#অরণ্যে_রোদন
লেখা: শারমিন আক্তার সাথী
পর্ব: ১১
১৫!!
রাতে শ্রাবণ তূবাকে মেসেজ করল,
“শরীর কেমন তোমার?”
অনেকক্ষণ পর্যন্ত কোনো উত্তর আসল না। তূবাকে ওর চাচি ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল। ডানহাতের কনুই ছিলে যাওয়ায় হাত নাড়াতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল দেখে ওর চাচি ওকে খাইয়ে দিচ্ছিল। তূবার ছোটো চাচি তামিমা ওকে খাওয়াতে খাওয়াতে বললেন,
‘এখন কেমন লাগছে? মাথা ব্যথা কমেছে?’
‘একটু কম। আমার তো মাথা ব্যথার রোগ নেই। মাথায় চোট লাগল বলে ব্যথা হচ্ছে?’
তামিমা বেশ রেগে বললেন,
‘রিকশাওয়ালাটাকে একবার হাতের কাছে পাই, জন্মের মতো শিক্ষা দিব। দেখে চালাবে না?’
‘তার তো কোনো দোষ নেই চাচি। আমাদের দেশের রাস্তা ঘাট তো মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর। ঐ যে কবিতা আছে না, আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে,
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পাড় হয়ে যায় গরু, পাড় হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।
কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশের রাস্তাঘাট নিয়া কবিতা লেখলে এমন হবে,
আমাদের রাস্তাঘাট চলে বাঁকে বাঁকে,
বর্ষাকালে তার কোমর জল থাকে।
পাড় হয়ে যায় মানুষ আর গরু, পাড় হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, সবখানে বড় বড় কুয়া।
তামিমা হেসে বলল,
‘শেষের লাইনটা মেলেনি?’
‘এত মেলা কেন লাগবে চাচি? আমি কি রবিঠাকুর নাকি? রাস্তার সব স্থানে বড় বড় সব গর্ত পানিতে বোঝাই। বেচারা রিকশাওয়ালাদের বোকে কি হবে? যারা দেশের কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছে তাদের তো কেউ বকতে পারে না।’
‘এখন তুই বকবক কম কর। নে হা কর।’
‘চাচি, গরুর মগজটা সেই হয়েছে।’
‘আরেকটু নিব?’
‘নাহ। গরুর ব্রেইন বেশি খেলে যদি আমার ব্রেইনও গরুর মতো হয়ে যায়।’
‘এত আজগুবি কথা পাস কই।’
‘কোথাও পেতে কেন হবে চাচি? আমার মাথায় কি বুদ্ধি কম নাকি?’
‘হুম বুদ্ধির গোডাউন।’
তূবা আরেক লোকমা ভাত মুখে নিয়ে বলল,
‘চাচি, বাবা কবে ফিরবে?’
‘পরশু বোধ হয়।’
‘তোমার ননদ গেছে?’
‘হ্যাঁ, বিকালেই গেছে।’
‘আজ আবার কেন এসেছিলেন?’
‘তোর বিয়ের জন্য আরেকটা প্রস্তাব নিয়ে?’
‘এবার পাত্রের কয় বিয়ে?’
‘বাচ্চা জন্ম দিতে দিয়ে বউ মারা গেছে। বাচ্চা পালনের জন্য দ্রুত বিয়ে করতে চায়।’
‘বাচ্চা পালনের জন্য বিয়ের কি দরকার? দেশে কি মেইড এর অভাব পড়ছে? বেচারা বাচ্চাটা!’
‘আমি না করে দিয়েছি।’
‘চাচি, তোমার ননদ এসব নমুনা, আইটেম কোথায় খুঁজে পায়?’
