এক কাপ ঠান্ডা কফি পর্ব-০৬

0
178

#এক_কাপ_ঠান্ডা_কফি [পর্ব:-০৬ ]

– দারোগা বললো, আপনি কি ঢাকায় যাবেন?

– আম এক বন্ধু বলেছিল উত্তর বাড্ডায় একটা বাড়িতে একটা মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে সেখানে আমার এক কপি ছবি পাওয়া গেছে।

– মাই গড, তারপর?

– আমি ভুলেও কল্পনা করিনি ওটা এই বিয়ের পাত্রী হতে পারে। কারণ মংলা থেকে মেয়েটাকে ঢাকা নিয়ে খুন করার কারণ কি হতে পারে?

– আপনি তো গোয়েন্দা সাজু ভাই, আপনি এখন চাইলেই সকালে উঠে ঢাকা চলে যাবেন। কিন্তু আমার তো এই থানাতেই ডিউটি করতে হবে সাজু ভাই।

– আমি ঢাকা গেলেও আপনার কাছ থেকে প্রচুর সাহায্যের দরকার হবে। তবে ঢাকা যাবার আগে কাল সকালে কাজি সাহেবের বাসায় যাবো। আজ রাতেই আমি ওই বাগানবাড়িতে গ্রেফতার হওয়া লোকটাকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করতে চাই।

– ঠিক আছে করবেন কারণ সকালে উঠেই তো তাকে আমাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হবে। আপনি চাইলে আজকে রাতের মধ্যে তার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।

– বুঝতে পেরেছি।

– সাজু সাহেব, আপনাকে কিন্তু অনেক সাবধানে থাকতে হবে। কারণ খুনি যদি সত্যি সত্যি এবার আপনাকে হত্যা করতে চায় তাহলে কিন্তু বিপদের গন্ধ আছে।

– এমনিতেই আমাদের কার কখন মৃত্যু হবে কেউ জানি না দারোগা সাহেব। আর এমনও হতে পারে যে আমাকে ভয় দেখানো হচ্ছে যাতে আমি এই মামলা থেকে পিছিয়ে যাই।

– কিন্তু ওই হামলা করতে চাওয়া?

– ভয় দেখানোর নিদর্শন।

– তবুও সাবধানে থাকবেন সবসময়। আপনি খুব বিচিত্র একটা মানুষ সাজু সাহেব, আপনাকে বেশ ভালো লেগেছে আমার।

– ঠিক আছে চলুন তাহলে।

মাহিশার বাড়িতে এখন নতুন করে কান্নার একটা আর্তনাদ শুরু হয়েছে। সবার মতো হয়তো তাদের মনেও ধারণা ছিল মাহিশা তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। কিন্তু একটু আগে খুনি ফোন করে সাজু ভাইয়ের সঙ্গে বলা কথা শুনে তারা নিশ্চিত হয়ে গেল মাহিশা বেঁচে নেই।

সাজু বললো,
– আঙ্কেল নিজেকে শক্ত করুন এছাড়া আপনাকে বলার মতো কোনো কথা নেই। আপনি মাহিশার কিছু ছবি নিয়ে ঢাকা উত্তর বাড্ডা গিয়ে স্থানীয় থানায় খবর নিবেন। আমি একটা লোকের নাম্বার দিয়ে দিচ্ছি তিনি আপনাকে সাহায্য করবে৷

– আমার মেয়েকে তারা কেন খুন করেছে?

– তা তো জানি না আঙ্কেল, তবে ওই লোকটার কথা যদি সত্যি হয় তাহলে তো তাকে দিয়ে কেউ আপনার মেয়েকে খুন করিয়াছে। এখন আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কয়েকটা বিষয়। প্রথমত, আপনার মেয়েকে খুন করে কার কি লাভ? দ্বিতীয়ত, ভাড়াটে খুনি দিয়ে কাজটা করানো হয়েছে তারমানে বেশ কিছু টাকা খরচ করেছে।

★★★

গ্রেফতার হওয়া লোকটার দিকে তাকিয়ে আছে সাজু ভাই, সকাল থেকে এই লোকটা তার দিকে ফলো করছে। এখানে আসার পরেও সে লোকটা দেখতে পেয়েছিল কিন্তু ধারণা ছিল না এটার সঙ্গে মাহিশার হত্যা জড়িত।
দারোগা সাহেব ও সাজু ভাই বসে আছে পাশাপাশি আর লোকটা তাদের বিপরীতে। সাজু ভাই প্রথমে আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,

– ভালো আছেন আপনি?

