আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-১৫

0
2686

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:১৫

রাহি সিয়ামের হাত থেকে ছারা পেয়ে তাড়াতাড়ি বিছানার পাশের টেবিলের কাছে যায় আর দেখে সেখানে একটা ছুরি রাখা আছে।
রাহি তাড়াতাড়ি সেই ছুরি হাতে নিয়ে সিয়ামের দিক করে বলে
রাহি: আর একবার আমার দিকে আসার চেষ্টা করলে হাত কেটে দিবো।
সিয়াম : বেবি এমন করো কেনো, একটু কাছে আসো আর আমি জানি তুমি আমাকে কিছু করবে না।
এই বলে সিয়াম আবার রাহির দিকে এগিয়ে যায়।
সিয়ামকে এগিয়ে আসতে দেখে রাহি নিজের হাতের ছুরি দিয়ে সিয়ামের হাতে আঘাত করে।
সিয়াম জোরে অাহ্ করে ওঠে।
রাহি: আমাকে এতো অসহায় অবলা নারী ভাবিস না। আমি সেই রকম মেয়ে না।
এরপর রাহি আবার ছুরি দিয়ে রিফাতের হাতে আঘাত করে আর বুলিকে ডাকে।
রাহির ডাকে বুলি তাড়াতাড়ি রাহির রুমে আসে।
বুলিকে দেখে রাহি বলে…
রাহি: বুলি নিচে থেকে তাড়াতাড়ি একটা লাঠি নিয়ে আয়।
বুলি: কেনো?
রাহি: তোকে আনতে বলছি নিয়ে আয়।
বুলি তাড়াতাড়ি নিচে গিয়ে একটা লাঠি নিয়ে আবার রুমে আসে।
বুলি: এই যে ভাবী লাঠি।
রাহি বুলির হাত থেকে লাঠিটা নিয়ে সিয়ামকে মারতে থাকে।
সিয়াম বারবার না করছে কিন্তু রাহি তার কথা না শুনে ইচ্ছা মতো মারছে।
রাহি: আর কখনো আমার সাথে এমন করতে আসবি।
সিয়াম: আমি মাফ চাই আর এমন করবো না।
রাহি: আবার করতে আসলে এর থেকে বেশি খারাপ অবস্থা হবে তোর।
সিয়াম: আমি আর এমন করবো না।
রাহি: এখনি তোর সব জিনিস নিয়ে এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবি।
সিয়াম: আচ্ছা।
রাহি: যা এখন আমার সামনে থেকে আর ৫মিনিট পর যেনো তোর ছায়া আমি এ বাড়িতে না দেখি।
সিয়াম তাড়াতাড়ি দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায় আর নিজের রুমে গিয়ে তাড়াতাড়ি সব জিনিস নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
রাহি সিয়ামকে যেতে দেখে বলে…
রাহি: আমারে তো চিনিস না,তোর মতো সয়তানের শায়েস্তা করতে আমি ভালো ভাবেই জানি।
এতো সময় বুলি হা হয়ে সব দেখছিলো কিন্তু কিছুই বুঝতে পারেনি।
বুলি: ভাবী একটা কথা কই..
রাহি: বল
বুলি: এতো সময় কি হলো কিছুই বুঝতে পারি নাই
রাহি: আমি বুঝাই বলবো কিন্তু কথা দেয় এই বিষয়ে রিফাত, দাদু কেউ যেনো না জানে।
বুলি: আচ্ছা।
রাহি তারপর বুলিকে সব কথা বলে।
বুলি: ভাবী আপনি আগে আমারে এসব কইবেন না। সয়তানটারে ইচ্ছা মতো কয়টা দিয়ে দিতাম।
রাহি: আচ্ছা বাদ দে এখন এসব।
বুলি তারপর কাজের জন্য নিচে চলে আসে।
রাহি তারপর নিজের রুমে বসে বসে গল্প পরতে থাকে।

বিকেলে…
রাহি ছাদে দাড়িয়ে আছে এমন সময় কেউ পিছন থেকে ঝাপটে ধরে। রাহি হঠাৎ এমন হওয়ায় তাড়াতাড়ি পিছনে ঘুরে কে তা খেয়াল না করেই জোরে গালে চড় মারে।
তারপর তার দিকে তাকিয়ে রাহি থ…
রিফাত: ওরে মা….. এই ভাবে কেউ চড় মারে বুঝি। আজ কাল বউকে ঝাপটে ধরার জন্য বুঝি চড় খেতে হয়।
রাহি মন খারাপ করে বলে…
রাহি:স্যরি,আমি ভাবছি অন্য কেউ তার জন্য চড় মারছি।
রিফাত:অন্য কেউ মানে। কে তোমাকে এমন করে ধরার সাহস করে আমাকে বলো তার নামটা একবার।
রাহি: আরে কেউ না। আমি একটু আনমনা ছিলাম আর তুমি হঠাৎ এমন করে ধরছো তাই আরকি ভয় পেয়ে গেছিলাম।
রিফাত: আচ্ছা।
রাহি: হুমম, আমার বদের হাড্ডি।
রিফাত: হুমম, ফাজিল মেয়ে।
রাহি:ফাজিল ছেলে।
রিফাত: রাক্ষসী।
রাহি: কামড় দিবো কিন্তু।
রিফাত: কামড় না, একটু জরিয়ে ধরো আমাকে।
রাহি দুহাত বাড়িয়ে বলে আসো।
রিফাত ও রাহিকে জরিয়ে ধরে আর মনে মনে বলে
রিফাত: আমি জানি তুমি সিয়াম ভেবেছিলে। তুমি চিন্তা করো না সিয়ামের ব্যাবস্থা কাল করতেছি আমি।
রাহি: হইছে এখন ছারো।
রিফাত: আর একটু।
রাহি: না,তাহলে কানে কামড় দিলাম।
রিফাত: হায়রে কপাল আমার নিজের বউরে ইচ্ছা মতো জরিয়ে ধরে বুকে রাখতে পারবো না।
রাহি: ড্রামা বন্ধ করো, আমার সাথে থাকতে থাকতে ড্রামা করতে শিখে গেছো।
রিফাত: আচ্ছা রুমে চলো।
এরপর রাহি আর রিফাত নিজের রুমে চলে যায়।

