এমনটা কথা ছিলো না পর্ব-০৯

0
215

গল্প:- #এমনটা কথা ছিলো না পর্ব-০৯
লিখা:- AL Mohammad Sourav

আমার স্বামীর সাথে ঝগড়া লাগানোর জন্যই বড় ভাবি ইচ্ছে করে নয়নকে আমার সাথে এমনটা করতে বলেছে। বড় ভাবি আর শ্বাশুড়ি দুজনে বেশ খুশ মেজাজে আছে আমি খাবার টেবিলে বসে আছি তখনি বড় ভাবি বলে।
বড় ভাবি:- মা এএরপরেও যদি সৌরভ এই সুমির পক্ষে কথা বলে তাহলে বুঝে নিবেন সুমি সৌরভকে তাবিজ করেছে।
শ্বাশুড়ি:- তাবিজ করুক আর যা খুশি তা করুক। এই ঘটনার পরে আমার মনে হয়না সৌরভ আর সুমিকে রাখবে। আর যদি সৌরভ সুমিকে ওর জীবনে রাখতে চায় তাহলে আমাদের কিছুই বলার থাকবে না। তখনি বড় ভাবি আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে।
বড় ভাবি:- এই সুমি তুমি এখানে বসে নেকা কান্না না করে রুমে গিয়ে তোমার জিনিস পত্র গুচিয়ে নাও। এক নাগর থাকতে আরেক নাগর ধরার সময় এই নেকা কান্নার কথা মনে ছিলো না? তখনি আমি পচন্ড রেগে গিয়ে বলি।
সুমি:- একদম চুপ আমার চরিত্রে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আজে বাজে কথা বললে আমিও ছেড়ে কথা বলবো না। প্রয়োজনে জিব টেনে ছিড়ে ফেলবো বলে দিলাম।
বড় ভাবি:- মা দেখছেন ফকিন্নীর বাচ্চার সাহোস কত? আমাকে বলে জিব টেনে ছিড়ে ফেলবে।
শ্বাশুড়ি:- বড় বৌমা তুমি জানো না গরীবলোক তর্ক করে জয় হতে চায়। আর বড় লোকেরা বুদ্ধি করে জয় লাভ করে। তাই ছোট লোকদের সাথে তর্কে জড়াতে নেই। চলো আমরা রুমে যাই সৌরভ এসেই দেখবে ওকে বাড়ী থেকে বের করে দিবে।
সুমি:- মা আপনি এমন ভাবে বলতে পারলেন? আমি যদি আপনার আপন মেয়ে হতাম তাহলে কি আমার সাথে এমনটা করতে পারতেন?
শ্বাশুড়ি:- আমার মেয়েকে আমি আমার থেকে নিচু পরিবারে বিয়ে দিবো। তোমার বাবা মার মত বড়লোক ছেলে দেখে বিয়ে দিবো না। কারণ চুনোপুঁটি কখনো সাগরে বসবাস করে না। তাঁড়া সবসময় ছোট নদীতে থাকে।
সুমি:- ঠিক আছে আপনার কথা গুলি আমার মনে থাকবে। তবে আপনারা আমার সাথে যেই প্ল্যান করেছেন ইনশাআল্লাহ এতে আমার কোনো ক্ষতি হবে না। বরং আপনারা নিজেদেন ক্ষতি করছেন।
শ্বাশুড়ি:- আমি যা করি সবকিছু ভেবে চিন্তে করি। তোমাকে আমার কখনও পছন্দ হয়নি আর কোনো দিন হবে না। সৌরভকে আমি তোমার থেকে সুন্দরী আর বড় লোকের মেয়ের সাথে বিয়ে দিবো। ঠিক তখনি সৌরভ এসেছে চুল গুলা কেমন এ্যালোমেলো হয়ে আছে। মনে হয় কোনো নে*শা করে আসছে। আমি দৌড়ে কাছে গিয়ে সৌরভকে ধরেছি তখনি সৌরভ আমাকে ধরার জন্য বারণ করে দিছে।
সৌরভ:- আমাকে ধরার অধীকার তুমি হারিয়ে ফেলছো। আচ্ছা আমার অপরাধটা কি ছিলো? আমি তোমাকে কলেজে পড়তে দেওয়াটা আমার অপরাধ? নাকী তোমাকে প্রথম দেখাতে বিয়ে করে ফেলেছি তোমার সম্পর্কে কোনো রকম খোঁজখবর না নিয়ে সেইটা আমার অপরাধ?
