গোধূলী বেলায় প্রেম পর্ব-৩+৪

0
4414

#গোধূলী_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-৩|

রীতি চায়ের কাপ হাতে বারান্দায় এসে দাড়ালো।প্রতিদিনকার মতো চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আর প্রকৃতির স্নিগ্ধতার মাঝে ডুব দিচ্ছে।
সাদিব বাম হাতে চুলে ব্রাশ করতে করতে ডান হাতে গাছে পানি দিচ্ছে।
একমনে যেভাবে পানি দিচ্ছে যেনো সেও রীতির মতো প্রকৃতিতে ডুব দিয়েছে।
রীতি সকাল সকাল সাদিবকে গাছের পরিচর্যা করতে দেখে অবাক হলো।প্রতিদিন এই সময় মালি গাছে পানি দেয় সাদিবকে কখনো দেখেনি পানি দিতে।
রীতি চায়ের কাপ রেখে দিলো।তারপর বই খোলে বসলো।
হুমায়ুন আহমেদের “অপেক্ষা”।
রীতি অস্ফুটস্বরে বললো,
—–” অপেক্ষা!”
অপেক্ষার মতো কষ্টকর শব্দ এ দুনিয়ায় দুটো নেই।
তারপর নিজের মনে হেসে উঠলো।
নিচের দিকে চোখ দিলো।সাদিব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কপালের ঘাম মুছছে।
হটাৎ সাদিবের চোখ তিনতলার বারান্দায় আটকে গেলো।ঠিক বারান্দায় নয় বারান্দায় চশমার আড়ালে অস্পষ্ট এক জোড়া মায়াবী চোখের মাঝে।
রীতির সাদিবের সাথে চোখাচোখি হতেই রীতি চোখ সরিয়ে নিলো।ওর বুক ঢিপঢিপ করছে।এভাবে ধরা খাবে বুঝতে পারেনি।রীতি তাড়াতাড়ি বারান্দা ত্যাগ করে রুমে চলে গেলো।
সাদিব তখনও বিস্ময় নিয়ে বারান্দায় চেয়ে আছে।

সাদিব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে নিচে চলে আসে।মালি যখন পানি দিতে যাবে তখনই সাদিব বললো,
—-“মামা,আজ থেকে আমি রোজ সকালে গাছে পানি দেবো।আপনি বাগান পরিস্কার অন্যসব কাজ করবেন।”

সাদিবের কথা শুনে তিনি টাস্কি খেলেন।হটাৎ কি এমন হলো যে গাছে পানি দেওয়ার দায়িত্ব নিজে নিয়ে চাইছে।
—–“বাবা,কি হয়েছে কোনো সমস্যা?আমি তো ঠিকঠাক পানি দেই।কোনো অযত্ন করিনা।”

সাদিব আশ্বস্ত করে বললো,
—–“আরে না মামা।কোনো সমস্যা নেই।আমি এমনিতেই পানি দেওয়ার দায়িত্ব নিচ্ছি।ভালো লাগছে তাই।”

তারপর সাদিব গাছে পানি দেওয়ার কাজে লেগে গেলো।রীতিকে হটাৎ ওর দিকে চেয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়েছে কিছুটা।তবে বেশি ভাবতে কিংবা ঘাটতে যায়নি বিষয়টি।

রীতি রেডি হয়ে নাস্তার টেবিলে গেলো।বাবা নাস্তা করছে।রিমন স্কুলে চলে গেছে।
রীতির বাবা রীতিকে দেখে বললো,
—–“কি কেমন লাগছে এখানে?কোনো সমস্যা হচ্ছে?”

—–“না বাবা খুব ভালো লাগছে।না মানে ভালোই লাগছে।কোনো সমস্যা হচ্ছে না।(সবটাই সাদিবের জন্য।ওর জন্য আমার মন এখানে টিকে গেছে।)”

—–“আচ্ছা কোনো সমস্যা হলে জানাবি।আর সবার সাথে মেশার চেষ্টা কর ভালো লাগবে।তোর মা বললো পাশের ফ্ল্যাটের একটা মেয়ে এসেছিলো নাম দিয়া।মেয়েটা নাকি চটপটে তোর সাথে বন্ধুত্ব করতে এসেছিলো।ওর সাথে বন্ধুত্ব করে নিস ভালো লাগবে।সময় কেটে যাবে।”

রীতি পরটা ছিড়তে ছিড়তে বললো,
—–“হ্যা বাবা,ওর সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।মেয়েটা খুব মিশুক।”

.