‘সে তোর ফুপুকে তুই জিজ্ঞেস করবি।’
‘একটা কথা বলো চাচি, বাচ্চা পালনের জন্য বউ কেন প্রয়োজন? যদি বাচ্চাকে ভালোভাবে পালন করতে হয় তাহলে নিজের বাচ্চা নিজে পালন করুক। আরেক বাড়ির মেয়ে কেন অন্যের বাচ্চা কোনো কারণ ছাড়া পালতে যাবে? তার কি ঠেকা পড়ছে যে অন্যের বাচ্চা পালবে, স্বামীর শরীরের চাহিদা মেটাবে। বিনিময়ে কী পাবে? তিনবেলা খাবার আর বছরে দুইবার কাপড়? এসব পাবার জন্য একটা মেয়ের বিয়ে কেন করতে হবে? সে চাইলে নিজে কাজ করেও খাবার, কাপড়ের চাহিদা মেটাতে পারে। অন্যের স্বামীকে নিজের স্বামী কেন করতে হবে? আর আমাদের সমাজটা দেখো চাচি, বিয়ের পর যদি মেয়েটা প্রথম পক্ষের সন্তানদের শাসন করে তাহলে বলে, সৎ মা বলে এমন করছে। কেন আপন মা কি শাসন করে না? তুমিও তো আমার মা। মায়ের পর তোমাকেই মা হিসাবে পেয়েছি। তুমি আমার আর তোমার ছেলে তামিমের মধ্যে কোনো ভেদভাও করোনি। উল্টা অামি তো দেখি তামিম তোমার নিজ সন্তান হওয়ায় তুমি ওকে শাসন বেশি করো। সবসময় আমাদের সমান ভালোবেসেছ। সৎ মায়েরা কিন্তু লোক ভয়েই বাচ্চাদের ভুলে শাসন করে না। ফলাফল কী হয়? বাচ্চাটা সঠিক শাসন না পেয়ে বিগড়ে যায়। তখনও দোষ সৎ মায়েদেরই হয়। মানে ঘুরে ফিরে সব দোষ ঐ মাকেই দেওয়া হয় যাকে সমাজ সৎ মা বানিয়েছে। আমি কারও সৎ মা হতে চাই না। প্রথম কথা বিয়ে করব না। আর বিয়ের পর যদি নিজ সন্তান না হয় তবে হবে না। তবুও কারও সৎমা হবো না। আর সেকেন্ডহ্যান্ড হ্যাজবেন্ড তো একদমই চাই না।’
‘মা, তুই কি সত্যি বিয়ে করবি না?’
‘জানি না, চাচি। ভয় হয় খুব। যদি কখনও মনে হয় বিয়ে করব তবে তোমাকে বলব। ততদিন তোমার ননদের আনা পাত্রগুলোকে তুমি যেভাবে হোক ভাগিয়ে দিও।’
তামিমা, তূবার কপালে চুমো খেয়ে বলল,
‘তোর চিন্তাধারা কত সুন্দর! আচ্ছা তোর উপর কখনও কিছু চাপিয়ে দিব না। তবে তোর বাবাকে তোকে সামলাতে হবে। তাকে আমার খুব ভয় হয়।’
‘সেটা তো সালাব না। এবার বাবা ফিরলে সরাসরি বলে দিব, তার বোনকে যেন বলে দেয়, এ ধরণের উদ্ভট বিয়ের সম্বন্ধ আর না আনে।’
‘তা বলিস। এখন মুখ ধুয়ে ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়।’
‘আচ্ছা। চাচি, আই লাভ ইউ।’
তামিমা হাসল। মনে মনে বলল,
‘অনেক ভাগ্য করলে এমন মিষ্টি মেয়ের মা হওয়া যায়। হে আল্লাহ, মেয়েটাকে তুমি জীবনে খুব সুখী করো। বড় ধরণের দুঃখ, অপূর্ণতা তো দিয়েই রেখেছো, আর দুঃখ দিও না ওকে। এবার ওকে সুখী করো।’
তূবা রুমে ঢুকে ফোনটা হাতে নিতেই দেখল শ্রাবণের মেসেজ। তূবা বিড়বিড় করে বলল,
‘একদিকে ছোটো ফুপি, বুড়া বুড়া ব্যাডাগো সম্বোন্ধ নিয়ে আসে। আর একদিকে এই ছেলে আমার চেয়ে ছোটো হয়েও আমাকে লাইন মারে। বড় যন্ত্রণায় আছি এই দু’জনকে নিয়ে।’
তূবা মেসেজের উত্তর দিলো,
“আমার শরীর ভালো।”
শ্রাবণ সাথে সাথে মেসেজ করল,
“এত লেইট রিপ্লাই কেন?”
“তোর মেসেজ সাথে সাথে রিপ্লাই করার জন্য আমি কি তোর কাছে চুক্তিবদ্ধ?”
“না, মানে টেনশন হচ্ছিল।”
“আমাকে নিয়ে তোকে এত টেনশন করতে হবে না।”
“স্টোন হার্ডেড মেয়ে।”
“হ্যাঁ, তো?”
“তো কিছু না। আমার উত্তর দাও।”
“কিসের?”
শ্রাবণ দুষ্টু হেসে বলল,
“কিস করতে তো বলিনি? আই লাভ ইউ আর উত্তর দাও।”
তূবা রাগ করে বলল,
“ইডিয়েড! আমি কখন বললাম, তোকে কিস করব?”
“তুমিই তো লিখলা কিস এর?”
