খড়কুটোর বাসা পর্ব-৭+৮

0
166

#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ৭
#Jhorna_Islam

আমার কথা মতো চললে সব ঠিক থাকবে।নয়তো সব উলট পালট হয়ে যাবে। এমন কিছু করবো না তোমরা কিছু বলতে পারবে আর না কিছু করতে পারবে।শুধু চুপচাপ দেখা ছাড়া কিছু করতে পারবে না।

ভালো আছি ভালো থাকতে দাও।খারাপ হতে বাধ্য করো না। এতোদিন যেমন সব কিছু চলেছে তেমন ভাবেই যেনো সব কিছু চলে। আমি আর আমরা ভালো থাকলে তোমরা ও ভালো থাকবে।

তাই আগে থেকেই সাবধান করছি বোঝাও ইরহান কে।দেশে এসেছে থাকুক ছুটি শেষ হলে যেনো আবার ফিরে যায়। নয়তো আফসোসের শেষ থাকবে না।

“কথায় আছে না অতি বাড় বেড়োনা ঝড়ে পরে যাবে।”

যুথি এবার মুখ খুলে,,,,, কেন উনি দেশে থাকলে আপনার কি সমস্যা?৷ এটা তো আরো ভালো খবর ঘরের ছেলে ঘরে থাকবে। আপনার এই দুই ছেলে বাড়িতে থাকবে উনি কেন গিয়ে দূরে পরে থাকবে?

যা জানোনা তা নিয়ে কথা বলবে না।

জানতাম না তো।এখন সব জানতে পারতেছি খুব ভালো করে জানতে পারছি।

নিজের ছেলেদের সময় ষোল আনা উনি নিজের পেটের ছেলে না বলে এক আনা ও না তাইনা নকল শ্বাশুড়ি আম্মা?

ভুলে যেওনা মেয়ে আমি তোমার কি হই সম্মান দিয়ে কথা বলবে।আর এটাও ভুলে যেওনা এই বাড়ির বউ হয়ে আসতে পেরেছো আমার বদৌলতে। তাই বুঝে শুনে কথা বলবে।

আমি ইরহানের বউ করে না আনলেতো কোনো রিকসাওয়ালার ঘরে জায়গা হতো।অল্প পানির মাছ এখন বেশি পানিতে পরে লাফালাফি করছো? আমি যা বলি চুপচাপ শুনবে।

আমি যা বলি তাই করবে।নয়তো এই বাড়ির ভাত জুটবে না কপালে।
ভুলে যেওনা আমার পছন্দ করে আনা মেয়ে তুমি।

সেইটাইতো আমাকে পছন্দ করে নিজের ভালো করতে গিয়ে খারাপ করে ফেললেন। ভুল জায়গায় সঠিক মানুষ টা পছন্দ করে এনেছেন।

“কথায় আছে না পরের জন্য গ’র্ত করলে সেই গ’র্তে নিজেকেই পরা লাগে।”

তাছলিমা বানু যুথিকে কিছু বলতে নিবে তার আগেই ইরহান এসে ঐ জায়গায় উপস্থিত হয়। মোবাইল টা পকেটে ঢুকাতে ঢুকাতে তাছলিমা বানু ও যুথির দিকে ব্রু কোচকে তাকায়।

আমি দুই দিনের ভিতরে শহরে যাবো আমার পরিচিত লোক আছে সেখানে সে ও ব্যবসা করে তার সাথেই আলাপ আলোচনা করে যেটা করলে সুবিধা হবে সেটাই করবো। তোমার একাউন্টে গত মাসে যে টাকা গুলো পাঠিয়েছি সে গুলো ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেই পাঠিয়েছি।কথা গুলো বলে ইরহান তাছলিমা বানুর মুখের দিকে তাকায়। তাছলিমা বানু থো’ম ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

— কি হলো মা? আশা করি বুঝতে পারছো আমি কি বলছি?

— গত মাসে যে টাকা গুলো পাঠিয়েছিলি সেই টাকা গুলো নেই ইরহান।

— নেই মানে? তিন লাখ টাকা নাই হয়ে গেলো কি করে? কি করেছো মা টাকা দিয়ে। আমার জানামতে তো কোনো কিছু করোনি।

— টাকা গুলো ইমন আর ইশান নিয়ে ছিলো।

— ওরা কেন আমার টাকা আমার অনুমতি ছাড়া নেবে? এতো টাকা দিয়ে ওদের কি কাজ? কি করেছে টাকা দিয়ে। সারাদিন তো শুয়ে বসেই কাটে ওদের। আর আমিতো ওদের খরচের জন্য আলাদা টাকা দিতামই।ঐখান থেকে কেনো আবার টাকা নিয়েছে?

