কুহুকথা পর্ব-৬+৭

0
417

#কুহুকথা
#নুশরাত_জেরিন
#পর্বঃ৬
,
,
কুহু তার বাবার ঘরের সামনে দাড়িয়ে আছে।বাবা ডেকেছিলো তাকে।কেনো ডেকেছিলো কুহু জানেনা।বাবা সচারাচর তাকে এভাবে ডাকেনা।
কুহুর চিন্তা হতে লাগলো।বাবা তাকে শশুড়বাড়ি ফেরত যেতে বলবে না তো?মনের গহীনে ভয় বাসা বাঁধতে শুরু করলো।
ধীরপায়ে দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতেই রেজাউলের হাসিমাখা মুখ চোখে পরলো।
এতক্ষণের ভয়,খারাপ লাগা নিমিষেই দুরে পালালো।
বাবার মুখের এই হাসিমুখটা সে সবসময় দেখতে চায়,সবসময়!
সে মুচকি হেসে পাশের কাঠের চেয়ার টেনে বসলো।

—ডেকেছিলে বাবা?

–হ্যাঁ,তুই টিউশনি একটা নাকি ছেড়ে দিয়েছিস?

—হ্যাঁ।

—চাকরীর কোন খোজ পেলিনা?

কুহু দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

—চাকরী কি আর মুখের কথা?

রেজাউল হোসেন হাসি হাসি মুখ করে বললেন,

—আমার এক ভালো বন্ধু আছে বুঝলি,তার ছেলে তোকে চাকরী দিতে চেয়েছে,করবি?

কুহু চমকে তাকালো।বাবার বড়লোক কোন বন্ধু আছে বলে সে তো জানেনা।
কখনো শোনেও নি। তাহলে?
কুহু হতভম্ব গলায় বললো,
—বড়লোক বন্ধু?

—হ্যাঁ,ধানমণ্ডি বাড়ি।খুব বড়লোক সে।যদিও সে মাসখানেক হলো মারা গেছে।কিন্তু তার ছেলে আছে।সে আমায় কাল চিঠি দিয়েছে জানিস?বলেছে সে তোকে একটা চাকরী দিতে চায়।

—কিন্তু আমি সে চাকরী করবো না বাবা?

—কেনো?

—বড়লোকদের আমার পছন্দ না।তাছাড়া ইদানীং কোন মানুষকেই আমার বিশ্বাস হয়না।এখন হচ্ছে ধোকার যুগ।একজনকে পিষে অন্যজন উপরে ওঠার যুগ।
কেউ এসময় বিনাকারনে তার মৃত বাবার গরীব হতদরিদ্র বন্ধুর মেয়ের চাকরীর জন্য উতলা হয়না।নিশ্চয়ই এর পেছনে অন্য কোন কারন আছে।

—কি কারন থাকবে?

—আমি কি করে বলবো বাবা?

রেজাউল হোসেন থামলেন না।তিনি জানেন এর পেছনে অন্য কোন কারন নেই।কিন্তু বোঝাতে পারছেননা।বোঝানো যাবেওনা।সব কথা বোঝানো যায়না।
তিনি আবার বললেন,

—একবার গিয়েই দেখনা।

কুহু সেকথার উত্তর দিলোনা।সে বললো,

—আজ তোমাকে অচেনা লাগছে বাবা।

—অচেনা?

—তুমি তো কখনো কোন বিষয় নিয়ে আমায় জোর করোনি?

–তুইও তো কোনদিন আমার কথার উপর কথা বলিসনি।

কুহু কয়েক সেকেন্ড চুপ রইলো।
বললো,

—সে কি আমার পরিচয় জেনে আমাকে চাকরী দিতে চাইছে?

রেজাউল হোসেন চমকে উঠলেন।তিনি কাঁপাকাপা গলায় বললেন,

—তুই জানিস?

