আমায় একটু ভালবেসো পর্ব-৭+৮

0
240

#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া

(৭)

,সেখানে থাকা প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ে ভিন্ন ধরনের কথা বলতে লাগলো।অর্ণার নিজেকে এতো ছোট মনে হলো। সে দ্রুত গতিতে সেখান থেকে চলে গেল। ক্লাসরুমে মন খা রা প করে বসে ছিল অর্ণা। এমন সময় একটা মেয়ে এসে তার পাশে বসলো। মেয়েটার নাম ঝুমুর। অর্ণার সাথে তার ভালোই সম্পর্ক।ঝুমুর অর্ণার কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো,
,কি হয়েছে অর্ণা? মন খা রা প কেন?
,না তেমন কিছু না।
,কই আমি তো বুঝতে পারছি। যে তোমার কিছু একটা হয়েছে। আচ্ছা বাদ দাও। কলেজে আসোনি কেন এতদিন?
,বোনের বিয়ে ছিল তাই।
,ও আচ্ছা।তা দোতলায় কি শুনে এলাম?
,কি?
, তোমার বোন পর্ণা।সবাই কে বলে বেড়াচ্ছে যে তুমি নাকি কার সাথে প্রেম করতে। সে নাকি তোমায় ছেড়ে চলে গেছে। এর জন্য নাকি তুমি সু ই সা ই ড করতে গিয়েছো। সবাই তো হাসাহাসি করছে তোমার নাম নিয়ে।
ঝুমুরের কথা শুনে অর্ণার মাথায় আকাশ ভে ঙে পড়লো। সে ভাবতে পারেনি পর্ণা এতটা নিচে নামবো।
ক্লাস রুমে কিছু ছেলে এসে অর্ণার দিকে তাকিয়ে বলল,
,আরে অর্ণা। মন খা রা প করো না। তোমাকে কত অফার দিয়েছি আমরা। কিন্তু তুমি তো রাজি হলেই না। আচ্ছা আমরা কি কম সুন্দর। নাকি তুমি যার সাথে প্রেম করেছো সে আরো সুন্দর। দেখলে সুন্দর দেখে প্রেম করেছো। সে ধোঁকা দিয়েছে। আমরা তা করবো না । তুমি কিন্তু এখন আমাদের চান্স দিতে পারো।।
বলেই ছেলেগুলো হাসতে লাগলো। এদের কথা শুনে অর্ণার চোখে পানি এসে গেল। সে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেল ক্লাস রুম থেকে।
অর্ণা এলোমেলো পা ফেলে শিড়ি দিয়ে নামছে। করিডোরের শেষ মাথায় আসতেই আদনানের সাথে দেখা। আদনান অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
,কি হয়েছে অর্ণা! তুমি কাঁদছো কেন?আর কোথায় যাচ্ছো?
অর্ণা ছলছল চোখে আদনানের দিকে তাকালো। মনে, মনে বলল,আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল আপনাকে ভালবাসা। তারপর কোনো কিছুর জবাব না দিয়ে বেরিয়ে গেল কলেজ থেকে।
রাস্তায় উদভ্রান্তে মতো হাঁটছে অর্ণা।আপাতত সে নিজের মধ্যে নেই । এই মূহুর্তে তার ইচ্ছে করছে, গাড়ির চাকার তলে নিজেকে দিয়ে দিতে। যাতে শেষ হয়ে যায় এই জীবন। আনমনে হয়ে হাটতে, হাটতে কখন যে গাড়ির সামনে চলে এসেছে তা খেয়াল করেনি অর্ণা। হঠাৎই একটা রিক্সা এসে ধাক্কা দেয় অর্ণাকে। সাথে,সাথে ছিটকে গিয়ে পড়ে রাস্তার ধারে ।
লোকজনের ভিড় জমে যায় মূহুর্তে। একজন মহিলা গিয়ে দেখে, অর্ণার জ্ঞান নেই । মাথার একপাশ দিয়ে র ক্ত বের হচ্ছে অনবরত। সে তার রুমাল দিয়ে কা টা স্থান চেপে ধরে।
,আরে আপনারা দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে কি দেখছেন। মেয়েটার মাথায় আ ঘা ত পেয়েছে । তাকে হসপিটালে নিতে হবে। আপনারা সাহায্য করুন আমাকে।