সুমি:- আপনি রুমে চলেন আমি আপনাকে সব বলবো?
সৌরভ:- কি বলবে শুনি? তোমাকে বার বার বলেছি যা কিছু হবে সব আমাকে জানাতে! তুমি সত্যি করে বলবে আদো কি তুমি আমাকে স্বামী হিসাবে মেনে নিতে পারছো? আচ্ছা সত্যি কি তুমি আমার সাথে ছলনা করেছো এতদিন?
সুমি:- প্লিজ আপনি আমাকে এমন ভাবে বলবেন না। আমি আপনাকে পচন্ড ভালোবাসি। তখনি বড় ভাবি বলে উঠে।
বড় ভাবি:- কেমন ভালোবাসো তার নমুনা তো আমরা সবাই দেখতে পেলাম। শুনো এসব বলে এখন আর কোনো লাভ নেই। সৌরভ তুমি ওকে ডির্ভোস দিয়ে দাও দরকার হলে আমার চাচাত বোন মারিয়াকে তোমার সাথে বিয়ে দিবো। তখনি আমার শ্বশুর আর সফিক ভাইয়া এসেছে। সবুজ আর সোনালী আগে থেকেই বাড়ীতে এসব দেখছে। সফিক ভাই সৌরভের কাছে এসেই বলে।
সফিক:- সৌরভ তুই নে*শা করেছিস?
শ্বশুর:- কি সৌরভ ড্রিং*ক করেছিস?
বড় ভাবি:- করবে না কেনো? সব দোষ ওর বৌয়ের। সৌরভ কত বিশ্বাস আর ভালোবাসে। কিন্তু সুমি দুইদিন হলো কলেজে যাচ্ছে এর মাঝে অন্য এক ছেলের সাথে ফুস্টি*নস্টি করতে আরম্ভ করেছে। তখন বড় ভাবি তার মোবাইলটা সফিক ভাইকে দিয়েছে ছবিটি দেখার জন্য। সফিক ভাই দেখে শ্বশুরকেও দিয়েছে ওনি দেখে বলে।
শ্বশুর:- ছিঃ বৌমা তুমি এতটা নিচে নামতে পারলে? সৌরভ কাড়ীর সবার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তোমাকে বিয়ে করে। তোমার শ্বাশুড়ি বিয়ের পরে পড়া লেখা পছন্দ করে না। তাও সৌরভ জোঁড় করেই তোমাকে পড়ার সুযোগ করে দিছে আর তুমি কি*না এসব করছো কলেজে গিয়ে?
সুমি:- বাবা সত্যি বলছি আমি কিছুই করিনি। ঐ ছেলেটে কলেজের প্রথম দিন থেকেই আমাকে বিরক্ত করা শুরু করে। আমি তো ঐ ছেলেটাকে চিনি না। আমাকে আপনারা সবাই ভুল বুঝতেছেন।
বড় ভাবি:- কলেজের প্রথম দিন থেকে যদি বিরক্ত করে থাকে তাহলে সৌরভকে বলোনি কেনো? সৌরভ তো প্রতিদিন তোমাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসে। তুমি সৌরভকে বলতে তাহলে সৌরভ ছেলেটাকে নিষেধ করে দিতো অথবা অন্য কোনো ভাবে তোমাকে বিরক্ত করা থেকে আটকিয়ে নিত। সুমি আমরা সবাই জানি নয়ন তোমাকে স্কুল লাইফ থেকে ভালোবাসে আর তুমিও ওকে ভালোবাসতে। সৌরভের মত বড়লোক বাড়ীর ছেলে দেখে নয়নকে ছেড়ে দিয়ে সৌরভকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছো। আর এখন যখন আবার সুযোগ পেয়েছো তখন এক সাথে দুই নাগরকে খুশি করতে তখনি আমি গিয়ে ঠাস করে বড় ভাবিকে এক থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। বড় ভাবি থাপ্পড় খেয়ে একদম রেগে মেগে আগুন হয়ে গেছে।
শ্বশুর:- সুমি তোমার এত বড় সাহোস হয় কি করে বড় বৌকে থাপ্পড় মারার? সৌরভ আজকের মধ্যে তুই সুমিকে বাড়ী থেকে বেড় করে দিবি। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তোদের মাঝে ডির্ভোস করিয়ে দিবো। আমি আর নতুন করে কোনো কথা শুনতে চায় না।
