অন্তরালের অনুরাগ পর্ব-০৩

0
951

গল্পঃ #অন্তরালের_অনুরাগ
লেখনীতেঃ #নাহিদা_নীলা
#পর্বঃ ০৩

মধ্যরাতের অর্ধচন্দ্রের স্নিগ্ধ আলোতে চিলেকোঠার দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছে সাদিদ। সন্ধ্যার পর থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে বাহিরে কাটিয়ে দিয়েছে। যেখানে দুচোখ গিয়েছে সেদিকেই গিয়েছে। সবাই চিন্তিত হয়ে বারবার ফোন দিতে পারে, তাই আগেই শাহেদকে মেসেজে ইনফর্ম করে দিয়েছে। তাই সবাইও চিন্তামুক্ত, কাজে ব্যস্ত আছে বিধায় কেউ আর তাকে বিরক্ত করেনি। কিন্তু পরে আবার সাদিদ নিজেই ফোন বন্ধ করে দিয়েছিল। সে একটু একা থাকতে চায়। বুকের জমিয়ে রাখা কষ্টগুলো তাকে শ্বাস নিতে দিচ্ছে না। দমবন্ধ হয়ে আসছে তার। তাই এই একাকিত্বকে সঙ্গী করে খানিকটা পথ চলা।
মাত্রই সে বাড়িতে এসেছে। গেটে দারোয়ানকে ভালোভাবে বুঝিয়ে, কাউকে না জানতে দিয়েই রুমে ফিরেছে। রুমে এসেও তার যেন শান্তি নেই। দমবন্ধ লাগছিল তাই চিলেকোঠায় চলে এসেছে।
হাতে তার জ্বলন্ত একটা সিগারেট। আসার সময়ই বাহির থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা নিয়ে এসেছে। সিগারেট খাওয়া তার স্বভাবে নেই। কিন্তু আজ ইচ্ছে করছে। যদি এই ধোঁয়ায় সবার কষ্ট ঘুচে যেতে পারে তবে তার কেনো নয়?
তাই কষ্ট মোচনের জন্য নিকোটিনের ধোঁয়াকে সাময়িক সঙ্গী বানাতে তার ইচ্ছে করছে।
কিন্তু অভ্যাস না থাকায় প্রথম টানেই কাশি শুরু হলো। ভিতর মনে হচ্ছে আগুনে জ্বলে যাচ্ছে। তারপরও সাদিদ থামতে চাইল না। এই সাময়িক কষ্ট তার ভিতরে বহমান কষ্টের তুলনায় কিছুই নয়।
যখনই সে সিগারেটে দ্বিতীয় টান দিতে যাবে, তখনই হুট করে কেউ এসে তার ঠোঁট থেকে সিগারেটটা নিয়ে নিলো।
সাদিদ অবাক দৃষ্টিতে উপরে তাকাতেই নীলাকে রাগীচোখে তাকিয়ে থাকতে দেখল!

—- ” তুমি? ”

—- ” আর কাকে আশা করছিলেন? ”

—- ” এতরাতে ছাদে কি করো? ”

—- ” সেটা আপনার না জানলেও হবে। এতটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার না, এমনিতেই এসেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এসে খারাপ হলো না। নতুবা এমন রুপ কিভাবে দেখতাম? ”

সাদিদ মলিন হাসল। কিন্তু কোনো প্রতিউত্তর করল না। নীলা-ই আবার বলল,

—- ” সিগারেট খান কেন? ”

—- ” অধিকার দেখাচ্ছ কেন? ”

নীলার এতক্ষণের অধিকারবোধের পাল্লাটা এবার খানিকটা নিভে আসলো। তারপরও সাদিদকে নিজের ইতস্ততবোধ বুঝতে না দিয়ে কাঠখোট্টা গলায় বলে উঠল,

—- ” অধিকার না। এটা ভালো জিনিস না, তাই প্রশ্ন করেছি। এখন বলেন সিগারেট কেন খান? ”

—- ” কখনও খাইনি, আজই প্রথম টান দিয়েছিলাম। ”

—- ” কেন? আজ নতুন কি হলো? যে সিগারেট খেয়ে উৎসব পালন করছেন? ”

