গ্যাংস্টার লাভ পর্ব-০৮

0
803

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_৮

রিহা আরো অনেক কিছু বলে ফোন কেটে দেয়।

রুহি : কিহলো কে ফোন করছে
রিহা : কেউ না (চোখের পানি আড়াল করে)
রুহি : ওহ চল খাবি

রিহা রুহির সাঠে গিয়ে আবার ফুসকা খেতে লাগে ।

এদিকে
রিহা ফোন কেটে দেওয়াতে ২জন অট্টহাসিতে মেতে উঠে ।

আফজাল : এটাতে এই টুকু প্রমাণ হয় যে রিহা তোমাকে আস্তে আস্তে আপন ভাবতে শুরু করছে নাহলে আমার জামাই বলতে পারতো না

রেহান কিছু না বলে মুচকি হাসে। আজকের রিহার ব্যাবহারে রেহান খুব খুশি । হ্যা এই সময় রিহা ফোনে ওর আব্বু কল দিয়েছিল আর আপনারা কত কিছু ভাবছেন নট ফেয়ার

আফজাল : রেহান রিহার কিছু মনে নেই তাই যদি কোনো খারাপ ব্যাবহার করে প্লিজ ওকে মাপ করে দিও
রেহান : ছি ছি আপনি এসব কি বলছেন রিহাকে আমি ভালোবাসি আর আমি যে ওর ভালো দিকগুলো কে শুধু ভালোবাসি তা না আমি ওকে ভালোবাসি ও যেমন তেমন ভাবে ভালোবাসি আর সেটা এখন থেকে না
আফজাল : হা আমার রিহা মার যদি মনে থাকত সব তাহলে গল্পটা এমন হতো না
রেহান : বাদ দেন ওসব কথা ওটা আমাদের লাইফ এর একটা কালো অধ্যায় ছিল
আফজাল : হুম আমি রিহার বই পাঠিয়ে দিবনে সাথে ওর একাউন্ট এ কিছু টাকা
রেহান : আমাকে কি এতো ছোটলোক মনে হয়
আফজাল : নারে তুই তো আমার আর একটা ছেলে আমি ভাবছিলাম তোর কাছ থেকে যদি কিছু না নেয়
রেহান : আব্বু এখন থেকে তোমার কাছ থেকে নেবে না যেভাবে কথা বললো

বলে আবার দুইজন অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।
আফজাল : আচ্ছা আমি এখন আসি কেমন অনেক দেরি হইছে আবার অফিস যেতে হবে তো
রেহান : দুপুরের খাবার খেয়ে যাও
আফজাল : অন্য একদিন এসব আসি

রেহান আফজাল সাহেব কে এগিয়ে দিয়ে নিজের কেবিনে এসে বসে। রিহার একটা ছবি হাতে নিয়ে চোখের পানি ফেললো ডুব দিল অতীতে।

আফজাল সাহেব আর নাহিদ চৌধুরী খুব ভালো বন্ধু। আজ আফজাল সাহেবের কলিজার টুকরো পৃথিবীতে আসবে । একজন নার্স ছোট মেয়ে কে দিতে গেলে সবার আগে রেহান কোলে নেয়।

রেহান : আব্বু দেখো ছোট পরি কি সুন্দর দেখতে আমায় দেখে আবার হাসছে

রেহান এর বয়স্ ৭।ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কারোর কথা শুনছে না ।ছেলের এমন ব্যাবহার নাহিদ চৌধুরী হেসে যাচ্ছে

নাহিদ : বুঝলে আফজাল আমার ছেলে কিন্ত তোমার মেয়ের প্রেমে পড়ে গেছে
আফজাল : তাই তো দেখছি
নাহিদ : রেহান বাবা এবার তো দাও মামনিকে
রেহান : না আব্বু আমি একে সব সময় আমার কোলে রাখবো আমার ছোটো পরি
নাহিদ : আচ্ছা রেখো এখন একটু দাও
রেহান : আব্বু ছোটো পরির নাম কি রাখবে ?
আফজাল: তুমি বলো তোমার ছোটো পরির কি নাম রাখা যায়