“গাধা, কিস এর লেখিনি কীসের লিখেছি। তুই দেখছি বাংলায় খুব কাঁচা।”
“কাঁচা না গো। খুব পাকা। পাকা না হলে তোমার পিছনে পড়ে থাকতে পারি।”
“ভাই, তুই আমার পিছু ছাড়তে কী নিবি?”
শ্রাবণ মৃদু হেসে লিখল,
“তোমাকে দিয়ে দাও। পিছু ছেড়ে দিব।”
“বড় বোনকে এমন নজরে দেখে না।”
“ছি! এগুলা কেমন কথা? এখনই তওবা করো। তুমি মোটেও আমার বড় বোন না। হবু স্বামীকে ভাই বলা মস্তবড় পাপ। এখনই তিনবার তওবা করো।”
তূবা মৃদু হেসে নিজে নিজে বলল,
‘এবার তোকে বোম মারব।’
তারপর মেসেজ করল,
“শোন শ্রাবণ আমার মনে আছে, তখন তোর বয়স তিন বছর। একদিন কে যেন তোকে মেরেছিল। তুই কাঁদছিলি, তোর নাক দিয়ে পানি পড়ছিল, সেই পানি আবার তুই জিব দিয়ে চেটে চেটে খাচ্ছিলি। লেংটু আর গায়ে একটা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে, কেঁদে কেঁদে তোর মাকে খুঁজছিলি, তখন তোকে কোলে নিয়ে আমি কান্না থামিয়েছিলাম। ঘরে নিয়ে গিয়ে তোর চোখ মুখ মুছিয়ে, হাত পা ধুয়ে দিয়েছিলাম, তোকে বিস্কুট খাইয়ে দিছিলাম। সেই তুই বড় হয়ে, তোর সেই বড় বোনের উপ্রে লাইন মারছিস? তোর লজ্জা করে না?”
“না করে না। কারণ তোমাকে আমি বড় বোন মানি না। আর তোমার কাছে লজ্জা কেন করবে? ছোটো বেলায় তো আমার সব গোপন জিনিস দেখেই ফেলছো? আমার টুনটুনি পাখি ধরে পর্যন্ত টানছো, তাহলে এখন আর বাকি কি দেখার? তোমার কাছে তো লজ্জা পাওয়া আমার জন্য হারাম হয়ে গেছে। এখন র্নিলজ্জের মতো তোমাকে চাইতে পারি। শুধু তা-ই নয় যা খুশি বলতে পারি। যেভাবে খুশি চাইতে পারি।”
তূবা নিজেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল। মনে মনে বলল,
‘কোন বজ্জাতের পাল্লায় পড়েছি? র্নিলজ্জ বেহায়া।’
মেসেজ করল,
“তুই বড় বেহায়া, র্নিলজ্জ।”
শ্রাবণ হেসে উত্তর দিলো,
“বেহায়া, র্নিলজ্জ না হলে নিজের চেয়ে বয়সে বড় মেয়েকে ভালোবাসার দুঃসাহস করি? আর তোমাকে পেতে আমি চরম বেহায়া হতেও রাজি।”
তূবা আর কোনো রিপলাই করল না। কিছুক্ষণ পর শ্রাবণ আবার মেসেজ করল।
“ঘুমাই গেলা নাকি?”
তূবা মেসেজটা দেখে রেখে দিলো।
শ্রাবণ আবার মেসেজ করল। এবার মেসেজে কিছু ছবি। তূবার ছবি। বর্ষণের বিয়ের দিনের তোলা ছবি। ছবির নিচে লেখা,
“এই দিনই আমি তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। ঐ দিনই বুঝতে পেরেছিলাম, তোমাকে আমার চাই। সারাজীবনের জন্য চাই। দেখো গ্রাম্য স্টাইলে তোমাকে কি দারুণ মানিয়েছে! যেদিন আমাদের বিয়ে হবে তুমি এমন করে শাড়ি পরবে। লাল রঙের বেনারসি। আর শোনো বাসর রাতে কিন্তু আমি তোমায় ঠিক এমন করে শাড়ি পরিয়ে দিব।”
শ্রাবণের মেসেজ দেখে তূবা নিজে নিজে বলল,
‘ও আল্লাহ! এ ছেলে তো বহুদূর চলে গেছে। ওর সাথে আমার বাসর! ও মাই গড! আমি তো এসব চিন্তাও করতে পারি না। পুচকে একটা ছেলের সাহস কত বড় আমাকে এসব কথা বলে। দেখা হলে ওর কানের নিচে যদি না বাজিয়েছি তো আমার নাম তূবা না। কত বড় বজ্জাত!’
