এই মন তোমাকে দিলাম পর্ব-০৩

0
174

#এই_মন_তোমাকে_দিলাম
#পর্ব_৩
#আরাদ্ধা_খান
সায়ন সিরিজ দেখতে দেখতএ কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো খেয়াল নেই। চোখ যখন খুললো তখন সকাল ৯টার বেশি বাজে।হাই তুলতে তুলতে রুমের দরজা খুলে বের হলো।নিচ থেকে কথাবার্তার আওয়াজ আসছে।সেও সিড়ি দিয়ে হেলেদুলে নামতে লাগলো।তাদের ড্রয়িং, ডাইনিং, কিচেন সব একসাথে।অনেকটা ওয়েস্টার্ন কান্ট্রির হাউজ প্যাটার্নে বানানো তাদের বাড়ি।
জয়া ছেলেকে আসতে দেখে তেড়ে গেলেন ওর দিকে।গিয়ে এক কান টেনে ধরে ঝাড়তে লাগলেন,
– ওরে বলদ! বেকুব!তোর জন্য খাবার বাইরে রেখেছি। জানতাম মাঝ রাতে তোর ঘুম ভাঙবে। খাস নি ভালো কথা,খাবারগুলো ফ্রিজে রাখবি না?বাইরে কি মরার মত গরম দেখেছিস?!শুধুমাত্র তোর জন্য এতগুলো খাবার নষ্ট হলো।
সায়ন আর্তনাদ করতে করতে বলল,
– আহ!মা!লাগছে তো!ছাড়ো।
জয়া কান ছেড়ে দিতেই সে দুই লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেলো।কান ডলতে ডলতে বলল,
– তোমার লজ্জা লাগে না এত বড় একটা ছেলের কান টানতে?!
তার কান ডলার মাঝেই সীমন্তী পেছন থেকে ওর মাথায় একটা চাটি মারলো।সায়ন আবারও চিৎকার মেরে এবার মাথা ডলতে লাগলো।পেছনে তাকিয়ে দেখলো বোন দাঁড়িয়ে আছে। কোলে রুহি, যে আপাতত মনযোগ দিয়ে নিজের ছোট্ট হাত দুটো গিলে ফেলার প্রয়াসে আছে।
সীমন্তী ওকে পাশ কাটিয়ে রান্নাঘরে যেতে যেতে বলল,
– তুই কাজগুলো করিসই মার খাওয়ার মতো।তুই বউয়ের সামনেও আমার আর আম্মুর মার খাবি।
সায়ন ঠোঁট উল্টালো।সে ভুলেই গিয়েছে এক সপ্তাহ পর তার বিয়ে।মুখ কালো করে দুঃখ করতে করতে বলল,
– আমার আসাই উচিৎ হয়নি।আসার পর থেকেই খারাপ ব্যাবহার করছো সবাই।আবার আমার মত না নিয়ে বিয়ে করিয়ে দিচ্ছো।আজকে রাতের ফ্লাইটেই চলে যাবো আবার।হুহ!
কথা শেষে মা বোনের দিকে তাকালো।তারা নিজেদের কাজ করছে। সায়নের কথা শুনতেই পায়নি।
সে মন খারাপ করে ডাইনিং টেবিলের দিকে অগ্রসর হলো।সেখানে আগে থেকেই তারিফ সাহব বসা ছিলেন।তিনি পেপার পড়ছিলেন।ছেলেকে চেয়ার টেনে বসতে দেখে দিলেন এক ধমক,
– তুমি ফ্রেশ হয়েছো?বাসি মুখে নাস্তা খাবে?যাও ফ্রেশ হয়ে আসো!
সায়ন মুখে আঁধার নামিয়ে উপরে চলে গেলো।এদিকে তারিফ সাহবে,জয়া,সীমন্তী তিনজনই হা হা করে হেসে দিলেন।তাদের আদরের ছেলে যতই বড় হোক না কেন, বাহিরে যতই গম্ভীর হোক না কেন, তাদের কাছে এখনও ছোট।সায়নের এই রূপ তারা তিনজন আর রায়ান বাদে কেও দেখে নি।কর্মক্ষেত্রে সে খুবই দায়িত্বশীল, সিরিয়াস।রোগীদের নিকট হাসিখুশি,ধৈর্যশীল মানুষ।কলিগ কিংবা ফ্রেন্ডদের নিকট খুবই মিশুক এবং জলি পারসন।বাকিদের কাছে খুবই দৃঢ় পারসোনালিটির মানুষ। তার শত্রু খালি একজনই, দ্যা গ্রেট ‘রাহদিয়া রহমান রূপন্তী’।শুধু মাত্র একজন মানুষ যার সাথে তার দেখামাত্রই ঝগড়া হয়েছে।

সবাই নাস্তা খেতে বসলো।রায়ানও অফিসের জন্য রেডি হয়ে এলো।কিছুক্ষন বাদে সায়ন ও নেমে আসলো।নাস্তা খেতে খেতে সকলে টুকটাক কথা বলতে লাগলো।এরই মাঝে সায়ন হাল্কা কেশে বলে উঠলো,
– আমার তেঁজগাও’র একটা হসিপিটালে জব হয়েছে।কালকে যেতে বলেছে। সামনের সপ্তাহ থেকে হয়তবা জয়েন কর‍তে হবে। সাভার থেকে যাওয়া আসা করতে কষ্টকর না হলেও ঢাকায় থাকাটাই ভালো হবে মনে হচ্ছে।
তারিফ সাহেব সাবলীল কণ্ঠে জবাব দিলেন,
-ঠিকাছে তাহলে ঢাকায় থাকবে। আপাতত জয়েন করো।বাসার বিষয়টা দেখছি।
তারপর ছেলেরে দিকে তাকিয়ে বলল,
– তুমি বিয়ের ব্যাপারে প্যারা খেও না।বয়স হয়েছে, বিয়ে দিচ্ছি। তাছাড়া তোমার যেহেতু কোনো পছন্দ নেই, সেখানে না করার কোনো মানে দেখছি না।আর রইলো মেয়ের কথা?আশা করি তুমি তোমার পরিবারের উপর ভরসা করো।তার কখনো তোমার খারাপ চাবে না।
সায়ন ভদ্র ছেলের মতো মাথা নেড়ে সবটা মেনে নিলো।খাওয়া শেষে চা খাওয়ার সময় সে বোনকে জিজ্ঞেস করলো,
– তোমার কাছে আরাদ্ধার ফোন নাম্বার আছে?যাই ওর সাথে একটু দেখা করে আসি। চাচ্চু মারা যাওয়ার পর কল দিবো, কল দিবো, আর দেওয়াই হলো না।
সীমন্তী ভেংচি কেটে বলল,
– হ্যা, দুনিয়ার যত ব্যাস্ততা সব তোর। বাকিরা তো বসে বসে ঘাস কাঁটে।
সায়ন ওর কথায় পাত্তা দিলো না।বরং আরো তাড়া দিয়ে বলল,
– থাকলে দে না।ও কি চট্টগ্রামে নাকি ঢাকায়?
– ঢাকায়।হাজবেন্ডের সাথে থাকে।
– ওহ!দে তো নাম্বারটা।একটু দেখা করে আসি।
– হোয়াটসঅ্যাপ এ দিচ্ছি।

তারিফ সাহেব টেবিল থেকে উঠতে উঠতে স্ত্রীর উদ্দ্যেশে বললেন,
– আমার আজ একটু মিনিস্ট্রিতে যাওয়া লাগবে।তুমি একটু অফিসে গিয়ে আজকের মিটিংটা করো।অথবা সীমন্তী,তুই যা।
– বাবা,আমার একটা প্রোডাক্ট লঞ্চ হবে শীঘ্রই।তাই অফিসে যাওয়া লাগবে।
জয়া টেবিল গোছাতে গোছাতে বললেন,
– আচ্ছা সমস্যা নেই।আমি হাতের কাজগুলো শেষ করে যাচ্ছি।
– মিটিং বারোটায়।সময়মতো যেও।
– হুম।
তারিফ সাহবে উপরে রেডি হতে চলে গেলেন।রায়ানও সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেলো।সীমন্তীও রেডি হতএ চলে গেলো।সায়ন চেয়ার বসেই ফোন টিপতে লাগলো।আপাতত তার কোনো কাজ নেই।
.