—না জানার মতো তো কিছু নেই।

রেজাউল হোসেন মাথা নিচু করলেন।তিনি ভেবেছিলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি কখনো কুহুর জন্মপরিচয় কাউকে জানতে দেবেননা।কিন্তু তিনি ব্যর্থ হলেন।মেয়েটার চোখের দিকে তাকাতেও তার দ্বীধা হচ্ছে।
কুহু এগিয়ে এসে হাত আঁকড়ে ধরলো।তার চোখে বিন্দু বিন্দু জল।
বললো,

—তুমিই আমার বাবা।আমার আর কাউকে দরকার নেই।আর কেউ নেইও আমার।আমার কাছে রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আত্মার সম্পর্ক বড়।

রেজাউল হোসেন হুহু করে কেঁদে উঠলেন। তিনি কেনো কুহুর মতো মেয়ের বাবা হতে পারলেননা এ আফসোস তার সারাজীবন থেকে যাবে।কেনো নিজামুদ্দিনের মতো ধনী চরত্রহীনের ঔরসে কুহুর মতো পবিত্র মেয়ের জন্ম হলো?কেনো?নিজামুদ্দিনের মতো অসৎ লোক রেজাউল জিবনে দেখেননি।
নিজের স্ত্রী সন্তান থাকার পরও যে কিনা সাধারণ এক গ্রামের মেয়েকে সুখের মিথ্যা সপ্ন দেখিয়েছিলো,তার সর্বস্ব কেড়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো।বোকা মেয়েটা যখন নিজামুদ্দিনের সন্তান কুহুকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেলো তখন নিজামুদ্দিন নিজের দোষ গোপন করতে কুহুকে মারতে উদ্যত হয়েছিলো।তবে সফল হয়নি।রেজাউল বাঁচিয়েছিলো তাকে।

পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে কুহু বললো,

—বললে না বাবা?লোকটার ছেলে আমার পরিচয় জানে কিনা?

—হ্যাঁ,জানে।

—কিভাবে?

—সেটা আমি জানিনা।তবে শুনেছি তার মৃত্যুর পূর্বে সে তার স্ত্রী সন্তানের কাছে তোর কথা বলে গেছে।হয়তো শেষ মুহূর্তে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলো।

কুহু আনমনে বললো,

—হয়তো!

,

আবির দাদুর রুমের সামনে মাথা নিচু করে বসে আছে।তার মুখ গম্ভীর। দাদুর তার চেয়েও বেশি গম্ভীর। তিনি রেগে আছেন রুনা বেগমের ওপর।মহিলাটিকে তার সহ্য হচ্ছেনা ইদানীং।
কেমন ছিট গ্রস্ত মনে হয় তাকে।
নয়তো যে মেয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে তার পেছনে এখনো লেগে থাকবে কেনো?
এইতো কিছুক্ষণ আগে সে চা নিয়ে এসেছিলো।তাকে দেখেও আজিজ রহমান টু শব্দটি করেননি।কথা বললেই সে কথা বলার সুযোগ পাবে।
তারচেয়ে চুপ থাকাই শ্রেয়।কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো চা মুখে নিয়ে।
চিনির জায়গা লবন দিয়েছে রুনা বেগম।কিন্তু কেনো?শত্রুতা করে?আজিজ রহমানের সাথে তার কিসের শত্রুতা?
তারা তো দুই সতীন নয়?প্রতিদন্দি ও নয়।তাহলে?
সে রাগে কটমট করে বলেছিলো,

—চায়ে লবন কেনো দিয়েছো বউমা?