অবাক হয়ে গেল লোকটা, সাজু ভাই মানুষটার সম্পর্কে সে যতটুকু জানে তাতে করে সাজু হচ্ছে একজন গোয়েন্দা। কিন্তু গোয়েন্দারা কীভাবে প্রশ্ন করে সেটা তার জানা নেই, সাজুর এই কেমন আছেন শুনে তাকিয়ে রইল সে।

– আপনার নামটা জানতে পারি?

– আব্দুল কাদের।

– বাসা কোথায়?

– পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা।

– সত্যি বলছেন নাকি মনগড়া?

– আপনি এসব জিজ্ঞেস করছেন কেন?

– একটা মানুষের সঙ্গে কথা বলবো আর তার সম্পর্কে কিছু জানবো না বলেন?

– জ্বি আমার বাসা পাবনায়।

– স্ত্রী সন্তান সবাই কেমন আছে? তাদের সঙ্গে কি রেগুলার কথা হয়।

– চুপচাপ।

– আপনি এখন অপরাধ করে ধরা পড়েছেন, এই মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনি বের হতে পারবেন না। এতদিনে আপনার পরিবারের কেমন অবস্থা হতে পারে ধারণা আছে?

লোকটা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। বোঝা যাচ্ছে সে সাজুর ইমোশনাল কথার মধ্যে জড়িয়ে যাচ্ছে। সাজু চায় এভাবেই কিছু একটা যদি বের করা যায় ক্ষতি কি?

– পাবনা থেকে এখানে কবে এসেছেন?

– চুপচাপ।

– দারোগা বললো, মুখে তালা মেরে বসে রইলে হবে না হারাম…. যা জিজ্ঞেস করে জবাব দে। কার কথায় আক্রমণ করতে এসেছিস? কে তোকে এখানে পাঠিয়েছে?

– আমি তাকে চিনি না।

– সাজু ভাই বললেন, তাহলে তার সঙ্গে পরিচয়?

– বলা নিষেধ আছে?

– দারোগা বললো, আদালত থেকে রিমান্ড মঞ্জুর করে যখন ধোলাই দেওয়া হবে তখন তোর বাপের নিষেধ মনে থাকবে তো?

লোকটা শুধু তাকিয়ে রইল, সাজু ভাই আগের মতো স্বাভাবিক ভাবে বললো,

– আপনি যদি সবকিছু সহজেই স্বীকার করে এই মামলায় আমাদের সাহায্য করেন তাহলে আমরা আপনার শাস্তির বিষয় বিবেচনা করবো।

– চুপ।

– আপনার নাম্বারে শহর থেকে এক ব্যক্তি কল করেছিল, তিনিই মনে হয় আপনাদের দলের নেতা। তবে তিনিও যে ভাড়াটে লোক সেটা তার কথা শুনে আন্দাজ করতে পারছি।

– শুধু তাকিয়ে আছে সে।

– মাহিশাকে এখান থেকে তুলে নিয়ে গেছে কে?

– আমরা চারজন ছিলাম।

– বাগানবাড়িতে যার লাশ পাওয়া গেছে সেই লাশ কার ছিল? ছেলেটা কে?

– আমাদের মধ্যে একজন, ওর বাসা রংপুর।

– কেন খুন করা হয়েছে তাকে?

– রাব্বি ভাইয়ের সঙ্গে তর্ক হয়েছিল, চুক্তি ছিল মেয়েটাকে গ্রামের মধ্যে হত্যা করা হবে। কিন্তু ভাই যখন বললেন যে তাকে শহরে নিয়ে যেতে হবে তখন লোকটা বেশি টাকা দাবি করে।

– তাই তাকে খুন করা হয়েছে?

– হ্যাঁ, একটু বেয়াদবি করেছিল।

– রাব্বি কি আপনাদের সবার লিডার?

লোকটা চুপ করে রইলো, সে কথার মধ্যে খুনির নাম বলে ফেলেছে। মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে।

– আমার উপর নজর রাখছিলেন কতদিন ধরে?

– আটদিন ধরে আপনার পিছনে আমি।

সাজু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, আটদিন ধরে যদি থাকে তার মানে সে তখন তার গ্রামের বাড়িতে ছিল। এই লোকটা নিশ্চয়ই তার গ্রামের বাড়ি ও চেনে, আর সেটা মাহিশার বিয়ের ঘটনার আর চারদিন আগে থেকে।

– আমাকে খুন করার হুকুম ছিল নাকি শুধু নজর রাখা হয়েছে।

– নজর রাখার হুকুম ছিল। আমরা কখনো খুনের কারবার করি না, এগুলো রাব্বি ভাই করে।

– রাব্বিকে কোথায় পাওয়া যাবে?

