গল্প :- গ্রামের পিচ্চি বউ
পর্ব :- ২৫ + ২৬ এবং ২৭
লেখিকা :- বাবুনি
.
.
-:”তারপর বললাম পিচ্চি বউ আমার তুমি এখানে বসে থাকো , আমি নাস্তা তৈরি করি..
ও বলল হুমমম..
আমি নুডুলস টা পানিতে দিয়ে চামচ দিয়ে নাড়তে লাগলাম..
আমার এমন অবস্থা দেখে আমার পিচ্চি বউ হেসে উঠলো..
আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছি হাসির কারণ টা কি..?
তবে যাই হোক আমি আজ সারাটা দিন ওর হাসি দেখিনি , এখন দেখতে পেয়ে আনন্দে ভরে উঠলো মন টা..
অনেক কিউট লাগে হাসলে আমার পিচ্চি বউ টা কে..
ও হাসতে হাসতে বলল ,আপনে চামচ দিয়া নাড়রা কেনে নুডুলস রে..
আমি: তাহলে কি করবো..
রুমকি: নাড়া লাগতো নায় এমনিতেই হইবো সিদ্ধ ..
আমি:ওহ আচ্ছা..
আসলে আমি এর আগে কখনো রান্না করি নি তাই জানি ও না কিভাবে কি রান্না করতে হয়..)
পিচ্চি বউ টা বোধহয় টের পেয়ে গেলো..
আমাকে সব শিখিয়ে দিলো ,কি ভাবে কি করতে হবে..
মনে মনে বললাম পিচ্চি হলে কি হবে সব কাজ ঠিকমত পারে দেখছি..
রান্না শেষ করে ,ও আর আমি নুডুলস খেলাম রান্না ঘরে বসেই..
আম্মু আব্বুকে ও নিয়ে দিয়ে আসলাম,
আম্মু : নুডুলস কে রান্না করলো রাফসান..? ময়না তো চলে গেল কাজ শেষ করে ..
আমি: তুমার ছেলে মা..
আম্মু:ফাইজলামি করিস না ,(নুডুলস খেতে খেতে..) তুই এত ভালো নুডুলস রান্না করা কবে শিখলি..?
আমি:ইয়ে মানে মা ..আজ থেকে..
আম্মু:আজ থেকে মানে আর কে শিখিয়ে দিলো..?
আমি কিছু বলতে হলো না আব্বু ই বলে উঠলো..
আরে বুঝতে পারছো না বউমা শিখিয়ে দিছে.. বলেই হেসে উঠলো আব্বু,হা হা হা…
আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ঐখান থেকে চলে আসলাম..
রুমকি কে ঔষধ গুলো খাইয়ে দিলাম..
আমি পানির গ্লাস টা টেবিলে রাখলাম..
আমি:রুমকি তুমার জন্য একটা গুড নিউজ আছে..
রুমকি:কিতা গুড নিউজ ..
আমি:না এখন তো বলা যাবে না ,আগে তুমি সুস্থ হয়ে উঠো পরে বলবো..
রুমকি:প্লিজ এখন কইন..
আমি:ওকে তবে আমার শর্ত আছে..
রুমকি: (এবার ওর মুখ টা কেমন যেন গম্ভীর হয়ে গেল..)কিতা শর্ত..?
আমি: আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে হবে..
রুমকি: মাথা নিচু করে ফেলল,মুখটা আমার থেকে ঘুরিয়ে নিলো..
আমি ওকে লাগবে না চুমু.. তুমার গুড নিউজ টা বলছি..
এবার মুখে একফালি হাসি নিয়ে বলল হুমমম কইন..
আমি : তুমি জি পি এ ৫ পেয়ে পাশ করেছো এক্সাম এ..
রুমকি: সত্যি.. খুশিতে আত্মহারা হয়ে..
আমি:হুমমম সত্যি ..
ও আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল আমার কপালে..
আমি ও জরিয়ে ধরলাম,ও কেমন যেন লজ্জা পেয়ে গেল..
আমার বুকে মুখ গুঁজে দিল লজ্জায় ..
আমি বললাম , তুমার বাড়িতে কল দিয়ে তুমার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার টা এনেছি,নেটে সার্চ দিয়ে রিজাল্ট বের করলাম..
রুমকি খুব ভালা আপনে,আই লাভ ইউ..
আমি এই প্রথম ওর মুখে এই কথা শুনে, খুশি হবো না কান্না করবো ঠিক বুঝতে পারছি না..
.
.
#Part :- 26
.
.
-:”আমি ও বললাম,লাভ ইউ টু আমার পিচ্চি বউ টা..
ও আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলো..
তারপর বলল , আচ্ছা আমি একটা কথা কই..?
