ইরাবতীর চুপকথা পর্ব-১৭(শেষ পর্ব)

0
773

#ইরাবতীর চুপকথা
লেখক:হৃদয় আহমেদ
পর্ব ১৭

‘ তু…তুমি কই যাচ্ছো ইরা? ‘

ভাঙা গালায় বলে উঠলো আয়াত। চোখমুখ ঘেমে একাকার। তার পিছুপিছু ছুটে এসে থামলো রিয়াদ। তার মুখ রক্তিম বর্ন। রাগে ডান চোখের পাতা তিরতির করে কাপছে। আয়াতের রক্তক্ষয়ী কন্ঠেও নিশ্চিুপ হয়ে দাড়িয়ে রইলো ইরা। রোবটের মতো একপলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো আবারো। আয়াত এলোমেলো পায়ে এগোয়। পা’দুটি যেন অসর অনুভব করলো সে। যেন মুছড়ে যাচ্ছে, শিরা-উপশিরা ফেটে যাচ্ছে। তার আওয়াজ বড়ো করুন শোনাল,

‘ বলো! কই যাও তুমি? কেন যাও? আমার জন্য? হু? কি হলো কথা বলো! আমায় একটি বার কারণটা বলো প্লিজ।’

রিয়াদ ছুটে এসে আয়াতের কলার খিচে ধরলো। শক্ত হাতে পরপর দুটো থাপ্পড় বসিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো,

‘ কি সমস্যা তোর? তোকে নিষেধ করা হয়েছে তুই আসবি না। তবুও তুই কেন এসেছিস এ বাড়িতে? ‘

রিয়াদ ‘তুই’ করে বললো, কড়া হাতে থাপ্পড় মারলো, তবুও আয়াত প্রতিবাদ করলো না। ঘার ঘুরিয়ে তাকিয়ে রইলো মূর্তির দিকে। অবশ্য মূর্তিই বটে! আজ ইরার মাঝে এতটুকু ভাবার্থ দেখা গেলো না। এদিকে আয়াত আহত চোখে তাকিয়েই তার দিকে। চোখজোড়ায় তার অগাধ অবিশ্বাস! এতটুকু অনুভূতি নেই তার প্রতি ইরার? এতটুকু! তা-ও নেই? তার জন্য দূরে কোথাও চলে যাচ্ছে সে। এটা মানতে কষ্ট হলো আয়াতের। বুকের কোথাও চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলো সে। ব্যাথা হয়তো অল্প, কিন্তু বুক তোলপাড় করে দিচ্ছে, চুরমার হয়ে ভেঙে যাচ্ছে যেন হাড়গুলো। গলায় পাকিয়েছে একদলা কষ্ট! অসহনীয় যন্ত্রনায় নিশ্বাস আটকে আসছে।

ইরা এদিক ওদিক তাকিয়ে লাগেজ হাতে নিলো। ঠোঁট দিয়ে জিভ ভিজিয়ে পাশ কাটাতে যাবে, একটানে রিয়াদকে ছিটকে ফেলে আবারো ছুটে আসে আয়াত। করুন চোখে তাকায় ইরার দিকে। ইরা চোখ সরিয়ে নেয়। চোখেমুখে পাষবিক কাঠিন্যেতা তার! আজ সে এতটুকু প্রস্রয় দিতে রাজি নয়। অনুভূতির জন্ম দেয়ার, সেগুলো পাওয়ার যোগ্যতা আয়াতের নেই। না, সত্যিই নেই! ইরা ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে তাকালো আয়াতের দিকে। শক্ত গলায় বললো,

‘ আপনি কেন আমার পিছু নিয়েছেন বলুন তো? কেন এসেছেন এখানে? ‘

আয়াতের চোখ টলমল করে ওঠে। ভিজে ওঠে চোখদ্বয়ের পাপড়িগুলো। আটকানো গলায় বললো আয়াত,

‘ এতো বড় শাস্তি দিও না! আর যা শাস্তি দিবে, মাথা পেতে নিবো। ‘

‘ শাস্তি? আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আপনি আপনার মতো থাকুন, আর আমি আমার মতো! এটলাস, এখান থেকে চলে যান! আমার জিবন থেকে চলে যান। ‘

