অনুরাগের ছোঁয়া পর্ব-২৬

0
499

#অনুরাগের ছোঁয়া
#নবনী-(লেখনীতে)
#পর্ব-২৬

—তোমার ধারনাও নেই জানপাখি এই বৃষ্টিভেজা শাড়িতে তোমাকে কী পরিমান আবেদনময়ী লাগছে।

—ছোঁয়া কোন কথা বলছে না চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।

ছোঁয়াকে চুপ করে থাকতে দেখে অনুরাগ আবার বলে উঠল,

—এমন করে আমার সামনে প্লিজ এসো না। ঠিক থাকতে পারি না আমি।নিজের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি।নিজেকে কেমন জানি পাগল পাগল লাগে।নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে আমার।তোমাকে কাছে পাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগে।

—এবারও ছোঁয়া কোন কথা বলল না।

অনুরাগ তার হাত দিয়ে ছোঁয়ার গোলাপি ঠোঁট গুলো ছুঁয়ে দেয়।ছোঁয়া মাথাটা কিছুটা ঝুঁকিয়ে রেখেছে।অনুরাগ ছোঁয়ার কোমড়ে স্লাইড করতে থাকে।ছোঁয়া তার হাত দিয়ে অনুরাগের শার্ট খামচে ধরে। অনুরাগ দেখে ছোঁয়ার গলায় ঘাড়ে পানি গুলো শিশির বিন্দুর ন্যায় চিকচিক করছে।অনুরাগ এগুলো দেখে যেনো নিজের উপর একদম লাগামহীন হয়ে গেলো।অনুরাগ আর এক মুহূর্ত দেরি না করে ছোঁয়ার গলায় তার মুখ ডুবায়। ছোঁয়া আবেশে চোখ গুলো বন্ধ করে ফেলে।অনুরাগ চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে ছোঁয়ার ঘাড়ে। ছোঁয়ার ভিতরে এক আলাদা অনুভূতি হচ্ছে।এক অজানা অনুভূতি যার নাম সে জানে না।ছোঁয়া বেশ লজ্জা পায়।সে অনুরাগকে ছাড়িয়ে সেখান থেকে চলে আসতে নিলে অনুরাগ তার হাত ধরে ফেলে। তারপর আবার তাকে নিজের কাছে আনে।এক হেঁচকা টান দিতেই ছোঁয়া আবার অনুরাগের কাছে চলে আসে।ছোঁয়ার পিঠটা একদম অনুরাগের বুকের কাছে।অনুরাগ আবার ছোঁয়াকে পেছন দিক দিয়ে জরিয়ে ধরে ছোঁয়ার ঘাড়ে তার মুখ ডুবায়।অনুরাগের হাতগুলো ছোঁয়ার পেটে -কোমড়ে বিচরণ করে চলছে।

অনুরাগ;;নিজের করতে চাই আমি তোমায়।তোমার ইচ্ছাতে,তোমার মতে।কাছে পেতে চাই আমি তোমায়।এতটাই কাছে যে যেখানে তুমি আমি নামক কোন দুই উক্তি থাকবে না।তুমি & আমি মিলে এক হয়ে যাব।এতটাই কাছে পেতে চাই আমি তোমায় যেখানে তোমার আমার মাঝে কোন দূরত্ব থাকবে না।একদম না! অনুরাগের রঙে তোমাকে রাঙাতে চাই।জানপাখি হবে কি আমার……?

তখনই আকাশ কাঁপিয়ে বিদ্যুৎ গর্জন করে উঠে সাথে সাথে ছোঁয়া অনুরাগের দিকে ঘুরে শক্ত করে অনুরাগকে জরিয়ে ধরে।অনুরাগও ছোঁয়াকে জরিয়ে ধরে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। অনুরাগ তার দুই হাত দিয়ে ছোঁয়ার গালে ধরে তারপর ফট করে ছোঁয়ার ঠোঁটের সাথে তার ঠোঁট মিশিয়ে দেয়।তবে ছোঁয়া এবার না করেনি,না ই অনুরাগকে কোন বাধা দিয়েছে।অনুরাগ বুজল যে ছোঁয়ার সম্মতি আছে।অনুরাগ যেনো ছোঁয়াকে আরো নিজের সাথে চেপে ধরে তার ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরে।

