#গোধূলীতে_তুমি_প্রিয়
#পর্ব_১৭
#লেখিকা_রুবাইতা_রিয়া
গত এক ঘন্টা যাবত ইথান আইসিউ এর সামনে পাগলের মতন ব্যাবহার করে চলেছে।কখনো দরজা ধরে ধাক্কাচ্ছে তো কখনো বাহিরে রাখা চেয়ার ধরে আছাড় মারছে।অসম্ভব লাল হয়ে আছে তার চোখ দুটো।ওকে এমন পাগলামো করতে দেখেও কেউ কিছু বলছে না কারন এটা তার বাবার হস্পিটাল।আর ইথান যখন রেগে থাকে তখন তার সাথে কেউ কথা বলতেও ভয় পায়।আজকে ইথান এতো বড় একজন ডাক্তার হওয়ার পরও সে কিছু করতে পারছে না।নিজের ভালোবাসার মানুষটার অসুখের চিকিৎসা করা যে তার কাছে বড্ড কঠিন হয়ে পরেছে।সবাই নিশব্দে চোখের জল ফেলে চলেছে।ফারিহা এক কোণে চুপ করে দাড়িয়ে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছে।বিনা দোষে সবথেকে বেশি কষ্ট সে পাচ্ছে।
ইথানকে এভাবে পাগলামো করতে দেখে ওর বাবা এসে ওর হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বলে উঠলো,,
ইথানের বাবা—-ইথান থামো এবার।তুমি এমন করলে কি লাবিবা ঠিক হয়ে যাবে?পাগলামি বন্ধ করো।তোমার চেচামেচির আওয়াজে বাকি পেশেন্টদের আরো সমস্যা হচ্ছে।আল্লাহর কাছে দোয়া কর।
বাবার কথা শুনে ইথান চুপ করে রইলো।লাবিবাকে হারানোর এক অজানা ভয় তার মনে বারবার উকি দিচ্ছে এ মুহূর্তে।ঠিক তখনই পেছন থেকে ইহানের মা এসে ওর পিঠে হাত রেখে কান্না জড়িতো কণ্ঠে বলে উঠলো,,
ইহানের মা—-ইথান আমি জানি ইহান খুব বড় একটা অন্যায় করছে।ওর এই কাজের জন্য ওকে ক্ষমা করা যায় না।কিন্ত তুই তো ওর ভাই হস।একটাবার কি ওকে ক্ষমা করা যায় না?পুলিশরা ওকে জেলে আটকে রাখছে।ওখানে কি করে থাকবে ও?ওখানের ওই বাজে খাবারগুলোই বা কি করে খাবে?প্লিজ ওকে ছাড়িয়ে আন।
ছোট কাকির কথা শুনে ইথানের রাগে কপালের রগগুলো ফুলে উঠলো।লাবিবার জীবন নিয়ে প্রশ্ন আর উনি আসছে ছেলের কষ্ট নিয়ে কথা বলতে।ওনার ছেলের জন্যই আজকে এই অবস্হা লাবিবার।ইথানে রেগে হুংকার দিয়ে বলে উঠলো,,
ইথান—-কাকিয়া তোমার কি একটুও চিন্তা হচ্ছে না লাবিবার জন্য?কোন মুখ নিয়ে তুমি এমন একটা সিচুয়েশনে এরকম কতা বলো?ইহানের থাকা নিয়ে তোমার চিন্তা হচ্ছে আর এইদিকে যে লাবিবা মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে সেই ব্যাপারে তোমার মাথা ব্যাথাই নেই।ইহানের মতন সার্থপর হয়ে গেছো তুমিও!
