অবেলায় তোমার আগমন পর্ব-৮+৯

0
476

#অবেলায়_তোমার_আগমন🥀
#Adrrija_Aman(লেখনিতে)
#পর্ব_সংখ্যা_৮
[✖️কার্টেসি ছাড়া কপি নিষিদ্ধ✖️]

বাড়িতে এসেই সোফার ওপর ধপ করে বসে পড়লেন শরৎভাই।আমাকে দরজার সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ধমক দিয়ে বললেন…

“সার্কার দেখানোর জন্য নিয়ে আসিনি তোকে!ঘরে আয়।”

আমি ঘরে এসে ব্যাগটা এক কোনায় ঠেস দিয়ে রেখে দিলাম।নিজের ঘরে যাবার জন্য পা বাড়াতেই শরৎভাই ডাক দিলো আমাকে।বললো…

“এই কই যাচ্ছিস শুনে যা।”

লোড সেডিংয়ের জন্য লিফ্ট অফ ছিলো গুণে গুণে পুরো ১০ তালা সিড়ি বেয়ে বেয়ে ওপড়ে উঠেছি আমরা।পুরো শরীর ঘেমে একাকার।একটা লম্বা শ্বাস ছেড়ে ওনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম আমি।উনি আদেশের সুরে বললেন…

“ফ্যানের সুইচটা অন করে দে।”

বিনা বাক্যে গিয়ে ফ্যানটা ছেড়ে দিলাম আমি।ওনার সামনে থাকা সোফাটার ওপর গিয়ে ধপ করে বসে পড়লাম।আমি সোফায় বসা মাত্রই উনি আমাকে ধমক দিয়ে বলে উঠলেন…

“এই তোকে বসতে বলেছি আমি?বসলি কেনো?”

আমি অবাক হলাম খানিকটা।মনে মনে ভাবলাম এমন করছেন কেনো উনি?বিরক্তি নিয়ে দাঁতেদাঁত চেপে বলে উঠলাম…

“আপনাকে বলে বসতে হবে শরৎভাই।”

শরৎভাই অকৃতজ্ঞের মতো আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে বলে উঠলেন…

“যা এক গ্লাস শরবত বানিয়ে নিয়ে আয়,যা গরম পড়েছে।এর মাঝে লোডশেডিং এর জন্য সিড়ি বেয়ে এসেছি এতোদূর,তারওপর সাভার গিয়ে আবার এখানে ফেরত এলাম,আর তুই এমন অকৃতজ্ঞের মতো আমার কোনো সেবা যত্ন করছিস না,বাড়িতে মেহমান আসলে যে আদর যত্ন করতে হয়,ফুপি শেখায়নি তোকে?”

আমি রাগলাম অনেকটা,ওনার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালাম একবার।এরপর জোড়ে জোড়ে কদম ফেলে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম।ধুমধাম আওয়াজ করে করে কাজ করছি আমি।অনেকটা রাগ লাগছে।লোকটা যখন তখন যা ইচ্ছে তাই করে,যখন ইচ্ছে মারে,আবার জ্বালায় এই খচ্চর লোকটার প্রেমেই পড়তে হলো আমার ভেবেই নিজের ওপর রাগ লাগলো।লেবুর চিপে চিপে লেবুর ওপর রাগ ঝাড়ছি আমি।
রান্না ঘর থেকে থালাবাসনের শব্দ পেয়ে রান্নারঘরের দিকে দেখলো শরৎ।শ্রীজা দাঁতেদাঁত চেঁপে বিরবির করে কি যেনো বলছে আর শরবত বানাচ্ছে।দেখে হালকা হাসঁলো ও।পাশের ঘর থেকে মা এসে বললেন….

“এই শ্রীজা কি করছিস ওমন শব্দ করে?”

