ইষ্ক ইবাদাত পর্ব-২১+২২+২৩

0
5629

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২১

রেয়ান্স এক দৃষ্টিতে দেখছে তোড়া কে । তার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে। তোড়া কে এখন তার কাছে সেই প্রথম দিনের দেখা মেয়েটা লাগছে যে সবাই কে তার দিকে আকর্ষণ করতে থাকবে কিন্তু নিজেকে কোনো পরোয়া করবে না। সেই প্রথম দিনের মতো নিজের কাজের দিকে তার মন অন্য কোনো দিকে যেনো তার খেয়াল নেই। আর তোড়ার এই রূপ কে দেখেই রেয়ান্স এর মনের ভিতর আগুন জ্বলে গেছিলো যেটা এখন জ্বলে প্রতি নিয়ত। রেয়ান্স কিছুক্ষণ আগের তোড়ার সাথে এখনকার তোড়ার মিল খুঁজছে কিন্তু সে ব্যর্থ। একটু আগেই যখন তার সাথে ছিল একদম শান্ত কিছুটা লজ্জা নিয়ে ঘেরা ছিল কিন্তু এখন তাকে দেখলে তার মনের ভাব কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। আর এতেই রেয়ান্স বেশি মরে যাচ্ছে।

তোড়া মেকআপ নিয়ে বসে আছে কিছু সাইট সিন এর শুট চলছে তাই ওদের হয়ে গেলে তোড়ার টার্ন আসবে। মুম্বাই থেকে দেড় ঘণ্টা জার্নি করে লোনাওয়ালাতে পৌঁছে শুটিং স্পটে চলে এসেছে রেয়ান্স এর সাথে । রাই ও ওদের সাথেই এসেছে যেহেতু রাই তোড়ার ম্যানেজার তাই ওকে তো থাকতেই হবে। আর বাকি তার মম লেখা আর দাদু ঘুরতে বেরিয়েছে। রেয়ান্স ওদের থেকে কিছুটা দূরে আড়াল হয়ে দেখছে, ওকে এখানে কেউ দেখে ফেললে অসুবিধা হয়ে যাবে তাই আড়ালে থাকা। কিন্তু ও নিজের বউ এর প্রতি টা কাজে প্রতিটা রূপে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছে একদম তোড়ার মত নেশা নেশা লাগছে ।

সাইট সিন এর শুটিং হয়ে যেতেই তোড়ার ডাক পড়ে যেহেতু এটাতে তোড়ার মুখ্য মুখ আর নিউ কমার তাই ফটোগ্রাফার তোড়ার প্রথমে কিছু ট্রায়াল শট নিতে চায় যাতে তোড়ার বুঝতে কোনো অসুবিধা না হয়।

-“কোনো দরকার নেই। আপনি সরাসরি থিম অনুযায়ী ফটো তুলুন। তোড়া বলে ওঠে।

-” এটা ওয়াইল্ড শট হবে তুমি সিউর তো তোমার ট্রায়াল লাগবে না? ফটোগ্রাফার বলে ওঠে।

-“না আপনি শট নিতে থাকুন। তোড়া বলে ওঠে।

ফটোগ্রাফার কিছুটা অবাক হয়ে গেছে কারন তোড়ার এটাই প্রথম ফটোশুট হচ্ছে সে মাত্রই নিউ কমার হিসাবে ইন্ডাস্ট্রিতে জয়েন করেছে আর কোনো ট্রায়াল না নিয়ে শুট করতে চাইছে।

ফটোগ্রাফার রেডি বলতেই তোড়া নিজের পোজে চলে আসে। তোড়া ব্ল্যাক স্লিভলেস ওয়ানপিস পড়েছে তার ওপরে ডেনিম জ্যাকেট তার সাথে ব্ল্যাক অ্যাঙ্কেল লেন্থ হাই হিল বুট। মেসি হেয়ার আর সাথে পারফেক্ট মেকআপ। তোড়া তার পাশে থাকা ডিজাইনিং চেয়ার এর ওপর নিজের এক পা তুলে একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়ে তার ওপরে নিজের হাত রেখে কিছু চুল হাতে পাকিয়ে নিয়েছে আর অন্য হাত দিয়ে কোমরে রেখেছে। আর তারপরেই মুখ টা কে হালকা স্লাইড করে ক্যামেরার দিকে ফোকাস করে। ওখানে থাকা প্রত্যেকে তোড়ার এমন পোজ দেখে হয়রান হয়ে গেছে। কারণ একটা নিউ কমার এর কাছে প্রথম শট এত পারফেক্ট হয়না তাদের ট্রায়াল নিতে হয় আর সেখানে তোড়া তার প্রথম পোজ দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে। এর পর একের পর এক শট দিয়ে যাচ্ছে আর তার সাথে ফটোগ্রাফার এর মুখ আপনা আপনি গুড পারফেক্ট ইত্যাদি ইত্যাদি শব্দ বেরিয়ে আসছে।