তূবা এবারও কোনো উত্তর দিলো না। মেসেজ দেখে রেখে দিলো। শ্রাবণ আবার মেসেজ করল,
“বারবার মেসেজ সিন করে রেখে কেন দিচ্ছো? বুঝতে পারছি লজ্জা পাচ্ছো। এবার একটু চোখ বন্ধ করো তো দেখবে তোমায় জড়িয়ে ধরেছি।”
তূবা মেসেজ পড়ে সত্যি সত্যি চোখ বন্ধ করে ভয়াবহ কেঁপে উঠল। ওর মনে হচ্ছে শ্রাবণ সত্যি ওকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। তূবা বড় বড় নিঃশ্বাস নিতে লাগল। ওর মনে হচ্ছে সারা শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে। টেবিলে রাখা পানির বোতলটায় মুখে লাগিয়ে পুরো বোতলটা একবারে শেষ করে ফেলল। আবার শ্রাবণ মেসেজ করল,
“কী সত্যি বলছিলাম না? মনে হচ্ছে না সারা শরীর কাঁপছে? অনুভূতিগুলো অবশ হয়ে যাচ্ছে? আমারও এমন হয়। যখন ভাবি তুমি পাশে, খুব কাছে, তোমাকে জড়িয়ে ধরে আছি তখন মনে হয়, আমার স্নায়ুকোষ কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। সারা শরীর থরথর করে কাঁপে। আমি জানি তোমার মনেও আমার জন্য অনুভূতি তৈরি হয়েছে। তুমি মুখে স্বীকার না করো তবুও জানি। আমার দুষ্টুমিগুলো তুমি খুব উপভোগ করো। এই যে এখন আমার মেসেজ পড়তে পড়তে মৃদু হাসবে। তুমি মানো আর না মানো তুমি আমায় ভালোবেসে ফেলেছো এটাই সত্যি।”
মেসেজটা তূবা দেখল কিন্তু কোনো উত্তর দিলো না। শ্রাবণ আবার মেসেজ করল।শ্রাবণের পরের মেসেজটা সেন্ড হলো না। তূবা ওকে ব্লক করে দিয়েছে।
আমার নতুন বই আসছে “রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে একটু মেঘের ছায়া”। দোয়া করবেন।
চলবে…
#অরণ্যে_রোদন
লেখা: শারমিন আক্তার সাথী
পর্ব: ১২
মেসেজটা পড়ে তূবা মৃদু হেসে নিজে নিজে বলল,
‘হ্যাঁ রে বাদর, তুই ঠিক। তোর জন্য আমার মনে এক আকাশ অনুভূতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু এত সহজে তো তা প্রকাশ করব না। তোর সামনে বহু পরীক্ষা আছে। আমি তো তোর মতো বাচ্চা নই, যে কোনো কিছু না ভেবেই সিদ্ধান্ত নিব। আমি খুব ভেবে চিন্তে তারপর এ অসম সম্পর্কে জড়াবো। তার জন্য তোকে বেশ কিছু বছর অপেক্ষা করতে হবে হয়তো। বাদর, তোকে এখন ব্লক করলাম। তোর মেসেজের এই ভয়াবহ সত্যি কথা আমি আর নিতে পারছি না। বড্ড জ্বালাচ্ছিস।’
মেসেঞ্জারে ব্লক করা দেখে শ্রাবণ সরাসরি তূবার ফোন নাম্বারে কল করল কিন্তু তূবা রিসিভ করল না। এবার শ্রাবণ ওর ফোন নাম্বারে মেসেজ করল,
“মেসেঞ্জার থেকে আনব্লক করো, নয়তো তোমার বাড়ি এসে পড়ব।”
“করব না। তুই বড় বাড় বেড়েছিস। যা পারিস কর গিয়ে।”
“ওয়েট, আমি এখনই শ্বশুর আব্বাকে কল করে সবটা বলছি।”
তূবা চিন্তিত ভঙ্গিত মেসেজ করল,
“কী বলবি?”
“বলবো তোমার আমার রিলেশনের কথা।”
“কিসের রিলেশন? আমাদের মধ্যে কি কোনো রিলেশন চলছে?”
“সেটা তুমি আমি জানি কিন্তু শ্বশুর আব্বা তো জানেন না।”
“খবরদার শ্রাবণ, আমার বাবাকে বারবার শ্বশুর আব্বা বলবি না। তিনি তোর চাচা হোন।”
“চাচা ভাতিজার সম্পর্ক আগে গেছে। বর্তমানে নতুন সম্পর্ক। শ্বশুর আর মেয়ে জামাইর।”
“কে মেয়ে জামাই? কোন মেয়ের জামাই?”
