আজও বৃষ্টি নামুক পর্ব-৪+৫

0
289

#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০৪
_________________

পর পর কয়েকবার পলক ফেলে চোখ খুলে তাকালো প্রিয়তা। মাথায় অসম্ভব যন্ত্রনা হচ্ছে তাঁর। হুট করেই সে কোথায় আছে কথাটা মাথায় আসতেই শোয়া থেকে উঠে বসলো প্রিয়তা। শরীর জুড়ে থাকা কাঁথাটা গড়িয়ে পড়লো তক্ষৎনাত।’

গায়ে বোরকা নেই কালকের লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়িটার লাল রঙটা গায়ে জ্বল জ্বল করছে খুব এক মুহূর্তের জন্য হলেও বুকটা কেঁপে উঠলো প্রিয়তার। তাঁর বোরকা গেল কোথায়, আর এটা কোথায় আছে প্রিয়তা, সে তো বাসে ছিল তাহলে এই রুমে আসলো কি করে। প্রিয়তা পুরো রুমটায় চোখ বুলালো তেমন কিছুই নেই রুমটাতে একটা খাট সাথে একটা সোফা, একটা বুকশেলফ টেবিল আর পাশেই একটা রান্নাঘর। খুব বেশি আলো নেই রুমটাতে, পুরো রুমটাই কেমন যেন বদ্ধ বদ্ধ লাগছে। বুকশেলফের পাশে ছোট্ট একটা জানালা আছে খানিকটা রোদ্দুর এসে পড়ছে সেখান থেকে। তারপরও রুমের বেশির ভাগ জায়গাই আবছা অন্ধকারে ঘেরা। প্রিয়তা বেশি ভাবতে পারলো না তক্ষৎনাত পায়ের ওপর থেকে কাঁথাটা সরিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো সে। ভয়ে হাত পা বুক কাঁপছে প্রিয়তার, অচেনা নগরীতে ঢুকতে না ঢুকতেই কোন বিপদের মধ্যে পড়লো প্রিয়তা। প্রিয়তা বেশি ভাবলো না তক্ষৎনাত মাথাটা চেপে ধরে রুমে থেকে বেরিয়ে যেতে লাগলো। শরীর অসম্ভব গরম তাঁর। কাল শেষ রাতের দিকে জ্বর এসেছে তাঁর ১০২°।’

দরজা থেকে বের হতেই চারদিকে বড় বড় গাছপালা ঘেরা বিশাল বাগান দেখতে পেল প্রিয়তা। পুরো বাড়িটার ঘিরেই রয়েছে বিশাল বাগান। বাগানটা এমন ভাবে তৈরি যে বাগানের ওপর প্রান্তের ব্যাক্তিটির বোঝার উপায় নেই বাগান পেরিয়ে এখানে এক একটা ছোট্ট কুটিরঘর আছে। আবার এপাশ থেকেও বোঝার উপায় নেই অপরপ্রান্তে শহরের রাস্তা বইছে। একটা গুপ্তস্থান বলা যেতে পারে। রুমের দরজার সামনেই বড় বড় অক্ষরের লেখা ‘গুপ্তচর’। প্রিয়তার চোখ এড়ালো না নামটা থেকে, সে বুঝতে পেরেছে কোনো গোপনীয় জায়গায় এসে পড়েছে প্রিয়তা। গুপ্তচর বলতে কি বোঝায় গুপ্তভাবে সংবাদ সংরক্ষণ করে যে গোয়েন্দা। তবে কি কোনো গোয়েন্দার গোপনীয় জায়গায় এসে পড়েছে প্রিয়তা। কিন্তু এমন একটা জায়গায় আসলো কি করে? আর কেই বা আনলো তাঁকে, সে কি মেয়ে নাকি ছেলে তাঁর কোনো বাজে উদ্দেশ্য নেই তো তাঁকে নিয়ে?’

প্রিয়তা পুরো জায়গাটায় চোখ বুলাতেই মাথাটা আরো উচ্চ স্বরে ঝিম ঝিম করে উঠলো। এমন জঙ্গলের ভিড়ে কি করে চলে আসলো প্রিয়তা সেটাই ভেবে পাচ্ছে না। প্রিয়তা কোনদিক যাবে বুঝতে পারছে না। ডানদিকে গেলে এই জঙ্গলে ঘেরা বাগান পেরোতে পারবে নাকি বামদিক গেলে পারবে বুঝতে পারছে না। নানা ভয়ংকর ভয়ংকর চিন্তাভাবনা আসছে তাঁর মাথায়।’