রেয়ান্স এক মনে তার বউ এর শুট দেখে যাচ্ছে। সে নিজেও তোড়ার পারফরম্যান্স দেখে অবাক হয়ে গেছে। সে যতো দূর তোড়ার ব্যাপার খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে সে ফ্যাশন ও মডেলিং নিয়ে পড়াশোনা করলেও প্রাকটিক্যালি এই প্রথম ছিল তার জন্য কিন্তু তোড়ার কনফিডেন্স ওর পোজ প্রত্যেকটা পশ্চার চেঞ্জ সব কিছু তাকে ও অবাক করে দিয়েছে। আর সে এতক্ষণ মুগ্ধ হয়ে তোড়ার পারফরম্যান্স দেখেছিল।

প্রায় এক ঘণ্টা পর শুট শেষ হয়। তোড়া ও নিজের মধ্যে ফিরে আসে। সে তাড়াতাড়ি চলে যায় নিজের মেকআপ তুলে চেঞ্জ করে নিতে। কিছুক্ষণ পর তোড়া চেঞ্জ করে বাইরে বের হতে রাই এসে জড়িয়ে ধরে তোড়া কে।

-“ওহ মাই গড তোড়া তুই তো পুরো কামাল করে দিয়েছিস। আমি জানতাম তুই ঠিক পারবি। রাই হেসে বলে ওঠে।

-” হয়েছে এবার ছাড়। তোড়া রাই কে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে ওঠে।

-“হুম হুঁ চল আমাদের জন্য মিস্টার ক্রাশ অপেক্ষা করছে রাই বলে ওঠে।

তোড়া রাই এর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতে রাই জিভে কামড় দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। তোড়া বুঝেছে ও রেয়ান্স কে নিয়ে কথা বলছে ।কিন্তু ওর কেনো রাগ লাগছে রাই ওকে ক্রাশ বলাতে। এই সব ভাবতে ভাবতে তোড়া গাড়ির কাছে চলে যায়। গাড়ির সামনের দরজা খুলে তোড়া বসে পড়ে। কোনা চোখে একবার তোড়া রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে নিয়ে সোজা হয়ে বসে। রেয়ান্স বুঝতে পারে না হঠাৎ করে হলো টা কি কেমন একটা রাগ রাগ মনে হচ্ছে কিন্তু কেনো সে কি করলো রে বাবা এই সব ভেবেই বাড়ির দিকে গাড়ি ঘোরায়, যেহেতু তোড়াদের এখানে বাড়ি আছে তাই আর কোম্পানির দেয়া হোটেলে থাকার প্রয়োজন নেই আর যেহেতু সাথে রেয়ান্স আছে তাই আর কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

এদিকে রাই এর মনে নানা প্রশ্নের জোট বেঁধে গেছে সে বুঝতে পারছে না ইন্ডাস্ট্রির কিং রেয়ান্স রাওয়াত তাদের সাথে কি করছে সে তো কোনো মেয়েকে পছন্দ করে না তাহলে তোড়ার সাথে কি চলছে আর তাছাড়া বাকিদের সাথে কি সম্পর্ক। আর যায় হোক না কেনো সাধারণ কোনো সম্পর্ক নয় এর মধ্যে গভীর কিছু আছে। সামনের দুজন কে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে করতে ভাবতে থাকে।

তোড়া রেয়ান্স বাড়িতে এসে পৌঁছে সবার সাথে আড্ডা দেয় নানা রকম গল্প নিয়ে মেতে ওঠে সবাই মিলে কিন্তু এর মাঝে ও রাই গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে প্রতি টা ক্ষণ। তোড়া বুঝতে পারছে যে রাই কিছু সন্দেহ করছে আর সেটা যে তার আর রেয়ান্স কে নিয়ে সেটাও বুঝতে পারছে। সবাই মিলে একসাথে মজা করে ডিনার করে রুমে চলে যেতেই তোড়া দু কাপ কফি নিয়ে রাই কে ডেকে ছাদে চলে আসে।

ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কফির সাথে হালকা মৃদু ঠান্ডা বাতাস অনুভব করছে তোড়া। চারিদিকে পাহাড়ের সাথে সবুজে ঘেরা পাহাড় গুলো কে এমন ভাবে সবুজে পেচিয়ে রেখেছে মনে হবে যেনো চারিদিকে সবুজের মেলা বসেছে কেউ মুঠো মুঠো করে সবুজ রং চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু রং ও এর কাছে ফিকে পড়ে যাবে মনে হচ্ছে এমন একটা পরিবেশে থাকলেই আবেশে চোখ বন্ধ হয়ে আসে নেশা ধরে যায়। তোড়া নিজের পাশে কারোর উপস্থিতি বুঝতে পেরে চোখ খুলে তাকায়। রাই দাঁড়িয়ে আছে।

