গ্যাংস্টার লাভ পর্ব-০৯

0
758

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_৯

রেহান চোখ পাকিয়ে রিহার দিকে তাকিয়ে আছে

রিহা : ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আমি ভয় পাইনা (ভাব নিয়ে)
রেহান : আচ্ছা
রিহা : হ্ন

রেহান চিৎকার করে বাড়ির গার্ডের ডাকে

একজন : জী স্যার
রেহান : একটা লাঠি নিয়ে আসো (রিহার দিকে তাকিয়ে)
একজন : স্যার লাঠি কি করবেন না মানে কেমন লাঠি
রেহান : মানুষ মারা লাঠি

রেহান এর বলতে দেরি রিহা বই নিয়ে পড়া শুরু করে।

রেহান : আমি তো জানি জান তুমি লাঠি খুব ভয় পাও তোমাকে মানুষ বানানোর জন্য তোমার ভয় কে কাজে লাগাতে হবে (মনে মনে)

রিহা পড়ছে আর রেহান ল্যাপটপ নিয়ে বসে কাজ করছে । মাঝে মাঝে রিহা কিছু বুঝতে না পারলে রেহান হেল্প করছে

২ঘন্টা পর

রিহা : আমার খুব খুব পাচ্ছে (করুন কণ্ঠে)
রেহান : একটা চ্যাপ্টার কমপ্লিট করতে পারলে না এতো দিন খুব নেচে বেরিয়েছ এখন থেকে আর না
রিহা : আপনি কে বলার আমার যা ইচ্ছা আমি তাই করবো আপনি কি আমার গার্জিয়ান
রেহান : এখন থেকে আমি তোমার গার্জিয়ান বুঝেছ এখন শুয়ে পরো

রিহা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে শুয়ে পরলো রেহান কিছুক্ষণ কাজ করে বিছানায় এসে দেখে রিহা ঘুমিয়ে গেছে মুখ লাল হয়ে আছে রেহান রিহার কপালে ভালোবাসা দিয়ে রিহাকে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে

রিহা ঘুমের মধ্যে পাপা পাপা করছে রেহান বুঝতে পারে রিহা ওর আব্বুকে মিস করছে এতো বছর তো ওর আব্বুর সাথে ছিল । রেহান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকাল ৫টা
রেহান : রিহা উঠ রিহা উঠ
রিহা…

রেহান ডেকেই যাচ্ছে কিন্ত রিহার উঠার কোনো নাম নেই সে তো ঘুমে বিভোর। রেহান আর কোনো উপায় না পেয়ে রিহাকে কোলে করে ওয়াশরূমে নিয়ে মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়

রিহা লাফিয়ে উঠে । রিহা ভালো করে তাকিয়ে বুঝতে পারে রিহা রেহান এর কোলে আর রেহান ওকে আবার পানি দিয়ে উঠিয়েছে

রিহা এবার কান্না শুরু করে

রিহা : আআআআআআআআআআআআআআআআহ
রেহান : এই কিহলো তোমার ?
রিহা : আআআআআআআআআআআআআআআআহ
রেহান : কিহলো হটাৎ এভাবে কান্না করছো কেনো ?

রিহার থামার কোন নাম নেই রিহা তো কান্না করেই যাচ্ছে

রেহান : এই মেয়ে চুপ আর একবার কান্না করলে মাথায় তুলে আছার মারবো

রিহা চুপ হয়ে যায় কিন্ত ঠোঁট ফুলিয়ে কান্না করে নিঃশব্দে

রেহান : এবার বলো কি হইছে
রিহা : আপনি প্রতিদিন অনেক এভাবে টর্চার কেনো করেন হা আমি কি দোষ করছি সকাল বেলায় প্রতদিন এভাবে উঠিয়ে আআআআআ
রেহান : চুপ কোনো কথা না এখন ওযু করে নামাজ পড়ে বই নিয়ে বসবে আমি যা করছি তোমার ভালোর জন্য
রিহা : লাগবে না আমার ভালো (গাল ফুলিয়ে)