এমুহূর্তে ইথানের এমন কথাগুলো জানো মোটেও আশা করেনি ইহানের আম্মু।তিনি ভেবেছিলো ইথানকে বুঝিয়ে বললে ও ইহানকে ছাড়িয়ে আনবে কারন ইথান ইহানকে খুব ভালোবাসে।ওর কষ্ট মোটেও সয্য করতে পারে না যে ইথান।কিন্তু ইথান তো উল্টে তাকে ভুল বুজলো।ওনার চিন্তার মাঝেই ইথান চেচিয়ে বলে উঠলো,,
ইথান—-আমি তখন ইহানকে কিছু বলিনি ঠিকই কিন্তু তার মানে এই না যে আমি ওকে মাফ করে দিয়েছি।ও আমার ভাইহয় এইজন্য ওকে কিছু বলতে গেলে আমার কলিজায় লাগে।কিন্তু তার মানে এই না যে অন্যায় করবে আর আমিই প্রশ্রয় দিবো।আমার তো সেইদিনই সন্দেহ হয়েছিলো যেইদিন আম্মু আমাকে বলেছিলো যে ইহান কেনো আমাদের বিয়ের দিনই আিয়ে করলো।এরপর যখন আমি টেস্ট করিয়ে আসি তখন জানো ও একটু বেশিই আগ্রহ ছিলো টেস্টের বিষয় জানার জন্য।এইজন্যই তো আমার ওর উপর সন্দেহ হয়।কিন্তু আমি ভাবতেও পারিনি যে আসলেই ও এমন জঘন্য একটা কাজ করবে।আমার তো ওকে ভাই বলতেও ঘৃনা লাগছে।এতোদিন আমার ভালোবাসা দেখছে ও এবার আমার রাগ দেখবে।আমার লাবুপাখির ক্ষতি করছে।আমি ওকে নিজ হাতে মারতে না পারবো না কারন ও আমার ভাই।কিন্তু ওকে কষ্টে রাখতে ঠিক পারবো।প্রিয় মানুষকে আলাদা করে আমাকে কষ্ট দিতে চেয়েছিলো ও।এবার না ওর নিজের প্রিয় মানুষটাই হারিয়ে যায়।কথাটা ইহানকে বলে দিও কাকিয়া।কথাগুলো বলেই ইথান সেখান থেকে চলে গেলো।
ইহানের মা চুপ করে দাড়িয়ে রইলো।আসলেই ইহান যা করেছে তার ক্ষমা হয় না।ওকে তো শাস্তি পেতেই হবে।কিন্তু ইথানের বলা শেষ কথাটা শুনে ইহানের মা বেশ চিন্তিত।কারন তিনি এই কয়দিনে খুব ভালো করেই বুজে গেছেন যে ইহান আর যাই করুক না কেনো কিন্তু সে ফারিহা ছাড়া অচল।যদি ফারিহা সত্যি তার ছেলেকে ছেড়ে চলে যায় তাহলে তো তার ছেলে শেষ হয়ে যাবে।ছেলে যতই অন্যায় করুক না কেনো মা কি কখনো তার খারাপ চাইতে পারে?ইহানের আম্মুর চিন্তার মাঝেই ডাক্তার আইসিউ থেকে বেড়িয়ে আসলো।
ডাক্তার আইসিউ থেকে বেড়িয়ে আসতেই ইথান গিয়ে তাকে চেপে ধরলো।উত্তেজিত কণ্ঠে বলে উঠলো,,
ইথান—-আমাট লাবিবা কোথায়?ও কেমন আছে ডক্টর?ও ঠিক হয়ে যাবে তো?চুপ করে আছেন কেনো কিছু বলুন।
ইথানের একের পর এক প্রশ্ন শুনে ডাক্তার কিছুটা ঘাবরে যায়।শান্ত কণ্ঠে বলে উঠে সে,,
ডাক্তার—-শান্ত হন ইথাম স্যার।আপনি এতো হাইপার হবেন না প্লিজ।
ডাক্তারের কথা শুনে ইথান ডাক্তারের সার্টের কলার চেপে চিৎকার করে বলে উঠলো,,
ইথান—-আমার লাবিবা ভেতরে কষ্টে আছে আর আপনিই বলছেন আমাকে হাইপার না হতে।শান্ত হতে বলছেন।কখনো কাউকে ভালোবেসেছেন?যদি কাউকে ভালোবাসতেন তাহলে এই কথাটা বলতে পারতেন না।লিসেন ডক্টর,আমার লাবুপাখির যদি কিছু হয় তাহলে আপনাদের সবার চাকরি ছেড়ে দিতে হবে।পথে বসাবো আপনাদের প্রত্যেক কে।যত টাকা লাগে নেও কিন্তু ওকে বাচিয়ে তুলুন
ইথানের কথা শুনে ডক্টর কিছুই বললো না।কারন ওনি জানেন ইথান রাগের বসে এসব করছে।সত্যি ভালোবাসার জন্য মানুষ কেমন উম্মাত হয়ে যায়।ওনি ইথানের কাধে হাত রেখে শান্ত কণ্ঠে বলে উঠলেন,,