-“এবার একটু ঝেড়ে কাঁশ। কি বলতে চাইছিস বলে ফেল নাহলে পেট খারাপ করবে চেপে রাখলে। তোড়ার কফির মগে চুমুক দিয়ে বলে ওঠে।

-” রেয়ান্স এর সাথে কি চলে মানে ও এখানে কি করছে সেটাই বুঝতে পারছি না আর তাছাড়া কি সম্পর্ক তোদের মধ্যে? যেখানে ও কোনো মেয়ে কে পাত্তা দেয় না সেখানে ও তোর সাথে স্বাভাবিক আচরণ করছে এর কি কারণ? রাই জিজ্ঞেস করে ওঠে।

কারণ এই গুলো তার পেটের মধ্যে ছোটাছুটি করছিলো তাই সময় বুঝে বের করে দিলো।

-“হাজব্যান্ড ওয়াইফ এর সম্পর্ক। তোড়া কোনো ভনিতা ছাড়াই এক কথায় উত্তর দিয়ে দেয়।

-” মানে? রাই এক প্রকার চিৎকার করে বলে ওঠে।

-“মানে এটাই সে আমার হাজব্যান্ড আমি তার ওয়াইফ। আমি তার বিয়ে করা বউ এর সে আমার বিয়ে করা বর। তোড়া দূরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।

-” একটু সব কিছু খুলে বলবি আমি না পুরো ঘেঁটে যাচ্ছি। রাই কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে ওঠে।

তোড়া একবার রাই এর মুখের দিকে তাকিয়ে আবার ও সামনে দূরের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে সব কিছু বলতে থাকে তার অ্যাক্সিডেন্ট থেকে শুরু করে আর রেয়ান্স আর তার বিয়ে নিয়ে এই পর্যন্ত সব কিছু এক দমে বলে উঠে শেষ করে।

-“ওয়াও এটাতো খুব সুন্দর খবর। দ্য গ্রেট রেয়ান্স রাওয়াত ওয়ার্ল্ড টপ ওয়ান বিজনেসম্যান ইন্ডাস্ট্রির বস কিনা আমার ফ্রেন্ড এর বর উফ ভাবতেই আমার ডান্স দিতে ইচ্ছা করছে। রাই লাফিয়ে লাফিয়ে বলে ওঠে।

-” তোড়া তুই কি ভালোবাসতে পেরেছিস মানে কিছু কি ফিলিংস হয়েছে রেয়ান্স এর প্রতি। দেখ আমার তো মনে হয় রেয়ান্স তোকে ভালোবাসে। রাই বলে ওঠে।

তোড়া রাই এর এই প্রশ্নে তার দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে আবারও সামনের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।

-” আমি জানি না আমি ভালোবাসতে পেরেছি কি। আমি জানি না। কিন্তু এটা ঠিক তাকে দেখলেই আমার হার্ট বিট বেড়ে যায়। নিজের মধ্যে কেমন একটা অনুভূতির সৃষ্টি হতে থাকে। আমার মধ্যে আগে কখনো এমন কিছু অনুভব হয়নি। অভি এর সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল তার সাথে আমার অনেক দেখা ও হয়েছিলো কিন্তু কখনো আমি তার সাথে থাকতে এই অনুভূতির অনুভব করিনি। রেয়ান্স কে দেখে তার কাছে আসাটা তার ছোটো ছোটো কাজ গুলো আমাকে মুগ্ধ করে। তার আমার প্রতি কেয়ার গুলো একটা অধিকার বোধ সব কিছু আমাকে হারিয়ে নিয়ে যায় তার প্রতি আমি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছি তার প্রতি। তাকে দেখলে তার কাছে আসা তার প্রতিটা কথা তার প্রত্যেকটা স্পর্শ আমাকে নাড়িয়ে দেয়। আমাকে নেশায় আবদ্ধ করে ফেলে তার প্রতি। জানি না আমার এই অনুভূতি গুলো কি নাম তার কাছে আসলে আমার মধ্যে হওয়া অনুভূতির কি নাম আমি জানি না। তার উষ্ণ স্পর্শ গুলোর কি নাম আমি সেটাও জানি না। তাকে আমার প্রতি করা কেয়ার অধিকার সব কিছু আমার মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলে আমি সত্যি জানিনা এগুলির কি নাম আমি সত্যি জানি না আমি তাকে ভালোবাসি কি না। আমি জানি না। তোড়া এক নিঃশ্বাসে বলে ওঠে।

এতক্ষণ কথা বললে ও রেয়ান্স এর মুখটা তার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল তার সাথে তার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে গেছিলো প্রতিটা মুহূর্ত সে শিহরন অনুভব করছিলো রেয়ান্স এর কথা বলতে গিয়ে তার চোখের কোনা চিক চিক করে ওঠে পানিতে।

রাই এতক্ষণ চুপচাপ শুনছিল তার মুখে ও হাসির রেখা ফুটে ওঠে আনন্দে। সে আজ সত্যি খুশি এতদিন পরে তার বেস্ট ফ্রেন্ড খুশির আলো দেখেছে তার কপালে সুখের রেখা পড়েছে এতে সে খুশি তার ও চোখ ভিজে এসেছে সে ছোটো থেকেই তোড়ার কষ্টে দেখে কেঁদে এসেছে আজ তার খুশিতে ও তার চোখের কোনা ভিজে এসেছে। হয়তো একেই বলে বেস্ট ফ্রেন্ড এর সম্পর্ক।

ঠিক ওদের মত ও আরও এক জনের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে তার চোখের কোণে ও পানি জমে গেছে। সেও আজ খুশি খুব খুশি। তার চোখ ও খুশিতে ঝলমল করছে। আজ যেনো তার ও প্রাপ্তি ঘটেছে।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…….

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২২

মুম্বাই পুরো শহর জুড়ে হইচই পড়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ঝড় উঠে গেছে। সবার মুখে এখন শুধু তানিয়া কে নিয়ে খারাপ খারাপ কথা ঘুরে বেড়াচ্ছে। কয়েক ঘণ্টা আগে একটা নিউজ রিলিজ হয়েছে তানিয়া কে নিয়ে আর সেটা নিয়ে এখন ক্ষেপে আছে সবাই। মিস্টার মানান তোড়ার বাবা তিনি নিজেও এখন সমস্যায় পড়ে গেছে হঠাৎ করে মেয়ের এমন রিউম্যারস ছড়িয়ে যেতে। যেহেতু তিনি একজন স্টেট মিনিষ্টার তাই সব থেকে বেশি তাকে মিডিয়া কে কভার করছে নতুন নতুন গল্প তৈরী করার জন্য।

আর তানিয়ার অবস্থা তো আরো খারাপ কারণ দু দিন আগেই তার একটা স্ক্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিলো সেটা এমনিতেই সবার চোখে খারাপ হয়ে ছিল আজ সকালে হসপিটাল থেকে ফিরতে না ফিরতে আবারো জড়িয়ে পড়েছে। এবার আর যা তা ভাবে ফেসে যায় নি। তানিয়া নিজের ঘরের এক কোণে চুপ করে ঘাপটি মেরে বসে আছে। বাড়ির বাইরে প্রেস মিডিয়া জমা হয়ে বসে আছে সে বেরোতে ছেকে ধরবে।

“”হট ডিভা মিস তানিয়া মানান নতুন চেহারা টপ মডেল হওয়ার রহস্য ”

এইরকম নানা ধরণের হেড লাইন ছেয়ে আছে খবর জুড়ে। তার সাথে কিছু ছবি আর ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে কিন্তু এখানে থাকা ছেলেটার মুখ বোঝা যাচ্ছে না মুখটা ব্লার করা আছে কিন্তু তানিয়ার মুখটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। ছবিতে তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে আছে। আর ভিডিও তে ও আরও এক ধাপ এগিয়ে আছে একে অপরের সাথে অন্তরঙ্গ ভাবে দেখা যাচ্ছে। আর তার সাথে কয়েক লাইন লেখাও আছে।

“” মিস তানিয়া মানান একজন টপ ইন্টারন্যাশনাল মডেল। কিন্তু এর পিছনে ও আছে অনেক রহস্য। তিনি এই লেভেলে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহার করেছেন কয়েক জন নামি দামি মানুষ কে। হয়েছেন তাদের বিছানার সঙ্গী। তিনি স্টেট মিনিষ্টার এহসান মানান এর মেয়ে হয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে আর সবার মত নিজের শরীর কেই বেছে নিলেন। দু দিন আগেও তিনি নিউ ফিল্ম প্রোডাকশনে নিজের লিড ক্যারেক্টার রোল এর জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন শোনা যাচ্ছে কিন্তু সব টা জানতে পারার পর মুভির থেকে বের করে দেওয়া হয় আর আমরা সবাই সেটা জানি আর তারপরের ঘটনা আপনাদের সবাই এর সামনে “”

নিউজ জুড়ে এখন শুধু এই খবর ঘুরে যাচ্ছে। সব পাবলিক এবার এই কাজে খেপে গেছে ধরতে গেলে একদিকে দিয়ে তানিয়ার ক্যারিয়ার এর শেষ। পাবলিক যেমন একটা সাধারন মানুষ কে সেলিব্রিটি বানিয়ে দিতে তেমনই তাকে রাস্তায় ও নামিয়ে আনতে পারে এক নিমেষে। আর এখন এটাই হচ্ছে তানিয়ার সাথে। তার এখন বাইরে বেরোনোর মত মুখ নেই। সব ইমেজ ধুলো মিশে গেছে।

এদিকে নানা ধরণের কমেন্ট আসছে তানিয়া কে নিয়ে বাজে বাজে মিমস বানানো হচ্ছে এক কথায় তাকে মানুষ এবার ঘৃণার চোখে দেখছে সবার কাছে হাসির খোরাক হয়ে গেছে তানিয়া। তানিয়ার এই খবরের জন্য অভি কে ও অনেক নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে সাথে স্টার গ্রুপ এর সব মেম্বারদের ও যেহেতু তানিয়া স্টার গ্রুপ এর টপ মডেল তাই তাদের কে ও এই ঝামেলা নিতে হচ্ছে।

————–

স্টাডি রুমে ল্যাপটপ এর সামনে বসে আছে রেয়ান্স আর তার সামনে খোলা ল্যাপটপের স্ক্রিন জুড়ে দেখা যাচ্ছে তানিয়ার খবর। পাশেই শাহীন বসে আছে। তার মুখে ও ফুটে আছে একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি। রেয়ান্স সব কিছু দেখার পর ল্যাপটপ বন্ধ করে দেয়।

-” পরের সব কিছু রেডি আছে তো শাহীন? রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” ইয়েস স্যার সব কিছু রেডি আছে। শাহীন বাঁকা হেসে বলে ওঠে।

-“ওকে । এই নিউজ টা যেনো এক মাস পর্যন্ত ট্রেন্ডিং কোর্টে থাকে। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” ইয়েস স্যার সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। শাহীন বলে ওঠে।

রেয়ান্স শাহীন এর দিকে একবার তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। তাকে এখন শুটিং স্পটে যেতে হয়ে। তোড়ার শুট চলছে। রেয়ান্স বেরিয়ে যেতেই শাহীন হাফ ছেড়ে বাঁচে। এতক্ষণ যেনো বাঘের মুখে ছিল। রেয়ান্স এর তোড়ার প্রতি এতটা কর্নসান দেখে মাঝে মাঝে শাহীন অবাক হয়ে যায় এই যেমন তানিয়ার হাড়ির খবর টেনে বের করে মিডিয়ার কাছে দেয়া। হ্যাঁ এই কাজ রেয়ান্স এর ছিল তোড়ার হয়ে প্রতিশোধ নিতে এই ব্যবস্থা করেছে রেয়ান্স। আর এই কয়েকদিনেই শাহীন বুঝতে পেরেছে রেয়ান্স তোড়ার জন্য কতটা পাগল। আর এটা যে একটা সামান্য শুরু ছিল আরও তো অনেক বাকি।

———–

রেয়ান্স চুপ চাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তোড়ার শুট দেখছে। আজকে পানির মধ্যে শুট চলছে। পাহাড়ের গায়ে ঝর্ণার নীচে থেকে। রেয়ান্স মুগ্ধ হয়ে তোড়ার পারফরম্যান্স দেখে যাচ্ছে। প্রায় এক ঘণ্টা পর শুট শেষ হতে তোড়া চেঞ্জ করে বের হতেই রাই লাফিয়ে লাফিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।

-“তোড়া তোড়া কি হয়েছে জানিস? রাই বলে ওঠে।

-” না বললে কি করে জানবো। তোড়া ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

-“আজকের নিউজ তো পুরো কামাল করে দিয়েছে মিস তানিয়া তো টপ মডেল থেকে এখন হাসির খোরাক হয়ে গেছে। রাই হাসতে হাসতে বলে ওঠে।

-” মানে একটু খুলে বলবি কি হয়েছে? তোড়া বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।

-” আমি বলব না নিজের চোখে দেখে নে। বলেই তোড়ার সামনে ফোন এগিয়ে দেয়।

তোড়ার বিরক্তি নিয়ে ফোনের দিকে তাকাতেই তার ভ্রু কুঁচকে যায় মুখে ফুটে ওঠে বাঁকা হাসি তার হাতে থাকা ফোনের স্ক্রিন জুড়ে এখন তানিয়ার খবর চলছে।

-” তোড়া আমি বুঝতে পারছি না তানিয়ার সাথে এই গুলো কে হতে পারে। বোঝা যাচ্ছে না। আর তাছাড়া অভি কি জানতো না এই সব কিছু। রাই বলে ওঠে।

রাই এর কথা শুনে তোড়ার মুখে তাচ্ছিল্য ভরা হাসি ফুটে ওঠে।

-” তুই কি সত্যি বুঝতে পারছিস না যে ছবি গুলো তে তানিয়ার সাথে কে আছে। তোড়া বলে ওঠে।

-” আরে বাবা না। আচ্ছা হঠাৎ করেই তানিয়ার খবর লিক কি করে হল বলত? রাই বলে ওঠে।

তোড়া কিছু একটা ভাবতে ওর মুখে হাসি ফুটে ওঠে। সে জানে এই কাজ কার হতে পারে। হ্যাঁ সে জানে। আর কথা গুলো ভাবতেই তার ফোন বেজে ওঠে। স্ক্রিন এর দিকে তাকিয়ে দেখে ” রাত ” কলিং। আর এটা দেখতে মুখের হাসিটা আরো প্রশস্ত হয়ে ওঠে।

-“এই রাত টা আবার কে?

