এমন দিনে তারে বলা যায় পর্ব-০৩

0
183

এমন দিনে তারে বলা যায়
পর্বঃ ০৩
সানজিদা মাহি
__________________________________________

ঝরনার বিয়ে হয়েছে পনের বছর বয়সে। এত বড় ধিঙ্গি, পাড়া বেড়ানো মেয়ে হিসেবে আখ্যায়িত ঝরনা আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতো সেদিনও ছোট ভাই জামালের সাথে ডিঙ্গি নৌকাটা নিয়ে বিলে নেমেছে শাপলা আনতে। বর্ষার পানিতে টইটুম্বুর বিলের মাঝে সাদা শাপলা গুলো সূর্যের আলোয় হাসছে যেন। চারদিকে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে কচুরিপানার স্তুপ। রোদে চমকাচ্ছে বিলের থৈ থৈ পানি। ঝরনা বৈঠা ভাইয়ের দায়িত্বে দিয়ে এক হাত বিলের পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে বিলি কাটতে লাগলো। ঠান্ডা পানির শীতলতা সারা শরীর মন ছুঁয়ে দিল ওর। বিলের মাঝামাঝি এসে জামাল বোনকে শাপলা তুলতে বলল। দুই ভাই বোন মিলে চরম উৎসাহে নৌকার চার ভাগের এক ভাগ শাপলা দিয়ে পূর্ণ করে ফেলল। এ শাপলার কিছু অংশ বাড়িতে যাবে রান্নার জন্য আর বাকিটা জামাল হাটে নিয়ে যাবে বিক্রির জন্য।

নৌকা গাছের সাথে বেঁধে জামালকে হাটে নিয়ে যাবার মতো শাপলা বুঝিয়ে দিয়ে কিছুটা শাপলা সঙ্গে নিয়ে ঝরনা রওয়ানা হলো বাড়ির দিকে। বাড়ির কাছে আসতেই ছোট একটা মেয়ে ঝরনাকে লক্ষ্য করে তড়িৎ গতিতে ছুটে এলো। জানালো, তার মা তাকে খুঁজছে। আজ নাকি তাকে দেখতে আসবে। ঝরনা কিছুমাত্র বিচলিত হলো না। দেখতে আসা এই প্রথম না। এর আগেও কয়েকবার তাকে দেখতে এসেছে। কিন্তু তার পরিবারের পাত্র পছন্দ হলে ওদের পছন্দ হয় না। আবার ওই পক্ষের মানুষের তাকে পছন্দ হলে তার পরিবারের পাত্রকে পছন্দ হয় না। ঝরনার বাল্য সখি প্রায় সকলের বিয়ে হয়ে গেলেও ঝরনার নিজের এখনো বিয়ে না হওয়া নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই৷ বরং তার ভয় এই যে, বিয়ে হলে তো আর সে যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে না। সকাল সকাল ভাইয়ের সাথে বিল থেকে শাপলা তুলতে যেতে পারবে না। বেত গাছে উঠে বেতুন পাড়া, উত্তরের ওই বিশাল লই গাছের নিচে লই কুড়াতে যাওয়া, পুকুরে ডুব সাঁতার দিয়ে লুকোচুরি খেলা, পানি সেঁচার পর কাঁদা মাটিতে নেমে মাছ ধরা – এসব কি আর বিয়ে হলে সে করতে পারবে? এ ব্যাপারে ঝরনার মনে দারুণ অনিশ্চয়তা।

ঝরনা বাড়িতে ঢুকতেই কিছুক্ষণ মায়ের অবারিত বকাবকি চুপ করে শুনলো। এরপর মা তাকে গোসল করে আসতে বলল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি ঝরনাকে একটা ভালো শাড়ি পরতে দিয়ে, চুলে তেল দিয়ে শক্ত করে বিনুনি পাকিয়ে দিলেন। ঝরনা মায়ের কাছে শুনলো ওরা দুপুরে আসবে। অর্থাৎ দুপুরে দেখতে এসে এখানেই খাবে। ঝরনা মনে মনে ইচ্ছেমতো ঝারলো। কেমন লোভী দেখো, বিয়ের ঠিক নেই আবার দেখতে এসে খাওয়া দাওয়া। হুহ!

