#অবশেষে তুমি
#লেখিকা- Nazia Shifa
#পর্ব -০৩
————–
–নূর জেগে আছো?
হঠাৎ তার গলার স্বর পেয়ে কেঁপে উঠলাম আমি পরমুহূর্তেই নিজেকে স্বাভাবিক করে বললাম –
‘জ্বি জেগে আছি।কিছু বলবেন?
‘হ্যা।কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর বললেন-
-‘ নূর তোমার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।তোমাকে বিয়ে করে কোনো করুণা করিনি আমি আর না মামনি আমাকে জোর করে রাজি করিয়েছেন।নিজের ইচ্ছেতেই বিয়ে করেছি আমি। যা হয়েছে তাতে কারো কোনো হাত নেই।কিন্তু বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি আমরা। সেটা যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন,,,তুমি আমার স্ত্রী। তোমার সব দায়িত্ব এখন আমার।’
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে। আমার দৃষ্টির মানে বুঝতে পেরে বললেন —
‘তখন রুমে এসে তোমাকে না পেয়ে ব্যালকনিতে খুঁজতে এসেছিলাম আর তোমার কথাগুলো শুনতে পাই।ঠিক আছে রাত হয়েছে অনেক ঘুমিয়ে পরো এখন।’
‘কিছু না বলে মাথা নাড়িয়ে সায় দিলাম।পাশ ফিরে শুয়ে পরলাম।উনিও লাইট অফ করে শুয়ে পরলেন।
——————————
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস আমার।আজও তার ব্যতিক্রম হলো না।ফোনের এলার্ম এর আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল আমার।তরিঘড়ি করে এলার্ম অফ করে আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলাম।পাশ ফিরে কাব্য ভাইয়াকে দেখে ঘাবড়ে গেলাম তখনই মনে পড়লো কালকেই আমার বিয়ে হয়েছে তার সাথে।মানে এখন আমি বিবাহিত।জীবনের নতুন সকালের নতুন এক অধ্যায়।কথাগুলো ভাবতে ভাবতে উনার দিকে এক পলক তাকিয়ে বেড থেকে নেমে পরলাম।ওয়াশরুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে ওযু করে আসলাম।উনি এখনো ঘুমাচ্ছেন।আমার জানামতে উনি প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়েন কিন্তু আজকে এখনো উঠলেননা যে।আচ্ছা আমি ডাক দিব?যদি কিছু বলে?কিন্তু নামাযের জন্যই তো ডাকব কি বলবেন।আর কিছু না ভেবে ওনার পাশে যেয়ে হালকা ঝুকে নিচু স্বরে ডাক দিলাম–
-“শুনছেন?নামাযের সময় হয়ে গেছে উঠুন।”
কিন্তু উনি একটু নড়লেন ও না।তাই আবার ডাকলাম-
-“কাব্য ভাইয়া…..একটু জোরেই ডাকলাম আর কাজও হয়েছে।চোখমুখ কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন –
-‘কি হয়েছে?ডাকছ কেন?
-‘জ্বি নামায পরবেন না আপনি?
-‘হ্যা। আযান হয়েছে?
-‘হয়নি কিন্তু সময় হয়ে গেছে।
-‘আচ্ছা। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
-‘ঠিক আছে।উনি উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলেন।ফ্রেশ হয়ে ওযু করে বের হলে একসাথেই নামায আদায় করলাম দুজন।নামায শেষে কাব্য ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম –
-‘চা দিবো আপনাকে?
‘-দাও।
ওনার উত্তর পেতেই রুম থেকে বেড়িয়ে পা বাড়ালাম কিচেনের উদ্দেশ্যে।কিচেনে যেতেই দেখলাম মামনিকে।হয়তো চা বানাতে এসেছেন। আমাকে দেখেই বললেন-
-‘এত সকাল সকাল উঠেছিস কেনো আজকে?কালকে সারাদিনে অনেক ধকল গেছে তোর ওপর রেস্ট নিবি না আজকে।
-‘সমস্যা নেই মামনি। ঠিক আছি আমি। আর এমনিতেও তুমি তো জানোই সকাল সকাল ওঠাই আমার অভ্যাস।চা বানাতে এসেছো তুমি?