সৌরভ:- ঠিক আছে তাই হবে। আমিও আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। তখনি সৌরভ গিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে। মা আপনাকে আমি অনেক অপমান করেছি একটা বিশ্বাসঘাতকের জন্য। প্লিজ মা আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
শ্বাশুড়ি:- সন্তানদের প্রতি বাবা মায়ের কোনো সময় রাগ অভিমান থাকে না। আর তুই এতদিন যা করেছিস সব তাবিজের জন্য। আমি আজ সকালে এক ফকির বাবার কাছে গেছিলাম। ওনি বলেছে তোকে তিনটা তাবিজ করেছে আর সব গুলি তোর বউ আর শ্বাশুড়ি মিলে করেছে। ওনি আজকেই সব তাবিজ নষ্ট করেছে যার ফলে এখন তুই সত্যিটা মেনে নিতে পারছিস।
সুমি:- প্লিজ মা আর কত মিথ্যা কথা বানিয়ে বানিয়ে বলবেন? আমি ক*স*ম করে বলছি সৌরভকে কোনো রকম তাবিজ করিনি। আমার জীবনটা তো আপনারা এক প্রকার নষ্ট করে দিয়েছেন। আমি গরীব ঘরের মেয়ে বলে আমার সাথে যেই অন্যায় আপনারা করেছেন একদিন সেইটার জন্য আফসোস করবেন সবাই। তখনি সৌরভ বলে।
সৌরভ:- একদম চুপ বেঈমান। তোকে আমি কতটা বিশ্বাস করেছি। তোর জন্য আমার নিজের বাবা মা ভাই বোন সহ সবাইকে কত কি বলেছি। প্লিজ সুমি তুমি এই মুহুর্তে আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও। আমার মনে এখন যেই অবস্থা আমি কখন কি করে ফেলি ঠিক বলতে পারছি না।
সুমি:- আমাকে আপনি একটা লাস্ট সুযোগ দেন? তখনি বড় ভাবি বলে উঠে।
বড় ভাবি:- লাস্ট সুযোগ নিয়ে কি করবে সেইটা এখন সবার জানা। তোমাকে আর এক মুহুর্তের জন্য এই বাড়ীতে থাকতে দিবো না বলেই আমার হাত ধরে টেনে দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
শ্বাশুড়ি:- বড় বৌ রাত অনেক হয়ে গেছে এখন বাহিরে বেড় করে দিলে যদি কারও সাথে ভেগে যাই তখন দোষ পড়বে আমাদের। তাঁর চাইতে ভালো আজকের রাতটা এই বাড়ীতে থাকুক সকালে ওর বাবা মাকে ফোন করে এনে ওকে দিয়ে দেওয়া হবে।
বড় ভাবি:- মা আপনি ঠিক বলেছেন বলেই আমাকে ছেড়ে দিছে।
শ্বশুর:- রাত অনেক হয় সবাই সবার রুমে যাও। সকালে আমি নিজে সুমির বাবাকে ফোন করে আসতে বলবো। সৌরভ আগামীকালকে তুই উকিলের সাথে কথা বলবি ডির্ভোসের জন্য। আর বড় বৌ ছবি গুলি তুমি রেখো ডির্ভোসের সময় কাজে লাগবে।
বড় ভাবি:- ঠিক আছে। এক এক করে সবাই চলে গেছে আমি নিচে বসে আছি সৌরভ চলে গেছে। আমার চোখ দিয়ে অশ্রু পড়তেছে। নিজেকে অনেকটা শক্ত করে রুমে এসেছি দেখি সৌরভ জুতা সহ খাটের উপরে শুয়ে আছে। আমি কাছে গিয়ে ওর জুতা গুলি খুলতেছি তখনি শ্বাশুড়ি এসেছে।
শ্বাশুড়ি:- সুমি তুমি এই রুমে এসেছো কেনো?
সুমি:- আমার স্বামীর রুমে আসবো না তো কার রুমে যাবো?
