ইষ্ক ইবাদাত পর্ব-১+২

0
2018

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#সূচনা_পর্ব

মুম্বাই এর এক হোটেল রুমে ফ্লোরে তাথই নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ে আছে এলোমেলো অবস্থায়।নেশায় বুঁদ হয়ে ঝাপসা ভাবে দেখতে পায় তার সামনে একজন ছেলে ও মেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে প্যাশনেট ভাবে কিস করছে। ঝাপসা ভাবে এটা দেখতেই নেশা কেটে যায়। ভালো ভাবে দেখতেই বুঝতে পারে তার সামনে থাকা ছেলে মেয়ে দুটো হলো তার বোন ও তার ফিঁয়ান্সে। এটা দেখতেই দম আটকে আসে। এটা কি ভাবে হতে পারে সামনের দৃশ্য দেখেই তার হৃদয়ে হাজারো ছুরির আঘাত হতে থাকে। তাথই এখনও ভাবতে পারছেনা যে ছেলে তাকে সব সময়ে এটা বলতে বলতে ক্লান্ত হতো না যে সব সময়ে তাঁকে ভালোবাসবে সে কি ভাবে তার বোনের সাথে এমন করতে পারে।

-“ওকে সুইটহার্ট এখন আমাদের এখান থেকে যাওয়া উচিত। মিস্টার মেহতা এখনই এসে যাবে। অভি বলে ওঠে।

-” তো কি মিস্টার মেহতা শুধু মাত্র তাথই এর সাথে এক রাত কাটানোর জন্য তোমার কোম্পানীতে ইনভেস্ট করতে চায়? তানিয়া অভি এর গলায় নিজের হাত রেখে মেঝেতে পড়ে থাকা তাথই কে দেখিয়ে বলে ওঠে।

-” আমি কেনো তোমাকে মিথ্যে বলব। মিস্টার মেহতা এর মধ্যেই আমার অ্যাকাউন্টে পঞ্চাশ কারোর ট্রান্সফার করে দিয়েছে। এই টাকা দিয়ে আমি নতুন ফিল্ম যতো টাকা ইনভেস্ট হয়েছে সব ওনার দেয়া। আমি এই ফিল্মে লিড ক্যারেক্টার তোমাকে নেবো। অভি হেসে তানিয়ার গালে স্লাইড করতে করতে বলে ওঠে।

-“আচ্ছা মিস্টার মেহতা একটু বেশি ইন্টারেস্টিং দেখাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না? আমি এটা বুঝতে পারছি না যে উনি তাথই এর মধ্যে এমন কি দেখলো যে ওর সাথে এক রাত কাটানোর জন্য তোমার কোম্পানিতে পঞ্চাশ কারোর ইনভেস্ট করার জন্য রাজী হয়ে গেলো। তোমার কি মনে হয় ও আমার থেকে ও সুন্দর ।তানিয়া অভির বুকের ওপর লেপ্টে গিয়ে গায়ে হাত স্লাইড করতে করতে বলে ওঠে।

-” তাথই একটা বেহেনজি আর বোরিং মেয়ে ছাড়া আর কিছু নয়। তোমার সাথে ওর কম্পারিজন হয় না। ও তোমার পায়ের নখ এর ও যোগ্য নয়। অভি তানিয়ার কোমরে হাত রেখে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলে ওঠে।

তাথই অভির জন্য নিজের ক্যারিয়ার পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছে সে সব সময়ে চেষ্টা করে গেছে যাতে ও অভির মনের মত হতে পারে। কিন্তু অভির মনে তাথই এর জন্য বেহেনজি আর বোরিং মনে করত।

-“একবার শুধু ও মিস্টার মেহতার সাথে রাত কাটিয়ে নিক তারপরেই পরই আমি ড্যাড আর মিডিয়া কে এনে ওকে এক্সপোজ করবো। স্ক্যান্ডেল থেকে ও মুম্বইয়ের সব থেকে পপুলার হয়ে যাবে এক দিনের মধ্যে আর তখন তুমি এই বাহানা দিয়ে তুমি ওর সাথে বিয়ে ক্যানসেল করে দিতে পারবে। তানিয়া বাঁকা হেসে বলে ওঠে।