কয়েকজন মিলে ধরাধরি করে গাড়িতে তুলল অর্ণাকে। ভদ্রমহিলার নির্দেশ মতো।হাসপাতালে নেয়া হলো।
অর্ণার বাবা আশোক সাহেব যখন শুনলো, তার মেয়ে এ ক্সি ডেন্ট করেছে। সাথে, সাথে বুকে ব্যা থা শুরু হয়ে গেল। তিনি কোনোদিকে না তাকিয়ে সোজা চলে গেলেন হাসপাতালে।
অর্ণা পিটপিট করে তাকালো।মাথার য ন্ত্রণার কারণে চোখ খুলতে পারছে না। তবুও কষ্ট করে তাকালো।
আশোক সাহেব মেয়ের হাত ধরে বসে আছে। তার চোখে-মুখে অসহায়ত্বের ছাপ।অর্ণার বাবার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো।
,বাবা!
আশোক সাহেব মেয়ের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলল,
,বাবা তুমি কাঁদছো কেন! এই দেখ আমি একদম সুস্থ আছি।
,হ্যা তা তো আমি দেখতে পাচ্ছি। তুমি কতটা সুস্থ। মা আমাকে বল তোমার কোথায় কষ্ট হচ্ছে।।
অর্ণা হাসলো।
,আমি বাড়ি যাব বাবা। এখানে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
,আচ্ছা ঠিক আছে। আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে দেখছি। যত তারাতাড়ি সম্ভব আমরা বাড়িতে যাব মা।

অর্ণা যখন বাড়িতে প্রবেশ করে। তখন সবাই জিজ্ঞেস করতে থাকে, যে কি হয়ছে। মাথায় ব্যান্ডেজ কেন?
সকলের প্রশ্নের জবাব দিয়ে অর্ণাকে রুমে নেয়া হয়।
বিশ্রাম নেয়ার জন্য।

তারপরের দিনগুলো বেশ দ্রুত কা টে। চারদিন পর অর্ণা
মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠে। এর মধ্যে বেশ ক ঠি ন একটা সিদ্ধান্ত নেই অর্ণা। সন্ধ্যা বেলা বাড়ির সকলেই হলরুমে উপস্থিত আছে। এমন সময় অর্ণা এসে সবার উদ্দেশ্যে বলে,
,বাবা আমার তোমাদের সাথে কিছু কথা ছিল!
,কি কথা বল মামুনি।
,দেখ আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে। আমি আর এখানে থাকবো না।
অর্ণার কথা শুনে সবাই বেশ অবাক হলো।
,এখানে থাকবি না মানে। কোথায় থাকবি তুই অনি। (ছোট বাবা)
,আমি ঠিক করেছি। শ্রীমঙ্গল চলে যাব। মেঝো ফুফুর বাড়িতে । আর সেখানেই থাকবোএখন থেকে।
অর্ণা যেন আজ সবাইকে ঝটকা দিয়ে যাচ্ছে। আশোক সাহেবের বড় ভাই,ইমরান সাহেব এসে ভাতিজীর মাথায় হাত রাখলো,
,শান্ত হও মা। কি হয়েছে আমাদের কে সব খুলে বলো। কে তোমাকে কি বলেছে?যে তুমি বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বল আমাকে। আমি তার বিচার করব।
অর্ণা ইমরান সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল,
,কেউ আমাকে কিচ্ছু বলেনি বড় বাবা। আমি নিজের ইচ্ছেতে যেতে বলছি। আসলে এখানে আর ভালো লাগছে না। ফুফুর ওখানে নিরিবিলি পরিবেশ। আমার ভালো লাগবে। তাই বলছি।
,আচ্ছা ঠিক আছে । তোমার কথায় মেনে নিলাম।তা কতদিনের জন্য যেতে চাও?
,আমি চাইছি দু-তিন বছর থাকতে। অনার্স কমপ্লিট করেই চলে আসবে।
,কিহহহ!
,এতো অবাক হচ্ছো কেন তোমরা।
,অবাক হবো না। তুই দু-তিন বছরের জন্য চলে যাবি মানে কি?তোর কি ঘর বাড়ি নেই। যে তুই অন্যের বাড়িতে থাকবি।(অর্ণার মা)
,অন্যের বাড়ি কোথায় মা। ওটা আমার ফুফুর বাড়ি। তাছাড়া ফুফুতো একলায় থাকে। আমি গেলে তার ভালো লাগবে।
,কিন্তু,,৷
,কোনো কিন্তু নয় মা।আমি যাব বাস্’ যদি তোমরা আমার কথা না মানো।তাহলে আমার যেদিকে চোখ যায়। সেদিকে চলে যাব।

