#অবশেষে তুমি
#লেখিকা-Nazia Shifa
#পর্ব-১৫
———————
ভার্সিটির মাঠে বসে আছে কাব্য আর তার পাশেই তার কাধে হাত রেখে বসে আছে তন্নী।নূরকে খুজতে খুজতে কাব্যর অবস্থা পাগল প্রায়।
-ভাই প্লিজ এভাবে কাদিসনা।পেয়ে যাবো এখনো বেশি সময় পার হয়নি।তুইতো আশেপাশে দেখেছিস কিন্তু পাস নি আর এতটুকু সময়ে এত দূরে যাওয়ার কথা না।ভাই আমার কেন যেন মনে হচ্ছে ও ভার্সিটিতেই আছে।চল আরেকবার দেখি ভালো করে।
বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে তন্নীকে বললো-
-চল।
তখনই হন্তদন্ত হয়ে সেখানে আসলো ইয়ুশা।ইয়ুশা নূরদের জুনিয়র।মোটামোটি পরিচয় আছে তার নূরের সাথে।সে হাতে থাকা ব্যাগটা দেখিয়ে বললো –
-তন্নী আপু লাইব্রেরির পাশের রুমে বাইরে এটা পড়েছিলো।এটা তো নূর আপুর তাই না।
ইয়ুশার কথা শুনে তারা দুজনই তাকালো তার দিকে।তার হাত থেকে ব্যাগটা একপ্রকার ছিনিয়েই নিলো।হ্যা এটা নূরেরই।কিন্তু এটা ওখানে গেলো কিভাবে।
-তন্নী চল ওখানে।
-হ্যা।
.
.
হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে নূর।তার এক পাশে দাড়িয়ে আছে তন্নী আর অন্য পাশে তার হাত ধরে থম মেরে বসে আছে কাব্য।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে।হলদেটে ফর্সা মুখশ্রীটাতে কেমন ফ্যাকাশে ভাব।হওয়ারই কথা এমন।ডাক্তার বলেছে তার বডিতে ড্রাগ পুশ করা হয়েছে।লাইব্রেরির সেই পাশের রুমটাতেই পেয়েছে নূরকে সেন্সলেস অবস্থায়।
ঘণ্টা খানেক আগে–
-ভাই রুমতো লক করা।তুই দাড়া চাবি নিয়ে আসছি আমি।
-এত সময় নেই তন্নী।আর দেরি না করে তালা ভেঙে ফেললো কাব্য। ঘুটঘুটে অন্ধকারে আচ্ছন্ন পুরো রুম।ফোনের ফ্লাশলাইট জ্বালিয়ে কাঁপা কাঁপা পায়ে সামনে আগাচ্ছে কাব্য।একটু আগাতেই দেখতে পেলো নূর ফ্লোরে পড়ে আছে।তাকে দেখে কাব্য দিকবিদিকশুন্য হয়ে গেলো।স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সেখানেই।তন্নী যেয়ে নূরের মাথাটা তার কোলের ওপর নিল।সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে নূরের।কাব্যকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তন্নী বললো –
-ভাই দাড়িয়ে আছিস কেন।উঠা নূরকে হসপিটালে নিতে হবে।তাড়াতাড়ি কর।
তন্নীর কথায় হুঁশ ফিরলো কাব্যের।তাড়াতাড়ি করে নূরকে কোলে নিয়ে রুম থেকে ছুটলো হসপিটালের উদ্দেশ্যে।
বর্তমান –
-ভাই নূর ঠিক আছে এখন।টেনশন করিসনা।
-বাসায় কাউকে বলিসনা এখন।পরে বুঝিয়ে বলবো।
-হুম।
তাদের কথার মাঝখানেই চোখ পিটপিটিয়ে চাইলো নূর।মাথাটায় খুব যন্ত্রণা করছে।চোখ মেলে তাকানোর শক্তিটুকুও নেই।তবুও কোনোরকম তাকালো সে।তাকে চোখ খুলতে দেখে কাব্য ব্যস্ত গলায় জিজ্ঞেস করলো-
-নূর এখন কেমন লাগছে?কোথাও খারাপ লাগছে?
মাথা নাড়িয়ে না জানালো নূর।আবার চোখ বুজে নিলো সে।চোখ খুলে রাখা দায় হয়ে পড়েছে।
.
