আজও বৃষ্টি নামুক পর্ব-৮+৯

0
250

#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০৮
_________________

নিজের ভাবনাগুলোকে দূরে ফেলে রেখে নিজের দৃষ্টি সরালো অপূর্ব। তারপর আস্তে আস্তে প্রিয়তার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো সে। তারপর হুট করেই প্রিয়তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলে উঠলো অপূর্ব,

‘ তুমি এভাবে বাহিরে যাবে?’

প্রিয়তা বেশ অবাক হলো অপূর্বের কথা শুনে। ঠিক শুনলো না ভুল শুনলো বুঝাতে বললো,

‘ মানে?’

‘ মানে কিছুই না বোরকা কোথায় তোমার? জলদি গিয়ে বোরকা পড়ে আসো? আর ভুলে কেন যাচ্ছো তুমি বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে এসেছো যদি কেউ তোমায় চিনে ফেলে আর তার থেকেও বড় কথা আমি চাই না আমার সাথে তোমায় কেউ দেখে ফেলুক। বোরকা পড়া অবস্থায় দেখলে সমস্যা নেই কারন নেক্সট টাইম আর কেউ তোমায় চিনতে পারবে না সো কুইকলি বোরকা পড়ে আসো। টাইম অনলি ফাইভ মিনিট’স।’

অপূর্বের কথা শুনে কেন যেন প্রিয়তা বেশি কিছু বলতে পারলো না। শুধু ঠোঁট নাড়িয়ে এতটুকুই বলে উঠল,

‘ ঠিক আছে।’

‘ হুম এখন জলদি যাও,

উওরে আর কিছু না বলে আবার কুটির ঘরের ভিতর ঢুকলো প্রিয়তা। বোরকার কথাটা ঠিক মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল প্রিয়তার। প্রিয়তা এমনিতেও সবসময় বোরকা পড়ে এখানে ওখানে যায়। আজ কি করে বোরকার কথাটা ভুলে গেল সেটাই ভাবছে সে।’

প্রিয়তা ভিতরে ঢুকে দরজা আঁটকে দিলো দরজা আটকানোর শব্দটা কানে আসতেই হকচকিয়ে উঠলো অপূর্ব। হুট করে মেয়েটার ওপর এমন অধিকার খাটাতে মন চাইলো কেন তাঁর?’ উওর মিললো না আপাতত। নিজের কাজে নিজেই যেন অবাক হলো অপূর্ব। আনমনেই বলে উঠল,

‘ আচমকা কি হলো আমার?’

অপূর্বের কথার মাঝেই সেখানে এগিয়ে আসলো আকিব। উত্তেজিত কন্ঠে বললো,

‘ অপূর্ব ভাই, গার্লফ্রেন্ড আমার রাজি এখন শুধু গেলেই হয়।’

উওরে অপূর্ব বেশি না ভেবে বললো,

‘ হুম ঠিক আছে।’

….
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পূর্বাভাস চলছিল তখন। আশেপাশে গাছের পাতা নড়ে হিমশীতল বাতাস বইছিল খুব। প্রিয়তা ভেবে পেল না কতক্ষণ আগের জঙ্গল থেকে হুট করেই এমন শহরের রাস্তায় এসে পড়লো কি করে? আসলে প্রিয়তার শরীর খারাপ থাকায় গাড়িতে বসেই জানালার দিকে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। খুব বেশি সময় হয় নি সে তাঁর চোখ বন্ধ করে রেখেছিল হাতে গুনে ২ থেকে ৩ মিনিট হবে হয়তো। এরই মাঝে ওতো গোড়ালো জঙ্গল ছেড়ে কিভাবে এত জলদি শহরের রাস্তায় ঢুকে পড়লো তাঁরা। প্রিয়তার পাশেই বসে আছে অপূর্ব। আর তাদের সামনেই ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি ড্রাইভ করছে আকিব। মাঝে দু-একবার লুকিং গ্লাসে অপূর্ব আর প্রিয়তাকে দেখছে। যদিও মাঝে এক দু’বার একে অপরের দিকে তাকানো ব্যতীত আর তেমন কিছুই চোখে পড়ে নি তাঁর।’

আকিবের কান্ডটা ঠিক দেখলো অপূর্ব। দেখেই গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

‘ আমরা যদি এক্সিডেন্ট করি আকিব তাহলে তো বুঝতেই পারছো তোমার শরীরের হাড্ডি একটাও আস্ত থাকবে না।’

আকিব থমকে গেল! যা অপূর্ব ভাই দেখে ফেললো তাঁকে। অতঃপর আর কোনো দেখাদেখি না করে গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দু’বার গাড়ির হর্ন বাজিয়ে ছুটে চললো আকিব। এখন ভালোয় ভালোয় গার্লফ্রেন্ডের বাড়ির দিকে ছুটলে হয়। আজ কতদিন হলো গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা হয় না আকিবের ইস ভালো হয়েছে এই মেয়েটার বাহানায় একটু গার্লফ্রেন্ডের চেহারাখানা দেখা যাবে। নিজের গার্লফ্রেন্ডটার জন্য মাঝে মধ্যে বড্ড কষ্ট হয় আকিবের। কবে না জানি তাঁর শোকে মেয়েটা শুকিয়ে যায়। যদিও আকিবের গার্লফ্রেন্ডের চেয়ে আকিবই টেনশন করে শুকিয়ে যাচ্ছে বারে বারে। এক তপ্ত নিশ্বাস ফেললো আকিব।’

অতঃপর পাক্কা এক ঘন্টা সময় পর আকিবের গাড়ি এসে থামলো একটা সুন্দর একতলা বাড়ির সামনে। আকিবের গার্লফ্রেন্ডের নাম আরোহী। আকিব গাড়ি থামিয়ে তক্ষৎনাত গাড়ি থেকে নামলো তারপর অপূর্বকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ ভাই আপনি এখানে বসুন আমি আসছি,

‘ জলদি এসো আকিব আমাদের যেতে হবে।’

‘ ঠিক আছে ভাই।’

__
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একটু সাজুগুজু করছে আরোহী আজ কতদিন পর আকিব আসবে তাঁর সামনে। আকিব যতটা না ভোলা ভালা আর ভিতু টাইপের আরোহী ঠিক তাঁর উল্টো যেমন সাহসী তেমনই মিষ্টি স্বভাবের। আকিবের সাথে তাঁর পরিচয়টা ছিল ছোট থেকেই আগে অপূর্বের বাড়ির পাশের বাড়ির আত্মীয়ের সুবাদে প্রায় ওখানে যেত আরোহীরা। সেখান থেকেই পরিচয় আকিব আরোহীর। আরোহীকে ছোট বেলা থেকেই পছন্দ করতো আকিব কিন্তু সাহস করে কখনো বলতে পারে নি। তবে আরোহী বুঝেছে আর সেও আকিবের ভীতু ভীতু স্বভাবের সাথে লোককে হাসানোর অসাধারণ প্রতিভাকে ভালোবেসে ফেলেছে। অপূর্ব এই বিষয়টা শুরু থেকেই লক্ষ করেছিল তাই তো ওই সব ছেটেল করে দিয়েছে। শুধু ফ্যামিলির দিকটা বাকি আছে। আকিব যেদিন গোলাপ হাতে আরোহীকে প্রপোজ করতে এসেছিল সেদিন কাঁপাকাঁপির ঠ্যালায় কিছু বলতেই পারে নি। আকিব কিছু বলতে না পারায় আরোহী নিয়েই বলে ফেলে।

‘তোমায় আমি ভালোবাসি’। আর ধপাস করে জড়িয়ে ধরে আকিবকে আকিব তো সেদিন খুশির ঠ্যালায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার উপক্রম কিন্তু দূর থেকে অপূর্বের চোখ রাঙানোর ভয়ে মোটামুটি শক্ত পক্ত ছিল সে।’

আরোহী লাল রঙা থ্রি-পিচ পড়ে লাস্ট বারের মতো ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক লাগালো এরই মাঝে তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসলো সে বুঝলো আকিবই মেসেজ করেছে তাঁকে। আরোহী চটজলদি ফোনটা হাতে নিয়ে নিজের ওড়নাটা সুন্দর মতো গায়ে জড়িয়ে চলে গেল বাড়ির পিছন দিকের দরজার কাছে।’

পিছনের বাগানের দিকটায় দাঁড়িয়ে ছিল আকিব। বুক ধড়ফড় করছে তার। এই আরোহী মেয়েটাকে আজও ঠিক বুঝলো না আকিব মেয়েটা তাঁর কাছে আসার সময়ই এমন কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায় কেন। আজ দু’মাস হলো এদের রিলেশনশীপের এখনও ভয়টয় কাটছে না কেন? অদ্ভুত! এমন চলতে থাকলে বিয়ের সময়ও যদি বউকে জড়িয়ে ধরতে কাঁপা কাঁপি লেগে যায় আকিবের তখন কি হবে? হায় সাংঘাতিক ব্যাপার আরোহী তো মনে হয় বাসর ঘরেই তাঁকে ছেড়ে দৌড়ে পালাবে। আকিবের ভাবনার মাঝেই বাড়ির পিছন দিকের কালো রঙের কাঠের দরজাটা খোলার শব্দ আসলো, দরজা খোলার শব্দ কানে আসতেই বুকের ধুকপুকানি যেন আরো বেড়ে গেল আকিবের। দৌড় দিতে নিয়েও থেমে গেল আবার। তারপর নিজেই নিজেকে বলতে লাগলো,