ইরহানের কথা শুনে ইশান কিছু বলতে নিবে তার আগেই ইমন আটকে দেয়। ইশান রাগে ফুসছে।এমনিতেই তার মাথা গরম। বেশ করেছে শুয়ে বসে খায় এটা ইরহান বলবে কেন?

ইশান ইমনের দিকে ফুসতে ফুসতে তাকায়।ইমন আস্তে করে বলে,, চুপ থাক ভাই মাথা গরম করিস না।ঠান্ডা রাখ মাথা।মায়ের উপর ভরসা রাখ যা বলার মা কেই বলতে দে।

তুই এখন কিছু বলতে গেলে বা বাড়াবাড়ি করলে হিতে বিপরীত হবে।আমাদের মা যথেষ্ট বুদ্ধিমতি।আামাদের থেকে ভালো বুঝে কি করলে আমাদের ভালো হবে সেটাই উনি করবেন।ভরসা রাখ।

ইশান ইমনের কথায় চুপচাপ শান্ত হয়ে দাড়িয়ে থাকে।তার এমন ভাবে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে মোটেও ইচ্ছে করছে না। ইচ্ছে করছে ইরহান কে গিয়ে কয়েক ঘা লাগিয়ে দিতে।

ইরহান তাছলিমা বানুর দিকে তাকিয়ে আছে তার উত্তরের আশায়।

তাছলিমা বানু বলে,,,, ঐ টাকা গুলো ইমন আর ইশান একটা জায়গা কিনার জন্য বায়না দিয়েছিলো।কিন্তু লোকটা নকল দলিল দেখিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।

আমার টাকা নিয়ে ওরা জায়গা কিনতে গেলো।সেখানে গিয়ে ধোকা খেয়ে টাকা ও হারালো অথচ আমিই কিনা জানিনা।একবার জানানোর প্রয়োজন ও মনে করোনি তোমরা বাহ্। বলেই ইরহান হাত তালি দেয়।

এতোগুলা টাকা ওরা নিয়ে গেছে ভালো কথা সেটা যে ধোকা খেয়ে হারিয়ে ও এসেছে সেটা কি আমার জানার অধিকার ছিলো না মা?

তুই তো এই ব্যাপারে থাকিস না ইরহান।আর আমি অবাক হচ্ছি এটা ভেবে তারপর তুই আমার কাছে কৈ’ফি’য়’ত চাইছিস? এক দিনেই এতো উন্নতি হয়ে গেছে? এসব নিশ্চয়ই তোর বউয়ের জোরে করছিস।

এর মধ্যে যুথিকে কেন টানছো মা।ও তো কিছু বলেনি।আর আমি কৈ’ফি’য়’ত চাইছি না।এটা জানার আমার অধিকার আছে। এত কষ্ট করে টাকা রোজগার করে যদি শুনি সেই টাকা অন্যরা নিয়ে গেছে তাহলে নিশ্চই এটা শুনে আমার ভালো লাগবে না।

সে যাই হোক এই টাকা গুলোতো আর ফেরত আসবে না। একাউন্টে তো আরো টাকা আছে। ঐখান থেকেই নিয়ে কাজ শুরু করবো। ঐ খান থেকেই দেও।

চে’ক এ সাইন করে দাও কাল সকাল সকালই বের হবো।ঐখান থেকে আসার সময় উঠিয়ে নিয়ে আসবো।

ইরহান মায়ের কথা শুন।এসব ব্যবসা বা দেশে কাজ করার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল।দেখলিতো মানুষ কিভাবে ঠ’কায়। আর এসব করে যে সফল হবি তা ও তো না।শুধু শুধু কেনো টাকা গুলো নষ্ট করবি। আমার অবাধ্য তো তুই ছিলিনা কখনো ইরহান তাহলে আজ কেনো আমার কথা শুনছিস না?

যা বলছি ঠান্ডা মাথায় ভাব।

ইরহান তার মায়ের দিকে তাকায়। তারপর এসব কথায় পাত্তা না দিয়ে বলে উঠে,,,, চে’ক বই টা কোথায় আছে মা?

তাছলিমা বানু রা’গী চোখে ইরহানের দিকে তাকায়।

নিশ্চই তোমার রুমে। আমি খুঁজে নিয়ে আসছি। বিছানার পাশে রাখা টেবিলের ড্রয়ারে নিশ্চয়ই আছে।ঐ খানেইতো কাগজপত্র রাখো। বলেই ইরহান তাছলিমা বানুর রুমে চলে যায়।

এই দিকে তাছলিমা বানু জোরে জোরে ইরহান কে ডাকছে।
ইরহান অনেক হয়েছে অনেক বাড়াবাড়ি করছিস।এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।

এরপর আমি যা করবো সেটা তুই কল্পনা ও করতে পারবিনা। এতোদিন যেটা না করেছি এখন আমি সেটাই করবো।
—————-

ইশান এবার তার মায়ের সাথে রে’গে রে’গে বলে,,ওকে এতো তে’ল মেরে কেন বোঝাচ্ছো? সে কি তোমার কথা শুনছে? দেখেছো কতো বড় সাহস আমাদের সাথে উঁচু গলায় কথা বলে। ইচ্ছে তো করছে কয়েকটা লাগিয়ে দেই।ইমন ভাইয়ের জন্য পারিনি।

মা তুমি এখনো চুপ করে থাকবে? কোনো ব্যবস্থা নিবে না? টাকা রোজগার করে সা’পের পাঁচ পা দেখেছে।দেখেছো দুই দিনে কি রকম রং পাল্টে ফেলেছে।আগে তোমার কথায় উঠতো আর বসতো।তুমি এতো করে বলতেছো তোমার কথা শুনছে?

এসব টাকা পয়সা ও রোজগার করলেও এখন এসবের প্রতি ওর কোনো অধিকার নেই।তুমি কিছু করো মা।এদের আর আমার সহ্য হচ্ছে না। ইচ্ছে করছে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বিদেয় করতে।

এইই ইশান মুখ সামলে কথা বলবে বলে দিলাম।ভুলে যেওনা কাকে কি বলছো।যার টাকায় জীবন চলে তাকে এসব বলার সাহস পাও কোথায় তুমি? নিজের তো দুই টাকা ও রোজগার করার মো’র’দ নাই আবার বড় বড় কথা!

যেই প্লেটে খাও সেই প্লেটে ফোটা করতে একবার ভাবে না। ছিঃ লজ্জা হওয়া দরকার আরেকজনের ঘা’ড়ে চ’ড়ে খাচ্ছো এমনিতেই তো মুখ লুকিয়ে চলার কথা। আবার সে গলা উচিয়ে কথা বলে। এক পয়সা কামানোর যার কা’ম্য নয় সে এতো বড় কথা বলে মানুষ শুনলে হাসবে।

বে’হা’য়া নির্লজ্জ পুরুষ। ঘরে চুড়ি পরে বসে থাকো। বলেই যুথি ইশানের দিকে রা’গী চোখে তাকায়।

যুথির কথা গুলো ইশানের শরীরে গরম তেলে পানি পরার মতো লাগে। এমনিতেই রা’গে মাথা ফেটে যাচ্ছে তারউপর যুথি এসব বলায় আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না ইশান।

যুথির দিকে তে’ড়ে যেতে যেতে বলে,,,ফ”কি’ন্নি’র বা”চ্চা তোর এতো সাহস তুই আমাকে কথা শুনাস?বলেই হাত উচিয়ে যুথি কে চ’ড় মারতে যায়।

হুট করে ইশান এগিয়ে আসায় যুথি চোখ বন্ধ করে ফেলে।
চোখ বন্ধ অবস্থাতেই ঠা’স করে চ’ড় দেওয়ার আওয়াজ হয়।কিন্তু সেটা যুথির গালে না।যুথি চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে দেখে ইরহান ইশানের হাত মুচড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। চ’ড় টা যে ইরহান ইশানের গালে দিয়েছে সেটা আর বুঝতে বাকি নেই।

ইরহান ইশানের হাত আরো জোরে মোচড় দিয়ে ধরে বলে তোর সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।তুই আমার বউয়ের গায়ে হাত তুলতে যাস?

এখন যে চড় টা মারলাম না তোকে? এটা আরো আগে মারা দরকার ছিলো। ওর দিকে যেখানে চোখ তুলে তাকানোর কথানা। সেখানে তুই ওর গায়ে হাত তুলতে যাস?

আমার টাকায় বসে বসে খেয়েতো শুধু ব’য়’লা’র মুরগির মতো ফুলেছিস।এই শক্তি নিয়ে তুই যুথি কে মারতে আসিস?আমার হাত দেখেছিস খেটে খাওয়া মানুষের হাত।এই হাত যেমন আদর,স্নেহ দিতে জানে তেমনি অন্যকে শাস্তি দিতেও জানে।বলেই ইরহান ইশান কে একটা জোরে ধাক্কা মারে। ইশান ছিটকে গিয়ে কয়েক হাত দূরে পরে।

#চলবে,,,,,,,,,

#খড়কুটোর_বাসা
#পর্বঃ৮
#Jhorna_Islam

ইরহানের এক ধাক্কায় ইশান দূরে গিয়ে ছিটকে পরে।

আ’কস্মিক এ’হে’ন ঘটনায় সকলেই বিষ্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিছু সময়ের জন্য প্রতিক্রিয়া দেখাতে ভুলে গেছে। ইরহানের কাছ থেকে কেউই এমন কিছু আশা করেনি।

শান্ত প্রিয় চুপচাপ স্বভাবের ছেলেটা এমন,কিছু করতে পারে সকলের ধারণার ও বাইরে। ইরহান কখনোই তাছলিমা বানু, ইমন,ইশানের সাথে জোর গলায় কথা বলতো না।ওদের সাথে তেমন কোন কথাই হতো না।

ওদের হয়তো জানা নেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটা শেষ চেষ্টা হলেও করে।ইরহান তার ব্যতিক্রম নয়।

ইরহান বুঝে গেছে মানুষ কে যতো ছাড় দিবে সে ঘাড়ে চড়ে বসবে।

ইরহানের ধাক্কায় ইশান হাতের কুনুই তে ব্যাথা পায়।এমনিতেই হাত মুচড়ে ধরায় ব্যাথা পেয়েছিল তার উপর আবার কুনুই তে ব্যাথা পেয়েছে।

তাছলিমা বানু,, আর ইশানের বউ দিনা গিয়ে দৌড়ে ইশানের কাছে যায়।হাতে ধরে তুলে বসায়।

তাছলিমা বানু এবার গ’র্জে উঠে ইরহান তুই আমার ছেলের গায়ে হাত তোলার সাহস পেলি কোথা থেকে?

ইরহান নির্বিকার ভাবে জবাব দেয় যেইভাবে তোমার ছেলে আমার বউয়ের গায়ে হাত তোলার সাহস পেয়েছে ঠিক সেইভাবে।

আমার বউকে কেউ চোখ রাঙালেও ব’র’দা’স্ত করবো না আমি। সেই জায়গায় ও তার গায়ে হাত তোলার সাহস দেখিয়েছে একটু শাস্তি তো পাওনাই।যদিও এটা কমই ছিলো।প্রথম বার বলে ছেড়ে দিলাম।

বাহ্ এই ফ’কি’ন্নি একদিনে এসে পুরো তোকেই পাল্টে দিলো।বেশ জা’দু জানে মনে হচ্ছে।

আমার বউ আগে কোথায় ছিলো কেমন ভাবে ছিলো সেটা ভুলে যাও।সে এখন ইরহানের বউ সেটা মাথায় ঢুকাও।তাই বারবার তাকে ফ’কি’ন্নি বলে সম্বধন করবে না।

তুই আমার ছেলেকে আঘাত করে একদম ঠিক কাজ করিস নি। চে’ক এ সাইন করাতো দূর তুই একটা কানাকড়ি ও পাবি না।

ব্যাংকের টাকা পয়সা,,জায়গা জমি সব আমার নামে। আর আমার নামে যেহেতু সব পেলে আমার পেটের সন্তান পাবে।তুই আমার কেউ না তাই তুই কিছু পাবি না। আমি তোকে কিছু দিবো না।

এই বাড়িটা দেখছিস? এটা কিন্তু তোর বাবার জায়গা নয়।অবশ্য তোর টাকা দিয়েই তোর বাপের বাড়ির পাশের রমিজ ভাইয়ের জায়গা কিনে তারপর সেখানে করা হয়েছে তোর নিশ্চয়ই জানা আছে। আর এই জায়গা টা ও আমার নামে।তোর কোনো অধিকার নেই।এই বাড়ির একটা ইটের প্রতি ও তোর কোনো অধিকার নেই।

তাই আমি তোকে এই বাড়িতে থাকতে দিবো না। নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরা করে নে।না করেছিলাম বেশি বাড়াবাড়ি করিস না শুনিস নি আমার কথা।

আমার কথা মতো চললে সব ঠিক থাকতো।অন্তত এই বাড়িতে মাথা গুজার ঠাই পেতি।এখন সেটা ও পাবি না।নিজের রাস্তা নিজে দেখ।আজ রাতের মধ্যে বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে।

তোদের মুখটা ও আমি দেখতে চাই না। বিয়ের পর থেকে অনিচ্ছা সততে ও তোকে স’হ্য করে গেছি। ঐ বুড়োর জন্য কিছু বলতে পারতামনা। চুপ থাকতে হতো আমায়। তারপর বুড়োটা মরেছে আমার জ্বা”লা জুড়িয়েছে। তোকে আমার চোখের সামনে থেকে দূরে পাঠানোর জন্য বিদেশ পাঠিয়ে দিলাম।

চেয়েছিলাম তুই সারাজীবন ই ঐখানে থেকে যা।কিন্তু তুই তো আমার সব পরিকল্পনা শেষ করে দিলি। আমার সব চেয়ে বড় ভুল ছিলো তোকে বিয়ে করানো টা। তাও করিয়েছি করিয়েছি নিজের ভালোর জন্য এই মেয়ে টা কে পছন্দ করে ছিলাম কিন্তু না এই মেয়েটাই আমার সব শেষ করে দিলো।

আজকের ভিতর চলে যাবি।তোর বাবার সম্পত্তিতে ভা’গ পেলেও তোর নিজের টাকা দিয়ে কিনা কোনো কিছুতে তুই এক বিন্দু পরিমাণ ও ভাগ পাবি না। চলে যা।

ম’গে’র’মু’ল্লু’ক নাকি শ্বাশুড়ি আম্মা,? আপনি বললেই আমরা চলে যাবো?

এতো সোজা যার বাড়ি যার ঘর তাকেই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইছেন?

আপনার কথা আমরা এতো সহজে মেনে নিবো? একদম না। আমরা কেন যাবো? গেলে নিজেরা চলে যান। কেমন নি’র্ল’জ্জ’দের মতো কথা।

যুথির কথায় তাছলিমা বানু চিললিয়ে বলে উঠে,,,, এই মেয়ে একদম আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলবেনা।নয়তো আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না।

— এমনিতেও আপনার থেকে খারাপ আর কেউ নাই এই দেশে কেনো পুরো পৃথিবীতে।

— এতো চে”টাং চে”টাং কথা না বলে বের হও আমার বাড়ি থেকে। রাস্তায় গিয়ে কু’কু’র বি’ড়ালের মতো সংসার পাতো।তাহলে দুইদিনের ভিতর সব তে’জ শেষ হবে।

— আমিতো আমার তে’জ শেষ করার জন্য আসিনি নকল শ্বাশুড়ি আম্মা। আপনার তে’জ কমানোর জন্য এসেছি।

ইরহান এই মেয়ে কে নিয়ে বিদেয় হ তুই।আমার আর তোদের স’হ্য হচ্ছে না। তোদের দেখলেই শরীরে যেমন আগুন জ্ব’লছে। তোদের মুখ ও আমি দেখতে চাই না।

আমরা যাবো না নকল শ্বাশুড়ি আম্মা। দেশে আইন কানুন আছে ভুলে যাবেন না। আপনি সব নিজের নামে করে নিলেই তো হলো না।আর গ্রামে মেম্বার চে’য়া’র’ম্যান ও রয়েছে। ওদের কাছে গেলেই আমরা আমাদের সব ফিরে পাবো।

যুথির কথা শুনে সকলেই উচ্চ স্বরে হেঁসে দেয়।

মে’ম্বার চে’য়া’র’ম্যান কি করবে? এখন মুখের কথায় কিছুই হবে না। এখন কাগজ পত্র কথা বলে।

আর এখন মে’ম্বার চে’য়া’রম্যা’ন টাকা বুঝে। টাকা দিলে প’ল্টি মারতে দুই সেকেন্ড ও নিবেনা। যার টাকা আছে তারা তার কথাই বলবে। বলেই ইমন হাসতে থাকে।

পৃথিবী টা টাকার গো’লাম। টাকা আছে সব আছে।তোমাদের কথার মূল্য কেউ দিবে না।হয়তো কয়েকজন এসে হা হুতাশ করে সা’ন্তনা দিবে এই ব্যতীত কিছুই করতে পারবে না।

যুথির শরীর জ্বা’লা করছে এদের কথা শুনে। এতটুকু জীবনে অনেক মানুষ দেখেছে কিন্তু এদের মতো খারাপ আর কাউকে দেখেনি।

এরা সব সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। যুথির ইচ্ছে করছে সব ভেঙে গুড়িয়ে দিতে। নিজের রা’গ কে সামলে ইরহানের দিকে চোখ তুলে তাকায়।

ইরহান এদের কথা শুনতে পেরেছে কিনা জানেনা যুথি।কি যেনো একমনে ভাবছে।

যুথি এবার ইরহানের হাত ঝাকিয়ে বলে,,,আপনি চুপ করে আছেন যে? কিছু বলছেন না কেন এদের?

যুথির ধাক্কা তে ইরহানের হুশ আসে।

যুথি রুমে গিয়ে আমার সব কিছু গুছিয়ে নাও!

— মানে কি বলছেন এসব? আপনার মাথা ঠিক আছে? আপনি সত্যি নিজের সব কিছু ছেড়ে এদের কথায় এদের সব দিয়ে চলে যাবেন?

— তোমাকে যা বলছি তুমি গিয়ে তা করো।

— কিছু করবোনা।কোথাও যাবো না। আমরা কেন যাবো? গেলে ওরা যাবে। আপনিও কোথাও যাবেন না আমিও কোথাও যাবো না।

— যুথি আমি কি বলেছি কানে যায় নি তোমার? কথাটা বেশ তীব্র ভাবে বলে ইরহান। যুথি আর কিছুই বলতে পারেনি।ছলছল চোখে একবার ইরহানের মুখে তাকিয়ে চলে যায়।

ইরহানের কথায় সকলের মুখে হাসি ফোটে।

তাছলিমা বানু বলে উঠে,,, যাক এইবার একটা কাজের কাজ করেছিস। মাথায় দেখা যায় বুদ্ধি আছে একটু শুধু শুধু শুধু ঝামেলা করে কিছু লাভ হতো না তর বুঝে গেছিস।

চাইলে আজকের রাতটা থেকে যেতে পারিস।আমি আবার এতোটা ও নি’র্দ’য় নই বুঝলি মা ডেকেছিস এইটুকু করতেই পারি তোর জন্য।

আপনাকে আমি মা নামক পবিত্র স্থান দিয়েছি ভাবতেও আমার ল’জ্জা লাগছে। ছিঃ মা শব্দ টাকে আমি এতোদিন অ’পমান করে এসেছি। তাছলিমা বানু মা হওয়ার কোনো যোগ্যতাই রাখে না।

আজ আমি ইরহান একটা কথা বলে যাচ্ছি তাছলিমা বানু,, যাদের জন্য আজ আমার সব কিছু কেড়ে নিয়ে আমাকে নি’স্ব করলেন সেই তারাই একদিন আপনাকে তাদের জীবন থেকে ভি’খারির মতো তাড়াবে।

এই ইরহান কেই আপনার একদিন কাজে লাগবে। সেইদিন কিন্তু আপনাকে আমি ফিরিয়ে দিবো না।কারণ আমার মন টা আমার জ’ন্ম’দা’ত্রী মায়ের মতো উ’দার। উদাহরণ দেওয়ার নিশ্চয়ই দরকার নেই? এই যে যেমন আজ সব আপনাদের দা’ন করে দিলাম।

এতোদিন ঘুড়ির লা’টাই নিজের হাতে শক্ত করে ধরে সুতো নিজের হাতে রেখে উড়ালাম।সেই ঘুড়িই যখন বে’সামাল হয়ে সুতো দিয়ে আমার হাত কাটায় তাহলে সেটা ধরে রাখার আর আমার কোনো দায় নেই।কেটে দিলাম সুতো এখন যতো উড়তে পারে উড়ুক।
কথাটা বলেই ইরহান চলে যায়,,,,,,,

#চলবে,,,,,,,,,