আমি কটকমট চোখে একবার ড্রইংরুমের দিকে তাকালাম।রেগে মেগে বেশ জোড়েই বললাম…

“দেখছো না শরবত করছি,তোমার ভাইয়ের ছেলের জন্য।”

আম্মু আমার দিকে অবুঝের মতো তাকিয়ে বলে উঠলেন…

“তো ওমন করে রাগার কি আছে,শরবতই তো করছিস,বেচারা কতোদূর থেকে জার্নি করে এসেছে, তোকে বলিয়ে বলিয়ে শরবত বানাতে হবে?এতোটুকুও জ্ঞান নেই তোর?”

আমার বেশ রাগ লাগলো এবার।আগের চেয়ে দ্বিগুণ হলো তা।আমি বললাম…

“তোমার ভাইয়ের ছেলেই শুধু জার্নি করে এসেছে,আমি তো আকাশে উড়ে এসেছি,লোডশেডিংয়ের জন্য তো উনি একাই ১০তালা সিড়ি বেয়ে ওপড়ে উঠেছেন আর আমাকে তো লোকে কোলে করে নিয়ে এসেছে তাই না?”

মা আমার দিকে একবার শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো,রান্নাঘরে এসে কিছু না বলেই শরবতের গ্লাসটা হাতে করে নিয়ে গেলো।ড্রইং রুমের দিকে।আমি বেসিনের সামনে গিয়ে টেপটা ছেড়ে দিয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম এরপর ঘরে এসে বিছানার ওপর শুয়ে পড়লাম।ওপরে তাকালাম আমি সিলিংয়ে ফ্যান ঝুলছে।নিজের গতিতে ঘুরে চলছে ফ্যানটা।পাশে থাকা ফোনে নটিফেকেশন বেঁজে উঠতেই ফোনটা হাতে নিলাম আমি।ওয়াটস্ এপ এ গিয়ে দেখলাম অনুদির ফোন।দ্রুত ডায়েল করলাম আমি।ডায়েল করার দু সেকেন্ডের মাঝের ফোনটা তুললো দি।মনে হচ্ছিলো আমার ফোনের অপেক্ষাই করছিলো দি।ফোনের ওপাশ থেকে দি বললো…

“কি খবর কেমন আছিস?”

“আর কেমন এই তো চলছে দিনকাল কোনোরকমে আরকিহ্।”

দি প্রশ্ন করলো…

“সামনে তো ঈদ বাড়িতে জাবিনা নাকি?মায়ের ওপর এভাবে রাগ করে থাকলে হবে?”

আমি দিকে বললাম…

“বাড়িতে এসেছে ইকটু আগে,ভেবেছিলাম জাবো না,কিন্তু হুট করেই শরৎভাই কোথাথেকে এসে ঝামেলা টামেলা করে নিয়ে এলো আমাকে এখানে।”

দি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো…

“শরৎ এনেছে তোকে?মা বলেছিলো নাকি?”

আমি বললাম…

“না,মা বোধয় মামনিকে বলেছিলো,আর মামনি শরৎভাইকে। তো কেমন চলছে দিনকাল মিহাদ ভাইয়ের কী খবর,সে কোথায় এখন?”

দি হাসঁলো বললো…

“দিনকাল তো ভালোই চলছে,এখন তো বাড়িতে আসেনি বাহিরে আছে কাজে ইকটু,এসে পড়বে ঘন্টাখানেক পরে।”

আমি হাঁসলাম বললাম…

“তো শ্বশুড়বাড়ীর লোকেরা কেমন?নতুন বউকে আদর আপ্যায়ন ভালো করে করছে তো নাকি?”

দি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো…

“আর আপ্যায়ন শ্বশুড়বাড়ী আর যেতে পারলাম কই,বিয়ে তো পালানোর পর পরই হয়েছিলো,এরপর দুদিন হোটেলে থেকেই, ইংল্যান্ডে এসে পড়তে হলো।”

আমি অবাক হলাম,কৌতুহল নিয়ে বলে উঠলাম…

“ও বাড়ির লোকেরা বিয়ের কথা জানে আদেও?তোদের কার্যকলাপ জানলে যদি পরে জানতে পারে,পরে কি হবে ভেবে দেখেছিস?”