শ্বাশুড়ি:- এখন থেকে তুমি সৌরভের রুমে থাকতে পারবে না। তুমি আজকের রাতটা সোনালীর সাথে সোনালীর রুমে থাকবে। এসো আমার সাথে বলে ওনি আমাকে হাত ধরে নিয়ে গেছে সোনালীর রুমে। সোনালী আজ রাতে তোর সাথে সুমি থাকবে। আগামীকাল সকালে সুমির বাবাকে খবর দিয়ে এনে ওকে ওর বাবার সাথে পাঠিয়ে দিবো।
সোনালী:- মা তোমরা মনে হয় ভুল করছো! সত্যি বলতে সুমি ভাবি হাজার গুণ ভালো বড় ভাবির থেকে। সৌরভ ভাইয়া যদি সুমি ভাবিকে নিয়ে সুখে থাকে তাহলে তোমরা কেনো ওদের আলাদা করতে চাচ্ছো?
শ্বাশুড়ি:- সোনালী তুই ছোট এত কিছু বুঝার ক্ষমতা হয়নি তোর। তোকে যা বলেছি তাই করবি। আর তাছাড়া আমার মনে হয় তোকেও তাবিজ করে বসে নিয়ে গেছে। এমনটা চলতে থাকলে আস্তে আস্তে এই বাড়ীর সবাইকে তাবিজ করবে।
সোনালী:- মা তুমি কেনো এমন করছো? তখনি আমি সোনালীকে থামিয়ে দিয়ে বলি।
সুমি:- সোনালী থাক আমার জন্য তোমার নিজের মায়ের সাথে তর্ক করা একদম সাজে না। সোনালী তখন চুপ করে গেছে। তখন আমি আমার শ্বাশুড়িকে বলি। মা আমি কি সত্যি এসবের প্রাপ্য ছিলাম? তখন ওনি চুপ করে আছে। তখন আমি আবার বলি। মা আমাকে তো আপনি মেনে নেন নাই তবে একটা অনুরুদ করি। দয়া করে বাবাকে বলবেন আমার বাড়ীতে ফোন করে আমার বাবাকে এসব কিছু না বলতে। আমি আগামীকাল নিজেই এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো। আর কোনোদিন সৌরভের কাছে আসবোনা।
শ্বাশুড়ি:- যা বলেছো তা তোমার মনে থাকবে তো?
সুমি:- হ্যা মা মনে থাকবে। আজকের পর সৌরভ আমাকে কখনো ক্ষমা করবে না। আর কখনো আমাকে বিশ্বাস করবে না। কারও প্রতি যদি একবার বিশ্বাসটা ভেংগে যায় তাহলে সেই বিশ্বাসটা কখনো ফিরে আসবে না।
শ্বাশুড়ি:- ঠিক আছে তাই হবে। তখন আমার শ্বাশুড়ি চলে গেছে। আমি সারা রাত কান্না করেছি। সকালে ফজরের আযান শুনে উঠে নামায পড়েছি আর আল্লাহর কাছে দুআ করেছি যাতে করে আমার নামে দেওয়া সকল মিথ্যা অপবাদ ধূর হয়ে যায়। নামাজ শেষ করে রুমের দিকে গেছি আজ এখনো সৌরভ ঘুমিয়ে আছে। আমি রুমে ঢুকে আস্তে করে আমার দুইটা জামা আর আমাদের বিয়ের কিছু ছবি ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলাম। সৌরভের দিকে তাকিয়ে আছি ঘুমে এতদম মগ্ন হয়ে আছে খুব ইচ্ছে করছে একবার জড়িয়ে ধরি আর জোঁড়ে চিৎকার করে বলি আমি তোমাকে ভালোবাসি আর কাওকে না। আমি তোমার জন্য সারাটা জীবন অপেক্ষা করবো। প্লিজ আমাকে এমন ভাবে তাঁড়িয়ে দিও না। কিন্তু না কিছুই করিনি আমি চুপচাপ বেড়িয়ে আসতেছি কিন্তু বার বার মন বলছে সৌরভকে একবার বলে বিদায় নিতাম। কিন্তু সাহোস পাচ্ছি না। আবারও খুব কাছে গেলাম। কপালে ছোট চুমু দিয়ে বেড়িয়ে গেলাম। নিচে এসে দেখি কেউ নেই। আমি দরজাটার কাছে গিয়ে পিছনে একবার ফিরে তাকিয়ে নিলাম। সৌরভের জন্য একদম কষ্ট হচ্ছে সৌরভ আমাকে ভুল বুঝতে পারলো? মনে মনে অনেক রাগ আর অভিমান নিয়ে বেড়িয়ে যাবো তখনি সৌরভের ডাক দিয়ে বসে।
সৌরভ:- সুমি দাঁড়াও যাবার আগে আমার কিছু কথা আছে সেই গুলি শুনে তারপরে তুমি যাও। তখন আমি দাঁড়িয়ে গেছি আর এক এক করে বাড়ীর সবাই বেড়িয়ে এসেছে আর তখনি শ্বাশুড়ি বলে।
শ্বাশুড়ি:- সৌরভ আর কি বলবি! সুমি নিজে থেকে যেহেতু চলে যাচ্ছে তাকে আর কিছু বলার কি দরকার?