আয়াতের চিবুক কেঁপে ওঠে। প্রণয় বিচ্ছেদের কষ্টে ছিলকে ওঠে বুক। হু হু করে জলগুলো চোখে এসে আটকে যায়। অধর ভিজে ওঠে পোড়াদহনের কারণে। কাঁপাকাঁপা হাতে ইরার ডান হাত ধরে আয়াত। অসহায় কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,

‘ তুমি আমায় এতটা ঘৃণা করো? ‘

ইরা আয়াতের থেকে এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নেয়। মুখ ফিরিয়ে বলে,

‘ এ-র থেকেও বেশি! ‘

‘ আ…আমি..তোমায় ছাড়া বাঁচবো না ইরা। মায়াবতী ছাড়া এ জিবন অসম্পূর্ণ! ‘

একটি ছেলের কন্ঠে এতো বিষাদ, কষ্ট দেখে অবাক হলো ইরা। কিন্তু প্রকাশ করলো না। আবারো শক্ত করে লাগেজ ধরে এগোতেই পথ আটকে দাড়ায় আয়াত। ডান হাতে চুলগুলো উল্টে ধরে বলে,

‘ আমি তোমায় ভালোবাসি! পারবো না তোমায় ছাড়া থাকতে। তোমার কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। কোথাও যাবে না তুমি। ‘

শেষের কথাগুলো চিৎকার করে বললো আয়াত। ইরা ভ্রুকুটি করে বললো,

‘ জোর করছেন? নাকি অধিকার দেখাচ্ছেন? ‘

দু’হাতে মাথার ঝাঁকড়া চুলগুলো মুঠো করে নেয় আয়াত। চিৎকার করে বলে ওঠে,

‘ হ্যা, হ্যা সব দেখাচ্ছি! তুমি কোথাও যাচ্ছো না। ‘

ইরা কিংকর্তব্যবিমুঢ হয়ে চেয়ে থাকলো। কেমন পাগলামি করছে আয়াত। সীমাহীন! রিয়াদের মেজাজ আরও খারাপ হলো। ছুটে এসে এক ধাক্কায় ফ্লোরে ফেলে চেঁচিয়ে উঠলো আকাশ,

‘ বারাবাড়ি’র একটা সীমা থাকে। এরপর চুপচাপ না গেলে কিন্তু হাত তুলতে বাধ্য হবো। ‘

‘ তুলুন! যা করার করুন। ইরাকে কিছুতেই আমি যেতে দিবো না। ‘

রিয়াদ ব্যাস্ত চোখে হাত দেখলো। ঘরিতে আটটা বেজে গেছে। সারে আটটায় গিয়ে না পৌছাতে পারলে সমস্যা হবে। আয়াতের দিকে রক্তঝড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো রিয়াদ,

‘ তোমার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। ভালোয় ভালোয় বেরোও এখান থেকে। ফল কিন্তু খারাপ হবে বলে রাখলাম। ‘

আয়াতের মাঝে তবুও কোন হেলদোল দেখা গেলো না। রিয়াদ ইরাকে বললো,

‘ তুই কেন দাড়িয়ে আছিস? চল এখান থেকে! ‘

রিয়াদ ইরার লাগেজ নিজ হাতে নিয়ে জোর পায়ে হাটতে লাগলো। ইরা ততক্ষণে বাইরে চলে এসেছে। গার্ডেনের মাঝামাঝি আসতেই হাতে টান পড়লো ইরার। পেছন থেকে হাত টেনে ধরেছে আয়াত। তার কন্ঠ খাদে নামানো,

‘ যেও না, মরে যাবো। ‘

আয়াতের কন্ঠ কানে আসতেই থেমে গেলো রিয়াদ। পিছু ফিরে ইরার হাত ধরতে দেখে জ্বলে উঠলো শরীর। চেঁচিয়ে উঠলো,