রুনা বেগম কথাটা শুনে বেশ চমকেছিলেন।তিনি চায়ে লবন দিয়েছেন নাকি?ইশ হয়তো ভুল হয়ে গেছে।তবে পরক্ষনেই মত পাল্টালো তার।ভাবলো নিশ্চয়ই তার শশুড় কুহু চলে যাবার রাগ তার উপর ফলাচ্ছে।
তিনিও তেড়ে গিয়ে বললেন,

—লবন কেনো দেবো আব্বা?দেয়নি আমি।

—দিয়েছো।

—না দেয়নি।

পরক্ষনেই কেঁদে ভাসিয়েছিলো সে।
এবং বলেছে কুহুর জন্যই নাকি তিনি রুনা বেগমের উপর বিনা কারনে চোটপাট করছেন।যেখানে তার কোন দোষই নেই।

এসব বিষয় নিয়েই আজিজ রহমান রেগে আছেন।তিনি রুমের একপাশ থেকে অন্যপাশ পায়চারি করতে লাগলেন।
আবির এতোক্ষণ দাদুর হাবভাব বোঝার চেষ্টা করলেও এখন তা আর সম্ভব হলোনা।সে উঠে দাড়িয়ে বলে উঠলো,

—দাদু?
ওই মেয়ের কোন ছবি আছে তোমার কাছে?

আজিজ রহমান চমকে তাকালেন,

—কার ছবি?

আবির আমতাআমতা করলো।
—কুহুর।

,

চলবে….

#কুহুকথা
#নুশরাত_জেরিন
#পর্বঃ৭

,
—এইযে শুনছেন?

কুহু থমকে দাড়ালো।কথাটা কি তাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে?কিন্তু এমন নামীদামী এলাকায় তাকে চেনার মতো লোক আছে নাকি?
কুহু এসেছে রায়হান নামক লোকটার সাথে দেখা করতে।তবে তার ঠিকানা কিছুতেই খুজে পাচ্ছেনা।এতো এতো বিল্ডিংয়ের মাঝে কোনটা তার অফিস কে জানে?কেউ আশেপাশে নেইও যে তাকে জিজ্ঞেস করবে।
কাগজে যদিও ঠিকানাটা লিখে দিয়েছিলো বাবা,কিন্তু সেটা কুহু হারিয়ে ফেলেছে।
সে পেছন ঘুরে তাকাতেই চোখমুখ কুঁচকে ফেললো।
আবির ততক্ষণে কুহুর পাশে এসে দাড়িয়েছে।
তার ইদানীং অদ্ভুত এক রোগে ধরেছে।অদ্ভুত অনুভূতিরা জেকে বসেছে তার ওপর।এমন অনুভূতির সাথে আবির অপরিচিত।
খেতে গেলে,ঘুমোতে গেলে,যেকোন সময় তার চোখের সামনে একজোড়া মায়াবী মুখ ভেসে ওঠে।কি মাখামাখা চোখ তার!কতো আকুলতায় পরিপূর্ণ!
আবিরের অস্থির লাগে খুব।মায়াবী মুখটার খোঁজে সে প্রায়ই সেই বাসস্টান্ডে এসে দাড়িয়ে থাকে।কিন্তু মায়াবিনীকে পায়না।কষ্ট হয় তখন।বুকটা জ্বলে ওঠে।
মনে হয় কেউ যত্ন করে মরিচ লাগিয়ে দিয়েছে।
আবিরের সহ্য হয়না পাগলের মতো করে।
তবে বিবেকের কোথাও একটা বাঁধে। সে বিবাহিত। বউ আছে তার।যতোই তাকে মানুক আর না মানুক,বিয়ে করা বউতো।
তার আবর্তমানে অন্য কোন মেয়ের প্রতি দুর্বল হওয়া কি উচিত তার?মেয়েটার প্রতি অন্যায় হবেনা এতে?
কিন্তু মন যে কথা মানেনা।সে মায়াবিনীর সান্নিধ্য পাবার জন্য আকুল হয়ে থাকে।

কুহুর কাছাকাছি দাড়িয়ে সে হাপায়।ওনেক দুর থেকে কুহুকে দেখে দৌড়ে এসেছে সে।
কুহু চোখ কুঁচকে তাকায়।বলে,

—আপনি এখানে?কি চাই?