রূপন্তীর রাজশাহী পৌঁছে মাদারের বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল ৯টা বেজে গেলো।মাদার অসুস্থ,ঘুমের ঔষধ খায়।ফজরের নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়েছে বিধায় তখনো উঠে নি।ঘরে ভদ্রমহিলার সেভেনে পড়ুয়া নাতনি ছিলো।সেই রূপন্তী কে দরজা খুলে দিলো।রূপন্তীর জানা আছে কাগজ পত্র কোথায় থাকে। তাই সে আর দেরি করলো না। কাগজ বের করে নিয়ে বের হয়ে গেলো আবারও।
রেজিস্ট্রির কাজ শেষ করতে করতে আড়াইটা বেজে গেলো।সে এখন এতিমখানায় যাবে। ১৫টা বছর কাটিয়েছে সেখানে,একটু স্মৃতিচারণ করবে আরকি!

এতিমখানায় অনেক্ষন ছিলো সে।বাচ্চাদের সাথে গল্প করতে করতেই সময় পেরিয়ে গেলো।এর মধ্যে রিমি নামের একটা মেয়ের সাথে খুব ভালোমতো ভাব হয়ে গেলো।
সন্ধ্যা ৬টা বাজে। তার ঢাকার ফ্লাইট সাড়ে নয়টায়।বাচ্চাদের জন্য কিছু টাকা বর্তমান মাদারের হাতে দিয়ে সে বেরিয়ে আসলো।পিছুপিছু রিমিও আসলো।এগিয়ে অটো ডাকবে তার আগেই পেছন থেকে রিমি ডেকে উঠলো,
– আপু?!
রূপন্তী পিছে ফিরে রিমিকে দেখে এক গাল হাসলো।রিমির দিকে একটু এগিয়ে বলল,
– বলো আপু?!
রিমি একটু আমতা আমতা করে বলে উঠলো,
– আসলে আর চার মাস পর এখান থেকে বের হয়ে যেতে হবে।কারণ আমার আঠারো বছর হয়ে যাবে।পড়াশোনা তো করি নাই।ম্যামের ও এজন্য আর কোনো দায়িত্ব নেই আমার প্রতি। এই শহরে কোথায় থাকবো আপু?আপনি আমাকে আপনার কাছে নিয়ে যাবেন?একটা গার্মেন্টস এ কোনো রকম কাজ করতে পারলেই হবে।একটু দেখবেন আপু?
রূপন্তী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো,
– এখন মনে হচ্ছে পড়াশোনার মূল্য কতটুকু?
রিমি কিছু না বলে মাথাটা নিচু করে নিলো।
রূপন্তী কিছু একটা ভাবলো।তারপর রিমির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলো,
– আমার নিজেরই সেটেল হতে একটু সময় লাগবে।তবে ইনশাল্লাহ তিন মাসের মধ্যে তোমাকে নিয়ে আসবো।এইচএসসি দিয়েছো না?