সময়ের গতির সাথে ঝরনার উৎকন্ঠা একটু একটু করে বাড়তে লাগলো। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও পাত্রপক্ষের দেখা নেই। ঝরনা যেন একটু নিশ্চিত হলো। তারমানে আজকে আর তাদের আসার সম্ভাবনা নেই। সবাই এই ব্যাপারটা নিয়েই বলাবলি করছিলো। ঝরনা এক ফাঁকে গিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। ঘুম ভাঙলো চেঁচামেচি শুনে। ঝরনা আঁতকে উঠলো মনে মনে। তাহলে কি তারা চলে এসেছে?

এত নাটুকে ভাবে ঝরনার বিয়ে হবে একথাটি কেউ ঘুনাক্ষরেও ভাবেনি। পাশের বাড়িতে আগত একজন বৃদ্ধা অতিথি যখন শুনলেন মেয়েটিকে আজ দেখতে আসার কথা ছিল অথচ কেউ আসেনি। তখন ভাবলেন মেয়েটিকে একবার দেখা আসা যাক। তার নিজেরও তো একজন বিবাহযোগ্য ছেলে আছে। তিনি যখন গেলেন তখন চারপাশে এত মানুষের কথা আর চেঁচামেচি উপেক্ষা করে ভাবলেশহীন মুখে ঝরনা খাটের উপর বসেছিল। মেয়েটিকে দেখে বৃদ্ধার পছন্দ হলো। তিনি তখন ছেলে এবং অন্যদের সঙ্গে কথা বললেন। সবার মত পেয়ে সেই সন্ধ্যাতেই তারা ঝরনাকে দেখতে এলো। বলাবাহুল্য এতে ঝরনার পরিবার খুশিই হয়েছিল। ঝরনা ঘুম থেকে উঠতেই কয়েকজন মিলে তাকে সাজিয়ে গুছিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। সেদিনই পাত্রসহ তাদের পরিবারের সকলের ঝরনাকে পছন্দ হয়ে যাওয়ায় রাতেই ইমাম এনে বিয়ে পড়ানো হয়।

বৃষ্টি থেমেছে অনেকক্ষণ হয়েছে। ঝরনা বিবির ছোট মেয়েটি শীতলপাটির একপাশে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। অন্যপাশে আমি আর তার মা বসে বিয়ের গল্প শুনছিলাম। কর্তা মশাই আসলেন আরো পরে। দুপুরের খাওয়া সেরে আসরের সালাত আদায় করে আমরা রওয়ানা দিয়েছিলাম। এই দু-তিন ঘন্টায় আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তবে মাটির রাস্তার এদিক ওদিকে খানাখন্দে পানি জমে আছে। কর্তা মশাইয়ের পেছন পেছন দু’হাতে বোরকা উঁচু করে পানি ও কাঁদা বাঁচিয়ে হাঁটছিলাম। শীতল বাতাসে মন ছুঁয়ে যাচ্ছিলো। টের পেলাম বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি পড়া আরম্ভ হয়েছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি উত্তর দিক থেকে কালো মেঘে এদিকে ভেসে আসছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হয়তো তুমুল বৃষ্টি নামবে।

” একটু তাড়াতাড়ি হাঁটতে পারবেন? মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে। সামনেই একটা স্কুল আছে। ওখানে যাওয়া যাক ”

কাঁদামাটি বাঁচিয়ে হাঁটা মুশকিল। তবু যতটা পারলাম দ্রুত পা চালালাম। দোচালা স্কুল ঘরটার সামনে আসার পূর্বেই হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামলো। মাহমুদ আমার হাত হেঁচকা টান দিয়ে প্রায় দৌড়ে চললেন। স্কুল ঘরের মাটির বারান্দায় যতক্ষণে গিয়ে দাঁড়িয়েছি ততক্ষণে আমার বোরকা আধ ভেজা হয়েছে। বৃষ্টি আমার যতটা ভালো লাগে তার চেয়ে বেশি বিরক্ত লাগে ভেজা স্যাতস্যাতে ভাব। ভেজা গায়ের অস্বস্তি ভাবটা ভুলে থাকতে বৃষ্টি দেখায় মন দিলাম। ঢেউ টিনের চাল হতে প্রবল ধারায় গড়িয়ে গড়িয়ে বৃষ্টি নামছে। স্কুল ঘরের বাঁ দিকে একটা বৃহৎ আকারের বট গাছ। গাছ হতে অসংখ্য ঝুড়ি নিচে নেমে এসেছে। বৃষ্টির মধ্যে গাছটাকে ভারী অদ্ভুত লাগলো। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলে চারপাশে কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালের ন্যায় ধোয়াশা লাগে। আচ্ছা এই এলাকায় কি কোনো কদম গাছ নেই? এ পর্যন্ত একটাও কদম গাছ চোখে পড়েনি। বর্ষায় ফুল ভর্তি কদম গাছ না দেখতে পেলে বৃষ্টি উপভোগের ষোলকলা পূর্ণ হয় না বলেই আমার ধারণা। আমার নানা বাড়িতে অনেক কদম গাছ দেখেছি ছোটবেলায়। একটা গাছ ছিল পুকুরের পাড়ে, পুকুরের দিকে ঝুঁকে । কদম পেকে পেকে পুকুরের পানিতে পড়তো। আমরা দলবেঁধে পুকুরে গোসল করতে নামতাম। কেউ কেউ কদম গাছে উঠে বসতো। সেখান থেকে লাফিয়ে পড়তো পুকুরের মধ্যে। পাকা কদম আমরা লবন মরিচ দিয়ে বানিয়ে খেতাম। পুকুরের একপাশে বিরাট জঙ্গল। গোসলে নামার পূর্বে জঙ্গল থেকে গাব আর ডুমুর নিয়ে গাছের গুঁড়ি দিয়ে বানানো সিঁড়িতে বসে বসে খেতাম। এই দলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সদস্য ছিলাম আমি। হয়তো সেজন্যই সবার কাছ থেকে ভালো রকমের আদর পেতাম।

আমার মা মারা যাবার পর আমি আর আমার বড় ভাই বেশ অনেকদিন নানাবাড়িতে ছিলাম। বড় ভাইয়ের সাথে আমার স্বভাব বা মানসিকতা কোনো দিক দিয়ে মিল নেই। সে বেশ গম্ভীর স্বভাবের। দেখলে মনে হয় দুঃখে দুঃখে বেচারার জীবনটা শেষ হয়ে গেল। কষ্ট পেতে পেতে হাসতেই ভুলে গেছে। আমার নানু ভাইয়াকে দেখলেই বলতেন, ” কিরে মুকটারে হারাদিন প্যাঁচার মতো রাহুছ ক্যান? মা কি আর কারো মরে না নাকি? ”
ভাইয়া যে মায়ের শোকে মুখটাকে দুঃখী দুঃখী ভাব করে রাখে তা কিন্তু মোটেই না। তার স্বভাব বৈশিষ্টই এমন। বাবা যখন অনেকদিন পর আমাদেরকে দেখতে আসতেন তখনও ভাইয়ার মুখের অবস্থা অমনই থাকেতো। এমনকি যেদিন শুনলাম বাবা বিয়ে করেছে সেদিনও দেখেছি সে সম্পূর্ণ নির্বিকার। ভেবেছিলাম, আজীবনের জন্য বুঝি এই নানুবাড়িই স্থায়ী আবাস হলো আমাদের। কিন্তু বিয়ে করার কয়েক মাস পরই বাবা আমাদেরকে নিতে এলেন। আমি তো প্রচন্ড খুশিতে গোছগাছ করতে লাগলাম। তখনও জানতাম না নানুবাড়িতে কাটানো মুহূর্তগুলো আমার আজীবনের সুখের সংগ্রহ হয়ে থাকবে। শহরে সব ছিল কিন্তু গ্রামের সেই ভালো লাগা, চঞ্চলতা, জীবন্ত ভাবটা আর খুঁজে পেলাম না। এরই কয়েক বছর পর নানু মারা যাওয়ায় ওখানে বেড়াতে যাওয়াটাও বন্ধ হয়ে গেল। মামারা আছেন এখনো। মাঝেসাঝে চিঠি লেখেন। যেতে বলেন। যাওয়া আর হয়ে ওঠে না। এখন তো আর সে উপায়টিও নেই।

দীর্ঘ বৃষ্টিতে মাহমুদের চোখেমুখে বিরক্ত ফুটে উঠেছে। আমারও আশঙ্কা হচ্ছে এভাবে একাধারে বৃষ্টি পড়তে থাকলে আবার না মাগরিবের সালাত কাযা হয়ে যায়। কর্তা মশাই আমার চেয়ে তিন ধাপ বেশি স্বল্পভাষী। এই যে এতক্ষণ অবধি দাঁড়িয়ে আছি। একটা কথাও বলেননি। এমন কেন কে জানে!

” আপনি বৃষ্টি পছন্দ করেন না?”
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চাইলাম তার দিকে।

” অতটা নয় ”
” প্রিয় ঋতু? ”
” বোধহয় শরৎ। শরতের নীলাদ্র আকাশ দেখতে ভালো লাগে ”
” আর কাশফুল? ”
” হ্যা কাশফুলও ভালো লাগে। শরৎ এলেই দেখতে পাবেন নদীর তীরে কাশফুলে ছেয়ে গেছে। ”

মনে মনে খানিকটা রুষ্ট হলাম। একটা মানুষ যখন পছন্দ -অপছন্দ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। এরমানে সে গল্প করতে চাইছে। সেসময় কেউ মেপে মেপে কথা বললে কেমন লাগে?
বৃষ্টির তীব্রতা কমেছে খানিকটা। আরেকটু পিছনে সরে দাঁড়ালাম। বোরকা ভিজে গিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। উনার পাঞ্জাবি আর পায়জামা তো পুরোটাই ভিজে গেছে। সামনের চুলগুলো ভিজে গিয়ে কপালের সাথে লেপ্টে রয়েছে। সুন্দর বর দিয়ে মানুষ করবেটা কি? যদি মাটির পুতুলের মতো হয় সে বর! একাধারে বৃষ্টির ছন্দপতন দেখতে দেখতে একমাত্র বৃষ্টিপ্রেমী ছাড়া সকলেই বিরক্ত হয়। এ মুহূর্তে কেন যেন ডালের বড়া আর শুকনো লঙ্কা দিয়ে ধোঁয়া ওঠা ভাত খেতে মন চাচ্ছে।

বাতাসে ভাসে বৃষ্টির ঘ্রাণ
তোমাতে সঁপেছি আমারই প্রাণ,
এলোমেলো পায়ে হও সরব সন্ধ্যা
তোমাকে দেব শুভ্র রজনীগন্ধা!

তোমার কাছে রাখা গোপন কিছু ব্যাথা
ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখার অক্লান্ত সাধ,
বিবর্ণ বর্ষায় তোমার সাথে হঠাৎ দেখা
যেন কবিতার মতো মেয়ে তুমি-
তোমার শীতল চোখ রেখে আমার চোখে
ভুলে যেও সমস্ত নিনাদ- বিষাদ।

” আপনি কবিতা জানেন?! ”
বেশ ভালোরকম চমকেছি। আমার গলার স্বর শুনে নিশ্চয়ই তিনি বুঝতে পেরেছেন । উত্তর না দিয়ে মুচকি হাসলেন। শান্ত, স্নিগ্ধ হাসি। প্রাঞ্জল দুটো চোখ। আমার আগ্রহী দুটো চোখে তার দৃষ্টি। কি মনে করে চকিতে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে সামনে তাকালেন। বৃষ্টি কমে যাচ্ছে।

বাসায় পৌছে তো মাথায় হাত। জানালা যে ভুল করে খুলে গিয়েছি একবারও মনে পড়েনি। ধূলোবালি আর ময়লায় পুরো ঘরের বেহাল দশা। মাগরিবের পর দু’জন মিলে লেগে গেলাম ঘর পরিষ্কারে। বিছানার চাদর হতে, বালিশের কভার সমস্তই বদলাতে হলো। বাথরুমে একটা বড় বালতিতে পানি রাখা থাকে। সে বালতির পানিও শেষ। দু’জন মিলে নদী থেকে পানি আনলাম। দু’জন মিলে বলতে আমি হারিকেন ধরেছি, তিনি পানি নিয়েছেন। ঘরে মাত্র একটা হারিকেন। তাই আলাদা আলাদা কাজ করা গেল না। ধোয়া বিছানার চাদর আর বালিশের কভার, জামা-কাপড় নিংড়ে দড়িতে মেলে দিলাম। এরমধ্যেই বিশ্রি একটা অভিজ্ঞতা হলো। কাপড় কাচতে কাচতে চোখ পড়লো পলেস্তারা ওঠা দেয়ালে একটা লম্বা কিছু বেয়ে বেয়ে উপরে উঠছে। উনাকে বললাম,
” বাতিটা একটু উপরে উঠান তো ”

বাতি উপরে উঠাতেই দেখলাম দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় কেঁচো বেয়ে বেয়ে উপরে নিচে নামছে। সেই যে এক চিৎকারে কাপড় রেখে বাথরুম থেকে বের হলাম তারপর তো বেচারাকে কষ্ট করে লাঠি দিয়ে কেঁচোগুলোকে ফেলে নিজেকেই কাপড়গুলো ধুতে হলো। তিনি বিরক্ত হলেন না। তবে স্বাভাবিক গলায় বললেন, ” কেঁচো তো অন্ধ। চোখে দেখে না ”
” না দেখুক। আমার গা ঘিনঘিন করে! ”

পুরো ঘর ঝাড়ু দিতে হলো। এত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের পর মনে পড়লো কিছু তো রান্না করা নেই৷ কি রান্না করবো!

” কি খাবেন? মানে কিছু তো রাঁধতে হবে ”
” একটু জিরোন না। মাত্রই এতো কাজ করলেন ”

একটু স্বস্তি কাজ করলো কথাটা শুনে। যাক, মশাই অন্তত পাষাণ নয়।

উনুনের উপর ফুটন্ত তেলে গোল করে কাটা বেগুন গুলো ছেড়ে দিতেই ছ্যাৎ করে উঠছে প্রতিবার। স্টোভে রান্না করার অভিজ্ঞতা স্বল্প। তবে এই কয়েকদিন ধরে রান্না করতে গিয়ে এভাবে রান্না করাটাকে বেশ সহজ লাগছে।
” আপনি বেগুন ভাজা খুব পছন্দ করেন, না? ”
” আমি তো সবই পছন্দ করি। এমনকি আপনি যদি কয়েকটা কাঁচা মরিচ এই তেলে ভেজে খেতে দেন, তাও পছন্দ করব ”

একসঙ্গে হেসে উঠলাম দু’জনে।

চলবে ইন শা আল্লাহ….