এমন সময় আচমকাই একটা কাক ডানা ঝাপটে কা কা করে উঠলো সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়তা ঘাবড়ে গিয়ে হাতের বামদিকের বারান্দার রাস্তা দিয়ে দৌড় দিলো। মাথা ভন ভন করছে তার, এক অজানা ভয় এসে তাঁকে গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরেছে, শরীর ক্লান্ত মন অশান্ত নিয়েই দৌড়ে চললো প্রিয়তা।’

মাথার উপর টিন বিশিষ্ট ইট দিয়ে তৈরি একটা গোপনীয় গুপ্তস্থান। যেটার বাহির থেকে ভুতুড়ে বাড়ি বলা যেতে পারে কিন্তু ভিতর থেকে পরিপাটি খুব। ছোট্ট করে কুটির ঘরও বলা যায় এটাকে। যার চারদিকে ঘিরে আছে বড় বড় সব গাছপালা। গাছগুলোর হাইট এতটাই তীক্ষ্ণ যে উপরের সাদা আকাশটা দেখাচ্ছে ক্ষীণ্ন। ঘন জঙ্গলে ভরপুর চারপাশ।’

কুটির ঘরের পিছনে এক বিশাল গাছের পাশে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত ছিল অপূর্ব। কতক্ষণ আগেই আকিবকে নিয়ে এখানে এসেছে সে। প্রিয়তাকে খাটে শুয়ে দিয়ে একজন মহিলা ডক্টরও নিয়ে এসেছিল অপূর্ব। মহিলাটি যখন প্রিয়তাকে দেখছিল তখন অপূর্ব নিজেও ভিতরে ঢুকে নি আর আকিবকেও ঢুকতে দেয় নি। এর মাঝে অপূর্বের ফোন বেজে ওঠায় কুটিরের পিছনের দিকটায় আসে অপূর্ব। আকিব তখন রুমের বাহিরে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল, ডক্টর মহিলাটির কাজ শেষ হতেই আকিব ডক্টরের সাথে কথা বলে।’

পুনরায় ডক্টরের চোখ বেঁধে নিয়ে যায় বাহিরে। আসার সময়ও চোখ বেঁধে আনা হয়েছিল ডক্টরকে যাতে ডক্টরটি চিনতে না পারে সে কোথা থেকে এসেছে বা কোথা থেকে বের হচ্ছে খুব গোপনীয় জায়গা কি না। ডক্টরই প্রিয়তার বোরকা খুলে রাখে বিছানার পাশে। প্রচন্ড জ্বরে কাতর প্রিয়তা যার দরুন সকালে বাসেই অজ্ঞান হয়ে যায় সে। বিষয়টা অপূর্ব প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারে তাই তো অসুস্থ প্রিয়তাকে বাসে একা ফেলে আসতে মন সায় দিচ্ছিল না তাঁর আর এই কারনেই তাঁর সবচেয়ে গোপনীয় জায়গাতে প্রিয়তাকে নিয়ে এসেছে অপূর্ব। সে নিজেও জানে না প্রিয়তাকে এখানে এনে ঠিক করেছে কি না। এই জায়গাটা অপূর্বের জন্য যতটা গোপনীয়, ততটাই সুরক্ষিত। শুধুমাত্র বিশ্বস্ত দু’জন ব্যক্তি ব্যতীত আর কেউ জানে না এই গুপ্তস্থান সম্পর্কে। আর এই দুজন ব্যক্তির মধ্যে একজন হলো আকিব আর দ্বিতীয়জন হলো অপূর্বের ছোট ভাই অয়ন।’

‘ আমি তোমার সাথে বাড়ি গিয়ে কথা বলি বাবা? তুমি তো জানো আমি কাজ ছাড়া বাহিরে থাকি না তাহলে বার বার ফোন কেন করছো?’

খানিকটা তীক্ষ্ণ স্বরে কথাটা বলে উঠল অপূর্ব তাঁর বাবাকে। আর ছেলের কথা শুনে অপর প্রান্তে থাকা অপূর্বের বাবা বলে উঠল,

‘ তোমার মা তোমার চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে অপূর্ব?’