নীলার এমন আচরণে সাদিদের এবার হাসি পেল। হুট করেই যেন বুকের সব কষ্টগুলো উধাও হলো। মনের আকাশে হাজারও প্রজাপতির মেলা বসল। মনে যেন আবারও বাসা বাঁধলো ভালোবাসাময় এক সুখস্মৃতি। নীলার সামান্য অধিকারবোধ তাকে কতটা তৃপ্তি দিচ্ছে। কতটা সুখ তার অনুভব হচ্ছে, সামনে দাড়ানো এই অবুঝ মেয়েটা যদি সেটা আন্দাজ করতে পারত!
সাদিদ মুখে মৃদু হাসি নিয়ে এবার উঠে দাড়াল।
সাদিদ উঠে দাড়াতেই নীলা দুইকদম পিছিয়ে গেল। এতক্ষণ সাদিদের হাতে সিগারেট দেখে রাগে ফটর-ফটর করলেও এখন সাদিদকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে তার শরীর কাঁপছে।
সাদিদ এগিয়ে এসে নীলার মুখোমুখি দাড়াল। নীলার কাচুমাচু করে রাখা মুখের দিকে তাকিয়ে তার আড়ালে সে নিঃশব্দে মৃদু হাসল। তারপর গম্ভীরকণ্ঠে বলে উঠল,

—- ” আমি সিগারেট বা অন্যকিছু খাই তাতে তোমার কি? তুমি এতো অধিকারবোধ দেখাচ্ছ কেন? ”

সাদিদের এমন গম্ভীর কণ্ঠে নীলার চোখ মুহূর্তেই ছলছল করে উঠল। সে নিজেও বুঝতে পারছে না তার এই অধিকারবোধের কারণ। সে ইচ্ছে করেও করছে না, কেন যেন অদৃশ্য কিছু নীলাকে এসব করতে বাধ্য করছে।
নীলা শুধু এইটুকু বুঝতে পারছে সাদিদের ক্ষতি হবে, এমন কিছু সে সহ্য করতে পারবে না।
কিন্তু কেন পারবে না? কেন এমন হচ্ছে? সে তো সাদিদকে ঘৃণা করে। পৃথিবীতে যদি নীলা কাউকে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করে তার নাম হবে সাদিদ। তাহলে সে কেন তার ক্ষতি দেখতে পারছে না।

নীলা মাথা নিচু করে অনবরত নখ খুঁটে যাচ্ছে। সাদিদকে দেওয়ার মতো প্রশ্নের উত্তর নীলার কাছে নেই।
সাদিদ নীলার ভাবনার মধ্যেই তারদিকে আরেকটু এগিয়ে আসলো।
তার কপালে পড়ে থাকা চুলগুলোর উপর সাদিদ হালকা ফুঁ দিতেই নীলা কেঁপে উঠল। আর সাদিদকে নিজের এত কাছে এগিয়ে আসতে দেখে চোখজোড়া বড় বড় করে পিছিয়ে যেতে চাইল। কিন্তু পারল না।
কেননা ছাদের রেলিং-এ তার পিঠ ঠেকে গেছে। সাদিদ নীলার মুখভঙ্গির দিকে তাকিয়ে ক্ষীণস্বরে বলে উঠল,

—- ” অতিতের স্মৃতি মুছে ফেলা যায় না? ”

নীলার এতক্ষণের ভয়ার্ত চেহারাটা নিমেষেই ঘায়েব হলো। চোখে-মুখে ফুটে উঠল একরাশ রাগ-ক্ষোভ-ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ।
নীলা ধাক্কা মেরে সাদিদকে নিজের কাছ থেকে দূরে সরালো। তারপর দাঁতে দাঁত চেপে রাগীস্বরে বলল,

—- ” কোন মুখে এই কথা বলেন? মুছে ফেলা কি এতটা সোজা? আপনি কি আমার জন্য সেই পথ রেখেছিলেন? ছোট্ট একটা মেয়ের সাথে…

নীলা আর নিজেকে সামলিয়ে রাখতে পারল না। মুখ চেপে কান্না আটকাতে চাইল।
সাদিদ এতক্ষণের সবকিছু ভুলে নীলার কাছে এগিয়ে আসলো। নীলাকে কোনোকিছু বুঝতে না দিয়েই, হাতে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বুকে নিয়ে আসলো। সাদিদ শক্ত করে নীলার মাথাটা নিজের বুকে চেপে ধরল।
নীলার কান্না মুহূর্তেই থেমে গেল। কিন্তু শরীর তাী ভীষণভাবে কাঁপছে। সাদিদের বুকের টিপটিপ আওয়াজটা নীলা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে।
সে সাদিদের বুক থেকে সরে আসতে চাইছে, কিন্তু তার হাত-পা পুরো অসার হয়ে গেছে। বিন্দুমাত্র নড়চড় করতে পারছে না।
সাদিদ নীলাকে বুকে চেপে রেখেই বলল,

—- ” আমি জানি তোমার জন্য ঘটনাটা ভুলে যাওয়া এতটা সোজা নয়। তোমার বয়স তখন নিতান্তই কম ছিল। এই বয়সের মেয়েরা এমনকিছু সহজে নিতে পারবে না। কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কি? কেন অযথা নিজের মনে রাগ পুষে রেখে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছ? ”