– আমি জানি না।

– কেন বাচ্চাদের মতো কথা বলছেন? আমি খুব স্বাভাবিক কথা বলি তাই ফাজলামো করেন?

– আমি সত্যিই জানি না, যে মানুষ খুনাখুনি করে বেড়ায় সে কোনদিন নিজের ঠিকানা সবার কাছে বলে না। আর নিজের ঠিকানায় কোনদিন থাকে না।

– আপনারা কীভাবে দেখা করতেন?

– আমাদের দেখা হতো না, আমরা বেশিরভাগ সময় ফোনে কথা বলতাম। তবে রাব্বি ভাই এক সিম দিয়ে বারবার কল করে না।

– আপনার ছোট বাচ্চাটার জন্য মায়া লাগে না?

– চুপচাপ।

– নিষ্পাপ একটা বাচ্চা সে কি জানে তার বাবা এমন কাজ করে বেড়ায়?

– আপনি কীভাবে জানেন আমার ছোট বাচ্চা আছে?

– সেটা জেনে আপনার বিন্দু পরিমাণ লাভ হবে না আব্দুল কাদের সাহেব। আপনার নামটা কত সুন্দর একটা নাম, অথচ জীবনের সবগুলো কাজ করে যাচ্ছেন খারাপ।

– চুপচাপ।

– মাহিশাকে নিয়ে আপনি কি শহরে গিয়েছেন? নাকি আমার পিছনে আপনাকে রেখে তারা শহরে চলে গেছে।

– হুম।

– একটা কথা বলি আব্দুল কাদের সাহেব?

– বলেন।

– মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার শিক্ষা আমি পাইনি, কারো সঙ্গে কঠিন করে কথা বলার অভ্যাস ও কোনদিন হয়নি। আপনার সঙ্গে খুব স্বাভাবিক ভাবে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু আপনি বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাবে চুপচাপ ছিলেন। নিজের ভালো চাইলে আপনি সহজ করে উত্তর দিতে পারতেন কিন্তু যেহেতু সেই কাজটা করেননি। সেহেতু কালকে সকালে উঠে আপনাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে তারপর হয়তো স্বীকারোক্তির জন্য রিমান্ড। সেখানে পুলিশ কেমন ব্যবহার করবে নিশ্চয়ই জানেন। মামলার রহস্য আমি ইন শা আল্লাহ বের করতে পারবো, তবে মাঝখান থেকে আপনি শুধু শুধু কষ্ট পাবেন।

– আমি নিরুপায়।

– ভালো থাকবেন আব্দুল কাদের সাহেব, আমি আগামীকাল সকালে ঢাকায় যাচ্ছি। তবে আমার বিশ্বাস আপনি পুলিশের জিজ্ঞাসার জবাব ঠিক করে দিবেন। আপনার সঙ্গে আবারও দেখা হবে।

– আপনাকে একটা কথা বলি?

– জ্বি বলেন।

– নিজের জীবন বাঁচাতে চাইলে মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন। আপনার তো পরিবার আছে লন্ডনে, সেখানে চলে যান। পৃথিবীতে নিজের জীবনের চেয়ে প্রিয় কিছু নেই, রাব্বি ভাই আপনাকে বাঁচতে দেবে না। আপনাকে মারার চুক্তি যখন করেছে তখন সে আপনাকে যেভাবেই হোক মারবে। এতক্ষণ ধরে আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার জন্য এটা আমার পক্ষ থেকে ছোট্ট একটা পরামর্শ রইল।

সাজু ভাই বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে আস্তে আস্তে উঠে গেল। লকাব থেকে বেরিয়ে মোবাইল বের করে দেখে রাত বারোটা পেরিয়ে গেছে। রামিশার নাম্বার থেকে ছোট্ট একটা মেসেজ,

” সাজু ভাই, Miss You ”

★★★

পারাবত- ১০
[ ঢাকা বরিশাল ঢাকা ]

লঞ্চের ছাঁদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পরপর তিনটা সিগারেট ধরিয়াছে রাব্বি। মাথা ভর্তি প্রচুর চিন্তা ভর করছে এখন, সবকিছু নতুন করে একটু সাজিয়ে নিতে হবে। কাদের ধরা পড়েছে, তাকে নিয়ে যত ভয় ছিল রাব্বির আর সেই ভয়টা এখন সত্যি হলো।

লোকটা সামান্য ভিতু টাইপের তাই সেদিন মাহিশা কে নিয়ে আসার সময় তাকে আনা হয়নি। বরং সহজ একটা কাজ, সাজু ভাই নামের ওই অদ্ভুত লোকটার দিকে নজর রাখা। সাজু ভাইকে অদ্ভুত মনে করার একটা কারণ রয়েছে। রাব্বি নিজে সাজুর সঙ্গে দেখা করেছিল, প্রায় ঘন্টা খানিক তাদের মধ্যে কথোপকথন হয়েছে।

হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করার সময় সে সাজুর হাত ধরে অনুভব করেছিল লোকটার হাত বেশ গরম। ভেবেছিল জ্বরে আক্রান্ত, কিন্তু সাজু যখন বললো তার শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এমনই তখন বেশ অবাক হয়েছে রাব্বি। একটা মানুষের শরীর সবসময় ১০২°/১০৩° তাপমাত্রায় কীভাবে গরম থাকে।

সাজুর সঙ্গে কথা হবার পরে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল চুক্তি বাতিল করবে। এই সাজুকে খুন করার প্ল্যান সে বাদ দিতে চেয়েছিল কিন্তু তার সঙ্গে যার চুক্তি হয়েছে সে কথাটা শুনে একটু তিরস্কার করেছিল।
তাই রাগের বশেই রাব্বি কাজটা করতে চেয়েছে।

লঞ্চ নদীর বুক চিরে ছুটে চলছে, ছাদের প্রচুর বাতাসে বেশ উদাসীন মন। সিগারেটে দুটো টান দিতেই সেটা বাতাসের কারণে শেষ হয়ে যায়। কেবিনে গিয়ে বসে ইচ্ছে করছে না তার, যখনই নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তখনই সে চলে আসে লঞ্চে। সম্পুর্ণ একটা রাত ধরে সে ভাবতে থাকে তার নতুন পরিকল্পনা।

নিজের পারসোনাল নাম্বারে একটা মেসেজের শব্দ পেল রাব্বি। তার একান্ত পারসোনাল নাম্বার সবাই জানে না, খুব কম সংখ্যক মানুষের কাছে এই নাম্বার আছে। বাকি যতগুলো নাম্বার আছে সবগুলো ভিন্ন উপায়ে সংগ্রহ করে রাব্বি। তার কাছে অনেক গুলো বাটন মোবাইল আছে আর ঢাকা শহরে তার আয়ত্তে রয়েছে ৮ টা পকেটমার।

তারা সবসময় ঢাকা শহরে বিভিন্ন মানুষের পকেট থেকে মোবাইল চুরি করে। সেই সকল মোবাইলের সিম নিয়ে আসে রাব্বি, তারপর যখনই দরকার হয় তখন ব্যবহার করে। মাঝে মাঝে দেখা যায় সিম বন্ধ হয়ে গেছে, তারমানে মোবাইলের মালিক সিম তুলে নিয়েছে। রাব্বি তখন মনে মনে একটা গালি দেয়, ” শালা ফকিন্নির বাচ্চা “।

পারসোনাল নাম্বারের মেসেজটা তার কাছে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বুঝতে পারছে না। মেসেজ টা ছিল এরকম,

” রামিশা নামের মেয়েটা আগামীকাল সকালে বাগেরহাটে যাবে। তুমি চাইলে তাকে বন্দী করে সাজুকে নিজের কব্জায় নিতে পারবে। তারপর খুব সহজেই কাজটা করতে পারবে। ”

রাব্বি দ্রুত ছাদ থেকে নেমে গেল। তাকে এখনই ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিতে হবে কারণ সামনেই লঞ্চ চাঁদপুরে ভিরবে। আগামীকাল সকালের আগে তাকে পৌঁছাতে হবে চট্টগ্রামে। আর সেজন্য সে চাঁদপুরে নামলে তাঁর বেশ সুবিধা হবে।
মনে মনে হাসলো রাব্বি, মেয়েটাকে বন্দী করলে সাজুকে সত্যি বিপদে ফেলা যাবে। তাই যেভাবেই হোক সকালে মেয়েটার সঙ্গে একই বাসে উঠতে হবে।

চলবে….

লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম।