গ্রামের লাজুক মেয়ে পর্ব-০১ | Romantic love story

0
2579

#গল্পঃ গ্রামের লাজুক মেয়ে ?
#লেখকঃ Md: Aslam Hossain Shovo
#পর্বঃ ১…

আমিঃ আপনি ভালো না, অনেক অনেক পঁচা ভাবি ?

ভাবিঃ কেনো ভাইয়া..আমি আবার কি করলাম?? ?

আমিঃ তা জানি না। কিন্তু আপনি ভালো না, অনেক পঁচা আপনি…

ভাবিঃ কি হয়েছে বলো? হঠাৎ আমি খারাপ হলাম কেনো শুনি?

আমিঃ আপনাকে ভাইয়ার বউ করে আনলাম যেই কারণে, সেই স্বপ্ন তো আমার পূরণই হল না ?

ভাবিঃ হেএএএ… আমায় নিয়ে আবার তোমার কি স্বপ্ন ছিলো শুনি দেবরজী… ?

আমিঃ যেই স্বপ্ন পূরণ হবে না, সেই স্বপ্নের কথা বলে লাভ কি আপনাকে…??

ভাবিঃ আগে বলো তো। দেখি পূরণ করার মত হলে এই তোমার মিষ্টি ভাবিজান সেই স্বপ্ন পূরণ করবে বুঝলে…

আমিঃ মিষ্টি না ছাই। যেই ভাবির কেনো বোনই নেই, সেই ভাবি কখনো মিষ্টি হয় না বুঝলেন..?

ভাবি হেসে দিয়ে বললোঃ ও মোর খোদা, আমার বোন নেই বলে এতোক্ষণ তুমি আমায় খারাপ ভাবি বলছিলে? হা হা হা

আমিঃ হুমম। আপনি খারাপই তো। আমার কতদিনের শখ আমার বড় ভাইকে বিয়ে দিয়ে বাসায় নতুন ভাবি আনবো। তারপর ওই নতুন ভাবির বোনের সাথে আমি প্রেম করবো ?

ভাবিঃ হা হা হা যেই ছেলে মেয়ে দেখলে মাথা নিচু করে থাকে লজ্জায়, সেই ছেলে নাকি করবে প্রেম আবার মেয়েদের সাথে, হা হা…

আমিঃ কেনো? আমার বুঝি প্রেম করার মত সাহস নেই? আমি বুঝি মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারি না?

ভাবিঃ কেমন কথা বলতে পারো আমি তো জানি। দেখা গেলো তুমি তোমার গার্লফ্রেন্ড কে গিয়ে বললে, আপু আপনাকে একটু জরিয়ে ধরবো, হা হা.. এতো লজ্জা নিয়ে প্রেম হয় না বুঝলে..

আমিঃ যার বোনই নেই, সে শিখাবে আমায় প্রেম..এসেছে পেত্নী ভাবি ?

ভাবিঃ কেনো গো, প্রেম শিখাতে হলে কি বোন থাকতে হয় বুঝি? আর এই যে মিষ্টার, আপনার ভাবি হয়েছি ৬ মাস হয়ে গিয়েছে, এখনো তো ভাবিকেই তুমি করে বলতে পারলেন না, আবার সেই ছেলে এসেছে আমার বোনের সাথে প্রেম করতে..?

??

((…আমি শুভ। পড়াশোনা তেমন ভালো না লাগাতে ছোট একটা জব করি নতুন। হঠাৎ মাথায় আসলো বন্ধুদের তো গার্লফ্রেন্ড আছে, আমারও যদি গার্লফ্রেন্ড থাকতো খুব ভালো হত। কিন্তু সত্যি বলতে মেয়ে পটানোর মত কথা আমি জানিও না, হয়তো জানলেও লজ্জায় বলতেও পারবো না। তাই আরকি ভাবির কাছে এসেছি, যদি ভাবির বোন থাকতো, তাহলে তো ফ্রী তেই একটা গার্লফ্রেন্ড পেয়ে যেতাম আরকি, পোড়া কপাল তাও নেই..