‘ হাত ছাড়ো আয়াত! নেক্সট টাইম ওয়ার্ন করবো না বললাম! ‘

আয়াত হাত ছাড়ে। এলোমেলো পায়ে হেঁটে রিয়াদের সামনে দাড়িয়ে বলে,

‘ আমি ওকে ভালোবাসি। সত্যিই ভালোবাসি। ‘

রাগে থরথর করে কাঁপতে লাগলো রিয়াদের শরীর। ব্যাস্ত চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে দূরে একটা লাঠি চোখে পড়লো তার। রিয়াদ ছুটে গিয়ে লাঠি তুলে নিলো। ইরা হতভম্ব! আরও অবাক করে নিজের সর্বস্ব শক্তিতে আয়াতকে আঘাত করলো রিয়াদ। সাথেসাথে দূরে ছিটকে পড়ে আয়াতের বিশাল দেহ। ইরা অবাক চোখে ভাইকে দেখছে। কোনদিনই এতোটা রাগ হতে ইরা দেখেনি রিয়াদকে। রিয়াদ কড়া চোখে ইরার দিকে তাকায়। বলে,

‘ বাইরে অটো রাখা, তুই এগো। ‘

ইরা একপা এগিয়ে যায়। একটু মিনতি করে বলে,

‘ তুমি লাঠি ফেলো আগে। ‘

‘ তোকে বেরোতে বলেছি! ‘

এক হুংকারে কেঁপে ওঠে ইরার বুক। স্তব্ধ নয়নে একবার আয়াতের দিকে তাকায় ইরা। উবু হয়ে পড়ে আছে আয়াত। একটু এগিয়ে লাগেজ নিয়ে এগোতে যাবে, আবারো ছুটে আসে আয়াত। মাঝপথে থামিয়ে দেয় রিয়াদ ওকে। মাথায় চরম আঘাত করে। সাথেসাথে লুটিয়ে পড়ে আয়াত। গলগল করে বেরোতে থাকে রক্ত। ইরার কলিজা ছিলকে ওঠে। বুক কেঁপে ওঠে আয়াতের গোঙানির শব্দে। ইরা লাগেজ থুয়ে ছুটে যায় রিয়াদের কাছে। হাতজোড় করে বলে ওঠে,

‘ এসব কি করছো ভাইয়া? মরে যাবে। আর মেরো না। ‘

‘ তোকে যেতে বলেছি! ‘

চাপা ক্রুদ্ধতা রিয়াদের কন্ঠে। ইরা আবারো বলে,

‘ লাঠি ফেলে দাও। ‘

‘ তুই এখন এখান থেকে না গেলে জ্যান্ত কবর দেবো ওকে। ‘

ইরা থমকে যায় ভাইয়ের কথায়। বাড়ি থেকে কেউ বাইরে আসেনি। এমনকি ইলিমাও নয়। কিন্তু কেন? ভয়ে? নাকি অগাম জানানো হয়েছে? ইরা একপলক আয়াতের দিকে তাকায়। তার কোথাও কষ্ট হচ্ছে। বুকটা খা খা করছে হঠাৎ। লোকটার কষ্টে নিজের কেন কষ্ট হচ্ছে ইরা বুঝলো না। বাধ্য হয়ে লাগেজ নিয়ে বেড়িয়ে গেলো ইরা। আয়াত ঘোলাটে চোখে তাকিয়ে। মস্তিষ্ক যখন বুঝলো, তার মায়াবতী হারিয়ে যাচ্ছে কোন অজানা গন্তব্য, তখন আৎকে উঠলো আয়াত। ছুটে গিয়ে রিয়াদের পা’দুটি চেপে গলা ফাটা চিৎকার করে বলতে লাগলো,

‘ আমি পারবো না ওকে ছাড়া বাঁচতে। আমায় ক্ষমা করে দেন। ইরাকে প্লিজ কোথাও পাঠাবেন না। এতোটা দূরে পাঠাবেন না! প্লিজ! ‘

সেদিন! সে-দি-ন! দিনটি সেদিন হলেও আয়াতের কাছে দিনটি আজ, এখন, কাল, পরশু। বিচ্ছিন্ন তার কাব্যের প্রতিটি অক্ষর বুঝছে আয়াতের ভালোবাসা। অধির আগ্রহ নিয়ে পড়ে আছে তারা। এই বুঝি আরও শব্দ যোগ করা হবে, বাড়বে তাদের প্রেমকাব্য। পূর্ণতা পাবে। তবে কবে? আদেও কি হবে? হবে না! ইরা আর আসবে না। তাদের মিলন আর হবে না। এটাই লিখন। এটুকুতেই তবে সমাপ্ত হোক। কাব্যের শেষে ‘সমাপ্ত’ লেখাটা ফুটে উঠুক। কিন্তু আয়াত দেয়নি লিখতে! এতো জলদি সে তার ভালোবাসা শেষ হতে দেবে না। জিবনের অনেকটা শেষ হলেও না! তাইতো সে এখনো বসে। আগ্রহ, ভালোবাসা কমেনি এতটুকুও।

বাইরে সা সা করে ছুটে চলা ঠান্ডা হিমেল বাতাসে ঘরের মোটা পর্দাটা কিঞ্চিৎ নড়ছে। রাতের শিশিরে ভিজে একাকার অবস্থা। গায়ে পাতলা একখানা গেজ্ঞি আয়াতের। আগের থেকে শুকিয়েছে অনেক। ফোলা ফোলা বেশিগুলো না খেয়ে খেয়ে বসে যাওয়ার যোগাড়। চোখমুখ শুষ্ক, অনবরত জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিচ্ছে আয়াত। মাথার হালকা ঝাঁকড়া বড়োবড়ো চুলগুলো ঠোঁট ছোঁয় আজকাল। তবুও এতে তেমন কিছু যায় আসে না তার। শুধু কি এতে? সবকিছুতে! বাইরে পৌসের তিব্র ঠান্ডা। তবুও গায়ে একটা গেঞ্জি ছাড়া কিছু নেই। এতে আয়াতের কিছু না এসে গেলেও তার পরিবার ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘ তিনটি মাস ছেলেটা কেমন হয়ে গেছে। ঠিক মতো খায় না অব্ধি। ইরফান আলি রিয়াদের কাছেও গিয়েছিলো। কোন লাভ হয়নি। রিয়াদ নিজের কথা হতে এক চুল নড়তে রাজি নয়।

রুমে কুহু প্রবেশ করলো।ক্ষিন স্বরে ডাকলো কয়েকবার। আয়াত তাকালো না। কুহু আয়াতের পাশে বসে। এলোমেলো আয়াতকে দেখে বুকটা কেমন করে ওঠে কুহুর। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কাঁধে হাত রেখে বলে,

‘ এভাবে আর কতদিন ভাইয়া? ‘

আয়াত কিছু বললো না। কুহু আবারো বললো,

‘ ইরা তোমায় ভালোবাসে না। ‘কুহুর এই কথায় তাকালো আয়াত। চোখদুটো কেমন ঘোলাটে, শুকনো।

‘ তুমি কি জানো তিন মাসে তোমার কি হাল হয়েছে? ”

মাথাটা চিনচিন করে উঠলো আয়াতের। কেমন হয়েছে সে? খুব পাল্টে গেছে? একটুতে আজকাল রেগে যাওয়া স্বভাব হয়ে গেছে আয়াতের। মুহুর্তেই ধপ করে জ্বলে ওঠে আয়াতের মেজাজ। সবকিছু ভেঙে ফেলে। অসহায় লাগে। কষ্টে বুক ফাটে। তিনমাসে দুইবার আত্নহত্যা করতে চেয়েছে আয়াত। সত্যিই পাল্টে গেছে। অনেক!

‘ ভাইয়া ডুমি আগের মতো ফিরে আসো। আগের মতো হয়ে যাও। তোমায় এভাবে মানায় না! ‘

আয়াত তবুও কোন প্রতুত্তর করলো না। কুহু হতাশার শ্বাস ছাড়লো। রুম থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার আগে বলে গেল,’ খাবার আনছে ফুপি। কাল থেকে খাওনি কিছু। খেয়ে নিও! ‘

কুহু কথাটা বলে বেড়িয়ে গেলেও সে জানে আয়াত খাবে না। বেঁধে ধরে খাওয়ালেও না। ইরফান আলী মাঝেমাঝে মারার জন্য উদ্ধৃত হন। এত বড়ো ছেলে, আর একটা মেয়ের জন্য সে কি শোক তার! প্রতিবার খাওয়ার সময় একটা না একটা বড়সড় ঝামেলা হবেই। আজও হলো! কুহু ত্রপা বেগমের কথা বলে গেলেও খাবার নিয়ে এলেন ইরফান আলী। তার গায়ে গরম জাম্পার। প্রচুর শীত। সেখানে ছেলেকে এভাবে দেখে বিরক্ত হলেন তিনি। তবুও নিজেকে শান্ত করে শিতল কন্ঠে বললেন,

‘ আয়াত খাবারটা খেয়ে নাও। ‘

আয়াত চুপ। ইরফান আলী খাবার নিয়ে ছেলের পাশে বসলেন। গম্ভীর কন্ঠে বললেন,

‘ খেয়ে নাও! ‘

কয়েক সেকেন্ড পরও যখন আয়াতের মাঝে কোন হেলদোল প্রকাশ পেলো না। তিনি রেগে গেলেন। চেঁচিয়ে বলে উঠলেন,

‘ খেয়ে ফেলো আয়াত। রাগতে বাধ্য করো না।’

‘ খাবো না আমি। ‘ স্পষ্ট, শিতল কন্ঠ আয়াতের। ইরফান আলী এবার চটে গেলেন। নিজে ভাত মাখিয়ে এক লোকমা হাতে মুখের সামনে তুলতেই আয়াত ছিটকে ফেলে দিলো। বিছানা থেকে উঠেই ভাতের প্লেটটা মেঝেতে ছুঁড়ে ফেললো আয়াত। চিৎকার দিয়ে উঠলো,

‘ খাবো না বললাম তো! ‘

ইরফান আলী কিংকর্তব্যবিমুঢ হয়ে চেয়ে রইলেন। আজ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি রাগারাগি করছে আয়াত।

পেছন থেকে একটানে আয়াতকে ফিরিয়ে কষে একটা চড় বসিয়ে দিলো কেউ। আচমকা এমন হওয়ায় কয়েকপা পিছিয়ে গেলো আয়াতের দূর্বল শরীর। মাথা তুলে তাকানোর আগেই ভেসে এলো কাঙ্খিত এক কন্ঠ,

‘ কি শুরু করেছেন আপনি? না খেয়ে না ঘুমিয়ে শিতের দিনে বস্ত্র ছাড়া থেকে মনে করছেন খুব বড়ো মজনু হয়ে গেছেন? ‘

আয়াতের পিলে চমকে উঠলো। সিরদাড়া বেয়ে ছুটে গেলো শিতল কিছু। কন্ঠটা পরিচিত আয়াতের। অনেক পরিচিত! টলোমলো চোখদুটি তুলে তাকাতেই উন্মাদ এক রমনীকে দেখতে পেলো আয়াত। ইরা! তার সামনে ইরা দাড়িয়ে। এটা কি সত্যি? আয়াত কি ঠিক দেখছে? ইরা আবারো ছুটে এসে আয়াতের পাতলা গেঞ্জির গলার চেপে উঠে দাড় করায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

‘ ভালো রোমিও হয়েছেন দেখছি। এসব করে কি প্রমান করতে চাইছেন? ‘

আয়াতের অবকতা তখনো কাটেনি। ইরা টেনে এনে বিছানায় বসায় আয়াতকে। রুমে প্রবেশ করে কুহু, রিয়াদ, ইলিমা সাথে ত্রপা বেগম। কুহু খাবারের প্লেটটা এগিয়ে দিতেই ইরা নিজ হাতে খাইয়ে দিতে থাকে আয়াতকে। আয়াত চুপচাপ খাচ্ছে। দু’লোকমা খেতেই প্রশ্ন ছোড়ে আয়াত,

‘ কেন এলে? আবার তো চলেই যাবে। ‘

‘ যাওয়ার জন্য আসিনি। পাগলের পাগলামির ঔষধ নাকি আমি? সারাজীবনের জন্য এসেছি। ‘

#সমাপ্ত…….

[বিশেষ কয়েকটি পর্ব আসবে এই গল্পের]