নীলা আবারও সাদিদকে জোরে ধাক্কা দিলো। আঙ্গুল উচিয়ে ধমকির স্বরে বলল,

—- ” খবরদার আমার কাছে আসার চেষ্টা করেছেন তো। তখন ছোট ছিলাম বলে কাউকে কিছু বলতে পারিনি। এখন আপনাকে ছাড় দিবো না। একদম আমার কাছাকাছি আসবেন না। ”

—- ” কেন? কাছে আসলে কি হবে? ”

সাদিদের ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি দেখে নীলা হতবিহ্বল হয়ে গেল। মাত্রই না সাদিদ ধরা গলায় কথা বলছিল, হঠাৎ এত পরিবর্তন কিভাবে?
নীলার অবাক চাহনির মধ্যেই সাদিদ ঠোঁট কামড়ে নীলার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। নীলার একদম কাছে এসে, সে তাকে রেলিঙের সাথে চেপে ধরে বাঁকা হেসেই বলে উঠল,

—- ” কাছে আসলে কি হবে? নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে পারবে না? আমাতে মিশে যাবে? সেদিন যেটা অপূর্ণ ছিল এখন সেটা পূর্ণ হবে? ”

সাদিদের কন্ঠে এমন ঘা ছমছমে কথা শুনে নীলার ভয়ে অবস্থা কাহিল। ক্ষেপা বাগিনী থেকে সে যেন এখন মিনি বিড়ালের মতো চুপসে গেছে।
নীলার দৃষ্টি এলেমেলো দেখে সাদিদ হেসে দিয়ে পিছিয়ে আসলো।
নীলা উল্টো ঘুরে লম্বা করে বার কয়েক শ্বাস টানল। দমটা যেন তার গলায় এসে আটকে গিয়েছিল।
সাদিদ এবার খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠল,

—- ” নিচে যাও। রাত অনেক হয়েছে। ”

নীলা আর একমুহূর্তও সেখানে দাড়ালো না। ছাড়া পেয়ে ছাদ থেকে নামার জন্য সামনে বড় বড় পা ফেলল।
কিন্তু সিঁড়ির কাছে গিয়ে আবারও থেমে গেল। এতসব ঘটে গেল যে, নীলার আসল কাজই বাকি রয়ে গেল।
এটা না জানতে পারলে যে নীলা কিছুতেই শান্তি পাবে না। তাই এতরাত অব্দি জেগে থেকে সে সাদিদের জন্য অপেক্ষা করেছে।

সাদিদ তখন ঐভাবে চলে যাবার পর নীলা আর স্থির থাকতে পারেনি। তার পুরোপুরি পাগল হয়ে যাবার অবস্থা। না পেরে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সাদিদের মুখোমুখি হবার। বুকে সাহস সঞ্চয় করে তার রুম অব্দি গিয়েছিল। কিন্তু নীলা হতাশ হয়েছে।
এরপর থেকে রুম, বসার ঘর, সাদিদের রুমের সামনে হাটাহাটি করেছে। কিন্তু সাদিদের কোনো খোঁজ-খবর নেই।
ডিনারের টাইমেও তাকে না পেয়ে নীলার মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়। এত অস্থিরতা নিয়ে কি থাকা যায়?
এই লোকটা বোধহয় জন্মই নিয়েছে নীলাকে অস্থিরতায় মেরে ফেলার জন্য।
পুরোটা কৈশোর নীলা এই অস্থিরতায় কাটিয়েছে। এখনও কি ছেলেটা তাকে শান্তি দিবে না? নীলা এসব আর কত সহ্য করবে!
নীলা পিছনে ফিরে দাড়াল। বুকটা তার আবারও ধক করে উঠল।

সাদিদ এখনও নীলার দিকেই তাকিয়ে আছে। তার দৃষ্টি এমন ঘোলাটে কেন?
দুইজনই একে অপরের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে। কিন্তু কারও মুখে কোনো শব্দ নেই। তাদের শব্দহীন অব্যক্ত কথাগুলো যেন, মধ্যরাতটাকে আরও ছমছমে করে দিয়েছে। নীলা নিজের জামা খামচে ধরে সাহস নিয়ে কয়েককদম এগিয়ে আসলো। সাদিদের দিকে না তাকিয়েই মাথা নিচু করে ইতস্ততবোধ কন্ঠে বলল,

—- ” আপনি তখন কান্না কেন করেছিলেন? ”

—- ” কান্না? আর আমি! ”

—- ” আমি আপনার চোখে পানি দেখেছি। ”

—- ” গাল বেয়ে পড়তে দেখেছ? ”

