এক‌দিন বিকা‌লে সকাল হ‌য়ে‌ছি‌লো পর্ব-০২

0
641

#এক‌দিন_বিকা‌লে_সকাল_হ‌য়ে‌ছি‌লো
‌লেখাঃ শার‌মিন আক্তার সাথী
পর্বঃ ০২

শশী রেনুর ঘ‌রে প্র‌বেশ ক‌রে, রেনুর দি‌কে তা‌কি‌য়ে কিছুক্ষণ কিংকর্তব্য‌বিমূঢ় হ‌য়ে দাঁ‌ড়ি‌য়ে রইল। রেশ‌মের ম‌তো মোলা‌য়েম দেখ‌তে মে‌য়েটা। সৌন্দর্য্য যেন সারা শরীর বে‌য়ে উঁপ‌চে পড়‌ছে, ঠিক চাঁ‌দের ম‌তো স্নিগ্ধ মে‌য়েটা। শশীর অনেকটা ঘো‌রের ম‌তো লেগে গে‌ল। ম‌নে ম‌নে ভাবল,
‘এত সুন্দর মে‌য়েটা কী ক‌রে বা‌জে কথা বলব! ঘো‌রের মা‌ঝেই শশী রেনুর মু‌খোমুখি দাঁ‌ড়ি‌য়ে বলল, বাহ্ কী সুন্দর তু‌মি! প‌রোক্ষ‌ণেই নি‌জের ক‌ঠিন রূপ ধারণ ক‌রে বলল, এই সৌন্দর্য্য দি‌য়েই তো আমার ভাইটা‌কে বস ক‌রে‌ছ তু‌মি। নয়তো যে ভাই আমার বাবা মা‌য়ের কথা ছাড়া উঠ বস করত না, সে সবার বিপ‌ক্ষে গি‌য়ে তোমা‌কে বি‌য়ে ক‌রে কীভা‌বে? এখন বুঝ‌তে পার‌ছি। রূ‌পের জা‌লে ফেঁ‌সে‌ছে আমার ভাইটা। তোমার একবারও লজ্জা করল না, বিধবা হ‌য়ে অ‌বিবা‌হিত একটা ছে‌লে‌কে বি‌য়ে কর‌তে? অবশ্য শিক্ষাটা তো প‌রিবার থে‌কে আসে। তোমার প‌রিবার বোধহয় সে শিক্ষা দেয়‌নি। তাদের বি‌বে‌কেও বাঁধল না তোমার ম‌তো অল‌ক্ষি মে‌য়েকে আমার ভাই‌য়ের গলায় ঝোলা‌তে।’

‌রেনু কিছু সময় শশীর দি‌কে তাকি‌য়ে রইল। তারপর নিচু গলায় বলল,
‘‌শো‌নো শশী আজ তে‌া‌মা‌কে আ‌মি কিছুই বলব না, শুধু শুনব। এখন তো আমি নতুন বউ, তাই কিছু বলাটা বেমানান লা‌গে। আগে নতুন বউ‌য়ের তকমাটা শরীর থে‌কে যাক তারপর তোমার সব কথাটার জবাব হিসাব ক‌রে দিব। তাছাড়া গুরুজনেরা একটা কথা ব‌লেন স‌য়ে থাক‌লে আল্লাহ ব‌সে দেখান। আমি ব‌সে দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।’
শশী বিস্ফ‌রিত চো‌খে রেনুর দি‌কে তা‌কি‌য়ে রইল। শশী ভাব‌তেও পা‌রে‌নি, রেনু প্রথম দিনই শশী‌কে এমন জব্দ ক‌রে কথা বল‌বে। রেনু‌কে প্রথমবার দেখ‌লে ম‌নে হ‌বে, মো‌মের পুতুল একটা। একটু আঁচেই গ‌লে যা‌বে। কিন্তু শশী জানে না রেনু আঘাত পে‌তে পে‌তে পাথ‌রের পাহা‌রের ন্যায় শক্ত আর অটল হ‌য়ে গে‌ছে। ওকে ভে‌ঙে গু‌ড়ি‌য়ে দেওয়া সহজ কাজ নয়। শশী আরও কিছু বলার আগেই ‌শিহাব শশীর হাত টে‌নে বাই‌রে নি‌য়ে গি‌য়ে বলল,
‘‌শশী তো‌কে অসম্ভব ভা‌লোবা‌সি ব‌লে তো‌কে কিছু বল‌ছি না, তার মা‌নে এই নয় যে, তুই রেনু‌কে যা নয় তাই বল‌বি। তো‌কে স্নেহ ক‌রি ভা‌লোবা‌সি তার মা‌নে এই যে রেনু‌কে ভা‌লোবা‌সি না। তো‌কে যেমন সব বিষ‌য়ে আজ পর্যন্ত সা‌পোর্ট ক‌রে আস‌ছি রেনু‌কেও তেমন সা‌পে‌ার্ট করব। বেটার হয় তুই রেনু‌কে ভা‌বি ব‌লে মে‌নে নি‌য়ে ননদ ভা‌বির একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরী কর।’
শশী ‌বেশ রাগ ক‌রেই বলল,
‘ওমন স্বামী‌খে‌কো মে‌য়ের সা‌থে আমার সুন্দর সম্পর্ক তৈরী কর‌তে ব‌য়েই গে‌ছে। অলক্ষী একটা!’
‌শিহাব ‌বেশ শান্ত গলায়ই বলল,
‘তোর চিন্তাধারা সুন্দর ব‌লেই আমি জানতাম। কিন্তু আজ তোর কথা শু‌নে ম‌নে হ‌চ্ছে তুই চরম মাত্রায় অশি‌ক্ষিত মূর্খ। কো‌নো শি‌ক্ষিত, জ্ঞানী মানুষ এমন নীচু কথা বার্তা ব‌লে না। ও কি ওর পূ‌র্বের স্বামী‌কে নি‌জে খুন ক‌রে‌ছি‌লো? না‌কি রাক্ষসের ম‌তো চি‌বি‌য়ে চি‌বি‌য়ে খে‌য়ে‌ছে যে স্বামীখে‌কো বল‌ছিস? শোন কার কখন মৃত্যু হ‌বে তা কেবল সৃ‌ষ্টিকর্তাই জা‌নেন। সেটায় কো‌নো মানু‌ষের হাত থা‌কে না। তোর ম‌তো শি‌ক্ষিত মে‌য়ের মুখে এমন মূ‌র্খের ম‌তো কথা শু‌নে আমি স‌ত্যি হতবাক। যা হোক অনেকটা পথ জা‌র্নি ক‌রে এসে‌ছিস এখন বিশ্রাম নে, কিছু খা তারপর কথা হ‌বে।’
‌শিহাব শশীর কথার অপেক্ষা না ক‌রে চ‌লে গে‌ল।

রেনু ব‌সে ব‌সে ভাব‌ছে,
‘এমন মন্ত‌ব্যের সম্মুখীন হ‌তে হ‌বে তা আমি আগে থে‌কেই জানতাম। কিন্তু সেটা যে আজ ফজ‌রের নামা‌জের প‌র থে‌কেই হ‌তে হ‌বে সেটা একদম-ই ভা‌বি‌নি।’
ফজ‌রের নামা‌জের পর একটু ঘু‌মি‌য়ে‌ছিল শিহাব-রেনু। দরজায় কা‌রো টোকার শ‌ব্দে ঘুম ভাঙল। রেনু ঘড়ির দি‌কে তা‌কি‌য়ে দেখল মাত্র সা‌ড়ে ছয়টা বা‌জে। শিহাব দরজা খুল‌তেই লি‌পি ভি‌তরে প্র‌বেশ করল। লি‌পি‌ ভিত‌রে ঢোকায় শিহাব রু‌মের বাই‌রে চরল গে‌লো। লিপি রেনুর কা‌ছে এসে বলল,
‘‌কেমন আছো রেনু?’
‘ভা‌লো আপ‌নি?’
‘‌ভা‌লো।’
‘এত সকা‌লে এলেন? জরু‌রি কিছু?’
‘জরু‌রি তো বটেই। দেখ‌তে এলাম তু‌মি গোসল সে‌রে তৈরি হ‌য়ে‌ছো কিনা? বি‌য়ে বা‌ড়ি ব‌লে কথা একটু পরই দেখ‌বে নতুন বউ দেখ‌তে দ‌লে দ‌লে ম‌হিলারা চ‌লে আস‌বে। তাই দেখ‌তে এলাম তু‌মি তৈরি কি না?’
‘‌জি আমি তৈরি।’
‘‌গোসল সারা হ‌য়ে‌ছে?’
‌রেনুর এমন কথার উত্তর দি‌তে অস্বস্তি লাগে তবুও লজ্জায় মাথা নিচু ক‌রে বলল,
‘‌জ্বি।’
লি‌পি রেনু‌র ‌দি‌কে তা‌কি‌য়ে ঠোঁটের কো‌নে দুষ্টু হা‌সি এঁকে বলল,
‘তা রাত কেমন কাটল। বর ঘুমা‌তে দি‌য়ে‌ছে সারা রাত?’
এ ধর‌নের সস্তা মজার কথায় ‌রেনু তেমন অভ্যস্ত নয়। ওর এসব কথা খুব বিরক্ত লা‌গে। কিন্তু লি‌পির কথায় শুধু লজ্জামাখা মৃদু হা‌সি হাসল‌। লি‌পি রেনুর চু‌লে হাত দি‌য়ে বলল,
‘ওমা চুল তো দেখি শুক‌নো। অবশ্য তোমার তো আর নতুন বি‌য়ে নয়, তু‌মি জা‌নো কখন কিভা‌বে সব সামলা‌তে হয়।’
‌রেনুর কথাটা একটু খারাপ লাগল। মৃদু হে‌সেই বলল,
‘ভা‌বি সবই যখন বো‌ঝেন তখন আর জি‌জ্ঞেস ক‌রে কেন নি‌জের রু‌চির প‌রিচয় দি‌চ্ছেন?’
‌রেনুর হুট ক‌রে এমন কথা বলায় লি‌পি কিছুটা দ‌মে গি‌য়ে ব‌লে‌ছি‌লো,
‘তু‌মি ব‌সো আমি নাস্তা নি‌য়ে আস‌ছি।’
এরপর কতক্ষণ যে‌তে না যে‌তেই শশীর এমন হাঙ্গামা। রেনুর ম‌াথাটা বড্ড ধ‌রে‌ছে। এত অপমান টেনশন আর নি‌তে পার‌ছে না ও। রেনু ম‌নে ম‌নে বলল,
‘‌হে আল্লাহ আর কত অপমান, তু‌মি আমার ললা‌টে লি‌খে রে‌খেছ? সুখ কি আস‌বে আমার জীব‌নে?’

শশী রা‌গে গজগজ কর‌তে কর‌তে ওর মা‌ হা‌সি বেগ‌মের কা‌ছে গি‌য়ে বলল,
‘মা দেখ‌লে, তোমার ছে‌লে আর ছে‌লের বউ আমা‌কে কেমন অপমান করল। বি‌য়ে হ‌তে না হ‌তেই তোমার ছে‌লে বউ‌য়ের কেনা গোলাম হ‌য়ে গে‌ছে। এখ‌নই বউ এর সু‌রে কথা বল‌ছে। এক‌দি‌নেই অপয়াটা ভাই‌কে আমা‌দের থে‌কে কেড়ে নি‌য়ে‌ছে।’
শশীর কথা শু‌নে এর বাবা নূর ইসলাম বল‌লেন,
‘শশী দোষটা তো তোরই। আস‌তে না আস‌তেই ঘরটা‌কে যুদ্ধ‌ক্ষেত্র বা‌নি‌য়ে ফেল‌লি। আগে কিছু‌দিন বউমা‌কে দেখ, তার সা‌থে মেলা‌মেশা কর, তারপর নাহয় তার বিরুদ্ধে মন্তব্য ক‌রিস।’
হা‌সি বেগম বেশ ভর‌কে গি‌য়ে নূর ইসলা‌মের দি‌কে তা‌কিয়ে বললেন,
‘‌তু‌মিও ঐ অপয়াটার পক্ষ হ‌য়ে কথা বল‌ছো? যে আস‌তে না আস‌তেই আমার সংসা‌রে এত অশা‌ন্তি লে‌গে গেল, ক‌দিন গে‌লে তো এ আমার সংসারটা ছাড়খার ক‌রে দি‌বে।’
‘আ‌মি কা‌রো পক্ষ নি‌চ্ছি না হা‌সি। যেটা আমার কা‌ছে স‌ঠিক ম‌নে হ‌য়ে‌ছে সেটা বললাম শুধু। যা হোক আমার বলার কাজ আমি ব‌লে‌ছি বা‌কিটা তোমা‌দের বি‌বেক বি‌বেচনা। আমি সবসময় তোমাদের কাছ থে‌কে ভা‌লো কিছু আশা ক‌রি। বি‌শেষ করে শশীর কাছ থে‌কে! শশী আমার একমাত্র মে‌য়ে। হা‌সি তোমার ম‌নে আছে, শিহাব হওয়ার প্রায় তে‌রো বছর পর তু‌মি আমার কন‌সিভ ক‌রে‌ছি‌লে। তখন আমরা দুজনই ম‌নে প্রা‌ণে একটা মে‌য়ে চাইতাম। আল্লাহ আমা‌দের কথা শুন‌লেন, ফুটফু‌টে একটা পরী পাঠা‌লেন আমা‌দের ঘ‌রে। আজ সে মে‌য়েটা ক‌দিন পর গ্রাজু‌য়েশন শেষ কর‌বে। এত‌দিন তার উত্তম কা‌জের কার‌ণে আমি তা‌কে পরীমা ব‌লে ডাকতাম। আজ আমি আমার পরী মা‌য়ের কথা শু‌নে বাকরুদ্ধ। আমি যে‌নো নতুন এক অহংকা‌রী মুর্খ শশী‌কে দেখ‌ছি। যে শশী‌কে চিনতাম তার কথার ধা‌চে আমার তা‌কে বড্ড অচেনা লাগ‌ছে। শশী তু‌মি পথ‌শিশু‌দের নি‌য়ে, ব‌ঞ্চিত মে‌য়েদের অধিকার নি‌য়ে কাজ ক‌রো। যেটা তু‌মি অন্য প‌রিবারের জন্য ক‌রো, সেটা নি‌জের প‌রিবা‌রে হ‌লে সমস্যা কোথায়? তোমার তো বরং নি‌জের ভাই‌য়ের জন্য গর্ব করা উচিত। তাছাড়া একজন মে‌য়ে কেবল বিধবা ব‌লে বা তার একটা বি‌য়ে ভে‌ঙে গে‌ছি‌লো ব‌লেই যে সে খারাপ তা কিন্তু নয়। তাতে তার চ‌রিত্র র্নিধারণ হয় না। মানু‌ষের চ‌রিত্র তার চা‌রি‌ত্রিক গু‌ণে নির্ধা‌রিত হয়। আর রূপ আর গু‌ণের দিক দি‌য়ে রেনু অসাধারণ। ওর প্রথম স্বামীর মৃত্যুটা একটা দূর্ঘটনা ছি‌লো তা‌তে ওর কো‌নো হাত নেই। আর ওর প্রথম বি‌য়ে কেন ভে‌ঙে‌ছি‌লো সে প্রশ্ন তু‌মি তোমার ভাই শিহাব‌কে ক‌রো? আশা ক‌রি উত্তর পে‌য়ে যা‌বে। নূর ইসলাম বসা থে‌কে উঠে শশীর মাথায় হাত বু‌লি‌য়ে বল‌লেন, তোমার কাছ থে‌কে আমি ভা‌লো কিছু আশা ক‌রি‌।’

নূর ইসলা‌মের কথার বিপরী‌তে শশী কী বল‌বে ভে‌বে পে‌লো না। চুপচাপ নি‌জের রু‌মে গি‌য়ে ব‌সে রইল। আর ম‌নে ম‌নে বলল,
‘ব‌াবা যা ব‌লে‌ছেন তা স‌ত্যিও, তবুও আমি কেন জা‌নি শিহাব ভাইর জন্য রেনু‌কে মান‌তে পার‌ছি না। মন থে‌কে মে‌য়েটা‌কে মানার ম‌তো কো‌নো প‌জে‌টিভ সিগনাল আস‌ছে না।’

৩!!
‌দেখ‌তে দেখ‌তে শিহাব রেনুর বি‌য়ের বয়স দুই মাস হ‌য়ে যায়। রেনু শিহাব একে অপ‌রের ভালোবাসায় বুদ হ‌য়ে আছে। ত‌বে সমস্যা কর‌ছে শশী আর হা‌সি বেগম। শশী কথায় কথায় রেনু‌কে সবসময় কটাক্ষ ক‌রে। রেনুর সব কা‌জে খুত বের ক‌রাই যে‌নো শশীর প্রধান কাজ। আর হা‌সি বেগম! তি‌নি তো রেনুর সা‌থে কো‌নো কথাই ব‌লেন না। গত দুই মা‌সে রেনু হাজারবার তার সাথে হাজার ভা‌বে কথা বলার চেষ্টা ক‌রে‌ছে কিন্তু হা‌সি বেগ‌মের মুখ থে‌কে ওর জন্য একটা কথাও বের কর‌তে পা‌রে‌নি। তি‌নি যে‌নো রেনুর সা‌থে কথা না বলার আমরন পণ ক‌রে‌ছেন। লি‌পি এই সু‌যোগটা লু‌ফে নি‌য়ে‌ছে। সকাল বিকাল রেনুর বিরু‌দ্ধে হা‌সি বেগ‌মের কান ভরা যে‌নো লি‌পির প্রধান কাজ হ‌য়ে গে‌ছে। রেনু সব বু‌ঝেও শাশু‌ড়ির জন্য চুপ থা‌কে। আগে শাশু‌ড়ির সা‌থে সম্পর্কটা ঠিক হোক তারপর নাহয় লি‌পির মুখ বন্ধ কর‌বে।

এম‌নি‌তে লি‌পি রেনুর সা‌থে তেমন পে‌রে ওঠে না। লি‌পি যতবারই রেনু‌কে অপমান কর‌তে গে‌ছে, ততবারই কো‌নো না কোনোভা‌বে নি‌জে অপমা‌নিত হ‌য়ে‌ছে। রেনুর সা‌থে কথার মারপ্যা‌চে না পে‌রে শে‌ষে শাশুড়ির কান ভ‌রে রেনু‌কে সর্বদা ছোট কর‌তে ব্যস্ত থা‌কে। ‌রেনুর সাথে ঘ‌রে সারা‌দিন যাই হোক না কেন, ও পার‌তে সা‌ধ্যে তা শিহাব‌কে ব‌লে না। যত মন খারাপই হোক শিহা‌বের অসীম ভা‌লোবাসার কথা ভে‌বে সব ভু‌লে যায়। বর্তমা‌নে ওর শা‌ন্তির জায়গা বল‌তে কেবল শিহাব। রেনু স্ব‌প্নেও ভা‌বে‌নি কেউ ওকে এতটা ভা‌লোবাস‌তে পা‌রে। দুই মাস পূ‌র্বেও স্বামীর ভা‌লোবাসা, আদর তো ওর কা‌ছে অপূর্ণ স্বপ্ন ম‌নে হ‌তো। আর আজ ওর জীব‌নে, সে স্বপ্ন স‌ত্যি, প‌রিপূর্ণ স‌ত্যি।

আজ সকাল থে‌কেই রেনুর শরীরটা খুব খারাপ লাগ‌ছে। মাথা যন্ত্রনায় বিছানায় শু‌য়ে কাতরা‌চ্ছে। শিহাব ঘ‌রে নেই। লি‌পি ক‌দিন আগে ওর বা‌পের বা‌ড়ি বেড়া‌তে গে‌ছে। শশী ভা‌র্সি‌টিতে। রেনু কষ্ট ক‌রে কোনোম‌তে হা‌সির কা‌ছে এসে বলল,
‘মা আমার শরীরটা প্রচন্ড খারাপ লাগ‌ছে। তারপর আর রেনুর কিছু ম‌নে নেই। মাথা ঘু‌রে প‌ড়ে যায় রেনু‌।’

৪!!

শশী ভা‌র্সি‌টির ক্যাম্প‌াসে দাঁ‌ড়ি‌য়ে সজ‌লের জন্য অপেক্ষা কর‌ছে। বহু বছ‌রের সম্পর্ক ওদের। আজ সজল‌কে বল‌বে বাসায় ওর বি‌য়ের কথা চল‌ছে। সজল যে‌নো শীঘ্রই ওর বাসায় বি‌য়ের প্রস্তাব পাঠায়।

চল‌বে___