ডক্টর—-টাকাটা বড় কথা না।সবকিছু আল্লাহর উপর।তবে আপাদত ভয় নেই কারন লাবিবার জ্ঞান ফিরছে।তবে অতিরিক্ত ব্লাড লসের জন্য শরীর দূর্বল খুব।ওনাকে ব্লাড দেয়া হয়েছে।আর আপনারা হয়তো এতোক্ষণে জেনে গিছেন যে লাবিবার ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে।কিন্তু ওর কেন্সারটা এখনো সম্পূর্ণ রক্তে ছড়িয়ে পরেনি।এমন অবস্থায় আমরা শেষ চেষ্টা করতে পারি।ওনার ব্লাড এক্সচেঞ্জ করতে হবে।তবে সেটা করলে অনেক সময় লেগে যাবে ওনার সেরে উঠতে।হতে পারে আমাদের কাছে ততোদিন সময়ও নেই।তবে এর থেকে ভালো একটা উপায় আছে।ওনার বোনমেরু ট্রান্সফার করতে হবে।তবে সেটার জন্য ওনাকে বোনমেরু একমাত্র ওনার ভাই অথবা বোনই ডোনেট করতে পারবে।পরিবারের সাথেই এটা মেচ করে।আশা করছি আমার কথা আপনারা বুজতে পারছেন।তাই এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের।
ডক্টরের কথা শুনে ইথানের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিলো।সে আর কিছু নিতে পারছে না।এজটার পর একটা ঝড় এসেই চলেছে তার জীবনে।
অন্যদিকে ইহানের সাথে একজন দেখা করতে এসেছে পুলিশ স্টেশনে।ইহানের সামনে যেতেই ইহান তাকে দেখতে পেয়ে বেশ অবাক হলো।তবে সে খুশিও হলো খুব।ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটিয়ে বলে উঠলো ইহান,,
#চলবে?
#গোধূলীতে_তুমি_প্রিয়
#পর্ব_১৮
#লেখিকা_রুবাইতা_রিয়া
আমি জানতাম ফারিহা তুমি আমার সাথে ঠিক দেখা করতে আসবে।আমাকে তো তুমি ভালোবাসো।আমাকে ছেড়ে থাকতে তোমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো তাই না?জানো আমার ও না খুব কষ্ট হচ্ছিলো।তোমাকে একটা নজর দেখার জন্য মনটা ছটফট করছিলো।বিশ্বাস করো আমি তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি।কথাগুলো একদমে ফারিহার উদ্দেশ্যে বলে উঠে ইহান।
হ্যা ইহানের সাথে ফারিহা দেখা করতে এসেছে।তখন ডাক্তারের কথাগুলো শুনার পরই সে সেখান থেকে সবার চোখের আড়ালে বেড়িয়ে আসে ইহানের সাথে দেখা করতে।
ইহানের কথাগুলো ফারিহা তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলো,,
ফারিহা—-আপনার কি মনে হয় যে আমি এখানে ভালোবাসার টানে এসেছি?মোটেও না মিস্টার ইহান।আপনার জন্য আমার মনে এক ফোটাও ভালোবাসা অবশিষ্ট নেই।আমাকে মাত্র কয়েক ঘন্টা দেখতে পারেন নি বলে আপনি এতোটা ছটফট করছেন।তাহলে একবার ভেবে দেখুন তো ইথান ভাইয়ের মনে কি চলছে?ওনার মনটা লাবিবার জন্য ঠিক কতটা ছটফট করছে।আজকে যদি লাবিবার কিছু হয় তার জন্য কিন্তু শুধুমাত্র আপনি দায়ী থাকবেন।ইথান ভাইয়াকে যে কষ্ট দিচ্ছেন তার দিগুন কষ্ট আপনি ভোগ করবেন।
ফারিহার কথা শুনে ইহান চুপ করে রইলো।তার কিছু বলার মুখ যে আর নেই।আসলেই সে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলছে।ইহান ফারিহার দিকে অপরাধীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো,,
ইহান—-ফারিহা আমি জানি আমি যা করেছি তার কোনো ক্ষমা হয় না।আমি অনেক বড় অন্যায় করেছি ইথান ভাইয়া আর লাবিবার সাথে।সবাই আমাকে ঘৃণার চোখে দেখে এখন।এমনকি আমার যেই ইথান ভাই আমাকে সবথেকে বেশি ভালোবাসতো সেও আমাকে সয্য করতে পারছে না।আমি জানিনা লাবিবা সবটা শোনার পর আমাকে ঠিক কতটা ঘৃণা করবে।কিন্তু আমি আমার এই জঘন্য কাজের জন্য অত্যন্ত লজ্জিত।আমি লোভ আর হিংসায় নিজের পরিবারের সাথে অন্যায় করেছি।নিজের বোনকে মারতে চেয়েছি।এর কোনো ক্ষমা হয় না ঠিকই কিন্তু আমি আমার ভুলগুলো সুদরে নিতে চায়।ভুল তো মানুষ মাত্রই হয়।আমাকে কি একটা সুযোগ দেয়া যায় না?
ইহানের কথা শুনে ফারিহা রাগী কণ্ঠে বলে উঠলো,,
ফারিহা—-আপনি যেটা করেছেন সেটা ভুল নয় বরং অন্যায় ছিলো।ভুল করলে ক্ষমা করা যায় কিন্তু অন্যায় করলে ক্ষমা করা যায় না।আপনার করা জঘন্য কাজের শাস্তি তো আপনি পাবেনই কিন্তু চাইলে আপনি আপনার এই পাপের বোঝা কমাতে পারেন।হয়তো এতে একটু হলেও সবার আপনার উপর থাকা ঘৃণাটা কমবে।
ফারিহার কথা শুনে ইহান বেশ অবাক হলো।অবাক কণ্ঠে বলে উঠলো সে,,
ইহান—-তুমি ঠিক কি বলতে চাইছো ফারিহা?আমি কি করলে সবার আমার উপর ঘৃণা কমবে?কি করলে ইথান ভাই আমার উপর আর রাগ করে থাকবে না।তুমি যা বলবে আমি তাই করবো ফারিহা।প্লিজ আমাকে বলো কিছু।আমি আর কিছু নিতে পারছিনা।
ইহানের কথা শুনে ফারিহা চুপ করে রইলো।কিছুক্ষণ আগেও এই মানুষটা কত ঘৃণা নিয়ে ইথান ভাইয়ের সাথে কথা বলেছিলো।নিজের বোনকে মারতে চেয়েছিলো।আর এই কয়েক ঘন্টায় কতটা বদলে গিয়েছে।ইহান কি আদৌ বদলে গেছে নাকি সবটা নাটক?ফারিহার চিন্তার মাঝেই ইহান কান্না জড়িত বলে উঠলো,,
ইহান—-আচ্ছা ফারিহা লাবিবা কেমন আছে?জানি আমার মুখে ওর খোজ নেওয়া মানায় না।আজ ওর এই অবস্হা শুধুমাত্র আমার জন্য।কিন্তু তবুও একটাবার জানতে ইচ্ছা করছে ও কেমন আছে?
মাথা নিচু করে কথাগুলো বললো ইহান।তার চোখের কোণে পানি চিকচিক করছে।সে যে কত বড় ভুল করেছে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এখন।
ফারিহা ইহানের এমন কথা শুনে ওর দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।যদি ইহান মন থেকে অনুতপ্ত না হতো তাহলে হয়তো লাবিবার খোজ করতো না।ফারিহা নিশ্চিত হলো যে আসলেই ইহান মন থেকে তার এই জঘন্য কাজের জন্য অনুতপ্ত।ফারিহা শান্ত কণ্ঠে বলে উঠলো ইহানকে,,
ফারিহা—-লাবিবা আগে থেকে এখন বেটার।ওর জ্ঞান ফিরছে।তবে কি জানেন তো আপনি আপনার জঘন্য কাজে সফল হননি।ডক্টর বলেছে লাবিবার বোনমেরু ট্রান্সফার করলেই ও সুস্হ হয়ে যাবে।আর কোনো সমস্যা থাকবে না।ভাগ্য তো ইথান ভাইয়ার থেকে তার প্রেয়সীকে কেড়ে নেয়নি কিন্তু আপনার কে জানে আপনার থেকে হয়তো আপনার প্রিয় মানুষটাকে কেড়ে নিবে।আসলে অন্যকে কষ্ট করতে চাইলে নিজেরই ক্ষতি হয়।
ফারিহার কথা শুনে ইহানের বুকের মাঝে ধক করে উঠলো।তারমানে কি ফারিহা তাকে ছেড়ে চলে যাবে?এমন হলে ইহান যে জীবন্ত লাশ হয়ে যাবে।সে যে ফারিহাকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারে না।ফারিহার দিকে অসহায় ভাবে তাকালো ইহান।কিছু বলার ভাসা জানো সে হারিয়ে ফেলছে।এমন সময় ফারিহা আবারো বলে উঠলো,,
ফারিহা—-এখন এসব কথা বাদ দেন।আসল কথায় আসি যার জন্য আমি এখানে এসেছি।আর সেটা হলো লাবিবার বোনমেরুর ট্রান্সফারের জন্য।
ফারিহার কথা শুনে ইহান অবাকের সুরে বলে উঠলে,,
ইহান—-তুমি ঠিক কি বলতে চায়ছো ফারিহা?কোনোভাবে কি লাবিবাকে বোনমেরু আমাকে দিতে বলছো?