খানিকটা বিরক্ত হলো অপূর্ব। এ কথা যেন এর আগেও বহুবার শুনেছে সে। অপূর্ব নিজেকে শান্ত রেখে বললো,

‘ কেমন স্বামী তুমি যে নিজের বউকে সামলাতে পারো না।’

ছেলের কথা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে এলো অপূর্বের বাবার। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন তিনি,

‘ এটা কেমন ভাষা অপূর্ব আমি তোমার বাবা হই।’

‘ তো আমিও তোমার ছেলে। নিজের বউকে যদি সামলাতে না পারো তাহলে কেমন পুরুষ তুমি। শোনো তোমায় চার ঘন্টা সময় দিলাম। আর এই চার ঘন্টায় নিজের পুরুষত্ব প্রমাণ করো বুঝলে। বউকে খাইয়ে দাইয়ে সামলে রাখো। চার ঘন্টা পর আমি আসছি,

‘ তুমি কিন্তু দিনকে দিন খুব অসভ্য হচ্ছো অপূর্ব।’

অপূর্ব কিছুক্ষন চুপ থেকে নিজের কপালের বাম দিকটা আঙুল দিয়ে চুলকে বললো,

‘ আমি সভ্য কবে ছিলাম। যাইহোক আমি এখন ব্যস্ত তোমার সাথে পড়ে কথা বলছি আর অয়ন কই? ওও কি তোমার বউকে সামলাতে পারছে না বাড়ি যেতে দেও ওর হচ্ছে আজ।’

বলেই তক্ষৎনাত ফোনটা কাটলো অপূর্ব। আর অপূর্বের বাবা ছেলের আচরণ আর কথা শুনে হতাশ হলো আবার। অপূর্ব এমনই তাঁর বাবার সাথে এমনই ব্যবহার করে সবসময়। প্রথম প্রথম ছেলের এমন ব্যবহারে বেশ অসস্থি ফিল হলেও এখন অভ্যাস হয়ে গেছে তাঁর।’

এদিকে,

বাবার সাথে কথা বলে খানিকটা সস্থির নিশ্বাস ফেললো অপূর্ব। যাগ গে আপাতত চার ঘন্টার মতো সময় আছে তাঁর কাছে অপূর্ব তক্ষৎনাত ফোনটা পকেটে পুড়ে কুটিরঘরের ভিতর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। না জানি আকিব ডক্টরকে নিয়ে বের হতে পারলো কি না সাথে মেয়েটার অবস্থাও ঠিক কেমন জানতে হবে। অপূর্ব এসব ভাবতে ভাবতে দু’কদম যেতেই আচমকাই একটা মেয়ে এসে ধাক্কা খেল তাঁর সাথে মেয়েটা পড়ে যেতে নিতেই তক্ষৎনাত তাঁকে ধরে নিজের দিকে টানলো অপূর্ব। ঘটনাটা হুট করে হয়ে যাওয়াতে অপূর্ব প্রিয়তা দুজনেই চমকে উঠলো খুব। প্রিয়তা তো ঘাবড়ে গিয়ে শক্ত করে চেপে ধরলো অপূর্বের কাঁধ। শরীর ক্লান্তিতে এবার পুরোপুরি অবশ হয়ে আসছে, নিজেকে শক্ত করে ধরে রাখাও দায় হয়ে পড়ছে প্রিয়তার জন্য। তারপরও যথাসম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে পর পর কয়েকবার পলক ফেলে মাথা তুলে তাকালো প্রিয়তা। প্রিয়তা তাকাতেই অপূর্ব এই প্রথম দেখলো প্রিয়তার মুখটা মায়াবী ফেস, ফর্সা গাল, চোখে মুখে একরাশ বিষন্নতা, এলেমেলো খোলা চুল, লাল টুকটুকে শাড়ি, ভাড়ি গহনাগাটি। এক মিনিটের জন্য হলেও চোখ আঁটকে যায় অপূর্বের প্রিয়তার কাজলে আঁকা চোখটার দিকে। নিজেকে সামলায় অপূর্ব। ওই চোখ দেখেই বুঝেছে অপূর্ব বোরকার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই মেয়েই এই মেয়ে। অপূর্ব বেশি না ভেবে নীরব কন্ঠে বললো,

‘ এই মেয়ে তুমি এখানে কি করছো? রুম থেকে বের হলে কেন?’

অপূর্বের কথা শুনে পর পর কয়েকবার পলক ফেলে সামনের ব্যক্তিটির চেহারা দেখলো প্রিয়তা। মুহূর্তের মাঝে চোখের সামনে কালকের বাসে তাঁর পাশে বসা ছেলেটিকে দেখে অবাক হয়ে বললো,

‘ আপনি,,

বলতে বলতে এলিয়ে পড়লো প্রিয়তা অপূর্বের বুকের ওপর। সমস্ত শরীরের শক্তি শেষ তাঁর। মাথা ঝিম ঝিম করছে, শরীরের তাপমাত্রা বাড়ছে, ভয়ে শরীর কাঁপছে সব মিলিয়ে মন মস্তিষ্ক সব একসাথে ক্লান্ত হয়ে আসছে তাঁর।’

প্রিয়তা পুরোপুরিভাবে নিজেকে এলিয়ে দিতেই অপূর্ব না চাইতেও ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো তাঁকে। সাথে বললো,

‘ এই মেয়ে কি হলো তোমার? আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি এভাবে দৌড়াচ্ছিলে কেন?’

প্রিয়তা মুখ খুলতে চাইলো কিন্তু পারলো না কেন যেন মুখ দিয়ে একটা কথাও বের হচ্ছে না তাঁর। অপূর্ব প্রিয়তার অবস্থাটা বুঝতে পেরে হুট করেই প্রিয়তাকে কোলে তুলে নিলো। তারপর এগিয়ে চললো রুমের দিকে। প্রিয়তা শুধু ছলছল চোখে অপূর্বের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছু বলবে তাও পারছে না।’

____

বিছানায় শুয়ে আছে প্রিয়তা। পাশেই অপূর্ব তাঁকে নিজ হাতে সুপ খাইয়ে দিচ্ছে যেটা অপূর্ব নিজ হাতে বানিয়েছে কতক্ষণ আগে। অপূর্বের থেকে খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে আকিব। অপূর্বের কার্যকলাপ দেখছে সে। অপূর্বের তাল বাহানা কোনো কিছুই মাথাতে ঢুকছে না তাঁর। কে এই মেয়ে? এ প্রশ্নের উওরটাও এখনো পেল না। তারওপর মেয়েটাকে রান্না করে খাওয়াচ্ছে অপূর্ব? আকিবের চক্ষু বেরিয়ে আসতে চাইছে বাহিরে সে কি সত্যি দেখছে? চোখের সামনে সবকিছু হচ্ছে তারপরও বিশ্বাস করতে পারছে না আকিব। বার বার মনে হচ্ছে এ সত্যিই অপূর্ব ভাই তো! নাকি অন্যকেউ?’

অপূর্ব প্রিয়তাকে খাবার আর ঔষধ খাইয়ে শুয়ে দিলো বিছানায় তারপর বললো,

‘ এখন ঘুমাও তোমার শরীর বড্ড ক্লান্ত,

প্রিয়তা কিছু বলতে চাইলো ঠোঁট নাড়াতে নিলো সে সঙ্গে সঙ্গে অপূর্ব বলে উঠল,

‘ আমি জানি তোমার মনে এখন অনেক প্রশ্ন চলছে, আমি কে? কেন তোমায় এখানে নিয়ে এসেছি। আসলে কি বলতো সকালে যখন বাস থামে তোমায় ডাকি আমি কিন্তু তুমি সাড়া দেও নি পরে বুঝতে পারি তুমি অজ্ঞান হয়ে গেছো তাই তোমায় আর বাসে রাখতে পারি নি এখানে নিয়ে এসেছি। ভয় নেই আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই তুমি একটু সুস্থ হলেই চলে যেতে পারো। তাই এখন ঘুমাও তোমার ব্যাগট্যাগ সবকিছুই সুস্থ আছে। সো ডোন্ট ওয়ারি। নিশ্চিতে ঘুমাও এখন।’

অপূর্বের কথার মাঝে এক অদ্ভুত মায়া ফিল করলো প্রিয়তা। যেটা না চাইতেই এই অচেনা ছেলেটিকে বিশ্বাস করতে মন চাইলো খুব। প্রিয়তা তাই করলো মনের গহীন থেকে বিশ্বাস করে বসলো সে অপূর্বকে। আর অপূর্বের কথা মতো চোখও বুঁজিয়েও নিলো প্রিয়তা। সত্যি আপাতত এক গভীর ঘুম দরকার তাঁর।’

প্রিয়তা ঘুমাতেই অপূর্ব প্রিয়তার গায়ের কাঁথাটা সুন্দর মতো জড়িয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। সাথে আকিবকে বললো,

‘ আকিব শোনো,

সঙ্গে সঙ্গে আকিব চমকে উঠে বললো,

‘ জ্বী ভাই।’

বলতে বলতে দরজার সাথে একটা বারি খেলো আকিব। পরক্ষণেই ব্যাথায় খানিকটা কুঁকড়ে উঠে চললো সে অপূর্বের পিছু পিছু। এই দরজা টাও না ভাড়ি বজ্জাত আকিব যতবার যায় তত বারই হোঁচট খায়।’

কপাল ডলতে ডলতে অপূর্বের পিছনে দাঁড়ালো। অপূর্ব তখন কুটিরঘরের দরজা থেকে খানিকটা দূরে একটা উল্টোদিক মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল। আকিব পিছনে দাঁড়িয়েই বলে উঠল অপূর্বকে,

‘ জ্বী ভাই বলুন?’

উওরে খানিকটা শান্ত গলায় উল্টোদিক ঘুরেই বললো অপূর্ব,

‘ মেয়েটাকে কোথায় রাখা যায় আকিব, দিনটা এখানে থাকলেও রাতে তো এখানে রাখা যাবে না। এখন কোথায় নিয়ে রাখলে ঠিক হবে আকিব,

অপূর্বের কথা শুনে আকিব ফটাফট সামনে এগিয়ে গিয়ে অপূর্বের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো,

‘ ওসব নিয়ে পড়ে ভাববো ভাই আগে আপনি আমায় এটা বলুন এই মেয়েটা কে? কি হয় আপনার? সকাল থেকে এই প্রশ্নগুলো মাথায় বুনতে বুনতে আমার খিচুড়ির পুড়ে গেছে ভাই। প্লিজ তাড়াতাড়ি বলেন মেয়েটা আপনার কি হয়?’

অপূর্ব শুনলো আকিবের কথা খানিকটা ভরাট কন্ঠে বললো,

‘ আমার কি হয় মানে কেউই হয় না।’

#চলবে…..

#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০৫
_________________

আকিব তাকিয়ে আছে খুব অদ্ভুত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে সে অপূর্বের মুখের দিকে। অপূর্বের কতক্ষণ আগে বলা কথাটা ‘আমার কি হয় মানে কেউই হয় না।’– কথাটা ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না আকিবের। আকিব তাঁর ভ্রু-জোড়া জটিলভাবে কুঁচকে বললো,

‘ কেউ হয় না ভাই। সত্যি কেউ হয় না?’

প্রতি উওরে একই জবাব অপূর্বের,

‘ না।’

অপূর্বের কথা শুনে আকিব বেশ সন্দেহের দৃষ্টিতে অপূর্বের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ সত্যি বলছেন ভাই। মেয়েটা কেউ হয় না আপনার মেয়েটা সত্যি কেউ না হলে এই মেয়েকে আপনার এই গোপনীয় জায়গায় কেন আনলেন ভাই?’ এত সেবাযত্ন কেন করলেন। যে গুপ্তস্থানে আমি আপনি আর অয়ন ভাই ছাড়া কেউ জানে না সেই গুপ্তস্থানে এই অচেনা মেয়ে কেন ভাই।’

আকিবের পর পর করা প্রশ্নগুলোর সবই মন দিয়ে শুনলো অপূর্ব। তবে উওর দিতে পারলো না, তাঁর কাছে সত্যি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নেই। তাঁর মন বলেছে মেয়েটাকে এখানে নিয়ে আসছে তাই নিয়ে এসেছে অপূর্ব। সকালে বোরকার আড়ালে অচেতন অবস্থায় থাকা মেয়েটাকে ওভাবে বাসে রেখে আসতে একদমই মন সায় দিচ্ছিল না অপূর্বের। তাই তো নিয়ে এলো এছাড়া এমন তো নয় অপূর্ব এই প্রথম কোনো মানুষকে সাহায্য করছে। এর আগেও তো বহু মানুষের হেল্প করেছে অপূর্ব। এই মেয়েটার ক্ষেত্রেও সেইম। অপূর্ব মন চেয়েছে সাহায্য করতে তাই করেছে। একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষকে উদারতার খাতিরে যে হেল্প করে সেই হেল্পটাই করেছে অপূর্ব। এর বেশি কিছু নয় আর তাছাড়া অপূর্ব তো এখন পর্যন্ত মেয়েটার নামটাই জানলো না। তাহলে অপূর্বের কি করে কেউ হলো মেয়েটি। মেয়েটি কিছুই হয় না অপূর্বের কিছুই না। অপূর্বের ভাবনাগুলোর মাঝেই আবারও বলে উঠল আকিব,

‘ কি হলো ভাই কথা বলছেন না কেন? বলুন না মেয়েটা কে?’