-‘হ্যা রে।
-‘আচ্ছা তুমি রুমে যাও আমি বানিয়ে নিয়ে আসছি।
-‘না আমি বানাচ্ছি তো।
-‘মামনি তুমি যাও আমি বানিয়ে আনছি।মামনিকে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে চা বানিয়ে দু কাপ মামনির রুমে দিয়ে আর দুকাপ একটা ট্রেতে নিয়ে রুমে আসলাম।রুমে এসে তাকে কোথাও না পেয়ে চা নিয়েই ব্যালকনিতে গেলাম।ব্যালকনির ডান পাশে রাখা দোলনাটায় বসে আছেন তিনি। দৃষ্টি তার আকাশে নিবদ্ধ।উনি এখনো আমাকে দেখেন নি।কারণ আমি তার পেছনে দাড়ানো।আমার উপস্থিতি টের পাননি হয়তো কারণ সে আগের ভঙ্গিতেই বসে আছেন। পাশের ছোট্ট টেবিলটায় ট্রেটা রেখে হাতে একটা কাপ নিয়ে তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে নিচু স্বরে বললাম —
-‘আপনার চা।
আমার হাত থেকে কাপটা নিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বললেন–
-‘থ্যাঙ্কিউ।ফের প্রশ্ন করলেন,’ তুমি নিবেনা?
-‘জ্বি।
-‘হাত দিয়ে ইশারা করে বললেন-এদিকে আসো।
তার পাশে যেয়ে বসতে ইতস্ততবোধ হচ্ছিল তাই ওখানেই দাড়িয়ে রইলাম।
আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে উনি আবারো বললেন-
-‘কি হলো?এদিকে আসো।
-‘জ্বি।নিজের ইতস্ততবোধটাকে দূরে ঠেলে তার পাশে যেয়ে বসলাম।
দুজনেই নিরব হয়ে সকালের প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত।মাঝেসাঝে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি।চা খেতে খেতে সকালের প্রকৃতি দেখাটার অভ্যাস আমার আগের থেকেই তবে আজকের সকালটা একটু অন্যরকম।এই নরম সকালের মিষ্টি রোদে কাব্যের অবস্থান যেনো ভালো লাগার পরিমানটা বাড়িয়ে দিয়েছে।এই মুহূর্তে তার আমার সম্পর্কটা কেমন সেটা ভুলে সকাল টাকে উপভোগ করায় মনোনিবেশ হলাম।
————————
সকাল নয়টা।কিচেনে মামনির সাথে কাজ করছি।কাজ করছি বলতে শুধু রুটিগুলো বেলে ভেজে দিচ্ছি। ব্যস এতটুকুুই। অন্যকোনো কাজ মামনি করতে দেয়নি।তন্নী টেবিলে প্লেট গ্লাস নিয়ে রাখছে।আমার কাজ শেষ হলে মামনি বললেন-
-‘নূর কাব্যকে ডেকে নিয়ে আয় তো।
-‘ঠিক আছে মামনি।
কিচেন থেকে বেরিয়ে রুমে আসলাম।রুমে এসে দেখলাম উনি সোফায় বসে ল্যাপ্টপে কি যেন করছেন।
উনার সামনে যেয়ে দাড়িয়ে বললাম-
-‘শুনুন..
-‘বলো।
‘-মামনি ডাকছে আপনাকে নাস্তা করতে।
-হুম।
-‘আপনার কি দেরি হবে?খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে এজন্য আর কি।
আমার কথা শুনে কি যেন একটা ভাবলেন তারপর বললেন-
-‘না হয়ে গেছে। চলো।
.
.
খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই তবে কাব্যের বাবা এখনো আসেনি।সে আসলেই খেতে বসবে তারা।একটু পরই তার আগমন ঘটলো।তাকে দেখেই নুর বললো-
-‘আসসালামু আলাইকুম ফুপ্পা।
চেয়ার টেনে বসতে বসতে উত্তর দিলেন -‘ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আয়মান চৌধুরী(কাব্যের বাবা)আসতেই সবাই খাওয়া শুরু করলো।যে যার মতো করে খাচ্ছে কিন্তু নূর মাথা নিচু করে খাবার নিয়ে নাড়াচাড়া করছে।হঠাৎ কাব্যের বাবা নূরকে ডাক দিলেন।মাথা তুলে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকালো তার দিকে।তার তাকানো দেখে কাব্যের বাবা বললেন-
-‘ছেলের বউরা কখনো তার শশুরকে ফুপ্পা বলে কোথাও শুনেছো? শুনোনি।কিন্তু আমার একমাত্র ছেলের বউই তার শশুরকে ফুপ্পা বলে সম্বোধন করছে।
তার কথা শুনে বুঝতে পারলাম কথাটা আমাকেই বলেছেন।কিন্তু আমি কিছু বলার আগে সে আবার বলতে লাগলো-
-‘শোনো নূর তুমি এতোদিন ফুপ্পা বলতে ঠিক আছে সেটা কিন্তু এখন তুমি আমার ছেলের বউ তাই এখন থেকে তন্নীর মতো তুমিও আমাকে বাবা বলবে।ঠিক আছে?
-‘জ্বি ঠিক আছে।
-‘বাবা কে বলবে?
হালকা হেসে বললাম-ঠিক আছে বাবা।
.
.
.
খাওয়া শেষে সব কিছু গুছিয়ে মামনির কাছে গেলাম। আমাকে দেখে মামনি বললেন –
-‘ভালো হয়েছে তুই এসেছিস। আমিই ডাকতাম তোকে একটু পরে।
মামনিকে জিজ্ঞেস করলাম, -‘কেন মামনি?কিছু কি লাগবে?
মামনি বললো–‘কথা ছিলো তোর সাথে।তুই বস একটু তরকারিটা নামিয়ে আসছি আমি।
-‘ঠিক আছে মামনি।
চলবে…..
#অবশেষে তুমি
#লেখিকা–Nazia Shifa
#পর্ব -০৪
——————–
ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে মিসেস রেহেনা।তার কোলে মাথা দিয়ে মেঝেতে বসে আছে নূর।মিসেস রেহেনা নূরের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে তাকে জিজ্ঞেস করলেন —
-‘কি হয়েছে নূর?এমন মনমরা হয়ে আছিস কেন?
-‘কিছু হয়নি মামনি।
-‘কিছু না হলে আমার মেয়েটা এত চুপচাপ কেন?বকবক করছে না যে?
-‘ এমনি।ভালো লাগছেনা আজকে।
মিসেস রেহেনা আর কিছু বললেন না।খানিকবাদে নূর নিজেই জিজ্ঞেস করলো-
-‘তুমি কি যেন বলবে বলছিলে?
মিসেস রেহেনা নূরের দিকে এক পলক তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতে লাগলেন –
আমি জানি নূর তোর আর কাব্যের এভাবে বিয়েটা দেয়া ঠিক হয়নি।কিন্তু কি করতাম বল ভাইয়া হুট করে কিছু না জানিয়ে তোর বিয়ে ঠিক করে ফেললেন। কিছু বলতেও পারলামনা তাকে।তার ওপর সেই ছেলে বিয়ে ভেঙে দিলো।তখন তোর কান্না সহ্য হচ্ছিল না আমার।নিজের সন্তানকে কাঁদতে দেখতে কোনো মায়ের কি ভালো লাগে বল।তার ওপর তোকে নিজের ছেলের বউ করার দ্বিতীয় সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি আমি।তাই বিয়েটা এভাবেই হলো।আর কাব্যকে তো তুই চিনিসই।ছেলেটা আমার ছোটবেলা থেকেই কেমন যেন গম্ভীর আর চুপচাপ স্বভাবের।স্টুডেন্ট লাইফে সারাদিন লেখাপড়া নিয়ে পড়ে থাকতো আর এখন অফিস নিয়ে পড়ে থাকে।পরিমানের বেশি কথাও বলেনা।
একটু থেমে আবার বললেন –
-‘নূর তোকে আমি ভালো করে চিনি আর কাব্যকেও।মা হিসেবে এতটুকু বলতে পারি তোরা দুজন দুজনের জন্য বেস্ট। কিন্তু ধৈর্য ধরতে হবে যে।নূর একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে ধৈর্য ধরতে হয়,স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করতে হয়।আর বিশ্বাস থাকলে ভালোবাসাটাও তৈরি হয়ে যায়।তাই এই সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখতে হলে তোকে ধৈর্য ধরতে হবে।মনে রাখিস কাব্য তোর স্বামী।সেটা যেভাবেই হোক।তাই সময় থাকতে নিজের অধিকারটা আদায় করতে শিখে নেয়। বুঝেছিস?
-‘হ্যা বুঝতে পেরেছি।
মুচকি হেসে আমার মাথায় চুমু খেয়ে বললেন- -‘লক্ষিটা।
হঠাৎ মুখটা উদাস করে বললেন-
-‘একেতো বিয়েটা এমন পরিস্থিতিতে হলো কাউকে কিছু জানাতেও পারলামনা।তাই তোর বাবা আর আমি ভেবেছিলাম সামনের শুক্রবার তোদের রিসেপশনের মাধ্যমে সবাইকে তোদের বিয়ের ব্যাপারটা জানিয়ে দিব।কিন্তু কাব্য না করে দিল বললো-এখন না পরে করবে।কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী আজকে তোদের ও বাড়ি যাওয়ার কথা।কাব্যকে বলেছি আমি এখন তুই রুমে যেয়ে জিজ্ঞেস করতো ওকে।
-‘ঠিক আছে মামনি আমি যাই।মামনিকে বলে সেখান থেকে উঠে রুমে আসলাম।রুমের দরজার কাছে আসতেই দেখলাম উনি ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে চুল ঠিক করছেন। মনে মনে ভাবতে লাগলাম-এসময় কোথায় যাচ্ছেন উনি।জিজ্ঞেস করবো?না বাবা যদি ধমক টমক দেয়।শাড়ির আঁচল দুই আঙুল দিয়ে পেচাচ্ছি আর ভাবছি কি করবো।আমার অবস্থা দেখে উনি জিজ্ঞেস করলেন –
-‘এমন স্টেচুর মতো দাড়িয়ে আছো কেন ওখানে?ভেতরে আসো।
ওনার কথা শোনা মাত্রই পা চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম।উনার পেছনে যেয়ে দাড়াতেই উনি আমার দিকে ঘুরে দাড়ালেন।এতক্ষণে তাকে ভালোভাবে লক্ষ করলাম,,কালো ট্রাউজার আর সাদা রংয়ের টি- শার্ট পড়েছেন তিনি।সাধারণ হলেও সুন্দর লাগছে তাকে।
তখন ভয় পেলেও এবার জিজ্ঞেস করলাম –
-‘কোথাও কি যাচ্ছেন?
-‘হ্যা।বাইরে যাচ্ছি একটু পরই চলে আসবো।
-‘ওহ আচ্ছা।
-‘হুম।ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে সরে বেড থেকে ফোন হাতে নিতে নিতে জিজ্ঞেস করলেন –
-‘কিছু বলবে?
জ্বী।আসলে মামনি বলছিলো আজকে নিয়ম অনুযায়ী আমাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা।
-‘হ্যা।তুমি রেডি হয়ে থেকো,আমি আসলে নিয়ে যাবো।আর সেখানে কি থাকবে?
-‘না থাকবোনা।শুধু দেখা করেই চলে আসবো।
-‘কেন?এত তাড়াহুড়া কেন?তুমি চাইলে থাকতে পারো সমস্যা নেই।
-‘এমনেই।থাকবোনা দেখা করে আসবো।
-‘ঠিক আছে।আচ্ছা আসি তাহলে।
জ্বী।
.
.
.
বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর উনি বাইকে বসে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।অতঃপর বললেন-
-‘কি হয়েছে বাইকে উঠছোনা কেন তুমি?আর কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো এভাবে?
-‘আব,,আসলে…আমি বা, বাইকে উঠতে ভয় পাই।
মুখ দিয়ে বিরক্তিসূচক আওয়াজ বের করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন-
-‘এই জ্বালা পিচ্চি পাচ্চি বিয়ে করলে।সবকিছুতেই ভয় পায়।
-‘পিচ্চি কাকে বলছেন?
-‘তোমাকে ছাড়া কে আছে এখানে?
-‘কিহ?আমি পিচ্চি? অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়া মেয়েকে আপনার পিচ্চি মনে হয়?
-‘ হ্যা তুমি পিচ্চি। এখন ঝগড়া না করে বাইকে উঠো।
-‘না উঠবোনা আমি।
-‘সাধে কি আর পিচ্চি বলি।পিচ্চি না হলে এতক্ষণ যাবৎ এখানে দাড় করিয়ে রাখতে না আর তার ওপর আবার ঝগড়া করছো এখন।পিচ্চি!বাইকে উঠো।
হুহ মুখ ভেঙচিয়ে বাইকে উঠে বসলাম।কিন্তু ভয় করছে।
-‘ধরে বসো পড়ে দেখা যাবে বাচ্চা মানুষ অর্ধেক রাস্তা গিয়ে দেখবো তুমি নেই রাস্তার মাঝখানে পড়ে গেছো।
চোখ রাঙিয়ে তার দিকে তাকালাম।কাপা কাপা হাতে কাধে দুই হাত রাখলাম।বাইক চলছে আপন গতিতে।কিন্তু সমস্যা বাধলো আমার চুল।বাতাসে উড়ে বার বার চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে।কোনোরকম এক হাত দিয়ে সামলাচ্ছি।
.
.
.
আব্বুর কোলে মাথা রেখে বসে আছি আমি।বাসায় এসেছি মিনিট বিশেক আগে।কাব্য আমাকে দিয়ে কিছুক্ষণ বাবার সাথে কথা বলে বেড়িয়ে গেছেন।সন্ধ্যায় এসে নিয়ে যাবেন বলেছেন।উনি যাওয়ার পর থেকেই এভাবে বসে আছি।ভাইয়াও পাশেই বসে আছে।এতক্ষণ কিছু না বললেও এবার বাবা জিজ্ঞেস করলেন –
-‘কি হয়েছে আমার পরীটার?এমন মন খারাপ কেন?
-‘কিছু হয়নি বাবা।তোমার পরীটা তোমাকে আর তার ভাইকে অনেক মিস করছিলো।
-‘আমরাও যে তোকে মিস করছিলাম।
-‘হ্যা কাল থেকে তোর সাথে ঝগড়া করিনি তাই ভালো লাগছিলোনা।এখন এসেছিস চল ঝগড়া করবো এখন।
ভাইয়ার কথা শুনে জোড়ে হেসে দিলাম।তারপর বললাম-
-‘ঠিকই বলেছিস।তোকে পাঁচ -ছয়টা কিল ঘুষি না মারলে আমার দিন কাটে না।হি হি হি।
————————–
ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুলে বেনি করছি আমি।আর কাব্য বেডে হেলান দিয়ে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।আমাদের বাসা থেকে এসেছি আজ তিন দিন।সেদিনই সন্ধ্যায় তার সাথে এসে পড়েছিলাম। দেখতে দেখতে বিয়ের প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে যাচ্ছে।সবকিছু কেমন যেন একটা ঘোড়ের মতো লাগছে আমার কাছে।নিজে নিজে এসব ভাবছি।আমার ভাবনার ইতি ঘটলো কাব্যের ডাকে।
-‘নূর?
-‘জ,, জ্বী।
-‘এদিকে আসো।
চলবে……