ফারিহা—-একদম ঠিক ধরছেন।আমি চায় লাবিবাকে বোনমেরু আপনিই দিবেন।তবে মনে করবেন না যে বোনমেরু দিয়ে আপনি লাবিবাকে দয়া করছেন।কারন লাবিবার এই অবস্হার জন্য আপনই দায়ী।তাই আপনি যদি ওকে বোনমেরু দেন তাহলে হয়তো আপনার অন্যায়ের শাস্তি কিছুটা কমবে।মনে করে নিবেন যে এটা আপনার করা অন্যায়ের ছোট্ট একটা প্রায়শ্চিত্ত ছিলো।এতে হয়তো পরিবারের সবার আপনার প্রতি ঘৃণাটাও কমবে।
ফারিহার কথা শুনে ইহান চুপ করে রইলো।কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে শান্ত কণ্ঠে বলে উঠলো সে,,
ইহান—-সব বুজলাম।আমি লাবিবাকে বোনমেরু দিতে রাজি।কিন্তু ওর সাথে কি আমার বোনমেরু ম্যাচ করবে?এটা তো শুধুমাত্র নিজের ভাই বোনের সাথে ম্যাচ হয়।কিন্ত ও তো আমার চাচাতো বোন।আর তাছাড়া যদি ভাগ্যক্রমে মিলেও যাই তাহলে ইথান কি আমার মতন খারাপ মানুষকে লাবিবাকে বোনমেরু দিতে দিবে?আর তাছাড়া আমাকে এই জেল থেকে বের হতে হবে তো তাহলে নাহলে আমি বোনমেরু দিবো কিভাবে??
ফারিহা—-সেটা আপনাকে ভাবতে হবে না।পুলিশের লোকের সাথে আমার কথা হয়েছে।তারা আপনাকে যেতে দিবে হস্পিটালে কিন্তু আপনার সাথে তাদের গার্ডরাও যাবে যাতে আপনি পালাতে না পারেন।আর বাকি বিষয়টা আমি হস্পিটালে গিয়ে দেখছি।বোনমেরু ম্যাচ হলে ইথান ভাইকে মেনেজ করার দায়িত্ব আমার।এখন চলুন আমার সাথে।
একজন কনস্টেবল এসে জেলের দরজা খুলে দিতেই ইহান বেরিয়ে এলো ফারিহার সাথে।বাহিরে এসে সে কিছু একটা ভেবে ফারিহার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,,
ইহান—-আচ্ছা ফারিহা লোবা তো লাবিবার নিজর বোন।ও কেনো বোনমেরু দিচ্ছে না?আমি যতদূর জানি এটা শুধু নিজের ভাই বোন আর মা বাবার সাথে ম্যাচ করে।সেখানে আমার সাথে ম্যাচ করাটা তো একটা নাটকীয় ব্যাপারের মতন।
ইহানের কথা শুনে ফারিহা শান্ত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,
ফারিহা—-লোবার সাথে লাবিবার বোনমেরু ম্যাচ করবে না আমি জানি।যদি লাবিবার বোনমেরু কারোর সাথে ম্যাচ করে তাহলে সেটা শুধু আপনি।আপনি আপনার জীবনের সবথেকে বড় সত্যিটা জানতে চলেছেন মিস্টার ইহান।যে সত্যিটা আপনার জীবনে ঝড় বয়ে আনবে।আপনি নিজেকে ক্ষণে ক্ষণে দোষী মনে করবেন আপনার এই জঘন্য কাজের জন্য,,,
#চলবে??