বিকেলে দিয়া ১৬-১৭ বছরের একটা মেয়েকে নিয়ে হাজির।রীতি মেয়েটাকে চিনতে পারছেনা।হয়তো এই বিল্ডিংয়ের অন্য কোনো ফ্ল্যাটের কেউ হবে।
রীতি দুজনকে বসতে দিলো।তারপর দিয়াকে ইশারায় জিজ্ঞেস করলো কে এই মেয়ে।

—–“রীতি আপু,ওর নাম সাবিহা বাড়িওয়ালা আংকেলের ছোট মেয়ে।ওই যে সেদিন দেখালাম সাদিব ভাইয়া তার ছোট বোন।”

রীতির ক্রাশের ছোট বোনও মাশাল্লাহ।রীতি ওকে দেখে খুব খুশি হয়েছে।রান্নাঘর থেকে হালকা নাস্তা পানি এনে দিলো।ওর কেন জানি মনে হচ্ছে সাবিহার সাথে ভাব জমাতে হবে।খুব করে ভাব।

রীতি সাবিহার সাথে আলাপচারিতা শুরু করলো।
—–“সাবিহা কিসে পড়ো তুমি?”

—–“আপু ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।”

—–“এখানে নতুন আসায় চিনতে পারিনি।কিছু মনে করোনা।মাঝেমধ্যে এসো ভালো লাগবে আমার।”

—–“হ্যা আপু অবশ্যই আসবো।দিয়া আপুর কাছে আপনার কথা শুনে মিট করতে চলে এলাম।দিয়া আপু আপনার খুব প্রসংশা করেছিলো তাই দেখার লোভ সামলাতে পারিনি।”

—–“ভালো করেছো।এরপর থেকে যখন ইচ্ছে হবে চলে আসবে।আমি বাড়িতে না থাকলেও সমস্যা নেই।আমার মায়ের সাথে তোমার ভালো সময় কাটবে।”

দিয়া তখনই বললো,
—–“আর ইয়াম্মি ইয়াম্মি খাবার।আন্টির রান্না খুব ভালো।মুখে লেগে থাকার মতো।”
রীতি আর সাবিহার চোখে চোখ পড়তেই দুজনেই উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।

সাবিহা বললো,
—–“চলো আপু ছাদে যাই।অনেকদিন ছাদে যাওয়া হয়না।”

রীতি বললো,
—–“আমি রোজ যাই।ছাদে গোধূলি বেলায় বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে।তাই রোজ নিয়ম করে যাই।চলো।”

রীতি ছাদের রেলিঙ ধরে দাড়িয়ে আছে। আজকে ওর সাথে বই নেই।ও ঠিক করেছে আজ ওদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় কাটাবে।
বিকেল পড়ে গেছে।গোধূলী আকাশে আবীর ছড়িয়ে পড়েছে।রক্তিম আকাশ বেশ লাগছে।কিছুক্ষণ পর দূর আকাশ হতে সন্ধ্যা নামবে।সব ঝাপসা করে দিবে।পাখিরা নিড়ে ফিরতে ব্যাস্ত হয়ে যাবে।পুরো দুনিয়া অন্ধকারে তলিয়ে যাবে।রোজকার নিয়ম।কি সাংঘাতিক নিয়ম।

রাতে সাবিহা ওর মায়ের সঙ্গে রীতিকে নিয়ে অনেক কথা বলছে।সাদিব পাশে বসে বসে ফোন ঘাটছে আর মাঝেমধ্যে কান পেতে সাবিহার কথা শুনছে।
তারপর বিরক্তি নিয়ে সাবিহাকে বললো,
—–“তুই সারাজীবন অন্যের প্রসংশা করে যাবি কারণ নিজে প্রসংশা পাওয়ার মতো কিচ্ছু করিস নি।যা অন্যের প্রসংশা না করে পড়তে যা।”

সাবিহা ভেংচি কেটে বললো,
—–“মা তোমার ছেলের হিংসা হচ্ছে।”

সাদিবের মা বললো,
—–“আমার ছেলের হিংসা কেনো হবে?আমার সোনার টুকরো ছেলে।পুরো মহল্লায় এমন একটা ছেলে নেই।”

সাবিহা উঠে দাড়িয়ে বললো,
—-“হ্যা যত খারাপ তো আমি।খুশি হয়েছে ভাইয়া? প্রসংশা পাওয়ার জন্যই তো এমন করছিলে এতোক্ষণ।”

সাবিহা বিরবির করতে করতে নিজের ঘরে গেলো।
সাদিবের বড় বোন মারিয়া ওকে দেখে মায়ের কাছে এসে বললো,
—-“ওর আবার কি হলো?কাকে বকছে?”

