আমার হিয়ার মাঝে পর্ব-০৫

0
274

#আমার_হিয়ার_মাঝে
লেখিকা: তাহসীন নাওয়ার রীতি
পর্ব:০৫

অতীতে,

রেনুর বাসা থেকে পালিয়ে অধরা আর ইশা দুজনের হোস্টেলে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। তড়িঘড়ি করে দুজন গেটের কাছে এসে দেখে সদর দরজা ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইশা মাথায় হাত রেখে অধরার দিকে ফিরে তাকায়।
‘এখন কি হবে অধরা? রাতে কোথায় থাকবো আমরা? হোস্টেল সুপারকে ফোন করবো মেইন দরজা খুলে দিতে?’
‘না, আগেই ফোন করিস না। যাওয়ার আগে তো আমরা বলে এসেছিলাম সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসবো। কে জানতো এতো দেরী হয়ে যাবে? এখন ধরা পড়লে কপালে দুঃখ আছে।’
‘তাহলে কি করবো?’
অধরা কথা না বাড়িয়ে ইশাকে অপেক্ষা করতে বলে স্কুটার পার্ক করে নিরাপদে রেখে আসে।
অতঃপর ইশাকে সাথে নিয়ে হোস্টেল প্রাচীরের পেছনের দিকটায় এসে দেয়াল ধরে কিছু একটা ভেবে,
‘দেয়াল টপকে যেতে হবে ইশা। তুই লাফ দিয়ে যেতে পারবি তো?’
‘হ্যা! কি বললি? অধরা মাথা ঠিক আছে তোর?’
কে শোনে কার কথা? অধরা মুহূর্তেই দেয়াল ধরে উঠে বসে অপরদিকে লাফ দেয়। আচমকা অধরার এরূপ কাজে ইশা চমকে উঠে।
‘অধরা!’
‘আমি ঠিক আছি ইশা। তুইও চলে আয়। ভয় নেই, আমি আছি।’
ইশা কি করবে ভেবে না পেয়ে শেষে অধরার কথা মতো দেয়াল টপকে হোস্টেল প্রাচীরে প্রবেশ করে।
‘এখানে তো চলে এসেছি। এখন হোস্টেল ভবনে প্রবেশ করবো কিভাবে?’
‘চিন্তা করিস না। আনিকা আপু বললো মেইন গেইট এখনও বন্ধ হয়নি।’

অবশেষে দুজন মিলে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে, লুকিয়ে ভবনে প্রবেশ করে নিজেদের রুমে আসতেই দেখে হোস্টেল সুপার তাদের রুমেই দাঁড়িয়ে আছেন। দুজন চমকে উঠে ম্যামের দিকে তাকিয়ে থাকে। শেষ পর্যন্ত কিনা তীরে এসে তরী ডুবে গেলো?
‘আসসালামু আলাইকুম ম্যাম।’
‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম। অধরা,ইশা তোমাদের আমি সন্ধ্যা পর্যন্ত বাহিরে থাকার অনুমতি দিয়েছিলাম। আর এখন রাত নয়টা!
‘ম্যাম আমরা..’
‘পাঁচ মিনিটের মধ্যে দুজন আমার রুমে এসো।’
আর কোনো কিছু বলার সুযোগ হলো না তাদের। হোস্টেল সুপার রুমি ম্যামের রাগ সম্পর্কে ভালোই ধারণা আছে দুজনের। তাই আগ বাড়িয়ে আর কথা বলার সাহস হয়নি তাদের।
‘আমরা শেষ অধরা।’
ইশা ভয়ে মুখ ছোট করে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু অধরার মাথায় ঘুরছে অন্য কথা। ম্যাম কিভাবে জানলেন অধরার ফিরে না আসার খবর? তখনই একছুটে দরজার কাছে এসে দেখে রুমি ম্যামের সাথে কথা বলতে বলতে উনার পিছু পিছু যাচ্ছে তার ক্লাসমেট রেবেকা। অবাক হয়নি অধরা, কেননা পড়ালেখার বিষয় নিয়ে রেবেকা প্রতিনিয়ত অধরাকে হিংসা করে আসছে। এতদিন সবটা জেনে সব মেনে নিলেও এবার তার ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় রাগ উঠে যাচ্ছে তার।
দাঁতে দাঁত চেপে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে থাকে রেবেকার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে পর মুহূর্তেই রাগ ভুলে একটা হাসি দেয় সে।
যার অর্থ, এর একটা বিহিত খুব শীঘ্রই হতে যাচ্ছে।
—————

দুদিন পর আজ ক্লাস শেষে মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছে সবাই। অনিক সাদমান আর জারিফ মিলে ইশাকে তার ক্রাশ নিয়ে খোঁটা দিয়ে হাসাহাসি করছে। ইশা রেগে তাদের চুপ করাতে চাইলেও বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
‘কি ব্যাপার বল তো? আজ আমাদের দুষ্টুপরী এতো চুপচাপ!’
‘অধরার মন ভালো নেই। সেদিন রেনুর বাসা থেকে আসার পথে হয়তো কোথাও, তার শখের নুপুর হারিয়ে গিয়েছে।’
ইশার কথায় একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে অধরা। ছোট থেকেই তার নূপুরের প্রতি ঝোঁক দেখে মা খুব শখ করে নুপুরটি তার জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন। তাই সেটি হারিয়ে যাওয়ায় এতটা ব্যথিত করছে অধরাকে।
মন খারাপ করেই জারিফের হাত থেকে চিপসের প্যাকেট নিয়ে একটি চিপস মুখে পুরে দিতেই কলেজ গেইট দিয়ে রেবেকাকে প্রবেশ করতে দেখে অধরা। সেদিন তার বিচারের জন্যই পরপর দুদিন হোস্টেল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার শাস্তি পেতে হয়েছে তাদের।

যদিও অধরা স্বীকার করতে বাধ্য যে সেদিন তাদের দেরী করে ফিরে আসা উচিত হয়নি। হোস্টেলের নিয়ম ভঙ্গ করায় তাদের শাস্তি পাওয়াই উচিত, কিন্তু সেদিন ফিরে আসার সময় পথ খবর আসে তাদের ক্লাসমেট নিতুর বাবার অপারেশনের জন্য ইমার্জেন্সি ব্লা/ড প্রয়োজন। তাই ডোনার হিসেবে অধরাকে যেতে হয়, ফলসরূপ তাদের ফিরতে এতো রাত হয়েছে।
রেবেকার উপর অধরার ক্ষোভ এজন্য না যে সে তাদের দেরী করে ফিরে আসায় বিচার দিয়েছে, বরং এজন্য যে সে অধরার উপর হিংসিত হয়ে তাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বলেছে তারা নাকি প্রায়ই রাত করে বাহিরে ঘুরে লুকিয়ে ফিরে আসে। আর এই মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতেই রেবেকার একটি শিক্ষা পাওয়া অতীব জরুরী।
‘কোকের বোতলটা দে তো।’
অধরার কথায় সাদমান কোক সরিয়ে ফেলে,’অধরা না, এটা আমার কোক।’
অধরা কপাল কুঁচকে সাদমানের হাত থেকে কোক কেঁড়ে নিয়ে সেটা ইচ্ছে মতো ঝাঁকাতে শুরু করে। আচমকা এরূপ আচরণে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ইশা কিছু বুঝে উঠতে না পেরে,’কি করতে চাইছিস তুই?’
‘দেখতে থাক কি করি।’

অধরা আর কথা না বাড়িয়ে উঠে দৌড়ে চলে যায় রেবেকার কাছে। রেবেকা হেঁটে আসার সময় অধরাকে দেখে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়। দুদিন ধরে অধরার পাওয়া শাস্তি দেখে মনে মনে বেজায় খুশি সে।
‘রেবেকা, তোমার সাথে আমার একটু কথা ছিলো।’
‘তোমার আবার আমার সাথে কিসের কথা? দেখো যদি সেদিনের বিচারের কথা বলো তাহলে শুনে রাখো, আমি সেদিন আমার দ্বায়িত্বের খাতিরেই বিচার দিয়েছি। এখানে দোষী কে সেটা বড় বিষয় না, দোষ করেছে এটাই বড় কথা।’
নিজে এমন সাধু সেজে রেবেকা এমনভাবে কথাগুলো বলছে যেন অধরা জানেই না যে রেবেকা কখন কখন হোস্টেল থেকে বেরিয়ে যায়।
‘একদম ঠিক বলেছো। মিথ্যা বলবো না, সেদিন তুমি বিচার দিয়েছো শুনে প্রথমে খুব রাগ হয়েছিলো তোমার প্রতি। কিন্তু তারপর ভাবলাম, যা করেছো সেটা তো আমাদের ভালোর জন্যই করেছো। ধরা পড়ে যাওয়ার কারণে একবার শাস্তি পেয়েছি, এখন থেকে আমরা সচেতন হয়ে থাকবো যেনো এই ভুল আর না হয়। তবে তোমার কিন্তু একটা ধন্যবাদ পাওয়া উচিত। এই কোকটা নাও।’
রেবেকা এতক্ষণ বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে ছিলো অধরার দিকে। তার কাজে কি সত্যিই খুশি হয়েছে অধরা? সাত পাঁচ ভেবে একটা ভাব নিয়ে অধরার হাত থেকে কোক নিয়ে নেয় সে।
‘আমি এসব খাই না, আমি আসলে ডাইট করছি। তবুও তুমি যখন এতো করে বলছো তাই নিচ্ছি।’
অধরা একটা ধন্যবাদ জানিয়ে সেখান থেকে সরে এসে বন্ধুদের আড্ডা মোহলে গিয়ে বসে পড়ে।
রেবেকা ইতিমধ্যে হেলে দুলে হেঁটে তার ভালোবাসার মানুষটির পাশে গিয়ে বসেছে।
‘এই নাও জান, তোমার জন্য নিয়ে এসেছি।’
দূর থেকে রেবেকার এরূপ কাজে একটা ভিলেন মার্কা হাসি দেয় অধরা। সে যা ভেবেছিলো তাই হয়েছে। রেবেকার বয়ফ্রেন্ড খুশি মনে কোকের ক্যান খোলার সাথে সাথে অতিরিক্ত ঝাঁকিয়ে নেওয়ার কারণে কোক ছিটকে এসে পড়ে তার চোখ মুখে। মুহূর্তেই ভড়কে যায় রেবেকা। ভয়ে নিজের ওরনা দিয়ে তার বয়ফেন্ডের মুখ মুছে দিতে চাইলে সে চিৎকার করে ওঠে ঝগড়া শুরু করে দেয়। অধরা সহ বাকি সবাই দূরে বসে তাদের কান্ড দেখে হেসে গড়াগড়ি খেতে শুরু করেছে।

মাঠে বসে কারো খিলখিল হাসির শব্দে রোদ্দুর পিছু ফিরে অধরাদের দেখে ভড়কে যায়।
‘আরে এটা রেণুর বিয়ের ডিজে পার্টি টিম না?’
রোদ্দুরের কথায় আশ্বিন বই থেকে মুখ তুলে পিছু ফিরে অধরাকে দেখতে পেয়ে চমকে উঠে। আবারও সেই মন্ত্রমূগ্ধকর মায়াবী মুখশ্রী! একমনে তাকিয়ে থাকে তার হাসির দিকেই।
‘তারা দেখছি আমাদেরই মেডিকেলে পড়ে! কই আগে তো দেখিনি?’
‘ফাস্ট ইয়ার হয়তো। এই কদিন ধরে ক্লাসে উপস্থিতি কম থাকায় ফাস্ট ইয়ারের কাউকে আমাদের চেনার কথা না।’
‘তাও ঠিক। তবে, এদের নিয়ে সব তথ্য আমাদের জানতে হবে। আফটার অল, রেণুর বিয়েতে কম কাহিনী তো করলো না।’
প্রতিউত্তর দেয় না আশ্বিন। পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকে অধরার দিকে। কি আছে এই মুখ পানে যে তার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টায় থাকে!
————–

ক্লাস শেষে ইশা আর অধরা হোস্টেলে ফিরে যাওয়ার জন্য গল্প করতে করতে গেটের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। তখনই একটি ছেলে এসে খবর দেয় বড় স্যার অধরাকে ডেকেছেন। ভয় মিশ্রিত কণ্ঠে ইশা অধরার দিকে ফিরে তাকায়, অথচ অধরা নিশ্চুপ। যেন এটা আর নতুন কিছু নয়। মেডিকেল ভর্তির পর গত তিন মাসে কম হলেও দশবার বড় স্যার অধরাকে ডেকে তার সব অঘটন বা দুষ্টুমির জন্য কথা শুনিতেছেন, আজও তার ব্যতিক্রম হবে না।
অধরা কোন রূপ প্রতিক্রিয়া না করে কোমরে বেঁধে রাখা সাদা এপ্রোন পড়ে নিয়ে দৌড়ে চলে আসে স্যারের রুমের দিকে।
‘স্যার, আসতে পারি?’
‘এসো।’
পুরস্কার আর সম্মানি দিয়ে সাজানো গোছগাছ একটি বড়সড় রুমের মাঝ বরাবর একটি টেবিলে বসে খাতায় কিসব কাজে ব্যস্ত হাসান স্যার। বয়সের তুলনায় এখনও নিঃদ্বিধায় কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
‘আমাকে ডেকেছেন স্যার?’
‘আপনাকে তো এর জন্য বহু বার ডেকেছি মিস অধরা। কোন লাভ কি হয়েছে?’
অধরা মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মিথ্যা কিছু তো বলছেন না স্যার।

‘পরিচিত হোন একে অপরের সাথে।’
স্যারের কথায় অধরা মুখ তুলে তাকিয়ে পাশে ফিরে দেখে এক সুদর্শন পুরুষ দাঁড়িয়ে। মুখ খানি তার অতি চেনা পরিচিত তবুও যেন অচেনা।
‘আমি আশ্বিন চৌধুরী।’
‘অধরা ওহি। ফাস্ট ইয়ার।’
হাসান স্যার উনার লেখার কাজ শেষ করে খাতা বন্ধ করে রেখে অধরার দিকে তাকিয়ে,
‘আমার এই এতোগুলো বছর দায়িত্বে আপনার মতো চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে দেখিনি মিস অধরা। মেডিকেলে পড়া মেধাবী ছাত্রীরা সাধারণত শান্তশিষ্ট হয়, কিন্তু আপনি আমার এতদিনের চিন্তাকে ভুল প্রমাণ করেছেন। আপনাকে আমি বারবার সচেতন করেছি, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। শুধুমাত্র আপনার রেজাল্ট, পারফরমেন্স আর সকল প্রফেসরদের অনুরোধের জন্য আপনাকে কোন শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারছি না আমি। তাই, একটি শেষ সুযোগ দিচ্ছি আপনাকে।
আশ্বিন! আমার দেখা এই ক্যাম্পাসে সবচেয়ে শান্তশিষ্ট মেধাবী আর ভালো ছেলে। আজ থেকে আপনার কাজ হলো ক্লাস টাইম ব্যথিত আপনি যতক্ষণ ক্যাম্পাসে থাকবেন আশ্বিনের আশেপাশেই থাকবেন। উনার লাইফস্টাইল, পারসোনালিটি সবকিছু আপনি নোটিস করবেন আর উনার মতো হওয়ার চেষ্টা করবেন। কথা বুঝতে পেরেছেন আপনি?’
‘জি স্যার।’
‘গুড। আমি আশা করছি আপনি আশ্বিনের ভালো দিকটা শিখে আশ্বিনের মতো হওয়ার চেষ্টা করবেন। এখন আপনারা আসতে পারেন।’
অধরা একবার আশ্বিনের দিকে তাকিয়ে দুজন মিলে স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে আসে।

‘আপনাকে কি আমি আগে কোথাও দেখেছি?’
স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে অধরার প্রশ্নে তার দিকে ফিরে তাকায় আশ্বিন। রেণুর বিয়েতে তাদের সাক্ষাতের সেই মুহূর্ত শত ব্যস্ততার মাঝে হারিয়ে গিয়েছে অধরার মস্তিষ্ক থেকে।
‘হয়তো।’
‘কিন্তু কোথায়? আমার মনে পড়ছে না কেনো?’
‘যদি সত্যিই দেখে থাকেন তাহলে একটা সময় ঠিকই মনে পড়বে। শুধু শুধু ব্রেইনে চাপ প্রয়োগ করে নার্ভ ডেমেজ করার প্রয়োজন নেই। শান্ত থাকুন।’
‘তাও ঠিক।’
‘আপনার ক্লাস আছে এখন?’
‘না। ক্লাস মাত্রই শেষ হলো, এখন হোস্টেল ফিরে যাচ্ছি।’
‘ঠিক আছে। চলুন আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। পরিচয় পর্ব নাহয় কাল হবে।’
‘জি। বাই দ্য ওয়ে, আমাকে তুমি করেই ডাকতে পারেন,যদি আপনার কোন সমস্যা না থাকে।’
প্রতিউত্তর দেয় না আশ্বিন। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে অধরার পাশাপাশি এগিয়ে যেতে থাকে সে। পথচলার প্রতিটি মুহূর্ত ধরে চলতে থাকে অধরার আপনমনে অনবরত কথা বলা। আশ্বিন তা নিরবেই শুনে যায়। হয়তো এখান থেকেই সূচনা ঘটে তাদের প্রণয়নের।

–চলবে(ইনশাআল্লাহ)