-” তোর কি মনে হয় কে হতে পারে? তোড়া বাঁকা হেসে বলে ওঠে।

-“রেয়ান্স! কিন্তু রাত কেনো? রাই আশ্চর্য হয়ে বলে ওঠে।

-” আমিও জানি না। তবে জেনে নেবো।

মুচকি একটা হাসি দিয়ে সেট থেকে বেরিয়ে দেখে একটু দূরেই রেয়ান্স গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তোড়া আর এক মুহূর্ত দেরি না করে রেয়ান্স এর দিকে এগিয়ে যায়। সে জানে এই মানুষটা তাকে সব সময়ে তার পাশে আছে তাকে রক্ষা করার জন্য সব রকম বিপদ থেকে। হ্যাঁ সে রেয়ান্স এর সব সমস্ত আচারন দেখে বুঝতে পারে যে রেয়ান্স তাকে ভালোবাসে। আর সে নিজেও এখন রেয়ান্স এর প্রতি অনুভূতির অনুভব করে যেটা তার কাছের অনেক মধুর। আচ্ছা রাত নামের মধ্যে ও কি কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে? হ্যাঁ হয়তো আছে তাইতো আমাকে খুঁজে নিতে বলেছিলো। এই রাত নামের রহস্য ও আমি ঠিক খুঁজে নেবো। রেয়ান্স দিকে মুচকি হেসে এগিয়ে যায় তোড়া,
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে……

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২৩

তোড়া এক দৃষ্টিতে রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে আছে । আর রেয়ান্স বুঝে ও না বোঝার ভান করে সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করে যাচ্ছে। তার মুখে হালকা হাসির রেখা আছে তবে সেটা সহজে কেউ ধরতে পারবে না। কাছের মানুষ ছাড়া।তোড়া গাড়ি তে ওঠার পর থেকেই এক ভাবে তাকিয়ে আছে কোনো কথা বলেনি আর না রেয়ান্স বলেছে।

-“আমি জানি রেয়ান্স তুমি এই কাজ গুলো করেছো এই সব কিছুর পিছনে তোমারি হাত আছে সেটা আমাকে না বললেও আমি জানি। তুমি আমার হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছ। যেহেতু তুমি আমাকে কিছু বলছো না এই ব্যাপারে তাই আমিও এই ব্যাপার নিয়ে তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করব না। আমার ওপর তোমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে তোমার তাই আমি তোমাকে এটা থেকে বঞ্চিত করতে পারিনা কিন্তু আমিও ঠিক আমার কাজ করব আমার মত করে। সবাই যদি বড় হওয়ার জন্য অন্য কে ব্যবহার করতে পারে তাহলে আমি আমার নিজের হাজব্যান্ড এর থেকে কেনো এই টুকু সাহায্য নেবো না।

-“আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। তুমি মুখে না বললেও আমি জানি তোমার চোখের দিকে তাকালে আমি দেখতে পাই আমার জন্য অবিরাম ভালোবাসা। তোমার মুখের হাসি বলে দেয় তোমার অনুভূতি। আমার দিকে যখন মুগ্ধ তাকিয়ে থাকো তোমার ওই দুটো চোখ যখন নেশায় ভরা হয়ে আমাকে দেখে তখন দেখি তোমার ভালোবাসার গভীরতা। তোমার প্রত্যেকটা কথা কাজ ব্যবহার আমার জন্য তোমার চিন্তা সব কিছু চিৎকার করে বলে দেয় তোড়া আমি তোমাকে ভালোবাসি হ্যাঁ আমি তোমাকে ভালোবাসি। আর আমিও সেটা জানি।

-“তোমার এই সমস্ত কিছু আমাকে ও দুর্বল করে দিয়েছে তোমার প্রতি আমাকে আসতে আসতে বাধ্য করছে তোমার প্রতি অনুভূতির সৃষ্টি হতে বাধ্য করছে তোমাকে ভালোবাসতে। বারবার তোমার ভালোবাসা আমাকে তোমার কাছে টানে প্রতিটা মুহুর্ত। আমি বুঝতে পারিনা আমি কি করব আমি নিজেকে দুর্বল করতে চাইনা কিন্তু আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি তোমার প্রতি। আমি চাইনা আর নতুন করে কষ্ট পেতে কিন্তু কেনো জানিনা তোমাকে আমার খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে ইনফ্যাক্ট আমি এখন তোমাকে বিশ্বাস ও করি। আমি যে অবস্থায় ছিলাম আমি জানি না আমি কোনো দিনও স্বাভাবিক হতে পারতাম কিনা। কিন্তু দেখো তোমার সংস্পর্শে এসে আমি ধীরে ধীরে আবারো স্বাভাবিক হয়ে গেছি। আমি জানি আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তুমি আমার হাজব্যান্ড। আমি নিজেও চাই তোমাকে ভালোবাসতে হয়তো আমার অজান্তে তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু সেটা হয়তো নিজে বুঝতে পারছি না। আমি চাই আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক আরো চার পাঁচটা সম্পর্কের মত হোক তার থেকে অসাধারণ হোক। আমি তোমাকে আমার বাধনে আবদ্ধ করতে চাই তোমাকে আমার সম্পূর্ণ আমার করতে চাই রেয়ান্স