আমার ভাবির নাম শুভা। কিন্তু আমার নাম শুভ ও ভাবির নাম শুভা হওয়াতে প্রায় আমার নামের সাথে মিলে যায়, তাই যদি সবাই ভাবে ভাবি আমার বউ বা বোন, তাই আমি শুভার জায়গায় শুবশ্রী ভাবি বলে ডাকি । এখন বাসার সবাই ও শুবশ্রী বলে ভাবিকে। ভাবিদের বাসা শেরপুর জেলাতে। আমাদের বাসা ফরিদপুর। কখনো শেরপুর যাওয়া হয় নাই আমার। ভাবির মা-বাবা ঢাকায় থাকার কারনে ওখান থেকেই বিয়ে হয়। ভাবির আর একটা ছোট ভাই আছে। কিন্তু কেনো বোন নেই।
আমার বড় বোন বিবাহিত, তার শ্বশুরবাড়ি ঢাকা। আপুর শ্বশুরবাড়ির মাধ্যমে ভাইয়ার সাথে ভাবির বিয়ে হয়েছে। আমার ভাইয়ার নাম – মোঃ আকাস।
আমার ছোট আরো একটা ভাই ও একটা বোন আছে। আমি আমার ছোট ভাইকে খুব ভালোবাসি, নাম জীবন।
ভাবির সাথে আমার খুব মিল। সব সময় ভাবির সাথে গল্প করতে মন চাই, ভাবিও যেখানে থাকে, আমিও তার পিছনে পিছনে থাকি। বাসার সবাই তো দুষ্টুমি করে বলে এটা আকাসের বউ না, এটা হল শুভর বউ। শুভ শুধু ওর পিছনে পিছনে থাকে বরের মত। ভাইয়াও ভাবিকে ডাক দেয়, শুভর বউ বলে… ভাবিও আমায় খুব ভালো জানে…

ভাবি দেখতে খুব সুন্দরী। সব সময় হেসে কথা বলে। আর সব থেকে বড় কথা, ওনার চুল গুলো অনেক বড়। মাজা থেকেও অনেক নিচু পর্যন্ত, সত্যি বলতে আমি ভাবির চুল দেখে ক্রাশ খায়ছি অনেক আগেই ??
লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে বলি নাই…))

??

আমিঃ হয়েছে আর বলতে হবে না। আপনার তো বোনই নেই। যার বোন নেই, তার এতো বড় বড় কথা বলতে নেই হুমম..

ভাবিঃ চুপ করো ফাজিল ছেলে, আমার বোন নেই, তোমায় কে বললো? আমার লাজুক একটা বোন আছে বুঝলে..

কথাটা শুনেই মনের মধ্যে লাড্ডু ফুটলো ☺

আমিঃ কোথায় ভাবি? আমি তো আপনাদের বিয়ের সময় আপনার কেনো বোন কে দেখলাম না?

ভাবিঃ.. আমার বিয়ে তো হয়েছে ঢাকা থেকে। আর সেই বোন হল, আমার চাসতো বোন। শেরপুরে আমাদের গ্রামের বাড়ি তে।

আমিঃ.. তাই আর কি হল, কখনো তো দেখায় হবে না ?

ভাবিঃ.. কে বললো হবে না। সেই বোন এবার SSC পরিক্ষা দিচ্ছে। কাকিমা কে বলে দিবো পরিক্ষা শেষ হলে এখানে ওকে পাঠিয়ে দিতে বেড়াতে।

আমিঃ.. তাহলে আসবে শিওর তো? ?

ভাবিঃ হয়তো আসবে। আবার সে যে লাজুক মেয়ে, নাও আসতে পারে হয়তো…

আমিঃ প্লিজ প্লিজ প্লিজ ভাবি, যেই ভাবে হক, আমার বউ সরি আপনার বোন টাকে নিয়ে আসুন ?

ভাবিঃ এই তোমার বউ মানে? ?

