জায়গার ঘটনা খুলে বল। আর আদ্রিতার সাথে সরাসরি পুলিশদের কথা বলার প্রয়োজন নেই যা কথা বলার আমি বলবো। (সাজ্জাদ)
আচ্ছা স্বাধীন গাড়ি বের করতে চলে গেলো। আরিয়ান পুলিশকে কল করে জানিয়ে দিলো। কলেজ যারা ছিলো সবাইকে থাকতে বলেছে পুলিশ।
আবির তানহা আর আলোকে নিযে অন্য রুমে যাও। (সাজ্জাদ)
ভাইয়া এই অবস্থা দেখে আলো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে ওকে কিভাবে নিবো……. (আবির)
আরিয়ান আলোকে একটু অন্য রুমে নিয়ে যা। আর কোনো স্টুডেন্ট যেনো এখন এই রুমে আসতে না পারে। (সাজ্জাদ)
ওকে (আরিয়ান)
আবির আর তানহা চলে গেলো রুম থেকে।
আরিয়ান কিভাবে আলোকে নিবে নিজে ও বুঝতে পারছে না। ইচ্ছা না থাকা শর্তে ও আলোকে কোলে তুলে নিলো। আলোকে নিয়ে অন্য রুমে গেলো।
সাজ্জাদ আদ্রিতার হিজাবটি কোনো মতে একটি বেঁধে দিলো। শাড়ির আঁচলটি ঠিক করে দিলো। মৃত ছেলেগুলোর দিকে তাকালো সাজ্জাদ চিনতে পারলো এটি কালকের বাস স্ট্যান্ডের সামনে থাকা ছেলেগুলো।সাজ্জাদ কিছু একটা ভাবলো কোনোভাবে বুঝতে পারছে না কি থেকে কি হয়ে এখানে দু’টি পক্ষ রয়েছে তা সাজ্জাদ নিশ্চিত। এ সমস্যা সমাধানের জন্য আদ্রিতার জ্ঞান ফিরে আসা জুরুরি। সাজ্জাদ আদ্রতাকে কোলে তুলে নিলো তারপর আদ্রিতাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
********
দোস্ত এটা কি হলো? ( রাইসা)
নওশিনের ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। রিজভীর অবস্থা ও একই। তারা ত চেয়েছিল ওই ছেলেদের দিয়ে আদ্রিতাকে ধর্ষ*ণ করাবে। কিন্তু আদ্রিতার ত কিছু হলো না বরং ওরা নিজেরাই মারা গেলো।
দোস্ত ওদের কে মারলো? ( নওশিন)
কিছুই বুঝতে পারছি না কি হয়ে গেলো। আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলে ও যদি বলে দেই রিজভী যেতে বলেছিলো সেখানে তখন আমাদের অবস্থা কি হবে ভাবতে পারছিছ? ( রাইসা)
কিছু বুঝতে পারছি না কি করবো? (নওশিন)
আমি? আমি কি করবো তোদের জন্য আমি ফেঁসে গেলাম। (রিজভী)
মাথা ঠান্ডা করে কাজ করতে হবে। এমন ভাব করতে হবে যেনো আমরা কিছু করি নি। ( রাইসা)
হুম আর নিয়মিত কলেজে আসতে হবে। এখন না আসলে সবাই সন্দেহ করবে আমাদের। (নওশিন)
হ্যাঁ। সবাইকে শান্ত থাকতে হবে। ( রাইসা)
******
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। নিজে ও বসলো। স্বাধীন আগে থেকেই গাড়িতে বসে ছিলো।
জ্ঞান এসেছে? ( স্বাধীন)
না। (সাজ্জাদ)
কলেজে এইরকম কে করতে পারে? ( স্বাধীন)
গাড়ি চালানো শুরু কর। এইসব কথা এখন শুনতে চাচ্ছি না। ( সাজ্জাদ)
স্বাধীন বুঝতে পারলো সাজ্জাদ রেগে যাচ্ছে। তাই আর কথা বাড়ালো না।
সাজ্জাদ গাড়িতেই আদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরলো। যেনো গাড়ি চালানোর সময় পরে না যায়।
আনমনে বলে উঠলো,
সরি আদুরি আমার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো। আমার তোমার প্রতি একটু খেয়াল থাকলে আজকে তোমার এ অবস্থা হতো না। জানি না কে ওই ছেলেদের খু*ন করেছে। কিন্তু আজকে ওই লোকটি না থাকলে তোমার আর ও ক্ষতি হয়ে যেতো। কথাগুলো বলে সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
কে খু*ন করেছে ওদের? ]