আমি:হুমমম বল কি বলবা..
রুমকি:আপনে রুজ আমারে আই লাভ ইউ কইবা অফিস এ যাইন সময় ,অফিস থাকি আইন সময়,আর ঘুমানির সময় ওকে..
আমি: হঠাৎ ওর এই রকম বায়না শুনে আমি খুব অবাক হলাম.. তারপর বললাম কেন আমি তোমাকে এইরকম বলবো আর বললে কি হবে শুনি..?
রুমকি: আমি জানি না , আমি কইছি কইতা কইবা ওকে..
আমি:কি আর করা পিচ্চি বউ এর আবদার মেনে নিতে হলো.. বললাম ওকে ..তবে তুমি ও আমাকে রোজ আমি যতবার আই লাভ ইউ বলবো ঠিক ততবার ,আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে হবে..
রুমকি: একটু লজ্জা মাখা কন্ঠে বলল ,ওকে..
আমি বললাম তাহলে আজ থেকেই শুরু হয়ে যাক আমাদের ছোট্ট প্রেমের গল্প..
রুমকি একটু মুচকি হাসলো..
পিচ্চি বউ টার সাথে গল্প করতে করতে রাত হয়ে গেছে..
কিছুক্ষণ পর আম্মু আসলেন রুমে..
আম্মু:কি করছিস , রুমকির এখন কি অবস্থা..(বলেই রুমকির মাথায় হাত দিয়ে দেখলেন আম্মু..)
জর তো কমে গেছে আগের থেকে..
ঔষধ খাইছো মা..?
রুমকি:হুমমম আম্মু খাইছি..তাইন খাওইয়া দিছইন..
আম্মু ঠিক আছে মা কমে যাবে টেনশন করো না.. এখন লক্ষী মেয়ের মতো শুয়ে থাকো একটু..
রুমকি: আচ্ছা আম্মু..
আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বললেন কি রে তুই এখানে বসে আছিস কেন,খাবি না..?
নিচে নেমে আয় তুই খেয়ে বউমার জন্য খাবার নিয়ে আসবি..
আমি:ওকে আম্মু আসছি তুমি যাও..
আম্মু:ওকে তারাতাড়ি আয়..
আম্মু চলে গেলেন..
আমি রুমকির কাছে গিয়ে ওর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম,একটু ওয়েট আমি এক্ষুনি আসছি..উঠবে না কিন্তু একদম বিছানা থেকে ..
রুমকি:ওকে..
আমি নিচে নেমে আসলাম.. আম্মু আব্বুর সাথে খাবার টেবিলে বসেই রুমকির কলেজ এ ভর্তি করে দেয়ার আলাপ করে নিলাম..
আম্মু আব্বু বলল তর যা ভালো মনে হয় কর, আমাদের কোন আপত্তি নেই..
আমি মনে মনে খুশি হলাম,আসলে আব্বু আম্মু আমার কোনো চাওয়াই অপূর্ণ রাখেন না.. শুধু একটা জিনিস ই তাদের কথা শুনে করতে হলো..আর তা হচ্ছে আমার পিচ্চি বউ টা কে বিয়ে করতে হলো.. এখন ভালোই লাগে , মনে মনে আম্মু আব্বু কে এত্তগুলা ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করে.. এইরকম একটা কিউট পিচ্চি বউ আমাকে এনে দেবার জন্য..
তারপর রুমকির জন্য খাবার নিয়ে রুমে আসলাম..
রুমকি কে খাইয়ে দিচ্ছি..
রুমকি:আপনে খাইছোইন নি..
আমি:হুমমম খেয়ে আসছি আমি..
রুমকি আর কিছু বলল না চুপচাপ খেয়ে নিল..
খাওয়ানো শেষে আমি বললাম,রুমকি তুমার জর তো এখন অনেক টা কমে গেছে.. আশা করি কাল পুরোপুরিই সুস্থ হয়ে যাবে ..
কাল ই তুমাকে কলেজ এ ভর্তি করে দিবো ওকে..
রুমকি:হুমমম ওকে..
তারপর বললাম এখন তাহলে শুয়ে পড়ো_
আই লাভ ইউ ,আলতো করে চুমু দিলাম ওর কপালে..
রুমকি ও আমাকে আলতো করে চুমু দিল, তারপর বলল আই লাভ ইউ টু..
আজ আমার চিরশত্রু বালিশ টা নেই মাঝখানে..
.
.
#Part :- 27
.
.
-:”ঘুমিয়ে পড়লাম পিচ্চি বউ টা কে জরিয়ে ধরে..