আমিঃ সরি, ভাবি আপনার বোন, হি হি হি

ভাবিঃ যাও আমার মোবাইলে টাকা লোড দিয়ে দেও, এখুনি কল দিচ্ছি কাকিমা কে..

আমিঃ কত দিবো? ১৮ নাকি ১৯ টাকা?

ভাবিঃ ৯৯ টাকায় ভালো একটা মিনিট অফার যাচ্ছে ওটায় দেও..

আমিঃ এহেহহহ

ভাবিঃ এহেহহ না হেএএএ

?

কি আর করার, এতো বছর পর গার্লফ্রেন্ড পাবো, কেমন খুশি লাগা শুরু হল। আনন্দে নাচতে ইচ্ছা হচ্ছে। তাড়াতাড়ি গিয়ে টাকা লোড দিয়ে দিলাম ভাবির মোবাইলে। বুঝতে আর বাকি রইলো না যে এখন থেকে ভাবির প্যারা শুরু হবে।
ভাবি তার কাকিমার কাছে ফোন করে কেমন আছে কি করছে এই সব বলছে, আমার তো ধৈর্য্য শেষ হচ্ছে , কেনো তার বোনের কথা বলে না। ভাবি কে বার বার ইশারা দিচ্ছি তার বোনের কথা বলতে, ভাবি শুধু চুপ থাকতে ইশারা করছে। এই জন্য মেয়েদের হাতে মোবাইল দিতে নাই, কাজের কথা একটাও না বলে শুধু আজেবাজে কথা বলেই সময় শেষ করে।

অবশেষে প্রায় ৩০ মিনিট পর ভাবি বলছে, কাকিমা রিতুর পরিক্ষা কবে থেকে…

কথা শুনে বুকের মধ্যে কেমন যেনো একটা শীতল অনুভূতি হল। তাহলে আমার গার্লফ্রেন্ডের নাম রিতু। কত সুন্দর নাম গো।

কিছুক্ষণ পর ভাবি কল কাটলো…

আমিঃ এই ভাবি, কি বললো কাকিমা?

ভাবিঃ আগে বলো তুমি কি প্রেম করতে পারবে তো?? বলো তো কিভাবে প্রেম করে?

ভাবির প্রশ্ন শুনে আমি অবাক, এটা কি রকম প্রশ্ন। কি বলবো কি বলবো, ভাবতে ভাবতে বললাম…

আমিঃ হুমম ভাবি পারবো প্রেম করতে। ওই যে সেই দিন দেখলাম, আপনি রান্না করছিলেন, আর ভাইয়া গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো আপনাকে, আর আপনি ঘুরে তাকিয়ে ভাইয়ার কান টেনে ধরলেন, তারপর শক্ত করে জরিয়ে ধরে পাপ্পি খেলেন, আমিও তেমনি ভাবে প্রেম করবো গো ভাবি ☺

ভাবিঃ ও মোর খোদা, আর পেলে না উদাহরণ দিতে। কত বড় পাজি গো তুমি, তুমি তাহলে লুকিয়ে আমাদের রোমান্স দেখো, বদমাইস ছেলে একটা। আর কখনো দেখবে না কিন্তু বলে দিলাম, নাহলে কিন্তু হুমম ?

আমিঃ আচ্ছা মিষ্টি ভাবি, আর দেখবো না।

ভাবিঃ ওরে আমার দুষ্টু দেবর। বোন দেওয়াতে এখনি মিষ্টি ভাবি হয়ে গেলাম। শুনো আরেকটা শর্ত আছে বোন নিতে..

আমিঃ কি শর্ত?

ভাবিঃ এখন থেকে আমাকে আর আপনি করে বলবে না, তুমি করে বলবে ওকে?

আমিঃ ওকে বলবো গো বলবো লক্ষী জানু ভাবি…

ভাবিঃ এই ভাইয়া, যাই বলো জানু বলো না, আমার লজ্জা করে ??

আমিঃ হা হা হা, তাই?