দি হাসঁলো।আমাকে অভয় দিয়ে বলে উঠলো…

“আরে বেটি চীল কর,ওরা সব জানে।আর মিহাদের মা মানের আমার শ্বাশুড়ীমা তো সেই,পুরাই জোস, আগের দিনের কোনোকিছুই তার মাঝে নেই,কথা বললে মনে হয় যেনো বান্ধবীর সাথে কথা বলছি।ইকটু আগেই তো কথা বললাম,সে কি বায়না কেনো ওখানে গেলাম না,মিহাদকে তো আচ্ছামতো বকে দিয়েছে।বেচারার জরুরী কাজ ছিলো তাই কদিনের মধ্যেই ফিরতে হয়েছে,বাড়ির লোকদের সাথেও দেখা সাক্ষাত করতে পারেনি ঠিক মতো।”

আমি হাসঁলাম,বললাম…

“তাহলে তো ভালোই,বান্ধবী হলো একটা।”

“হুম,তো তোর শরৎভাইয়ের খবর কি?মশাইয়ের রাগ কমেনি এখনো?”

দির কথা শোনা মাত্রই মন কেমন করে উঠলো আমার।আমি হেঁসে বলে উঠলাম…

“আর আমার লোকটা কোনোদিনও আমার ছিলো নারে,কাউকে নিজের করে চাইলে যে এতোটা বেহায়া হতে হয়,জানা ছিলোনা আমার।মনকে কিছুতেই মানাতে পারি না,ওনার সময় আর আত্নসম্মান নামক কোনো শব্দ থাকে না আমার মাঝে,লোকটাকে আমার চাইই,নিজের মনটাকেও মানাতে পারি না।”

দি হাঁসলো বললো…

“ভালোবাসার ক্ষেত্রে আত্নসম্মানকে প্রাধান্য দিলে,ভালোবাসার তোর জন্য নয়।ভালোবাসতে হলে ইকটু বেহায়া হতেই হয়,তা না হলে তাকে পাওয়া যায় না।পুরো জীবনের জন্য একটা মানুষের মন পাওয়া,তো চারটেখানি কথা নয় শ্রীজা।আত্নসম্মান যারা আগে দেখে যাদের ইকটু বেশিই সম্মান তারা কখনো ভালোবাসতে জানে না,আত্বসম্মান সবার ক্ষেত্রে দেখানো গেলোর কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেখানোটা ভুল ছাড়া কিছুই না।”

আমি হাসঁলাম বলে উঠলাম…

“জানি তো দি,জানি বলেই তো ওনাকে ভালোবাসি আর এতোকিছু সহ্য করে আসছি,লোকে তো কতো কথাই বলে,সবার কথায় তো আর নিজেকে পরিচালনা করা যায় না।তারা তো আর আমাকে বুঝবে না।”

দি হাঁসলো বললো…

“তো এখন বল তোর সংসারের কি খবর…”

আমি বললাম…

“আমার আবার সংসার মানুষটাকেই গোছাতে পারলাম না,গুছিয়ে নেই আগে,পরে দেখা যাবে।”

হুট করে মা ঘরে এলো।আমায় বলতে লাগলো…

“কিরে শ্রীজা কার সাথে কথা বলিস এতো?কখন থেকে ডাকছি তোকে,কোনো খবর নেই,বকবক করেই চলছিস।”

আমি ভয় পেয়ে গেলাম।দিও বোধয় হালকা ভয় পেলো।আমি বললাম…

“আমার বান্ধবী মা,নুপূর ফোন দিয়েছে, জিঙ্গেস করছে ভালো করে পৌঁছেছি কিনা।”

মা আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো…

#চলবে…

#অবেলায়_তোমার_আগমন🥀
#Adrrija_Aman(লেখনিতে)
#পর্ব_সংখ্যা_৯
[✖️কার্টেসি ছাড়া কপি নিষিদ্ধ ✖️]
আম্মু আমার দিকে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো…

“নুপূর ফোন দিয়েছে তোকে?তাও এই সময়?”