রেহান হেসে দেয় ছোটো বেলায় ও রিহা এভাবে গাল ফুলিয়ে থাকত

রেহান রিহাকে ওয়াশরূমের বেসিনের উপর বসিয়ে বলে

রেহান : নামাজ পড়া কত ভালো তুমি ত যানো তাই না
রিহা : আমার নামাজ পড়া নিয়ে প্রবলেম নেই
আমার প্রবেলম আপনি কেনো আমার সাথে এমন করেন কেনো বিয়ে করলেন আমায় (কাদ কাদ গলায়)
রেহান : ভালোবাসি যে খুব ভালোবাসি
রিহা : আমার থেকে ও তো সুন্দর মেয়ে আছে তাহলে তাদের কেনো করলেন না আমার জিবন নষ্ট করতে হলো
রেহান : তোমার থেকে সুন্দর মেয়ে হইতো পাবো কিন্ত আমি যে আমার ছোট্ট পরিকে খুব ভালোবাসি যেদিন তুমি এই পৃথিবীতে

আর কিছু বলল না
রিহা : কি বলেন ?
রেহান : নামাজের দেরি হয়ে যাচ্ছে তুমি ওযু করো আমি তারপর করবো

রেহান চলে গেলো একটু পর রিহা ওযু করে বেরিয়ে নামাজ পরে নিল ।

নামাজ পড়ে তাকিয়ে দেখে রেহান সাদা পাঞ্জাবি পরে দাড়িয়ে আছে

রিহা : কিহলো কি দেখছেন ?
রেহান : আমার ছোট্ট পরিকে

রিহা উঠে বির বির করে বলছে
রিহা : জিবন ডা তেনা বানিয়ে এখন আসছে ঢং করতে অসহ্য লোক

রেহান : কিছু বললে
রিহা : না

রিহা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল রেহান এসে রিহাকে সোজা করে বই ধরিয়ে দিলো

রেহান : এখন কোনো ঘুম না পড়ো
রিহা : মানে কি আপনি এমন করছেন যেনো এক্সাম আমার কাল
রেহান : কাল হোক বা পরশু পড়তে তো হবেই এখন আমি একটা কথা ও শুনতে চাইছি না just ১ঘণ্টা পড়

রিহা রেহানর যত গুষ্টি আছে সব উদ্ধার করছে

রেহান : আমাকে না বকে পড় (কাজ করতে করতে )

আধা ঘন্টা পরে রিহা শেষ

রিহা : আমি আর পারবো না অনেক পড়েছি আপনি আর বেশি করলে আমি আপনার নামে নারী নির্যাতনের কেস ঠুকে দেবো
রেহান : your most welcome
রিহা : এই বালের কি ভয় ডর কিছু নেই (বির বির করে)

রাগের মাথায় কি বলছে নিজেও জানে না ।

রিহা উঠে রান্না ঘরে গেলো । কি বানাবে ভাবছে তখন নুডুলস দেখলো সেটা বানিয়ে টেবিলে খেতে বসলে

রেহান : তুমি একা একা খাচ্ছ (নামতে নামতে)
রিহা : দোকা পাবো কই?
রেহান : মানে আমার মত জলজ্যান্ত মানুষ তোমার চোখে পড়ে না ।
রিহা: আপনি মানুষ ?
রেহান : কেনো মনে হয় না
রিহা : সন্দেহ আছে আর আমার খুদা লাগছিলো
রেহান : তাই কি আমার বুঝি খুদা লাগেনি ডাকলে না কেনো
রিহা : আমি শুধু নুডুলস করেছি
রেহান : ওতেই চলবে
রিহা : শান্তি নেই

রিহা রান্না ঘর থেকে নুডুলস এসে রেহান কে দেয় ।

খাওয়া শেষে
রেহান : আমার আজ একটু কাজ আছে তাড়াতাড়ি যেতে হবে গাড়ি পাঠিয়ে দেবো তুমি ঠিক সময়ে চলে যেও কেমন তাড়াতাড়ি আসবানে
রিহা : লাগবে না
রেহান : কি?
রিহা : আসতে হবে না

রেহান কিছু বললো না রেহান গুছিয়ে বেরিয়ে যায় । রিহা বসে বসে ভাবছে কি করবে

রিহা : ওই বাসায় একটু যাবো যাই একবার আমার কিছু দরকারি জিনিস আছে নিয়ে আসতে হবে

রিহা গুছিয়ে রেহান এর পাঠানো গাড়িতে করে বাড়ি যায় ।

কিছুক্ষণের মধ্যে পৌঁছে যায় রিহা ভিতরে ঢুকে দেখে ওর আব্বু খাচ্ছে

আফজাল : আরে মামনি আজ হটাৎ কিছু না বলে
রিহা : আমার কিছু দরকারি জিনিস নিতে আসছি থাকতে আসিনি
আফজাল : এটা কেমন কথা মামনি এটা তো তোমার বাড়ি যখন তখন আসতে পারো
রিহা : জী না এটা আপনার একার বাড়ি আমার কোনো বাড়ি নেই

কথাটা বলে রিহা উপরে নিজের রুমে গিয়ে কিছু দরকারি জিনিস নিয়ে আসে

রিহা : আমার দরকারি জিনিস নিয়ে যাচ্ছি আর আমার ইস্কুটি নিয়ে যাচ্ছি
আফজাল : মামনি নাস্তা করে যাও
রিহা : আপনার খাবার আমার গলা নিয়ে নামবে না

রিহা আর কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে যায় বাইরে রেহান এর পাঠানোর গাড়িতে নিজের জিনিস থুয়ে পাঠিয়ে দেয় আর রিহা ইস্কুতি করে ভার্সিটিতে যায় ।

ভার্সিটিতে গিয়ে ওর গ্রুপে তুফান এর আছে যায় । সবাই মিলে একটা গ্রুপ হাগ করে

রিহা : কীরে আজ কি ভার্সিটিতে কোনো কিছু আছে নাকি
রুহি : আজ থেকে গরমের বন্ধ দেবে মনে হয়
রুমা : তোর শুধু বন্ধ
রুশ : আরে সত্যি আজ বন্ধ দেবে
রিহা : এই বন্ধে আমি কি করবো
রুমা : চল আমরা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করি
রিহা : that’s good
রুশ: কিন্ত কোথায় ?
রিহা : সেসব পরে ঠিক হবে আগে চল ক্লাস করে আসি
রুমা : ওকে

সবাই মিলে ক্লাস করতে গেলো

ক্লাসে রিহার ঘুম আসছে এমনিতেই দেরি করে ঘুমিয়েছে তার উপর আবার ভোর বেলায় উঠছে রিহার অবস্থা কাহিল রিহা রুহির কাধে মাথা দিয়ে ঝিমুচ্ছে

স্যার : হে you
রুহি: লিসেন টু me (আস্তে)
রিহা : you r my love যানো তুমি (আনমনে)

এখন পুরু ক্লাস এক সাথে গান গাইতে শুরু করে

স্যার : shut up (চিৎকার করে)

সবাই চুপ
স্যার : ক্লাসে মনোযোগ নেই আবার উল্টা পাল্টা কথা গান মনে আসছে (রেগে )

রিহার এবার হুস ফিরে

রিহা : সরি স্যার
স্যার : রাখো তোমার সরি এক্ষুনি এই math করে দাও আসো

রিহা ওর ফ্রেন্ড এর দিকে একবার করুন দৃষ্টিতে তাকালো

স্যার : কিহলো এদিক ওদিক কি দেখছো এখানে এসো

রিহা গেলো
স্যার : এটা করো

রিহা কি মনে করে শুরু করলো

রুহি : ওই হেতি পারবে কেমনে কিছু কর
রুমা : স্যার আজ খুব রেগে আছে চুপ থাক
রুশ : তোর দোষ তুই গান কেনো বললি তাহলে তো রিহা কে বিপদে পড়তে হতো না
নেহা : এখন ওসব বাদ দিয়ে ওরে কেমনে বাচাবি সেটা ভাব
রুহি : আরে দেখ হেতী তো করছে

সবাই তাকিয়ে দেখে রিহা math করে দিচ্ছে আর একটু বাকি আছে ।

শেষ করে রিহা স্যার এর দিকে তাকায়

স্যার : গুড এটা একটা ডিফিকাল্ট math তুমি পারলে কি করে

রিহার মনে পড়ে যায় কাল রেহান ওকে এটা খুব ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছিল

স্যার : এর পর থেকে ক্লাসে মনোযোগ দিবে এখন যাও

রিহা মাথা নাড়িয়ে সীটে গিয়ে বসে

রুহি : ওই মাম্মা পারলি কেমনে ?
রিহা : চুপ থাক

ক্লাস শেষে সবাই ক্যান্টিনে বসে আছে সবাই গল্প করছে তখন পিছন থেকে রিহার কাধে হাত দিল

চলবে