-হুম।জিপিএ ৩.৭০ পেয়ছিলাম।
– আচ্ছা!ন্যাশনাল এ ভর্তি করিয়ে দিবো।পারলে আমার সাথে রাখবো না হয় একটা ছাত্রী হোস্টেলে উঠিয়ে দিবো।পার্ট টাইম একটা জব করবে।চিন্তা করো না।আর আমি মাদারের কাছে ফোন দিয়ে খবর নিবো নে।
রিমি খুশি হয়ে গেলো।মিষ্টি হেসে রূপন্তীকে জড়িয়ে ধরলো।রূপন্তীও মেয়টাকে ধরে আদর করে ফেরত পাঠিয়ে দিলো।মেয়েটা গেটে ঢুকে যাওয়ার পরপরই সে একটা অটো ঠিক করে উঠে পড়লো।
এখন গন্তব্য মিসেস রহমানের বাড়ি। তিনিই এতিম খানার মালিক।মিস্টার তারেক রহমানের বউ,মায়া রহমান।সে ক্লাস টেনে থাকতেই মিস্টার রহমান মারা যান।বড় ব্যাবসা থাকায় আর্থিকভাবে কোনো সমস্যা হয়নি।তবে মিসেস রহমানের একলা ব্যাবসা,এতিমখানা,সব দেখতে হতো।
তবে উনার নামডাক হয় রূপন্তীর জন্য। এজন্যই রূপন্তী আজ এত দূর আসতে পেরেছে। মহিলার তাছাড়া রূপন্তীর প্রতি অত একটা টান নেই।
এইচএসসি তে বোর্ডে ফার্স্ট হওয়ার দরুন চারপাশে হুলুস্থুল পড়ে যায়।অনাথাশ্রম থেকে পড়াশোনা করে একটা মেয়ে ফার্স্ট হয়েছে! ক্রেডিট সম্পূর্ণটা হয় মায়া রহমানের।পেপারে তাকে নিয়ে নিউজও ছাপা হয়।ব্যাবসার কারনে আগে থেকেই নাম ডাক ছিলো।এত নাম কামানোর পর মহিলা চাইলেও রূপন্তীর দায়িত্ব ফেলে দিতে পারেন নি।
চায়নার এক মেডিকেলে সে স্কলারশিপ পেলেও সেখানে যাওয়া, থাকার ভরণপোষণ প্রথম এক বছর মায়া রহমান ই দিতো।পরবর্তীতে পার্ট টাইম চাকরি পেয়ে যাওয়াতে রূপন্তী আর টাকা নেয় নি।চায়নায় পড়াশোনা শেষ করা শুরু করা থেকে চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়া যাওয়া পর্যন্ত রূপন্তীকে নিয়ে নিউজ করা হতো।আর সাথে মায়া রহমানের ড্রাম ভরা প্রশংসা।
তবে রূপন্তী আসলেই তার কাছে কৃতজ্ঞ।মহিলা তাকে বিদেশ না পাঠালে সে যেতেও পারতো না।
মায়া রহমানের বাড়িটা বেশ আভিজাত্যপূর্ণ।কলিং বেল বাজতেই একটা উনিশ-বিশ বছরের মেয়ে এসে দরজা খুললো।পিছন পিছন মাদারও আসলো।রূপন্তী মাদারকে দেখে বেশ অবাক হলো।মেয়েটাকে পাশ কাটিয়ে মাদারের দিকে আগাতেই সে অভিমানী কণ্ঠে বলে উঠলো,
– একদম ধরবি না আমাকে।আমার সাথে না দেখা করে চলে গিয়েছিলি।
রূপন্তী পাত্তা দিলো না।গিয়ে জড়িয়ে ধরলো আসমা বানুকে। আহ্লাদী কণ্ঠে বলে উঠলো,
– তুমি ঘুমোচ্ছিলে নানুমনি। তোমার নাতনি বলল শরীর খারাপ। সেজন্য আর ডাকি নি। ভাবলাম ঢাকায় সব ঠিক করে তোমার কাছে এসে দুইদিন থেকে যাবো।তা তুমি এখানে কি করছো?
আসমা বানু আস্তে করে বললেন,
– ম্যাডাম ডেকেছে।বলল তুই নাকি আসবি। তোকে নিয়েই জরুরী কথা আছে।
রূপন্তী চিন্তায় মগ্ন হলো।তাকে দিয়ে আবার কি করবে?!তার প্রতি উনার দায়িত্ব তো সে কবেই শেষ।
ভাবনার মাঝেই গম্ভীর নারী কণ্ঠ কানে বারি খেলো,
– কেমন আছো রাহদিয়া?!
রূপন্তী সামনে তাকিয়ে মায়া বেগমকে দেখতে পেলো।সালাম দিয়ে উত্তর দিলো।মায়া তাকে বসতে বলল।কিছুক্ষন এই সেই কথা বলে আসল প্রসঙ্গে চলে গেলেন মায়া রহমান।গলা ঝেড়ে রূপন্তীকে জিজ্ঞেস করলেন,
– তোমার কোনো পছন্দ আছে রাহদিয়া?মানে কোনো ছেলেকে পছন্দ করো?
রূপন্তী অবাক সুরে বলল,
– না ম্যাম।কেনো?!
মায়া নড়েচড়ে বসলেন।অতঃপর বলা শুরু করলেন,
– তোমার জন্য তো কম কিছু করলাম না।আজ এত দূর এসেছো,এর পিছে আমার অবদানও অনেক।অবশ্য তুমি ব্রিলিয়ান্ট বলেই এত দূর আসতে পেরেছো।তবুও খুব কম বাচ্চা বাবা মাহীন এত সাপোর্ট পায়।তাই আমি তোমার প্রতি আমার শেষ দায়িত্বটা পালন করতে চাচ্ছি।তোমার জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে।ছেলে ডাক্তার।ছেলের বাবা এমপি।সাভারে থাকে।ছেলের মা তোমাকে আরও আগে থেকে চিনে।কিভাবে চিনে আমি জানি না।মহিলা আমার কাছে বেশ নম্রভাবে তোমার হাত চেয়েছে।আমি মানা করতে পারিনি।তাছাড়া এত ভালো সম্বন্ধ!বিয়ের ডেট ও ফিক্স হয়ে গিয়েছে।আজ শনিবার তো, আগামী শুক্রবার বিয়ে। খুবই ঘরোয়াভাবে হবে।এখানেই হবে।আশা করি সব দিকে দিয়ে বিবেচনা করবে।আমি কিন্তু কথা দিয়ে ফেলেছি।

সব শুনে রূপন্তীর একটা কথাই মনে হলো,এতিম হওয়া কি অভিশাপ?!এই যে তার মতামত না নিয়েই বিয়ে ঠিক করে ফেললো,তার বাবা মা থাকলে কি এটা হতো?!সে যথেষ্ট প্রতিবাদী,নিজের অধিকার আদায় করতে জানে।কিন্তু কোনো কারণে সে মায়া রহমানকে কিছু বলতে পারলো না।হয়তো মহিলার প্রতি সে কৃতজ্ঞ বলে!সে খালি একটা কথাই উচ্চারণ করলো,
– আমার সমস্যা নেই ম্যাম।আপনি যা ভালো মনে করেন।
মায়া বেগম স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ওকে নাস্তা খেতে বলে চলেন।
৮টার সময় সে বাড়ি থেকে বের হলো।পিছুপিছু আসমাও আসলেন।রূপন্তীকে জড়িয়ে ধরলেন।রূপন্তী আসমাকে ধরে কেঁদে দিলো।ক্রন্দনরত কণ্ঠে বলে উঠলো,
– আব্বু- মা আমার সাথে কেন এমন করলো?কেন আমাকে জীবনযুদ্ধে একা করে দিয়ে চলে গেলো?!
আসমা মেয়েটাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে শান্ত করলেন।পরিশেষে আলতো গলায় বলে উঠলেন,
– দেখো নানুমনি।জীবনযুদ্ধে তুমি একা একা কত দূর পর্যন্ত এসেছো!এবার পাশে একজন থাকলে তো সমস্যা নেই।আর কত একা থাকবে?
তারপর মেয়েটার কপালে আদর দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলবে,
– দেখবে, পাশের মানুষটা তোমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসবে।পাগলের মতো ভালোবাসবে। নিজের অস্তিত্ব বলতে তোমাকেই বুঝবে।সর্বোচ্চটা দিয়ে আগলে রাখবে তোমাকে।
#চলবে।