একটু ভেবে
রাইমা : রিহা আমার ছোটো পরির নাম রিহা (রেহান এর মা)

সবাই খুব খুশি রিহা নামে রেহান ও খুব খুশি রেহান এর নামের সাথে মিল করে রিহা নাম রাখা হয় । সেদিন রিহাকে রেহান একটু ও কোল থেকে নামায়নি । আস্তে আস্তে রিহা রেহান দুইজনে বড়ো হয় । রেহান আর রিহার পরিবার এক বাড়িতে থাকত রেহান রিহার খেয়াল রাখতো সব সময় রিহা ও রেহান কে খুব ভালোবাসতো । রেহান এর যখন ১১বছর বয়স তখন রিহার আব্বু আর রেহান এর আব্বু মিলে দুইজনের বিয়ে পড়িয়ে রাখে ২জনের কেউ তখন বুঝতে না । কিন্ত রেহান বড়ো হওয়ার সাথে সাথে রিহাকে নিজের বউ বলে মেনে নেয় তার কাছে ওই বিয়ে আসল বিয়ে । হটাৎ একদিন রেহান ভালো রেজাল্ট করে তাই তাকে জেলার বাইরে বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যেতে হয় । রেহান রাজি না হলেও রিহার কথায় রাজি হয় । রিহা বলে ওর জন্য অনেক চকোলেট নিয়ে আসতে রেহান রিহার মুখে খুশি দেখে যায় রেহান এর আব্বুর কাজ ছিল তাই রিহার আব্বু আর রেহান এর আম্মু রেহানকে নিয়ে যায় । এটাই রেহান এর ভুল ছিল

একজনের ডাকে রেহান অতীত থেকে ফিরে আসে ।

ম্যানেজার : স্যার আজ খান কোম্পানির সাথে মিটিং আছে
রেহান : আচ্ছা সব ঠিক করো আমি আসছি (নিজেকে স্বাভাবিক করে)
ম্যানেজার : ওকে স্যার

রেহান নিজেকে ঠিক করে মেটিংয়ে যায়।

এদিকে রিহা ফুসকা খেতে খেতে অনেক খেয়ে ফেলেছে । ঝালে ওর মুখ লাল হয়ে গেছে

রুষা: আর খেতে হবে না এখন পানি খা
রুমা : হা রিহা যা

রিহা তো ওর আব্বুর উপর রাগ করে এতো খাইছে নাহলে কখনো খেতো না ।

সবার খাওয়া শেষ যে যার মতো বাড়ি চলে যায় । রিহার গার আসছে তাই রিহা গাড়িতে উঠে পড়ে ।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।

এদিকে রেহান মিটিং শেষ করে এসে রিহার কাছে ফোন দেয় কয়েক বার রিং হওয়ার পর রিহা বিরক্তি নিয়ে ফোন ধরে

রিহা: হেলো
রেহান : বাসায় আসছো?
রিহা : তুই কে রে যে তোরে বলতে হবে
রেহান : রিহা (ধমক দিয়ে)
রিহা : ওই তোরে আমার নাম কইতে কইছি সবাই পাইছে এক ডাইলগ কিছু হলে রিহা রিহা রিহা অসহ্য একটা ফোন রাখ নাহলে ফোনের মধ্যে ঢুকে কেলাবো

কথাটা বলে রিহা ফোন কেটে দেয়। রিহা একটু ঘুমিয়ে ছিল তখন ফোন দিলে কেমন লাগে আমার তো তারে খেয়ে ফেলতে মনে চায় সেইজন্য আমি ফোন সাইলেন্ট করে রাখি হি হি