“আমি। তোমার জামাই।”
“শ্রাবণ, বাড়াবাড়ি হচ্ছে কিন্তু।”
“তুমি আনব্লক করো বাড়াবাড়ি করব না।”
“করব না। যা পারিস কর গিয়ে। আমি এখন ঘুমাবো। এমনি এ্যাক্সিডেন্ট করে শরীরটা খারাপ, তার মধ্যে তোর প্যারা। আমি পাগল হয়ে যাব। তোর যা ইচ্ছা কর গিয়ে। আমি ফোন বন্ধ করে ঘুমালাম। গুড নাইট।”
তূবা সত্যি সত্যি ফোন বন্ধ করে শুয়ে পড়ল। কিন্তু ঘুম তো চোখে আসছে না। তাই বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে লাগল। খুব বিরক্ত লাগছে। মনে মনে বলল,
‘বজ্জাতটা মাথায় ভূতের মতো চেপে বসে আছে। চোখ বন্ধ করলেই মনে হচ্ছে এই বুঝি জড়িয়ে ধরল। কি ভয়াবহ কান্ড! তূবা, নিজেকে শান্ত কর। ওর কথা মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেল। কিন্তু সেটা কি আদৌ সম্ভব?’
শ্রাবণ, তূবার মেসেজ দেখে মৃদু হেসে শুয়ে পড়ে আরেকটা মেসেজ করল,
“জানি শীঘ্রই তুমি আমাকে আনব্লক করবে। আই লাভ ইউ। তোমার কপালে ছোট্ট একটা চুমু।”
তূবা শোয়া থেকে বসে ফোনটা অন করার সাথে সাথে শ্রাবণের মেসেজ দেখে চমকে উঠে বলল,
‘কত বড় ইতর! আবার চুমুও দেয়। বজ্জাতের হাড্ডি।’
১৬!!
কেটে গেল তিন মাস।
শ্রাবণের প্রথম বর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। কথা আর তূবারও সামনে পরীক্ষা। সবাই পড়ালেখায় ভীষণ ব্যস্ত। শ্রাবণের পরীক্ষা শেষ, পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। শ্রাবণ বরাবরই খুব ভালো ছাত্র। তা না হলে গনিতে অনার্স করাতো মুখের বিষয় না। ওর খুব শখ গনিতে নিজের ক্যারিয়ার গড়বে। গনিত ওর পছন্দের বিষয়। সে কারণে অনার্সেও গনিত নিয়ে পড়ছে। পরীক্ষা শেষ তারমানে শ্রাবণ সারাদিন ঘুরে ফিরে কাটায় না। দ্বিতীয় বর্ষের পড়া আগাম শুরু করে দিয়েছে। সাথে দুটো টিউশনি পড়ানো শুরু করেছে। নিজে নিজে কিছু করতে চায়। তূবাকে পেতে হলে আগে নিজেকে তূবার যোগ্য করতে হবে। শ্রাবণ, তূবাকে নিয়ে অনেক বেশি সিরিয়াস। শ্রাবণ সেদিন বন্ধুদের সাথে বলছিল,
‘তূবাকে পেতে হলে আগে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। নয়তো তূবার বাবার কাছে গিয়ে কী বলবো? আপনার মেয়েকে ভালোবাসি কিন্তু আমি বেকার। এ ধরণের ছ্যাচড়ামি আমার দ্বারা হবে না। তূবাকে যোগ্য সম্মান দিয়ে তারপর আমার বাড়িতে আনব।’
শ্রাবণ, তূবার বিষয়ে এতটা সিরিয়াস যে বেশ কিছু ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে ওর বাবা আর বর্ষণের সাথে কথা বলেছে। তারা যখন জিজ্ঞেস করেছে, এত দ্রুত ব্যবসা করার কি দরকার? আগে পড়ালেখা শেষ হোক। ও সাথে সাথে বলেছিল, দুটো একসাথে সামলাবো। তা-ও আমাকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। বর্ষণ বিষয়টা ধরতে পারলেও ওদের বাবা পারেনি। শ্রাবণ অবশ্য বর্ষণকে খোলাখুলি কিছু বলেনি। বলেছে কেউ একজন আছে যার জন্য খুব দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
তূবা সাথে শ্রাবণের কথা খুব কম হয়। শ্রাবণ এখনও তূবার ব্লকলিস্টে পড়ে আছে। বহু অনুরোধ করেও শ্রাবণ আনব্লক করাতে পারেনি। শ্রাবণ অবশ্য হাল ছাড়ার পাত্র না। তূবা মেসেঞ্জার, ফেইসবুক থেকে ব্লক করেছে তো কী হয়েছে মেয়েদের নামে ফেইক আইডি খুলে তূবার সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলেছে। সাথে তূবার ফোনে তো রোজ মেসেজ কল করা আছেই। কদিন যাবত তূবা হোয়াট’স অ্যাপে এ্যাকাউন্ট খুলেছে। এখন শ্রাবণ নিয়ম করে সেখানে মেসেজ দিচ্ছে। তূবা যে বিষয়গুলোতে বিরক্ত হয় না বরং ওর বেশ ভালো লাগে, তা হয়তো শ্রাবণ জানে না। জানলে হয়তো তূবাকে ভালোবাসার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিত। তূবা ভালোবেসেও ভালোবাসতে না পারার কঠিন যন্ত্রণায় ভুগছে। না পারছে বলতে, না নিজেকে কঠিনভাবে সামলাতে। এক অসহ্য দহনে জ্বলছে তূবার মন।’
১৭!!