আমি আমতা আমতা করে বললাম…

“হ্যা ফোন দিয়েছে,ফোন দেয়ার কোনো সময় থাকে নাকি?ফ্রেন্ডের কাছেই ফোন দিয়েছে প্রেম করতে তো আর দেয়নি,ও এখন লাইনে আছে পরে কথা বলছি তোমার সাথে।”

আমার এমন উত্তর পেয়ে মা কিছু একটা ভেবে চলে গেলো।মা ঘর থেকে বেরোতেই আমি দ্রুত কদমে বেলকণির দিকে এগিয়ে গেলাম, কারণ বেলকণি থেকে ড্রইংরুমে কথা শোনা যায় না।ফোনটা কানের পাশে চেপে মুখের একপাশে হাত নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে দিকে বলে উঠলাম…

“রাখছি দি মা এসেছিলো,কোনোমতে কথা কাটিয়েছি কাল ফোন দিবো,বুঝে গেলে সমস্যা।”

দি বুঝতে পারলো হয়তোবা খানিকটা ভয় পেলো বলে উঠলো…

“আচ্ছা আচ্ছা রাখ এখন,পরে তোর সমস্যা হবে।”

আমাকে রাখতে বলে দি নিজেই লাইনটা কেটে দিলো। আমি ফোনের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসঁলাম দিয়ের জন্য ভালোই লাগছে,মানুষটা তার ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পেয়েছে।তার সাথে সংসার করছে।তবে ইকটু ইকটু খারাপও লাগছে এই ভেবে যে, এবার রোজার ঈদটা দিকে ছাড়া কাটাতে হবে।ইফতারের পরের সময়টাতে আমাদের কথা কাটাকাটি হতো বেশি,কারণ ইফতারির পরের সময়টাতে যে কাজগুলো থাকে সেগুলো করার মতো আর শক্তি ইফতারির পরে থাকে না।সকলে বেশ ক্লান্ত হয়ে পরে,সাহেরীর সময় তো খাবার গরম করা নিয়েও বেশ ঝগড়া হতো।একবার তো ঈদের দিন জামা নিয়েই ঝগড়া বেধেঁছিলো আমাদের মাঝে।সে কি ঝগড়া।পরে দি নিজেই ওর প্রিয় জামাটা আমাকে পড়তে দিয়েছিলো।জীবনে চলার অনেক পথেই দি সেক্রিফাইস করেছে,আমিও করেছি কিছু কিছু।তবে ফেমেলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো দিই আমাকে বেসেছিলো।ওর সাথে আমার ঝগড়াও হতো অনেক।জীবনের এমন একটা ঈদ যে ঈদটা কাটাতে হবে দিকে ছাড়া,দি তো বিডিতেই নেই।কতোটা একাকিত্বের মাঝে আছে দি ভাবতেই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।অনেক জল্পনা কল্পনা করতে করতে ঘরে এসে বসলাম।আমি ঘরে আসা মাত্রই আম্মু আমার ঘরে এলো,হাতে নীল রঙয়ের একটা নতুন চাদর,সাথে কোলবালিশ সহ বালিশের দুটো কাভার।আম্মু চাদর আর কাভারগুলো বিছানার ওপর রেখে,আমাকে আদেশের সুরে বলে উঠলো…

“বিছানায় এগুলো বিছিয়ে নে।আর ঘরটা ইকটু গোছা।”

আমি আম্মুর দিকে আহাম্মকের মতো তাকিয়ে বলে উঠলাম…

“এইগুলো এখানে কেনো?বিশেষ কোনোদিন নাকি আজ?নতুন চাদর বিছাতে বলতেসো।”

আম্মু বললো…

“ওহ্ আমি তো বলতেই ভুলে গিয়েছি, আজ শরৎ যাবে না, বেশ রাত হয়েছে, আমিই যেতে বারণ করেছি ওকে।রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে ও আসবে, তাই দ্রুত ঘর দোর গোছা।আর খাবার পরিবেশন করবি তুই।”

আমি বললাম…

“আমি কেনো?আর শরৎভাই আমার ঘরেই ঘুমোবে কেনো?গেস্টরুমটা ঘুছিয়ে দিলেই তো পারো।”

আম্মু চোখ পাকিয়ে তাকালো আমার দিকে, বেশ জোড়েই ধমক দিয়ে বলে উঠলো…

“আহাম্মক মেয়ে,আক্কেল জ্ঞান হয়নি তোর এখনো?শরৎ কেনো গেস্টরুমে ঘুমোবে?ও কি গেস্ট?তোর নানুর বাড়িতে আমরা গেলে কি তোর বাবা গেস্ট রুমে ঘুমোয়?আর শরৎ কি তোকে বিয়ে করেছে আলমারিতে শো পিস হিসেবে সাজিয়ে রাখার জন্যে নাকি?শুধু জাবিতে পড়লেই হয় না।ঘর সংসার করার জন্য আক্কেল থাকা লাগে।দ্রুত আয়।”

আম্মুর ধমন খেয়ে চুপ করে রইলাম আমি।সত্যিই তো বাবা তো কখনো গেস্ট রুমে ঘুমোয় না।কিন্তু আমি আর শরৎভাই এক ঘরে কেনো?লোকটা আজ আসুক।আমি কিছু বললেই ঢং করবে আর তলে তলে ঠিকই টেম্পু চালাবে,চালানো বের করছি টেম্পু। এসব ভাবতে ভাবতে ঘর গুছিয়ে নিলাম আমি।

খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষে ঘরে এলেন শরৎভাই।ওনার আগেই আমি ঘরে এসে বসে ছিলাম।উনি বিছানায় বসে বসে ফোন টিপছেন আমি।ঘর থেকে বেলকণিতে চলে গেলাম।নুপূরকে একটা ফোন করলাম।রিসিভ করা মাত্রই।আমি রাগ ঝাড়া শুরু করলাম ওপর।বললাম…

“কিরে এই লোকের সাথে এবার তোরাও তাল মেলাতে শুরু করেছিস তাই না।”

নুপূর বোধয় ভয় পেলো।জানা শর্তেও অবুঝের মতো প্রশ্ন করলো…

“কোন লোক?কিসের তাল কোন গাছের তাল?কে কোন তালের সাথে কোন তাল মেশালো আবার? কিছুই বুঝলাম না আমি,ইকটু বুঝিয়ে বল তো দোস্ত।”

আমি রেগে গেলাম রাগা শর্তেও ফিসফিস করে বলে উঠলাম…

“চুপ একদম চুপ।এখন সাধু সাজা হচ্ছে।শরৎভাইয়ের সাথে প্লেন করে তোরাই আমাকে এখানে পাঠিয়েছিস, তাই না।”

নুপূর হাসঁলো বলে উঠলো…

“পাঠাবো না তো কি করবো,তুই যা শুরু করেছিস।একা একা এই হলে তুই থাকবি?পাগলে পেয়েছে তোকে আর কিছু না।বাদ দে এমন ফিসফিস করছিস কেনো?জোরে কথা বল”

আমি দাঁতেদাঁত চেপে বলে উঠলাম…

“যমরাজ পাশের ঘরেই আছেন শুনলে কেল্লাফতে।”

নুপূর ওপাশ থেকে হু হু করে হেঁসে উঠলো,বললো…

“বাহ্ জিজুকে তো ভালোই ভয় পাস তুই।”