সাদিব মুচকি হেসে বললো,
—–“কাকে আবার?আমাকে।মা আমার প্রসংশা করেছে ওর লেগে গেছে।আমার ভাগ্নে কই?”

অভি দৌড়ে সাদিবের কোলে বসে বললো,
—–“এই তো অভি চলে এসেছে।মামা যেখানে ভাগ্নে সেখানে।”

—–“ইয়েস! অভি বাবু।মামা ভাগ্নে যেখানে আপদ নেই সেখানে।”

মারিয়া হেসে বললো,
—–“তোদের দুটোকে নিয়ে আর পারিনা।বাসায় চলে গেলে অভি মামার জন্য কেদে চোখ ভাসিয়ে ফেলবে।”

—–“অভিকে রেখে তোকে বিদায় করে দেবো।”

মারিয়া চোখ বড়বড় করে বললো,
—–“বোনের চেয়ে ভাগ্নে বেশি হয়ে গেলো? ”

—–“অভি আমার জানের জান।কলিজার টুকরো।”

সাদিব অভির গাল টেনে দিলো।

রীতি ছাদে জামাকাপড় আনতে যাচ্ছে।সিড়ি ঘরের দরজার সামনে দাড়াতেই সাদিবকে দেখে।
ওর বরাবর কানে হেডফোন গুঁজে দাড়িয়ে আছে।নজর নিজের ফোনের দিকে।সাদিব গান শুনছে আর ফেসবুকিং করছে মনোযোগ দিয়ে।
রীতি আর ভেতরে যাওয়ার সাহস করলোনা।সেদিন চোখাচোখির যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আর সাদিবের সামনে পড়ে লজ্জায় মিশে যেতে চায়না।
তাই উল্টো হাটা দিলো।খুব দ্রুত সিড়ি পাড় করছে।দ্রুত সিড়ি পাড় করতে গিয়ে ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলে।ছিটকে পড়ে যেতে নেয় দেয়ালের দিকে।রীতি নিজেকে বাচানোর জন্য দুহাতে দেয়াল ধরে দেয়ালের সাথে বাড়ি খাওয়া আটকাতে পারলেও ওর চোখের চশমাটা ছিটকে পড়ে যায় মেঝেতে।রীতির দুহাতের তালু জ্বলে যাচ্ছে।
রীতি চশমার দিকে নজর দেয়।চশমার ফ্রেমের কাচ ভেঙে পড়ে আছে।রীতি দুহাত ডলতে ডলতে চশমার দিকে অসহায় ভাবে চেয়ে আছে।এই চশমার মাসের মধ্যে ১০বার না ভাংলে শান্তি হয়না।মায়ের কাছে এর জন্য আবারো বকা খেতে হবে।কিছু করার নেই সবই কপাল।
রীতি কারো পায়ের শব্দে উপরের দিকে তাকালো।সাদিব নামছে।সাদিবকে দেখা মাত্রই রীতি নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।

—–“যেখানে আছো সেখানেই দাড়াও।”

রীতি সাদিবের কঠিন কন্ঠ শুনে দাড়িয়ে গেলো।
সাদিব রীতির সামনে গিয়ে দাড়ালো।রীতির মুখ কেমন থমথমে হয়ে আছে।রীতি একবার মাথা তুলে সাদিবের দিকে তাকালো।সাদিব অদ্ভুত দৃষ্টি দিয়ে চেয়ে আছে।
সাদিবের কাছে রীতিকে কেমন অন্যরকম লাগছে।সাদিবের কেন জানি মনে হচ্ছে এ অন্য রীতিকে দেখছে।কারণ উদঘাটন করতে সাদিবের অনেক সময় লেগে গেলো।রীতির চোখে আজ চশমা নেই।চশমা ছাড়া রীতিকে অন্যরকম লাগছে।
সাদিব মেঝেতে ভাংগা চশমা দেখতে পেলো।
সাদিব ভাংগা চশমা হাতে তুলে নিয়ে বললো,
—–“কি চশমা ভেঙে গেছে?”

রীতি মাথা নাড়িয়ে হ্যা বুঝালো।
সাদিব বললো,
—–“বেশ হয়েছে।একদম ঠিক হয়েছে।”

সাদিবের এমন কথা শুনে রীতির প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।চশমা ভাংগার জন্য মায়ের বকুনিঝকুনি খেতে হবে।আর ও হাসছে।ওর ক্রাশবয় ওর অবস্থা দেখে হাসছে।রীতি মনে মনে গালি দিচ্ছে সাদিবকে ওর জন্যই তো সব হলো আর ও হাসছে।
রীতি কিছু না বলে গাল ফুলিয়ে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।

—–“কোথায় যাচ্ছো?”