চলবে,,,,,,,,,,

#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া

(৮)

অর্ণার জে দের কাছে সবাই হার মানলো। সে তার সিদ্ধান্তে অটুট । আশোক সাহেব অনেক বুঝালো মেয়েকে। জিজ্ঞেস করলো,কি হয়েছে মা আমাকে বল।তুই না বললে বুঝবো কিভাবে। কিন্তু অর্ণা কিছুই বলল না। পরদিন ছোটবাবার সাথে,খুব ভোরেই রওনা হলো অর্ণা। পাপিয়া বেগম আর আশোক সাহেব অনেক কান্না করলো মেয়ের জন্য ।

পাহাড়ি আঁকাবাকা রাস্তা দিয়ে ছুটে চলল গাড়ি। গন্তব্য শ্রীমঙ্গল।অর্ণার ছোটবাবা অনিল চুপচাপ বসে আছে। মনে হচ্ছে অর্ণার উপর রে গে আছে।
,কি সুন্দর রাস্তা তাই না ছোটবাবা?
অনিল কিছুই বলল না। অর্ণা বুঝতে পারলো, অনিল তার সাথে অভিমান করেছে।
,রা গ করো কেন ছোটবাবা। আমি তো আবার চলে আসবো, তাই না। মাত্র কয়েক বছর। দেখবে চোখের পলকে কে টে গেছে।
,আমি কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক নয়। সেটা তুমি বলে দাও ড্রাইবার।
অর্ণা হাল ছেড়ে দিল। অনিলের সাথে কথা বলে লাভ নেই। সে এখন কোনো কথায় শুনবে না। রা গ কমলে নিজে থেকেই কথা বলবে। অর্ণা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, গাড়ি সিটে হেলান দিয়ে। বাইরের পরিবেশ দেখায় মনোযোগী হলো।

গাড়ির ঝাঁকুনিতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে, তা টের পায়নি অর্ণা।যখন চোখ খুলল। তখন দেখলো গাড়ি থেমে আছে। বাহির থেকে অনিলের চি ৎ কারের আওয়াজ আসছে । অর্ণা দ্রুত গাড়ির দরজা খুলে বাইরে এলো।একটা মোটরসাইকেল পড়ে আছে রাস্তার পাশে। তার পাশেই একটা ছেলে শুয়ে আছে। ছেলেটার হাত,পা ছুলে গেছে। তা থেকে র ক্ত বের হচ্ছে। অনিল সাহেব ছেলেটা হাত ধরে বসে আছে।
,ড্রাইবার দ্রুত গাড়ি থেকে ফাস্ট এইড বক্স বের করে নিয়ে এসো। (অনিল সাহেব)
ড্রাইবার চটজলদি করে নিয়ে এলো।কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো অন্য জায়গায়। অনিল সাহেব ছেলেটাকে ধরে রেখেছে। সম্ভবত জ্ঞান নেই। এখন কা টা জায়গা পরিষ্কার কে করবে। অনিল ড্রাইবারের দিকে তাকালো। বেচারা অসহায় চোখে চাইলো। সে মূর্খ মানুষ।এসব জানে না।
,অনি! এদিকে আয়।
অর্ণা এগিয়ে গেল তাদের দিকে। অনিল ফাস্ট এইড বক্স ধরিয়ে দিয়ে বলল,
,নে। ছেলেটার ক্ষ ত স্থানে লাগিয়ে দে তো। আর ড্রাইবার। তুমি পানির ব্যবস্থা করো। ছেলেটার জ্ঞান ফেরানোর দরকার।
অর্ণার তার কথা মতো কাজ করলো। কিন্তু ছেলেটার জ্ঞান ফিরলো না।তাই সিদ্ধান্ত নিলো বাড়িতে নেয়ার। যেহেতু এখনকার রাস্তাঘাট তারা ততটাও জানে না। তাই হাসপাতালে না গিয়ে। বাড়িতেই উঠলো।

অর্ণা এখন থেকে এখানে থাকবে শুনে। আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল মারিয়া বেগম। এই এত বড় বাড়িতে একা থাকেন তিনি। স্বামী বিদেশ,এক ছেলে, এক মেয়ে। তারাও বিয়ে করে দেশের বাইরে সেটেল্ড হয়ে গেছে। তাই কাজের মেয়েটাকে নিয়ে একায় দিন যাচ্ছে তার।
অর্ণাকে তার ছোট থেকেই পছন্দ। সবাই অর্ণাকে পছন্দ করার ও যথেষ্ট কারণ আছে।অর্ণা বরাবরই শান্তশিষ্ট, চুপচাপ আর গোছালো একটা মেয়ে। অপর দিকে পর্ণা ছিল, দুষ্টু, রাগি,আর ঝগরুটে। তাই ছোট থেকে অর্ণা সকলের পছন্দের। আর এটায় মূল সমস্যা পণা। কেন অর্ণা সবার কাছে ভালো হবে। এই নিয়ে তার হি ং সা। মারিয়া বেগমের, ইচ্ছে ছিল অর্ণাকে ছেলের বউ করে আনার। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। ছেলে তার পছন্দের মেয়ে কে বিয়ে করে সুখে আছে।
অনিল আর ড্রাইবার মিলে ছেলেটাকে ধরে। একটা রুমে নিয়ে শুইয়ে দিয়েছে । মারিয়া বেগম তার পরিচিত ডাক্তার কে ফোন করে আসতে বলেছে। ডাক্তার এসেই তার চিকিৎসা করবে। অনিল সাহেব ছেলেটা ওয়ালেট দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করেছে।
,আপা ছেলেটার নাম তাহমিদ চৌধুরী ।এই নামে কাউকে চিনো?বাবার নাম,ওয়াহিদ চৌধুরী।
,হ্যা চিনবো না কেন! ওনি তো আমাদের এলাকার। ওয়াহিদ চৌধুরী একজন নামকরা ব্যবসায়ী। এলাকায় বেশ ডাক নাম। দুই ছেলে। এক ছেলে বড় ডাক্তার। আর এ হচ্ছে ছোট ছেলে। লেখাপড়া শেষ করে বাবার ব্যবসা সামলাচ্ছে।
,তাহলে তো ভালোই হলো। তুমি তাদের কে ফোন করে জানিয়ে দাও। যে তাদের ছেলের এক্সিডেন্ট করেছে।
মারিয়া বেগম নাম্বার জোগাড় করে ফোন দিলো। তাহমিদের বাবা মাকে।

অর্ণা নিজের জন্য বরাদ্দ করা রুমে এসে ফ্রেশ হলো।
ঘরটা বেশ শীতল। এসি নেই। তবুও এতো ঠান্ডা!
অন্তর জুড়িয়ে যায়। অর্ণা ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়লো।আরামে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। আপাতত ঘুম প্রয়োজন। সমস্ত দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে। নতুন করে জীবন সাজানোর প্রয়াস। চোখ যখন ঘুমে বন্ধ হয়ে আসছে। হঠাৎই নিচ থেকে ভেসে এলো। মারিয়া বেগমের কন্ঠস্বর। তিনি অনবরত ডেকেই যাচ্ছে। অগত্যা শরীর ভর্তি ক্লান্তি নিয়ে নিচে নেমে আসলো।
হলরুমে বসে আছে কিছু অপরিচিত মুখ। অর্ণা তাদের কে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। দু’জন মহিলা। আর কয়েকজন পুরুষ। সবাই বেশ পরিপাটি। দেখেই বুঝা যায় এরা উচ্চবিত্ত।
,এই হচ্ছে আমার ভাইজী। অর্ণা আহমেদ। অর্ণা ওনাদের সালাম দাও”
অর্ণা নিচুস্বরে সালাম দিল। তারা সালামের জবাব নিয়ে অর্ণাকে বসতে বলল।অর্ণার তার ফুফুর পাশ ঘেঁষে বসে পড়লো। সবাই একসাথে বসে কথা বলছে। এমন সময় তাহমিদের ঘর থেকে ডাক্তার বের হলো।
,কি দেখলেন ডাক্তার। কি অবস্থা এখন আমার ছেলের?
,হ্যা ভালো। ওনার জ্ঞান ফিরেছে। আপনারা দেখা করতে পারেন। বেশি কিছু হয়নি। তবে মাথার পেছন দিকটায় বেশ জোরেশোরে আ ঘা ত পেয়েছে। তাই জ্ঞান ছিল না এতক্ষণ। আমি ঔষধ লিখে দিচ্ছি। নিয়মিত খাওয়াবেন। তাহলেই ঠিক হয়ে যাবে ।
ডাক্তারের কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ওয়াহিদ চৌধুরী। ছেলে তার সুস্থ আছে এটায় অনেক। সবাই গেল তাহমিদের রুমে।তার সাথে দেখা করার জন্য। অর্ণা রুমে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু মারিয়া বেগমের জন্য তা আর হয়ে ওঠেনি। তিনি হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল অর্ণাকে।
ছেলেটা বেশ সুদর্শন। তা এখন খেয়াল করলো অর্ণা। অসুস্থ থাকার কারণে তার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।
ওয়াহিদ চৌধুরী ব্যাকুল হয়ে জিজ্ঞেস করছে,
,বাবা এখন কেমন লাগছে! কোথাও যন্ত্রণা করছে?আমাকে বলো।
এ যেন ছোট বাচ্চা বল খেলতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে। তাই বাবা আদর করে জিজ্ঞেস করছে। ওয়াহিদ সাহেবর যত্ন দেখে। অর্ণার নিজের বাবার কথা মনে পড়লো। সাথে, সাথে তার মন খা রা প হয়ে গেল।
মানুষ গুলো কতো ভালবাসে তাকে অথচ নিজের কথা ভেবে। তাদের কে কষ্ট দিচ্ছে।
ওয়াহিদ সাহেব অনিল কে জিজ্ঞেস করলো,
,কিভাবে এক্সিডেন্ট টা হয়েছে বলতে পারবেন?
আসলে আমরা গাড়ি করে আসছিলাম। হঠাৎই দেখি রাস্তার পাশে ও পরে আছে। পরে আমি আর আমার ড্রাইবার মিলে তাকে এখানে নিয়ে আসি।
,ধন্যবাদ ভাই। আজ যদি আপনারা না থাকতেন। তবে কী যে হতো।
এতকিছুর মাঝেও অর্ণা একটা জিনিস খেয়াল করেছে। তা হলো ছেলেটার সবাই এলো ও তার মা নেই এখানে। সন্তানের অসুস্থ হবার কথা শুনলে সবার আগে মা ছুটে আসার কথা কিন্তু এখানে তার ব্যত্যিকরম ঘটেছে। সবাই এসেছে কিন্তু মা আসেনি। ব্যাপারটা ভালো লাগলো না অর্ণার কাছে।

দুপুর হতেই। তাহমিদ কে নিয়ে যাওয়া হলো তার বাড়িতে।অর্ণা এসে সেই যে ঘুম দিয়েছে। সেই ঘুম ভেঙেছে সন্ধ্যা সময়। মারিয়া বেগম এসে ডেকে তুলল তাকে। ফ্রেশ হতে বলে তিনি নিচে গেল। অর্ণা হাত-মুখ ধুয়ে নিচে গেল। হালকা কিছু নাস্তা করে। বাড়ির বাইরে বের হলো।

চলবে,,,