অনুবদ্ধ প্রণয় পর্ব-০৯

0
451

#অনুবদ্ধ প্রণয় 💛
#ইবনাত_আয়াত
~ পর্ব. ০৯

‘আচ্ছা ইফা আপু, তুমি কী তাহমিদের সম্পর্কে কিছু জানো?’

উপাশ থেকে আওয়াজ এলো, ‘কেমন জানি?’

‘মানে তার বিষয়ে, যেমন তার কী কেউ ছিল?’

‘কী বলছিস এসব? আর এমন কথা বলছিস কেন?’

‘তাহমিদের বিহেভিয়ার দেখে তাই মনে হয় আপু। আর তার ঘরে আমি কিছু মেয়েদের জিনিসও দেখতে পেয়েছি।’

‘কী বলছিস এসব?’

‘আচ্ছা তুমি আমার ভাইয়াকে প্রশ্ন করো তো। সে আর তাহমিদ তো ফ্রেন্ড আমার মনে হয়। নিশ্চয়ই সে জানে।’

‘আচ্ছা আমি উনাকে জিজ্ঞাস করব।’

‘আচ্ছা রাখি আপু।’

‘আচ্ছা শোন! ও কী তোর সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করেছে?’

‘না আপু তেমন না।’

‘তেমন না মানে? একটু আকটু করে?’

‘আরে না। তবে উনার ব্যবহার অদ্ভুদ লাগে আমার।’

‘কেমন?’

‘আচ্ছা পরে বলব। এখন রাখি।’

‘আচ্ছা। নিজের যত্ন নিবি।’

‘হুম তুমিও।’

দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। নাহ্ আজ আর এ গোপন থাকতে দেব না আমি। সব জানতে হবে আমাকে। এভাবে আমি এই ঘরে থাকতে পারব না। হয় আমায় জানতে দেবে, হয় সে নিজে জানাবে। নাহয় আমি এই ঘর ছেড়েই চলে যাব।
__________

‘আই লাভ ইউ ইফা! অনেক ভালোবাসি তোমাকে। সে প্রথম দিন থেকে। দেবে কী আমায় ভালোবাসার সুযোগ? একটু কী ভালোবাসবে?’

থমকে গেল ইফা। চমকে পেছন ফিরতেই এক ছেলেকে হাঁটু গেঁড়ে বসা অবস্থায় আবিষ্কার করল। চরম রা’গল সে। বলল, ‘এসব কী শাহিন?’

শাহিন নামের ছেলে টি বলে, ‘আ’ম সিরিয়াস ইফা। সত্যি তোমায় অনেক ভালোবাসি। ফিরিয়ে দিও না।’

‘দেখ শাহিন আমি অবশ্যই ফিরিয়ে দেব। উই আর জাস্ট ফ্রেন্ডস!’

‘বাট আমি মানি না।’

‘তাতে আমার কিছু যায় আসে না। ছিঃ তোমাকে ভালো বন্ধু ভেবেছিলাম। আর তুমি..’

‘দেখো ইফা আমি এত কথা শুনতে চাই না। হা নাকি না?’

‘না।’

‘কেন? কী নেই আমার মাঝে?’

ইফা প্রতুত্তরে কিছু না বলে হাঁটা ধরতেই শাহিন তার হাত ধরে ফেলে। ইফা রে’গে এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে বলল, ‘কী সমস্যা তোমার? এভাবে হাত ধরার মানে টা কী?’

‘আমার উত্তর চাই ইফা। কেন আমায় না করছো?’

‘আমি বিবাহিত শাহিন। শুনেছ? আমি বিবাহিত।’

‘কীহ্? কী বলছো এসব?’

‘যা বলছি সব সত্য!’

ইফা আবারো হাঁটা ধরতেই শাহিন বলল, ‘তাতে কী ইফা? তুমি কী ওর সাথে সুখী আছো? বলো?’

‘হ্যাঁ আছি।’

‘ইফা!!’

আবারো হাত ধরতে নিলেই দূরে সরে গেল সে। ছি’টকে নিচে পড়ে গেল। নাকে ব্যথা অনুভব করলো। সাথে হাত দিয়ে দেখতে পেল র’ক্ত!

ইফাও আওয়াজ শুনে থমকে পেছন ফিরতেই শাহিনকে মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কার করল। পাশে ইবনান দাঁড়িয়ে আছে। সে শাহিনের সামনে গিয়ে বলল, ‘কী রে? তোর লজ্জা নেই? বিবাহিত নারী কে নির্দ্বিধায় স্পর্শ করছিস?’

শাহিন উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘কে তুই? আমাকে ঘু’ষি মা’রার সাহস কোথায় পেলি? জানিস আমি কে?’

‘কেন তুই জানিস না তুই কে? আর সাহসে কথা কাকে বলছিস আমাকে? আরে ব্যটা চিনিস আমাকে? কম করে হলেও বয়সে পাঁচ বছরের বড় হবো তোর। আমার সাথে এভাবে কথা বলার স্পর্ধা?’

‘আরে তুই কোন খেতের মুলা রে যে তোকে ভয় পাব?’

ইফা চেঁচিয়ে বলল, ‘শাহিন স্টপ ইট!’

‘তুমি চুপ থাকো ইফা। ওর হয়ে কথা বলছো কেন?’

ইবনান রে’গে তার দিকে এগিয়ে যেতে নিলেই ইফা চটজলদি তার হাত ধরে থামিয়ে টে’নে টে’নে বলল, ‘ইবনান ভাইয়া কী করছেন? প্লীজ আসুন, চলুন এখান থেকে।’

‘ইফা ছা’ড় আমাকে। আজ একে মে’রেই ফেলব।’

‘ইবনান ভাই প্লীজ আমার কথা শুনুন। প্লীজ আসুন। নয়তো আমিই নিজের ক্ষ’তি করে ফেলব।’

ইবনানের রাগান্বিত মুখখানা নজরে আসতেই ইফা আরো ভড়কে গেল। কোনমতে টে’নে তাকে নির্জনে নিয়ে বলল, ‘এসব কী করতে যাচ্ছিলেন? যদি আপনাকে পুলিশে দিত?’

ইবনান রে’গে বলল, ‘সেই চিন্তা তোর আছে? তুই তো দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিস। আমার কথা ভাবছিস একবারো? আর কী সব ফ্রেন্ড বানালি যে ফ্রেন্ডের চোখেই দেখে না?’

ইফা মাথা নিচু করে বলল, ‘স্যরি ভাইয়া আর হবে না।’

ইবনান চোখ রাঙিয়ে বলল, ‘আমি তোর ভাইয়া?’

‘না না মানে..’

‘চুপ! চুপচাপ বাসায় যা৷ কোন কথা নয়। যা বলছি! আর হা কাল থেকে আমিই তোকে ভার্সিটি নিয়ে আসব। আমিই দিয়ে আসব।’

ইফা মাথা নাড়ে বোকার মতো।
__________

বদ্ধ চিলেকোঠার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। নিষ্পলক তাকিয়ে। আশাহত আমি। খুলব কীভাবে? ভে’ঙে ফেলব? না না এভাবে করলে সমস্যা হবে। তবে উপায়? চাবি টা কোথায় পাব? তার ঘরের আনাচে-কানাচে খুঁজেছি৷ কোন চাবি পাই নি এমন। হঠাৎ! মস্তিষ্ক কিছু একটা খেলে গেল। মনে পড়ল সেই চাবিটার কথা। হ্যাঁ সেই চাবী টা!! যেটা তাহমিদের ড্রয়ারে পেয়েছিলাম। সেটা নয়তো?

দ্রুত রুমের দিকে ছুটলাম। ড্রয়ার টাও তো তালাবদ্ধ। কী করব এখন? তবে বেশি বেগ পেতে হলো না আমাকে। তার টেবিলে বইয়ের চিঁপায় একটা চাবি পেতেই সেটা দিয়ে ড্রয়ার খুললাম। সেখান থেকে চাবি টা নিয়ে অতি দ্রুত ছাদে ছুটলাম। একবার দম নিয়ে আস্তে করে চাবি টা দিয়ে ট্রাই করতেই দরজা খুলে গেল। আকাশের চাঁদ পেলাম যেন।
রুমে ঢুকতেই থমকে গেলাম। কী এসব?
[চলবে.. ইন শা আল্লাহ্]