রাতে….
ডিনারের সময় সবাই খাবার টেবিলে খেতে আসে।
রিফাত: রাহি সিয়াম কই?
রাহি একটু থতমত খেয়ে যায় তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে….
রাহি: সিয়াম তো চলে গেছে। সিয়াম না বললো তোমাকে ফোন করে বলে দিবে। তোমাকে ফোন করে নাই।
রিফাত: নাহ।
দাদু: আমাকে ও বলে যায় নাই তো।
রাহি: তার তাড়তাড়ি ছিলো তাই হয়তো বলে যায় নাই।
দাদু: আচ্ছা।
রাহি: আচ্ছা ওনার কথা বাদ দিয়ে সবাই খাবার খাও।
তারপর সবাই খাবার খেতে বসে।
রিফাত খাবার খাচ্ছে আর রাহির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলছে
রিফাত: আমার সিয়ানা বউ সিয়ামকে শায়েস্তা করে তাহলে বাড়ি পাঠায় দিলে।
সবাই খাবার খেয়ে যার যার রুমে চলে যায়।
রিফাত শুয়ে আছে রাহি তখন রুমে যায়।

রাহি: একটা কথা বলি..
রিফাত: বলো।
রাহি : বাসায় যাবো।
রিফাত: আচ্ছা কাল নিয়ে যাবো আবার বিকেলে চলে আসবো।
রাহি:নাহ….আমি সেখানে থাকবো।
রিফাত: তুমি তো জানো আমি তোমাকে ছারা থাকতে পারি না।
রাহি : আমার ও তো মনে চায় সেখানে থাকতে।
রিফাত: আচ্ছা। তোমাকে দিয়ে আসবো।
রাহি: মন খারাপ কইরো না।
রিফাত: আচ্ছা এখন বুকে আসো।

পরের দিন….
রিফাত রাহিকে তার বাসায় দিয়ে আসে।
আসার সময় রিফাতের মন অনেক খারাপ হয়।
রিফাত: বিকেলে নিতে আসি রাহি।
রাহি: আমি থাকি দুদিন।
রিফাত: আমি একা থাকবো কি করে।
রাহি: দুই দিনই তো মাএ।
রিফাত: দু দিন মাএ না আমার কাছে অনেকদিন।
রাহি: এমন করো না বাবু।
রিফাত: আচ্ছা। একটা কিস দিয়ে যাও গালে।
রাহি: হুরর ফাজিল ছেলে।
রিফাত: দাও।
রাহি: চোখ বুঝো।
রিফাত চোখ বুঝে আর রাহি রিফাতের গালে একটা চুমু দিয়ে বাই বলে বাসার ভিতর চলে যায়।

রাহির সারাদিন সবার সাথে অনেক ভাল দিন কাটে। রাতে রাহি ঘুমাতে যায় তখন রিফাতকে ফোন দেয়।
তখনি বেলকনি থেকে রিফাত বলে…
রিফাত: জান ফোন দিতে হবে না আমাকে।
রাহি: তুমি।
রিফাত: তোমাকে ছারা ভালো লাগছিলো না তাই এসে পরেছি।
রাহি: ওরে মেরি জান। তা কি ভাবে আসলে। মেন দরজা দিয়ে তো আসোনি।
রিফাত: বেলকনি দিয়ে আসছি।
রাহি : হায়রে ফাজিল ছেলে ।
রিফাত: হুমম রে ফাজিল মেয়ে।
এই বলে রিফাত রাহিকে জরিয়ে ধরে কপালে চুমু দেয়।
রিফাত: অনেক ভালবাসিরে পাগলি তোকে ।
রাহি: আমি ও রে পাগল।
রিফাত: আমি ও কি
রাহি: ভালবাসি।
রিফাত:হুমম।
এরপর নিজের নাক দিয়ে রাহির নাকে ঘষা দেয়।

এরপর রাহি তিন দিন তার বাবার বাসায় থাকে রিফাত ও প্রতিদিন রাতে সেখানে যেতো।তারপর রাহিকে নিয়ে আবার চলে আসে….
এভাবেই রাহি আর রিফাতের সংসার জীবন চলছে।

রিফাত: রাহি আমি একটা কাজে বাহিরে যাচ্ছি আসতে দেড়ি হবে।বাই…
এই বলে রিফাত চলে যায় রাহিকে কিছু বলতেই দেয় না।
রাহি কিছু ভেবে মন খারাপ করে বসে থাকে।
কিছু সময় পর রাহির ফোনে একটা ফোন আসে।
রাহি ফোন রিসিভ করে কথা বলে তারপর একটা জায়গায় যায়।

রাতে….
রিফাত বাসায় আসার পর মন খারাপ করে বসে আছে তখনি রাহি এসে বলে…
রাহি: রিফাত আমি ডিভোর্স চাই।
রিফাত:………
চলবে…..