—- ” সেটা দেখিনি কিন্তু আপনার আটকে রাখা অশ্রুজলগুলো আমার চোখের আড়াল হয়নি। আমি বুঝতে পেরেছি। ”

—- ” তাই? তুমি আমার চোখের ভাষা আধোও বুঝ? ”

নীলা এবার মাথা তুলে চমকিত দৃষ্টিতে সাদিদের দিকে তাকালো।
সে এতক্ষণ কি করছিল, ভাবতেই নিজের উপরই তার বিরক্তি আসছে। ইদানিং এই ছেলেটার জন্য নীলার সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়। ভেবে রাখা কোনো কাজও নীলা ঠিকভাবে করতে পারে না।
কিন্তু সাদিদের দৃষ্টি গভীর। সে একদৃষ্টিতে নীলার মুখপানেই চেয়ে আছে। নীলা কথার উত্তর না দিতে পেরে একপা একপা করে পিছিয়ে যেতে লাগল।
সাদিদ আচমকা তাকে ডেকে উঠল,

—- ” নীলাঅঞ্জনা? ”

নীলার পা-জোড়া থেমে গেল। সাথে সাথে নীলাও। সাদিদ তাকে এই প্রথম নাম সম্বোধন করেছে।
বিগত এতগুলো বছরে সাদিদের থেকে সে একবারও এই ডাকটা শুনেনি। আজই প্রথম আর আজই নীলা এর ওজন নিতে পারছে না। নীলার শ্বাস ক্রমশ ঘন হয়ে আসছে।

সাদিদ এগিয়ে এসে নীলার পিছনে দাড়াল। নীলা না ফিরেই বুঝতে পারছে সাদিদ তার খুব কাছে।
সাদিদের সংস্পর্শে এসে নীলার শরীর আবারও মৃদু কাঁপছে। সামনে এগিয়ে যাবারও পর্যাপ্ত শক্তি পাচ্ছে না।
সাদিদ নীলার কম্পনরত শরীরের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে মৃদু হাসল। তারপর বলল,

—- ” যেসব অতিত কষ্ট দেয়, সেসব অতিত মনে রেখে কি লাভ? ”

সাদিদ থামল। তার জন্য বলা যতটা সহজ নীলার পক্ষে ভুলে যাওয়া ততটা সহজ নয়। সাদিদ নিজেও সেটা বুঝতে পারে৷ তাইতো নীলাকে জোর করতে পারে না। ভালোবাসার অধিকার খাটাতে পারে না। সাদিদ আবারও অপরাধী কন্ঠে বলে উঠল,

—- ” প্লিজ, ভুলে যাও একবার। ক্ষমা করো একবার। নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত আমি। নিজের করা ভুল শুধরিয়ে নেওয়ার একটাবার সুযোগ দাও। ”

নীলা যেন আরও তেতে উঠল। মুখ না ফিরিয়েই বলে উঠল,

—- ” কখনোও না। আপনি আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছেন। আমি আপনাকে কখনও ক্ষমা করতে পারব না। আমি আপনাকে ঘৃণা করি। ”

—- ” সত্যিই করো? মন থেকে করো? বুকে কষ্ট হচ্ছে না এই কথা বলতে? ”

নীলা থমকে গেল। তার সত্যিই বুকে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করছে।
কিন্তু সাদিদ সেটা জানল কি করে? নীলার শরীরের ব্যাথা সে কিভাবে বুঝতে পারল!
নীলার কন্ঠস্বর কাঁপছে। সে কাঁপা গলায় বলার চেষ্টা করল,

—- ” আ..মি আপনা..কে কখনও ক্ষমা ক..রব না। ”

বলেই নীলা দৌড়ে ছাদ থেকে নিচে নেমে গেল। আর একটু সাদিদের কাছে থাকলে, তার হয়তো শ্বাসকষ্টই শুরু হয়ে যেত।
নীলা দৃষ্টির বাহিরে যেতেই সাদিদ হেসে ফেলল। যেন সে খুব মজা পেয়েছে।
সাদিদ নীলার গমনপথের দিকে তাকিয়ে, ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়েই বলল।

—- ” প্রাণপাখি তুমি এখনও বড্ড অবুঝ। কিন্তু আমিও যে হার মানবো না। বরং তোমাকে হার মানতে হবে। আমি তোমাকে হারিয়েই ছাড়ব।
আর কষ্ট পেতে দেব না। এখন যে কষ্ট দূর করার সময়। এখন আর কোনো বাধা নেই। তাই পাখি তোমাকে যে এবার জেদ ছাড়তেই হবে। আমার ভালোবাসা গ্রহণ করতেই হবে। আমার প্রবল ভালোবাসায় এবার তোমার রাগ-ক্ষোভ, কষ্ট সব ভুলিয়ে দেব। আমার ভালোবাসার খাঁচায় ধরা দেবার সময় হয়েছে পাখি, এবার আর ছাড়ছি না। ”

