আসক্তিময়_ভালবাসা পর্ব-০৯

0
3188

#আসক্তিময়_ভালবাসা
#Part_09
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat

— গাড়ি কি চাঁন্দের দেশের বাই পাস রোডে চালান? আরেকটু হইলে তো আমি মরে টরে যেতাম। এই আপনার লাইসেন্স কে দিসে? এই নামেন গাড়ি থেকে। নামেন বলছি! আজ আপনার একদিন কি আমার দুই’শ পঞ্চাশ দিন। নামেন কইসি!

এই বলে আনিশা গাড়ির দিকে তেড়ে যায়। ঠিক এমন সময় গাড়ির দরজা খুলে একজন নেমে আসে। আনিশা তাকে দেখার সাথে সাথে মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে যায়। অতঃপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকায়। সামনে তার ডাঃ মারুফ দাঁড়িয়ে আছে। পকেটে এক হাত ঢুকিয়ে রেখে অন্য হাত গাড়ির উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে সে। মুখে তার মিষ্টি হাসি। ডাঃ মারুফ সেই হাসি ঠোঁটের কোনে স্থায়ী রেখে বলে,

— কি গো শ্যামলতা! আজ দেখি সেই পরিমাণে হট হয়ে আছ। কি ব্যাপার হুম?

আনিশা দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
— বাজে বকা বন্ধ করুন। আপনার এইসব ফালতু কথা শুনার মত আমার টাইম নেই। সো নিজের রাস্তা মাপেন।

ডাঃ মারুফ আনিশার কথায় পাত্তা না দিয়ে এগিয়ে আসে ওর দিকে। তা দেখে আনিশা কিছুটা নড়েচড়ে দাঁড়ায়। ডাঃ মারুফ আনিশার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে,

— হ্যায় গারমি! এত গরম পড়েছে না আজ। মানুষের উত্তাপ কয়েকদিন যাবৎ একটু বেশি বেড়েছে। এইসব মানুষদের জন্যই গ্লোবাল ওয়ার্মিং ধরধর করে বাড়ছে। উফ! উফ!

আনিশা কটমট দৃষ্টিতে ডাঃ মারুফের দিকে তাকায়। তারপর পায়ে পরিধান করা হাল্কা উঁচু সেন্ডেল দিয়ে নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ডাঃ মারুফের পায়ের উপর পাড়া দেয়। সাথে সাথে ডাঃ মারুফ “আহহ” বলে চেঁচিয়ে উঠে আর পা ধরে লাফাতে শুরু করে। আশে পাশে থাকা মানুষজন ডাঃ মারুফের বান্দর লাফানি দেখে মুখ টিপে টিপে হাসছে। আনিশা একটা ভাব নিয়ে বুকে গুজে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অতঃপর ডাঃ মারুফ নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,

— আজ সূর্যের উত্তাপ না থাকলেও, তোমার উত্তাপেই চারদিক আজ ভস্ম হয়ে যাচ্ছে। সাথে আমিও! শুনছ কি তুমি শ্যামলতা আমি তোমার উত্তাপ ভস্ম হয়ে যাচ্ছি।

আনিশা এইবার আড়চোখে ডাঃ মারুফের দিকে তাকিয়ে বলে,

— আমি শ্যাম বর্ণের বলে কি আপনি আমায় বার বার “শ্যামলতা” বলে নিচু করতে চাইছেন? আমার গায়ের রঙ নিয়ে ঠাট্টা করছেন? তাই কি নয়!

ডাঃ মারুফ এতক্ষণ ফুরফুরে মেজাজেই ছিল। কিন্তু আনিশার এমন কথা শুনে তার মেজাজ বিগড়ে যায়। মুখভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে যায়। চোখে মুখ লাল হয়ে আসে এবং রাগের আভা ফুটে উঠে। ডাঃ মারুফ রুদ্ধদ্বার কন্ঠে বলে,

— রাস্তায় আছো বলে সিনক্রিয়েট করলাম না। অন্য কোথাও হলে ডাইরেক্ট কানের নিচে দিতাম আমি। তোমার এক ডিগ্রি বেশি বুঝাটা বের করতাম আমি।
আমার ভালবাসার ডাক নামটি তোমার কাছে ঠাট্টা করা মনে হয় তাই না? থাপড়াইয়া গাল লাল করে দিব বেয়াদব মেয়ে একটা। তুমি ভাবলেও কি করে যে আমি তোমার রঙ নিয়ে ঠাট্টা করবো? তোমার কি মনে হয় আমার কাছে এইসব আদৌ মেটার করে? ডিসগাস্টিং!