একটু পর রেহান আবার কল দেয়।

রিহা এবার ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে ।

ঘুমের মধ্যে রিহা লাফ দিয়ে উঠে

রিহা : আল্লাহ গো বাসার ছাদ ফুটো
রেহান: বাসার ছাদ না তোমার মাথার ছাদ ফুটো

রিহা ভালো করে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রেহান রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে হাতে গ্লাস দেখে বুঝতে বাকি রইলো না এটা রেহান এর কাজ

রিহা : আপনি আবার আমাকে ভিজিয়ে দিয়েছেন কেনো একবার দিয়েছি বলে আপনি রোজ দেবেন (নেকা কান্না করে)
রেহান : চুপ একটা কথা না কখন থেকে ডাকছি তুমি তো মরার মত ঘুমিয়ে ছিলে আর ফোন কি আবোল তাবোল বলছিলে হুম
রিহা : আপনি কখন ফোন দিলেন ?
রেহান : ফোন দেখো আর ফোন অফ ছিল কেনো যানো আমি কত টেনশনে ছিলাম

রিহা ফোন অফ করার পর রেহান বাসার সার্ভমেন্ত কে ফোন দিয়ে জানতে পারে রিহা ঘুমিয়ে আছে রেহান নিজের কাজ শেষ করে বাসায় এসে দেখে রিহা ঘুমাচ্ছে অনেক বড় ডাকার পর ও উঠে না তাই বাধ্য হয়ে পানি ঢেলে দেয়।

রিহা : আপনি টেনশনে থাকেন আর পেনশনে থাকেন তাতে আমার কি
রেহান : তোমার কি আমি বুঝাবো (রিহার মুখের কাছে গিয়ে )

রিহা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলে
রিহা : আপনি একটা লুচু
রেহান : কিছু করলাম না আর
রিহা : আমার খুদা লাগছে রান্না কি করতে হবে না

রেহান : আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি তারপর রান্না করবো

বলে রেহান ফ্রেশ হতে গেলো।

রিহা : এতো সহজে তো তোমায় ছেড়ে দেবো না চান্দু আমার গায়ে পানি মারা এর শোধ আমি নেবই (সামনের চুলগুলো ফু দিয়ে উড়িয়ে)

রেহান এসে দেখে রিহা অভাবে বসে আছে
রেহান : কিহলো চলো আজ কি রান্না করবে ?
রিহা : দেখি কি করা যায়

২জন মিলে রান্না করে খেতে বসে

রিহা : পানি আনলেন না তো
রেহান : আচ্ছা তুমি বসো আমি আনছি

রেহান উঠে যেতেই রিহা টেবিলের তল থেকে মরিচের গুরু বের করে রেহান এর খাবারে মিশিয়ে দেয়।

রিহা : এবার বুঝবে মজা (ডেভিল স্মাইল দিয়ে)

রিহা আবার টেবিলের তলে রেখে দেয়। রেহান আসলে খাওয়া শুরু করে।

রিহা আরাম করে খাচ্ছে রেহান খেতে গিয়ে ও খেলো না রিহা নিজের মুখে পুরতে গেলে রেহান রিহার হাত থেকে খেয়ে নেয়

রিহা : কিহলো এটা ?
রেহান : কিছু না তোমার সাথে খেতে মন চাইছে
রিহা : নিজের খাবার খান
রেহান : ওটা খেলে মিষ্টি কি তুমি দেবে যদি দাও তাহলে খেতে রাজি

রিহা বুঝতে পারে রেহান সব তের পাইছে তাই আর কথা না বলে খেতে লাগে।

খাওয়া শেষে রিহা শুয়ে আছে রেহান এসে রিহাকে উঠিয়ে হাতে কি ধরিয়ে দেয়।

রিহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে

রিহা : এটা দিয়ে কি করবো ?
রেহান : এটা দিয়ে রান্না নিশ্চয় করবে না তাহলে গাধার মতো প্রশ্ন না করে কাজ কর
রিহা : উফফ অসহ্য

চলবে