আপনমনে বলেই সাদিদ আবারও হাসল। তারপর নিজেও নিচে যাবার জন্য পা বাড়ালো।
এখন যে আর কষ্ট নেই। পাখিটাকে বুকে নিয়ে তার সমস্ত কষ্ট যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সুখের আনন্দে তার বুকটা ভরে উঠেছে।

___________________

গায়ে হলুদের আয়োজনে বাড়ির প্রতিটি সদস্য ব্যস্ত। কারও দম ফেলবার বিন্দুমাত্র অবসর নেই। অথচ বাড়ির একজন দিব্বি টই-টই করছে। করবে নাই বা কেন?
সদ্য ক্লাস এইটের গন্ডি পেরিয়ে নাইনে পদার্পণ করা কোনো মেয়ে বড়দের সাথে কাজে হাত লাগাতে চাইবে না। আর সেটাও যদি নীলার মতো চঞ্চল কিশোরী হয় তাহলে যে কথাই নেই।

—- ” এই মেয়ে এত দৌড়াদৌড়ি করে না। ব্যাথা পাবি তো। ”

—- ” আরে ছোট ফুফি পাব না। স্কুলে এমন বহুত দৌড়াদৌড়ি করি। ”

—- ” আচ্ছা স্কুলে করিস। এখন একটু স্থির হয়ে বস। ছেলের বাড়ি থেকে এখনই লোকজন চলে আসবে। ”

—- ” সত্যিই? কখন, আমার যে আর তর সইছে না। সবকয়টাকে রঙের ভূত বানাবো। ”

—- ” এই, একদম না। সবগুলোর ছাল তুলে ফেলব এমন কিছু করলে। ”

নীলা ছোট ফুফির কথায় কুটিল হাসল। তারপর বিনাবাক্য তার দলের কাছে এগিয়ে গেল।

—- ” বৃষ্টি কয় পেকেট এনেছিস? ”

—- ” আপুনি মা টাকা দেয়নি। বাবার পকেট থেকে চুরি করেছি। যা পেয়েছি সবগুলো দিয়ে নিয়ে এসেছি। ”

—- ” এই না হলে আমার বোন। শান্ত বালতি, মগ রেডি? ”

—- ” দোস্ত বাড়ির সব জগসুদ্ধ হাজির। ”

বলেই সে হাসল। নীলা, বৃষ্টিসহ বাকি উঠতি বয়সী সব মেয়েগুলোই হাসছে। আজ যে বিয়ে বাড়ি রঙের বাড়ি হয়ে যাবে, এটা তারা নিশ্চিত করেছে। আর এইজন্যই তাদের এতো উল্লাস।

.

বরপক্ষের গাড়ি পেন্ডেলের সামনে আসতেই তানবীর ফিচেল গলায় বলল,

—- ” বন্ধু, শাহেদ ভাইয়ের শালি-টালি আছে নাকি? ”

সাদিদ হাসল। সে জানে তার বন্ধু কোন উদ্দেশ্য এমনটা বলে যাচ্ছে।
সে গাড়ি থেকে নামতে নামতে স্বাভাবিক গলায় বলল,

—- ” থাকলেও তোর লেভেলের না। শুনেছিলাম পিচ্চি একটা শালিকা নাকি আছে। ক্লাস এইট-নাইন হবে হয়তো। ”

—- ” ধ্যাত! মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল। ”

বলেই তানবীর হতাশার একটা নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর একটু পরেই দ্বিগুণ উৎসাহে বলে উঠল,

—- ” সমস্যা নেই ভাই। আজকালকার মেয়েদের গঠন বেশ উন্নত। কয়েকদিন সময় দিলেই পুরো যুবতী বনে যাবে। ”

বলেই তানবীর ঠোঁট বাকিয়ে দুষ্টু হাসল। সাদিদ জোরে তানবীরের পিঠে চাপড় লাগিয়ে বলে উঠল,

—- ” তুই আর শুধরাইলি না। এই বয়সেই তোর এত মেয়ে লাগে? ”

—- ” দোস্ত তোমরা বুঝবা কি? তোমরা যে সাধুসন্ন্যাসী। আর সাধুরা এসব অমৃতের স্বাদ বুঝে না। কয়েকদিন যেমন লাগাতার কাচ্চি ভালোলাগেনা, মেয়েরাও হচ্ছে সেইরকম। উল্টিয়ে পাল্টিয়ে চিকেন-কাচ্চির মজা নেওয়া লাগে। হেব্বি টেস্ট। ”

বলেই তানবীর আবারও হাসল। কিন্তু এবার সাদিদের সত্যিই বিরক্ত লাগছে। তানবীর সবদিক দিয়েই ভালো। শুধু তার এই মেয়ে বিষয়ক বদঅভ্যসটা সাদিদের অসহ্য লাগে। বহুত বলেও লাভ হয়নি।
তাই সে আর কিছু বলল না। বাকি সবাইকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল।
হঠাৎ তানবীরের লুতুপুতু মার্কা গার্লফ্রেন্ডের কল আসতেই, সে তাদের থেকে পিছনে পড়ে গেল।
সাদিদরা সবাই গেট পেড়িয়ে এপার্টমেন্টের ভিতরে আসতেই, তাদের উপর হরেক রঙের বহর পড়ল।
সবার গায়ের বাসন্তী-সবুজের পাঞ্জাবিগুলো ভিন্ন ভিন্ন রঙে ছেয়ে গেল।
সাদিদসহ সবাই কেবল চোখ বড় বড় করে একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। বিষয়টা তাদের মাথার উপর দিয়ে গেছে।
হঠাৎ একঝাঁক তরুণীর আগমনে তাদের চমকে ভাটা পড়ে।

—- ” রঙের বাড়িতে শুভেচ্ছা বেয়াইসাব। ”

বরপক্ষের এবার বিষয়টা বুঝে আসলো। গ্রামে এই জিনিসটা প্রায়ই হয়। কিন্তু শহুরে বিয়েগুলোতে এইসব রং মাখামাখি এখন নেই বললেই চলে। তাই নীলাদের এমন রঙের খেলায়, বাকি সবাইও সব ভুলে কনেপক্ষকে রঙ লাগাতে ব্যস্ত হয়ে গেল।
এতক্ষণের সবকিছু ভুলে তারা বিষয়টা এবার মজার ছলে নিয়ে নিয়েছে। তাই আনন্দ – হইহট্টগোল একটা পরিবেশে দুই পক্ষ রং মাখামাখিতে ব্যস্ত আছে।

সবার হাতে আবির আর ভিন্ন রঙের পানি থাকলেও সাদিদ হাতশূন্য অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। দৃষ্টি তার একদিকে স্থির। ছোট্ট একটা মেয়ে গোলজামা টাইপের কিছু একটা পরে, ওড়নাটা তার কোমড়ে গিট দিয়ে রেখেছে। হেসে হেসে সবাইকে নিয়ে বরপক্ষকে রঙে মাখাচ্ছে।
সাদিদ মেয়েটার বয়স আন্দাজ করতে পাড়ছে না। একেবারে কৈশোর বা যুবতী কিছুই বলা যায় না। এই দুইয়ের মধ্যেস্থলেই সে মেয়েটাকে এনে দাড় করিয়েছে।
শরীরের গঠনগুলোও এমনটাই বলছে।
প্রাপ্ত বয়সের মেয়েলি ভাঁজগুলো এখনও তার শরীরে পড়েনি। ভিজে জামাতে যেটা সাদিদের চোখে স্পষ্ট।
সাদিদ এতক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে সেই কন্যাকে দেখলেও আচমকা তার হাতমুঠো হয়ে গেল।
হাতের রগগুলো স্পষ্ট হতে লাগল। তার চোখসহ মুখের বর্ণ লাল হতেই সে মেয়েটার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল।

—- ” বাসার ভিতরে যাও। ”

আচমকা কারও এমন আদেশ পূর্ণ কথাতে নীলা চমকে তারদিকে তাকালো। কিন্তু সামনের লোকটিকে চিনতে না পেরে, তার কপাল কুঁচকে এলো। নীলা কুঁচকানো কপাল নিয়েই বলল,

—- ” আপনি কি আমাকে বলছেন? ”

সাদিদ আশেপাশে একবার তাকালো। দু’পক্ষ মিলে বেশ অনেকজনই এখানে উপস্থিত। কিন্তু তাদের কারও দৃষ্টি এদিকে নেই। সে নীলার দিকে তাকিয়ে আবারও গম্ভীরস্বরে বলে উঠল,

—- ” তোমাকেই বলেছি। সবাইকে নিয়ে ভিতরে যাও। সর্ব প্রথম শুকনো জামা পরবে, তারপর অন্য কিছু। ”

নীলা বেশ বিরক্ত হলো। এমন করার কোনো মানে হচ্ছে? নীলারও রাগ উঠল সাদিদের কথাতো শুনলোই না। বরং আরও দ্বিগুণ উৎসাহে সামনে এগিয়ে যেতে নিলেই সাদিদ তার হাতটেনে ধরে।