-“রেয়ান্স তোড়া। হ্যাঁ আমি উত্তর পেয়ে গেছি। এটা তো আমাদেরই জুড়ে তৈরী। তোমার আমার নাম দিয়ে তৈরী” রাত “রেয়ান্স র আর তোড়ার ত উফ এটা আমার আগে কেনো মাথায় এলো না মাথার বুদ্ধি গুলো সব ঘাস কাটতে গেছে দেখছি।

-” কি হলো হাসছো কেনো? রেয়ান্স ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

রেয়ান্স এর কথায় তোড়া চমকে ওঠে। বড় বড় চোখ করে তোড়া রেয়ান্স এর দিকে তাকায় তার মুখ এখনও হা হয়ে আছে। তার মানে সে এতক্ষণ স্বপ্নের দুনিয়ার মধ্যে ছিল সে এতক্ষণ নিজের মনে কথা গুলো বলছিল আর হাসছিল। উফ এত দেখছি আমি নিজেই পাগল হয়ে যাব এই ছেলেটার জন্য শেষে কিনা আমি হেসে দিলাম এখন নিশ্চয়ই আমাকে পাগল ভাবছে। তোড়া আবারো মনে মনে বলে ওঠে।

-“কি হলো এই ভাবে আছো কেনো মশা ঢুকে যাবে মুখে। রেয়ান্স দুষ্টু হেসে বলে ওঠে।

-” ক কই কিছুনা। তোড়া নিজের মুখ বন্ধ করে হড়বড়িয়ে বলে ওঠে।

রেয়ান্স তোড়ার অবস্থা দেখে মুচকি হাসতে থাকে। সে জানে যে তোড়া এতক্ষণ তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। এখন ধরা পড়ে গিয়ে চমকে উঠেছে। রেয়ান্স আর কোনো কথা না বলে মুচকি মুচকি হেসে গাড়ি চালাতে শুরু করে তোড়া ও বাইরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে হাসতে হাসতে থাকে ঠোঁট চেপে।

—————-

-“তানিয়া এই সব কি নিউজ চলছে হ্যাঁ। অভি তানিয়া কে ফ্লোর থেকে টেনে তুলে বলে ওঠে।

-” কি হল কোনো কথা বলছো না কেনো হ্যাঁ এই নিউজ গুলো কি ট্রেন্ড হচ্ছে। অভি তানিয়া কে ধাক্কা দিয়ে চিৎকার করে বলে ওঠে।

-“অভি তুমি জানো না ওই ছবি তে কে আছে? তুমি জানো না? তানিয়া ও অভি কে ধাক্কা দিয়ে বলে ওঠে।

-” হ্যাঁ আমি জানি ওই ছবি আর ভিডিও তে আমি আছি আর বাকি গুলো তে কে আছে বলো আমাকে। অভি বলে ওঠে।

-“অভি এখন তুমি আমাকে ব্লেম দিচ্ছ । তানিয়া চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” হ্যাঁ দিচ্ছি কারণ তোমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এসেছে আর তাছাড়া বাকি ছবি গুলোতে যে আমি নেই সেটা তুমি খুব ভালো করে জানো তানিয়া। অভি তানিয়ার দুই বাহু চেপে বলে ওঠে।

তানিয়া অভি এর কথা শুনে অভি কে নিজের থেকে সরিয়ে দিয়ে হাঁটু গেড়ে নিচে বসে পড়ে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না করতে থাকে।

-“অভি তুমি আমাকে অবিশ্বাস করছো। তুমি আমাকে এই কথা গুলো বলতে পারলে আমাকে। বলে কান্না করতে থাকে।

-” তানিয়া আমি তোমাকে অবিশ্বাস করছি না শুধু জিজ্ঞেস করছি। অভি বলে ওঠে।

তানিয়া একবার মুখ উঠিয়ে অভি এর মুখের দিকে তাকিয়ে নিয়ে আবারও কান্না করতে থাকে।

-“অভি তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি তার পর ও তুমি আমাকে এই কথা গুলো বললে আমি মেনে নিতে পারছি না। তানিয়া বলে ওঠে।

-” ও হো বেবি আমি কি তোমাকে সেটা বলেছি দেখো আমি শুধু তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি তুমি তো জানো আমি কতটা চাপে আছি এখন আমাকে কত কি সামলাতে হচ্ছে। আমাদের গ্রুপ এখন পুরো মিডিয়া দিয়ে ঘেরা আছে তাই হয়তো কি বলতে কি বলে ফেলেছি। অভি তানিয়ার কাছে এসে বলে ওঠে।