শরতের এর তপ্ত দুপুরে।
গরমটা বেশ চড়া আজকাল। তবুও আকাশে তুলোর মতো মেঘ। কিছুক্ষণ পর পর দখিনা বাতাসের শীতল পরশে তন মন আবেশিত হয়ে যায়। শরতের বিকালটা হয় সবচেয়ে সুন্দর। পেজা তুলোর মতো মেঘ তখন আকাশটাকে ঘিরে নেয়। মনমাতানো শীতল বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
এমনই এক মৃদু নরম বিকালে ছাদে বসে মেঘের রাজ্যের মেঘ দেখছিল কথা। মেঘের সাথে কানাকানি করে করে বলছিল গোপন সব কথা। মেঘের দিকে তাকিয়ে কথা ফিসফিস করে বলল,
‘এই মেঘ শোন, আমি কিন্তু এখন একা না, এই যে কথাকে দেখছিস, কথার মাঝে ছোট্ট একটা নিহাদ চুপি চুপি বড় হচ্ছে। হ্যাঁ রে আমি মা হচ্ছি। আমার নিহাদের বাচ্চার মা। ভাবতেই কেমন আনন্দ লাগছে না রে! সাড়ে সাত মাস পর ছোট্ট একটা নিহাদ আমার কোলে খেলা করবে। আমার আর আমার নিহাদের অংশ। শুনছিস মেঘ। আমি মা হব, আমার নিহাদ বাবা হবে। আমাদের ভালোবাসার অংশ পৃথিবীতে আসছে। নিহাদের অফুরন্ত ভালোবাসার ছোট্ট ফুল পৃথিবীতে আসছে। কিন্তু এ কথা আমি নিহাদকে এখন বলব না। কদিন পর ওর জন্মদিন, তখন বলব। এটা ওর জন্মদিনের বেস্ট গিফ্ট হবে।’
কথা পেটে হাত দিয়ে বলল,
‘এই পুচকি শুনছিস? পৃথিবীর সবচেয়ে ভালোমানুষটাকে বাবা হিসাবে পাবি তুই। সে একজন ভালো ছেলে, বেস্ট হ্যাজবেন্ড আর আমি জানি সবচেয়ে ভালো বাবাও হবে। শুনছিস পুচকু!’
কথা, কথা বলছিল মেঘের সাথে আর নিজের অনাগত সন্তানের সাথে। তখন কথার ফোনে কল আসল। সিনথিয়া কথাকে কল করল। কথা কল রিসিভ করে বলল,
‘হ্যালো, সিনথিয়া।’
‘হ্যালো, কথা।’
‘হ্যাঁ, সিনথিয়া বল।’
‘কোথায় তুই?’
‘বাসায়।’
‘বিজি?’
‘না।’
‘আমার ফ্ল্যাটে আসবি একটু।’
‘এখন! এ সময়?’
সিনথিয়ার কথার ধরণ কেমন যেন ছিল। তা শুনে কথা বলল,
‘সব ঠিক আছে সিনথিয়া?’
‘বড় বিপদে পড়েছি। প্লিজ তুই। খুব জরুরি কাজ।’
‘ফোনে বলা যাবে না?’
‘না। ফোনে বলা যাবে না। প্লিজ আয়। তোর পায়ে পড়ি। তোর বাসা থেকে আমার বাসা তো বেশি দূরে না। রিকশায় মাত্র ১০ মিনিটের পথ। তুই তো চিনিস। একবার তো এসেছিলি।’
কথাটা খানিকটা সংকিত মনে বলল,
‘এখন এ সময়ে?’
‘প্লিজ না করিস না। আমি খুব বিপদে পড়েছি। তুই যদি একটু হেল্প করতি।’
‘কী বিপদ?’
‘ভয় পাসনে। তোর কিছু হবে না। আমার কথা বিশ্বাস না হলে তূবা বা তোর ভাইকে নিয়ে আসতে পারিস।’
কথা আর না করতে পারল না। তা-ও কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
‘আচ্ছা, আমি আসছি।’
কথার কল কেটে সিনথিয়া অন্য রুম থেকে নিজের রুমে আসল। নিহাদ তখন সিনথিয়ার রুমে বিছানায় বসা। নিহাদ বলল,
‘সিনথিয়া আজ আমি বিষয়টা শেষ করতে এসেছি। প্লিজ তুমি আমাকে বিরক্ত করা বন্ধ করো। এভাবে আমাকে টর্চার করে তোমার কোনো লাভ হবে না।’
সিনথিয়া স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল,
‘ঠিক আছে।’
‘তুমি আমাকে আর বিরক্ত করবে না?’
‘ওকে।’
‘ছবিগুলো ডিলিটি করে দিবে?’
স্বাভাবিক ভঙ্গিতে সিনথিয়া বলল,
‘ঠিক আছে।’
‘তোমার উপর ভরসা করতে পারি?’
‘১০০%।’
কিন্তু মনে মনে সিনথিয়া বলল,
‘আমাকে ০.০০০১% ভরসা করলেও ঠকবে। আজ তোমার হারানোর দিন নিহাদ। আজ তুমি তোমার সবচেয়ে দামি জিনিসটা হারাবে।’
নিহাদ বলল,
‘আচ্ছা ছবিগুলো জলদি ডিলিট করো। আমি বাসায় যাব।’
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সিনথিয়া বলল,
‘তোমার কথা তুমি বললে, এখন আমার কথা তো শুনো।’
‘বলো।’
‘আমি তোমার সব কথা মানব। ছবিগুলোও ডিলিট করে দিব। তবে একটা শর্তে!’
‘কী?’
‘আজকে দ্বিতীয় এবং শেষ বারের মতো তোমাকে আমার কাছে আসতে হবে।’
নিহাদ বেশ রাগ করে বলল,
‘অসম্ভব!’
‘কেন?’
‘যে ভুল আমি একবার করেছি তা বারবার করব না। আমি নিজের কাছে ওয়াদা করেছি, কথা ব্যতীত আর কারও কাছে যাব না।’
‘ওকে তুমি তোমার ওয়াদা ঠিক রাখো, আমি কথাকে আমাদের ঘনিষ্ট মুহূর্তের ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছি।’
‘দেখো সিনথিয়া, তুমি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছো।’
‘তুমি যদি তা ভাবো, তবে তা-ই।’
‘চাইলেই তো যে কারও কাছে যাওয়া যায় না। মনের অনুমতি লাগে। শরীরটা সবসময় সবার প্রতি আকর্ষিত হয় না। তার জন্য মনের সায় লাগে। আর আমার শরীর কথা ব্যতিত কারও জন্য উত্তেজিত হয় না।’
‘সেদিন তোমার মন খুব অনুমতি দিয়েছিল?’
‘সেটা একটা দূর্ঘটনা ছিল। আমার তো মনে হয় সেটা তোমার সাজানো পরিকল্পনা ছিল।’
‘হ্যাঁ, তা-ই ছিল। এখন তুমি শর্ত মানলে মানো, না মানলে আমার কোনো দোষ নেই। তোমার সংসার ভাঙার দায় তোমার হবে।’
নিহাদ নিজের মনে বিরুদ্ধে একরকম বাধ্য হয়েই সিনথিয়ার কাছে গেল।
কথা মাত্রই সিনথিয়ার বিল্ডিং এর সামনে আসল। সেখানে নিহাদের বাইক পার্ক করা দেখে বেশ খানিকটা অবাক হলো। ভাবল, এ সময়ে নিহাদ এখানে কী করবে? পরক্ষনে ভাবল, কোনো কাজে আশে পাশে আসতে পারে। কথা সিনথিয়ার ফ্ল্যাটের সামনে আসল। ফ্ল্যাটের দরজা ভেজানো দেখে ও ভিতরে ঢুকে গেল। সিনথিয়া পরিকল্পনা করেই নিজের ফ্ল্যাটের এবং রুমের দরজা খোলা রেখেছিল, যাতে কথা সহজে ঢুকতে পারে। কথা ভিতরে ঢুকে একটা রুম থেকে কিছু আওয়াজ পেয়ে সেখানেই গিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল নিজের এত বছরের ভালোবাসা আর বিশ্বাস কীভাবে ভেঙে চুরমার হয়। কীভাবে ওর সাজানো সংসারটা ভেঙে যাচ্ছে। কথার চোখের সামনে সবকিছু যেন ধোঁয়াশা হয়ে যাচ্ছে। সিনথিয়া আর নিহাদকে ঐরকম অবস্থায় দেখে সিনথিয়ার দরজার সামনেই ফ্লোরে বসে রইল কথা। ভিতর থেকে আসা আবেদনময়ী শব্দগুলোকে ওর কাছে গরম গলিত সীসা মনে হচ্ছিল, যা কেউ ওর কানে খুব যত্ন করে ঢালছে।’
কথা ওখানেই বসে রইল। অনেকক্ষণ পর নিহাদ গোসল করে শার্ট পরতে নিলে সিনথিয়া ওকে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘আজকের দিনটা আমি কখনও ভুলব না আর না তুমি ভুলতে পারবে। কথা ঠিক বলে তুমি সব দিক দিয়ে পারফেক্ট। সে দেখতে হোক কিংবা বিছানায়।’
নিহাদ বেশ রাগ করে নিজেকে সিনথিয়ার থেকে ছাড়িয়ে বলল,
‘তুমি যা চেয়েছিলে তা পেয়েছো, এখন আর আমাকে ব্ল্যাকমেইল করবে না।’
‘আচ্ছা করব না। এই যে দেখো এখনই তোমার সামনে ছবিগুলো ডিলিট করে দিচ্ছি।’
সিনথিয়া সত্যি সত্যিই ছবিগুলো ডিলিট করে বলল,
‘যেহেতু আমাদের সম্পর্ক শেষ, সেহেতু একটা সত্যি কথা বলি। সেদিন আমাদের মাঝে কিছুই হয়নি। তুমি আমাকে টাচ পর্যন্ত করোনি। আমি তো জাস্ট তোমাকে নগ্ন করে, আমার সাথে কিছু ছবি তুলেছি। এছাড়া কিছু না।’
নিহাদ চোখ বড় বড় করে তাকাল। বিড়বিড় করে বলল,
‘তারমানে আমি সেদিন কথাকে ধোকা দেইনি?’
সিনথিয়া হেসে বলল,
‘না। সেদিন অবচেতন অবস্থায় দাওনি। তবে আজ পুরো স্বজ্ঞানে দিলে।’
নিহাদ বিছানায় বসে পড়ল। নিজের মাথা চেপে ধরল। চুল টেনে ছিড়তে লাগল। নিজের গালে নিজে চড় মারতে মারতে বলল,
‘এ আমি কী করলাম?’
সিনথিয়া, নিহাদের মাথায় হাত দিয়ে বলল,
‘যা করার তা করেই ফেলেছ। এখন ভেবে কী লাভ?’
নিহাদ ওর হাতটা সরিয়ে বলল,
‘কেন করলে এমনটা তুমি?’
সিনথিয়া রহস্যময় হাসল। তারপর বলল,
‘তোমার করা কর্মফল তুমি ভোগ করবে। বলতে পারো তোমার করা কুকর্মের প্রতিশোধ নিলাম।’
নিহাদ অবাক হয়ে বলল,
‘কীসের প্রতিশোধ?’
সিনথিয়া রহস্যময় হেসে বলল,
‘তা তো বলা যাবে না। আমার কাজ শেষ তুমি আসতে পারো।’
মানুষ যেমন অপ্রয়োজনীয় জিনিস ছুড়ে ফেলে সিনথিয়া যেন তেমন করেই নিহাদকে ছুড়ে ফেলল।
নিহাদের নিজের কাছে এত অপরাধী মনে হচ্ছে যে মরে যেতে ইচ্ছা করছে। হাঁটুর বয়সী একটা মেয়ে প্ল্যান করে ওকে বাজেভাবে ফাঁসিয়ে দিলো। এক আকাশ অপরাধবোধ আর আত্মগ্লানি নিয়ে নিহাদ রুম থেকে বের হতেই দেখল, কথা হাঁটুতে মাথা গুজে দরজার পাশে বসে আছে। নিহাদ এত ভয় কখনও পায়নি। ভয়ার্ত কণ্ঠে ডাকল,
‘কথা!’
কথা এমন অসহায় দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকাল, সে দৃষ্টি যেন নিহাদের বুকের আড়পাড় হয়ে গেল। কথা কিছু বলতে পারল না, ওখানেই অজ্ঞান হয়ে গেল। পাশ থেকে সিনথিয়া এসে বলল,
‘নিহাদ স্যার, আমার আসল প্ল্যান আপনার কাছে আসা ছিল না, বরং আপনার সংসার ভাঙা। মানুষের মন ভাঙলে, তার সংসার ভাঙলে কেমন লাগে এখন বুঝবেন আপনি।’
‘কেন করলে এমন?’
সিনথিয়া এবারও রহস্যময় ভঙ্গিতে হাসল।
চলবে…