-“ওহ সুইটহার্ট তুমি অনেক স্মার্ট। এখন চলো যাওয়া যাক। অভি হেসে বলে উঠে তানিয়ার কোমরে হাত রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

তাথই ফ্লোরে পড়ে থেকে ফুফিয়ে কেঁদে ওঠে। বুকের মধ্যে যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায়। হাজারো ছুরির আঘাত হতে তার হৃদয় পুরো টুকরো টুকরো হতে থাকে। এটা যদি নিজের চোখে আর কানে না শুনত তাহলে এটা বিশ্বাস করতে পারতো না। তাথই ভাবতে পারছে না তার কাছের দুজনই তার সাথে এমন গেম খেলতে পারে। অভি আর তার বোন তানিয়া পঞ্চাশ কারোর এর জন্য একজন চরিত্র হীন লোকের কাছে বিক্রি করে দেয়। অভির সাথে তাথই এর পারিবারিক ভাবে বিয়ে ঠিক হয় এক বছর আগে। তাদের পরিবারের বন্ড আরো বেশি গাড়ো করার জন্য। তারপর থেকেই তাথই সব সময়ে চেষ্টা করে গেছে অভির জন্য পারফেক্ট হওয়ার। সব সময়ে অভির কথায় হ্যাঁ মেলাত চেষ্টা করে গেছে অভির মন মত চলার। অভি নিজেকে স্ট্যান্ড করিয়ে তার পর বিয়ে করতে রাজী হয়। তাই তাথই অভি কে সাহায্য করার জন্য নিজের কোম্পানি অভির নামে করে দেয়। আর সেই অভির মনে তার জন্য কোনও ফিলিংস নেই সে তাকে যোগ্য মনে করে না। আর তানিয়া নিজের বোন না হলেও যাকে সে সব সময়ে নিজের বোন মনে করত তার জিনিষ গুলোই সব সময়ে তানিয়ার পছন্দ হয়ে যেতো আর সেটা তাথই হাসি মুখে দিয়ে দিত। এমনকি নিজের ফ্যাশন ও মডেলিং ক্যারিয়ার ও পর্যন্ত স্যাক্রিফাইজ করেছে ফ্যাশন ও মডেলিং নিয়ে পড়াশোনা করার পর ও শুধুমাত্র তানিয়ার জন্য এই লাইন ছেড়ে দিয়েছে তানিয়া মডেলিং করতে চেয়েছিল বলে। তাথই তার জীবনের সব থেকে মূল্যবান দুটো জিনিস তার জীবনের সব থেকে দুটো মূল্যবান দুজন কে দিয়ে দিয়েছে বিনিময়ে তারা তাকে বিক্রি করে দিয়েছে শুধুমাত্র টাকার জন্য। এটা ভাবতে তার দম আটকে আসছে। তার নিজের লোক হয়ে ও তার সাথে এমন কি ভাবে করতে পারে। তাথই এখন বুঝতে পারছে যে অভি আর তানিয়া মিলে তার ড্রিংক এর মধ্যে ঘুমের ওষুধ ও মিক্সড করে দিয়েছে। তার এখন মনে হচ্ছে নিজেকে শেষ করে দিতে কিন্তু সেটা করলেই সে তার জীবনের কাছে হার মেনে নেবে সেটা তাথই কখনোই করবে না। বড় বিপদ ঘটে যাওয়ার আগে তাথই নিজের অবশ হয়ে যাওয়া শরীর টেনে নিয়ে রুমের বাইরে যেতে থাকে।

তাথই কিছু দূরে যেতেই তার সামনে এসে দাঁড়ায় তানিয়া। তাথই নিজের মাথা ঝাকিয়ে সামনে চোখ তুলে তাকাতেই দেখতে তানিয়া মুখে শয়তানি হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