ভাবিঃ হুমম ভাইয়া। আর শুনো কাকিমা বললো আমাকে রিতুর সাথে কথা বলতে, রিতুকে রাজি করাতে পারলে, কাকিমা কাউকে দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দিবে রিতুকে,তারপর নাহয় তোমার ভাইয়া গিয়ে নিয়ে আসবে ঢাকা থেকে । আর একটা কথা, এখন থেকে আমার কিন্তু সকাল বিকাল অনেক কিছু খেতে মন চাইবে, সব কিন্তু তোমাকে এনে দিতে হবে। তাহলে শুধু তোমার বউকে এখানে আনার দায়িত্ব নিবো, নাহলে নাই বলে দিলাম।

বুঝতে আর বাকি রইলো না ভাবির মতলব। যাই হক, তার বোনকে আমার বউ বলছে এটায় অনেক ☺

? তারপর থেকে আমি যত ভদ্র ছিলাম, তার থেকে বেশি ভদ্র হয়ে গেলাম। কেনো মেয়েদের দিকে তাকানো বাদ, অন্য মেয়েদের চিন্তা বাদ, ফেসবুক থেকে যত মেয়ে ফ্রেন্ড ছিলো, সবাই কে ছোট করে Sorry বলে আনফ্রেন্ড করে দিলাম। মনের মধ্যে রোমান্টিক রোমান্টিক ভাব চলে এসেছে।

তার চেয়ে বড় কথা, দিন যায় রাত যায়, ভাবির খুদা বৃদ্ধি পায়, পকেট আমার খালি হয় ??
আমার পরিক্ষার সময়ও এতো চিন্তা করি নাই যে শেষ হবে কবে, কিন্তু এখন আর ধৈর্য্য ধরতে পারছি না। শেষ কেনো হয় না রিতুর পরিক্ষা ?
অবশেষে পরিক্ষা শেষ হল…

ভাবিকে কথা বলতে বললাম তার কাকিমার সাথে। ভাবি কথা বলে বললোঃ- রিতু আসতে রাজি আছে। শুক্রবার সকালে শেরপুর থেকে আমার কাকাই এসে রিতুকে ঢাকা দিয়ে যাবে, সেখান থেকে তোমার ভাইয়াকে গিয়ে আনতে হবে।

শুনে মনের মধ্যে আনন্দে কেমন যে লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না, আবার চিন্তা ও হচ্ছে, যদি আমার তো মেয়েদের সাথে কথা বলতেও লজ্জা হয়, তাহলে কিভাবে পটাবো তাকে ?

সমস্যা বাঁধলো বৃহস্পতিবারে, ভাইয়ার কাজের চাপে সে ঢাকা যাওয়া হবে না বলে দিয়েছে ।
আমিও বুক ফুলিয়ে বলতেও পারছি না যে আমি গিয়ে নিয়ে আসি তাকে , কারণ…আমার ও ভাবির দুষ্টুমি বুদ্ধির কথা ভাইয়া জানে না। ভাইয়া জানে রিতুকে ভাবির দেখতে ইচ্ছা হয়েছে, তাই রিতু এখানে আসছে বেড়াতে।

ভাবি গিয়ে ভাইয়া কে বললো তাহলে শুভকে ঢাকা যেতে বলো রিতুকে আনতে।
ও মা, ভাইয়া দেখি আমার পকেটে কচকচা ১০০০ টাকার ৩ টা নোট দিয়ে নরম কন্ঠ করে আমাকে বলে, ভাই তুমি গিয়ে তোমার ভাবির বোনকে একটু নিয়ে আসবে প্লিজ, নাহলে তোমার ভাবি খুব রাগ হবে আমার উপর… ?

আমি শুধু মাথা নিচু করে বললাম, আচ্ছা ভাইয়া যাবো ?

লাভের উপর লাভ হা হা হা…

অবশেষে সেই অপেক্ষা শেষ করে শুক্রবার সকালে…….. ~ গল্প চলবে ~