আমি বললাম…

“আমি কাউকে ভয় টয় পাই না।শোন আমি একবার আসি এরপর দেখিস আমার সাথে এমন করার পরিণাম কতো ভয়াভহ হয়।”

নুপূর হাসঁলো, খানিকটা ভয় পাবার ভান করে বলে উঠলো…

“ওরে আল্লাহ্,ভয় পাইসি আমি,অনেক ভয় পাইসি।শ্রীজা এসে আমাকে খতম করে দিবে।এখন কই লুকাবো?”

আমি বললাম…

“এই ঢং করবি না একদম,তোরা আমার ফ্রেন্ড না ওই শরৎতের চেলা বল তো?আমাকে সাপোর্ট না করে তোরা এসব করছিস পরিণাম ভালো হবে না নুপূর আমি আসি একবার তোর হাড়গুড় গুঁড়ো করে গ্লুকোজ বানিয়ে খাবো আমি।”

শরৎ ভাই হুট করে পাশের ঘর থেকে বলে উঠলো…

“কার সাথে এতো কথা বলছিস তুই?”

আমি বললাম…

“তা জেনে আপনার কি?আপনি তো আর বউ মানেন না আমাকে কে।যার সাথে মনচায় কথা বলবো, যার সাথে ইচ্ছে পালিয়ে যাবো।আপনার কি তাতে?”

শরৎভাই কিছু বললো না তবে আমি স্পষ্ট তার এগিয়ে আসার শব্দ পেলাম।তাড়াহুড়ো করে ফোনটা কেটে দিলাম আমি।শরৎভাই বেলকণিতে এসে বললেন…

“দ্রুত ঘরে আয় ঘুম পেয়েছে আমার।”

“আপনি ঘুমোননা আমি কি ঘুমোতে বারন করেছি নাকি?”

শরৎভাই রাগলো বোধয় বলে উঠলো…

“তো বেলকণির দরজা খুলে ঘুমোবো আমি?লাইট অফ কর দরজা লাগা।”

আমি কোমড়ে হাত রেখে বলে উঠলাম…

“পারবো না।”

শরৎভাই রেগে মেগে তাকালেন আমার দিকে।আমি বললাম…

“আপনার সাথে এক ঘরে ঘুমোতে পারবো না আমি।আমার অস্বস্তি হয়।”

শরৎভাই এমন ভান করলেন যেনো তার কিছু যায় আসে না।বললেন…

“তো আমি কি করবো?তোর অস্বস্তি হয়,আমার তো হয় না।দ্রুত কর কাল কাজ আছে আমার, দ্রুত উঠতে হবে।তোর মতো এতো ফালতু সময় নেই আমার।”

বলেই চলে যেতে লাগলেন উনি।আমি ওনার পেছন পেছন যেতে যেতে বলে উঠলাম…

“একা একটা অবলা মেয়ের সাথে ঘুমোতে চাচ্ছেন আপনি!যাকে আপনি বউই মানেন না।আমার সন্দেহ্ হচ্ছে শরৎভাই।আপনার মনে কোনো কুমতলব টতলব নেই তো।”

অনেকটা চটে গেলেন শরৎভাই।আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললেন…

“তুই কি আমার ক্যারেক্টার নিয়ে প্রশ্ন তুলছিস?”

আমি ওনাকে এভাবে এগিয়ে আসতে দেখে হালকা ভয় পেলেও,মনে সাহস যোগার করে বলে উঠলাম..

“এমন করে একা একটা অবলা মেয়ের ঘরে জোড় করে ঘুমোতে চাইলে তো ক্যারেক্টার নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই শরৎভাই।”

শরৎভাই এগিয়ে আসতে লাগলেন আমার দিকে আমি পেছিয়ে যেতে লাগলাম হুট করেই…

#চলবে…