রীতি রাগী ফেস করে বললো,
—–“ঘরে যাচ্ছি আবার কোথায় যাবো?”

সাদিব মনে পড়ার ভংগীতে বললো,
—–“ও হ্যা মনে পড়েছে দোতলার দুই নম্বর ফ্ল্যাটে।কিন্তু দোতলায় তো দু নম্বর ফ্ল্যাট নেই।কারণ পুরোটাই আমরা থাকি তাহলে তুমি কোথায় থাকো?”

রীতির সাদিবের কথা মাথায় কিছুই ঢুকছেনা কি বলছে।সাদিবরা দোতলায় থাকে সেটা তো ও জানেইনা।
—–“মানে?”

—–“ইউ নো ব্যাটার।তুমি সেদিন বলেছো দোতলার দুই নম্বর ফ্ল্যাটের নতুন ভাড়াটিয়া তোমরা।”

—–“আপনি ভুল শুনেছেন।আমি তা কেনো বলবো?আপনার শোনার ভুল ছিলো।আমরা তিনতলায় থাকি।”(তোতলাতে তোতলাতে)

রীতি আর কথা না বাড়িয়ে সাদিবকে কোনো রুপ পরোয়া না করে তাড়াতাড়ি চলে এলো।যেনো পালিয়ে বাচে।
ও জানতো নাকি সাদিব দোতলায় থাকে।মিথ্যা বলেছিলো আর ধরাও খেলো।
সাদিব পেছনে থেকে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।
সে হাসির শব্দ রীতির কানে আসছে।রীতি যতই নিচের দিকে যাচ্ছে মুগ্ধ করা সেই হাসির শব্দ মিলিয়ে যাচ্ছে।
রীতি সাদিবের সাথে সাথে নিজেকেও গালাগাল করলো।
“যতটা ভালো ভেবেছিলাম ততটা ভালো নয়।ব্যাটা মিনকা শয়তান।এইজন্য সেদিন দোতলা বলার পর মিটমিট করে হাসছিলো।আমি কি বোকা? আমি বুঝিনি সেদিন তার সেই হাসির মানে।ব্যাটা ইতর।এর উপর আমি ক্রাশ খেয়েছি?আজ ওর জন্য আমার চশমা ভেঙে গেলো।এখন একটা দিন আমার চশমা ছাড়া থাকতে হবে।”

চলবে……

#গোধূলী_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব~৪|

রীতি নাক ফুলাচ্ছে আর রাগে মুখ দিয়ে ফুসফুস শব্দ করছে।
ওর রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।ওর মা ওকে এমন করতে দেখে এসে বললো,
—–“কিরে কি হয়েছে এমন করছিস কেনো?আর তোকে না ছাদ থেকে জামাকাপড় আনতে পাঠালাম খালি হাত কেনো?”

রীতি কিছুই বলছেনা।টেবিলের উপর থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে এক নিশ্বাসে শেষ করে ফেললো।
রীতির মায়ের ব্যাপারটা ভালো ঠেকছে না।
—–“রীতি কি হয়েছে?”

রীতি চেয়ার টেনে বসে ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,
—–“চশমা ভেঙে গেছে।”

রীতির মা রীতির কথা শুনে খুশি হয়ে বললো,
—–“বেশ হয়েছে।একদম ঠিক হয়েছে।”
রীতি মায়ের কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।ওর মায়ের খুশি হওয়া নিয়ে অবাক হয়নি কারণ এতে ও অভস্ত্য।প্রতিবার চশমা ভাংগার পর ওর মা প্রচুর খুশি হয়।বাচ্চারা যেমন ঈদে খুশি হয় ঠিক তেমনি।আর তখনই রীতিকে মায়ের বকুনি খেতে হয়।বকুনি খাওয়ার কারণ রীতি নতুন চশমা নিতে চায় আর ওর মা তাতে ঘোর আপত্তি জানায়।এ নিয়ে দুদিন চলতে থাকে তারপর বাবা চশমা এনে দেন।
রীতির আপাতত অবাক লাগছে সাদিব আর ওর মা একদম সেম কথা কি করে বললো?
“বেশ হয়েছে।একদম ঠিক হয়েছে।”
দুজনের ক্যাটাগরি এক।নিশ্চয়ই কানেকশন আছে।

রীতির মা রীতিকে আয়নার সামনে নিয়ে দাড় করালো।রীতি বিরক্তি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।রীতি ভালো করেই জানে এই মুহূর্তে ওর মা কি বলবে।
রীতির মা রীতির থুতনি উঁচু করে আয়নায় চেয়ে বললো,
—-“মাশাল্লাহ আমার মেয়েকে চশমা ছাড়া
কত সুন্দর লাগে।”