-“কিরে কোথায় যাচ্ছিস তুই। চল রুমে চল । তানিয়া তাথই কে ধরে নিয়ে যেতে নেয়।

-“ছিঃ তানিয়া তুই এমন টা করতে পারলি কি করে? আমি তোকে নিজের বোন থেকে কম কিছু ভাবিনি আর তুই? তাথই তানিয়ার হাত ঝটকা দিয়ে ফেলে বলে ওঠে।

-“ওহ তার মানে তুই জেনে গেছিস। বাহ্ খুব ভালো আমাকে আর কষ্ট করে তোর সাথে নাটক করতে হবে না। তানিয়া হাসতে হাসতে বলে ওঠে।

-“আর বোন? কিসের বোন? কার বোন? আমি তোকে কখনো নিজের বোন মনে করিনি। তুই সব সময়ে সবার কাছে ভালো হয়ে থাকিস যেটা আমার একদম পছন্দ নয় তাই আমি সব সময়ে তোর কাছে থেকে সব কিছু কেড়ে নেই। আর এখন ও নিলাম তোর ক্যারিয়ার ও অভি কে। তোর কাছে আর কিছুই রইলো না। আর ড্যাড তুই তো জানিস আমাকে কত ভালোবাসে তোর থেকেও বেশি আমি যেটা বলি সেটাই শোনে। আর তোর মা তোর থেকেও নেই। আর তোর ফিঁয়ান্সে এখন সেটাও আমার। আমাকে ছাড়া তোর ফিঁয়ান্সে চোখে অন্ধকার দেখে বুঝলি। তা নিয়া বিশ্রী ভাবে হাসতে হাসতে তাথই এর চারিদিকে ঘুরতে ঘুরতে বলে ওঠে।

-“ছিঃ। এখন তোকে আমার বোন ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে। তাথই বলে ওঠে।

-” ঘৃণা তো আমার ও করে তোকে দেখলে আমি সব সময়ই চেয়েছি তুই কোনো গাড়ির সাথে অ্যাক্সিডেন্ট করে মরে যা। কিন্তু সেটা হয়নি। কিন্তু আমি কোনো রিস্ক নেবো না তাই এতদিন তোর অ্যাক্সিডেন্ট না হলেও এখন হবে আমি তোর ছায়া ও আমার জীবনে দেখতে চাইনা। সবার মন থেকে আমি তোর নামটাই মুছে দেবো। আজই তোর শেষ দিন। বাই বাই দি….য়া। তানিয়া হাসতে হাসতে হিংস্র চোখে তাকিয়ে বলে ওঠে।

তাথই তানিয়ার কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যায়। তানিয়া কি বলতে চাইছে বুঝতে চাইছে। বুঝতে পারে তানিয়া কোনো হিংস্র কাজ করতে চাইছে। এর থেকে বেশি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তানিয়া তাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে দেয়। তাথই পিছন সরতে সরতে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে বুঝতে পারে তার পিছনে কাঁচের দেয়াল। আর তার সাথেই বুঝতে পারে তানিয়ার কথার মানে। তাথই কাঁচের দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে কাঁচ ভেঙে গিয়ে সাত তলা বিল্ডিং থেকে নিচে পড়তে থাকে। আর তার সাথে তাথই দেখতে পায় তানিয়ার মুখের শয়তানি হাসি।

তাথই নিজের ইজ্জত সম্মান বাঁচিয়ে নিলেও নিজের প্রাণ বাঁচাতে পড়লো না। এটা ভাবতেই তাথই এর চোখের কোন থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। তাথই বিল্ডিং থেকে রোডের ওপর কোনো গাড়ির ওপর পড়ে ছিটকে রোডের মাঝখানে এসে পড়ে। আসতে আসতে তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সে বুঝতে পারে তার নাক থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে সারা শরীর অবশ হয়ে আসছে। নিজের চোখ খুলে রাখতে পারছে না। ঝাপসা চোখে তাকিয়ে দেখে চারিদিকে থেকে সবাই তার দিকে এগিয়ে আসছে। আর কিছু দেখতে পায় না তার চোখের সামনে সব কিছু অন্ধকার হয়ে যায়। স্নিঃতেজ হয়ে যায় তাথই এর সারা শরীর। ঢোলে পড়ে মৃত্যুর মুখে।
.
.
.
.❤️❤️❤️
. চলবে…..