.
.
বেডে শুয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে নূর।একটু আগেই হসপিটাল থেকে বাসায় ফিরেছে তারা।মিসেস রেহানা এতক্ষণ নূরের কাছেই ছিলেন একটু আগেই তার রুমে গিয়েছেন।কাব্য জোর করে পাঠিয়েছে।ড্রাগের কারণেই শরীর দূর্বল ছিলো আর চোখ মেলে তাকাতে পারছিলো না।এখন সেই ভাবটা নেই তবে মাথা যন্ত্রণা করছে আর শরীরও দূর্বল।এখন আস্তে আস্তে মনে করতে পারছে নূর কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার কাব্য এখনও তাকে জিজ্ঞেস করেনি কিভাবে হয়েছে এসব।
-কি ভাবছো?
কাব্যর কণ্ঠ পেয়ে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এলো নূর।কাব্যর দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো-
-কিছুনা এমনি।কিছু খেয়েছেন আপনি?
-না।
-লাঞ্চ ও করেননি।
-ফ্রেশ হতে যাবে এখন?
-কিছু খাননি কেন?
-মাথা ব্যথা কম লাগছে একটু?
-কিছু খাননি কেন?
-বারবার একই কথা জিজ্ঞেস করছো কেন?
-আপনি বলছেন না কেন?
-কি বলবো?ইচ্ছে হয়নি খাইনি।
তন্নীর কাছ থেকে সবকিছুই শুনেছে নূর।কিন্তু এখন তার ভাব দেখো যেন কোনোকিছুই মেটার করেনা।
-আবার কি হয়েছে
-কিছুনা।
-তুমি আর তোমার কিছু না,,😒চলো
-হুম।
নূরকে ফ্রেশ করিয়ে দিয়ে সোফায় বসিয়ে দিয়ে কাব্য বললো-
-এখানে বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
-হুম।
খানিক বাদেই খাবারের প্লেট হাতে রুমে আসলো কাব্য।ভাত মাখিয়ে নূরের মুখের সামনে এক লোকমা ধরলো।
-আমার হাত আছে খেতে পারবো আমি।এত দরদ দেখাতে হবে না
-বেশি কথা বলোনা হা করো।
-খাবোনা।
-নূর মাথা গরম করো না নূর হা করো(রেগে গিয়ে)
কাব্যর কথা শুনে আপনা আপনি হা হয়ে গেলো নূরের মুখ।
.
.
বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে নূর।কাব্য ওয়াশরুমে গিয়েছে।মনের ভেতর উশখুশ করছে তার।এখনো কাব্যকে বলেনি তখন কি হয়েছিলো আর কেই বা করলো এমন ভাবতে ভাবতে মাথার রগ ছিড়ে যাচ্ছে। আর ভাবতে পারছে না।দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো সে।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে নূরকে এভাবে দেখে তড়িঘড়ি করে তার কাছে গেলো কাব্য।
-কি হয়েছে নূর?মাথা ব্যথা করছে?খারাপ লাগছে?
কাব্যের কথা শুনে ঝট করে মাথা তুললো নূর।তারপর নিভুনিভু গলায় বললো-
-নাহ।
একটু পর আবার বললো- আমার ভালো লাগছে না। অস্থির লাগছে কাব্য।
নূরের মুখে এই প্রথম শুধু কাব্য ডাক শুনে থমকে গেলো কাব্য।নূর আবার জিজ্ঞেস করলো- আপনি এখনো আমাকে জিজ্ঞেস করলেন না আমি ওখানে গেলাম কিভাবে?
-যখন তুমি স্বাভাবিক হবে তখন তুমি নিজেই বলবে তাই জিজ্ঞেস করিনি।
-এখন বলতে চাই
-রাত হয়ে গেছে এখন ঘুমাও।সকালে বলো।
-এখনই বলবো।
নূরের পাশে আধশোয়া হয়ে নূরের মাথাটা তার বুকের সাথে চেপে ধরলো কাব্য।তার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো –
-ঠিকআছে বলো।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নূর বলা শুরু করলো-
-এক্সাম শেষ করে একসাথেই বেরিয়ে ছিলাম আমি আর তন্নী।ক্লাস থেকে বেড়িয়ে ক্লাসের বাইরেই দুজন ক্লাসমেটের সাথে কথা বলছিলাম।আশেপাশে আরও অনেক স্টুডেন্ট ই ছিলো।কথা বলার একপর্যায়ে ঘাড়ে সুচালো কিছু ফুটার মতো অনুভূত হয়।কোনো পোকা-টোকা ভেবেছিলাম।তারপর তন্নী ওয়াশরুমে গেলো। আমি বাইরে দাড়িয়ে ছিলাম ওয়াশরুমের।কেমন জানি লাগছিলো,মনে হচ্ছিল সবকিছু কেমন ঘুরছে।তাড়া দিচ্ছিলাম তন্নীকে।হঠাৎ পেছন থেকে কেউ মুখ চেপে ধরলো।তারপর ওই রুমটাতে আটকে দিলো।খুব ভয় পেয়েছিলাম জানেন।অন্ধকারে ছোটবেলা থেকেই ভয় পাই আমি।শ্বাস নিতে পারছিলাম না।বেশিক্ষণ নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারিনি।তারপর কি হয়েছিলো মনে নেই যখন সেন্স ফিরলো তখন হসপিটালে আবিষ্কার করলাম নিজেকে।
আর একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাব্য বললো-
-এখন সব ঠিক আছে। কিচ্ছু হয়নি তোমার আর আমি থাকতে কিছু হবে না তোমার।ঘুমিয়ে পড়ো।
-হুম।
.
.
চেয়ারে বসে সামনে থাকা ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে একজন।ছবিটার দিকে তাকিয়ে থেকেই বাঁকা হেসে বললো-
– আজকে তো মারার জন্য কিছু করিনি শুধু একটু ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম। প্রিয় মানুষকে হারানোর ভয় সেটা পেরেছি।বাকি খেলা তো পরে দেখাবো।
#চলবে
#অবশেষে তুমি
#লেখিকা–Nazia Shifa
#পর্ব-১৬
————————–
মাঝখানে কেটে গেছে তিন দিন।পরীক্ষা শেষ তাই ভার্সিটি অফ পনেরো দিনের মতো।এই তিনদিন অফিসে যায়নি কাব্য।নূরকেও রুম থেকে বের হতে দেয় নি।আজকে সকালের নাস্তার সময় যেতে দিয়েছিলো।রুমে আটকে রাখার কারণ হচ্ছে সেইদিনের পর তিনবার সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলো নূর।কাব্যতো একেবারে ভয়ে অস্থির হয়ে পড়েছিলো কিন্তু ডাক্তার বলেছে যে ড্রাগের এফেক্ট পড়েছে কড়া ভাবে তার ওপর নূর আগে থেকেই উইক ছিলো এখন আবার ডিহাইড্রেশন প্রবলেম।সব মিলিয়ে কাব্যের কড়া আদেশ তার কথার বাইরে কিছু করা যাবেনা যদি উল্টাপাল্টা কিছু হয় তাহলে একটাই শাস্তি হাত পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে দিবে তখন ওয়াশরুমে যেতে হলেও কাব্যর সাহায্য নিতে হবে।এমন হুমকি ধামকি শোনার পর আর কিছু বলার সাহস হয়নি নূরের।তবে আজকে একেবারেই অসহ্য লাগছে তার।এভাবে বসে থাকা যায় এক রুমের মধ্যে।দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