আনিশা এইবার মাথা নিচু করে ফেলে। ডাঃ মারুফ যে বেশ রেগে বুঝতেই পারছে। আনিশা বুঝতে পারে নি যে সে এতটা রেগে যাবে। তাই এখন আর কথা বলার সাহস পাচ্ছে না সে। ডাঃ মারুফ আনিশাকে কথা বলতে না দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। অতঃপর নিজেকে শান্ত করে আনিশার দিকে মুখ করে বলে,

— যাও গাড়িতে গিয়ে বসো। বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি।

আনিশা মাথা নিচু করেই বলে,
— আমি আপনার সাথে যাব না। আমি বাসে করেই যাব।

ডাঃ মারুফ আনিশার কথা শুনে তেতে উঠে বলে,
— বাসে এত ঠেলা-ধাক্কা সহ্য করে মানুষ যেতে পারে নাকি? তার উপর সহ্য গরম। এত কষ্ট করে যাওয়া যায় নাকি? চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসো যাও।

আনিশা এইবার মাথা তুলে ডাঃ মারুফের দিকে তাকিয়ে বলে,

— আপনি তো লন্ডন থেকে নিজের স্টাডি কমপ্লিট করেছেন তার উপর সবসময় গাড়িতে চলাফেরা করেছেন বলে আপনি এইসবে অভ্যস্ত নন। মধ্যবিত্ত শ্রেণি মানুষদের জন্য তো এইসব তাদের নিত্যদিনের ব্যাপার। এইসব এখন অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে। তাই আপনাকে এই নিয়ে টেনশন করতে হবে না। আর এমনেও বাসের সাথেই আমার ব্যক্তিত্ব যায়, গাড়ির সাথে না।।

আনিশা কথাটি শেষ করতেই বাস এসে পড়ে। তাই আনিশা আর কিছু না বলে বাসে উঠে পড়ে। বাসে আজ তেমন ভীর নেই। বেশির ভাগ সিটই ফাঁকা। আনিশা চুপচাপ গিয়ে মাঝের সারিতে বসে পড়ে। জানালার পাশের সিটটাতে বসে সে। অতঃপর বাইরের দিকে মুখ করে বসে পড়ে। বেশ কিছুক্ষণ পর অনুভব করে তার পাশের সিটে কেউ একজন বসেছে৷ আনিশা ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকাতেই ডাঃ মারুফের হাস্যজ্জ্বল চেহেরা ভেসে উঠে। সাথে সাথে আনিশার ভ্রুযুগল একসাথে লেগে যায়। সে তীক্ষ্ণ গলায় বলে,
— আপনি এইখানে কি করছেন?

ডাঃ মারুফ শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বলে,
— প্রিয়তমার অভ্যাস গুলো নিজের আয়ত্তে আনার চেষ্টা করছি। বিয়ের পর বোঝাপড়া করে চলতে হবে তো নাকি? তাই এখন থেকেই প্র‍্যাক্টিস করছি। কি গো শ্যামলতা ঠিক করছি না?

আনিশা উত্তর দেওয়ার বদলে পাল্টা প্রশ্ন করে বসে,
— আপনার গাড়ি?

ডাঃ মারুফ বলে,
— বাহ! বরের জিনিসপত্র নিয়ে এত চিন্তা। এই চিন্তার শতভাগের একভাগ যদি বরের জন্য করতে তাহলে কাজে দিত। সে যাই হোক, ড্রাইভার কাকাকে বলেছি গাড়ি এসে নিয়ে যেতে। আপাতত রাস্তার পাশে রেখে এসেছি। ১০ মিনিটে এসে নিয়ে যাবে।
বাই দ্যা ওয়ে বাসে এত খারাপ লাগছে না। বরং ভালোই লাগছে। বাসে যাতায়াতের ফলে যে প্রিয়তমার এত কাছে থাকতে পারবো তা আগে জানলে কবে বাসে যাওয়া আশা শুরু করতাম। এই আমি তোমার আরেকটু কাছে এসে বসি।

এই বলে ডাঃ মারুফ আনিশার দিকে আরেকটু চেপে বসে। আনিশা ডাঃ মারুফের দিকে কিছুক্ষণ কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে নেয়। অতঃপর সকলের চোখ এড়িয়ে মুচকি হাসে। মনে মনে বলে, “পাগল একটা।”

আনিশা জানে ডাঃ মারুফ তাকে ভালবেসেই “শ্যামলতা” ডাকে। ছেলেটা প্রচন্ড পরিমাণে ভালোবাসে তাকে। ওর জন্য যে সে কত শত পাগলামো করে তার হিসাব নেই। সাধারণ গায়ের ঘটন মেয়েটির মধ্যে সে কি দেখেছে কে জানে? এমন না যে আনিশার ডাঃ মারুফকে পছন্দ নয় বা তার প্রতি আনিশার কোন ফিলিংস নেই। আনিশাও ডাঃ মারুফকে বেশ ভালোবাসে। হয়তো ডাঃ মারুফের ন্যায় কম। কিন্তু সেটা কখনো বলতে পারে না। আর হয়তো বা বলতে পারবেও না। এর মূখ্য কারণ হচ্ছে তাদের স্ট্যাটাস। আনিশা মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মেয়ে আর ডাঃ মারুফ উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে। স্ট্যাটাসটাও এত একটা সমস্যা তৈরি করতো না যদি না ডাঃ মারুফের মায়ের আনিশাকে অপছন্দ হতো। হয়তো সে আনিশাকে মেনেও নিত যদি না আনিশা আহামরি সুন্দরীদের পর্যায়ে পড়তো। কিন্তু সে তো আহামরি সুন্দরী নয়। অতিসাধারণ একটি মেয়ে। তাই তো ডাঃ মারুফের জন্য কোন দিক দিয়েই যোগ্য নয়। এইটা আনিশার কথা নয় বরং ডাঃ মারুফের মায়ের কথা। ডাঃ মারুফ নাকি তার মায়ের সাথে প্রচন্ড ফ্রি। সে তার মাকে আনিশার কথা বলে এবং ছবিও দেখায়। ডাঃ মারুফের মা ছবি দেখার পর আনিশাকে তার মনে ধরে নি। কিন্তু কথাটি সে মুখ ফুটে বলতে পারেন নি। আনিশার প্রতি ছেলের এত পাগলামো দেখে। তাই তিনি সেইদিক দিয়ে দমে যান। অতঃপর আনিশাকে এসেই রিকুয়েষ্ট করেন যেন ও ডাঃ মারুফকে কখনো গ্রহণ না করে। ওকে সর্বদা ফিরিয়ে দেয়। আনিশা প্রথমে মানতে চাই নি। কেন না সে ততোদিনে ডাঃ মারুফের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ডাঃ মারুফের মা আনিশাকে ব্ল্যাকমেইল করে। যদি আনিশা তার কথা না শুনে তাহলে আনিশার বাবার চাকরি হুমকির মুখে থাকবে। আনিশাদের করুন অবস্থা করে দিবেন তিনি। তার নাকি অনেক কানেকশন আছে তাই তার জন্য এইসব কোন ব্যাপারই না।

আনিশার বাবা একটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনিই পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। আনিশার বাবার চাকরি গেলে সে এই বয়সে তেমন চাকরিও পাবেন না। সংসারে অবনতি ঘটবে। আনিশার পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। সাথে ওর ছোট বোনটিরও। মায়ের হাই প্রেসার। প্রতি নিয়ত ঔষধ সেবন করতে হয় তাকে। সেটা একদিনের জন্য হেরফের হলেই সমস্যা হয়ে যায়। আনিশা তো আর নিজের ভালোর জন্য পুরো পরিবারকে কষ্ট দিতে পারে না। সে যে বড্ড ভালবাসে নিজের পরিবারকে। তাই তো না চাওয়া সত্ত্বেও সে বার বার ডাঃ মারুফকে ফিরিয়ে দেয়। খারাপ ব্যবহার করে। কিন্তু তাও ছেলেটা ওর পিছুই ছাড়ে না। হয়তো এইটাকেই বলে ভালবাসা। সব ভেবে আনিশা এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেয়। এখন তার এইসব ভাবতে ভালো লাগছে না। তিক্ত লাগছে সব কিছু। অতি তিক্ত!

_____________________________________________

রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে চলেছে পায়েল। এমন সময় কোথ থেকে আদিব এসে হাজির হয় ওর সামনে। পায়েলও রোজকার ন্যায় ওকে এভোয়েট করে পাশ দিয়ে চলে যেতে নিলে আদিব বলে উঠে,

— আজও কথা বলবে না তাই না? এভোয়েট করে চলে যাবে তাই তো।

পায়েল এইবার থমকে দাঁড়ায়। অতঃপর ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে,
— প্রতিদিন সামনে এসে পড়েন বলেই এভোয়েট করতে হয়। সামনে আসতেনও না আমি এভোয়েট করতামও না। আর প্রতিদিন নিজের অফিস রেখে এই সময় দাঁড়িয়ে থাকেন কেন? অফিসের লোকেরা কি আপনার চেহেরা দেখেই টাকা দেয় নাকি?

আদিব হাল্কা হেসে বলে,
— আমার চিন্তা এখনো আছে দেখছি।

পায়েল সাথে সাথে নড়েচড়ে দাঁড়ায়। সে যে কথার জালে আদিবকে কাজের দিকে সচেতন করতে চাচ্ছিল তা আদিব বুঝে গিয়েছে বলে একটু ঘাবড়ে যায়। আদিব তা দেখে মুচকি হেসে বলে,

— আমি এই সময়ে এইখানে থাকি বলে আমার চাকরি হাত ছাড়া হয়ে যাবে এই ভয়ে আছ তাই তো। চিন্তা করো না এমন কিছু হবে না। অভারটাইম করে যে পুশিয়ে দেই।

পায়েল আদিবের মুখের পানে তাকাতেই আঁতকে উঠে। বুকের বা পাশটা মুচড়ে উঠে। গলা ধরে আসতে লাগে। আদিবের চুলগুলো একদম উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে। চোখের নিচে কালি পড়ে গিয়েছে। মুখ একদম শুকিয়ে গিয়েছে। গলার টাইটা লুস করে রাখা। ইন করা শার্টটি বেড়িয়ে এসেছে। খুব অগোছালো লাগছে আজ তাকে। যে নাকি সবসময় টিপটপ থাকতো আজ সে এতটা আগোছালো। পায়েলের এখন ইচ্ছে করছে দৌঁড়ে গিয়ে আদিবকে জড়িয়ে ধরতে আর চিৎকার করে কান্না করতে। কিন্তু না সে যে এমন কিছুই করবে না। পায়েল নিজেকে শক্ত করে অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে বলে,

— ভালো তো! তা রাস্তার ছেলেদের মত আমায় উত্ত্যক্ত না করলে আমি খুশি হবো।

আদিব এইবার করুন গলায় বলে,
— প্রেয়সী! আর কত নিচে নামাবে আমায়? আর কত! এইভাবেই তোমার দহনে পুড়ে ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছি। ধীরে ধীরে অনুভূতিহীন হয়ে যাচ্ছি। এখন কি পাষাণ বানাবে আমায়?
কেন করছো এইসব? বলো না? আজ তুমি আমার সামনে অথচ আমি মানতে পারছি না যে তুমি আমার প্রেয়সী নও। এই কথা মাথায় আসতেই আমার হৃদয়ের মাঝে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। উন্মাদে পরিনত হচ্ছি ধীরে ধীরে। প্লিজ প্রেয়সী এমন আর করো না। ফিরে এসো!

বলতে বলতে আদিবের গলা ধরে আসে। চোখের কোনে চিকচিক করতে থাকে। পায়েল তা দেখে সহ্য হচ্ছে না। সে কোন মতে বলে,
— এখন আর সম্ভব না।

আদিব এইবার অসহায় কন্ঠে বলে,
— আমি বলবো না যে তোমায় ছাড়া আমি বাঁচবো না। কিন্তু জীবন্ত লাশ ঠিকই হয়ে যাব। শুনতে পারছো প্রেয়সী! জীবিত থাকলেও আমার অন্তঃসত্ত্বা ঠিকই মৃত হয়ে যাবে।

পায়েল এইবার আর কান্না ধরে পারে না। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ার আগেই পায়েল ঘুরে দাঁড়ায়। আর দ্রুত পায়ে হাঁটতে থাকে। আদিব অনেকবার ডাকা সত্ত্বেও সে থামে না। অতঃপর একটা রিকশা ঠিক করে যতদ্রুত সম্ভব আদিবের চোখের আড়াল হয়ে যায়।

___________________________________________

একটু আগেই ভারী বর্ষণ হয়েছে। চারদিকে ছিপছিপে ভাব ছড়িয়ে আছে। আকাশ এখনো মেঘলা। হিম বায়ু বইছে। হিম বায়ুর স্নিগ্ধ ছোঁয়া লাগতেই গা কেমন শিহরণ দিয়ে উঠছে। বায়ুর সাথে তাল মিলিয়ে ছিনিবিনি খেলায় মেতে উঠেছে চুলগুলো। ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে আছি। রাতের ঢাকা শহর উপভোগ করছি। সাথে অপেক্ষার প্রহর গুনছি। ঘড়িতে ১১ টা ছুঁই ছুঁই। ঠিক এমন সময় আমার অপেক্ষার প্রহরের ইতি টেনে দিয়ে রিয়ান এসে হাজির হয় ছাদে৷ ধীর পায়ে এসে আমার পাশে এসে রেলিং এর উপর দুই হাত ভর করে দাঁড়ায় সে। শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের পানে তাকায় সে। মৃদু কন্ঠে আমাকে জিজ্ঞেস করে,

— এত রাতে ছাদে ডাকলে যে। এনি প্রবলেম?

আমি একবার রিয়ানের মুখের পানে তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেই। অতঃপর দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলি,

— আপনি শুভকে কেন মেরেছেন? বেচারা এখন হসপিটালে এডমিট।

#চলবে