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২

পুরো মুম্বাই শহরে শোরগোল পড়ে গেছে তাথই এর মৃত্যুর খবরে। চারিদিকে এখন এটা রিপিট টেলিকাস্ট হচ্ছে যে মুম্বাই এর নামি দামি বিজনেসম্যান ওরফে স্টেট মিনিষ্টার এহসান মানান এর মেয়ে তাথই মানান সাততলা বিল্ডিং থেকে ঝাঁপ দেয়ার ফলে মৃত্যু ঘটে গেছে। আর এই খবর মিডিয়া আরো বেশি মসলা পাকিয়ে আরো গভীর ভাবে প্রেজেন্টেশন করে যার ফলে এখন পুরো মুম্বাই শহরে এটা টপ নিউজ হেডলাইন হয়ে গেছে এই মৃত্যুর পিছনে কি কোনো রহস্য আছে নাকি এটা একটা সুইসাইড কেস। একজন নামি দামি বিজনেসম্যান ওরফে স্টেট মিনিষ্টার এর মেয়ের মৃত্যুর পিছনে রহস্য কি থাকতে পারে।

হসপিটাল এর করিডোরে বসে আছে মিস্টার এহসান মানান ।আর তার পাশে পুরো পরিবার তানিয়া তাথই এর মা দাদু ও ভাই ও বোন। এখানে শুধু মাত্র তানিয়া ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছে। আর তাছাড়া বাকিরা স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। তাথই এর মৃত্যু পুরো পরিবারকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাথই এর বাবা স্তব্ধ হয়ে আছে। আর মা তো পুরো যেনো পাথর হয়ে গেছে মেয়ের মৃত্যুর শোকে। বাকি দুই ভাই ও বোন একে অপরের কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে। তারা তাদের দিয়ার এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না। বাইরে মিডিয়া তাদের সাথে কথা বলার জন্য পুরো হসপিটাল ঘিরে রেখেছে। কিন্তু এখন কেউ কথা বলার মত মুডে নেই তাই তানিয়া ওখান উঠে বাইরের দিকে পা বাড়াতে নেয়। কারণ এটাই তার কাছে মোক্ষম সুযোগ তাথই এর মৃত্যু কে সুইসাইড কেস বানানোর জন্য।

তানিয়া বাইরে আসতে পুরো মিডিয়ার লোক তাকে ঘিরে ধরে। তানিয়া নিজেকে অসহায় দেখানোর জন্য চোখে থেকে মাগুর মাছ এর মত পানি ফেলে যাচ্ছে যদিও এটা সত্যি পানি না চোখে গ্লিসারিন দিয়েছে চোখের মধ্যে যাতে সবার সামনে তাথই এর মৃত্যুতে সে কতটা দুঃখ কষ্ট পেয়েছে সেটা বোঝাতে পারে। তাই বাইরের মানুষ এখন তানিয়া কে দেখলে বুঝতে পারবে যে তানিয়া তার বোনের মৃত্যুতে কতটা ভেঙে পড়েছে। তানিয়া কে ঘিরে মিডিয়ার লোক একে একে প্রশ্ন করতে শুরু করে।

-“ম্যাম হঠাৎ করে তাথই এর মৃত্যুর কারণ কি হতে পারে?

-” ম্যাম এই মৃত্যু এর পিছনে কি কারণ হতে পারে? এটা কি কোনো সুইসাইড কেস নাকি এর পিছনে কোনও রহস্য থাকতে পারে?