দুপুর তিনটা।সে বেডে শুয়ে আছে কাব্য তার পাশেই বেডের সাথে হেলান দিয়ে ল্যাপ্টপে কাজ করছে।এই ল্যাপ্টপ দেখলে আরও বেশি রাগ উঠছে নূর।কই দু একটা কথা বলবে তার সাথে তা না সারাক্ষণ এই সতীনটাকে নিয়েই পড়ে থাকে।হুহ,,।শোয়া থেকে উঠে বসলো নূর।বুকের ভেতর ধুকপুক করছে।আজিব কাব্য তার কাছে আসলে বা তার আশেপাশে থাকলে এমন হয় কেন?এই প্রশ্নের উত্তরটা খুজে পায়না নূর।যাক সেসব বাদ আসল কথা বলা যাক।সব কিছু এক সাইডে রেখে কাব্যকে উদ্দেশ্য করে বললো –
-শুনছেন,,
হঠাৎ নূরের মুখ থেকে এমন সম্বোধন শুনে কপালে ভাজ পড়লো কাব্যর।নূরতো কাব্য ভাই ছাড়া কিছুই বলেনা।নিজ থেকে বেশি কথাও বলেনা।তাহলে আজকে আবার কি হলো?মনে মনে এসব ভাবছিলো কাব্য।কাব্য কিছু না বলায় নূর আবার বললো-
-কি হলো শুনছেন
-হ্যা বলো।
নূর কোনোরকম ভনিতা না করে সোজাসুজি বললো-
-তিনদিন ধরে রুমে আটকে রেখেছেন।এখন মনে হচ্ছে আপনি কিডন্যাপার আমাকে কিডন্যাপ করে আটকে রেখেছেন এখানে।এবার একটু যেতে দিন প্লিজ।
নূরের কথা শুনে কপালের ভাজ আরও মোটা হলো।
-Excuse me,,আমাকে কোনদিক দিয়ে কিডন্যাপার মনে হয় তোমার?এখনো মেয়েরা প্রপোজাল দেয় আমায়।শুধু তোমাকে বিয়ে করে ফেলেছি বলে না করে দেই।আর চাইলে আমি আরও তিন চারটা বিয়ে করতে পারি শুধু তোমার কথা চিন্তা করে,,,,
এবারে একটু মন খারাপ করলো নূর।মুখটা ছোট করে ফেললো সে।মুখ ঘুড়িয়ে অভিমানী গলায় বললো –
-তাহলে যান বিয়ে করে ফেলেন আরও কয়টা।আমার কথা কে চিন্তা করতে বলেছে।আমার জন্য কারো এত মায়া দেখাতে হবে না।আমি নিজেকে নিজেই সামলে নিব।
নূরের কথা শুনে শব্দহীন হাসলো কাব্য। তারপর নূরকে টান দিয়ে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো –
-হ্যা চাইলে করতে পারি।কিন্তু তোমাকে বিয়ে করবে কে তুমি তো আর অত সুন্দরী না আমি ছাড়া অন্যকারো সাথে মানাবেও না তাই,,
কাব্যর কথা শুনে ফুসে উঠলো নূর। তার হাত থেকে ছোটার জন্য তার হাতে চিমটি কাটলো নূর।কিন্তু লাভ হলো না।
-ছাড়ুন। আপনি অনেক খারাপ, বাজে লোক আপনি।কথা বলবো না আপনার সাথে।
এবার জোরে হেসে দিল কাব্য।
-এমন পাগলের মতো হাসছেন কেন?তার ছিড়ে গেছে নাকি
হাসি থামিয়ে কাব্য নূরের মুখটা নিজের দুই হাতের আজলে নিয়ে বললো –
-পাগলী এত বোকা কেন তুমি।মজা করছিলাম আমি।আমার এত সুন্দর বউ তাকে অসুন্দর বলার অধিকার আমার নেই।আম্মু আর তন্নীর পর আমার চোখে দেখা সবচেয়ে সুন্দর নারী তুমি।আমার বউ।আমিতো এমনেই তোমাকে রাগানোর জন্য বলছিলাম তবে এটা সত্যি তোমাকে আমার সাথে ছাড়া অন্য কারো সাথে মানাবে না।
চোঙ রাঙিয়ে কাব্যর দিকে তাকালো নূর।
-কি যেন বলছিলে ও হ্যা বাইরে যাবে ঠিক আছে যাও তবে লাফালাফি করবেনা একদম।
-হুম😒।
তন্নীর রুমের সামনে আসতেই দেখলো তন্নী কার সাথে যেন কথা বলছে ফোনে।তাকে দেখেই তাড়াহুড়ো করে ফোন রেখে দিলো।নূর বেডে বসতে বসতে বললো-
-কি নন্দিনী কি চলে?
-আব,,ব,,ক,,কই কি চলে
-সেটাইতো কি চলে,,,
-কিছুনা
-উফফ নাটক না করে বলতো তন্নী।
-দোস্ত আসলে,,দোস্ত কাছে আয়।
-হ্যা বল।
-তেমন কিছু না আসলে ফেসবুকে একটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়েছে।ওর নাম রিয়াদ।ঢাকাতেই থাকে, জব করে।কথা বলতে বলতে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।
-আচ্ছা শুধু কি ফ্রেন্ড নাকি আবার
-আরে না।
-যাহ বিশ্বাস করলাম তবে বলতে পারিস কিছু হলে চোখ মেরে।
নূরের কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো তন্নী।মুচকি হাসলো নূর।প্রসঙ্গ পাল্টাতে বললো-
-ভার্সিটি অফ অথচ কোথাও যেতে পারছিনা।
-হ্যা কিন্তু কিভাবে বল সেদিনের ঘটনার পর ভাইয়া দেখছিস না কত স্ট্রিক্ট হয়ে গেছে রিস্ক নিতে চায়না কোনো।আর তুইও তো অসুস্থ।
-কিসের অসুস্থ আমি আলহামদুলিল্লাহ ঠিক আছি এখন।
-দরকার নেই কোত্থাও যাওয়া লাগবেনা।
-তাহলে তুই যে কতকিছু প্ল্যান করেছিলি সেগুলো।
-অন্য কোনো সময় হবে
-হুম।
তন্নী আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিলো পরীক্ষার পর সবাই একসাথে ঘুরতে যাবে।কিন্তু এখন নূরের জন্য সবকিছু ক্যান্সাল করে ঘরে বসে আছে।ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো তার।তারও ইচ্ছে ছিলো কোথাও ঘুরতে যাওয়ার।বিয়ের আগেও তেমন একটা যাওয়া হয়নি আর বিয়ের পরতো একেবারেই না।কিছুক্ষণ তন্নীর সাথে টুকটাক কথা বলে রুমে চলে আসলো নূর।
.
.
.
রাত প্রায় দশটা।রাতের খাবার শেষে রুমে এসেছে নূর।কাব্য আসেনি কেন আসেনি সেটা জানে নূর।একটু পরই রুমে আসলো কাব্য।হাতে এক গ্লাস দুধ।যা ভেবেছিলো নূর।নূর দুধের গ্লাসটা দেখেই করুন চোখে তাকালো কাব্যর দিকে।
-এভাবে তাকিয়ে লাভ নেই তোমারই খেতে হবে ধরো।
-আমি খাবোনা প্লিজ এমন করেন কেন?একদিন না খেলে কি হবে।
-প্রতিদিন একই কথা বলো আর শেষে তোমাকে খেতেই হয় তো শুধু শুধু বলে লাভ নেই।
-🥺তাহলে আমার চকলেট দিন।রিদ ভাইয়া যে কতগুলো চকলেট দিয়েছে আমায় সেগুলো লুকিয়ে রেখেছেন কেন?
-কারণ আমি ভালো করেই জানি তোমার কাছে থাকলে সেগুলো তুমি একদিনেই শেষ করে ফেলবে।
-আমি কি বাচ্চা হ্যা এভাবে বাচ্চাদের মতো ট্রিট করছেন কেন?আর শেষ হয়ে গেলে আবার কিনে দিবেন চকলেট তো খাওয়ারই জিনিস।
-হ্যা বাট এত বেশি খাওয়া যাবেনা।তাই আমি পরিমান মতোই দেই।আর তুমি বাচ্চাই তো।নাহলে এই রাতের বেলা কেউ বরের সাথে ঝগড়া করে?তুমি যদি বড় হতে তাহলে এখন আদরে ভরিয়ে দিতে আমায়,,কিন্তু নাহ সেই কপাল কি আছে। আমার সাথে কথা বলতে নিলেই খালি ঝগড়া আর অন্যদের সাথে কথা বলার সময় মুখ দিয়ে চকলেট ঝরে।
-এমন করছেন তো করেন আপনার বাচ্চাদের সাথেও এমনই করবে আপনার বউ বলে দিলাম আমি।
-আমার বউ তো তুমিই বাচ্চা তোমারও তো,,,😶
কিছু বলতে নিয়েও বললো না নূর।এই ছেলের সাথে কথা তে পারবেনা।তাই রাগ দেখিয়ে হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো।গ্লাস ফেরত দিয়ে যেয়ে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পরলো।কাব্যও গ্লাসটা রেখে ডিম লাইট নিভিয়ে যেয়ে নূরের পাশে শুয়ে পড়লো।তখন সে ইচ্ছে করেই বলেছে কথাগুলো।
একটু বাদেই নূর কাব্যর দিকে ঘুরলো।তারপর বললো-
-শুনছেন,,,
#চলবে