দুজন ভালোবাসার মানুষ এক হয়ে এই বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে আছে।দুজনেই ভিজে একাকার হয়ে গেছে।তবে বাইরে যেনো বৃষ্টি আরও ভয়ানক রূপ ধারণ করল।অনুরাগ ছোঁয়াকে ছেড়ে দাঁড়ায়। হাত দিয়ে তার সামনে আসা চুলগুলো পেছনে ঠেলে দেয়।কিন্তু এবার অনুরাগ ছোঁয়াকে সোজা তার কোলে তুলে নেয়।ছো্য়া তার দুই হাত দিয়ে অনুরাগের গলা জরিয়ে ধরে। অনুরাগ ছোঁয়াকে কোলে নিয়ে সোজা ঘরের ভিতর হাঁটা দেয়।রুমের ভিতর গিয়ে ছোঁয়াকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।তখনই ধপ করে সারা ঘরে অন্ধকার ছেয়ে যায়। রুমটাতে আবছা আলো এসে পরেছে। বাইরে যে বিদ্যুৎ চমক দিচ্ছে মাঝে মাঝে তার আলো এসে সারা ঘরকে ক্ষনিকের জন্য আলোকিত করে তুলছে।এ যেনো আলো আঁধারের এক অসম্ভব সুন্দর মিশ্রন।

অনুরাগ ছোঁয়াকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে তার দিকে ক্রমশ এগোতে থাকে।এখন ছোঁয়ার সাথে তার মাথা একদম ঠেকে আছে।ছোঁয়ার মাথা বালিশে ঠেকে গেলে অনুরাগ ছোঁয়ার দুপাশে হাত দিয়ে তার দিকে ঝুঁকে পরে।ছোঁয়ার কপালে অনুরাগ উষ্ণ চুমর উত্তাপ দিয়ে দেয়।তারপর আবার ছোঁয়ার ঠোঁট গুলো আঁকড়ে ধরে।আজ যেনো দুজনের মাঝে কোন বাধা নেই। অনুরাগ ছোঁয়ার উপর থেকে ভেজা শাড়ির আঁচলটা ফেলে দেয়।নিজের গাঁ থেকে সাদা শার্টটা ফেলে দিয়ে আবার ছোঁয়ার কোমড় ধরে নিজের দেহের সাথে ছোঁয়ার দেহটা মিলিয়ে দেয়।তারপর ডুব দেয় ছোঁয়ার মাঝে।আজ অনুরাগ তার ছোঁয়াতে মঘ্ন।সে আজ ছোঁয়াকে নিজের করে পেয়েছে। ছোঁয়ার চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে। অনুরাগের শূন্য পিঠটা ছোঁয়া খামচে ধরে। অনুরাগ আজ তার প্রিয়তমাকে নিজের ভালো বাসার উষ্ণতার চাদরে মুড়িয়ে নিয়েছে।আজকের এই বৃষ্টি ভেজা দিনটা তাদের ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।আর এভাবেই একে অপরের মাঝে পরিপূর্ণতা পেলো দুই ভালোবাসার মানুষ। আজ ছোঁয়া সম্পূর্ণ রূপেয়ই তার অনুরাগের আর অনুরাগ তার ছোঁয়ার।অনুরাগ ছোঁয়া মিলে এক, তাদের ভালোবাসার আজ এক নতুন অধ্যায় শুরু ❤️

কেটে গেছে বেশ কয়েক মাস।এই কয়েক মাসে রিয়া আর আবিরের সম্পর্কটাও আর পাঁচটা স্বামী স্ত্রীর মতন স্বাভাবিক হয়ে গেছে।আবির এখন রিয়াকে ছাড়া কিছুই বুঝে না।সবসময় সে রিয়াকে চোখে হারায়।রিয়া ভাবতেই পারেনি যে আবির তাকে এত সহজে মেনে নিবে।যেদিন আবির তাকে সম্পূর্ন রূপে নিজের স্ত্রীর অধিকার দিয়েছিল সেদিন রিয়ার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান নারী মনে হয়েছিল।রিয়া আর আবির এখন হ্যাপি কাপলদের মধ্যে একজন। রিয়া এখন তিন মাসের প্যাগনেন্ট।



#চলবে?