‘ ধুরু ছাতা এভাবে গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করা যায়? মনে হচ্ছে বুকের হৃদপিণ্ড এখনই বাহিরে বেরিয়ে আসবে। এই হৃদপিণ্ডটাও না বড্ড পাজি অপূর্ব ভাইয়ের রাগ আর আরোহীর কাছে আসার সময়ই বড্ড জ্বালাতন করে। মাঝে মধ্যে তো মন চায় এটাকে বাহিরে নিয়ে এসে চায়ের দোকানে বিক্রি করে দিতে। ফালতু একটা। আকিবের কোনো কাজে আসে না এটা হুদাই জ্বালাতন করে।’

আরোহী দরজা খুলেই আকিবকে দেখে এগিয়ে আসলো। দৌড় দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করলেও আকিব তাঁর দৌড় দেখে সেও না দৌড় দেয় উল্টোদিকে সেই ভয়ে আর দৌড় দিল না আরোহী। তবে আকিব যেমনই হোক আরোহীর তেমনই পছন্দ।’

আরোহী হাসিমাখা মুখ নিয়ে এসে দাঁড়ালো আকিবের সামনে ভেবেছিল আকিব তাঁকে দেখে কোনো কমপ্লিমেন্ট দিবে। কিন্তু না উল্টো বুকে হাত দিয়ে বললো,

‘ এতক্ষণ সময় লাগে এখানে আসতে এখনই তো আমার ফেটে যেত?’

আকিবের কথা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে খানিকটা শব্দ করে বললো আরোহী,

‘ কি?’

‘ আমার হৃদপিণ্ড।’

‘ হোয়াট?’

আরোহীর চেঁচানোর শুনে বুকে হাত দিলো আকিব। তারপর খানিকটা কাঁদো কাঁদো ফেস নিয়ে বললো,

‘ প্লিজ চেঁচিও না আমার কিছু হয়ে গেলে এর দায় কে নেবে তুমি?’

আকিবের কথা শুনে আরোহী আঙুল দেখিয়ে বলতে নিলো,

‘ এবার কিন্তু তুমি?’

‘ এমন করো কেন? প্লিজ চলো না জলদি। গাড়ির ভিতর ভাই আর মেয়েটা অপেক্ষা করছে।’

বলেই আরোহীকে রেখেই এগিয়ে গেল আকিব। কতকিছু ভেবেছিল কিন্তু কিছুই করতে পারলো না। আকিবের কান্ডে চরম রাগ উঠলো আরোহীর এ কেমন ছেলের সাথে রিলেশনে জড়ালো সে। আরোহী রাগী রাগী ভাব নিয়েই এগিয়ে গেল অপূর্বদের কাছে।’

___

খানিকটা বিরক্ত নিয়ে গাড়িতে বসে আছে অপূর্ব এতক্ষণ সময় লাগে আকিব আর আরোহীর এখানে আসছে। ওদের মধ্যে যে আপাতত কিছু হওয়ার নয় তা অপূর্ব ভালো মতোই জানে। বিয়ের আগে কিছু হওয়া তো দূর ওদের মাঝে বিয়ে হওয়ার পরও যে কিছু হবে না এতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে অপূর্বের। আকিব যে এতদিন দেখা না হওয়ার পরও আরোহীকে আজ জড়িয়ে ধরতে পারবে না এটাও অপূর্ব জানে তাহলে দেরি হচ্ছে কেন? আচ্ছা এমন তো নয় আরোহী খুশি হয়ে আকিবকে জড়িয়ে ধরেছে আর আকিব ওখানেই কুপোকাত। অপূর্ব নিজেকে সামলালো আরোহীর ওপর যথেষ্ট ভরসা আছে অপূর্বের আরোহী ঠিক সামলাতে পারবে আকিবকে। অপূর্বের পর যদি কেউ আকিবকে সামলাতে পারে সে হলো আরোহী।’

অপূর্ব নিশ্বাস ফেলে তাকালো প্রিয়তার দিকে। প্রিয়তা চুপচাপ বসে আছে শরীরে অবস্থা ঠিক বোঝা দায়। অপূর্ব প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ কিছু কথা বলি শোনো,

খানিকটা চমকে উঠলো প্রিয়তা। তক্ষৎনাত পাশ ফিরে তাকালো সে। প্রিয়তা তাকাতেই শান্ত গলায় বলে উঠল অপূর্ব,

‘ জীবন একটাই জানো তো সেটা। আর জীবন মানেই হলো হাসি, কান্না, সুখ, দুঃখ। তুমি এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতিতে আছো যেটাকে সুখ দুঃখ দুটোই বলা যেতে পারে। আমি জানি না ঠিক কতটা বাজে পরিস্থিতিতে পড়ে বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছো তুমি। তবে এতটুকু বলতে পারি ভেঙে পড়ো না। জীবনে যাই করো না কেন সাবধানে করো আর হ্যাঁ অবশ্যই ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিবে। ছোট্ট একটা কথা ‘ঘরের দুনিয়া যতটা না বদ্ধ মনে হয় বাহিরের দুনিয়া কিন্তু ততই কঠোর।’ তবে ভেবো না এসব কথা বলে আমি তোমায় ভয় দেখাচ্ছি। দুনিয়া বড্ড জটিল বুঝলে এর যত ভিতরে ঢুকবে ওতই সুতোর মতো প্যাঁচিয়ে পড়বে। তবে হার মানবে না প্যাঁচ সরিয়ে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। কি লক্ষ্য নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছো সেটায় আঁটকে থাকবে সবসময় যতক্ষণ না পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারো বুঝেছো। ভালো থেকো সবসময়। অল দা বেষ্ট।’

প্রিয়তা খুব মুগ্ধ হয়েই শুনলো অপূর্বের কথা। একটা অচেনা ছেলে কিভাবে তাঁকে বলছে কথাগুলো যেন তাঁর পরিচিত কেউ অথচ এই ছেলেটার সাথে পরিচিত হলো মাত্র কয়েক ঘন্টাই। প্রিয়তা মুখ ফুটে কিছু বলতে চাইলো, বলতে নিলোও এরই মাঝে সেখানে হাজির হলো আকিব আর আরোহী। অপূর্ব ওদের দেখেই বললো,

‘ ওই তো ওঁরা চলে এসেছে, ‘নামো জলদি।’

প্রিয়তা শুনলো কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিয়েও থেমে গেল ওখানেই। তারপর আস্তে আস্তে গাড়ির দরজা খুলে বাহিরে বের হতে লাগলো সে। অপূর্ব ততক্ষণে বাহিরে বেরিয়ে এগিয়ে গেল আরোহীর কাছে। কিছুক্ষন কথাও বললো আরোহীর সাথে, আকিব তখন চুপটি করে দাঁড়িয়ে ছিল। আরোহী অপূর্বের সাথে স্বাভাবিক থাকলেও আকিবের ওপর ছিল গভীর রাগ।’

প্রিয়তা গাড়ি থেকে নামতেই অপূর্ব আরোহী আর আকিব এগিয়ে আসলো সেখানে অপূর্বই আগে বললো,

‘ এই হচ্ছে সেই আরোহী যার কথা তোমায় বলেছিলাম। আপাতত ওর সুস্থতা পর্যন্ত তোমার কাছে রেখো। যত্ন নিও একটু।’

প্রতি উওরে প্রিয়তার কাঁধে হাত রেখে বললো আরোহী,

‘ তুমি কোনো চিন্তা করো না ভাইয়া যতদিন না ও সুস্থ হচ্ছে ওকে ছাড়ছি না।’

শুঁকনো হাসলো অপূর্ব। বললো,

‘ নিশ্চিত হলাম আরোহী। আচ্ছা এবার আমাদের যেতে হবে একটা জরুরি কাজ আছে?’

‘ ভিতরে ঢুকবেন না ভাইয়া?’ (আরোহী)

‘ এখন নয় অন্য আরেকদিন। আকিব চলো,

উওরে আকিবও চমকে উঠে বললো,

‘ জ্বী ভাই।’

অতঃপর প্রিয়তাকে রেখেই চলে যেতে লাগলো অপূর্ব আর আকিব। অপূর্ব যাওয়ার আগে প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ নিজের খেয়াল রেখো আর সাবধানে থেকো। সময় পেলে আমি আসবো আবার ঠিক আছে।’

বলেই গাড়িতে গিয়ে বসলো অপূর্ব। আকিব আগেই বসে পড়েছে গাড়িতে। আকিব গাড়ি স্ট্যার্ট দিলো। গাড়ি চলার উদ্দেশ্যে ছুটতেই মনটা বড় অস্থির হলো অপূর্বের কেন যেন মেয়েটাকে রেখে যেতে মন চাইছে না তাঁর। অপূর্বের ঘুরে তাকানোর ইচ্ছে জাগলেও ঘুরে তাকালো না সে। মন মনে শুধু বললো এমন,