আবির থতমত খায়।সত্যিই তো কি চাই তার?কেনো পিছু নিয়েছে সে?কি বলবে?বলবে যে আপনাকে না দেখতে পেলে আমার অস্থির লাগে?খাওয়া ঘুম হারাম হয়?
সে আমতাআমতা করে।
কুহু চোখ আরও তীক্ষ্ণ করে।কন্ঠে রাগী ভাব আসে তার।

—সত্যি করে বলুন তো,আমার পিছু নিয়েছেন কেনো আপনি?কি চাই কি আপনার?

—না মানে,আসলে।

কুহু ধমকে ওঠে,

—ফাইজলামি করেন মিয়া?ফাইজলামি? আমাকে কি সস্তা রাস্তার মেয়ে মনে হয়?নজর ঠিক করেন বুঝলেন,সব মেয়েরেই এক নজরে দেখেন কেন?

আবির হতভম্ব হয়। সে কি করলো?কোন নজরে দেখলো?তাছাড়া সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে মেয়েটা তাকে ধমকাচ্ছে?এতোটুকু পিচ্চি মেয়ে আবির হোসেনকে ধমকায়?আবিরের তো রেগে যাওয়া উচিত। কষিয়ে দুটো থাপ্পড় মারা উচিত।
কিন্তু আবির পারছেনা কেনো?তীব্র অনুভূতিরা এসে বাধা দিচ্ছে বুঝি?
সে জোরে নিশ্বাস ফেললো।
কি হচ্ছে আবির বুঝছেনা।শুধু বুঝতে পারছে সে বদলে যাচ্ছে। ভেতরটা পুরো ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে।
এইযে মেয়েটা গাঢ বেগুনি জামা পরে ওড়না মাথায় টেনে নিয়েছে।কি স্নিগ্ধ লাগছে তাকে!মনে হচ্ছে টুপ করে….

সে আকুল কন্ঠে বলে ওঠে,

—আমার এমন কেনো হচ্ছে বলুনতো?সব উল্টে পাল্টে যাচ্ছে কেনো?কেনো এতো অস্থিরতা? কেনো ছককষা জিবনে এই এলোমেলো ভাব?কেনো?
আপনি বলতে পারবেন?

কুহু আচমকা চমকে ওঠে। আবিরের এমন আকুতি মেশানো কথাগুলো তার কোথাও লাগলো যেনো?কোথায় লাগলো?এই এখানটায়?বুকের মাঝ বরাবার?গুলির মতো বুকটাকে এফোড় ওফোড় করে দিলো নাতো?সে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

—কিসব আবোলতাবোল কথা বলছেন?
আর আপনি সরুন তো,পথ ছাড়ুন,আমার কাজ আছে।

আবির কথা শুনলো কিনা বোঝা গেলো না।
তার কন্ঠে হাজারগুন আকুলতা ভর করলো,

—আমার এই অনুভূতির নাম কি বলতে পারেন?

কুহু জোরে জোরে নিশ্বাস নিলো।অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে তেজি গলায় বললো,

—আপনার লজ্জা করেনা?বউ থাকতে অন্য কোন মেয়েকে অনুভূতি জানাতে এসেছেন?বিবেকে বাঁধে না আপনার?কেমন মানুষ বলুন তো?সামান্য মনুষ্যত্ব নেই?বিয়ে হয়ছে দুসপ্তাহ হলোনা,এর মাঝেই অন্য মেয়ের পিছুপিছু ঘুরছেন?
সেদিন আমি আপনার বাড়ি থেকে চলে এসে ঠিক করেছি,একদম ঠিক কাজ করেছি।
লুচ্চা লোক কোথাকার!

রাগে গজগজ করতে করতে কুহু সামনে পা বাড়ালো।
আবির স্তব্ধ হয়ে রাস্তায়ই বসে পরলো।তার খুব লেগেছে কথাগুলো।সত্যিই কাজটা সে ঠিক করেনি।কিন্তু মনকে কি বেধে রাখা যায়?নাকি ইচ্ছে মতো চালনা করা যায়?
সেকি ইচ্ছে করে…
পরক্ষনেই চমকে উঠে দাড়ালো সে।মুখে ফুটে উঠলো মৃদু হাসির রেখা।
মেয়েটা কিকরে জানলো,আবির বিবাহিত? বিয়ের দুসপ্তাহ হয়েছে?সেতো আর বলেনি?তাছাড়া কথার ফাঁকে সে বলেছে সে চলে এসেছিলো আবিরদের বাড়ি থেকে সেদিন।
আবির নিজের মাথায় গাট্টা মারলো খুব।এইজন্য বুঝি মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছিলো?দাদুর কাছে ছবি চেয়েও তো পেলোনা।দাদুর কাছে নাকি কোন ছবি নেই।আর সে কিনা নিজের বউকে চিনতে পারলোনা?এতোটা গাধা কবে হলো?

,

কুহু রায়হানের চেম্বারে বসে আছে।চারপাশটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।সামনে বসা লোকটার চোখে চোখ রাখতে কেন যেনো ইচ্ছে করছেনা তার।তার ধারনা লোকটাকে দেখলেই সে কেঁদে ফেলবে।যেনোতেনো কান্না না,হাউমাউ করে কান্না।
না চাইতেও কুহুর ভেতরে ঝড় বইছে।সামনে বসে থাকা মানুষটা তার ভাই?নিজের ভাই?
নিরব পরিবেশে হঠাৎ রায়হান থমথমে গলায় বলে উঠলো,

—আপনার নামই কুহু।

কুহু উত্তর দিতে চাইলেও দিতে পারলোনা।তার গলা আটকে আসছে।কোন কথা মুখ থেকে বের হচ্ছেনা।এমন কেনো হচ্ছে কে জানে?
অথচ কুহু ভেবেছিলো সে কিছুতেই দুর্বল হবেনা।কিছুতেই নিজের দুর্বলতা সামনে আনবেনা।
অবশেষে সে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো।
রায়হান হাতে রাখা কুহুর বায়োডাটা রাখা ফাইলটা টেবিলো রাখলো।
বললো,

—তুমি কি খেয়াল করেছো,তোমার চেহারা অনেকাংশে আমার সাথে মেলে?

কুহু চমকে তাকালো।লোকটা হঠাৎ তুমি বলছে কেনো?এসবই বা কেনো জিজ্ঞেস করছে?
কুহু কঠিন গলায় বললো,

—আমি ব্যক্তিগত কথা বলতে আগ্রহী নই স্যার!

—কিন্তু আমি যে আগ্রহী!

কুহু উঠে দাড়ালো।তার দৃষ্টি কঠোর।নিজের মনকে বুঝ দেওয়ার অলৌকিক ক্ষমতা আছে তার।ভেতরের নরম সত্ত্বাকে লুকিয়ে বাইরে কঠোর থাকতে পারে সে।
বললো,
—তাহলে আমার পক্ষে এ চাকরীটা করা সম্ভব হবেনা।

রায়হানও উঠে দাড়ালো।তার মুখটা ফ্যাকাসে।নরম গলায় বললো,

—কোনো বোন?বাবার করা অপরাধের শাস্তি আমায় কেনো দেবে?
বাবার ভুলের কোন ক্ষমা নেই আমি জানি,কিন্তু আমি,মা, আমরা তো কোন অপরাধ করিনি?করেছি কি?

—আপনি কোথাও ভুল করছেন স্যার,আমি কারো বোন নই।আমি কুহু।
আমরা দুইবোন।বাবা রেজাউল হোসেন।
তাছাড়া আমার কোন পরিচয় নেই।

কুহু গটগট পায়ে অফিসরুম ছেড়ে বেরুলো।চোখের কোনে তার জলের কনা।চোখের পানি এমন বেয়াড়া কেনো কে জানে?মালিকের কথা মোটেও শোনেনা,নিজের মর্জিমতো বেয়ে চলে!
,

,

চলবে….