-“ম্যাম কাল পার্টিতে তাথই কে হাসি খুশি দেখা গেছে সেখানে আপনাকে আর তাথই এর ফিঁয়ন্সে কে ও দেখা গেছে আর তারপরই এই অস্বাভাবিক মৃত্যু এর কি কোনো কারণ বলতে পারেন?

-” তাথই এর রিপোর্টেও অ্যালকোহল পাওয়া গেছে তাহলে কি এটা ধরে নেওয়া যাবে যে নেশায় থাকাকালীন উনি নিজের হুস সামলাতে না পেরে বিল্ডিং থেকে নিচে পড়ে যান।

একের পর এক রিপোর্টার এই রকম প্রশ্ন করতে থাকে। প্রথম প্রথম রিপোর্টার এর প্রশ্ন শুনতে তানিয়া একটু ঘাবড়ে গেছিলো। কিন্তু তার পরের প্রশ্ন গুলো শুনে মনের মধ্যে ফুটে ওঠে শয়তানি হাসি। কিন্তু বাইরে থেকে এখন কার ফেস দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না। তানিয়া এবার নিজেকে রিপোর্টার দিকে ঘুরিয়ে মাথা উঁচু করে কাঁদতে থাকে যেনো সে এতই ভেঙে পড়েছে যে কথা বলতে পারছে না।

-“আমি সত্যি এখনও ভাবতে পারছি না তাথই আমাদের মাঝে নেই। এটা ভাবলেই আমার বুক কেঁপে উঠছে। কাল পর্যন্ত তাথই আমাদের সাথে ছিল। কাল ও অনেক খুশি ছিল আমরা পার্টিতে ও অনেক আনন্দ করেছি। কিন্তু হঠাৎ করে মন খারাপ হয়ে যায়। আর তারপরেই পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে গেছিলো আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে। এর আগে থেকেই ও কিছু নিয়ে ডিপ্রেশনে ভুগছিল ।আমি জানতে ও চেয়েছি কিন্তু তাথই আমাকে বলেনি ও সব সময়ে ইনসিকিওরিটি ভুগত অভি কে নিয়ে। অভি কে ও কোনও মেয়ের সাথে নরমালি কথা বলতে দেখলেই রেগে গিয়ে ঝগড়া করত। কিন্তু অভি তো স্টার অকেশন এর প্রেসিডেন্ট ওকে বিভিন্ন কাজের জন্য মেয়েদের সাথে কথা বলতেই হতো। আর কালকে ও বিজনেস ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলছিল আর আমার মনে হয় এই জন্য ও মন খারাপ করে পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে অভি এর কাছে ব্রেক আপ এর কথা বলে ম্যাসেজ করে দেয়। আর তারপরই আমরা ওকে খুঁজতে শুরু করি। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছিল। এমনিতেই তাথই ড্রাঙ্ক ছিল আর তার ওপর নিজের রাগ সামলাতে না পেরেই হয়তো এই কাজ করে বসে। আর আপনারা তো সবাই জানেন তাথই এর রাগ কত খারাপ এর জন্য ও এর আগেও স্ক্যান্ডেল এর মধ্যে ও ফেসে গেছিলো। তাথই এর মৃত্যু আমাদের সবাই কে খুব কষ্ট দিয়েছে আমাদের পুরো ফ্যামিলি ভেঙে পড়েছে। আর অভির মুখের দিকে তো দেখাই যাচ্ছে না ও তাথই কে খুব ভালবাসতো কিন্তু তাথই বুঝতেই পড়লো না। বলেই সবার কান্নায় ভেঙে পড়ার নাটক করে সবাই এর সিমপ্যাথি আদায় করে নেয়।