নীলা বিস্ফোরিত চোখে সাদিদের ধরে রাখা হাতের দিকে তাকালো।
এই ছেলের সাহস দেখে সে প্রচন্ড অবাক। চেনাপরিচয় ছাড়া এতগুলো মানুষের সামনে নীলার হাত চেপে ধরেছে!
নীলা দাঁত কিড়মিড়িয়ে রাগী গলায় বলল,

—- ” আপনার সাহসতো কম না! আপনি আমার হাত টেনে ধরেছেন? ছাড়ুন বলছি। ”

—- ” প্লিজ ভিতরে যাও। জামা ভিজে আছে তোমার, দেখতে খুব খারাপ লাগছে। ”

নীলার রাগ যেন এখন আরও বেড়ে গেল। নীলার মাথায় যখনই শরীরের বিষয়টা আসলো, সে সাদিদের দিকে ঘৃণাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। কিন্তু সাদিদ যে তার ভালোর জন্য কথাটা বলেছে সেদিকে তার বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই।
রাগ তাকে পুরোপুরি অন্ধ করে দিয়েছে। সে ধরেই নিয়েছে সাদিদ এতক্ষণ তার শরীর লক্ষ্য করেছে। যার জন্য তার রাগটা আরও বেড়ে গেল।
নীলার এমন রাগী দৃষ্টির মধ্যেই সাদিদের নজর তানবীরের দিকে পড়ল। আর মুহূর্তেই সাদিদের মুখে অন্ধকার নেমে এলো।
তানবীর পুরো মেয়েবাজ। কিসব রস-কস মিশিয়ে কথা বলে, যে মেয়েরা তার জালে অনায়াসে আটকা পড়ে।
আর নীলাকে এইমুহূর্তে সাদিদের কাছে যতটা আকর্ষণীয় লাগছে, তানবীর দেখলে কি হবে এইটা নিয়েই সাদিদ চিন্তিত।
বন্ধুকে বিশ্বাস করলেও কেন যেন নীলাকে নিয়ে রিস্ক নিতে বুক কাঁপছে। তানবীর যত এগিয়ে আসছে সাদিদের দৃষ্টি তত ভয়ার্ত হচ্ছে।
নীলা রাগীস্বরে আরও কিছু বলবে সেই সুযোগটা সাদিদ তাকে দিলো না।

সবাই দুষ্টুমিতে এতটা ব্যস্ত সাদিদ যে নীলার মুখ চেপে ধরেছে সেদিকে কারও খেয়াল নেই।
নীলা ছুটাছুটি করার চেষ্টা করলেও সাদিদ তাকে ছাড়ল না। মুখ চেপে ধরে সবার আড়ালে নিয়ে যেতে লাগল।

.

নীলাদের এপার্টমেন্টের নিচ তলায় গাড়ি পার্কিং এর জন্য জায়গা আছে। সবার গাড়ি নেই যে কয়েকজনের আছে, তারাই গাড়িগুলো রাখে।
বিকেল টাইম হওয়াতে সবাই মোটামোটি বাহিরে, কয়েকটা গাড়ি শুধু রাখা আছে।
সাদিদ নীলাকে মুখে চেপে ধরে, টেনে এনে পার্কিং লনে নিয়ে আসলো। মুখ ছাড়া পেতেই নীলা ক্রমাগত হাঁপাতে লাগল। সে ভেবে নিয়েছিল এই ছেলে তাকে আজ মেরেই ফেলবে।
সাদিদ নীলার দিকে এগিয়ে আসতে নিলেই নীলা চিৎকার শুরু করল। সাদিদ আচমকা নীলার এমন করাতে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল।
পরমুহূর্তেই কাছে এসে আবারও নীলার মুখ চেপে ধরল। নীলা এতটাই রেগে গেছে যে, মুখ দিয়ে শব্দ করতে না পেরে সাদিদের হাতে কামড় বসালো। সাদিদ যেই না ব্যাথা পেয়ে হাত সরিয়েছে, নীলা আবারও চিৎকার শুরু করল। এবং সাদিদকে ছাড়ানোর জন্য হাত দিয়ে তার বুকে ধাক্কা দিতে লাগল।

সাদিদ শুধু নীলাকে একটু শান্ত করতে চাইছে। কিন্তু নীলা তাকে সেই সুযোগটাই দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় যদি সাদিদ তাকে ছাড়ে, নির্ঘাত এই মেয়ে চিল্লিয়ে পুরো বাড়ি গরম করবে।
এতটুকু সাদিদের আর বুঝার বাকি নেই। তাই সে নিজের সবটুকু দিয়ে চাইছে নীলাকে শান্তভাবে সবটা বুঝাতে।
নীলা আবারও চিৎকার করতে শুরু করতেই, সাদিদ তার শরীরের ওড়নার গিট খোলে সেটা হাতে নিলো। এবং মুহূর্তের মধ্যে নীলার মুখ ওড়না দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিলো।
নীলা পুরো কিংকর্তব্যবিমুঢ়। সে চোখ বড়বড় করে সাদিদের দিকে তাকিয়ে আছে।
সাদিদ এখন তাকে সবটা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলবে এমন মনোবাসনা করল।

—- ” একদম চেচামেচি করবে…

সাদিদ আর কিছু বলতে পারল না৷ তার দৃষ্টি নীলার শরীরে চলে গিয়েছে। সাদিদ এতক্ষণ নীলার দুই কাঁধে শক্ত করে হাত চেপে ধরে ছিল। ধীরে ধীরে তার হাতদুটো হালকা হতে লাগল।
নীলা বয়সে ছোট হলেও সাদিদ প্রাপ্ত বয়স্ক। ছেলেদের আকর্ষণ করতে পারে, এমন গঠন নীলার শরীরে এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু তারপরও সাদিদ যেন নীলার এই শুকনো শরীরের মধ্যেই নেশা খোঁজে পাচ্ছে।
ছোটবেলা থেকে এই যুবক বয়স পর্যন্ত, মেয়েদের শরীরের উপর তার কখনও লোভ হয়নি। বরং সে অনৈতিকভাবে এসব কাজ করাকে বড্ড ঘৃণা করে। কিন্তু আজ নিজেই নেশাগ্রস্তের মতো নীলার দিকে তাকিয়ে আছে। সাদিদের গলা শুকিয়ে আসছে।
ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে দেওয়ার ফলে নীলার বুক এখন উন্মুক্ত। ওড়না না থাকায় সাদিদের চোখদুটোতে না চাইতেও, বারবার ঘোর লেগে যাচ্ছে। এবং ক্রমশ সেই নেশায় সে আসক্ত হচ্ছে। নীলা সাদিদের থেকে ছুটার জন্য মোচড়া-মুচড়ি শুরু করতেই, সাদিদ নীলাকে গাড়ির সাথে চেপে ধরল। নীলা কিছু বুঝে উঠার আগেই সাদিদ নীলার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।
ছোট নীলা এসব স্পর্শের সাথে পরিচিত নয়। তাই তার পুরো শরীর শিরশিরানি দিয়ে উঠল।
সাদিদ যেন নীলার মৃদু কম্পনে আরও আসক্ত হয়ে পরছে। সাদিদ একহাতে নীলার মসৃণ কোমড় শক্ত চেপে ধরে, অন্য হাত নীলার গলায় রেখে তার উষ্ণ ঠোঁট দিয়ে নীলাকে স্পর্শ করতে লাগল।
নীলা মুখ দিয়ে আওয়াজ করতে না পারাতে, তার চোখদিয়ে শুধু পানি পরছে। নীলার শরীর ক্রমশ অবস হয়ে আসছে। তার শরীর সাদিদের এসব গভীর স্পর্শ কুলিয়ে উঠতে পারছে না।
সাদিদ গুটিকয়েক গভীর চুমু খেয়েই নীলার থেকে ছিটকে দূরে সরে আসলো।
নিজের করা কর্মে নিজেই এখন হতবাক হয়ে গেল। এতক্ষণ সে কি করেছিল ভাবতেই তার নিজেরই শরীরে কাটা দিয়ে উঠল।
এমন ছোট্ট একটা মেয়ের সাথে, সে এতটা নির্দয় কি করে হলো? তার নিজেরই নিজের প্রতি এইমুহূর্তে ঘৃণা লাগছে।

নীলার দিকে তাকাতেই তার বুকে হাতুড়িপেটা শুরু হলো। নীলা লজ্জায় মুখ চেপে ধরে নিঃশব্দে ডুকরে কান্না করছে। সাদিদ কয়েককদম এগিয়ে যেতেই, নীলা দৌড়ে উল্টো দিকে চলে গেল। সাদিদকে তার বড্ড ভয় করছে। টিভিতে যেসব খারাপ লোকদের দেখে সাদিদকে নীলার কাছে ঠিক তেমনটাই মনে হচ্ছে। সে জানপ্রাণ দিয়ে পার্কিং থেকে বেড় হলো। তার এখন সাদিদ থেকে বাঁচতে পারলেই হলো।
সাদিদ যে এখন তার চোখে ভয়ংকর! বড্ড কুৎসিত এক চেহারা।

#চলবে…

[ পাঠকগণ আপনাদের পাঠপ্রতিক্রিয়াগুলো আমাকে জানাবেন। আমি আপনাদের ভালোলাগা-মন্দলাগাগুলো জানতে আগ্রহী। ]