-” অভি তুমি আমাকে কখনো অবিশ্বাস করোনা তুমি তো জানো আমি তোমাকে কত ভালোবাসি তুমি যদি আমাকে ভুল বোঝো তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলব। তানিয়া অভি কে জড়িয়ে বলে ওঠে।

অভি তানিয়া কে জড়িয়ে রেখেছে একটু আগের তার মধ্যে থাকা রাগ গলে জল হয়ে গেছে। তানিয়ার কথার জালের মধ্যে জড়িয়ে গেছে আবারো। এদিকে তানিয়া অভি কে জড়িয়ে রেখেই এক হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে ফেলে ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তোলে।

-“অভি তুমি সব সময়ে এর জন্য আমার সাথে জুড়ে থাকবে। তোমাকে কখনো আমার হাত থেকে যেতে দেবো না তুমি আমার সোনার পুতুল। তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি অন্য কারোর দিকে তাকাতে পারবো না বা কারোর সাথে জড়াতে পারবো না। তোমাকে সব সময়ে আমার সাথেই থাকতে হবে। তোমাকে কি ভাবে নিজের দিকে টেনে নিতে হয় সেটা আমি জানি কি ভাবে কথার জালে বেঁধে রাখতে হয় সেটা এই তানিয়া ভালো জানে। তানিয়া নিজের মুখে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তুলে বলে ওঠে।

—————

অন্ধকার রুমে মধ্যে মৃদু আলো জ্বলছে সামনের দেয়ালে কয়েক জনের ছবি দেখা যাচ্ছে। হ্যাঁ ওখানে দেখা যাচ্ছে তানিয়া অভি আর মানান ফ্যামিলি এর ছবি। অন্ধকার এর মধ্যে থেকে আসতে আসতে একটা অবয়ব পরিষ্কার হতে থাকে আলোর মধ্যে। এগিয়ে যাচ্ছে দেয়ালের ছবির দিকে। ছবির দিকে তাকিয়ে হাতে থাকা রেড মার্কার উঁচু করে তানিয়ার ছবির উপরে ক্রস কাটতে থাকে।

-“তোর বিনাশ এর শুরু। তোর যা শাস্তি হয়েছে সেটা শুধু মাত্র শুরু ছিল আমি কিছুই করিনি কিন্তু এবার শুরু হবে আমার খেলা। তুই এতদিন খেলেছিস এবার তোর শেষ সময়। মাত্র তো তোর ইমেজ এর ওপর দাগ পড়েছে কিন্তু এখনও শেষ হয়নি কিন্তু এবার হবে। আমি তোকে পুরোই শেষ করব। আগের আমি আর এখন কার আমি সম্পূর্ণ আলাদা। আমি তোর এমন অবস্থা করব যে তুই না পারবি মরতে আর না পারবি বেঁচে থাকতে। তুই শুধু সময় গুনতে থাক।

-“এবার হবে আসল খেলা প্রস্তুত হও শুধু। এবার বুঝবে আসল খেলা কাকে বলে। বলেই ঘর কাঁপিয়ে হাসতে থাকে।

—————

ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে তোড়া তার দৃষ্টি সামনের দিকে স্থির হয়ে আছে। দু হাত রেলিং এর ওপরে রেখে রাতের প্রকৃতি বিলাস করছে। পুরোই প্রকৃতির মাঝে ডুবে আছে মগ্ন হয়ে। হটাৎ করেই কাঁধে কারোর স্পর্শ পায়। তোড়া কোনো সাড়া না দিয়ে চুপ করে আছে। সে বুঝতে পারে কে হতে পারে হ্যাঁ কয়েক দিনে স্পর্শ গুলো কে চিনে নিয়েছে। তাই বুঝতে দেরি হয়নি তার পিছনে রেয়ান্স আছে।

রেয়ান্স তোড়ার কাঁধের ওপর হাত রাখে
তোড়ার চুপ করে থাকা দেখেই আসতে আসতে হাত টা কে স্লাইড করে নিচের দিকে নামাতে থাকে। তোড়া নিজের দুই হাতে রেয়ান্স এর স্পর্শ পেয়ে আলতো কেঁপে ওঠে। নিঃশ্বাস ঘন হতে থাকে। রেয়ান্স তোড়ার হাতের থেকে স্লাইড করে দুই হাত দিয়ে তোড়ার কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে নেয়। মুখ নামিয়ে এনে তোড়ার কাঁধের ওপর নিজের থুতনি রেখে কানের পাতায় আলতো করে চুমু খেয়ে। আর এই উষ্ণ স্পর্শে কেঁপে ওঠে রেলিং এর ওপরে থাকা হাত টা কে আরো চেপে ধরে। রেয়ান্স নেশাগ্রস্ত গলায় বলে ওঠে।

-“তোড়া ।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…….

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন ।