#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ১৫]
___________________
” রাসেল তোর জন্য আমার চিন্তা হচ্ছে একটু ঘুম দে।”
” ঘুম কেড়ে নিয়ে এখন বলছিস ঘুম দে?এটা হাস্যকর।”
ঈশান ভ্রু কুচকে তাকালো রাসেলের দিকে।কপালে হাত ঠেকিয়ে শুয়ে আছে রাসেল।ঈশানের কথা শোনার পর থেকে তার মাথা ঘুরছে নাকে মুখে ধোঁয়া উঠার মতো পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি হয়েছে।ঈশান অনুকে বিয়ে করবে!অনুকে সে ভাবী ডাকবে!অসম্ভব এই দিন দেখার আগে বাংলাদেশ ছাড়বে সে তবুও এই দিনের সম্মুখিন সে হবে না।হঠাৎ অনুকে ভালো লাগার কারণ কী ঈশানের?তার জানা মতে অনুর সাথে বিশেষ ভাবে কখনো দেখা হয়নি ঈশানের।
” কিরে কি ভাবছিস?”
ঈশানের প্রশ্ন শুনে কপাল থেকে হাত সরালো রাসেল।দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে বলে,
” কিছু না।আমার মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরছে ঈশান।”
” কি প্রশ্ন?”
” ঈশা অনু সেই বিল্ডিং এ কি করছিলো?”
” তা তো আমিও ভাবছি।তাদের সাহস দেখেছিস?পুরো ভবনটা ফাঁকা ছিল যদি লোকগুলো ওখানে থাকতো তবে.. ওদের সাথে দেখা করা দরকার।দুজনকে এখানে আসতে বলিস।”
” বলেছি।কিন্তু গার্ড ছাড়া তুই সেদিকে গেলি কেন?আমি আগেই বলেছিলাম ইসমাইলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন কর তুই শেষবার তাকে যে অপমান করেছিস সে যে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠবে এটা আমার ধারণায় ছিল।”
” যা ঠিক আমি তাই করেছি।মুজাহিদ হাসানের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল আর সেটাই করেছি।”
“যখন একটা মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগে তখন সে উচিত অনুচিত ভুলে যায়।ঈশার গলায় আঘাত লাগায় রাজিবের গায়ে হাত তুলেছিস তুই ভেবে দেখ রাজিব তোর এত বিশ্বস্ত লোক কখন যে সে তোর পিঠে ছুরি বসিয়ে দেয় বিশ্বাস নেই।সাবধান ঈশান ইসমাইল পুরানো লোক হয়েও বেইমানি করেছে তাই বিশ্বাস অন্তত সবাইকে করিস না।”
” কন্সট্রাকশন কাজ বন্ধ ছিল একমাস ভেবেছিলাম সব ঝামেলা মিটিয়ে পুণরায় কাজ শুরু করবো তাই তো গেলাম।আমার সাথে গার্ড ছিল ইসমাইলের লোক ছিল কিন্তু ইসমাইল যে ছলচাতুরী করবে আমি কস্মিনকালেও ভাবিনি।এমন মা র মে রেছে মেরে আবার ছাদেও রেখে এসেছে যদি ভর দুপুরে রেখে আসতো তবে নির্ঘাত নতুন শুটকি আবিষ্কার হতো।চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তো এই নিউজ ঈশান শুটকি, ঈশান শুটকি।”
” ফা জলামো করা বন্ধ কর।এখন ঘুম দে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে।”
” আমার ঘুম আসবে না তুই ঘুমা।”
রাসেল ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো।ঈশান চোখ বন্ধ করে ভাবছে ঈশার কথা।মেয়েটার সামনে বড় বিপদ ইসমাইল তাকেও ছাড়বে না।
৩০.
সকাল সকাল নিজের বাড়ি ফিরে আসে ঈশা এবং অনু।তাদের অবশ্য ফিরিয়ে দিয়ে যান ঈশার ফুফা আবসার।সকালে ঈশানের সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা থাকলেও ঈশা এবং অনু যেতে যেতে বিকাল হয়ে যায়।ঈশানের কেবিনের পাশে আসতে মনে মনে তাচ্ছিল্য হাসলো ঈশা দরজার বাইরে দুইজন সিকিউরিটি গার্ড দাঁড়িয়ে আছে।অথচ তারা কোথায় ছিল যখন তাদের স্যার মার খেয়ে আট তলার ছাদে পড়েছিলো।রাসেল কেবিনের দরজা খুলে ইশারা করে অনুকে প্রবেশ করতে।অনুর পেছন পেছন প্রবেশ করে ঈশা।
কেভিনে প্রবেশ করে টিভির দিকে তাকিয়ে আশেপাশে চোখ বুলালো ঈশা।তার চোরা চাহনি দেখে রাসেল বলে,
” কিছু খুঁজছো ঈশা?”
” রুদবা এসেছে?”
” না রুমা আপু তো জানেই না ঈশান হসপিটালে।”
” তাহলে ডোরেমন কে দেখছে?”
বেডে শুয়ে ঈশান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে টিভির দিকে।সে খুব মনোযোগ সহকারে ডোরেমন দেখছে।তার আশেপাশে কি ঘটছে কে এসেছে এসব যেন তার মাথায় ঢুকছে না।রাসেল হেসে ফেললো ঈশার কথায়।
” ঈশান দেখছে।”
” এত বড় ছেলে ডোরেমন দেখছে!”
অবাক পানে তাকালো অনু।তার কথায় চোখ ইশারায় চুপ থাকতে বলে রাসেল।ঈশা আহাম্মক বনে তাকালো ঈশানের দিকে। সখ আহ্লাদের যে কোন বয়স নেই তা ঈশানকে দেখে বোঝা যায়।
রাসেল এগিয়ে গেলো ঈশানের কাছে,
” ঈশান কে এসেছে দেখ।”
” কে এসেছে তোর ভাবী?”
রাসেল কিড়মিড় করে তাকালো ঈশানের দিকে।ঈশান ঠোঁট বাকিয়ে হাসার চেষ্টা করেও পারলো না।ঠোঁটের কোনে আকস্মিক ব্যথা লাগায় চুপ হয়ে গেল।
” এরা এখানে কেন এসেছে রাসেল?”
” তোকে, মানে রোগী দেখতে এসেছে।”
” রোগী দেখতে আসলে কেউ খালি হাতে আসে?এদের হাতে ফলমূল,জুস কই?অদ্ভুত!”
ঈশানের ব্যবহার বোধগাম্য হলো না রাসেলের।এই ছেলের মনে কি চলছে।
ঈশা গিয়ে ঈশানের মুখোমুখি অন্য বেডে বসলো।অনু ভদ্রতার খাতিরে মুখ ফুটে বলে,
” ভালো আছেন ভাইয়া?”
” হ্যা।তোমায় দেখে একটু বেশি ভালো লাগছে।”
ঈশান এত আদুরে ভাব নিয়ে কথা কেন বলছে অনুর সাথে?শরীর’টা জ্বলে উঠলো রাসেলের।নিজেকে সংযত রেখে বলে,
” রোগী দেখা হয়েছে এবার কি বাসায় ফিরবে?”
রাসেল তাড়া দিতে দমক দিলো ঈশান,
” রাসেল তুই ওদের তাড়িয়ে দিচ্ছিস কেন?ওরা তোকে নয় আমাকে দেখতে এসেছে।তাছাড়া ওদের সাথে আমার কথা আছে।”
ঈশান আড় চোখে তাকালো ঈশার দিকে।মেয়েটা কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে।ঈশা সোজাসাপটা ঈশানকে বলে,
” গতকাল আমায় বলেছেন কেউ নাকি আমায় মা র বে।আমার জানা মতে কারো পাকা ধানে মই আমি দি নাই তাহলে কে মারবে আমায়?”
” কে মা র বে সেটা তোমার না জানলে চলবে তবে তোমার সাবধানে থাকা জরুরি।সবচেয়ে বড় কথা কাল একা একা ওই ভবনে কি করছিলে?এত সাহস পেলে কই?”
” আমার সাহসের তারিফ করছেন?আমার সাহস একটু বেশি।”
” অগ্রীম অভিনন্দন অতি সাহসের কারণে আমার পরিবর্তে তোমায় হয়তো খুব শীঘ্রই এই বেডে দেখবো।”
ঈশা কথা বাড়ালো না। নিজেকে চুপচাপ রেখে পরিস্থিতি সামলালো।
” রুমা আপু আসেনি?”
ঈশান ডোরেমন দেখতে দেখতে বললো।
” না।”
” আপুকে জানানো হয়নি?”
” না।খবরদার তুমিও বলবে না।”
” কিন্তু কেন?এত বড় একটা বিষয় এভাবে আড়াল করবেন কেন?আপনাকে একা সামলাতে পারবে না রাসেল ভাই। ”
” এইজন্যই বলেছি আমি বিয়ে করবো।কিন্তু আমার বিয়ের কথা শুনে মনে হচ্ছে রাসেল খুশি নয়।”
রাসেল ত্যারচা তাকালো।অনুর বিষয় আসতেই তার বুকের ভেতর কেঁপে উঠে।ঈশান কি সিরিয়াস নাকি মজা করছে তা বুঝে এলো না রাসেলের।
ঈশান টিভিটা অফ করলো।পূর্ণ দৃষ্টি রাখলো ঈশার চোখে।নরম হয়ে এলো তার কন্ঠ স্বর।
” গতকাল তোমরা না থাকলে আমার যে কি হতো।পাশের ডোবায় আমার ফোন ছুড়ে ফেলেছিলো দুর্বৃত্ত’রা।যোগাযোগ করার কোন পথ খোলা ছিল না।”
” দুর্বৃত্তরা এতটা সাহস করলো কি করে? নিশ্চয়ই আপনার সাথে তাদের বৈরিতা আছে।আর ওই বিল্ডিংটা কার?”
” ওটা আমার বিল্ডিং গত একমাস কাজ বন্ধ রেখেছি।পুণরায় কাজ চালু করতে আলাপ আলোচনার উদ্দেশ্যে গেছিলাম কিন্তু… ”
দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো ঈশান।রাসেল অনুকে আড়ালে ইশারা করলো ফলে দুজনে বেরিয়ে গেল কেভিন থেকে।রইলো বাকি ঈশান ঈশা।ঈশান চোখ বন্ধ করে রাখলো কয়েক সেকেন্ড তখন আর ঈশা কোন কথা খুঁজে পেলো না।ঈশানের হাতের ব্যান্ডেজ দেখে মন খারাপ লাগলো তার।
” আমার মনে হয় আপনার রুমা আপুকে জানানো উচিত বিষয়টা।”
” রুমা এখানে নেই।ওরা ঘুরতে গেছে।”
” দুলাভাইয়ের সাথে?”
” তো কার সাথে যাবে?অদ্ভুত প্রশ্ন করো তুমি।”
ঈশা থতমত খেয়ে গেলো।তীর্যক চাহনিতে ঈশানের দিকে তাকাতে দেখতে পেলো ঈশান পলকহীন তার দিকে তাকিয়ে আছে।ঈশা ঘাবড়ালো দ্বিধাদ্বন্দে আশেপাশে পরখ করলো কিন্তু না ঈশানের দৃষ্টি সরেনি ছেলেটা তার দিকে তাকিয়ে আছে।ঈশা উঠে দাঁড়ালো বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো।রুমে ফিরতে চোখাচোখি হলো ঈশানের সাথে।বেহায়া ছেলে এখনো তাকিয়ে আছে তার দিকে।না পারতে ঈশা বলেই দিলো,
” সমস্যা কোথায় আপনার?”
” তোমাতে।”
” অদ্ভুত লোক আপনি।গতকাল বাঁচালাম একটি বার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন না।”
” কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কি মুখেই করতে হবে?অন্য ভাবে করা যায় না।”
” অন্যভাবে?”
” এই ধরো এমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো যে কৃতজ্ঞতা সারাজীবন লেপ্টে থাকবে তোমার জীবনে।”
” বুঝলাম না।”
ঈশান আগ্রহ দেখালো।ঈশাকে হাতের ইশারায় কাছে আসতে বললো,
” আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।সেই হিসেবে আমি তোমায় বিয়ে করবো মোটামুটি এক দেড় বছর আমাদের জম্পেশ সুখের সংসার হবে এরপর আমাদের ঘরে কিছু বাচ্চাকাচ্চা আসবে অবশ্য আমার ভালোবাসার দরুনে তুমি বাঁঁচবে কি না কে যানে।”
ঈশা অবাক হলো এই লোকটা কথা টেনে ঠিক কোন পর্যায়ে নিয়েছে হয়তো তার নিজেরো ধারণা নাই।
“যে আপনাকে বিয়ে করবে তার কপালের মতো দুর্ভাগা কপাল দুনিয়াতে আর একটিও নেই।”
” আমার বউয়ের কপাল যদি আমাকে বিয়ে করে দুর্ভাগা কপাল হয় তবে দুর্ভাগা কপালি ভালো।আর সেই কপালটা যেন তোমারি হয়।”
#চলবে___
#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ১৬]
_____________________
৩১.
” আমি একটা জবরদস্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি রাসেল।”
” কি সিদ্ধান্ত?”
” বিয়ের পর এই বাড়িতে তোকে রাখা যাবে না।আমি রিক্স নিতে চাই না।”
” কিসের রিক্স?”
” আমার বউ অনুর রিক্স।”
হতাশার শ্বাস ছাড়লো রাসেল।গত দেড় মাস ঈশানের একের পর এক সিদ্ধান্ত তাকে হতাশার দুয়ারে ঠেলে দিচ্ছে।ঈশানের হাত এখন সুস্থর পথে।এই দেড় মাস যাবৎ ঈশান অফিসের মুখোমুখি হয়নি।টুকটাক কাজ বাড়িতে বসে সম্পূর্ণ করেছে।আজকে অফিস যাওয়ার জন্য প্রস্তুত সে।কতদিন পর নিজের প্রতিষ্ঠানে যাবে ভাবতেই মনটা আনচান করে উঠলো তার।
সেদিন ছিলো মেঘলা ঈশান ছাদে বসে গান শুনছিলো তার পাশে বসেছিলো রাসেল।ঈশানের মনটা হৃষ্ট দেখে সুযোগ কাজে লাগালো রাসেল।জানিয়ে দিলো তার আর অনুর বহুদিনের সম্পর্কের কথা।কিন্তু ঈশান নাছোড়বান্দা সে কিছুতেই অনুকে ছাড়বে না।ঈশাকে নিয়ে মজা নেওয়ার শাস্তি হিসেবে রাসেলকে অনুর দ্বারা জব্দ করছে।রাসেলের ভারাক্রান্ত মন দেখে মনে মনে হেসে লুটোপুটি খায় ঈশান।দেড় মাস যাবৎ ছেলেটাকে জব্দ করে মনে মনে বিজয়ের হাসি হাসলো সে।
” রাসেল অনুর কোন রঙ পছন্দ?আসলে বিয়ের লেহেঙ্গা তার পছন্দের রঙেই কিনবো।”
” তুই এত লাফালাফি করছিস কেন ঈশান?অনুর বাবা মায়ের কি ঠ্যাকা পড়ছে তোর কাছে তারা মেয়ে বিয়ে দিবে?তাছাড়া ঈশাদের বাড়ি গিয়ে তো আর সম্মান বয়ে আনোনি।”
কথাটা বেশ রেগেই বললো রাসেল।ঈশান কিঞ্চিৎ অবাক হওয়ার ভান করে বলে,
” আরে তুই এত রেগে যাচ্ছিস কেন?”
” কই রেগে গেলাম?”
রাসেল বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।ঈশান মতিগতি তার বুঝে আসছে না।সারাটা দিন ঈশা ঈশা করে জান যায় যায় অবস্থা এর মাঝে আবার ‘অনু তোর ভাবী’ ‘অনু তোর ভাবী’ বলে কানের কাছে সঙ্গীত বাজতে থাকে।এসব কী হচ্ছে?ঈশান কি দুই বিয়ে করবে?অবশ্য চার বউ পালার মতো সামর্থ্য তার আছে।করুক সে চার বিয়ে, রাসেল সন্ন্যাসী রূপ ধারণ করে বাকী জীবন কাটিয়ে দিবে।
অফিসের যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়িতে বসলো দুজন।ড্রাইভিং সিটে বসা রাসেলের মুখে রা নেই নিশ্চুপ ড্রাইভিং করতে ব্যস্ত সে।পাশে বসে ঈশান তার বেসুরা গলায় গান ধরেছে।তার গানটা মূলত অনুকে উদ্দেশ্য করে গাওয়া যার কারণে রাসের মনে যেন সিলেন্ডার ব্লাস্ট হওয়ার মতো আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে।ঈশান আড় চোখে রাসেলের দিকে তাকায় আর বলে,
অ..অনু একটু কথা কহো না..
অ…অনু পেছন ফিরে চাহো না..
প্রথম দেখাতে আমি প্রেমে পরেছি তোমার..
দুচোখে আন্ধার দেখি ঘুম আসে না আমার..
রাত্রে বেলা শুয়ে শুয়ে শুধু ভাবি..
তোমায় কিভাবে পাব আমি..
তোমার চোখেতে হারিয়ে যায় আমার এই মন..
” ঈশান প্লিজ তোর বেসুরা গলার গান এবার থামা আমার আর ভাল্লাগছে না।”
ঈশান থেমে গেলো।গরম চোখে তাকালো রাসেলের দিকে।
” তোর ভালো লাগেটা কি?”
“তুই সিরিয়াস তুই অনুকে ভালোবাসিস?”
” অবশ্যই অনুকে ছাড়া তো আজকাল কিছুই বুঝিনা।অনুর অনুরূপ আমার কাউকে চাই না।”
রাসেল শ্বাস ছাড়লো।ঈশান যে তামাশা শুরু করেছে এর শেষ কোথায় কে জানে।কথার মাঝে ফোন এলো ঈশানের, তার মা মাহমুদা ফোন করেছেন।ঈশান দ্রুত ফোন তুলে বলে,
” আমার বউয়ের শাশুড়ী কেমন আছো?”
ঈশানের কথায় কুটিল দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো রাসেল।মাহমুদা বেশ অবাক হলেন ঈশানের কথায় যে ছেলের মুখে গম্ভীরতা এঁটে থাকে সেই ছেলে আজ এত প্রফুল্ল!
” আমার বউমার হাজবেন্ড কী আজ বেশি খুশি?”
” বলা চলে একটু বেশি খুশি।”
” তা কারণটা কি বলা যাবে?”
” একদমি না।কেমন আছো তুমি?”
” বেশ ভালো।রাসেল কোথায়?শেষ বারের মতো তার অনুমতি চাই যে।”
” কিসের অনুমতি?”
” ঈশাকে বিয়ে করতে রাজী হলে তবে আমি ঈশার বাবা মায়ের সাথে আলাপ করবো।”
” মা আমার কথাটা একটু মন দিয়ে শুনো।রাসেল বড় হয়েছে তার চাওয়া পাওয়া আছে।সবচেয়ে বড় কথা সারাজীবনের একটা ব্যপার এই বিষয়ে ওর চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে।”
” আমি তো আমার পছন্দ ওর উপর চাপিয়ে দিচ্ছি না।”
” সেটা আমি জানি মা।তবে বলে রাখা ভালো রাসেল একটা মেয়েকে পছন্দ করে মেয়েটার নাম অনু।তুমিও আশা করি পছন্দ করবে।”
চমকে তাকালো রাসেল।দ্রুত হাতে গাড়ির ব্রেক কষে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে চাইলো ঈশানের দিকে।ঈশান তাকে পাত্তা না দিয়ে কথা বলায় ব্যস্ত।
” রাসেল এ কথা আমায় আগে জানায়নি কেন?”
” লজ্জায় বলতে পারেনি মা।বাদ দাও অনুর ছবি আমি তোমায় পাঠাবো।”
” রাসেলের পছন্দ মানে আমার পছন্দ।আর আমি ভীষণ খুশি তবে ঈশাকে আমার মনে ধরেছিল।”
” এক ছেলের বউ ঈশাকে বানাতে পারোনি তাতে কি হয়েছে?আরেক ছেলে তো আছে।”
” মানে?
চমকে গেলেন মাহমুদা।নিজের কথায় নিজে বেফাঁস ফেসে গেলো ঈশান।জিভে কা ম ড় বসিয়ে কপালে ঠেকালো ডান হাতে।
” মা পরে কথা বলবো এখন আমি ব্যস্ত।”
দ্রুত ফোন কেটে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তে পড়তে নিজেকে তটস্থ করলো ঈশান।তার দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে এখনো তাকিয়ে আছে রাসেল।
” এটা তুই কি বলেছিস ঈশান?তুই আন্টিকে এ কথা কেন বললি?”
” যেটা সত্যি সেটাই বলেছি।তুই অনুকে পছন্দ করিস।”
” কিন্তু তুই অনুকে ভালোবাসিস।”
ঈশান কিঞ্চিৎ হাসলো সিটে গা এলিয়ে বলে,
” আমি অনুকে ভালোবাসি না।কখনো সেই চোখে দেখিনি।তোর আর অনুর মাঝে কিছু একটা চলছে এটা আমি আগেই টের পেয়েছিলাম।কিন্তু তুই আমার কাছে এই বিষয়টা আড়াল করেছিস আমি মনে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।তুই আমার ভাই, বন্ধু আমার সাথে যা হোক বা যা মনে চলে সবটা আমি তোকে সেয়ার করি অথচ তুই করিসনি।মাসের পর মাস লুকিয়ে গেছিস।”
অপরাধবোধে মাথা নুইয়ে নিলো রাসেল।অনেকবার ঈশানকে বলতে চেয়েছিলো কিন্তু ঈশান যদি মেনে না নেয় কিংবা বাড়াবাড়ি করে সেই ভয়ে বলতে পারেনি।
” আমি তোকে বলতে চেয়েছিলাম।কিন্তু ছোট বেলার কথা ভেবে বলিনি।ছোট বেলায় আমার সাথে কেউ বেশি খাতির করলে তুই তাকে আড়ালে মা র তি কিংবা ঝামেলা পাকাতি সেই ভয়ে আমি বলতে পারিনি।”
” ওটা ছোট বেলার কথা।আজ হোক কাল হোক তোর জীবনে কেউ আসবে তাই বলে আমি ঝামেলা করবো?তোর ভাবনা চিন্তার প্রশংসা করতে হয়।”
” সরি ঈশান।এমন ভুল আর হবে না।”
” সরি বলে কাজ নেই। আমার মনে জমানো কষ্ট কোনদিন যাবে না।”
” কি করলে যাবে প্লিজ বল।এবার তো অপরাধবোধে শেষ হয়ে যাবো আমি।”
” তোর শা লি টাকে আমায় দিয়ে দে তাহলে সব মিটমাট।”
রাসেল শব্দ করে হেসে উঠলো।গাড়ি চালানোয় মন দিয়ে বলে,
” দুঃখিত সেই দায়িত্বে আমি নেই।তুই বুনো ওল হলে সে বাঘা তেঁতুল।তোদের মিল হওয়া অবিশ্বাস্যের কাতারে পড়ে।”
৩২.