রীতি কপাল কুচকে বললো,
—–“সুন্দর অসুন্দর বুঝিনা।ইউ নো চশমা না পড়লে আমার ভালো লাগে না।অভ্যাস হয়ে গেছে।”

—–“হ্যা হয়েছে তো খারাপ অভ্যাস।এমন সারাক্ষণ চশমা পড়ে থাকলে ভালো ঘরে বিয়ে হবেনা।”

রীতি মায়ের কথা শুনে অবাক না হয়ে পারলোনা।এ যুগের শিক্ষিত মানুষ হয়েও এসব কথা।
——“মা তুমি এ যুগের শিক্ষিত মা হলেও সেযুগের মায়েদের মতো কথা বলছো।লাইক সিরিয়াসলি?”

—–“আমি যা বলছি ঠিক বলছি।এমন নয় তুই চশমা ছাড়া কিছুই দেখিস না।তাহলে সারাক্ষণ চশমা পড়ে ঘুরে বেড়ানোর কি দরকার?যখন পড়তে বসবি তখন ব্যবহার করলেই তো হয়।ডাক্তার বলেছে চোখের অনেক ইমপ্রোভ হয়েছে।তাহলে? নাকের কাছে দাগ পড়ে কি অবস্থা হয়েছে।আর চশমা পাবিনা।তোর বাবা যদি এইবার চশমা এনে দেয় আমি বাড়িতে তান্ডব লাগিয়ে দেবো।মেয়েটাকে একদম উচ্ছনে দিচ্ছে।সব আবদার পূরণ করতে হবে কেনো?মাঝেমধ্যে একটু শাসন করতে পারে।”

রীতি নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো।মা তার জ্ঞানের ভান্ডার খোলে বসেছে।যতক্ষণ এখানে থাকবে চলতেই থাকবে তাই চলে যাওয়া ব্যাটার।আবার দুদিন বাবার কাছে প্যানপ্যান করতে হবে, মায়ের বকুনি খেতে হবে তারপর চশমা পাবে।
এই জন্য সাদিবকে ইচ্ছে মতো বকছে রীতি।

.

রীতি মুখ ভার করে রাতের খাবার খাচ্ছে।রীতির বাবা সেটা খেয়াল করলো।
পুরো পৃথিবী এক দিকে মেয়ে আরেক দিকে তার।
—–“রীতি মুখ ভার কেন কি হয়েছে? মা বকেছে?”
রীতি উত্তর দেওয়ার আগেই রিমন বললো,
—–“আপুর চশমা ভেঙে গেছে।”

রীতির বাবা রীতির মায়ের মুখের দিকে তাকালো।রীতির মা বললো,
—–“আমার দিকে কেনো তাকাচ্ছো?”

—–“তুমি আবারো চশমার জন্য বকেছো?চশমা না দেওয়ার জন্য ধমকি দিয়েছো?”

—–“আচ্ছা তোমার কি কোনো চিন্তাভাবনা নেই?মেয়ের বিয়ে দিতে হবেনা? এমন সারাদিন চশমা পড়ে থাকলে মেয়ের জন্য ভালো ছেলে পাবে?”

—-“কি বিয়ে বিয়ে করছো তুমি?মেয়ে আমার বিসিএস ক্যাডার হবে।বড় চাকরি করবে।তখন দেখবে ছেলেরা বিয়ের জন্য লাইন ধরবে।আর তুমি ওর চশমা নিয়ে পড়ে আছো?বাহ্যিক সৌন্দর্য খোজছো?আমার মেয়ে দেখতে কোন দিক দিয়ে খারাপ?”

—–“থামো তো তুমি।আমি বলছি চশমা পড়বে না ব্যাস পড়বেনা।তুমি যদি বাড়িতে চশমা এনেছো তো আমি এ বাড়ি ছাড়বো।খারাপ অভ্যাস বানিয়ে ফেলছে মেয়ের।”

রীতি বাবাকে ইশারা করছে চুপ থাকার জন্য।
রীতির মা যেতেই রীতির বাবা বললো,
—–“তোর মা প্রচন্ড ক্ষেপেছে।”

—–“বাবা বাদ দেও।দু-এক দিন যাক তারপর মায়ের মাথা ঠান্ডা হলে এনে দিও।”

—–“আচ্ছা।ম্যানেজ করে নে কিছুদিন।”

~দুদিন পর ~
রীতির বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী আজ।রীতি আর রিমন উনাদের জন্য সারপ্রাইজ রেখেছে।রীতি মায়ের পছন্দ মতো কয়েকটা রান্নার বই এনেছে।মাকে পটানোর জন্য।বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে তাতের শাড়ি,বাবার জন্য ঘড়ি,দামী কলম।রীতি আর রিমন মিলে রাতে ছোট খাটো একটা অনুষ্ঠান রেখেছে।প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করে দুই ভাইবোন ফিরছে।

রীতির হাতে কেকের বক্স,আরো কিছু ব্যাগ।রিমন একটা ব্যাগ হাতে আরামসে হাটছে।রীতি বারবার রিমনকে আরেকটা ব্যাগ নিতে বলছে।

সাদিব কাধে ব্যাগ নিয়ে হাতে বাইকের চাবি নিয়ে ভার্সিটির জন্য বের হচ্ছে।রীতি আর রিমনকে ঝগড়া করতে দেখে সিড়িতে দাড়িয়ে গেলো।
রীতি রিমনকে বলছে,
—–“আমার হাত ভেঙে যাচ্ছে।একটা ব্যাগ নে।কাধে আমার কলেজ ব্যাগ।হাতে ব্যাগ,কেকের বক্স আমি এতো কিছু নিতে পারছিনা।পড়ে গেলে তোর খবর আছে।”

রিমন পাত্তা দিচ্ছেনা।রীতি রিমনের সামনে দাড়িয়ে গেলো।রিমন ত্যাড়ামি করছে।
—–“আমি নিতে পারবোনা বলেছি।তালগাছ কানে শুনিস না?”

—–“ফুটবল! বাবাকে দিয়ে যদি বকা না খাইয়েছি?বাড়িতে চল তোর পিঠের ছাল তুলে নেবো।”

আর তখনই রীতির হাত থেকে ঠাস করে কেকের বক্স পড়ে গেলো।দুজনেই চোখ গোলগোল করে বক্সের দিকে চেয়ে আছে।যেভাবে পড়েছে তাতে নির্ঘাত চ্যাপ্টা হয়ে গেছে।রিমন ভয়ে ঢোক গিলছে।রীতি যে ওকে লবন-মশলা ছাড়া খেয়ে ফেলবে তা নিশ্চিত বুঝতে পারছে।

রিমন ভয়ে ভয়ে রীতির দিকে তাকালো।সাদিব রিমনকে দেখে ভাবছে,
—-“বেচারা রিমন।এই মুহুর্তে আমি ছাড়া তোকে কেউ বাচাতে পারবেনা।”

সাদিব ওদের দিকে এগিয়ে এলো।রীতি রিমনকে মারতে যাবে তখনই সাদিবকে দেখে থেমে গেলো।
রীতির সাদিবকে দেখে প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে।সব সময় কেনো এই ছেলের সামনেই এক্সিডেন্টগুলো হয়?কেনো নিজেকে নিজেই আনাড়ি প্রমাণ করে বারবার? নিজেই নিজের বেজ্জতি করে বারবার।সেদিন বই পড়লো,তারপর চশমা পড়ে ভেঙে গেলো,আজ কেক পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে গেলো।
রীতির রাগে,ক্ষোভে কান্না চলে আসছে।বারবার লজ্জায় পড়তে হয় কেনো?
রীতি রিমনকে কিছু না বলে ভার মুখে উপরে চলে গেলো।

সাদিব রিমনের সামনে এসে বললো,
—-“কিরে রিমন ঘটনা কি?”

রিমন সব খোলে বললো।
—–“এখন কি হবে?আপু আমায় খুব মারবে।এই কেক দুদিন আগে অর্ডার করে এনেছি।এখন কি হবে? কেক কাটা হবেনা।আপু যে আমায়..”(দুঃখী দুঃখী ভাব করে)

সাদিব ওর কাধ চাপকে বললো,
—–“আরে দূরর আপু আপু করিস না তো?ডোন্ট ওরি।কেক পেয়ে যাবি।আমি এনে দেবো।”

রিমন খুশি হয়ে বললো,
—-“সত্যি! ”

—–“হান্ড্রেড পার্সেন্ট।”

.

রীতি গাল ফুলিয়ে বসে আছে।একে তো কেক নষ্ট হয়ে গেছে তার উপর সাদিবের সামনে বেজ্জতি হয়েছে।রিমনকেও সুযোগ মতো পাচ্ছে না।ওকে ইচ্ছে মতো না কেলাতে পারলে শান্তি হবেনা।

.

