অবৈধ বিয়ে পর্ব-০১

0
671

#অবৈধ_বিয়ে
লেখক : Sabriha Sadi
পর্ব : ১

রেপ (ধর্ষণ) করার জন্যে যে মেয়েটাকে তুলে আনা হয়েছে। রাজ তাকে দেখবার জন্যে রুমে ডুকল।

রুমের এক কোণায় বসে কান্নারত মেয়ের দিকে তাকিয়ে রাজ বড় ধরনের একটা ধাক্কা খেলো।

এই মেয়ে? এই মেয়ে কে তার সঙ্গপঙ্গ তুলে এনেছে রাত কাটানোর জন্যে? চেনা মুখটা দেখে রাজ আর ঠিক থাকতে পারল না। এই মেয়েরটার জন্যে একটা অন্য মেয়েকে তুলে আনা হয়েছিল, সে মেয়েটাই নাকি এটা?

ঘরের কোণে বসে থাকা মেয়েটি রাজের দিকে অবাক হয়ে ফেলফেল চোখে তাকিয়ে আছে।

রাজ রানির চোখে পানি দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো।

– এই কুত্তার বাচ্চা।
– কি হয়েছে দোস্ত?
– কি হয়েছে? ওই কোন কুত্তার বাচ্চা মেয়েটাকে তুলে এনেছিস। ভালোই ভালোই তারাতারি বলে ফেল। দেখ আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। তারাতরি বল। কোন জানোয়ারের বাচ্চা এটা করল।

একটা ছেলে আড়াল থেকে বের হয়ে এলো।
– বস, আমরা সবাই মিলে এটা করেছি।
– এই জানোয়ারের বাচ্ছা রাস্তায় আর মেয়ে পেলি না? একে তুলে আনতে হলো তোদের? আরে এই কুত্তার বাচ্চা জানিস তুই ও কে? এই তোরা কেউ ওর সাথে খারাপ কিছু করিস নি তো? সত্যি করে বলবি না হলে শালা সব গুলি কে এখানেই পুঁতে রেখে দিব।

রাজ পাগলের মতো সবাই কে জিজ্ঞেস করতে লাগল, রানির কোন ক্ষতি করেছে কি না ওরা।
– রাজ তুই শান্ত হো। আচ্ছা ভিতরে কে আছে? তুই এমন করছিস কেন?
– ভেতরে কে আছে? যা দূর থেকে দেখে আয় ভিতরে কে আছে। এই শালার বাচ্চারা কাকে ধরে নিয়ে এসেছে।
কিরে এখনো বলছিস না। কেউ ওর সাথে খারাপ কিছু করেছে কিনা। বলবি নাকি সব গুলি কে……..

– বস বস, কেউ কিছু করে নি।
– সত্যি করে বল। পরে জানতে পারলে……
– বস সত্যিই বলছি। আমাদের এখন থেকে মেয়েটার সাথে কেউ খারাপ কিছু করে নি। রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, ও আসছিল। আর মেয়েটার সাথে আমাদের আগে ঝামেলা হয়েছিল। তাই,,,
– কি ঝামেলা হয়েছিল তোদের সাথে? বল।
– আসলে একটা লোককে টাকার জন্যে মেরেছিলাম, পরে মেয়েটা এসে বাধা দেয়। সে দিন কিছু বলি নি। কারণ রাস্তার সব মানুষ জমা হয়ে গিয়ে ছিল। তাই আজ রাগে এই মেয়েটাকেই রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এসেছি। বস মাল টা কিন…………
– কি বললি তুই? কুত্তার বাচ্চা, এই জানোয়ারের বাচ্চা কি বললি তুই ওকে? ( রাজ ছেলে টাকে মারছে আর বকছে।)

– বস কিছু না।
– কি বললি তুই ওকে? কি বললি তুই? তোর সাহস কত বড়। তুই কি বললি ওকে?
– বস ভুল হয়ে গেছে। আর হবে না মাফ করে দিন।
– সম্মান দিয়ে কথা বলবি। ম্যাডাম বলে ডাকবি ওকে।
– ঠিক আছে বস।

এদিকে রাজের বন্ধু মাফি রুমে না ডুকে আড়াল থেকে দেখল রানি বসে কান্না করছে। মানে রানিকে তুলে এনেছে তারা? আর তাই রাজের এত রাগের কারণ?

রাজ একটা চেয়ারে বসে সিগারেট জ্বালাল।

ছেলেদের এই এক সমস্যা। কিছু হতে না হতেই সিগারেট জ্বালিয়ে দিতে হয়। এতে নাকি তাদের টেনশন কমে। এমনও হয়?

রাজ সিগারেট জ্বালিয়ে দিল। সিগারেট টা জ্বালালে মনে হয় তার কষ্ট গুলিকে জ্বালিয়ে দিয়েছে। সেই এক সময় পুড়তে পুড়তে ছাই হয়ে যায়। রাজের মনের কষ্ট টা এতে একেবারে না থামলেও, কমে।

– রাজ।
– বল।
– দেখ যা হবার তা তো হয়েই গেছে।
– কি হবার হ্যাঁ? কি হয়েছে? দেখ মাফি তুই জানিস রানি কে আমার নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি। ও আমাকে মেনে নেয় নি। বার বার ফিরিয়ে দিয়েছে। কুত্তার মতো ঘুরেছি ওর পিছনে ও তারপরেও মেনে নেয় নি। আমাকে ওর পাশে রাখে নি। দেখ আমি এখনো ওকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসি। আর সারাজীবন ভালোবাসব। কিন্তু আমি ওর ক্ষতি কোন দিন চাইতাম না আর চাইও না। আমি মদ সিগারেট এই সব নেশার মাঝে ভালোই ছিলাম। তুই এই কথা বলেছিলি। আমি অনেক দিন এই গ্রুপে থাকিনি। কারণটা শুধু রানি। তোর উপর গ্রুপ রেখে আমি নেশায় কাটাতাম। তুই তো জানিস এই নেশার জন্যে আমি নিজের বাড়িতে না গিয়ে আমার ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকি।
তুই এই মেয়ের নেশার কথা বলে সব টা নষ্ট করে দিলি।
– আমি তো তোর ভালোর জন্যে..
– চাই না আমার এত ভালো।
– আচ্ছা মাথা ঠান্ডা কর।
-……. ( রাজ আপন মনে সিগারেটের ধোওয়া উড়াতে ব্যস্ত।)
– এখন কি করবি রানি কে?
– তুই চলে যা।
– আর তুই?
– দেখি।
– রাত তো ৮ টা বেজে গেছে রানি কে নিয়ে কি করবি?
– সেটা আমি বুঝে নিব। তুই ওদের নিয়ে চলে যা।

মাফি আর তার দল সবাই আড্ডাকারখানা দেখে চলে গেল। সেখানে শুধু রাজ আর রানি রয়েছে।

রাজ আস্তে আস্তে রানি যে রুমে আছে, সেখানে গেল।

রানি ভয়ে গুটিসুটি হয়ে রয়েছে। এই ছেলে টাই নাকি তার পিচনে এত নিলাজের মতো ঘুরে বেড়িয়েছে। রানিকে নাকি সে ভালোবাসত। এটা তার আসল রূপ? এটাই তার ভালোবাসা?

– তোমাকে কি বাড়ি দিয়ে আসব? রাত ৮ টার উপরে বাজে একা গেলে রাস্তায় সমস্যা হবে। তাই বলছিলাম।

রানি রাজের মুখে এমন কথা শুনে হা করে আছে। অবাক হয়ে রাজ কে দেখছে। যখন তার পিছনে পাগলের মতো ছুটে চলত। তখন মুখটা ভালো করে দেখা হয়নি। তবে এখন দেখে এটা বুঝা যাচ্ছে, আগের চেয়ে চেহারা স্বাস্থ্যের অবনতি ঘঠছে।

– আচ্ছা এত যে সমাজ সমাজ করো। এখন এই অবস্থায় তোমার সমাজ মেনে নিবে তোমাকে? না নিবে না। যেই সমাজের জন্যে এত কিছু করছো বা করবে। সেই সমাজ এই ভাবে কোন দিন তোমাকে মেনে নিবে না। তা তুমি যতই সমাজের উপকার করো না কেন। তোমার যে বাবা। উনিও এই ভাবে তোমাকে মেনে নিবে না। হ্যাঁ নিতে পারে। তবে অনেক প্রশ্ন তার মনে উঁকিঝুঁকি দিবে। সমাজে তাকে কথা শুনাবে। তাতে তোমার বাবার কি হবে??

বাদ দাও। চলো দিয়ে আসি তোমায়।

চলবে………..