ঘুম থেকে উঠে গেলাম আম্মুর ডাকে, ফোন হাতে নিয়ে দেখি ৮টা বাজে…
হায় আল্লাহ এত বেলা হয়ে গেছে ,কাল রাতে এর্লাম দিয়ে ঘুমাতে ভুলে গেছি..
তারাতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে চাইলাম বাট আমার পিচ্চি বউ এর হাতে আটকা পড়ে গেলাম..ও আমার গায়ের উপর হাত রেখে ঘুমিয়ে আছে ..
আমি আস্তে করে ওর হাত টা সরিয়ে দিতে চাইলে, ও আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল..
এখন কি করবো এদিকে ওকে কলেজে ভর্তি করে দিয়ে , অফিসে যেতে হবে..
ওর কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে ডাক দিলাম আস্তে আস্তে ঐ রুমকি…
কোনো শব্দ নেই..
আবার ডাক দিলাম ঐ রুমকি উঠো..
রুমকি: চোখ বন্ধ অবস্থায়ই জবাব দিল,কিতা হইছে ..
আমি: তারাতাড়ি ঘুম থেকে উঠো..
রুমকি:কেনে.. ?
এবার একটু চোখ খুলে তাকালো..
আমি: তারাতাড়ি উঠে রেডি হয়ে নাও ,আজ না তুমাকে কলেজে ভর্তি করে দিবো..
রুমকি:আমার উপর থেকে হাত টা সরিয়ে,এক লাফে উঠে গেল ঘুম থেকে..
তারপর বলল আচ্ছা আমি রেডি হইরাম ,বলেই ওয়াশ রুমে চলে গেল..
আমি হা করে তাকিয়ে আছি,এটা কি হলো এখন আমি ফ্রেশ হবো কি ভাবে ও যে চলে গেল ওয়াশ রুমে..
কি আর করা বসে বসে ওয়েট করতে লাগলাম..
৩০মিনিট পর বের হলো..
মনে মনে অনেক রাগ হচ্ছিল এতক্ষন লাগলো রেডি হতে..মেয়ে মানুষ জন্মগতভাবে ই এইরকম হয় না কি রে বাবা..
সাজুগুজু করাই বুঝি তাদের প্রফেশন..
ওর দিকে তাকিয়ে আর বকা দিতে পারলাম না,এত এত সুন্দর লাগছে আজ ওকে বলে বুঝানো যাবে না হলুদ রঙের একটা ড্রেস পরেছে..
আমি পিচ্চি বউ এর প্রেমে পড়ে গেলাম আরেকবার..
কিছুক্ষণ পর রুমকি বলল, মিস্টার ওনো বইতাকবা নি না গিয়া রেডি হইবা..
ওর কথায় হুস ফিরল,ওহ তাই তো..
আচ্ছা ওয়েট একটু আমি এক্ষুনি রেডি হয়ে আসছি..
ওয়াশ রুমে চলে গেলাম..
কিছুক্ষণ পর রেডি হয়ে আসলাম.. রুমকি কে নিয়ে নিচে নেমে আসলাম..
আম্মু আব্বু বসে আছে খাবার টেবিলে, আব্বু পত্রিকা পড়ছে আম্মু বসে আছে..
আম্মু আমাদের দেখে বললেন ,কি রে তারাতাড়ি আয় নাস্তা টা করে নে কখন যাবি দেরি হয়ে যাচ্ছে তো..
আমি আর রুমকি গিয়ে বসলাম নাস্তা সেরে নিয়ে.. আম্মু আব্বু কে বিদায় জানিয়ে বের হয়ে আসলাম বাসা থেকে..
গাড়িতে উঠলাম রুমকি ও আমি..
আমি ড্রাইভিং করছি রুমকি পাশেই বসে আছে..
আমি রুমকি কে বললাম ,তুমি ঐখানে গিয়ে ভুলে ও গ্রামের ভাষায় কথা বল না শুদ্ধ ভাষায় কথা বলো ওকে..
রুমকি:কেনে..
আমি:ও তুমি বুঝবে না,যা বলছি তাই কর ওকে..মনে থাকবে তো..
রুমকি:হুমমম ,ওকে..
কথা বলতে বলতে কলেজের সামনে চলে আসলাম..
গাড়ি টা রাস্তার পাশে পার্কিং করে রুমকি কে নিয়ে কলেজের ভিতর ঢুকলাম..
প্রিন্সিপাল স্যার আমার পরিচিত , আগে থেকেই সব কথা বলে রাখছিলাম..
তাই কোনো প্রবলেম হলো না দেরি ও হলো না ওকে ভর্তি করে দিলাম ..
তারপর আমি ওকে ক্লাসে দিয়ে , বললাম আমি অফিস থেকে আসার সময় নিয়ে যাবো..
.
.
চলবে…………….