এখন সবার কাছে এটা একটা সুইসাইড কেস লাগছে এখন পুরো শহর এই বিষয় টা কে সুইসাইড কেস ধরে নিয়েছে। কারণ সাততলা থেকে ঝাঁপ কেউ এমনি এমনি দেবে না তাই সবাই সুইসাইড ধরে নিয়েছে আর তার সাথে এটা তাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে তাথই মানুষিক রোগে ভুগছিল। আর সামান্য কারণে মিস্টার অভি আহুজা কে ইনসিকিওরিটিতে ছিল। আর তার সাথে যুক্ত আছে তানিয়া মানান যে এই বিষয় টা কে নিয়া মিডিয়ার সামনে সিমপ্যাথি জানিয়েছে যার জন্য এটা সুইসাইড প্রমাণ হয়ে গেছে। এই খবর গুলো জানার পর কারোর মধ্যে অভির জন্য সিমপ্যাথি হচ্ছে আর তাথই কে বিকৃত মস্তিষ্কের মনে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ করুণা করছে।

-“বাহ সুইটহার্ট তুমি খুব ভালো অ্যাকটিং করতে পারো তোমার অ্যাকটিং টপ অ্যাক্টরেসদের ও ঘোল খাইয়ে দেবে। কি সুন্দর ভাবে সব কিছু সামলে নিলে। এই জন্যতো আমি তোমাকে এত ভালোবাসি। অভি তানিয়ার কোমরে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে নিয়ে বলে ওঠে।

-” বলছো তাহলে আমি সবার থেকে বেস্ট। তানিয়া বাঁকা হেসে চোখের থেকে পানি মুছে বলে ওঠে।

-” কিন্তু বেবি আমি একটা কথা কিছুতেই বুঝতে পারছি না যে আমরা তো ওকে ড্রিংক এর ঘুমের ওষুধ মিলিয়ে খাইয়ে দিয়েছিলাম তাহলে ও রুম থেকে বেরিয়ে গেলো কি ভাবে আর হঠাৎ করে ওপর থেকে ঝাঁপ বা কেনো দিলো? অভি বলে ওঠে।

-” আরে সেটা আমি কি করে জানবো। আমি তো তোমার সাথে বেরিয়ে গেছিলাম। হয়তো দেখো নিজের সম্মান বাঁচাতে ঝাঁপ দিয়েছে। তুমি তো জানো যে তাথই কেমন ধরণের মেয়ে মরে যাবে তবুও সম্মান বাঁচাবে। তানিয়া অভির প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে গিয়ে বলে ওঠে।

-” আচ্ছা ঠিক আছে এখন চলো তাথই এর বডি নিয়ে আর বাকি সবাই কে নিয়ে আমাদের কে ফিরতে হবে। আর তাছাড়া এখন সব কিছু তো আমাদের কেই সামলাতে হবে। অভি বাঁকা হাসি দিয়ে আবারো মুখে অসহায় এক্সপ্রেশন নিয়ে ভিতরে চলে যায়।

বাড়ির সবাই তাথই এর বডি দেখতেই চোখ বন্ধ করে নেয়। তাথই কে পুরোই বিভৎস লাগছে। ছোটো বোন টা চিৎকার করে ওঠে আর তাথই এর মা সেন্সলেস হয়ে যায় তাথই এর বডি দেখে। কারণ তাথই কে এখন একদমই চেনা যাচ্ছে না। সারা মুখে রক্ত ভোরে আছে আর পুরো মুখটা থেতলে গেছে। দেখতে পুরো ভয়ঙ্কর লাগছে। মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে না এটা তাথই কি না। শুধুমাত্র তাথই এর পরনের ড্রেস দেখে নিশ্চিত তারা যে এটাই তাথই।

-“আমার জীবন থেকে তোকে সারা জীবন এর জন্য সরিয়ে দিলাম। তোর জন্য এটাই ঠিক আছে দেখ এখন তোকে দেখে সবাই ভয় পাচ্ছে যারা তোর রূপের জন্য গুণোগান করত তোর সেই রূপ শেষ হয়ে গেছে। এখন তোর সব কিছুই আমার । তানিয়া মনে মনে বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…..

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন।