#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০৬
_________________
দরজায় দু’বার নক পড়তেই অপূর্বের বাবা মা দুজনেই দরজার দিকে তাকালো। অপূর্বের মা তো ছেলেকে দেখেই বিছানা ছেড়ে শোয়া থেকে উঠে বসলেন। তারপর বেশি না ভেবেই তক্ষৎনাত এগিয়ে গিয়ে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘ অপূর্ব তুই এসেছিস বাবা,
উওরে অপূর্বও বললো,
‘ হুম মা।’
ছেলেকে কাছে পেতেই অপূর্বের গালে কপালে চুমু এঁটে দিয়ে উত্তেজিত কন্ঠ নিয়ে বলে উঠল অপূর্বের মা,
‘ তুই ঠিক আছিস তো বাবা, তোর কোনো ক্ষতি হয় নি তো।’
মায়ের কথা শুনে খানিকটা বিস্মিত হলো অপূর্ব। খানিকটা ভারাক্রান্ত গলায় বললো,
‘ ক্ষতি হবে কেন আমি ঠিক আছি মা এত চিন্তা করলে চলে তোমার জামাই তো দেখছি একটুও তোমার খেয়াল রাখে না।’
বলেই বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে পুনরায় বলে উঠল অপূর্ব,
‘ ছিঃ ছিঃ তুমি আমার বাবা ভাবতেও লজ্জা লাগছে, যদিও আমার মধ্যে লজ্জা জিনিসটা একটু কম আছে তবে যতটুকু আছে ততটুকু তোমার জন্য যথেষ্ট।’
ছেলের কথা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে বসা থেকে উঠে বসলো অপূর্বের বাবা। তারপর বললো,
‘ হুম যাও যাও আমিও দেখবো তুমি তোমার বউকে কেমন যত্নে রাখো খালি সারাদিন আমায় কথা শোনাও তো খুব শীঘ্রই তোমায় বিয়ে দিয়ে আমিও তোমায় কথা শোনানোর ব্যবস্থা করছি দাঁড়াও,
‘ হুম যাও তো। কাজ না থাকলে পেঁয়াজ কাটো গিয়ে বউয়ের খেয়াল রাখতে পারে না সে আবার আসছে আমায় জ্ঞান দিতে। কি দিন আইলো রে। তোমায় চার ঘন্টার সময় দিয়েছিলাম তুমি ফেল করেছো যাও দ্রুত গিয়ে পড়তে বসো খুব শীঘ্রই তোমার আবার পরীক্ষা নিবো আমি,,
প্রতি উওরে কোনোকিছু না বলেই হন হন করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল অপূর্বের বাবা। মাঝে মাঝে ছেলের আচরণে বড়ই আফসোস লাগে তাঁর, এই ছেলেকে কি না সে ছোট থেকে নিজ হাতে মানুষ করলো। আয় হায়।’
অপূর্বের বাবা যেতেই অপূর্বের মা বলে উঠলো,
‘ তুই তোর বাবার সাথে এভাবে কথা বলিস কেন, উনি সারাদিন আমার অনেক খেয়াল রাখে। এই চারদিন কত খেয়াল রেখেছে জানিস নিজ হাতে খাইয়েও দিয়েছে রোজ।’
‘ হুম বুঝেছি এতই যখন খাইয়ে দিয়েছে তাহলে ওই খাবারগুলো এখনো বিছানার কর্নারে কি করছে?’
অপূর্বের কথা শুনে অপূর্বের মাও তাকালো খাবারগুলোর দিকে। কতক্ষণ আগেই ওই খাবারগুলো নিয়ে এসেছিল অপূর্বের বাবা কিন্তু অপূর্বের মা ঘুমিয়ে থাকায় খাওয়াতে পারে নি। অপূর্বের মা খাবারগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে উঠল,
‘ ওগুলো মাত্রই নিয়ে এসেছে তোর বাবা অপূর্ব, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম বিদায় হয়তো ডাকে নি,
‘ হুম বুঝছি চলো আমি তোমায় নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছি চার দিনে তো নিজেকে পুরো শুকিয়ে ক্যাংগারু বানিয়ে ফেলেছো।’
‘ তুই কবে আবার আমায় তরতাজা দেখলি,
হাল্কা হাসলো অপূর্ব। তারপর মাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে সেও বসলো পাশে। তারপর খাবারের প্লেটটা হাতে নিয়ে নিজ হাতে মাকে খাইয়ে দিতে দিতে বললো,
‘ সারাদিন এতো চিন্তা করলে চলে তুমি তো জানো মা আমি যে পেশায় আছি তাতে লাইফ রিস্ক আছে। তোমায় তো কতবার বলেছি আমার থেকে ধীরে ধীরে মায়া ত্যাগ করো,
‘ তুই সবসময় এভাবে বলিস কেন তোর কিছু হবে না। তোকে কতবার বলেছি এই রাজনীতিতে ঢুকিস না এটা ভালো না কেনো শুনিস না আমার কথা।’
‘ দেখো মা আমি রাজনীতি করি কারন আমার এটা ভালো লাগে মানুষদের সেবা করা আমার ছোট বেলার থেকে ইচ্ছে তা তো তুমি জানো মা। আর রাজনীতি করি বলেই যে মৃত্যু হবে নয় তো হবে না এমনটা তো নয়। দেখো মা এর আগেও বলেছি আজ আবার বলছি মানুষের মৃত্যুর কোনো নিশ্চয়তা নেই। যখন তখনই মানুষ তার প্রিয় মানুষকে ছেড়ে চলে যেতে পারে। তাই নিজেকে সবসময় শক্ত রাখবে, আর তুমি তাহসান আহমেদ অপূর্বের মা হয়ে কি না এত ভীতু হচ্ছো। একচুয়ালি তোমার জামাইকে এত কথা না শুনিয়ে তোমায় শোনানো উচিত ছিল আমার।’
‘ মানুষ কি চাইলেই একটা মানুষের মায়া ত্যাগ করতে পারে অপূর্ব। ধর হুট করে একদিন আমি চলে,,
আর বলতে পারলো না অপূর্বের মা। তার আগেই অপূর্ব মায়ের মুখ চেপে ধরে বললো,
‘ তোমায় না বলেছি এসব উল্টো পাল্টা কথা না বলতে,
ছেলের কাছে হেঁসে ফেললো অপূর্বের মা। বললো,
‘ আমি বললেই উল্টো পাল্টা হয়ে যায় আর তুই যখন বলিস,
বেশ বিভ্রান্তে পড়লো অপূর্ব পরক্ষণেই বেশি না ভেবেই বলে উঠল,
‘ হুম বুঝেছি আজ মা পুরো কোমড়ে কাপড় বেঁধে নেমেছে ছেলের সাথে ঝগড়া করতে।’
‘ ঝগড়া কথায় করলাম।’
‘ না তুমি কিছু করো নি এখন বেশি কথা না বলে খাও তো জলদি আমায় ফ্রেশ হয়ে গোসল করতে হবে। বিকেলে একটা কাজ আছে তাই তাড়াতাড়ি যেতে হবে আমায়,
ছেলের কথায় খানিকটা হতাশ হয়ে বললো অপূর্বের মা,
‘ এই তো এলি বিকেলে আবার যাবি,
‘ একটু জরুরি মা তবে চিন্তা করো না রাতে আবার আসবো আমি,
খানিকটা খুশি হলো অপূর্বের মা। তারপর পুরো খাবার শেষ করে বললো অপূর্বের মা,
‘ তুই রুমে গিয়ে ফ্রেশ হ আমি তোর খাবার নিয়ে আসছি আজ আমিও নিজ হাতে খাইয়ে দিবো তোকে,
প্রতি উওরে বারন করলো না অপূর্ব। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
‘ ঠিক আছে তুমি খাবার টেবিলে সাজিয়ে রাখো আমি আসছি,
‘ ঠিক আছে।’
অতঃপর মাকে খাইয়ে দাইয়ে ভালো মতো মুখটুক মুছে রুম থেকে বেরিয়ে গেল অপূর্ব। মায়ের রুম থেকে বের হতেই আচমকাই প্রিয়তার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠলো অপূর্বের। আনমনেই ভাবলো,
‘ না জানি মেয়েটা ঘুম থেকে উঠলো কি না।’
____
গোসল সেরে গায়ে কালো রঙের ফুল হাতার টিশার্ট সাথে সাদা ট্রাউজার পড়ে ভেজালো চুলগুলো মুছতে মুছতে আয়নায় সামনে দাঁড়ালো অপূর্ব। এমন সময় দরজায় নক করে রুমের ভিতর ঢুকতে ঢুকতে বললো কেউ,
‘ রুমে কি আসবো?’
অপূর্ব ঘুরে তাকালো সামনেই তাঁর বাবাকে দেখে মাথা মুছতে মুছতেই বললো,
‘ রুমের অর্ধেক রাস্তায় তো এসেই পড়েছো আর কোথায় আসবে,
মেজাজ বিগড়ালো অপূর্বের বাবা এই ছেলে এমন ত্যাড়া কেন। অপূর্বের বাবা রাগে ফুঁসতে লাগলো। যা দেখে অপূর্ব বললো,
‘ ফুঁসাফুসি শেষ হয়ে গেলে কাজের কথায় আসা যাক তাহলে বলো কি কারনে রুমে এলে,
অপূর্বের বাবা অপূর্বের মুখোমুখি দাঁড়ালো তারপর বললো,
‘ তুমি কি এই রাজনীতি ছাড়বে না অপূর্ব?’
প্রতি উওরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চিরুনী দিয়ে নিজের চুলগুলো আঁচড়াতে আঁচড়াতে বললো অপূর্ব,
‘ আচ্ছা এই এক প্রশ্ন করে করে তোমরা কি ক্লান্ত হও না, আমার কিন্তু ক্লান্ত লাগে।’
‘ তুমি আমার কথা বুঝতে কেন চাইছো না,
এবার অপূর্ব তাকালো বাবার মুখের দিকে তারপর বললো,
‘ দেখো বাবা এর আগে বহুবার বলেছি জীবনে যা বলবে তাই করবো কিন্তু রাজনীতি ছাড়তে পারবো না।’
‘ তুমি কি জানো তুমি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঢেলে পড়ছো?’
খানিকটা বিরক্ত হলো অপূর্ব। বললো,
‘ শোনো বাবা আমি জানি তুমি শুধু এই কথা বলতে রুমে আসো নি তাই যেটা বলতে এসেছো সেটা বলো জলদি আমার ভীষণ ক্ষুধা লেগেছে,
‘ তুমি জানো অপূর্ব বিরোধী দলের লোকেরা কাল তোমার গাড়িতে বোম ফিট করে রেখেছিল, কাল যেখানে তোমার গাড়িটা থেমে ছিল সেখানের সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে,
অপূর্ব অবাক হলো, চরম অবাক হলো। তবে ঘাবড়ালো না উল্টো নিজেকে শান্ত রেখে বললো,
‘ সত্যি, কখন হলো জানলাম না তো। ওহ মাই গড তাহলে তো কালকের জন্য আজ একটা পার্টি দেওয়া উচিত যতই হোক এত বড় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরে আসলাম।’
ছেলের কথায় চরম বিরক্ত হলো অপূর্বের বাবা। বিরক্তি নিয়েই বললেন উনি,
‘ তোমার কি এসব মজা মনে হচ্ছে অপূর্ব,
‘ মটেও না। শোনো সকালে যে পুরুষত্ব নিয়ে কথা বলেছিলাম তা তো প্রমাণ করতে পারলে না তুমি আমার বাবা বলে তোমায় আর একটা চান্স দিলাম।’
বলেই মোবাইলে ঘড়ির টাইমটা দেখে বললো অপূর্ব,
‘ আর এক ঘন্টা পর আমি বের হবো তোমায় আবার চার ঘন্টার সময় দিলাম নিজের পুরুষত্ব প্রমাণ করো। জীবনে কি করলে বলো তো, ছিঃ আমার একটা ছোট্ট বোনের দরকার ছিল। তুমি জানো না একটা ছোট বোনের জন্য বুকটা আমার চিন চিন করে।’
ছেলের কথায় না চাইতেও চরম প্রকার রাগ নিয়ে বললো অপূর্বের বাবা,
‘ চুপ করো অভদ্র ছেলে লজ্জা করে না আমি তোমার বাবা হই,
‘ তো আমিও তোমার ছেলে। কতবার এক কথা বলবো বলো তো, তোমার বয়সী লোকদের দেখেছো এক একজনার চারটা পাঁচটা করে ছেলে মেয়ে আর তুমি কি না দুটো ছেলে নিয়েই হাঁপিয়ে গেলে,
আর শুনতে পারলো না অপূর্বের বাবা। ছেলের কথা শুনে কান দিয়ে ধুয়া বের হওয়ার উপক্রম তাঁর। অপূর্বের বাবা চরম রাগ নিয়ে রুম থেকে বের হতে হতে বললো,
‘ তুমি যে আমার ছেলে সেটা বিশ্বাস করতেই আমার কষ্ট হয়।”
‘ বেশি কষ্ট নিও না তারপর অসুখে পড়লে তো আমার মাকেই কষ্ট করতে হবে,
‘ ধুর তোমার সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধছে। ভালোর জন্য রুমে এসেছিলাম কিন্তু দাম দিলে না।’
‘ হুম বুঝেছি বুঝেছি এখন রুমে যাও মাথায় সরিষার তেল দিয়ে এক ঘন্টা ঘুমাও। তাঁরপর আবার এক্সাম দিতে হবে তো,
‘ অভদ্র ছেলে তুমি দেও গিয়ে তোমার এক্সাম, বেয়াদব কোথাকার।’
বলতে বলতে বেরিয়ে গেল অপূর্বের বাবা। আর অপূর্ব কিছুক্ষন বাবার যাওয়ার পানে হাসি মাখা মুখ নিয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মুহুর্তেই চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো। এমনটা নয় অপূর্ব জানে না তাঁর গাড়ির নিচে বোম রাখার বিষয়টা। খুব ভালোভাবেই জানে। ওটা তো বাবাকে প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য এমনভাবে কথা বললো। অপূর্ব তাঁর ফোনটা হাতে নিয়ে ফোন করলো একটা তারপর বললো,
‘ কাজটা কি হয়েছে তুহিন?’