অফিসের কাজ শেষ করে ঈশাদের ভার্সিটির সামনে অপেক্ষা করছিলো ঈশান এবং রাসেল।রাসেলের ভাষ্যমতে ঈশা অনু আজ ভার্সিটি এসেছে তারা এখনো বের হয়নি।ঈশাকে দেখার লোভ সামলাতে না পেরে বাহানা নিয়ে রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে রইলো ঈশান।রাসেলের হাতে থাকা বাদামের খোসা ছাড়িয়ে ঈশানের হাতে দিলো সে।
” বাদাম ভাল্লাগেনা।”
ঈশানের কথাটা পছন্দ হলো না রাসেলের।কড়া জবাবে সে বলে,
” বাদাম খাওয়া না শিখলে তোর কপালে প্রেম জুটবে না।”
” ওমা তাই নাকি?”
” দেখিস না প্রেমিক প্রেমিকারা পার্কে বসে বাদাম খায়।”
” ওটা তো ভিটামিনের জন্য খায়।”
” তোর মাথা।”
বেশ বিরক্ত নিয়ে বললো রাসেল।ঈশান শব্দ করে হেসে উঠলো মুহুর্তে।ঈশা অনু তখন মাত্র গেটের বাইরে দাঁড়িয়েছে তারা এখনো রাসেলকে দেখেনি।অনু আশেপাশে চোখ বুলাতে রাসেলকে দেখতে পেয়ে ঈশার হাত টেনে এগিয়ে আনে।তাদের পিছন পিছন আসছিলো দিহান।
” ঈশান ভাইয়া ভালো আছেন?আপনার হাতের কি অবস্থা?”
” ভালো আছি।এদিকে কাজ ছিলো ভাবলাম দেখা করি।”
ঈশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলো অনুর পাশে।তার মুখে রা নেই ঈশানের সাথে এই মুহুর্তে তার কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না।হঠাৎ একটি ছেলে দিহানের দিকে তাকিয়ে দিহানকে মা রা র ইশারা করে বিষয়টি চোখ এড়ায়নি ঈশানের।সন্দিহান চোখে দিহানের দিকে তাকাতে গেলে চোখে পড়ে অনুর ঘাবড়ানো মুখ মেয়েটা একবার রাসেলের দিকে আরেকবার ছেলেটার দিকে তাকাচ্ছে।মনভোলা রাসেলের সেদিকে খেয়াল নেই সে ঈশার সাথে আলাপ সারছে।
ঈশান তার কৌতূহল দমাতে পারলো না দিহানের দিকে তাকিয়ে বলে,
” ছেলেটা তোমায় মা র তে ইশারা করলো কেন?”
” আর বলবেন না ফাউল পোলাপাইন।অনুকে প্রপোজ করেছিল অনু নাকচ করেছে বলে ছেলেটা তামশা শুরু করে দেয়।অনেক বুঝিয়েছি লাভ হলো না।তাই এখন বাইরে এসে হুমকি দিচ্ছে।”
রাসেল অনুর চোখে চোখ রাখতে জিভে কা ম ড়ে চোখ বন্ধ করে অনু।রাসেল এবার কি ভাববে?রাসেলের ভাব ভঙ্গিমা দেখে ঠোঁট চেপে হাসে ঈশান।
.
রাসেলের মাথা বেজায় গরম বিষয়টি বুঝতে পারলো ঈশান।ছেলেটা একটু বেশি স্প্রিডে গাড়ি চালাচ্ছে।
” তোর সব রাগ আমার গাড়ির উপর ঝারিস না ভাই।কয়েকদিন আগে হাসপাতাল থেকে ফিরেছি আবার কি হাসপাতাল পাঠাবি?”
” ফা ল তু কথা কম বল।”
” তাহলে কি বলবো বল?তোর মতো ভীরু ছেলে আর জীবনে দেখি নাই।তুই প্রেমিক নামের কলঙ্ক।”
” কি বলিস আমি আবার কি করলাম?”
” তোর উচিত ছিল ছেলেটাকে রাস্তায় গনধোলাই দেওয়া।”
” কাকে?”
” যে ছেলে অনুর পিছনে পড়েছে।”
” ঝামেলা করতে আমার ভালো লাগে না ঈশান।”
” ওহ তাহলে ঝামেলাটা অনুর সাথে করবি তাই না?এসব বাদ দে অনেকদিন হলো বক্সিং খেলি না এবার অন্তত তুই খেল আমি দেখি।”
” বাদ দে।”
” এটা বাদ দেওয়ার বিষয় নয়।আমার হাতে প্রবলেম না হলে খেলা আমি শুরু করতাম।তুই ঈশান শাহরিয়ারের ফ্রেন্ড তোর মাঝে এসব মানায় না প্রেমিকাকে প্রটেক্ট করো রাসেল।”
ঈশানের কথায় হেসে ফেললো রাসেল।এবার একটু মেজাজ ফুরফুরে হয়েছে মনের কোনে থাকা চাপা ভাবটা চলে গেছে।
” তার মানে তুই বলছিস আমি ঝুঁকি নিবো?”
” অবশ্যই।”
” ছেলেটার চ্যাপ্টার শেষ করতে হবে।সো ফাইট রাসেল ফাইট।”
৩২.
কথায় আছে সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে রাসেলের ক্ষেত্রেও বিষয়টি তাই হয়েছে।ঈশানের প্ররোচনায় পড়ে ছেলেটির সাথে আলাদা আলোচনায় বসেছিলো।রাসেল বারবার বুঝিয়েছে অনুর আর তার সম্পর্কের কথা ঘাড় ত্যাড়া ছেলেটি নিজের জেদে অটল ছিলো।না পারতে শেষ পর্যায়ে দুই চার ঘা মে রে শান্ত হয় রাসেল।ঈশান পাশে বসে প্রফুল্লচিত্তে রাসেলের সাহসিকতা দেখছিলো।মনে মনে ভাবছিলো এই না হলো ঈশান শাহরিয়ারের বন্ধু।
টিউশনি শেষে বাড়ি ফিরছিলো ঈশা
সময়টা শেষ বিকেল।মৃদ্যু বাতাস বইছে চারিদিকে।এই সুন্দর মুহুর্তে পিচ ঢালা রাস্তায় একা হাটার মজাই আলাদা।তাই রিক্সা না নিয়ে একা হেটে ঈশা গুন গুন গান গাইতে গাইতে এগিয়ে চলে।তার পিছু পিছু আসছিলো ঈশান।ঈশার সাথে হাটবে বলে আজ সে গাড়ি আনেনি।ঈশা খেয়াল করেনি ঈশান তার পিছু আছে হঠাৎ তার পায়ে পা লাগিয়ে হাঁটা শুরু করে ছেলেটি।
” আপনি এখানে?”
” দরকারে এসেছিলাম।”
” সাহেব বাবু হেঁটে বাড়ি ফিরছে ব্যপার কি?আপনার গাড়ি কই?”
” চাকা চুপসে গেছে।”
ঈশান এক গাল হাসলো।ঈশা ভ্রু কুচকে তাকালো তার দিকে।ইদানীং এই ছেলের ভালো ব্যবহার তার ঠিক হজম হচ্ছে না।ঈশা ভাব নিয়ে বলে,
” আপনি কি আমার সাথে যাবেন?”
” গেলে কি সমস্যা আছে নাকি?”
” না সমস্যা নাই।”
” আজকের আবহাওয়া সুন্দর তাই না?”
” হুম।”
দুজনের মাঝে ভীড় জমালো নিরবতা।কিন্তু ঈশানের তো তা সহ্য হচ্ছে না কারণ ঈশার সাথে বকবক করার লোভ সামলানো যাচ্ছে না যে।তাই কয়েক মিনিট পর পর এটা ওটা বলে ঈশাকে ব্যস্ত রাখছে ঈশান।কিছুটা দূর যাওয়ার পর ঈশা খেয়াল করে রাস্তার পাশে বালু রাখা আর সেই বালুতে পাঁচটি কুকুর ছানা গড়াগড়ি করছে।ছোট পায়ের তুলতুলে কুকুরছানা গুলো দেখতে একটু বেশি সুন্দর।
” ঈশান দেখুন ছানা গুলো সুন্দর না?জানেন আমার ইচ্ছে বাড়িতে বিড়াল পালার কিন্তু আম্মুর এলার্জি আছে তাই হচ্ছে না।ইচ্ছে করছে একটা ছানা নিয়ে আদর করি।”
” একটা ধরে আনি?”
” আরে পারবেন না আঁচড় দিবে।”
ঈশান নিজের সাহসিকতার পরিচয় দিতে বুক ফুলিয়ে বলে,
” এটা আর কি এমন কাজ আমি অবশ্যই পারবো।”
” তবে নিয়ে আসুন।”
ঈশান এগিয়ে গেলো।ছোট্ট একটা ছানা হাতে তুলতে মা কুকুর ঘেউ ঘেউ শব্দ তুলে এগিয়ে এলো।মা কুকুরের পিছু পিছু এলো আরো দুটো বড় কুকুর।মোট তিনটে কুকুর ঘেউ ঘেউ শব্দে এগিয়ে এলো ঈশানের দিকে।বেচারা ঈশানকে কুকুর ঘিরে ধরতে ঈশা পিচ ঢালা রাস্তায় দৌঁড়াতে শুরু করে।আগে নিজের জীবন বাঁচানো বলে কথা ঈশান শাহরিয়ারের যা ইচ্ছে হোক।
ঈশাকে ছুটতে দেখে তার পেছন পেছন দৌড়াতে শুরু করে ঈশান।দুজনে সমান তালে দৌড়াতে থাকে তাদের পিছন পিছন দৌড়ে আসে বড় তিনটে কুকুর এছাড়াও ছানাগুলো।অনেকটা পথ ছুটে হাঁপিয়ে গেলো দুজনে।ঈশার জুতা মাঝ পথে ছিড়ে গেলো সেই ছেঁড়া জুতা রেখে দৌড়াতে শুরু করে সে।কিন্তু অল্প পথ যেতেই পা ধরে দাঁড়িয়ে যায়।
” আমার পায়ে ব্যথা লাগছে ঈশান।”
” আরে আসো কুকুর তোমার পিছনে।”
ঈশা পুণরায় দৌড়তে থাকে।এই বিপদের মুহুর্তে ফায়দা তোলে ঈশান।ঈশার সাথে দৌড়তে দৌড়তে বলে,
” ঈশা তোমায় আমি একটা সিরিয়াস কথা বলতে চাই।”
” এই সময় আপনার সিরিয়াস কথা মনে পড়ছে।পরে বললে হয় না?”
” না হয় না আমি এক্ষুনি বলবো।”
” বলুন তবে।”
ঈশান দম নিলো পেছনে তাকিয়ে দেখলো কুকুর গুলো আরো জোরে ছুটছে।
” ঈশা আমাকে ভালোবাসবে?”
” কিহ!”
” মানে আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি বাসবে?”
” পা গ ল হয়েছেন?কুকুরের দৌড় খেয়ে উলটা পালটা কথা বলছেন কা ম ড় খেলে কি করতেন?”
” আমি সিরিয়াস ঈশা।বলো ভালোবাসবে।
” কখনো না একটা পা গ ল আপনি।”
” এই পা গ ল টাকে ভালোবাসো ঈশা প্লিজ।”
” ফা ল তু লোক।”
” এই ফা ল তু টাকে ভালোবাসো প্লিজ।”
” অসহ্যকর।”
” এই অসহ্যকর মানুষটাকে ভালোবাসো প্লিজ।”
ঈশা উত্তর দিলো না।তার পায়ে কিছু লেগেছে।পায়ের ব্যথায় থামতে কুকুরের দৌড় দেখে আবারো ছুটতে থাকে।
” যদি বলো ভালোবাসবে তবে এই বিপদ থেকে রক্ষা করবো আর না হয় কুকুরগুলোর কাছে রেখে যাবো।”
” বেয়াদব লোক একটা।”
” আমি জানি আমি বেয়াদব।এবার বলো বেয়াদবটাকে ভালোবাসবে।”
” না।”
ঈশার পা থেমে গেলো মাথাটা ঘুরছে জন্মের শিক্ষা হয়েছে তার।ঈশান তার হাত টেনে ধরলো হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,
” দেখো কুকুর এসে গেছে, এবার বলো ভালোবাসবে।”
ঈশা না পারতে হ্যাঁ বলে দেয়।ঈশান একগাল হাসি দিয়ে ঈশাকে কোলে তুলে নেয়।কুকুর আসতে দেখে পুণরায় দৌড়াতে থাকে।ঈশা অবাক হয় এই ছেলের এত এনার্জি?
মেইন রোড়ে আসতে একটি সিএনজি দাঁড় করায় ঈশান এবং দ্রুত উঠে এই ভয়াবহ স্থান থেকে প্রস্থান নেয়।সিএনজির দরজা দিয়ে মাথা বের করে কুকুরগুলোর দিকে তাকিয়ে হাসে ঈশান।কুকুর গুলো এখনো ঘেউ ঘেউ করছে তারা যেন তাদের ভাষায় বোঝাতে চাইছে
” এলাকায় আরকেবার আসলে খবর আছে তোদের।”
ঈশানের মন আজ বেজায় খুশি।সেই খুশিতে বলে কুকুর গুলোর দিকে কিস ছুড়ে বলে,
” কুত্তার বাচ্চা ফুটফুটে সুন্দর।”
#চলবে___