আকিবের দিকে তাকালো অপূর্ব, শান্ত চোখ সাথে গভীর ভাবনা মাথায় নিয়েই তাকালো সে। পরক্ষণেই নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে তপ্ত নিশ্বাস ছাড়লো অপূর্ব। তারপর বেশি না ভেবেই কাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত হয়ে যাওয়া তাঁর আর প্রিয়তার মাঝে সম্পূর্ণ ঘটনাই খুলে বললো অপূর্ব আকিবকে। আর আকিব সব শুনে চোখ বড় বড় করে বললো,

‘ ইস কি সাংঘাতিক মেয়ে বস। বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে এলো সাহস আছে বলতে হবে। আইথিংক আপনার সাথে যাবে ভাই,,

বলেই নিজের মুখ চেপে ধরলো আঁকিব আয় হায় মুখ ফসকে এ কি বলে ফেললো সে। এখন অপূর্ব না তাঁর কানের নিচে দু গা বসিয়ে দেয়। কিন্তু না অপূর্ব তেমন কিছুই করলো না উল্টো নিজ মনে কিছু একটা ভেবে বললো,

‘ আমায় বাড়ি যেতে হবে আকিব তোমার বড় সাহেব তাঁর বউকে সামলাতে পারছে না।’

সঙ্গে সঙ্গে চোখ বড় বড় করে বললো আকিব,

‘ কি ভাই?’

‘ তোমার মাথা। ওসব বাদ দেও আগে বলো মেয়েটাকে কোথায় রাখা যায় দিনটুকু এখানে রাখতে পারলেও রাতে এখানে রাখা ঠিক হবে না। আর একটা মেয়ে দরকার আকিব। তুমি আমি ছেলে জিনিসটা ভালো দেখায় না যতই আমরা আমাদের গুপ্তস্থানে থাকি না কেন। আইথিংক তুমি বুঝচ্ছো আমার কথা।’

অপূর্বের কথা শুনে আকিব ভাবতে লাগলো, গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো সে। অতঃপর কিছুক্ষন ভেবেই বলে উঠল আকিব,

‘ ভাই আমার গার্লফ্রেন্ডের বেডরুমটা ফাঁকা আছে?’

আকিবের কথা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে বললো অপূর্ব,

‘ হোয়াট,

বুকে হাত দিলো আকিব হতভম্ব গলায় বললো,

‘ আইমিন আমার গার্লফ্রেন্ডের বাড়িটা ফাঁকা আছে ভাই ওর বাবা মা দু’দিনের জন্য চিটাগং গেছে আপনি চাইলে দু’দিনের জন্য মেয়েটাকে আমার গার্লফ্রেন্ডের বাড়িতে রাখতে পারেন।’

আকিবের কথা শেষ হতেই অপূর্ব খানিকটা উত্তেজিত কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ That’s a good idea.

সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে উঠলো আকিব। বুকের হৃদপিণ্ডটা যেন এখনই বেরিয়ে আসতো তাঁর। কিছুটা ভিতু স্বরে বললো,

‘ ভাই আপনি কি আমার সাথে শান্ত গলায় কথা বলতে পারেন না। আপনার কথা শুনলে মাঝেমধ্যে আমি ভয় পেয়ে যাই।’

আকিবের কথা শুনে হাসলো অপূর্ব। ইস কি সুন্দর হাসি তাঁর। অপূর্বের এই হাসিটা আকিবের খুব ফেভারিট। অপূর্ব সচরাচর খুব একটা হাঁসে না কিন্তু হুটহাট হেঁসে দিলে বেশ লাগে আকিবের। অপূর্ব রাগী, ভয়ংকর রাগী তবে তাঁকে দেখে বোঝা বড় দায় অপূর্ব সিরিয়াস মুহূর্তের সময়ও এমনভাবে শান্ত থাকে যে তাঁকে দেখে বোঝা মুশকিল সে টেনশন করছে। আকিব তো মাঝে মাঝে ভেবে পায় না তাঁর ভাইর মাথায় আসলে কি চলে।’

এসবের মাঝেও অপূর্বের রাগের আড়ালে লুকিয়ে আছে তাঁর একটা বিশাল বড় মন। যে মনটার হতিস যদি কেউ ভালোভাবে বুঝতে পারে সে হলো আকিব। আকিব অপূর্বের বাবার ড্রাইভারের ছেলে। ছোট বেলা থেকেই তাঁরা দুজন একসাথে থাকে। এক স্কুল, এক কলেজ এক ভার্সিটিতে পড়েছে তাঁরা। অপূর্ব সেই ছোট বেলা থেকেই আকিবকে বলেছে তাঁকে তুই করে বলতে কিন্তু আকিব কখনো বলে নি। অপূর্বকে কেন যেন আপনি ছাড়া অন্যকিছু বলাটা ঠিক আসে না আকিবের। তুই তো অনেক দূরের বিষয় আজ পর্যন্ত তুমি করে কখনো বলেছে কি না জানা নেই আকিবের। আকিব ছোট বেলা থেকেই একটু ভীতু টাইপের। তবে সে চেষ্টা করে অপূর্বের সামনে সাহসিকতার পরিচয় দিতে কিন্তু পারে না। বর্তমানে আকিব অপূর্বের বন্ধুর পাশাপাশি একজন এসিস্ট্যান্টের জবও করছে বলতে গেলে।’

আকিব অপূর্বকে তুই করে না বলার ফলে অপূর্বও তুইতে যেতে পারে নি তুমিতেই আঁটকে আছে সেই ছোট বেলা থেকে। তবে অপূর্ব জানে এই আকিব তাঁর জন্য নিজের জীবনটাও বিসর্জন দিতে রাজি। কিন্তু তার প্রতি আকিবের শ্রদ্ধার পাশাপাশি ভয়টা আজও শেষ করতে পারলো না অপূর্ব। সেই ছোট বেলা থেকেই অপূর্ব খানিকটা উচ্চ স্বরে কথা বললেই আকিবের হাত পা কেঁপে উঠে। অপূর্ব তো মাঝে মাঝে ভেবে পায় না এই রকম ভীতু মার্কা ছেলের সাথে তাঁর এমন বিশ্বস্ততার বন্ধুত্ব হলো কি করে?’

অপূর্বের এসব ভাবনার মাঝে চট করে ফোন বেজে উঠলো অপূর্বের। মোবাইল স্কিনের নাম্বারটা দেখেই বিরক্ত হলো অপূর্ব তক্ষৎনাত ফোনটা সাইলেন্ট করে আকিবকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ এবার আমায় যেতেই হবে আকিব তোমার বড় সাহেব সত্যি পাগল হয়ে যাবে নয়তো।’

‘ তা নয় বুঝলাম কিন্তু মেয়েটার কি করবো ভাই?’

‘ আপাতত এখানেই থাকুক বিকেলে না হয় তোমার গার্লফ্রেন্ডের বাড়ি নিয়ে যাবো। তোমার গার্লফ্রেন্ডকে ফোন করে জানিও দিও,

‘ আচ্ছা ভাই।’

‘ হুম তুমি এখন থাকো এখানে আমি না আসা পর্যন্ত ওঁকে একা রেখে যাবে না।’

‘ আচ্ছা ভাই।’

অপূর্ব শুকনো হাসলো তারপর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে এক ঝলক প্রিয়তার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে নিলো অপূর্ব। কেন যেন মেয়েটাকে একা রেখে যেতে মন চাইছে না অপূর্বের কিন্তু অপূর্ব যাবে আজ চার’দিন হলো অপূর্ব বাড়ি যায় না এবার তাঁকে যেতেই হবে। অপূর্ব তপ্ত নিশ্বাস ফেলে পিছন ফিরে আকিবকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ আমি যাচ্ছি আকিব নিজের এবং মেয়েটার দুজনেরই খেয়াল রেখো।’

মুকচি হাসলো আকিব। বললো,

‘ টেনশন নিয়েন না ভাই সাবধানে যাবেন।’

‘ হুম।’

বলেই চললো অপূর্ব এরই মাঝে ফোন বাজলো আবার। আবারও একই নাম্বারে ফোন আসায় বিরক্তির চরম লেভেলে চলে গেল অপূর্ব। এই লোকটা কি তাঁর বাংলা ভাষা বোঝে না। কাল রাতে এত কড়া করে কথা বললো তাও শুনলো না। অপূর্বের চেহারায় বিরক্তির রেখা দেখে প্রশ্ন করলো আকিব,

‘ কোনো সমস্যায় আছেন ভাই?’

অপূর্ব কিছু একটা ভাবলো তারপর বললো,

‘ আপাতত সমস্যা একটাই আকিব সেটা হলো তোমার বড়সাহেব আর তার বউ।’

‘ তাহলে আপনি আর দেরি কইরেন না ভাই তাড়াতাড়ি যান।’

‘ হুম থাকো তুমি,

বলেই আর এক পলক প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে তক্ষৎনাত চলে গেল অপূর্ব।’

অপূর্ব যেতেই আকিব এগিয়ে আসলো কুটির ঘরের দরজার সামনে। তারপর প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আপনি কি সত্যি অপূর্ব ভাইয়ের কিছু হন না আফা? কি জানি কেমন যেন।’

বলেই দরজা আঁটকে দিয়ে বাহিরে দাঁড়িয়ে রইলো আকিব। কে জানি আজ তাঁর পা দুটো ঠিক কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। রাতে ব্যাথায় টন টন না করে?’

___

কলিং বেল বাজার শব্দ আসতেই মুখে গোল পাউরুটি সাথে দু’হাতের একহাতে জ্যামের বোওম আর অন্যহাতে টিভির রিমোট নিয়ে এগিয়ে গেল অয়ন দরজার সামনে। কিন্তু কিভাবে দরজা খুলবে তাই বুঝচ্ছে না। আসলে টিভি দেখতে ছিল অয়ন হঠাৎই জ্যাম আর পাউরুটি খেতে মন চাইলো তাঁর তাই রান্না ঘরের উদ্দেশ্য গিয়েছিল সে। রিমোটও ছিল হাতে আর আসার পথেই কলিংবেল বাজা তাই এভাবেই আসা। অয়ন আসতে আসতে আরো দু-তিনবার কলিংবেল বাজানো হয়ে গেছে দরজার ওপাশে থাকা ব্যক্তিটির। কলিংবেল বাজানোর স্টাইল দেখেই অয়ন বুঝেছে টানা চারদিন পর তাঁর গুনোধর বড় ভাই খুলনা থেকে এসেছে। অয়ন মুখে পাউরুটি নিয়েই দরজা খুললো। দরজা খুলতেই ভয়ানক রাগ নিয়ে বললো অপূর্ব,

‘ এতক্ষণ সময় লাগে দরজা খুলতে,

প্রতি উওরে মুখে গোল পাউরুটি রেখেই বললো অয়ন,

‘ আ…ত..তি..তি…ত,,

সঙ্গে সঙ্গে চোখ মুখ কুঁচকে অয়নের অবস্থা দেখে বললো অপূর্ব,

‘ কি বললি?’

অয়ন আবারও কিছু বললো কিন্তু পাউরুটির চক্করে সবই অগোছালো শোনালো। অপূর্বের রাগ উঠছে হুট করেই অয়নের মুখ থেকে পাউরুটিটা টেনে বের করে বললো,

‘ এবার বল,

অয়ন জোরে শ্বাস টানলো তারপর বললো,

‘ বলছি আইছে আমার গুনোধর বড় ভাই তোর জন্য দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম নাকি যে দেরি হবে না।’

অয়নের কথা শুনে অপূর্ব কঠিন গলায় অয়নকে কিছু বলার জন্য ঠোঁট চালাতে নিয়েও থেমে গেল। তারপর শান্ত গলায় বললো,

‘ আমার হাতের চর খাস না চারদিন হলো তাই হয়তো চরের টেস্টটা নিতে চাইছিস আবার।’

‘ মার না চর এখন বাবা বাড়ি,

‘ তো তোর বাবাকে ভয় পাই নাকি।’

‘ ভাই তুই কিন্তু আবার ত্যাড়া কথা বলছিস।’

খানিকটা বিরক্তিতা নিয়ে বললো অপূর্ব,

‘ অয়ন মাথা এমনিতেও গরম আছে আর গরম করিস না। সর তো সামনে থেকে হাঁদারাম একটা।’

‘ ভাই, তুই আমায় হাঁদারাম বললি,

‘ হুম বললাম এখন ধর তোর পাউরুটি আমি তোর বাবার বউকে দেখে আসি।’

বলেই হাতের পাউরুটিটা অয়নের হাতে দিয়ে চললো অপূর্ব। অপূর্বের যাওয়া পানে তাকিয়ে থেকে বললো অয়ন,

‘ ভাই, আমার বাবার বউ থুড়ি মায়ের কাছে যাবি এটা তো সহজভাবেও বলা যায়। তুই সবসময় এমন ঠোঁট কাটা কেন, আমি আজও বুঝলাম না তুই সহজ কথাগুলোও এমন ত্যাড়া করে বলিস কেন।’

অয়নের কথা অপূর্ব শুনলো ঠিকই তবে জবাব দিলো না তাঁর মতো সে এগিয়ে চললো তাঁর বাবার বউ থুড়ি তাঁর মায়ের রুমের উদ্দেশ্যে।’

আর অয়ন জোরে নিশ্বাস ফেলে দরজা আঁটকে চললো টিভির সামনে। ভাইয়ের সাথে কথা বলতে বলতে সে তাঁর টিভির কথাই ভুলে গিয়েছিল। থ্রিলার মুভির কাহিনী অর্ধেক শেষ হয়তো।’

#চলবে…