সৌরভ:- অনেক কিছু বলার আছে বলেই সৌরভ আমার কাছে এসে বলে। সুমি তুমি আজকেও আমাকে না বলেই বাড়ী থেকে চলে যাচ্ছো! এমনট তোমার সাথে আমার কথা ছিলো না! তারপরেও বলবে আমি তোমাকে বিশ্বাস করতাম? সত্যি বলতে তুমি কখনো আমাকে বিশ্বাস করতে পারোনি আর ভালোবাসোনি। এখন তুমি আসতে পারো বলেই সৌরভ অন্য দিকে মুুখ ঘুরিয়ে নিছে। আমি ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছি কি করবো চিন্তা করছি ঠিক তখনি হঠাৎ করে আমার মাথা ঝিম ঝিম করে উঠে আর আমি চোখে অন্ধকার দেখতে পায়। আর কিছুই মনে নেই কিন্তু যখন চোখ খুলেছি তখন দেখী আমি আমার রুমে শুয়ে আছি আর একজন ডাক্তার বলছে ভয়ের তেমন কোনো কারণ নেই। এমন সময় একটু আট্টু মাথা ঘুরবে আর শরীর দূর্বল হয়ে যাবে। ঠিক ঠাক যত্ন নিবেন তাহলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
শ্বাশুড়ি:- ডাক্তার তাহলে কি সুমি মা হতে চলেছে?
ডাক্তার:- হ্যা আপনাদের ছেলের বৌ মা হতে চলেছে। ডাক্তার কথা শুনে বাড়ীর সবাই একদম চুপচাপ হয়ে গেছে কারো মুখে কোনো কথা নেই। তবে আমার মুখে একটা সুখের হাসি ফুঁটে উঠেছে আমি সৌরভের দিকে তাকিয়ে দেখি সৌরভ কেমন সন্দেহজনক ভাবে তাকিয়ে আছে তখনি আমার মুখটা মলিন হয়ে গেছে। তবে কি সৌরভ এইটাও বিশ্বাস করবে না যে বাচ্চাটা ওনার নিজের সন্তান। ঠিক তখনি বড় ভাবি বলে।
বড় ভাবি:- সুমি বাচ্চাটা কি সৌরভের নাকী অন্য কারো তখনি সৌরভ বলে উঠে।
সৌরভ:- আচ্ছা ভাবি গতকাল রাতে যে ছবি গুলি দেখিয়েছো সেই ছবি গুলা তুমি পেলে কি করে? তখন বড় ভাবি আমতা আমতা করে বলে।
বড় ভাবি:- সুমির বয়ফ্রেন্ড আমাকে ছবি গুলা পাঠিয়েছে।
সৌরভ:- সুমির বয়ফ্রেন্ড তোমার নাম্বার পেলো কি করে? আর সেই ছেলেটা ছবি গুলা আমার কাছে না পাঠিয়ে তোমার কাছে কেনো পাঠালো? তখনি ভাবি বলে।
ভাবি:- আমি দুইদিন আগে দেখেছি সুমির সাথে নয়ন নামের ছেলেটা রিকশা করে যাচ্ছে তখন আমি ওদের ফলো করি। ফলো করতে করতে দেখি ছেলেটা আমাদের বাড়ীর সামনে যে চার রাস্থার মোড়ে সুমিকে নামিয়ে দিয়ে চলে যেতে ছিলো তখনি আমি ওকে ধরে জিজ্ঞেস করি। আর তখনি নয়ন সব আমাকে বলেছে।
সৌরভ:- একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের নামে এতটা বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলতে তোমার একটুও বিভেকে বাঁধা দেয়নি। আমি সব জেনে গেছি ভাবি প্লিজ আর সুমির নামে মিথ্যা অপবাদ দিও না। তখনি সবাই চুপ করে গেছে আর সৌরভ আমার হাতটা ধরে বলে সুমি চলো আমার সাথে বলেই আমাকে নিয়ে সোজা বাড়ী থেকে বেড়িয়ে এসেছে।

চলবে,,,