উওরে অপরপ্রান্তে থাকা তুহিনও কম্পিউটারের সামনে বসে কিছু একটা দেখতে দেখতে বললো,
‘ ভাই একটু সময় লাগবে,
‘ সময় যত লাগে নেও কিন্তু ওকে আমার জীবন্ত চাই তুহিন।’
‘ দেখছি ভাই।’
ফোন কাটলো অপূর্ব। তারপর বেশি না ভেবেই নিজেকে স্বাভাবিক মুডে নিয়ে এসে চললো অপূর্ব নিচে। মায়ের হাতে খাবার খেতে হবে তাঁকে।’
____
বিকেল চারটা গড়িয়ে পাঁচটার কাটায় ছুঁই ছুঁই। কুটিরঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মশা মারছে আকিব। সেই কখন অপূর্ব ভাই গেছে বাড়ি এখনো আসার কোনো নামগন্ধ নেই। এদিকে এই মেয়েটাও সেই যে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়েছে আর ওঠার নাম নেই। নির্ঘাত কাল সারারাত না ঘুমিয়ে শোকদিবস পালন করেছিল। আর শোকদিবস পালন করতে করতেই এমন অসুস্থ হয়ে পড়লো।’
এসব ভাবনার মাঝেই আচমকাই নিজের গালে নিজেই একটা চড় মেরে বলে উঠল আকিব,
‘ উড়ে শালায় মশা, শালা তোদের জীবনে বিয়ে হবে না দেখিস। না না বিয়ে হবে না বলা যাবে না আমার মতো ভদ্র সদ্র ছেলেটারে পেয়ে এভাবে রক্ত চুষছিস তো। তোদের অভিশাপ দিলাম তোদের বউরাও তোদের রক্ত এইভাবে চুষবে। ছিঃ ছিঃ তোদের লজ্জা হওয়ার দরকার এইভাবে দিনেদুপুরে মানুষের রক্ত খাচ্ছিস।’
এমন সময় আকিবের ফোনটা বেজে উঠলো উপরের নাম্বার না দেখেই ফোন রিসিভ করে বিরক্ত নিয়ে বলে উঠল আকিব,
‘ কোন শালারে বার বার ফোন করে ডিস্টার্ব করিস আমায়?’
সঙ্গে সঙ্গে অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি কর্কশ কন্ঠে বললো,
‘ আমি তোমার শালা হই আকিব?’
ব্যস হয়ে গেল আকিবের অবস্থা শেষ। আসলে এর আগেও দু-দুবার ফোনে রং নাম্বার থেকে কল এসেছিল আকিবের কিন্তু অপরপ্রান্তের ব্যক্তিটি কথা না বলে ফোনটা কেটে দিত। তাই আকিবের মেজাজ বিগড়ে যায় তারওপর মশার টর্চার। তাই তো উত্তেজিত হয়ে শালার কথাটা বলে উঠল আকিব। কিন্তু এবার সে শেষ কারন একটু আগের কথাটা আর কেউ নয় অপূর্বকেই বলে বসে আকিব। কারন অপূর্ব ফোন করেছিল এবার। এবার কে বাঁচাবে আকিবকে।’
”
পরন্ত বিকেলের ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগতেই হাল্কা নড়েচড়ে উঠলো প্রিয়তা। সারাদিন ঘুমিয়ে মাথা ভাড় হয়ে গেছে তাঁর, শরীরও ক্লান্তিতায় আঁটকে ধরেছে তাঁকে। প্রিয়তা শোয়া থেকে উঠে বসলো সমস্ত শরীর ব্যাথায় টনটন করছে যেন। এমন সময় হঠাৎই দরজা খোলার আওয়াজ কানে আসতেই দরজার দিকে ঘুরে তাকালো প্রিয়তা।’
#চলবে…..
#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০৭
_________________
হতভম্ব হয়ে রুমের ভিতর ঢুকতে গিয়েই রুমের দরজার সাথে হোঁচট খেল আকিব। কপাল ডলতে ডলতে ভিতরে ঢুকতে নিলো সে আচমকাই নিজের পায়ের সাথে পা বেজে পড়ে যেতে নিলো আকিব সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দিকে প্রিয়তাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে দরজার কর্নারটা জোড়ালোভাবে আঁকড়ে ধরে একটু ভাব নিয়ে বললো,
‘ হ্যালো আপু ভালো আছেন? আমার নাম আকিব। আপনায় যে এখানে নিয়ে এসেছে তার এসিস্ট্যান্ট না থুড়ি বন্ধু আমি। আপনায় পাহারা দিচ্ছিলাম এতক্ষণ যাই হোক আমায় একটু হেল্প করবেন প্লিজ না মানে এখনই অপূর্ব ভাই আসবে এখানে। আপনায় যদি আমার কথা জিজ্ঞেস করে বলবেন আমি নেই। আসলে হয়েছে কি ভাইয়ের সাথে একটু রাগী মুডে শালা বলে কথা বলেছিলাম বিশ্বাস করুন ইচ্ছে করে বলে নি ভুল করে বলে ফেলেছি। তো ভাই না আমার একটু রাগী, তবে মনটা খুব ভালো। যাই হোক ওটা বড় কথা নয় কথা হলো আমি আবার আমার ভাইয়ের রাগটাকে একটু না আধা ইঞ্চি ভয় পাই তাই আর কি প্লিজ আমি যে এখানে আছি এটা বলবেন না।’
বলেই খাটের নিচে লুকাতে নিলো আকিব সঙ্গে সঙ্গে আবার একটা খাটের কর্নারে সাথে টাক খেল সে। আকিবের কান্ডে এবার আর না হেঁসে পারলো না প্রিয়তা ফিক করে হেঁসে দিলো সে। এই ছেলে এতক্ষণ যা যা কান্ড দেখিয়েছে তাঁকে তাতে এতক্ষণ নিজের হাসিটাকে চেপে রাখতে পারলেও এখন আর পারলো না মুখ চেপে হেঁসে দিলো প্রিয়তা।’
আকিব টেনশনে থাকায় প্রিয়তার হাসিটা ঠিক খেয়াল করলো না। আজ তাঁর দিনটাই খারাপ খালি বার বার হোঁচট খায়। আকিব চুপচাপ খাটের তলায় সটান হয়ে শুয়ে রইলো আজ আর এখান থেকে কোনোভাবেই বের হবে না। বিশেষ করে যতক্ষণ না পর্যন্ত অপূর্ব ভাইয়ের মাথা ঠান্ডা হয়।’
…
আচমকাই রুম জুড়ে এক ঠান্ডা হিমশীতল বাতাস গায়ের পাশ দিয়ে যেতেই নিজের হাসিটা থামিয়ে দিলো প্রিয়তা। তার মন বলছে কেউ আসছে তাঁর সামনে। তবে কি সেই আবার আসছে যাকে আকিব নামের ছেলেটি ‘ভীষণ রাগী’ বলে আখ্যায়িত করলো তাঁর সামনে। প্রিয়তা না চাইতেও দরজার দিকে তাকালো দরজার সামনে থাকা সাদা রঙের পাতলা পর্দাটা বাতাসে উড়ছে খুব। প্রিয়তার দৃষ্টি সেদিকেই। চারিপাশে গুন গুন করে শব্দ হচ্ছে হয়তো পাখি ডাকছে, ইস! কি মিষ্টি সেই গুন গুনের সুর।’
প্রিয়তা তাকিয়ে রইলো, দরজার দিকেই তাকিয়ে রইলো আনমনে। অতঃপর কিছুক্ষনের মধ্যেই,
প্রিয়তার ধারণাটাই ঠিক হলো অপূর্বই এসেছে তাঁর সামনে পরনে তার রেড টিশার্ট সাথে ব্লাক জ্যাকেট, ব্লাক জিন্স চুলগুলো সুন্দর করে গোছালো, হাতে ব্ল্যাক ওয়াচ, চোখের দৃষ্টি শান্ত অপূর্বের চোখ দেখে প্রিয়তার একদমই মনে হচ্ছে না এই ছেলে ভীষণ রাগী। রুমে ঢুকেই প্রিয়তাকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিজের চুলগুলো ঠিক করতে করতে ফটাফট বলে ফেললো অপূর্ব,
‘ আমি কিন্তু একবার বলেছিলাম মিস কেউ আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকুক এটা আমার পছন্দ নয়।’
প্রিয়তা চমকালো, থমকালো অবাক হলো খুব। তক্ষৎনাত অপূর্বের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মনে মনে বললো,
‘ আমি মটেও আপনার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকি নি। সে তো আপনি হুট করে চলে আসায় চোখ আঁটকে গিয়েছিল এই যা।’
অপূর্ব এগিয়ে আসলো, পা ফেলে দ্রুত কদমে এগিয়ে আসলো প্রিয়তার দিকে। তারপর চেয়ার টেনে প্রিয়তার থেকে খানিকটা দুরত্ব নিয়ে বসে বললো,
‘ দেখো কোনো কিছু বলার থাকলে ফটাফট মুখ খুলে বলে ফেলবে, মনে মনে বলে কাকে শোনাবে বলো তো,
প্রিয়তা ফের চমকালো এই ছেলে কি তাঁর মনের কথাও পড়তে পারে নাকি? প্রিয়তার ভাবনার মাঝেই আবারও বললো অপূর্ব,
‘ আমি মন পড়তে পারি না মিস জাস্ট ইমেজিং করেছি,
প্রিয়তা তাকালো অপূর্বের দিকে। বিস্ময়তায় ঘেরা কি এক অদ্ভুত দৃষ্টি তার। প্রিয়তার চোখ দেখে দৃষ্টি সরালো অপূর্ব সেই শুরু থেকেই প্রিয়তার ওই চোখ দুটোতে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না অপূর্ব। কি আছে ওই চোখ দুটোতে আশ্চর্য তো। অপূর্ব নিজের ভাবনা ফেলে ফের প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,
‘ যাগ গে ওসব কথা বাদ দেও আগে বলো শরীর কেমন এখন সুস্থ লাগছে কি?’
প্রিয়তা মাথা নাড়ালো জ্বরটা হাল্কা কমেছে তাঁর। অপূর্ব চেয়েছিল প্রিয়তার কপালে হাত দিতে কিন্তু কোথাও একটা সংকোচতা ফিল হতে আর দিলো না হাত। অপূর্ব শান্ত গলায় বললো আবার,
‘ দেখো আমি জানি তুমি হয়তো খুব বিপদে পড়েই নিজের পরিবার ছেড়ে এইভাবে বিয়ের সাজে পালিয়ে এসেছো। তোমার শরীরটা ভালো নেই তাই আপাতত কোথাও একা যাওয়ার প্রয়োজন নেই আমার পরিচিত বোন আছে, যদিও বোন বললে একটু ভুল ভাবিও বলা যেতে পারে তো ওর কাছে কিছুদিন থেকো এটলিস্ট তোমার সুস্থ হওয়া পর্যন্ত। তারপর তোমার যেখানে যাওয়ার খুশি যেতে পারো। শুধু এতটুকু বলবো যেখানেই থাকো সাবধানে থেকো বুঝলে।’
অপূর্বের কথা শুনে মুগ্ধ হলো প্রিয়তা। ছেলেটা কেমন শান্ত গলায় কথা বলে। এক মুহুর্তের জন্য হলেও আকিবকে মিথ্যাবাদী ভাবতে মন চাইলো প্রিয়তার। এমন শান্ত গলায় কথা বলা মানুষটাকে রাগী বলে আখ্যায়িত করলো এভাবে। প্রিয়তার দৃষ্টির মাঝেই নিজের থুঁতনিতে হাত রেখে বললো অপূর্ব,
‘ তবে যাই বলো তোমার কিন্তু সাহস আছে বলতে হবে তা না হলে এভাবে কেউ,, যাগ গে ওটা তোমার পারসোনাল লাইফ ম্যাটার আমার না ঢোকাই উওম। আচ্ছা এটা বলো আকিব কই? আইমিন এখানে একটা ছেলেকে তোমার জন্য পাহারা দিয়ে রেখেছিলাম কোথায় ও?’
বলেই আশেপাশে তাকালো অপূর্ব। এ ছেলে নির্ঘাত তাঁর ভয়ে কোথাও লুকিয়ে আছে। প্রিয়তা তার ভাবনা থেকে বের হলো অপূর্বকে আকিবের বিষয়ে কিছু বলতে নিবে এর আগেই অপূর্ব খানিকটা গম্ভীর কণ্ঠ নিয়ে জোড়ালো গলায় বললো,
‘ বলছিলাম কি আকিব যদি খাটের তলার মশাদের সাথে সাক্ষাৎ হয়ে যায় তবে এবার বের হয়ে আসতে পারো। জানোই তো দেশে ডেঙ্গুর কি প্রকোপ?’