‘ কি আছে তোমার মাঝে যে তোমায় ছেড়ে যেতে মন চাইছে না আমার। ইস! কি সাংঘাতিক অস্থিরতা। এই অস্থিরতা যেন এর আগে কখনোই ফিল করে নি অপূর্ব।

অপূর্ব আনমনাই তাঁর বুকে হাত দিলো। গাড়ির বাম দিকের লুকিং গ্লাসে দেখলো সে প্রিয়তার কালো বোরকার আড়ালে চোখদুটো দেখা যাচ্ছে খুব। অপূর্ব একপলক প্রিয়তাকে দেখেই চোখ সরিয়ে নিল। অতঃপর আর কিছু না বলেই ছুটে চললো অপূর্বরা প্রিয়তাকে ফেলে রেখেই।’

এদিকে,

প্রিয়তাও তাকিয়ে রইলো অপূর্বের যাওয়ার পানে। মনে মনে বললো শুধু,

‘ আর কি দেখা হবে আমাদের? হয়তো হবে হয়তো না।’

#চলবে….

#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০৯
_________________

‘ চলো তাহলে যাওয়া যাক বুবু।’

আচমকাই ‘বুবু’ শব্দটা কানে আসতেই চমকে উঠলো প্রিয়তা। বিস্মিত ভরা চোখ নিয়ে তাকালো সে আরোহীর মুখের দিকে। আরোহী মুঁচকি হেঁসে বললো,

‘ আসলে তোমরা নামটা জানা হয় নি তো তাই আর কি। চলো ভিতরে যাই তোমার সাথে পরিচিত হতে হবে তো নাকি। তুমি আমার বড় না ছোট তাও তো জানি না।’

বলতে বলতে প্রিয়তার হাত ধরে এগিয়ে যেতে লাগলো আরোহী। আর প্রিয়তা চুপচাপ শুনছিল আরোহীর কথা তবে মনটা পড়ে রইলো তাঁর বুবুটার জন্য। বড্ড চিন্তা হচ্ছে তার, না জানি কেমন আছে তাঁর বুবু।’

অপূর্বরা দৃষ্টির বাহিরের চলে গেছে অনেক আগেই। প্রিয়তা আর ফিরে তাকায় নি সেখানে এগিয়ে চললো তাঁর মতো করে।’
____

সন্ধ্যা শেষে রাত হবে হবে এমন। প্রিয়তার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে প্রেমা। রাগ নেই তাঁর তবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে খুব না জানি বোনটা কোথায় আর কেমন আছে। প্রেমা আজ চলে যাবে তাঁর স্বামীর বাড়ি। স্বামীর হুকুম এই রাতেই নিয়ে যাবে তাঁকে। ঘড়িতে এখন প্রায় আটটার কাছাকাছি বাজতে চললো। প্রেমার শশুর বাড়ি খুব একটা দূরে নয় এখান থেকে। এবার গেলে আবার কবে আসতে পারবে জানা নেই প্রেমার। তবে আবার এসেও বা কি করবে তাঁর বোনটাই যে নেই আর। প্রেমা ঘরের সব জায়গায় চোখ বুলালো হঠাৎই তাঁর চোখ গেল টেবিলের একটা বইয়ের ভাঁজে হাল্কা দৃশ্যমান একটা কাগজের দিকে। প্রেমা কৌতুহলী এগিয়ে গেল সেখানে, প্রিয়তা কিছু লিখে যায় নি তো তাঁর জন্য। প্রেমা এগিয়ে গিয়ে বইটা খুলে কাগজটা বের করলো তারপর ভাজ খুলে শুরুতেই দেখতে পেল। লেখা সেখানে,

‘ বুবু!’

প্রেমা থেমে গেল তাঁর ধারনাই ঠিক প্রিয়তাই কিছু লিখে গেছে তাঁর জন্য। প্রেমা সর্বপ্রথম দৌড়ে গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো। তারপর বিছানায় বসে পড়তে লাগলো। সেখানে লেখা,

‘ বুবু আমায় ভুল বুঝিস না। তুই তো জানিস বুবু ছোট বেলা থেকেই আমার পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই বুবু। আর চাঁচি যে আমার সাথে অন্যায় করেছে তার শাস্তিও দিতে চাই। আমি জানি আমি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসলে চাঁচি তোর ওপর অত্যাচার করবে তাই বলেছিলাম আমার সাথে আসতে কিন্তু এলি না। আমার জন্য চিন্তা করিস না বুবু আমি তোর জামাইর নাম্বার লিখে নিয়ে গেলাম সাথে তোর বাড়ির নাম্বারটাও। আমি নিজের একটা ব্যবস্থা করে তোকে ঠিক ফোন করবো। আমার জন্য চিন্তা করিস না। ভালো থাকিস।’

ইতি
প্রিয়তা।’

চিঠি পড়ে চোখ বেয়ে দু’ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো প্রেমার। বাবা মা চলে যাওয়ার পর তাদের দু’বোনটার জীবনটা যেন নরোগ যন্ত্রণায় কাতর হয়ে গেছে। এমন সময় দরজায় নক পড়লো, চাচা ডাকছে। বলছেন,

‘ প্রেমা মা কই তুই জামাই বাবা কিন্তু চলে এসেছে।’

উওরে প্রেমাও চোখ মুখ মুছে বলে উঠল,

‘ এই তো ছোট আব্বু আসছি আমি।’

অতঃপর চিঠিটা নিজের শাড়ির আঁচলে লুকিয়ে চললো প্রেমা শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে। চাঁচি সারাদিনে তেমন একটা চেঁচামেচি করে নি তবে গম্ভীর হয়ে ছিল হয়তো সকালের আসা সেই ছেলেগুলো এখনও তাঁর বোনটার কোনো খোঁজ আনতে পারে নি।’

___

তুহিনের বাড়ির সোফায় বসে আছে অপূর্ব চোখ মুখ যথেষ্ট স্বাভাবিক থাকলেও ভিতরে ভিতরে যথেষ্ট রেগে আছে সে। অপূর্বের মাথায় আসছে না মুখার্জি মশাই ব্যতীত আর এমন কে থাকতে পারে যে ইলেকশনের আগেই তাঁকে রাস্তা থেকে সরাতে চাইছে। মুখার্জি মশাই তাঁকে নিজের দলে টানতে চাইছে সাথে বাজে কাজে লিপ্ত করতে চাইছে। তবে কি মুখার্জি মশাই বারন করার জন্য তাঁর ক্ষতি করতে চাইছে কিন্তু সেটা যদি হয় তাহলে কাল রাতে বাসে বসে তাঁকে ফোন করে নিজের দলে টানার কথা বলতো না। আর তার কথার ধরন শুনেও অপূর্বের মনে হয় নি মুখার্জি মশাই এমন কিছু করতে পারে।’

অপূর্বের ভাবনার মাঝেই অপূর্বের পাশে বসে থাকা আকিব বলে উঠল,

‘ ভাই আমরা এখানে এসেছি কেন?’

প্রতি উওরে অপূর্ব কিছু বলবে এরই মাঝে ল্যাপটপ হাতে সেখানে এগিয়ে আসলো তুহিন। বললো,

‘ অপূর্ব ভাই। আপনি যেভাবে বলেছিলেন কাজটা হয়ে গেছে। আপনার গাড়ি প্রথমে যেখানে থেমেছিল সেখানের ফুটেজ দেখেছি আমি। একটা গামছা পরিধিত লোকই আপনার গাড়িতে,

তুহিনের কথার মাঝেই হাত দেখিয়ে তুহিনকে থামতে বললো অপূর্ব। তুহিনও থেমে গেল। তুহিন থামতেই অপূর্ব আকিবের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ একটা গ্লাস পানি নিয়ে আসো আকিব?’

আকিব বেশ মনোযোগ দিয়েই তুহিনের কথা শুনছিল সে সত্যি বুঝতে পারছে না কিসের গাড়ি আর কিসের গামছার কথা বলছে। আকিব অপূর্বের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ ভাই তুহিন কিসের কথা বলছে?’

উওরে অপূর্ব আকিবের দিকে দৃষ্টি রেখে শান্ত গলায় বললো,

‘ আগে একগ্লাস পানি আনো তারপর বলছি।’

‘ আপনার কি খুব পানি পিপাসা পেয়েছে ভাই,

‘ মনে করো তেমনটাই।’

‘ আমি না আসা পর্যন্ত আপনারা কোনো কথা বলবেন না কিন্তু ভাই?’

‘ হুম তুমি নিশ্চিতে যাও আকিব।’

আকিব চলে গেল। দ্রুত গিয়ে টেবিলের উপর থেকে কাঁচের গ্লাসে করে পানি এনে এগিয়ে দিল অপূর্বের দিকে। অপূর্ব পানিটা নিলো না উল্টো আকিবকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ কাঁচের গ্লাসে কেন নিয়ে এসেছো যাইহোক এটাকে শক্ত করে ধরে রাখবে ভেঙে গেলে কিন্তু বুঝতেই পারছো।’

আকিব অবাক হলো, ভীষণ অবাক হলো অপূর্বের কথা শুনে এখানে ভাঙার মতো কি ঘটনা আছে। আকিবের ভাবনার মাঝেই অপূর্ব তুহিনকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ এবার বলো তুহিন কাল কে রেখেছিল বোম আমার গাড়িতে,

অপূর্বের কথা শুনে থর থর করে কেঁপে উঠলো আকিব। হাতের গ্লাস কাঁপতে লাগলো তক্ষৎনাত। আকিব কাঁপতে কাঁপতে বললো,

‘ বববববব মমমমমম আপনার গাড়িতে,

উওরে অপূর্ব বললো,

‘ হুম বম। হাতের গ্লাস যেন না ভাঙে আকিব।’

আকিব শক্তপক্ত হয়ে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে রইলো পানির গ্লাসটাকে। এরই মাঝে তুহিন বলে উঠল,

‘ ভাই কে রেখেছে তা তো বুঝতে পারছি না কারন লোকটার চেহারা ঢাকা ছিল। এই দেখুন সিসি টিভি ফুটেজের ভিডিও।’

বলেই অপূর্বের দিকে ল্যাপটপটা এগিয়ে দিল তুহিন অপূর্বের দিকে। অপূর্বও দেখতে লাগলো। এটা হলো কাল বিকেলের ঘটনা। যখন অপূর্ব নিজের গাড়ি করে খুলনা থেকে ফিরছিল।’

‘ফ্লাসবেক’

ঘড়িতে তখন প্রায় বিকেল চারটার কাঁটায় ছুঁই ছুঁই। অপূর্ব নিজের কাজ সেরে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল একাই ছিল সে। কারন অপূর্ব খুলনা একাই এসেছিল। হঠাৎই মোবাইলে রিচার্জ করার কথা মাথায় আসতেই অপূর্ব রিচার্জের একটা দোকান দেখে সেখানে থেমে যায়। অপূর্ব থামতেই দূর সীমানায় একটা ট্রাকও থেমে যায় যেটা অপূর্ব খেয়াল করে নি। অপূর্ব গাড়িটাকে সাইডে রেখে এগিয়ে যায় রিচার্জের দোকানের উদ্দেশ্যে। দোকানটা রাস্তার অপজিটে থাকার কারনে অপূর্ব সেদিকেই যায়। অপূর্ব যেতেই তাঁর গাড়ির গা ঘেঁষে থামে একটা ট্রাক। অপূর্বের গাড়ির পাশের দিকটা কোনো দোকানপাট না থাকায় কেউ কিছুই দেখতে পায় নি। ট্রাক থেকে নামে একজন মুখে গামছা পেঁচানো লোক তারপর সেই গাড়ির পিছনে একটা বোম ফিট করে চলে যায়। অপূর্বের গাড়িটা যেখানে থেমে ছিল সেখানে একটা খাম্বা থাকে। যেখানে কিছু বিশেষ কারনে সিসি টিভি ক্যামেরা রাখা ছিল যেটা ওই গামছা পড়া লোকটা খেয়াল করে নি।’

কাজটা শেষ হতেই অপূর্ব আসার আগেই ট্রাক সমেত লোকটা চলে যায়। সাথে কাউকে ফোন করে বলে,

‘ কাজটা হয়ে গেছে বস?’

উওরে অপরপ্রান্তে থাকা সাদা পাঞ্জাবি পড়া এক যুবক তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

‘ গুড।’

অতঃপর ফোনটা কেটে দেয় যুবকটি।’


অপূর্ব তাঁর মোবাইল রিচার্জ করে এগিয়ে আসে তাঁর গাড়ির কাছে। ঠিক সেই মুহূর্তেই একজন বৃদ্ধা মহিলা হাঁটতে হাঁটতে পড়ে যায় অপূর্ব গাড়ির ডিকির কাছে। অপূর্ব তক্ষৎনাত এগিয়ে গিয়ে ধরে বৃদ্ধা মহিলাটাকে। পানি খাওয়ায় অল্প। সাথে বলে,

‘ আপনি ঠিক আছেন তো দাদিমা?’

উওরে দাদিমাও পানিটা খেয়ে মুচকি হেঁসে বলে,

‘ হুম দাদুভাই।’

তারপর দু’মিনিটের মতো বৃদ্ধা মহিলাটির সাথে কথা বলে চলে যায় মহিলাটি। হঠাৎই অপূর্ব খেয়াল করে তাঁর গাড়ির ডিকিটা খানিকটা ফাঁক আছে। অপূর্ব কি ভেবে যেন হাতের খালি বোতলটা সেখানে রাখার জন্য গাড়ির ডিকিটা খোলে সাথে সাথে গাড়ির ভিতর বম দেখে চরম অবাক হয়। খানিকটা চমকে ছিল ঠিকই তবে ভয় পায় নি মোটেও উল্টো নিজেলে সামলে রেখে আশেপাশে তাকায় তখনই সিসি টিভিটা দেখে সে। তবে বেশি ভেবে তক্ষৎনাত গাড়িতে ঢুকে গাড়ি স্পিড বাড়িয়ে চালাতে থাকে। বোমটায় টাইম সেট করে গেছে আর মাত্র ১৯ মিনিটের মাঝেই বোমটা ফাটবে। অপূর্ব যেখানে গাড়িটা থামিয়েছিল সেখানে থেকে আসার সময় একটা প্রারমারি স্কুল পেরিয়ে এসেছিল অপূর্ব। স্কুল ছুটি দিয়েছিল তখন তাই কোনো রিস্ক না নিয়ে তক্ষৎনাত গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যায় অপূর্ব। তারপর জনশূন্য জায়গায় দেখে একটা গাছের সামনে গাড়িটা রেখে মোবাইল নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে আসে সেখানে থেকে অপূর্ব বের হওয়ার চার মিনিটের মাথাতেই গাড়ি সমেত বম ফাঁটে। অপূর্বের তেমন কোনো ক্ষতি হয় নি আর কোনো মানুষেরও ক্ষতি হয় নি তবে আশেপাশের কিছু গাছগাছালি পুড়ে গিয়েছিল।’

অপূর্ব নিজেকে সামলায় তারপর বেশি না ভেবেই এগিয়ে যায় খুলনা বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে। আর যাওয়ার আগে তুহিনকে ফোন করে বলে সবটা। তারপর তুহিনই সকালে খুলনা এসে সব দেখে সিসি টিভি ফুটেজ টাও নিয়ে যায় সঙ্গে করে।’

‘ফ্লাসবেক ওভার’

আকিব কাঁপছে থর থর করে কাঁপছে কি সাংঘাতিক ব্যাপার গাড়িতে বম দেখেও গাড়ি নিয়ে ছুট লাগায় অপূর্ব ভাই। যদি ওই সময় আকিব ওখানে থাকতো তাহলে কি করতো নির্ঘাত বম বম করে চিল্লিয়ে নিজেও জ্ঞান হারাতো সাথে ওখান কার লোকজনগুলোকেও বিপদে ফেলতো। ভাবতেই হেঁচকি উঠে গেল আকিবের। যা দেখে অপূর্ব বললো,

‘ পানি খাও আকিব?’

আকিবও তাই করলো অপূর্বের জন্য আনা পানি সে নিজেই ঢক ঢক করে খেয়ে নিলো। অপূর্ব বললো,

‘ এবার বুঝলে পানির পিপাসা কার পেয়েছিল।’

আকিব থমলে গেল তাঁর মানে অপূর্ব ভাই তাঁর জন্যই পানি আনতে বলেছিল। অপূর্ব বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো তারপর বললো,

‘ চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ওই লোকটাকে আমার চাই তুহিন?’

উওরে তুহিনও বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

‘ হয়ে যাবে ভাই। অলরেডি ট্রাকটা কোথায় থেমেছে তাঁর হদিস পেয়েছি।’

‘ কোথায় থেমেছে?’ (অপূর্ব)

‘ বাগেরহাট।’

চোখ মুখ জ্বলে উঠলো অপূর্বের। রাগে মাথা গরম হচ্ছে খুব। অপূর্ব রাগ মাখা কন্ঠ নিয়েই বলে উঠল,

‘ খোজ লাগাও তুহিন বাগেরহাটের কোন কর্নারে লুকিয়ে আছে ওকে আমার জীবন্ত চাই, কালকের মধ্যে ওকে আমার চায়ই চাই।’

‘ ঠিক আছে ভাই হয়ে যাবে অলরেডি লোক পাঠিয়ে দিয়েছি আমি।’

অপূর্ব আর দাঁড়ালো না তক্ষৎনাত বেরিয়ে গেল ওখান থেকে। এই কাজের পিছনে কার হাত আছে সেটা তাঁকে জানতেই হবে। ভাবতে ভাবতে চলে গেল অপূর্ব। অপূর্ব বের হতেই আকিবও দৌড়ে বেরিয়ে গেল। অপূর্ব যে ভয়ংকর ভাবে রেগে গেছে তা সে হারে হারে বুঝতে পেরেছে। লোকটাকে কাছে পেলে কি যে করবে অপূর্ব কে জানে? আকিব আনমনাই বির বির করে বলতে লাগলো,

‘ তোমার জন্য শুভকামনা ভায়া। খুব শীঘ্রই দেখা হোক তোমার সাথে অপূর্ব ভাইয়ের। তুমিও তো জানো অপূর্ব ভাই কি জিনিস?’

#চলবে….