সাদিব কেক নিয়ে চলে এসেছে।সাথে রিমন।রিমনের সাথে সাদিব ফ্ল্যাটের ভেতরে গেলো।এই প্রথম রীতিদের বাসায় ঢুকছে।কেমন অস্বস্তি লাগছে।ভেতরে যেতে চায়নি কিন্তু রীতির মায়ের জোরাজোরিতে যেতে বাধ্য হলো।
সাদিবকে সোফায় বসিয়ে রেখে রীতির মা নাস্তা পানি আনতে যাচ্ছে।
রিমন আর সাদিব সিক্রেট কথা বলছে ফিসফিস করে।

রীতি গিয়েছে দিয়াদের ফ্ল্যাটে।নিজের রুমে ঢুকে সাদিবকে ওয়াশরুমের সামনে দেখে চিতকার করে উঠলো।
সাদিব কিছু বলার সুযোগ পেলোনা তার আগেই রীতি চিতকার শুরু করে দিয়েছে।রীতি সাদিবকে দেখে হটাৎ চমকে যায়।তাই চিতকার করে উঠে।
রীতির চিতকারে ওর মা আর তার পেছনে পেছনে রিমন চলে এসেছে।
সাদিব এহেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গেছে।লজ্জায় ওর মাথা কাটা যাচ্ছে।রীতির মা কি ভাবছে সেটা ভেবে।
রীতির মাও সাদিবকে নিজের মেয়ের রুমে দেখে চমকে যায়।
—-“তুমি এখানে?
রীতি কি হয়েছে? চিতকার করছিস কেনো?”

রীতি নিজেও নিজের চিতকারের জন্য বোকা হয়ে গেলো।রীতি একবার মায়ের দিকে আরেকবার সাদিবের দিকে তাকালো।
সাদিব মাথা নিচু করে রেখেছে।আর ওর মায়ের চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছে। রীতিরও অস্বস্তি লাগছে।
আমতা আমতা করে বললো,
—-“আসলে মা কিছুই হয়নি।রুমে ঢুকে হটাৎ উনাকে দেখে চমকে যাই তাই চিতকার করে ফেলি।জাস্ট এই…।”

রীতির মা সাদিবকে জিজ্ঞেস করলো,
—–“কিন্তু তুমি এখানে কি করে এলে?”

সাদিব নরম গলায় বললো,
—–“আসলে আন্টি আমি ওয়াশরুমে যেতে চেয়েছিলাম আর রিমন আমাকে এখানে নিয়ে আসে।”

রিমন বললো,
—–“আপু তো বাসায় ছিলো না।তাই আমি ভাইয়াকে এখানে নিয়ে আসি।”

রীতির মা রীতির কাছে গিয়ে বললো,
—-“ছেলেটা লজ্জা পেয়েছে।এভাবে কেউ চিতকার করে?”

রীতি দুঃখী দুঃখী ভাব করে মায়ের দিকে তাকালো।
রীতির মা সাদিবকে বললো,
—–“বাবা কিছু মনে করোনা।আসলে ও হটাৎ তোমাকে দেখে চমকে গেছে।ভয় পেয়ে গিয়েছিলো তাই আর কি।বাবা প্লিজ কিছু মনে করোনা।”
তারপর রীতিকে বললো,
—-“সরি বল।”

রীতি সাথে সাথে বললো,
—-“সরি আমি আসলেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম হুট করে আপনাকে দেখে।আমার রুমে সাধারণত কেউ আসেনা।প্লিজ কিছু মনে করবেন না।”

সাদিব মুচকি হেসে বললো,
—–“নাহ ইটস ওকে।আসলে আন্টি কি ভাবছিলেন সেটা ভেবেই আমার খারাপ লাগছিলো।এখন যেহেতু সব ক্লিয়ার হয়ে গেছে…ব্যাপার না।
আন্টি আমি আসি।”

—-“সে কি চা খেয়ে যাবেনা?আমি তোমার জন্য নাস্তা বানিয়ে এনেছি।”

—–“না,আন্টি অন্য দিন আসবো।”

সাদিব তাড়ানো চলে গেলো।রীতি জিভে কামড় দিলো।কি একটা জঘন্য ঘটনা ঘটে গেছে।রীতির মা সাদিবকে দরজা পর্যন্ত ছাড়তে গেছে।
রীতি রিমনের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালো।

—–“আপু তুমি তো ছিলেনা তাই এনেছি।”

—-“হটাৎ আমাদের ফ্ল্যাটে কি মনে করে এসেছে?”

—–“কেক দিতে।নিচে কেক নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর কেকের কথা বলতেই বললো ম্যানেজ করে দেবে।সেটাই দিতে এসেছিলো।”

—-“ওহহহ”
(কেক দিয়ে গেলো? বাহ! ইতর হলেও ভদ্রলোক।)

.