আকিব কেঁশে উঠলো। কি সাংঘাতিক ভাই তাঁর। কোনো প্রশ্ন ফ্রশ্ন ছাড়াই বুঝে গেল সে খাটের তলায় সটান হয়ে আছে। আকিবের ভাবনার মাঝেই আবারও বললো অপূর্ব,
‘ তুমি কি বের হবে আকিব নাকি আমি আসবো তোমার কাছে। তারপর দু’জন মিলে একসাথে মশাদের সাথে লুকোচুরি খেলবো।’
আরো উচ্চ স্বরে কেঁশে উঠলো আকিব। আকিবের কান্ডে না চাইতেও হেঁসে ফেললো অপূর্ব। অপূর্বের হাসিটা আপাতত আকিব না দেখলেও প্রিয়তা ঠিকই খেয়াল করেছে। কি মারাত্মক সুন্দর হাসে ছেলেটা। এক মুহূর্তের জন্য হলেও অপূর্বের নামের সাথে সাথে অপূর্বের মুখশ্রীর ওই হাসিটাকেও অপূর্ব বলে আখ্যায়িত করতে মন চাইলো প্রিয়তার। মনে মনে বলেও ফেললো সে,
‘ শুনুন না আপনার নামের সাথে সাথে আপনার হাসিটাও কিন্তু অপূর্ব।’
আকিব বেরিয়ে আসলো। আকিবের মাথা বের হতেই অপূর্ব সেদিকে তাকালো। অপূর্বকে নিজের দিকে তাকাতে দেখেই শুঁকনো হাসলো আকিব। বললো,
‘ ভালো আছেন ভাই?’
উওরে অপূর্বও হাসি মাখা মুখ নিয়ে বললো,
‘ অবশ্যই। ভালো না থেকে যাই কোথায় বলো তা তুমি ভালো আছো তো?’
‘ এতক্ষণ তো ছিলাম ভাই কিন্তু এখন থাকবো কি না জানি না।’
‘ যাই হোক তোমার গালে কি হয়েছে কেউ চর মেরেছিল কি?’
আকিব নিজের গালে হাত দিলো পুরো পাঁচ আঙুলের দাগ বসে গেছে তাঁর গালে। অপূর্বের কথা শুনে প্রিয়তাও তাকালো আকিবের মুখের দিকে। ইস ফর্সা গালটা পুরো লাল হয়ে গেছে যেটা প্রিয়তা এতক্ষণ খেয়াল না করলেও এখন করলো। আসলে আকিব তখন নিজের গালের মশাটাকে মারতে গিয়ে এমন অবস্থা করে ফেলেছে তাঁর গালের। তাই তো ভাবে আকিব তা গালটা তখন থেকে জ্বলছে কেন? আকিব কাঁদো কাঁদো ফেস নিয়ে বললো,
‘ ভাই, নেক্সট টাইম এখানে আসার আগে এক প্যাকেট মশার কয়েল আনা লাগবে। মশাগুলো বড্ড পাঁজি একটুও কথা শোনে না আমার।’
আকিবের কথা শুনে অপূর্বের আর বুঝতে বাকি রইলো না আকিবের গালে দাগ আসলো কোথা থেকে। অপূর্ব শুঁকনো হেঁসে জবাব দিলো,
‘ ওহ এবার বুঝলাম মশার কিস নিতে পারো নি, যাক গে এবার চলো জলদি সন্ধ্যা নামার আগেই ওকে নিয়ে বের হতে হবে। তারপর আমাদের আর এক জায়গায় যেতে হবে আকিব।’
উওরে আকিবও বেশি না ভেবে বললো,
‘ ঠিক আছে ভাই।’
‘ হুম এখন একটু গিয়ে বাহিরে দাঁড়াও আমার কিছু কথা আছে তোমার সাথে,
উওরে শুঁকনো ঢোক গিলে বললো আকিব,
‘ আচ্ছা ভাই।’
বলেই রুম থেকে বের হলো আকিব। আকিব যেতেই প্রিয়তাকে উদ্দেশ্য করে বললো অপূর্ব,
‘ তোমায় ঠিক ২০ মিনিট সময় দিলাম তার মধ্যে এই শাড়ি চুড়ি গহনা গাটি পাল্টে তৈরি হয়ে নেও। যতই হোক তুমি যে বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে এসেছো সেটা আপাতত আমি তুমি আর আকিব বাদে আর কেউ না জানলেও চলবে। ঠিক আছে। আমরা বাহিরে আছি একটু কষ্ট করে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসো আমাদের যেতে হবে। তোমার ব্যাগ ওই যে, (টেবিলের ওপরটা দেখিয়ে)
প্রিয়তা মন দিয়ে শুনলো অপূর্বের কথা। বিনিময়ে মুখে কিছু না বলে মাথা নাড়ায় সে। অপূর্ব বেরিয়ে যায় রুম থেকে। অপূর্ব বের হতেই আস্তে আস্তে বিছানা ছেড়ে নামলো প্রিয়তা। এগিয়ে গেল তাঁর ব্যাগটার কাছে। তারপর ধীরে ধীরে গায়ের গহনা গাটি খুলে নর্মাল সাজে সজ্জিত হতে লাগলো সে। অসুস্থতায় শরীর বড্ড ক্লান্ত তাঁর।’
