আহনাফ চৌধুরী পর্ব-১৫

0
80

#আহনাফ_চৌধুরী
#পর্ব_১৫
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
_______________
বৃষ্টিতে অর্ধভেজা অবস্থায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে অর্ষা। দৃষ্টি তার আকাশের দিকে। দু’হাত ভরতি বৃষ্টির পানি। মনের ভেতর কেমন যেন অস্থিরতা কাজ করছে। কেন এমন হচ্ছে কে জানে! আহনাফ অফিসে জয়েন করার পর থেকেই কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। বাড়িতে এসেও অফিসের কাজ করে মাঝে মাঝে। সেই সময়টুকু অর্ষা নিজের মতো করে থাকে। মনের অশান্তির কথা কাউকেই বলতে পারে না। আহনাফকেও না। শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য যে অর্ষা এখনো রিহানকে ভুলতে পারেনি। সহজও নয় সব। সবার সামনে অভিনয় করতে হয় ভালো থাকার, ভুলে থাকার। কিন্তু চাইলেই কি সম্ভব এত সহজে সব ভুলে যাওয়া? এত এত স্মৃতি, মুহূর্ত সবই কি মুহূর্তে ভুলে যাওয়া সম্ভব? হয়তো সম্ভব কিছু মানুষদের জন্য। ঐসব মানুষদের জন্যই যারা অবলীলায় মানুষকে ঠকাতে পারে। প্রতিনিয়িত ঠকিয়ে যায়, প্রতারণা করে। সেই সব মানুষ বোধ হয় চাইলেই পারে যেকোনো মানুষ কিংবা স্মৃতি, সময়গুলো এক তুড়িতেই ভুলে যেতে।

বিছানার ওপর ফোন বাজছে। রিংটোন শুনে ওড়নায় হাত মুছে রুমে চলে এলো অর্ষা। সম্পা ফোন করেছে। কল রিসিভ করার পর সম্পা ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,

“কিরে তুই আজ ক্লাসে আসিসনি কেন?”

“এই বৃষ্টির মধ্যে ক্লাসে যাব?”

“কাল রাতে তো এটা বলিসনি যে বৃষ্টি হলে আসবি না!”

“বৃষ্টি দেখেও যাওয়ার আগে আমাকে একবার জানাবি না তুই? না বলেই চলে গেলি কেন?”

“ওরে আমার প্রিন্সেস রে! সবকিছু তোমায় বলে করতে হবে হু? শোন, বিশ মিনিট সময় দিলাম। জলদি রেডি হয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসবি। কোনো এক্সকিউজ আমি শুনব না। রাখছি।”

বলেই কল কেটে দিল সম্পা। অর্ষা দোনামনায় পড়ে গেছে যে কী করবে! পরবর্তীতে সে মনকে মানাল যে সে যাবে। এভাবে ঘরে বসে বোরিং হওয়ার চেয়ে ক্লাস করলে, সম্পার সাথে সময় কাটালে হয়তো ভালো লাগবে। সে রেডি হয়ে ক্লাসে যাওয়ার পূর্বে শাশুড়িকে বলার সাথে সাথে আহনাফকেও একটা টেক্সট করে জানিয়ে দিল। কোথাও গেলে সে সবসময়ই আহনাফকে আপডেট দিয়ে রাখে। এতে মানুষটা নিশ্চিন্ত থাকে।

বৃষ্টি তেমন না থাকলেও সাজেদা বেগম জোর করেই অর্ষার হাতে ছাতা গুঁজে দিলেন। বাড়ির সামনে থেকেই অর্ষা রিকশা নিয়েছে। বাস স্টপেজে গিয়ে সে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। বৃষ্টির দিনেও যে বাসে এত ভিড় থাকতে পারে ধারণা ছিল না অর্ষার। তাই একটু বেশি ভাড়া দিয়ে হলেও সে সিএনজিতে যাবে বলে ঠিক করল। হাত বাড়িয়ে বেশ কয়েকটা সিএনজি থামিয়েও দামে মেলেনি বলে সেগুলো ছেড়ে দিতে হয়েছে। ছাতা মাথায় সে অন্য সিএনজির অপেক্ষা করতে লাগল। একটা সিএনজি আসতে দেখে সে কিছুটা এগিয়ে গেল। সিএনজি এসে তার সামনেই থামল।

“মামা কলেজ গেইট…”

এইটুকু বলেই থেমে গেল অর্ষা। সিএনজি থেকে মাস্ক, সানগ্লাস পরা এক যুবককে বেরিয়ে আসতে দেখে সে দমে গেল। তাকে আর কারো চেনার ক্ষমতা না থাকলেও অর্ষা খুব ভালো করেই চিনতে পেরেছে। এই মানুষটার সব কিছুই তো তার পরিচিত। বুকের ভেতর কেমন যেন একটা চিনচিনে ব্যথা করছে। অস্বস্তিবোধ লাগছে। সে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল। কিন্তু আশাহতের বিষয় রিহান যেন অর্ষাকে চিনতেই পারেনি এমনভাবে চলে গেল। অর্ষা তাচ্ছিল্য করে হাসল। চোখের কোটরে তার পানি চিকচিক করছিল। রিহানকে দেখে তার মনে হলো আসলে রিহান নয়; যেন সে-ই রিহানের সাথে চিট করেছে! নতুবা এমন আচরণ করে কী করে কেউ?

“কই যাইবেন আপা?”

ড্রাইভারের প্রশ্নে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করল অর্ষা। ধরে আসা গলায় বলল,

“কলেজ গেইট যাবেন?”

“যামু। ৩০০ টাকা ভাড়া।”

রেগুলার ভাড়া ১৫০ টাকা। বৃষ্টির জন্য খুব বেশি হলে ৫০ টাকা বেশি নেওয়ার কথা। অন্য সময় হলে হয়তো অর্ষা বার্গেনিং করত নতুবা অন্য সিএনজিতে যেত। কিন্তু এই মুহূর্তে তার দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি নেই। বার্গেনিং করার মতো কোনো মানসিকতা নেই। সে ৩০০ টাকাতেই যেতে রাজি হয়ে গেল। সিএনজিতে উঠে কোনোভাবেই সে নিজের কান্না আটকে রাখতে পারল না। মানুষ এতটা নিষ্ঠুর কী করে হতে পারে? এই মানুষটার সাথে সে কতটা পথ একসাথে হেঁটেছে, হাতে হাত রেখেছে। আর আজ সেই মানুষটাই এমন একটা ভান ধরল যেন সে অর্ষাকে চেনেই না? আজ সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা মেয়ে অর্ষা?
.
.
“কী বলবে জলদি বলো?”

আহনাফের ব্যস্ততা দেখে অ’গ্নি’দ’গ্ধ দৃষ্টিতে তাকাল সুপ্তি। অনেক অনুনয়-বিনয় করে আহনাফকে দেখা করার জন্য রাজি করিয়েছে সে। রেস্টুরেন্টে আসতে না আসতেই চলে যাওয়ার জন্য উতলা হয়ে পড়েছে আহনাফ। সুপ্তি ব্যঙ্গ করে বলল,

“এত অস্থির হয়ে আছ কেন যাওয়ার জন্য? বউকে খুব মিস করছ?”

“বউকে মিস করার কী আছে? বউ কি আমার থেকে দূরে থাকে নাকি? ও আমার সাথে থাকে। বুকে থাকে।”

“খুব ভালোবাসা দেখছি ওর জন্য!”

“বোকার মতো কথা বলছ কেন? বউকে ভালোবাসব না তো কি পর-নারীকে ভালোবাসব? তোমার সাথে দেখা করতে আসাটাও তো আমার ঠিক হয়নি। আমি বলার আগে অর্ষা জানতে পারলে কষ্ট পাবে। দেখা করতে এসেছি সবকিছু একেবারে মিটমাট করার জন্য। আগে তুমি বলো যে তুমি কী চাও, তোমার সমস্যাটা কী?”

সুপ্তি মৌনতা কাটিয়ে বলল,

“আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি তোমাকে চাই।”

আহনাফ ধমক দিয়ে বলল,

“এক থা-প্প-ড়ে সব দাঁত ফেলে দেবো! দেখা করতে এসেছি বলে কি ভেবেছ আমি সম্পর্ক ঠিক করতে এসেছি? লিসেন সুপ্তি, একটা কথা মাথায় ক্লিয়ার করে ঢুকিয়ে নাও যে আমি এখন ম্যারিড। যখন আনম্যারিড ছিলাম তখনই তো আমি তোমাকে গ্রহণ করিনি। তাহলে এখন তুমি কীভাবে ভাবো যে আমি তোমাকে গ্রহণ করব? আমার বউ রেখে তোমার মতো একটা প্রতারককে আমি গ্রহণ করব? এটা ভাবো কী করে!”

সুপ্তি চুপ করে আছে। আহনাফ বলল,

“তুমি যা করেছ এর কোনো ক্ষমা হয় না। তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো। কিন্তু আমার জীবনে আসার দ্বিতীয় কোনো সুযোগ কখনোই দেবো না। আমি অর্ষাকে ভালোবাসি। দয়া করে তোমার অশুভ ছায়া আমাদের বিবাহিত জীবনে ফেলো না। তুমি তোমার মতো করে থাকো। তুমি আমাকে রেখে যেই ছেলের সাথে হ্যাপি ছিলে ঐ ছেলের সাথেই থাকো। দোয়া রইল তোমাদের জন্য।”

নিজের কথাগুলো শেষ করেই আহনাফ রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে এলো। পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে অর্ষার টেক্সট। সে সময় দেখল। এতক্ষণে বোধ হয় অর্ষার ক্লাসও শেষ। না হলেও সমস্যা নেই। একদিন না হয় কম ক্লাস করবে। সে অর্ষার নাম্বারে কল করল। কিন্তু রিসিভ করল না অর্ষা। তাই নিজেই সোজা সে কলেজের সামনে চলে গেল।
____

সম্পার সাথে ক্লাসে বসে থাকলেও কথা হয়েছে ওদের আউট টপিক নিয়ে। আজকের ঘটনা অর্ষা সম্পাকে সব বলেছে। সব শুনে বরাবরের মতোই যারপরনাই বিরক্ত হয়েছে সম্পা। সেই সাথে রিহানের ওপর সে বেশ রাগান্বিতও! দুজনে একসাথে ক্লাস থেকে বের হওয়ার সময় সম্পা বলল,

“ভাই, তুই ঐ লোকের কথা মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেল তো! ভুলে যা যে রিহান নামে তোর জীবনে কখনো কেউ ছিল। ধরে নে এটা একটা এক্সিডেন্ট ছিল তোর জীবনে।”

“চাইলেই কি সব ভুলে যাওয়া যায়? এক্সিডেন্ট হলেও কিন্তু ক্ষ’ত ঠিক রয়ে যায়।”

“সেই ক্ষ’ত বয়ে বেড়ানো তো আমাদের কাম্য নয়।”

“হ্যাঁ, সময় লাগে। কিন্তু কী অদ্ভুত দেখ, এতদিনের পরিচিত একটা মানুষ এক মুহূর্তেই কেমন অপরিচিত হয়ে গেল! অদ্ভুত না বল?”

“আমি জানিনা। সহ্য হচ্ছে না আর। শোন অর্ষা, তুই যা-ই বলিস না কেন সে কখনোই তোকে ভালোবাসেনি। যদি ভালোবাসত তাহলে এভাবে ছেড়ে যেতে পারত না। ঠকাতে পারত না। এতদিন পর দেখা হওয়ার পরও অচেনার মতো আচরণ করতে পারত না।”

“সত্যিই ভালোবাসেনি? একদিনের জন্যও নয়? সবটাই অভিনয় ছিল?”

সম্পা চুপ করে রইল। বড়ো শ্বাস নিয়ে বলল,

“ধরে নে তাই। তবুও তুই এই পিছুটান থেকে বেরিয়ে আয়। আহনাফ ভাইয়াকে নিয়ে ভাব। এবার দুজনের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা কর।”

“আর ভাবনা! আমি তাকে বুঝিই না।”

“বোঝার চেষ্টা করেছিস? নাকি রিহান ভাইয়ার জন্য সবার প্রতি থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিস?”

“এমনটা যদি হয়ও সেটা কি খুব বেশি অস্বাভাবিক হবে সম্পা?”

“না, হবে না। কিন্তু তোকেও একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, আহনাফ ভাইয়া কিন্তু তোর প্রেমিক নয়। স্বামী। কী সুন্দর পবিত্র একটা বন্ধন! তুই তাকে সময় দে। এই সম্পর্কটাকে সময় দে। কাছে আসার সুযোগ দে। দূরত্ব কী করে গুরুত্ব বোঝাবে বল? তাকে বুঝতে হলেও কাছে আসতে হবে। সময় ও সুযোগ দিতে হবে।”

“তোর কী মনে হয়? সে আমাকে ভালোবাসে?”

সম্পা হাঁটতে হাঁটতে থেমে গেল। মুচকি হেসে বলল,

“ভালোবাসে। আর হয়তো খুব বেশিই!”

অর্ষা হঠাৎ করে সম্পার হাসির কারণ বুঝতে পারল না। সে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনে তাকিয়ে দেখল আহনাফ গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। বলাই বাহুল্য যে ভীষণ অবাক হয়েছে সে। সম্পা হেসে বলল,

“এরপরও বলবি ভালোবাসে না?”

অর্ষা কিছু বলল না। আহনাফ ওদের দেখেই দূর থেকে হাত নাড়ল। সম্পা অর্ষার হাত ধরে আহনাফের কাছে নিয়ে গেল। পিঞ্চ মেরে বলল,

“কী ব্যাপার ভাইয়া, বউয়ের কথা কি খুব বেশিই মনে পড়ছিল?”

আহনাফ কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেল। প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলল,

“কেমন আছেন আপনি?”

“আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভাইয়া। আপনি কেমন আছেন?”

“আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো।”

“শুধু নিজে ভালো থাকলেই হবে না। আমার বান্ধবীকেও ভালো রাখতে হবে। অনেক বেশি ভালোবাসতে হবে। যত্ন করতে হবে।”

আহনাফ মুখে কিছু বলল না। মৃদু হেসে অর্ষার দিকে তাকাল একবার। সম্পা বলল,

“ঠিক আছে ভাইয়া। আমি তাহলে এখন আসি।”

“আচ্ছা আপু। সাবধানে যাবেন। সময় করে আসবেন একদিন আমাদের বাসায়।”

“ইন-শা-আল্লাহ্ ভাইয়া আসব। দোস্ত গেলাম।”

অর্ষাও মৃদু হেসে বলল,

“সাবধানে যাবি। আল্লাহ্ হাফেজ।”

সম্পা বিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার পর আহনাফ একটা সিএনজি নিল। সিএনজিতে উঠে অর্ষা জিজ্ঞেস করল,

“অফিস এত তাড়াতাড়ি ছুটি হলো আজ?”

আহনাফ অর্ষার এক হাত চেপে ধরে বলল,

“সরি।”

অর্ষা ভ্রু কুঁচকে বলল,

“মানে? সরি কেন?”

“তোমাকে না জানিয়ে সুপ্তির সাথে আজ দেখা করেছি। দেখা করতাম না। ওর কারণে আমি বিরক্ত হয়ে আছি। বিয়ের খবর জানার পর থেকেই বিরক্ত করছে। তাই আজ সব মিটমাট করলাম।”

“তো এখানে সরি বলার কী আছে?”

“আছে। কথাটা দেখা করার আগেই তোমাকে বলা উচিত ছিল। কারণ তুমি আমার বউ। আমি প্রাক্তনের সাথে দেখা করব এটা জেনে তোমার ভালো লাগার কথা না।”

“তাহলে এখন কেন জানালেন?”

“কারণ আমি নিজেকে তোমার কাছে ক্লিয়ার রাখতে চাই। সারা পৃথিবী আমাকে ভুল বুঝলেও আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু মা এবং তুমি এই দুজন নারী আমাকে ভুল বুঝলে আমি নিতে পারব না।”

অর্ষা আর বলার মতো কিছু খুঁজে পেল না। চুপ করে রইল। মাঝে মাঝে তার মনে হয় যে সে আহনাফকে বুঝতেই পারে না। আবার মাঝে মাঝে মনে হয়, এই মানুষটা তাকে ভীষণ ভালোবাসে ভীষণ!

অর্ষাকে চুপ করে থাকতে দেখে আহনাফ জিজ্ঞেস করল,

“রাগ করেছ?”

অর্ষা দৃষ্টি নত করে বসে আছে। দু’দিকে মাথা নত করে বলল,

“না। ব্যথা করছে।”

আহনাফ অস্থির হয়ে বলল,

“ব্যথা করছে মানে? ব্যথা পেলে কী করে? আমায় আগে বলোনি কেন? কোথায় ব্যথা পেয়েছ দেখি?”

অর্ষা ম্রিয়মাণ কণ্ঠে বলল,

“বুকে! মনে হচ্ছে আপনার শূন্যতা অনুভব করছি। অস্থির লাগছে ভীষণ।”

আহনাফ হেসে ফেলল। এক হাতে অর্ষাকে জড়িয়ে ধরে কানে ফিসফিস করে বলল,

“তুমি চাইলে বাসায় ফিরে পূর্ণতা দিতে পারি।”

“ভালোবাসেন?”

“ভীষণ।”

“কতটা?”

“যতটা পানিবিহীন জীবন।”

“যদি না থাকি?”

“কোথায় যাবে? আমি তো তোমাকে কোথাও যেতে দেবো না। কখনো না। এইযে তোমার হাত ধরেছি, তোমার কি মনে হয় ছেড়ে দেওয়ার জন্য ধরেছি? না। সারাজীবনের জন্য আমি তোমার হাত ধরেছি। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জানুক আমি অহংকারী, ইগোস্টিক! শুধুমাত্র এই পৃথিবীর বুকে তুমিই জানবে আহনাফ চৌধুরী কতটা উতলা, উন্মাদ, বেহায়া তোমার জন্য। তুমি চাইলেও আমি তোমায় যেতে দেবো না। প্রয়োজনে পুরো বিশ্বের সাথে আমি লড়াই করব। তবুও তোমায় আমার হয়ে থাকতে হবে মৃ’ত্যুর আগ পর্যন্ত।”

অর্ষার গলা ধরে আসছে। কথা বলতে পারছে না। চোখ থেকে পানি পড়ছে। আহনাফ অর্ষার ঘাড়ে আলতো করে চুমু খেয়ে বলল,

“তুমি নিজেও জানো না যে আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি জান!”

চলবে…