রাতের ছোট খাটো প্রোগ্রাম শেষে রীতি ফ্রেশ হয়ে নেয়।আয়নার সামনে একটা বক্স দেখতে পায়।বক্স খোলে ভেতরে একটা চশমা পায়।সাথে একটা চিরকুট।
রীতি চিরকুট খোলে তাতে দেখতে পেলো,
“শুনলাম চশমারাণী চশমার জন্য দুদিন ধরে কেদে কেটে অস্থির হয়ে গিয়েছো?সত্যি নাকি? তাই ভাবলাম আমার জন্য যেহেতু চশমা ভেংগেছে তাই একটা চশমা গিফট করি।এর জন্য আবার পয়সা দিতে এসোনা।আই হোপ চশমার সব ঠিকঠাক আছে।আগের মাপেই বানিয়েছি।”
রীতির ভ্রু যুগল প্রসারিত হয়ে গেলো।
—-“আচ্ছা এই তার ওয়াশরুমের বাহানা,আমাকে চশমা দেওয়া হচ্ছে?আমার ভাংগা চশমা তো উনার কাছেই।এই জন্যই রেখে দিয়েছে?আর আমি চশমার জন্য কেদে ভাসাচ্ছি? আমি কারো দান খয়রাতের জিনিস নেই না।এখুনি ফেরত দিয়ে আসবো।নাহ এখন রাত হয়ে গেছে।আগামীকাল দেবো।”

.

সাদিবকে বাগানে পানি দিতে দেখে রীতি চশমার বক্স হাতে নিচে নেমে এলো।সাদিবের সামনে এসে দাড়িয়ে গেলো।সাদিব পানি দেওয়া থামিয়ে বললো,
—-“কিছু বলবে?”

রীতি মাথা নাড়িয়ে বললো,
—-“না কিছু বলতে আসিনি।দিতে এসেছি।আপনার দান খয়রাতের জিনিস ফেরত দিতে এসেছি।”
রীতি চশমার বক্স এগিয়ে দিলো।

সাদিবের চেহারা কঠিন হয়ে এলো।
দাতে দাত চেপে বললো,
—–“দান খয়রাত?দান খয়রাত ফকিরকে করে।তুমি কি ফকির?”

রীতির মুখ বন্ধ হয়ে গেলো।কি বলবে।
—–“আপনার চশমা আপনি রাখুন।আমার প্রয়োজন নেই।”

—–“তোমার প্রয়োজন দিয়ে আমি কি করবো?আমার জন্য ভেংগেছে তাই দিয়েছি।আমি কোনো দয়ালু মানুষ নই।নিজের টাকা খরচ করে অন্যকে গিফট করে বেড়াবো।”

—-“আপনার জন্য ভেংগেছে মানে?আপনার জন্য কেনো ভাংবে?”

—-“সেটা তো তুমি বলবে,আমি কি জানি।বলো কেনো?রিজন কি?”

—-“আপনি এটা জানেন আপনার জন্য ভেংগেছে তাহলে এটা কেনো জানেন না কেনো ভেংগেছে?
আপনার জন্য যেহেতু ভাংগেনি সেহেতু রিজন থাকার মানেই হয়না।”

—-“পালাতে গিয়ে ভেংগেছো ভুলে গেছো?”

—–“পালাবো কেনো?”

—–“তাহলে দৌড়াচ্ছিলে কেনো?”

রীতি আমতাআমতা করে দৃষ্টি লুকিয়ে বললো,
—–“আমার ইচ্ছে।আমার একটা কাজ মনে পড়ায় আমি দৌড়ে চলে যাই।এখন আপনার চশমা নিন।”

—-“স্বীকার করবেনা।কানা মানুষ চশমা ছাড়া চলতে পারে?”(তাচ্ছিল্য করে)

রীতি চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
—–“আমি কানা নই।আমি চশমা ছাড়া সব দেখতে পাই।নেহাত অভ্যাস হয়ে গেছে তাই।
আমার সামনে এই যে একটা উল্লুক দাড়িয়ে আছে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।একদম স্পষ্ট।”

সাদিব অবাক হয়ে রাগী রাগী কন্ঠে বললো,
—–“উল্লুক! উল্লুক মানে?”

—–“ভাল্লুকের বড় ভাই।”
(চোখ ছোট ছোট করে)
রীতি চশমার বক্স রেখে হনহন করে হেটে চলে গেলো।

সাদিব বিরবির করে বলছে,
“ভালো মনে করে চশমা দিলাম।আর চশমা ফেরত দিয়ে গেলো? ফেরতের সাথে সাথে এত কথা শুনিয়ে দিয়ে গেলো?ভালাইকা জামানাই নেই।”

তারপর সাদিব বিরক্তি নিয়ে আবার পানি দেওয়ায় ব্যস্ত হয়ে গেলো।

চলবে….