____
রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে নিজের আঙুলের নখ খাচ্ছে আকিব। সে বুঝেছে অপূর্ব এখন তখনকার শালা বলার বিষয়টা নিয়েই কথা বলবে। ভয়ে আকিবের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। ইস কি উওর দিবে অপূর্ব প্রশ্ন করলে সব দোষ ওই পাজি রং নাম্বার কলটার। বেয়াদব কোথাকার। দিন দুপুরের পরপুরুষকে ফোন করে। হাতের কাছে পেলে না কেটে একদম কুঁচি কুঁচি করে ফেলতো আকিব। আকিবের থর থর করে কাঁপুনির মাঝেই হাজির অপূর্ব। খানিকটা গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘ আকিব,
সঙ্গে সঙ্গে আকিব পিছন ঘুরেই ফটাফট করে এক শ্বাসে বলে উঠল,
‘ বিশ্বাস করুন ভাই আমি তখন ইচ্ছে করে আপনায় ওসব বলে নি, আসলে একটা রং নাম্বার থেকে বার বার কল আসছিল ফোন ধরে হ্যালো বললেই কেটে দিত তাই বিরক্ত হয়ে তখন ওই কথাটা বলে ফেলি আপনায়। আমি ভেবেছিলাম আবার হয়তো ওই রং নাম্বার দিয়েই ফোন আসছে তাই আর কি আমি সরি ভাই।’
আকিবের থর থর করে কথা বলার ধরন দেখে অপূর্ব আকিবের হাত ধরে বললো,
‘ কুল ডাউন আকিব এত ভয় পাচ্ছো কেন, আমি তোমায় মারতে আসি নি। সবসময় এত ভয় পেলে চলে আর আমি জানি তখন তুমি ইচ্ছে করে ওই কথাটা বলো নি সো ডোন্ট ওয়ারি। আগে এটা বলো তোমার গার্লফ্রেন্ডকে ফোন করে বলেছো তো সবটা।’
উওরে আকিবও জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলে বললো,
‘ এক্ষুনি বলছি ভাই,
আকিবের কথা শুনে অপূর্ব খানিকটা বিষন্নতা ঘেরা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ এখনও কথা বলো নি আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি বলো গিয়ে আকিব,
‘ ঠিক আছে ভাই।’
বলেই তক্ষৎনাত জায়গা ত্যাগ করে মোবাইল হাতে অন্যদিকে চলে গেল আকিব। আর আকিবের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো অপূর্ব। সে আজও ভেবে পায় না এই আকিব ছোট ছোট বিষয়েও এত ভয় পায় কেন? অপূর্বের বন্ধু হয়ে এতটা ভয় পেলে চলে নাকি সত্যি এই আকিব যে কি করে অপূর্বের এত বিশ্বস্ত বন্ধু হলো কে জানে!’
অপূর্ব নিজের হাত ঘড়িটার টাইম দেখলো পাঁচটা পঁচিশ বাজে। এই মেয়েটাকে আপাতত নিরাপদ ভাবে কিছুদিনের জন্য আকিবের গার্লফ্রেন্ডের বাড়ি রাখতে পারলেই নিশ্চিত অপূর্ব। এরপর সুস্থ হয়ে এই মেয়ের যেখানে খুশি যেখানে যেতে পারে অপূর্ব আটকাবে না। অপূর্ব আর এই মেয়েটার চাপ্টার এখানে শেষ করবে অপূর্ব,,
আচমকাই দরজা খোলার খটখট আওয়াজ আসতেই নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে পিছন ঘুরে তাকালো অপূর্ব। এরই মাঝে গোলাপি রঙের চুড়িদার পড়ে বাহিরে বেরিয়ে আসলো প্রিয়তা। গায়ে হাতে কানের অলংকার খুলে কানে সামান্য দুটো ছোট্ট কানের দুল লাগিয়ে বেরিয়ে আসলো সে। চুলগুলো এখনও খোলা, মন অস্থির শরীর ক্লান্ত আর চোখে জোড়ালো বিষন্নতার ছোঁয়া।’
প্রিয়তা অপূর্বের দিকে তাকিয়ে জড়ালো গলায় নীরব কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ আমি তৈরি কোথায় নিয়ে যাবেন আমায় চলুন যাই তবে?’
অপূর্ব তাকিয়ে রইলো প্রিয়তার মুখশ্রীর দিকে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে খুব জোড়ালোভাবে কঠিন গলায় বলতে মন চাইছে তাঁর,
‘ শোনো মেয়ে, তোমায় এভাবে বাহিরে বের হতে দিবো না আমি। জলদি গিয়ে বোরকা পড়ে আসো।’
#চলবে….
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ। আর গল্প কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে।]
#TanjiL_Mim♥️